শাফায়াতের প্রতি বিশ্বাস কি শিরক?

প্রশ্ন: মহান আল্লাহর একত্বের (তৌহিদ) সাথে কোন নবী বা আল্লাহর মনোনীত পুরুষের শাফায়াতের বিশ্বাস কি সাংঘর্ষিক?

উত্তর: শাফায়াত হচ্ছে মুসলমানদের কাছে একটি অকাট্য ও সন্দেহাতীত মৌলিক বিষয়। কিন্তু ওয়াহাবী মতবাদ ও ইবনে তাইমিয়ার দৃষ্টিতে যদি কেউ মহানবী (সা.) এবং মাসূম ইমামদের কাছে শাফায়াতের জন্য আবেদন করে তাহলে সে মুশরিক বলে গণ্য হবে। কারণ, এতে সে মাসূমদেরকে আল্লাহর পাশে স্থান দিয়ে থাকে যা তৌহিদের পরিপন্থী।

‘শাফ’ ধাতু থেকে ‘শাফায়াত’ শব্দের উৎপত্তি। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে মধ্যস্থতা, সুপারিশ এবং অভীষ্ট লক্ষ্য ও ফলাফলে উপনীত হওয়ার জন্য কোন বিষয়ে কারো সহগামী হওয়া বা কারো সাথে থাকা। আর ইলমে কালামের (কালামশাস্ত্রের) পরিভাষায় ‘শাফায়াত’ হচ্ছে মহান আল্লাহ্‌র রহমত (দয়া) ও ক্ষমা যা মহান নবী ও ওয়ালীদের মাধ্যমে (ওয়াসীলায়) কোন কোন বান্দাকে শামিল করে।

মহানবী (সা.)-এর যুগ থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্‌র অনুসৃত রীতি (সীরাত) হচ্ছে পরকালে অর্থাৎ মৃত্যু-পরবর্তী জীবন ও জগতে সত্যিকার শাফায়াতকারীদের কাছে শাফায়াতের আবেদন করা। কোন আলেমই এ ধরনের আবেদনকে মৌলিক ইসলামী আকীদা-বিশ্বাস ও নীতিমালার পরিপন্থী বলে বিবেচনা করেন না। হিজরী সপ্তম শতাব্দীতে ইবনে তাইমিয়াই সর্বপ্রথম শাফায়াত এবং আরও অন্যান্য প্রথার বিরোধিতা করেন। এর তিন শতাব্দী পরে মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নজদী পুনরায় বিরোধিতার পতাকা উত্তোলন এবং ইবনে তাইমিয়ার মৃতপ্রায় মতবাদ পুনরুজ্জীবিত করেন।

মূল শাফায়াত ওয়াহাবীদের কাছেও গ্রহণযোগ্য। তবে এর কতিপয় বিধান ও বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে তারা বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। তাদের দৃষ্টিতে শাফায়াত তখনই সহীহ হবে যখন কোন ব্যক্তি সরাসরি মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলবে যে, মহানবী (সা.) এবং যাঁরা শাফায়াত করার অনুমতিপ্রাপ্ত তাঁরা যেন তার ব্যাপারে শাফায়াত করেন। ইবনে তাইমিয়া বলেছেন: ‘যদি কোন ব্যক্তি বলে: ‘মহান আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দা হওয়ার কারণে মহানবী (সা.)-এর কাছে অনুরোধ করছি যাতে তিনি আমার শাফায়াতকারী হন’, তাহলে এটা হবে মুশরিকদের কাজ। মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব বলেছেন: শাফায়াতের আবেদন একমাত্র মহান আল্লাহর কাছেই করতে হবে, শাফায়াতকারীদের কাছে নয়। অর্থাৎ শাফায়াত প্রার্থনাকারী অবশ্যই বলবে: ‘হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ (সা.)-কে কিয়ামত দিবসে আমার জন্য শাফায়াতকারী করে দিন।’

যে সব বিষয় ওপরে আলোচনা করা হল সেগুলো বিবেচনা করে শাফায়াত সংক্রান্ত আয়াতসমূহের দিকে ঈঙ্গিত করা প্রয়োজন যাতে প্রকৃত শাফায়াত ও বাতিল শাফাআত সুস্পষ্ট হয়ে যায় এবং সেই সাথে শাফায়াত যে মহান আল্লাহর একত্ব অর্থাৎ তৌহিদের পরিপন্থী নয় তা বোধগম্য হয়।

শাফায়াত সংক্রান্ত আয়াতসমূহ সাত ধরনের। নিচে আমরা প্রতিটি ধরন থেকে কেবল একটি করে আয়াত নমুনা হিসেবে উল্লেখ করব:

