তাওহীদের অর্থ ও প্রকারভেদ

ভূমিকা

তাওহীদ (توحيد ) শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল ‘অদ্বিতীয় বলে স্বীকার করা’ বা একত্ববাদ। দর্শন, কালাম, আখ্‌লাক ও ইরফান বিশেষজ্ঞগণের ভাষায় "তাওহীদ” শব্দটি একাধিক অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে এ অর্থগুলোতে খোদার একত্ববাদকে বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। আবার কখনো কখনো ‘তাওহীদের প্রকারভেদ’ অথবা ‘তাওহীদের স্তরসমূহ’ শিরোনামে স্মরণ করা হয়ে থাকে। তবে এগুলোর সবক’টি সম্পর্কে আলোচনা করা এ প্রবন্ধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

অতএব এখানে আমরা অপেক্ষাকৃত প্রসিদ্ধতর ও সাযুজ্যতর পরিভাষাগুলোর আলোচনা করেই তুষ্ট থাকব।

১। সংখ্যাগত তাওহীদ বা বহুত্বের অস্বীকৃতি

তাওহীদের সর্বপ্রথম প্রসিদ্ধ পরিভাষাটি হল, খোদার একত্বে বিশ্বাস ও বহুত্বের অস্বীকৃতি। "তাওহীদ” প্রকাশ্য অংশীবাদের বিরুদ্ধে বা বিপরীতে অবস্থান নিয়ে থাকে। দুই বা ততোধিক স্বাধীন খোদার প্রতি বিশ্বাস এরূপে যে, তাদের একের প্রতি অপরের কোন নির্ভরশীলতা নেই এ অংশীবাদী বিশ্বাসকেও তাওহীদ অস্বীকার করে।

২। আল্লাহর সত্তাগত অবিভাজ্যতা বা তাঁর সত্তার যৌগিকতার অস্বীকৃতি

তাওহীদের দ্বিতীয় পরিভাষাটি হল একত্বের বিশ্বাসার্থে সত্তার অবিভাজ্যতা বা প্রভুসত্তা, কার্যকরী ও সামর্থ্যগতভাবে অংশের সমষ্টি না হওয়া।

এ অর্থকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে না-বোধক গুণ বা সিফাতুস্সালবিয়াহ্ রূপে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। কারণ আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি যৌগের ধারণা সম্পর্কে এবং প্রাসংগিকভাবে তার অস্বীকৃতির সাথে,অবিভাজ্যতার তাৎপর্য অপেক্ষা অধিকতর পরিচিত।

৩। গুণগত তাওহীদ বা প্রভুসত্তার সাথে অতিরিক্ত গুণাবলী সংযোজনের অস্বীকৃতি

তাওহীদের তৃতীয় পরিভাষাটি প্রভুসত্তার সাথে তাঁর গুণসমূহের একাত্বতা এবং সত্তার সাথে অতিরিক্ত বা অর্জিত গুণাবলী সংযোজনের অস্বীকৃতি অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে-যাকে গুণগত একত্ব বলা হয়। তবে রেওয়ায়েতের ভাষায় একে ‘গুণাবলীর পরিবর্জন’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে। তাওহীদের এ পরিভাষাটি, যারা (যেমনঃ আশআরী সম্প্রদায়) খোদার গুণাবলীকে তাঁর সত্তাবহির্ভূত অতিরিক্ত বিষয় বলে মনে করেন এবং যারা ‘অষ্টপ্রাচীনত্বের’ প্রবক্তা, তাদের বিপরীতে অবস্থান নেয় ।

গুণগত একত্ববাদের স্বপক্ষে যুক্তি হলঃ যদি আল্লাহর প্রতিটি গুণই স্বতন্ত্র দৃষ্টান্তের (مصداق) অধিকারী হয়, তবে তা নিম্নলিখিত কয়েকটি অবস্থার ব্যতিক্রম নয়ঃ

