হিজাব পারিবারিক বন্ধনকে দৃঢ় করে
নারীর হিজাবই পরিবারের প্রশান্তি , পারস্পরিক বিশ্বাস , আন্তরিকতা , ও ভালবাসার নিশ্চয়তা বিধায়ক । কারণ নারী-পুরুষ উভয়ে তার পরিবারের গণ্ডিতে যৌন প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে । আর এই হিজাবই ইসলাম সম্মত বিবাহের দিকে সমাজকে এগিয়ে নিতে পারে । এ ধরনের বিবাহের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এক ঐশ্বরিক নিগূঢ় সম্পর্কের সৃষ্টি হয়ে থাকে । আর যখনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঐরূপ সম্পর্কের সৃষ্টি হয় তখন তাদের পরিবার হয়ে উঠে অধিক সুন্দর ও সুখময় । পক্ষান্তরে বেপর্দা ও বন্ধনহীন স্বাধীনতা পরিবারে একে অপরের মধ্যে বন্ধনকে দুর্বল করে থাকে । কেননা এরূপ পরিবারের ভিত্তি শত্রুতা ও ঘৃণার উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং সাধারণত এ ধরনের ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন দীর্ঘস্থায়ী হয় না । কারণ তাদের সংসার জীবন যৌনতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল এবং যেহেতু কিছু দিন পরে ঐ চাহিদা তার রূপ ও রং পাল্টিয়ে নতরূপ ও রংয়ে সজ্জিত হয়ে থাকে ফলে সংসারে অশান্তি , সম্পর্কের অবনতি , অশালীন আচরণ প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেয় ; যার ফলশ্রুতিতে তালাকের মাধ্যমে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে । আর তাদের সন্তানরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে এদিক ওদিকে , যা উত্তম আদর্শে গড়ে ওঠার জন্য মোটেই উপযুক্ত নয় ।
হিজাব হচ্ছে দুঃশ্চরিত্র ব্যক্তিদের সামনে একটি বাঁধ সরূপ , যার ফলে এ ধরনের যুবকরা বিবাহের দিকে ধাবিত হয় । অন্যদিকে বেপর্দা ও সঠিক পর্দার অভাব যুবকদের বিবাহ করা থেকে দূরে সরিয়ে রাখে এবং তারা বিভিন্ন অজুহাতে তাতে রাজি হতে চায় না । কেননা তাদের যৌন চাহিদা পূরণ করার জন্য তো পথ খোলাই আছে , তাই বিবাহের কি প্রয়োজন ?
যে পরিবারে ও সমাজে হিজাব ও ইসলামী অন্যান্য সব আদেশ-নিষেধ পুঙ্ক্ষানুপুঙ্খভাবে মেনে চলা হয় সে পরিবারে ও সমাজে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে গভীবভাবে ভালবেসে থাকে । কিন্তু উলঙ্গপনা ও বেহায়াপনার বাজারে নারীরা যেখানে পরিপূর্ণভাবে পণ্যের মত ব্যবহৃত হয় সেখানে বিবাহ নামক পবিত্র বন্ধনটির কোন মূল্যই থাকে না । আর তাদের পরিবারগুলো মাকড়সার জালের মত অতি দ্রুত ধ্বংস হয়ে যায় এবং শিশুরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে ।
3- হিজাব , অবৈধ সন্তান আসার পথ রোধ করে : পর্দাহীনতার সব থেকে কষ্টদায়ক ফল হচ্ছে অশ্লীলতা ও ব্যভিচার বৃদ্ধি এবং অবৈধ সন্তান জন্মগ্রহণ । এর প্রমাণ আমাদের চোখের সামনেই রয়েছে আর তা হচ্ছে পশ্চিমা বিশ্ব । আর যা কিছু দৃশ্যমান তা মুখে বলার প্রয়োজন রাখে না । সেখানে ব্যভিচারের মাধ্যমে জন্মগ্রহণকারী অবৈধ সন্তানরাই সমাজের সব থেকে নিকৃষ্টতম কাজের সাথে জড়িত এবং বিভিন্ন ধরনের জঘন্য অপরাধ তারা করে । এরূপ কয়েকটি বিশেষ খবরের দিকে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি :
ইংল্যাণ্ডে গত বছরের শেষের তিন মাসে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের প্রায় 31 শতাংশের পিতা কে তা জানা নেই । অধিকাংশ পরিবারে যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিয়ের আগেই অবৈধ সম্পর্ক ছিল বিয়ের পরে তাদের সংসার ভেঙ্গে গেছে অর্থাৎ তালাক হয়ে গেছে । আর তাই তাদের অবৈধ সম্পর্কের ফলে যে সব সন্তান ভুমিষ্ট হয়েছিল দিনের পর দিন তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে ।170
সি ,এন ,এন সংবাদ সংস্থা আরো বলে যে , আমেরিকার শিশুদের 50 শতাংশই হচ্ছে অবৈধ । আর যে শিশুরা পিতা-মাতার বিয়ের আগেই তাদের অবৈধ সম্পকের্র কারণে জন্মগ্রহণ করেছিল , পিতা-মাতার মধ্যে বিচ্ছেদের হয়ে ফলশ্রুতিতে অভিভাবকহীন জীবন-যাপন করছে এমন শিশুর সংখ্যা সেখানে দিনের পর দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।171
সীমাহীন স্বাধীনতা এবং নষ্ট সংস্কৃতির পরিণতিতেই কি পাশ্চাত্যে এতসব অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে না ? অবশ্যই । আর তাই মুসলমানদের হুশিয়ার থাকতে হবে যে , তারা যেন শিরক ও কুফরী সংস্কৃতির মধু মাখানো কথায় বিভ্রান্ত না হন । তারা যদি ঐ সব মধু মাখা কথায় তাদের নষ্ট সংস্কৃতির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে তবে তাদের অপেক্ষায় রয়েছে কঠিন পরিণতি ।