১. নিরঙ্কুশ শাফায়াত প্রত্যাখ্যানকারী আয়াতসমূহ

পবিত্র কোরআনের কতিপয় আয়াতে নিরঙ্কুশ শাফায়াত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যেমন:

أَن يَأْتِيَ يَوْمٌ لاَّ بَيْعٌ فِيهِ وَلاَ خُلَّةٌ وَلاَ شَفَاعَةٌ وَالْكَافِرُونَ هُمُ الظَّالِمُونَ

"এমন এক দিন (কিয়ামত দিবস) আসবে যেদিন না থাকবে কোন বেচা-কেনা, না কোন বন্ধুত্ব ও সুপারিশ (শাফায়াত); আর কাফিররাই হচ্ছে জালেম।”

অন্যান্য আয়াতে বিদ্যমান নিদর্শনাদি থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এ আয়াত ও এ ধরনের অন্যান্য আয়াতে নিরঙ্কুশ শাফায়াত প্রত্যাখ্যান করা বাঞ্ছিত ও কাম্য নয় এবং কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য হচ্ছে বাতিল (ভ্রান্ত) শাফায়াত প্রত্যাখ্যান করা।

২. ইহুদীদের মনঃপুত শাফায়াত প্রত্যাখ্যানকারী আয়াত

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে:

وَاتَّقُواْ يَوْماً لاَّ تَجْزِي نَفْسٌ عَن نَّفْسٍ شَيْئاً وَلاَ يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَلاَ يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلاَ هُمْ يُنصَرُونَ

"ঐ দিনের ব্যাপারে তোমরা সবাই ভয় কর যেদিন না কেউ কাউকে বিন্দুমাত্র রক্ষা করতে পারবে (না কেউ কারো স্থলে শাস্তিপ্রাপ্ত হবে), না তার থেকে কোন শাফায়াত গৃহীত হবে, না কোন বিকল্প প্রতিদান ও ক্ষতিপূরণ তার থেকে আদায় করা হবে, আর না তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।”

এ আয়াতটিতে যে শাফায়াত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে তা হচ্ছে ঐ শাফায়াত যা বনী ইসরাঈল নিজেদের ব্যাপারে বলে বেড়াত। তারা বিশ্বাস করত ও বলত: ‘আমরা নবীদের সন্তান। তাই আমাদের পাপের বোঝা যত ভারীই হোক না কেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা (যাঁরা নবী) আমাদের ব্যাপারে শাফায়াত করবেনই।’

৩. কাফিরদের ব্যাপারে শাফায়াতের ধারণা প্রত্যাখ্যানকারী আয়াতসমূহ

পবিত্র কোরআনের বেশ কিছু আয়াতে বর্ণিত হয়েছে: কিয়ামত দিবসে কাফিরদের কোন শাফায়াত ও শাফায়াতকারী নেই।

فَمَا تَنفَعُهُمْ شَفَاعَةُ الشَّافِعِينَ

"শাফায়াতকারীদের শাফাআত তাদের বিন্দুমাত্র উপকারে আসবে না।”

৪. প্রতিমাসমূহকে শাফায়াতকারী (শাফী) বলে গণ্য করার সমালোচনা

পবিত্র কোরআনের কতিপয় আয়াতে প্রতিমাসমূহকে শাফায়াতকারী সাব্যস্ত করার তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে।

وَمَا نَرَى مَعَكُمْ شُفَعَاءكُمُ الَّذِينَ زَعَمْتُمْ أَنَّهُمْ فِيكُمْ شُرَكَاء لَقَد تَّقَطَّعَ بَيْنَكُمْ وَضَلَّ عَنكُم مَّا كُنتُمْ تَزْعُمُونَ

"(প্রতিমা পূজকদেরকে বলা হবে) আমরা তোমাদের সুপারিশকারীদেরকে তোমাদের সাথে দেখছি না যাদেরকে তোমরা ধারণা করতে যে, তারা হচ্ছে মহান আল্লাহর শরীক। (আজ কিয়ামত দিবসে) তাদের সাথে তোমাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে এবং যা তোমরা ধারণা করতে তা তোমাদের থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছে।”

মূর্তিপূজকরা এমন ধারণা পোষণ করত যে, কাঠ, পাথর ও ধাতুনির্মিত প্রতিমা ও উপাস্যসমূহের ইবাদত করার মাধ্যমে তারা তাদের সন্তুষ্টি ও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হবে এবং এরাও মহান আল্লাহর কাছে তাদের সুপারিশকারী হবে।

