হিংসা এক ধরনের বিষ

আমরা নৈতিকতার একটি ঘৃণ্য এবং নিন্দনীয় একটি দিক নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করবো। মানবীয় এই মৌলিক দুর্বলতাটি হচ্ছে হিংসা। আজ আমরা নৈতিকতার এই মারাত্মক সমস্যা হিংসা সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা এবং ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে তার ধ্বংসাত্মক প্রভাব নিয়ে আরো কিছু কথা বলার চেষ্টা করবো।
 
হিংসা কী কিংবা কাকে হিংসুক বলা হয় এ প্রশ্ন বোধ হয় অবান্তর হবে না একেবারে। যদিও হিংসার সাথে কমবেশি সবারই সাক্ষাৎ ঘটেছে। প্রকৃত ঘটনা হলো সকল মানুষই চেষ্টা করে অন্যের চেয়ে এগিয়ে থাকতে বা নিজেকে তুলনামূলকভাবে বড়ো, যোগ্যতরো এবং শ্রেষ্ঠতরো ভাবতে। অপরের চেয়ে কী করে বেশি বেশি অর্জন, উপার্জন কিংবা আহরণ করতে পারা যায় সে চিন্তায় মগ্ন থাকে মানুষ। মানুষের ভেতরে এই যে প্রতিযোগিতার চিন্তা এটা মানসিক সৌন্দর্যের একটা ইতিবাচক অনুভূতি নিঃসন্দেহে, কেননা এই অনুভূতি আছে বলেই মানুষ চেষ্টা তদবির চালায়, পরিশ্রম করে, বিচিত্র কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়ায়।
 
কিন্তু এই সহজাত প্রবণতাটি যদি বেলেগাম হয় অর্থাৎ প্রতিযোগিতার অনুভূতি বা চিন্তাটিকে যদি নিয়ন্ত্রণ করা না হয় তাহলেই ঐ প্রতিযোগিতা হিংসায় পরিণত হয়। সেখানেই দেখা দেয় যতো সমস্যা। কারণ অনিয়ন্ত্রিত প্রতিযোগিতার কারণে অন্যদের উন্নতিতে প্রতিযোগী খুশি না হয়ে বরং অসন্তুষ্ট হয়। আর এই অসন্তুষ্টির মূল থেকেই জন্ম নেয় হিংসা। হিংসা হলো অন্যদের প্রাচুর্য, সমৃদ্ধি বা বিত্ত-বৈভবের ধ্বংস কামনা করা। স্বাভাবিকভাবেই হিংসুক লোকটি চায় অন্যরা বিপদে পড়ুক, ধ্বংস হয়ে যাক। হিংসুক লোক আরেকজনের সুখ শান্তি দেখে, তার সুস্থতা, তার উন্নতি, বিত্ত-বৈভব দেখে কষ্ট পায়, তার অন্তর জ্বলে।
 
হিংসা এতো নিকৃষ্ট এবং জঘন্য একটি প্রবণতা যে যার ভেতরে এই চিন্তাটি থাকে তাকে শুধু যে পরকালীন চিন্তাবিমুখই করে তোলে তাই নয় বরং দুনিয়াবি চিন্তাতেই মগ্ন করে রাখে সারাক্ষণ। এই মগ্নতার কারণে হিংসুক লোক একটি মুহূর্তের জন্যেও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে পারে না। আল্লাহই মানুষকে বিত্ত বৈভব দেন, সম্পদশালী করেন। আল্লাহর কাছে সম্পদের কোনো অভাব নেই। আল্লাহ যাকেই এই সম্পদ দেন না কেন হিংসুকের নজরে পড়লেই সে কষ্ট পায়।
 
আল্লাহর এই জমিনে সর্বপ্রথম হত্যাকাণ্ডের যে ঘটনাটি ঘটেছিল তার মূলে ছিল হিংসা-এই প্রসঙ্গটি উল্লেখ করে পবিত্র কুরআনে সূরা মায়েদার ২৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:
“আর তাদেরকে আদমের দু-ছেলের সঠিক কাহিনী শুনিয়ে দাও। তারা দুজন কুরবানী করলে তাদের একজনের কুরবানী কবুল করা হলো, অন্য জনেরটা কবুল করা হলো না। (যার কুরবানী কবুল করা হয় নি) সে (অন্য ভাইকে) বললো,(খোদার কসম!) আমি তোমাকে মেরে ফেলবো। (অন্য ভাই) জবাব দিল,আল্লাহ তো মুত্তাকিদের (নজরানা) কবুল করে থাকেন”।
 
