মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে হিজাব
হিজাব হচ্ছে নারী এবং নামাহরাম ব্যক্তিদের মধ্যে সীমা নির্ধারণকারী একটি বিষয় এবং যৌন প্রবৃত্তিকে সংযতকরণের একটি উপকরণ । আর এই অগ্নি শিখা সঠিকভাবে নির্বাপিত হওয়া ও তার স্বাভাবিক পথে প্রবাহিত হওয়ার ফলে সমাজে বিদ্যমান অনেক সমস্যাই যেমন হত্যা , অপরাধ ও অন্যান্য অনাচার দূর হয়ে যাবে । আর যদি এই সীমাটিকে উঠিয়ে নেয়া হয় এবং বাঁধনহীন স্বাধীনতা আমাদের সমাজে ভিত গাড়তে পারে তবে সেক্ষেত্রে আমরা এক বন্য সমাজের মুখোমুখী হবো । যার ফলে সমাজে অস্থিরতা , সহিংসতা ও অরাজকতা আরো বৃদ্ধি পাবে । কেননা যৌন প্রবণতা প্রচন্ড শক্তিশালী লাগামহীন এক ছুটন্ত ঘোড়ার ন্যায় । তাই যতই কেউ তার আনুগত্য করবে ততই সে উদ্ধত হয়ে উঠবে এবং মানুষের জন্য ততই ক্ষতি বয়ে আনবে । অথবা তা হচ্ছে এমন আগুন , তাতে যত বেশী জ্বালানী দেয়া যাবে তার শিখাগুলো ততবেশী লেলিহান হবে । প্রকৃতপক্ষে মানুষকে যদি মুক্তভাবে ছেড়ে দেয়া হয় এবং তার অন্তরে আল্লাহর ভালবাসা ও ভয় না থাকে তবে দুনিয়ার বিষয়াদি যেমন : অর্থ , মর্যাদা , যৌনতা ইত্যাদির ক্ষেত্রে কখনোই পরিতৃপ্ত হবে না । আর এর ফলে সে দুনিয়াবী চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে এতটা নিমজ্জিত হয়ে যাবে যে নিজেকে ও অন্যদেরকেও ধ্বংস করবে । হিজাব হচ্ছে এমনই একটি বিষয় যা নারী ও পুরুষের মধ্যে বিশেষ সীমা টেনে দিয়েছে যা যৌন প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ করে সীমালংঘন থেকে উভয়কে রক্ষা করে থাকে ।
নারীদের বেহায়াপনা যা তাদের সাজ-সজ্জা , পোশাক- আষাক , গোপন অভিসার প্রভৃতির মাধ্যমে প্রকাশিত হয় তা পুরুষদেরকে বিশেষ করে যুবকদেরকে সবসময়ের জন্য দৈহিকভাবে উত্তেজিত করে রাখে । আর তা এমনই এক উত্তেজনা যা তাদের মধ্যে বিষন্নতা ও অবসাদের সৃষ্টি করে এবং তাদের স্নায়ুবিকভাবে দুর্বল করে । যার পরিণতিতে বিভিন্ন মানসিক রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে । কেননা মানুষের স্নায়ুর ক্ষমতা কতই যে , সে এত পরিমান চাপ ও উত্তেজনা সহ্য করতে পারবে ? মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা কি এটা বলেন না যে , অবিরাম উত্তেজনা ও চাপ মানুষকে মানসিক রোগে আক্রান্ত করে ফেলে ? আর যদি তা যৌনতার মত একটি বিষয় হয়ে থাকে তবে তো কথাই নেই । কেননা ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে , মানুষের যৌন প্রবণতার কারণে কত বড় বড় অঘটন ঘটেছে যার পরিণতি ছিল খুবই ভয়ঙ্কর । কেউ কেউ বলেছেন ,“ ইতিহাসে এমন কোন ঘটনাই খুঁজে পাওয়া যাবে না যে , যার পেছনে কোন এক নারী ছিল না । ”
অনবরত যৌন প্রবণতাকে উস্কে দেয়া , উলঙ্গপনা এবং বেহায়াপনার মাধ্যমে তাকে আরো প্রজ্জলিত করা কি আগুনের সাথে খেলা করা নয় ? এ কাজ কি বুদ্ধিবৃত্তি ও বিবেক সম্মত ? ইসলাম চায় যে , মুসলমান নারী-পুরুষ সুস্থ মানসিকতা ও মস্তিস্ক নিয়ে পবিত্র চক্ষু-কর্ণের অধিকারী হোক । আর এটা হচ্ছে হিজাবের একটি দর্শন ।