৫. শাফায়াত একান্তভাবে মহান আল্লাহর

পবিত্র কোরআনের কতিপয় আয়াতে শাফায়াত যে একান্তভাবে মহান আল্লাহর, তা বর্ণিত হয়েছে। যেমন:

قُل لِّلَّهِ الشَّفَاعَةُ جَمِيعًا لَّهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ

"আপনি বলে দিন: সকল শাফায়াত একমাত্র মহান আল্লাহর। আসমানসমূহ ও পৃথিবীর মালিক একমাত্র তিনি, অতঃপর তাঁর দিকেই তোমরা প্রত্যাবর্তন করবে।”

৬. মহান আল্লাহর অনুমতিক্রমে শাফায়াত

পবিত্র কোরআনের কতিপয় আয়াতে শাফায়াতকারীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত উল্লিখিত হয়েছে। যেমন:

...مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ

"আর কে আছে যে তাঁর (আল্লাহর) অনুমতি ব্যতীত শাফায়াত করবে।”

অর্থাৎ কেবল তারাই শাফায়াত করতে পারে যাদেরকে মহান আল্লাহ (শাফায়াত করার) অনুমতি দেবেন।

৭. শাফায়াতকারীদের বৈশিষ্ট্যাবলী বর্ণনাকারী আয়াতসমূহ

কতিপয় আয়াতে শাফায়াতকারীদের বিদ্যমান থাকার ব্যাপারেই কেবল বলা হয় নি; বরং তাদের বৈশিষ্ট্যাবলীও সুস্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত হয়েছে। যেমন:

لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَ هُم بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَ مَا خَلْفَهُمْ وَ لَا يَشْفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ارْتَضىَ‏ وَ هُم مِّنْ خَشْيَتِهِ مُشْفِقُون

"তারা কখনোই মহান আল্লাহর আদেশকে পিছনে ফেলে এগিয়ে য়ায় না (অর্থাৎ আগে বেড়ে কোন কথা বলে না); আর তারা কেবল তাঁর আদেশ অনুসারে কাজ করে। তিনি (মহান আল্লাহ) তাদের সামনে ও পিছনে যা কিছু আছে তা সব জানেন। তারা ঐ সব ব্যক্তির জন্য শাফায়াত করে যাদের ব্যাপারে তিনি সন্তুষ্ট (হয়েছেন)। আর তারা তো কেবল তাঁর ভয়েই ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে।”

সামগ্রিকভাবে বলা যায়: যে সব আয়াতে শাফায়াত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে সেগুলোয় আসলে স্বাধীনভাবে অর্থাৎ মহান আল্লাহর অনুমতি ব্যতিরেকে শাফায়াত করার বিষয়কেই কেবল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। আর যে সব আয়াতে শাফায়াত প্রমাণ করা হয়েছে সে সব আয়াতে প্রথমত শাফায়াতকে মহান আল্লাহ্‌র সাথে একান্তভাবে সংশ্লিষ্ট বলে ব্যক্ত করা হয়েছে (অর্থাৎ শাফায়াত হচ্ছে নির্দিষ্টভাবে মহান আল্লাহ্‌র জন্য)। তবে অন্যান্য আয়াতে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, মহান আল্লাহ তাঁর এ নিজস্ব অধিকার (শাফায়াত) প্রকৃত শাফায়াতকারীদেরকেও দিয়েছেন যাতে তারাও তাঁর অনুমতি নিয়ে শাফায়াত করতে পারে। সুতরাং এক্ষেত্রে কোন স্ববিরোধিতা নেই এবং আল্লাহ্‌র অনুমতি ও উপরোল্লিখিত শর্ত সাপেক্ষে শাফায়াতকারীদের শাফায়াত করার বিষয়টি পবিত্র কোরআনে স্বীকৃত ও গৃহীত হয়েছে।

উল্লেখ্য, পবিত্র কোরআন নির্দেশ দিয়েছে যে, মুমিনরা যেন যোগ্য ব্যক্তিদেরকে অনুরোধ করে যাতে তাঁরা (তাদের জন্য মহান আল্লাহর কাছে) দু’আ করেন। সাহাবাদের অনুসৃত নীতি (সীরাহ) হচ্ছে মহানবী (সা.)-এর কাছে শাফায়াত করার জন্য আবেদন করা। ইবনে তাইমিয়ার দৃষ্টিতে জীবিত ব্যক্তির কাছে দু’আ করার আবেদন জানানো সহীহ ও বৈধ। নাজ্জাম নিশাবুরী নিম্নোক্ত–