এই আয়াতটিতে হযরত আদম (আ) এর সময়কার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। আদম (আ) এর সন্তান ছিলেন হাবিল এবং কাবিল। তারা দুজনেই আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানী করার জন্যে আদিষ্ট হয়েছিল। বলা হয়েছিল দুজনের মধ্যে যার কোরবানী আল্লাহর দরবারে গৃহীত হবে সে-ই হবে আদম (আ) এর স্থলাভিষিক্ত। কোরবানী করার পর গৃহীত হয়েছিল হাবিলেরটা। কারণ হাবিল ছিল অত্যন্ত পরহেজগার এবং আল্লাহর প্রতি অসম্ভব নিবেদিতপ্রাণ। এদিকে কাবিলের কোরবানী গৃহীত না হওয়ায় ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়েছিল। আপন ভাই হাবিলের প্রতি তার মনের ভেতরে হিংসার আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলে ওঠে। অবশেষে ঐ হিংসার আগুনে পুড়েই কাবিল তার আপন ভাই হাবিলকে হত্যা করে।
হযরত ইউসূফ (আ) এর জীবন কাহিনীতেও আমরা লক্ষ্য করবো তাঁর ভাইয়েরা হিংসা করেই তাঁকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
 
হিংসা এক ধরনের বিষ। প্রথমে এই বিষ হিংসুকের নিজের জীবনটাকে তিক্ত, অতিষ্ঠ এবং বেদনাপূর্ণ করে তুলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়, তারপর ঐ বিষ ছড়িয়ে পড়ে পুরো সমাজ ব্যবস্থায়। হত্যা, খুন, রাহাজানি, বিশ্বাসঘাতকতার মতো বিচিত্র সামাজিক সংকটের মূলে রয়েছে এই হিংসার বিষ। পবিত্র কুরআনে তাই এই হিংসাকে মানুষের জন্যে ভয়ংকর হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। সূরা ফালাকের পঞ্চম আয়াতে বলা হয়েছে: “এবং (আশ্রয় চাচ্ছি) হিংসুকের অনিষ্টকারিতা থেকে,যখন সে হিংসা করে”। আয়িম্যাদের বর্ণনায় এসেছে “হিংসা ইমানকে খেয়ে ফেলে মানে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়, যেমন আগুন কাঠ জ্বালায়”।
 
বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাযি তাঁর “কুরআনে নৈতিকতা” শীর্ষক বইতে হিংসা এবং হিংসার পরিণতি সম্পর্কে আলী (আ) এর বক্তব্য ও দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখা করেছেন এভাবে:
 
“হিংসুক স্থায়ী কষ্টে ভোগে। এ কারণে হিংসুক মনোদৈহিক রোগে আক্রান্ত হয়। আল্লাহকে চেনা, সত্যকে উপলব্ধি করা কিংবা মারেফাত তথা আধ্যাত্মিকতার পথে হিংসা কঠিন হিজাব বা পর্দার মতো আড়াল তৈরি করে। হিংসুক ব্যক্তি সবাইকে হিংসা করে এমনকি নিজের আপনজনদেরকেও। এর ফলে হিংসুক লোক বন্ধু হারাতে বাধ্য। হিংসু কখনোই উচ্চ বা মহৎ পর্যায়ে যেতে পারে না, সে সবসময়ই বেদনাক্রান্ত থাকে। গুনাহের সাথে তার সম্পর্ক ক্রমশ বাড়তেই থাকে।
 
হিংসুক লোকেরা অপরের সম্পদের প্রাচুর্যের পাশাপাশি আধ্যাত্মিকতার দিক থেকেও কারো সমৃদ্ধি সহ্য করতে পারে না। কারণটা হিংসুক যখন বুঝতে পারে যে নিজের ভেতর দুর্বলতা আছে তখনি সে নিজেকে ছোট ভাবতে শুরু করে। এ কারণেই সে তারচেয়ে বেশি সক্ষম ব্যক্তিকে হিংসা করে। সে যখন জানতে পারে যে অপরের অবস্থানে পৌঁছার মতো ক্ষমতা তার নেই তখনি তার আক্ষেপ বাড়তে থাকে। এই আক্ষেপ থেকে শত্রুতারও জন্ম নেয়। আর এই শত্রুতার জন্ম হয় চিরন্তন হিংসা থেকেই। যেই শত্রুতা তার প্রতিযোগীকে পর্যন্ত মেরে ফেলতে প্ররোচিত করে। তবুও হিংসুক চায় নিজের শক্তিকে সংরক্ষণ করতে এবং এই ইচ্ছা চরিতার্থ করতে সে হেন কোনো অপরাধ নেই যা করতে সে দ্বিধা করে।
 
