কারবালায় ইমাম হুসাইন

মনিরউদ্দীন ইউসুফ

না, আমি বিদ্রোহী নই : যুদ্ধ করতে আসিনি আমি ।

দেখ না আমার সৈন্য নেই,দুর্গ নেই, অস্ত্রাগার নেই।

আমার সঙ্গে আছে আমারী—স্ত্রী-পুত্র-কন্যা

আছে ভাই-বেরাদর ও কয়েকজন একনিষ্ঠ অনুগামী বন্ধু।

আমি কারবালা পর্যন্ত এগিয়ে এসেছি একটি দায়িত্ববোধের শুভ তাড়নায়।

আমার মাতামহ আল্লাহর রাসূল –শেষ নবী;

তিনি প্রাচীন যুগের নবুওয়াতের শেষ ব্যক্তি

তার পরে কোনো নবী আর আসবেন না।

তিনি আধুনিক যুগের আল্লাহ প্রেরিত নকীব।

তিনি মানুষের মুক্তবুদ্ধির স্বাধীন ইচ্ছার উদ্বোধনকারী।

তাই প্রাচীন যুগের মতো আল্লাহ মানুষের কাজেকর্মে

কোনো হস্তক্ষেপ করবেন না।

না,মানুষের পাপে পাস্নাবন আসবে না

ভূমিকম্প না,ঝঞ্ঝা কিংবা শিলাবৃষ্টিও নয়।

মানুষের কর্মের দায়িত্ব মানুষের-যার বিচার হবে পরলোকে;

আমি হুসাইন, তার দায়িত্ব পালনের আগ্রহে আমি মরতে এসেছি

অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার ঐতিহ্য বহন করে নিয়ে এসেছি এই কারবালায়

আমি স্ত্রী-পুত্র ভাই-বেরাদর ও অনুগত বন্ধুগণ নিয়ে মরতে এসেছি।

এ ঐতিহ্য সকল পুরাতন নবী ও আমার মাতামহের।

আমি কারবালায় জিহাদের পতাকা উড্ডীন করে রেখে গেলাম।

তারপরই কোনো এক সময় ইমাম বলে ছিলেন,

আমরা শহীদ হতে এসেছি।

কাহিনী প্রচলিত আছে,মুসলমানের ইমাম

কারবালায় অবতীর্ণ হয়েই তার পার্শ্বচরকে

বলে ছিলেন, অনুভব করতে পারছ শীতল হওয়ার স্পর্শ?

হ্যাঁ কারবালা; এখানেই ছাউনি ফেলো; এখানেই আমার বিশ্রাম!

শাহাদাতের এ ঐতিহ্য আমাদের থেকেই ছড়িয়ে পড়বে

অনাগত যুগ যুগান্ত ধরে সব দেশে।

দেখ মনে রেখো, আমি যুদ্ধ করতে আসি নি;

আমার সৈন্য নেই,দুর্গ নেই, অস্ত্রাগার নেই।

আমি প্রতিবাদ করতে এসেছি,ধর্ম ও রাজনীতি আলাদা নয়;

আমি শহীদ হতে এসেছি।

মানুষের প্রতিনিধিত্ব ,দায়িত্ব ও শাহাদাতের ঝাণ্ডা উচু করে রেখে গেলাম।