হয় ঐ গুণগুলোর দৃষ্টান্ত প্রভুসত্তার অন্তর্ভুক্ত বলে পরিগণিত হবে, যার অপরিহার্য অর্থ হবে, প্রভুসত্তা হল একাধিক অংশের সমষ্টি এবং ইতিপূর্বে আমরা প্রমাণ করেছি যে, এ ধরণের কোন কিছু অসম্ভব অথবা ঐ গুণগুলোর দৃষ্টান্ত সত্তাবহির্ভূত বলে বিবেচিত হয় এবং এ অবস্থায়, হয় ‘অনিবার্য অস্তিত্ব’ ও ‘সৃষ্টিকর্তার উপর অনির্ভরশীল’ বলে পরিগণিত হবে অথবা ‘সম্ভাব্য অস্তিত্ব’ ও ‘সৃষ্টিকর্তার উপর নির্ভরশীল’ বলে পরিগণিত হবে।

কিন্ত গুণগুলোর অনিবার্য অস্তিত্ব হওয়ার অর্থ হবে, সত্তার একাধিকত্ব ও সুস্পষ্ট অংশীবাদ এবং কোন মুসলমানই এর দায়িত্ব গ্রহণ করবে বলে মনে হয় না। অপরদিকে গুণগুলোর ‘সম্ভাব্য অস্তিত্ব’ হওয়ার অপরিহার্য অর্থ হল ‘প্রভুসত্তা’ ঐ গুণগুলোর ঘাটতিতে থাকার ফলে ঐগুলোকে সৃষ্টি করতঃ সংশ্লিষ্ট গুণসমূহে গুণান্বিত হয়েছেন । যেমনঃ যদিও মহান আল্লাহ জীবনহীন তথাপি জীবন নামক এক অস্তিত্বকে সৃষ্টি করেন এবং তার মাধ্যমেই জীবন লাভ করেন। অনুরূপ জ্ঞান, ক্ষামতা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও একই ধারণা রূপ পরিগ্রহ করে। অথচ ‘অস্তিত্বদাতা কারণ’ সত্তাগতভাবে সৃষ্ট বিষয়ের পূর্ণতাসমূহের ঘাটতিতে থাকবে, এটা অসম্ভব।

সর্বাপেক্ষা লজ্জাজনক ব্যাপার হল এটা যে, স্বীয় সৃষ্ট বিষয়সমূহের ছায়ায় জীবন, জ্ঞান ও ক্ষমতার অধিকারী হওয়া এবং অন্যান্য উৎকর্ষ গুণে গুণান্বিত হওয়া।

উপরোক্ত ধারণাগুলোর বর্জনের মাধ্যমে সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় যে, প্রভুর গুণসমূহ প্রভুর সত্তার বাইরে বিদ্যমান, পরস্পর স্বতন্ত্র কোন অস্তিত্ব (مصداق) নয়। বরং এ বৈশিষ্ট্যগুলো এমন এক ভাবার্থ যে, আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি, প্রভুর একক, অবিভাজ্য, পবিত্র সত্তা থেকে পৃথকরূপে (নিষ্কাষণ ও) উপস্থাপন করে থাকে (কিন্তু বাস্তব জগতে তাদেরকে আলাদা করে ভাবা অসম্ভব)।

৪। উৎসের ক্ষেত্রে ক্রিয়াগত একত্ববাদ

তাওহীদের চতুর্থ পরিভাষাটি, দার্শনিক ও কালামশাস্ত্রবিদগণের নিকট ক্রিয়াগত একত্ববাদ বলে পরিচিত। আর এর অর্থ হলঃ মহান আল্লাহ স্বীয় কর্ম সম্পাদনের জন্যে কারো উপর ও কোন কিছুর উপরই নির্ভরশীল নন এবং তিনি কোন ভাবেই কোন অস্তিত্বের সাহায্যের মুখাপেক্ষী নন।