একটি হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে পরিসমাপ্তি টানবো আজকের আলোচনার। হযরত যাকারিয়া (আ) থেকে একটি বর্ণনায় এসেছে,আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন: “হিংসুক ব্যক্তি আমার নিয়ামতের শত্রু, আমার ফয়সালায় সে ক্ষিপ্ত, সে তাকদিরে বিশ্বাস করে না। আমার বান্দাদের মাঝে বণ্টন পদ্ধতিতেও সে অসন্তুষ্ট”।
 
এই হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে হিংসা মারাত্মক এক অগ্নিশিখা। এই আগুন হিংসুকের ইমানের শেকড়গুলো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। আল্লাহ আমাদেরকে এই অসৎ গুণ থেকে রক্ষা করুন।
হিংসা হলো অপরের সার্বিক সম্পদ ধ্বংস করার চিন্তা। হিংসুক ব্যক্তি কখনোই আরেকজনের সুখ শান্তি সহ্য করতে পারে না, অন্য কেউ নিয়ামতের অধিকারী হোক তা চায় না। হিংসা শেষ পর্যন্ত অক্ষমতা, ব্যর্থতা এবং নিজের ভেতর সামর্থের স্বল্পতার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এর ফলে নিজের প্রতি এক ধরনের তাচ্ছিল্যের ভাব জন্মে এবং সেই থেকে এক ধরনের ভীতিও কাজ করে হিংসুকের ভেতর। হিংসুক মাঝে মাঝে ভাবে যে জিনিস সে পেতে চেয়েছিল কিংবা যে অবস্থানে সে পৌঁছতে চেয়েছিল অন্য কেউ সেই অবস্থানে পৌঁছে গেছে।
 
হিংসুক সাধারণত চেষ্টা করে তার প্রতিযোগীকে বিনা বাক্য ব্যয়ে বিনা সমালোচনায় সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজের অবস্থানকে দৃঢ় করতে। প্রকৃতপক্ষে হিংসুক ব্যক্তির মূল সমস্যাটা হলো অন্যের ভালো বা সুখশান্তি, অন্যের ছোটোখাটো আনন্দটাও তার চোখে অনেক বড়ো হয়ে ফুটে ওঠে। এটাই তার চক্ষুশূল হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু যার সুখের লেশ দেখে সে হিংসা করলো তার যে অনেক দুঃখ কষ্টও আছে, তার জীবনে যে বহু রকম সমস্যাও রয়েছে সেগুলো সে দেখতে চায় না বা দেখেও দেখে না। তার মানে হলো হিংসুকেরা কোনো মানুষের পুরো জীবনটাকে দেখে না, দেখে শুধু সাময়িক আনন্দ বা সুখটুকু যা হয়তো ঐ ব্যক্তির জীবনে একেবারেই ক্ষণিকের।
 
এ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে হিংসুক লোক না নিজ জীবন না অপরের জীবন-কারোরই সঠিক ও প্রকৃত জীবনচিত্র দেখতে পায় না। তাই অন্যের অবস্থান সম্পর্কে যে তথ্য সে নিজের মাঝে লালন করে, সেই তথ্যটুকুও সঠিক নয়,বিকৃত। এ কারণেই ইসলাম এই হিংসাকে একটি অসৎ গুণ এবং নৈতিকতা বিরোধী একটি প্রবণতা বলে মনে করে। সেইসাথে এই প্রবণতা থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্যে উৎসাহিত করে। পবিত্র কুরআনের বহু আয়াত এবং আহতে বাইত (আ) এর বক্তব্যে হিংসা থেকে বেঁচে থাকার জন্যে বহুভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে। আয়িম্যায়ে মাসুমিন (আ) দুনিয়া এবং আখিরাতে হিংসুকদের জন্যে বহু রকমের ক্ষতি আছে বলে উল্লেখ করেছেন।
 
এইসব ক্ষতির মধ্যে রয়েছে দ্বীনের প্রতি অনীহা, ইমান নষ্ট করে ফেলা, আল্লাহর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসা, আল্লাহর আনুগত্য মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধা সৃষ্টি হওয়া এবং সামগ্রিক সৌন্দর্য ও সৎগুণাবলি নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। আর নষ্ট হয়ে গেলে একটি মানুষ যে খুব সহজেই যাবতীয় গুনাহের কাজে লিপ্ত হতে দ্বিধা করবে না তা তো বলারই অপেক্ষা রাখে না। তাই বলা যায় হিংসা হলো যাবতীয় গুনাহের সূতিকাগার। তাছাড়া একজন হিংসুক লোকের ভেতরে সারাক্ষণ দুঃখ বেদনার যন্ত্রণা বইতেই থাকে। হিংসুক লোক এমন সব বস্তু পাবার চিন্তায় সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে যা পাবার বা অর্জন করার মতো যোগ্যতা কিংবা সামর্থ তার মোটেই নেই।
 