...مَّن يَشْفَعْ شَفَاعَةً حَسَنَةً يَكُن لَّهُ نَصِيبٌ مِّنْهَا

"যে ব্যক্তি কোন ভালো কাজে সুপারিশ করবে, সে তা থেকে পূর্ণ অংশ (পূর্ণ সওয়াব) প্রাপ্ত হবে” –আয়াতের ব্যাখ্যায় বর্ণনা করেছেন যে, শাফায়াতের হাকীকাত (তাৎপর্য) হচ্ছে মুসলমানদের জন্য দু’আ (প্রার্থনা) করা।

ইমাম ফখরুদ্দীন রাযীও শাফায়াতকে মহান আল্লাহর কাছে দু’আ ও প্রার্থনা করা বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি–

وَيَسْتَغْفِرُونَ لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا وَسِعْتَ كُلَّ شَيْءٍ رَّحْمَةً

"এবং তারা (ফেরেশতাগণ) যারা ঈমান এনেছে তাদের (মুমিনগণ) জন্য ক্ষমা প্রার্থনা (ইস্তিগফার) করে বলে: হে আমাদের প্রভু! আপনি সব কিছুকে রহমত দিয়ে ঘিরে আছেন”১০–এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন: এ আয়াতটি আল্লাহর আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণ যে মুমিন পাপীদের ব্যাপারে শাফায়াত করেন সে ব্যাপারে সাক্ষ্য-প্রমাণ স্বরূপ। সুতরাং ইমাম ফখরুদ্দীন রাযীর দৃষ্টিতেও শাফায়াত হচ্ছে পাপী-তাপীদের ব্যাপারে শাফায়াতকারীর দু’আ।১১ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, এক মুসলমানের জন্য আরেক মুসলমানের দু’আই হচ্ছে শাফায়াত। ইবনে আব্বাস মহানবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেন:

"কোন মুসলমান মৃত্যুবরণ করলে যে চল্লিশ ব্যক্তি কখনো শিরক করে না তারা যদি তার জানাযার নামায পড়ে তাহলে ঐ মৃতের ব্যাপারে মহান আল্লাহ তাদের শাফায়াত (দু’আ) কবুল করবেন।”১২ 

এ হাদীসে যে ব্যক্তি দু’আ করে তাকে ‘শাফী’ (শাফাআতকারী) বলে অভিহিত করা হয়েছে।

আহলে সুন্নাতের রেওয়ায়াতসমূহের আলোকে মুসলমানরা বিশেষ সময়ে তাদের ইমাম অথবা অন্যান্য মুসলমানের কাছে উপস্থিত হয়ে তাদের কাছে অনুরোধ করত যেন তাঁরা মহান আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি প্রার্থনা করেন। আর এ ধরনের আবেদন শাফায়াতের (সুপারিশ) জন্য আবেদন করা ব্যতীত আর কিছুই নয়।১৩ মুহাম্মাদ ইবনে আব্দিল ওয়াহাবও জীবিত ব্যক্তির কাছে দু’আ করার জন্য আবেদন করা জায়েয বলেছেন।

৮. প্রকৃত (সঠিক) ও অপ্রকৃত (বাতিল) শাফায়াত

প্রকৃত শাফায়াত ও অপ্রকৃত (বাতিল) শাফায়াতের মধ্যকার মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে এই যে, প্রকৃত শাফায়াত মহান আল্লাহ্‌ থেকে শুরু হয়ে পাপীদের কাছে গিয়ে সমাপ্ত হয়, আর অপ্রকৃত ও অমূলক (বাতিল) শাফায়াত প্রকৃত শাফায়াতের ঠিক বিপরীত। প্রকৃত শাফায়াতের ক্ষেত্রে (مشفوع عنده) সেই সত্তা যাঁর কাছে শাফায়াত করা হয় অর্থাৎ মহান আল্লাহ্‌ই হচ্ছেন ওয়াসীলা (মাধ্যম) বা শাফায়াতকারীর উদ্দীপক (অর্থাৎ মহান আল্লাহ্‌ই শাফীকে শাফায়াত করার জন্য উদ্দীপ্ত ও উদ্বুদ্ধ করেন। আর বাতিল (অমূলক) শাফায়াতের ক্ষেত্রে মাশফূউন লাহু বা (مشفوع له) যার জন্য শাফায়াত করা হয় সেই ব্যক্তি অর্থাৎ পাপীই শাফায়াতকারীকে শাফায়াত করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। পৃথিবীতে বাতিল শাফায়াতের বহু নজির বিদ্যমান। এ সব বাতিল শাফায়াতের ক্ষেত্রে শাফায়াতকারী যে পাপীর পাপমোচন ও ক্ষমা প্রাপ্তির মাধ্যম হবে, এই বৈশিষ্ট্য সে পাপীর কাছ থেকে অর্জন করে থাকে। কারণ, পাপী তার পাপমোচনের মাধ্যম অর্থাৎ শাফায়াতকারীকে শাফায়াত করার জন্য উদ্দীপ্ত ও উদ্বুদ্ধ করে। প্রকৃত শাফায়াতের ক্ষেত্রে শাফায়াতকারী যে পাপীর পাপমোচন ও ক্ষমা প্রাপ্তির মাধ্যম তা মহান আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে নির্ধারিত হয়। তিনিই নবী ও ওয়ালীদেরকে ওয়াসীলা বা মাধ্যম করেছেন। তাই তাঁরা (নবী ও ওয়ালিগণ) হচ্ছেন প্রকৃত শাফায়াত বাস্তবায়নকারী।১৪