এ বিষয়টি ‘অস্তিত্বদাতা কারণের’ বিশেষত্বের আলোকে প্রমাণ করা যায়, যা সকল কার্যের (معلول) প্রতিষ্ঠাতা। কেননা এ ধরনের কারণের (অস্তিত্বদাতা কারণ) কার্যগুলো সমস্ত অস্তিত্বের জন্যে উক্ত কারণের উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ দর্শনের ভাষায়, এ কার্যগুলো খোদার সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কযুক্ত’ এবং ঐ গুলোর কোন প্রকার স্বনির্ভরতা নেই।

অন্যকথায়ঃ যে কেউ যা কিছুরই অধিকারী হোক না কেন, তা তাঁরই নিকট থেকে এবং তাঁরই ক্ষমতার অধীন। তাঁরই রাজত্বের পরিমণ্ডলে, তাঁরই সুনির্ধারিত ও প্রকৃত মালিকানাধীন। অন্য সবার ক্ষমতা ও মালিকানা তাঁর ক্ষমতা ও মালিকানার উলম্বে ও নিম্নস্তরে অবস্থান করে এবং তারা খোদার ক্ষমতার পথে কোন প্রকার ক্লেশ সৃষ্টি করে না। যেমনঃ বান্দা উপার্জিত সম্পদের উপর যে বৈধ মালিকানা লাভ করে তা প্রভুর বৈধ মালিকানার উলম্বে অবস্থান করে।

«العبد و ما في يده كان لمولاه»

বান্দা ও যা কিছু তার নিকট আছে, সকলই প্রভুর জন্যে’।

অতএব মহান আল্লাহ এমন কারো সাহায্যের মুখাপেক্ষী হবেন, যারা তাদের সমগ্র অস্তিত্বের জন্যে তাঁর উপর নির্ভর করে, তা কীরূপে সম্ভব?

৫। আল্লাহর প্রভাবগত একত্ব বা প্রভুসত্তা ভিন্ন সকল অস্তিত্বের স্বাধীন প্রভাব অস্বীকার

তাওহীদের পঞ্চম পরিভাষাটি হল ‘স্বাধীন প্রভাব’অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্ট বিষয়াদি স্বীয় কর্মের ক্ষেত্রেও আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল। সৃষ্ট বিষয়াদির পরস্পরের মধ্যে যে প্রভাব ও কর্মতৎপরতা বিদ্যমান, তা আল্লাহ‌রই অনুমতিক্রমে, আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি ও ক্ষমতায় সম্পন্ন হয়। প্রকৃতপক্ষে একমাত্র যিনি অনির্ভরশীল ও স্বাধীনভাবে সর্বত্র ও সর্বাবস্থায় এবং সকল কিছুর উপর প্রভাব ফেলতে সক্ষম, তিনি হলেন পবিত্র সত্তার অধিকারী মহান আল্লাহ। সকল কর্মতৎপরতা ও প্রভাব তাঁর কর্মতৎপরতা ও প্রভাবের উল্লম্বে অবস্থান করে এবং তাঁরই প্রভাবের প্রতিফলনে স্বীয় কর্মসম্পাদন করে।

আর এর ভিত্তিতেই পবিত্র কোরান প্রাকৃতিক নির্বাহকসমূহ এবং অপ্রাকৃতিক নির্বাহকসমূহের (যেমনঃ ফেরেস্তা, জ্বীন ও মানুষ) সকল র্কীতিকে খোদার প্রতি আরোপ করে থাকে। যেমনঃ বৃষ্টি বর্ষণ, বৃক্ষের উদ্গমন ও ফলদান ইত্যাদি খোদায়ী কীর্তি বলে আখ্যায়িত হয়। এ জন্যে সুপারিশ করা হয় যে, মানুষ যেন এ খোদায়ী কীর্তিকে খোদার উল্লম্বে (ফেরেশতারা সহ বস্তুগত কারণসমূহের কার্যকারণের ধারায়) নিকটবর্তী যে নির্বাহকসমূহ বিদ্যমান সে গুলোকে উপলব্ধি ও স্বীকার করে এবং সর্বদা এ সম্পর্কে চিন্তা করে।