ফলে না পাবার বেদনায় প্রাপ্য বস্তুগুলো পাবার সামর্থও সে হারিয়ে ফেলে। ফলে মানসিক প্রশান্তি তার অন্তর থেকে চলে যায়। এই না পাওয়ার বেদনায় ভুগতে ভুগতে এক সময় হিংসুক ব্যক্তি বিচিত্র মানসিক সমস্যায় ভুগতে থাকে যার পরিণতিতে শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়। এজন্যে হযরত আলি (আ) বলেছেন ‘হিংসা থেকে দূরে থাকাই শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি এবং সুস্থতার উৎস’। রাসূলে খোদা (সা) বলেছেন ‘হিংসুক সবচেয়ে কম আনন্দ উপভোগ করে থাকে’।
 
এবারে চলুন এই কঠিন মানসিক রোগ দূর করার জন্যে ইসলামের কী নির্দেশনা আছে, সেগুলো নিয়ে খানিকটা কথা বলি। হিংসা রোগের অবসান ঘটাতে ইসলাম বহু পন্থা বাতলে দিয়েছে, এগুলো মানসিক চিকিৎসার পর্যায়েও পড়ে যায়। হিংসা রোগের প্রথম ট্রিটমেন্ট হলো এই রোগের পরিণতিতে হিংসুকের শরীর ও মনের ওপর কীরকম নেতিবাচক প্রভাব ফেলে আর ইহকাল ও পরকালে এই রোগী কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেদিকে দৃষ্টি ফেরানোর ব্যবস্থা করা। হিংসা রোগের চিকিৎসার জন্যে তার উৎসমূল খুঁজে বের করতে হবে যাতে তাকে সমূলে তুলে ফেলা যায়। হিংসার মূলে রয়েছে অবিশ্বাস, সন্দেহের মতো চিন্তার দুর্বলতা। সৃষ্টি ব্যবস্থা এবং আল্লাহ সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি হিংসার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। কেননা হিংসুক অপরের প্রতি আল্লাহর দয়া অনুগ্রহকে সহ্য করতে পারে না, সে ভাবে আল্লাহ তাকে পছন্দ করে না, যদি করতো তাহলে কেন তাকে ঐ নিয়ামতটা দিলো না।
 
এ কারণে ইসলামে আল্লাহর ব্যাপারে সৎ এবং সুন্দর চিন্তা করার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর প্রতি ইমানের দৃঢ়তা এবং তাঁর গুণাবলি, তাঁর সকল কাজকর্মের প্রতি প্রশ্নহীন বিশ্বাস হিংসা রোগের চিকিৎসার আরেকটি উপায়। অর্থাৎ মানুষকে ভাবতে হবে আল্লাহ যাকে যা-ই দান করেছেন সবকিছুই তাঁর রহমত, হেকমত এবং ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতেই দিয়েছেন। মানুষের উচিত নিজের ভেতরটাকে পরিষ্কার করা। অন্যদের তুলনায় নিজেকে ছোটো মনে করা কিংবা সম্পদের দিক থেকে নিজেকে ছোট ভাবা-ইত্যাদির পরিবর্তে নিজের সম্মান এবং মর্যাদার বিষয়টি নিয়ে বেশি বেশি ভাবতে হবে। অহমিকা,আত্মপ্রশংসার পরিবর্তে আল্লাহকে চেনা এবং তাঁর প্রতি অনুগত ও বিনয়ী থাকতে হবে। কারো সাথে শত্রুতা না করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। অন্যের বদনামী না করে প্রশংসা করার অভ্যঅস গড়ে তুলতে হবে,সবার সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।
 
যাকে হিংসা করা হচ্ছে তিনিও কিন্তু হিংসুকের রোগের চিকিৎসায় এগিয়ে আসতে পারেন। তিনি যদি হিংসুক লোকটিকে দূরে ঠেলে না দিয়ে তাকে ভালোবাসেন বা কাছে টেনে নেন, তাহলে হিংসুক লোকটিও তার আচরণ পাল্টাতে বাধ্য হবে এবং বন্ধুত্বের একটা ক্ষেত্র তৈরি হবে। এভাবে ধীরে ধীরে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং হিংসার চিন্তা দূর হয়ে গিয়ে একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে। যেমনটি পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে: ‘...সৎ কাজ ও অসৎ কাজ কখনোই সমান নয়। অসৎ কাজকে সৎ এবং পূণ্য কাজের মাধ্যমে নিবৃত্ত করো, তাহলে দেখবে যার সাথে তোমার শত্রুতা ছিল অজান্তেই সে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে গেছে’।
এই বোধটুকু আল্লাহর আমাদের সবার মাঝে দান করুন।