৯. তৌহিদের (মহান আল্লাহর একত্ব) সাথে শাফায়াত প্রার্থনার সম্পর্ক

যে কোন ধরনের আবেদন, দরখাস্ত ও আনুগত্য যদি শিরক হয় তাহলে এর অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে এই যে, হযরত আদম (আ.)-এর সময় থেকে এ পর্যন্ত সকল মানুষই মুশরিক ও কাফির হবে। কারণ, প্রত্যেক মানুষই নিজ জীবদ্দশায় তার চেয়ে উচ্চ সম্মান ও পদমর্যাদার অধিকারী ব্যক্তির কাছে আবেদন ও অনুরোধ অথবা তার আনুগত্য করে। সর্বদা সন্তান, ভৃত্য, কর্মচারী ও সৈনিক যথাক্রমে পিতা, মনিব, কর্মকর্তা ও সেনাপতির  আদেশ পালন করে এবং তাদের কাছে আবেদন-নিবেদন করে থাকে। সুতরাং অন্যদের কাছে সব ধরনের আবেদন এবং তাদের আনুগত্য ইবাদত নয়। অনুরূপভাবে সব ধরনের আবেদন-নিবেদনও শিরক হবে না। কারণ, ইবাদত হচ্ছে চরম হীনতা ও বিনয় সহকারে মনস্কামনা পূর্ণ হওয়ার জন্য ঐ সত্তা বা ব্যক্তির কাছে আবেদন ও আর্জি পেশ করা যে হচ্ছে পার্থিব ও পারলৌকিক সকল বিষয়ের নিরঙ্কুশ কর্তা (সম্পূর্ণ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ও কর্মক্ষমতার অধিকারী সত্তা)। যদি আল্লাহ ব্যতীত কোন ব্যক্তি বা সত্তার কাছে এভাবে (অর্থাৎ এ বিশ্বাস নিয়ে যে সে সম্পূর্ণ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ও কর্মক্ষমতার অধিকারী) কোন কিছু চাওয়া ও আবেদন করা হয়, তাহলে তা ‘শিরক’ ও ‘দ্বিত্ববাদ’ বলে গণ্য হবে। এ কারণেই আল্লামা তাবাতাবাঈ (রহ.) বলেন: শাফায়াত করার সময় শাফী কখনোই মহান আল্লাহর কাছে নিম্নোক্ত তিনটি বিষয় চাইবে না:

১. মহান আল্লাহর কাছে সে কখনোই চাইবে না যে, তিনি যেন তাঁর প্রভুত্ব (مولويّت) ও বান্দার দাসত্বকে উপেক্ষা ও বাতিল করে দেন।

২. সে মহান আল্লাহর কাছে চাইবে না যে, তিনি যেন তাঁর বিধান উপেক্ষা করেন।

৩. সে মহান আল্লাহর কাছে কখনো চাইবে না যে, তিনি যেন শাস্তিদান সংক্রান্ত সর্বজনীন নিয়ম বাতিল করেন।

বরং শাফায়াত কামনাকারী ব্যক্তি প্রভুর একটি বা কয়েকটি গুণ, যেমন দয়া, বদান্যতা, মহত্ত্ব, দানশীলতা ইত্যাদি –যা প্রভুর ক্ষমা ও দয়াপ্রবণ হওয়ার কারণ, তা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে এবং সেই সাথে বান্দা হিসেবে নিজের কতিপয় গুণ, যেমন হীনতা-দীনতা, অসহায়ত্ব, শোচনীয়তা ও দুরবস্থা যা বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর দয়া ও ক্ষমার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে তা উল্লেখ করে। অনুরূপ সে (শাফী) তার নিজের কতিপয় গুণ, যেমন প্রভুর কাছে তাঁর নৈকট্য, সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ বিশেষ স্থান ইত্যাদি ওয়াসীলা বা মাধ্যম হিসেবে দাঁড় করিয়ে মহান আল্লাহর কাছে শাফায়াত প্রার্থনাকারীর পাপ ক্ষমা করার আবেদন করে। মহান আল্লাহ ক্ষমা প্রাপ্তির জন্য এ সব মাধ্যমের সাথে বান্দাদেরকে পরিচিত করেছেন। আর এসব মাধ্যম যখনই প্রস্তুত হয়ে যাবে তখনই মহান আল্লাহর মাগফেরাত ও ক্ষমা বাস্তবায়িত হবে।১৫

