এক নজরে ইমাম হাসান মুজতাবা (আ.)-এর জীবনবৃত্তান্ত

‘মহান  আল্লাহ তার (ইমাম হাসান মুজতাবা) মাধ্যমে আমার উম্মতের মধ্যে দু’দলকে সন্ধি করাবেন এবং তারা তার আশীর্বাদপূর্ণ অস্তিত্বের মাধ্যমে নিরাপত্তা,স্বস্তি ও শান্তি লাভ করবে।’- রাসূলুল্লাহ (সা.)

জন্ম:: ৩য় হিজরির ১৫ রমযান,মঙ্গলবার অথবা বৃহস্পতিবার,পবিত্র মদীনা নগরী।

নাম: হাসান (তাওরাতে শুব্বার এবং ইনজীলে তাব্)

কুনিয়াত: আবু মুহাম্মাদ

লকব: মুজতাবা,তাইয়্যেব,সাইয়্যেদ,ওয়ালী,তাকী,হুজ্জাত,সিব্ত,

কায়েম,ওয়াযির,আমীন।

আংটির ছাপ : আল ইযযাতু ইলাল্লাহ্ (সম্মান আল্লাহরই জন্য)

প্রহরী: দু’ব্যক্তি মহান ইমামের প্রহরী হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। একজনের নাম সাফিনা (রাসূলুল্লাহ সা.-এর গোলাম) এবং অন্যজনের নাম কায়েস ইবনে আবদুর রহমান।

ইমামত কাল : প্রায় ১০ বছর (৪০ হিজরির ২১ রমজান শুক্রবার তাঁর ইমামতকাল শুরু হয়)

আয়ুষ্কালের সংক্ষিপ্ত বিবরণ : ইমাম হাসান (আ.) যে বছর ভূমিষ্ট হন তখন তাঁর মাতা হযরত ফাতেমা যাহরা (সা. আ.)-এর বয়স ছিল ১২ বছর। তাঁর জীবনের প্রায় আট বছর কাটে নানা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সাথে,আট বছরের কিছু বেশি সময় কাটে তাঁর মহীয়ষী মাতা হযরত ফাতেমা যাহরার সাথে,আর প্রায় ৩৭ বছর কাটে তাঁর মহান পিতা হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)-এর সান্নিধ্যে। অতঃপর প্রায় ১০ বছর তাঁর ইমামতকাল ছিল। সব মিলিয়ে এ মজলুম ইমামের আয়ুষ্কাল ৪৭ থেকে ৫০ বছর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলি : তিনি জীবনে ২৫ বার পায়ে হেঁটে হজ্জ করেন,দু’বার নিজের সমুদয় সম্পদ গরীব ও ফকিরদের মধ্যে বণ্টন করে দেন,দামেশকের অবাধ্য গভর্নর মু‘আবিয়ার উপর্যুপরি ষড়যন্ত্র ও স্বীয় সঙ্গীবৃন্দের সীমাহীন বিশ্বাসঘাতকতা ও অসহযোগিতার ফলে তিনি খেলাফত পদের ব্যাপারে আমীরে মু‘আবিয়ার সাথে সন্ধি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ইতিহাসের নির্ভরযোগ্য বর্ণনা মোতাবেক এ ঘটনা তাঁর ইমামত লাভের ছয় মাসের কিছু বেশি সময়ের মাথায় সংঘটিত হয়।

শাহাদাত : আমীরে মু‘আবিয়ার প্ররোচনায় স্ত্রী জা’দা বিনতে আশআছ বিন কায়েস কিন্দী শরবতের সাথে বিষ মিশিয়ে তা ইমাম হাসান (আ.)-কে পান করতে দেয়। এর ঠিক ৪০ দিন পর অর্থাৎ ৫০ মতান্তরে ৫৩ হিজরির ২৮ সফর বৃহস্পতিবার এ মহান ইমাম শাহাদাত বরণ করেন। ইমামের জানাযা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রওজায় যিয়ারাতের জন্য নিয়ে গেলে হযরত আয়েশার বাধার মুখে এক অপ্রীতিকর অবস্থার অবতারণা ঘটে এবং এক পর্যায়ে ইমামের জানাযা প্রতিহত করার লক্ষ্যে সেদিকে তীরবর্ষণ করা হয়। পরে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর নির্দেশে জানাযাকে জান্নাতুল বাকী গোরস্তান অভিমুখে পরিচালিত করা হয় এবং সেখানেই দাফন করা হয়।

ইমামের সন্তানবর্গ : সাইয়্যেদ মুহসীন আমীনের মতে ইমামের ১৫ কন্যা এবং ৮ পুত্রসন্তান ছিল। তবে কোন কোন মুহাদ্দিস ইমামের সর্বমোট ১৫ জন সন্তান ছিল বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন।

ইমাম হাসান (আ.)-এর যিয়ারতের নামাযের নিয়ম : মোট দু’রাকাত নামায। প্রত্যেক রাকাতে সূরা হামদ পাঠের পর ২৫ বার সূরা তাওহীদ পাঠ করতে হয়। অতঃপর নামাযের সালাম ফিরিয়ে হযরত ফাতেমা যাহরা (আ.)-এর তাসবীহ পাঠ করতে হয়। অতঃপর যদি যিয়ারতকারী ইমামকে উসিলা করে  আল্লাহর কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করে তাহলে ইনশা  আল্লাহ তা পূরণ হবে।