অনুধাবনের জন্যে দৈনন্দিন জীবন থেকে একটি উদাহরণ উল্লেখ করবঃ যদি কোন কার্যালয়ের প্রধান কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোন কর্ম সম্পাদনের জন্যে আদেশ প্রদান করে, তবে কর্মটি আদিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তৃক সম্পাদিত হলেও উচ্চ পর্যায়ে এর দায়-দায়িত্ব ঐ কার্যালয়ের প্রধানের উপরই বর্তায়। এমনকি জ্ঞানীদের দৃষ্টিতে এটাই অধিকতর যুক্তিসঙ্গত।

সুনির্ধারিত ও অপরবর্তনীয় সৃষ্টিগত কর্তৃত্বের (فاعليت التكوينى) ক্ষেত্রেও পর্যায়ক্রম বিদ্যমান। ‘সকল নির্বাহকের অস্তিত্বই মহান আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল’, এ দৃষ্টিকোণ থেকে তা মস্তিষ্কগত কল্পিত বিষয়ের মতই, যা কল্পনাকারীর উপর নির্ভরশীল।

«ولله المثل الأعلى»

ফলে যে কোন কর্ম, যে কোন কর্তার মাধ্যমেই সম্পন্ন হোক না কেন, উত্তমতর পর্যায়ে তা মহান আল্লাহর অনুমতিক্রমে, তাঁরই সুনির্ধারিত ইচ্ছায় (الارادة التكوينية) সম্পাদিত হয়েছে বলে বিবেচিত হবে।

«ولا حول ولا قوة اِلا بالله العلى العظيم»

দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

ক্রিয়াগত একত্ববাদের মোদ্দাকথা হল, ‘মানুষ মহান আল্লাহ ব্যতীত কাউকে এবং কোন কিছুকেই উপাসনার জন্যে যোগ্য বলে মনে করবে না’। কারণ ইতিপূর্বে যেমনটি আমরা ইঙ্গিত করেছিলাম যে, বান্দার নিকট তার সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা ব্যতীত কেউই উপাসনার যোগ্য হতে পারে না। অন্যকথায়ঃ প্রভুত্ব হল সৃজন ও পালন কর্তৃত্বের অবিয়োজ্য ভাষ্য।

অপরদিকে তাওহীদের শেষোক্ত অর্থটি (স্বাধীন প্রভাব) থেকে প্রাপ্ত উপসংহারটি হলঃ মহান আল্লাহ্‌র উপর মানুষের পূর্ণ আস্থা থাকা, সকল কর্মের জন্যেই তাঁর উপর নির্ভর করা ও একমাত্র তাঁরই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা, একমাত্র তাঁরই নিকট আশা করা এবং তিনি ব্যতীত অন্য কাউকে ভয় না করা; এমন কি প্রত্যাশা ও চাহিদাসমূহ পূরণের স্বাভাবিক ক্ষেত্রসমূহ প্রস্তুত না থাকলেও নিরাশ না হওয়া। কারণ মহান আল্লাহ স্বাভাবিক পথ ভিন্ন অন্য কোন পথেও তাঁর বান্দার চাহিদা ও প্রয়োজন মিটাতে সক্ষম।

আর (উপরোক্ত অর্থদ্বয়ের অনুসারী) এমন কোন মানুষই প্রভুর বিশেষ অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত এবং অভূতপূর্ব মানসিক ও আত্মিক তুষ্টিতে পরিপূর্ণ জীবনের অধিকারী হয়ে থাকেন।

﴿أَلَا إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللَّهِ لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ﴾