আরেকভাবে বলা যায়, যেমন অবশ্যম্ভাবী সত্তা নিজ সত্তা ও অস্তিত্বের ক্ষেত্রে অন্য কোন সত্তার ফল বা সৃষ্ট নন তেমনি নিজ গুণ ও কর্মসমূহের ক্ষেত্রেও অন্য কোন কারণ দ্বারা তাঁর প্রভাবিত হওয়া অসম্ভব। তিনি নিরঙ্কুশ প্রভাবক এবং কোন কিছুর দ্বারা তিনি প্রভাবিতও হন না। মহান আল্লাহ আমাদের কাছে চেয়েছেন যে, আমরা যেন এসব মাধ্যম ও কারণ ব্যবহার করি। আর এটা কোনভাবেই শিরক নয়; বরং এটাই হচ্ছে হুবহু তৌহিদ।১৬ আর এটা যদি শিরক বলেই গণ্য হত তাহলে জনগণ মহানবী (সা.)-এর জীবদ্দশায় বা তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর কাছে শাফায়াতের আবেদন (ইস্তিশফা) করত না।১৭

১০. শাফায়াত হচ্ছে হুবহু একত্ব (ওয়াহদানিয়াত)

তৌহিদের হাকীকাত (তাৎপর্য) পর্যালোচনা করলে এবং তৌহিদের সাথে শাফায়াতকে মিলিয়ে দেখলে এ বিষয়টা সুস্পষ্ট হয়ে যাবে যে, শাফায়াত ওয়াহদানিয়াহ অর্থাৎ মহান আল্লাহর একত্বের সাথে শুধু সামঞ্জস্যশীলই নয়; বরং শাফায়াতই হচ্ছে হুবহু তৌহিদ অর্থাৎ মহান আল্লাহর একত্ববাদ।

তৌহিদের প্রকারভেদ

সত্তাগত পর্যায়ে তৌহিদ: মহান আল্লাহ হচ্ছেন এমন এক সত্তা যাঁর কোন শরীক ও সমকক্ষ নেই এবং এর বিপরীতে দ্বিত্ববাদ (অর্থাৎ দুই স্রষ্টায় বিশ্বাস) উত্থাপিত হয় যা সত্তাগত পর্যায়ে শিরক বলে গণ্য।

কর্ম পর্যায়ে তৌহিদ: এ নিখিল বিশ্বে প্রকৃত প্রভাবক (প্রভাববিস্তারকারী সত্তা) কেবল একজনই; আর প্রত্যেক অস্তিত্বময় সত্তা অন্যের ওপর যে প্রভাব ফেলে আসলে তা মহান আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত।

আগুনের দহনক্ষমতা, তরবারির ধার ও তীক্ষ্নতা ইত্যাদি সব কিছুই মহান আল্লাহ প্রদত্ত এবং তাঁর আদেশেই হয়ে থাকে।

ইবাদতের ক্ষেত্রে তৌহিদ: একমাত্র মহান আল্লাহর পবিত্র সত্তা ব্যতীত আর কেউই ইবাদত-বন্দেগির (উপাস্য ও মাবূদ হওয়ার) যোগ্য নয়। যদিও এ অস্তিত্বজগতে নবী ও ওয়ালিগণ হচ্ছেন নিখিল বিশ্বের পূর্ণতার সর্বোত্তম বহিঃপ্রকাশ ও নমুনা স্বরূপ। কিন্তু আল্লাহ‌র বান্দা হিসেবে তাঁরা কেউই উপাসনার যোগ্য নন।১৮

