মায়ের মর্যাদা

প্রত্যেক মানুষ পৃথিবীতে আসা এবং বেড়ে ওঠার পেছনে প্রধান ভূমিকা থাকে মায়ের। প্রত্যেক মা যদি সহিষ্ণু, মমতাময়ী, কল্যাণকামী না হতেন তবে মানবসভ্যতার চাকা শ্লথ হয়ে যেত। জন্মেরর সূচনাপর্ব থেকে পরিণত বয়স পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে মায়ের অবদান অতুলনীয়। সন্তানের জন্ম ও বেড়ে ওঠার পেছনে মা-বাবার উভয়ের হাত রয়েছে-একথা অনস্বীকার্য। তবে এটা সর্বজনস্বীকৃত যে, এক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকাই প্রধান।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন, তোমার প্রতিপালক নিশ্চিত বিধান প্রদান করেছেন যে, তাঁকে ব্যতীত অন্য কারও উপাসনা করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচার করবে; যদি তাঁদের মধ্যে একজন বা উভয়েই তোমার সম্মুখে বার্ধক্যে উপনীত হন, তবে তাঁদেরকে ‘উফ্’ (ন্যূনতম অসম্মানজনক কথা) পর্যন্ত বলবে না, আর তাদের ধমক দিয়ে (ও ভর্ৎসনা করে) তাড়িয়ে দিও না এবং তাদের সাথে সম্মানসূচক (মমতাপূর্ণ) কথা বলবে।

এবং তাঁদের সম্মুখে বিনয়-নম্র হয়ে নিজের কাঁধ নত করে দেবে এবং বলবে (তাঁদের জন্য প্রার্থনা করতে থাকবে), ‘হে আমার প্রতিপালক! তাঁদের উভয়ের প্রতি করুণা কর, যেরূপে শৈশবে তাঁরা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল, ২৩-২৪ আয়াত)।

নিম্নে মায়ের মর্যাদা সম্পর্কিত কিছু হাদীস উপস্থাপন করা হল:

১) রাসূলে খোদা (সা) বলেছেনঃ  মায়েদের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশ্‌ত। ( কানযুল উম্মালঃ ৪৫৪৩৯, মুনতাখাবে মিযানুল হিকমাহঃ ৬১৪ )

২) ইমাম সাদেক (আ) বলেছেনঃ এক লোক রাসূলের খেদমাতে এসে আরজ করলো-হে রাসুল! খেদমত করবো কার? রাসূল বললেনঃ তোমার মায়ের। লোকটি বললো-তারপর কার? রাসূল বললেনঃ তোমার মায়ের। লোকটি বললো-তারপর? রাসূল বললেন-তোমার মায়ের। লোকটি আবারো জিজ্ঞেস করলো তারপর কার? নবীজী বললেন-তোমার বাবার। ( আল-কাফিঃ ৯/১৫৯/২,মুনতাখাবে মিযানুল হিকমাহঃ ৬১৪ )

৩) রাসূলে কারিম (সা) বলেছেনঃ নারীর প্রতি সবচেয়ে বেশি অধিকার হচ্ছে তার স্বামীর,আর পুরুষের উপর সবচেয়ে বেশি অধিকার হচ্ছে তার মায়ের। ( কানযুল উম্মালঃ ৪৪৭৭১, মুনতাখাবে মিযানুল হিকমাহঃ ২৫৪ )

৪) প্রত্যেকেরই দুর্ভাগ্য কিংবা সৌভাগ্যের গোড়াপত্তন ঘটে মায়ের গর্ভে।

৫) মা-ই হলেন তার সন্তানের ইহকালীন এবং পরকালীন সৌভাগ্য নিশ্চিত করার  প্রশিক্ষক।

৬) নফল নামায পড়া অবস্থায় যদি পিতা তোমাকে ডাকে তাহলে নামায ছাড়া যাবে  না, কিন্তু যদি তোমার মা তোমাকে ডাকে তাহলে নামায ছেড়ে দাও।