"জেনে রাখ! আল্লাহ্‌র বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না।” (সূরা ইউনুস: ৬২)

উপরোক্ত সিদ্ধান্তদ্বয় নিম্নলিখিত আয়াতশরীফে –প্রত্যেক মুসলমান প্রত্যহ কমপক্ষে দশবার আবৃত্তি করে থাকে– সন্নিহিত রয়েছে।

﴿إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ﴾

(প্রভু হে!) "আমরা আপনারই উপাসনা করি এবং আপনারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি।” (সূরা ফাতিহা-৫)

একটি ভুল ধারণার অপনোদন

এখানে সম্ভবতঃ একটি ভুল ধারণার অবকাশ থাকতে পারে। যথাঃ যদি পরিপূর্ণ তাওহীদের দাবি এটা হয়ে থাকে যে, মানুষ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে না। তবে আল্লাহ্‌র মনোনীত বান্দা ও ওলীগণের (توسّل) করা বা শরণাপন্ন হওয়াও সঠিক হতে পারে না।

প্রতিউত্তরে বলতে হয়ঃ আল্লাহ্‌র ওলীগণের শরণাপন্ন হওয়া যদি এ অর্থে হয় যে, তাঁরা স্বাধীনভাবে ও আল্লাহর অনুমোদন ব্যতীতই শরণার্থীর কোন কর্ম সম্পাদন করবেন, তবে এ ধরনের তাওয়াস্সুল তাওহীদের সাযুজ্য হতে পারে না। কিন্তু যদি এ অর্থে হয় যে, মহান আল্লাহ ওলীগণকে স্বীয় অনুগ্রহের নিকটবর্তী হওয়ার জন্য মাধ্যম হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং মানুষকেও তাঁদের শরণাপন্ন হওয়ার জন্যে আদেশ দিয়েছেন, তবে এ ধরনের তাওয়াস্সুল একত্ববাদের সাথে কোন বিরোধ তো সৃষ্টি করেই না, বরং উপাসনা ও আজ্ঞাবহতার ক্ষেত্রে একত্ববাদের মর্যাদায় পরিগণিত হবে। কারণ তাঁরই (আল্লাহর) আদেশে সম্পন্ন হয়ে থাকে।

কিন্তু কেন মহান আল্লাহ এ ধরনের মাধ্যমসমূহকে স্থান দিয়েছেন এবং কেনইবা মানব সম্প্রদায়কে তাঁদের শরণাপন্ন হতে বলেছেন? এর উত্তরে বলা যায় যে, এ ঐশ্বরিক বিষয়টির পশ্চাতে একাধিক উদ্দেশ্য লুক্বায়িত। এগুলোর মধ্যে নিম্নলিখিত কয়েকটির কথা উল্লেখ করা যেতে পারেঃ আল্লাহর উপযুক্ত বান্দাগণের উত্তম মর্যাদার পরিচয় প্রদান, উপাসনা ও আনুগত্যের পথে –যা ঐ মহান ব্যক্তিদের এ সম্মানিত স্থানে পৌঁছার কারণ তা অনুভবের মাধ্যমে– অন্যদেরকে উৎসাহ প্রদান, মানুষকে তাদের ইবাদত ও আনুগত্যের জন্যে অহংকার করা থেকে বিরত রাখা এবং আল্লাহর মনোনীত বান্দা ভিন্ন যারা নিজেদেরকে তাঁর নিকট সর্বোত্তম মর্যাদা ও আসনের অধিকারী ও পূর্ণতম মানব হিসেবে মনে করেন তাদেরকে সে ভ্রান্তি থেকে মুক্তি প্রদান। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, সর্বশেষে বর্ণিত ব্যাপারটি যারা আহলে বাইতগণের (আ.) বিলায়াতকে অস্বীকার করে এবং যারা তাঁদের শরণাপন্ন হওয়া থেকে বঞ্চিত, তাদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। (সূত্র : আল-বাসাইর)