তৌহিদের প্রকারসমূহ বিবেচনা করতঃ প্রকৃত শাফায়াতকারীদের কাছে শাফায়াত করার আবেদন উপরিউক্ত তিন পর্যায়ের তৌহিদের মোটেও পরিপন্থী নয়। কারণ, ওয়ালীদের কাছে শাফায়াত করার আবেদন সত্তাগত পর্যায়ের তৌহিদের বিপরীতে দ্বিত্ববাদেরও যেমন কারণ নয়; তেমনি তা কর্ম পর্যায়ের তৌহিদের বিপরীতে কোন অস্তিত্ববান সত্তা যে স্বাধীনভাবে (আল্লাহ্‌ পাকের অনুমতি ব্যতিরেকেই) প্রভাব বিস্তার এবং বরকত (কল্যাণ) প্রদান করতে সক্ষম –এ ধরনের কোন ধারণা ও বিশ্বাসেরও উদ্ভব ঘটায় না, আর ইবাদতের ক্ষেত্রে তৌহিদের বিপরীতে তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন সত্তার বন্দেগির জোয়ালও মানুষের ঘাড়ে পরিয়ে দেয় না এবং মাবূদ (উপাস্য) বলে তার উপাসনা করতেও তাকে উদ্বুদ্ধ করে না। এ কারণেই বলা যায় যে, শাফায়াত যে কোন পর্যায়ের তৌহিদের মোটেও পরিপন্থী নয়। কারণ, শাফায়াত প্রার্থনাকারীর প্রতি শাফীর দয়া আসলে মহান আল্লাহর রহমত ও দয়ার সামান্য রশ্মি ও বিকিরণ ব্যতীত আর কিছুই নয়। আর শাফায়াতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং এর মাধ্যমে বান্দার প্রতি দয়া প্রদর্শন মহান প্রভুর পক্ষ থেকেই উৎসারিত।১৯

সুতরাং শাফীদেরকে যদি ছোটখাটো ইলাহ (উপাস্য) ও ক্ষুদ্র খোদা বলে বিশ্বাস করা হয় এবং এরূপ মনে করা হয় যে, তাঁরা মহান আল্লাহর অনুমতি ছাড়াই শাফায়াতের মাকাম ও শানের অধিকারী এবং যাকে ইচ্ছা তার জন্য তাঁরা আল্লাহর কাছে শাফাআত করতে পারেন তাহলে নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, শাফীদের কাছে শাফায়াতের জন্য আবেদন এমতাবস্থায় গায়রুল্লাহর ইবাদত এবং এর ফলে স্বয়ং আবেদনকারী মুশরিক বলে গণ্য হবেন।

শাফীদের যদি মহান আল্লাহর সৃষ্ট (মখলূক) বলে বিশ্বাস করা হয় যাঁরা মহান আল্লাহর অনুমতি নিয়ে বিশেষ বৈশিষ্ট্যের ব্যক্তিদের জন্য শাফায়াত করতে পারেন, অতঃপর এই শর্ত সাপেক্ষে যদি তাঁদের কাছে শাফায়াতের জন্য আবেদন করা হয় তাহলে সুনিশ্চিতভাবে এ ধরনের আবেদন এবং সাধারণ কাজের জন্য আবেদনের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকবে না। তাই এমতাবস্থায় শাফীর কাছে শাফায়াতের জন্য আবেদন তৌহিদের সীমারেখার বাইরে বলে গণ্য হবে না।

অতএব, মহান আল্লাহর ওয়ালীদের কাছে শাফায়াতের আবেদন যে প্রতিমাসমূহের কাছে মুশরিকরা শাফায়াতের জন্য যে আবেদন করে থাকে তার সদৃশ ও অনুরূপ –এ ধরনের ধারণা সর্বৈব ভিত্তিহীন। কারণ, মহান আল্লাহর ওয়ালীদের ব্যাপারে মুওয়াহহিদের (একত্ববাদী) আকীদা-বিশ্বাস প্রতিমাসমূহের ব্যাপারে মুশরিকদের আকীদা-বিশ্বাসের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। মুশরিকরা প্রতিমাসমূহকে শাফায়াতের মর্যাদার মালিক (অধিকারী) বলেই জানত এবং বিশ্বাস করত যে, এ সব প্রতিমা যে কোন ব্যক্তির ব্যাপারে যেভাবেই চাক না কেন সেভাবে শাফায়াত করতে সক্ষম। এ ধরনের বিশ্বাস আসলে প্রতিমাসমূহের উলূহিয়াতে (উপাস্য হওয়াতে) বিশ্বাসেরই নামান্তর এবং শিরক বলে গণ্য। অথচ মুসলমানরা মহান আল্লাহর ওয়ালীদের ব্যাপারে এ ধরনের মর্যাদায় বিশ্বাসী নয়২০ এবং তারা সর্বদা দিবারাত্রি নিম্নোক্ত আয়াতটি তেলাওয়াত করে থাকে:

مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ

"তাঁর (মহান আল্লাহর) অনুমতি ব্যতীত কে তাঁর কাছে শাফায়াত করবে?”

ফলাফল

প্রকৃত শাফায়াত একান্তভাবে আল্লাহর। তবে কখনো কখনো তিনি নিম্নোক্ত দুই কারণে তাঁর ওয়ালী বান্দাদেরকেও তাঁর এ অধিকার ব্যবহার অর্থাৎ শাফায়াত করার অনুমতি দিয়ে থাকেন। যেমনভাবে মহান আল্লাহ্‌র সকল পার্থিব (বস্তুগত) ও আধ্যাত্মিক (অবস্তগত) দয়া ও রহমত এ পৃথিবীতে কার্যকারণ নীতির অধীনে বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের কাছে এসে পৌছে থাকে, যেমন মানবজাতির সৌভাগ্য ও সুপথপ্রাপ্তির পথ প্রর্দশন করার জন্য তিনি নবী-রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছেন। বস্তুজগতে তিনি সূর্যকে রৌদ্র, তাপ ও আলোকরশ্মি বিকিরণের মাধ্যমরূপে সৃষ্টি করেছেন যা পৃথিবীর বুকে জীবন সঞ্চার ও একে সমৃদ্ধ ও বিকশিত করেছে... ঠিক তেমনি তাঁর ক্ষমা ও মাগফেরাতও কতিপয় কারণ ও ওয়াসীলা, যেমন মহান ওয়ালীদের মাধ্যমে আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়। আর এক্ষেত্রে প্রকৃত প্রভাবক হচ্ছেন স্বয়ং আল্লাহ্‌।

মহান আল্লাহ্‌ ওয়ালীদেরকে শাফায়াত করার মাকাম (মর্যাদা) প্রদান করার মাধ্যমে তাঁদেরকে যথাযথভাবে সম্মানিত করেছেন এবং তাঁদের গুরুত্ব এ তাঁরা যে মহান আল্লাহর অতি নিকটবর্তী বান্দা তা অন্যদের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছেন।২১

তথ্যসূত্র:

১. সূরা বাকারাহ্‌: ২৫৪।

২. সূরা বাকারাহ্‌: ৮৪।

৩. সূরা মুদ্দাসসির: ৪৮; আ’রাফ: ৫৩; শোয়ারা: ১০১।

৪. সূরা আনআম: ৯৪; ইউনূস: ১৮; ইয়াসীন: ২৩।

৫. সূরা যুমার: ৪৪; আনআম: ৫১।

৬. সূরা বাকারা: ২৫৫; ইউনূস: ৩; ত্বহা: ১০৯; মারইয়াম: ৮৭; সাবা: ২৩; যুখরুফ: ৮৬।

৭. আম্বিয়া: ২৭-২৮; নাজম: ২৬; মুমিন: ৭।

৮. জাফার সুবহানী, কুরআন, সুন্নাহ ও বুদ্ধিবৃত্তির নির্দেশনায় স্রষ্টাতত্ত্ব, পৃ. ৩২৮-৩৪০।

৯. মুহসিন আমিন, ওয়াহহাবীদের সমালোচনা ও বিশ্লেষণের ইতিহাস, পৃ. ২৫৮।

১০. সূরা মুমিন: ৭।

১১. ফখরুদ্দীন রাজী, তাফসীরে কাবির, আলোচ্য আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য।

১২. সহীহ মুসলিম, খ. ২, পৃ. ৬৬৫।

১৩. সহীহ বুখারী, খ. ৪, পৃ. ৯৮।

১৪. মুরতাজা মুতাহহারী, আদলে ইলাহী, পৃ. ২৩৭-২৩৮।

১৫. জাফার সুবহানী, আক্বল, কোরআন ও হাদীসের আলোকে শাফায়াত, পৃ. ২৭৪।

১৬. আদলে ইলাহী, পৃ. ২৩৯।

১৭. জাফার সুবহানী, কুরআন, সুন্নাহ ও বুদ্ধিবৃত্তির নির্দেশনায় স্রষ্টাতত্ত্ব, পৃ. ৩৫৮।

১৮. জাফার সুবহানী, আক্বল, কোরআন ও হাদীসের আলোকে শাফায়াত, পৃ. ২৮০-২৮২।

১৯. আদলে ইলাহী, পৃ. ২৪০।

২০. জাফার সুবহানী, বিষয়ভিত্তিক তাফসীর, খ. ২. পৃ. ৩৬১-৩৬৪।

২১. জাফার সুবহানী, আক্বল, কোরআন ও হাদীসের আলোকে শাফায়াত, পৃ. ৯০-৯১।

(সূত্র: আল বাসাইর)