5%

হযরত ফাতিমা (সালামুল্লাহ আলাইহা)-এর শিক্ষা

আসমা বিনতে উ ’ মাইস বলেন : একদিন হযরত ফাতিমা (আ.) আমাকে বললেন : আমি মদীনার মানুষদের অনুসৃত পদ্ধতির (যেমন তারা তাদের স্ত্রীদের মৃত্যুর পর তাদেরকে এমন ভাবে দাফন করার জন্য নিয়ে যায় যে মৃতদেহের উপর শুধুমাত্র এক খণ্ড কাপড় থাকে যার নিচ দিয়ে ঐ মৃতের শরীর দেখা যায়) প্রতি অসন্তুষ্ট ।

আসমা বলল : আমি আবিসিনিয়ায় (বর্তমান ইথিওপিয়া) এমন কিছু দেখেছি যাতে করে তারা মৃত ব্যক্তিদেরকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছিল । তারপর সে খেজুর গাছের শক্ত শাখা দিয়ে একটি তাবুত (খাটিয়া) তৈরী করল এবং পরবর্তীতে ঐ তাবুতের চারপাশে কাপড় দিয়ে ঘিরে দিল । সে আরো বলল যে , আবিসিনিয়ার লোকেরা মতৃ দেহটিকে এমন একটি তাবুতের মধ্যে শুইয়ে দেয় যাতে করে ঐ মৃত দেহটি দেখা না যায় ।

হযরত ফাতিমা (আ.) যখন সেটি দেখলেন তখন তিনি বললেন : এটা অতি উত্তম আমি যখন মৃত্যুবরণ করব তখন আমাকে এইরূপ কিছুতে করে নিয়ে যাবে ।

ইমাম সাদিক (আ.) বলেন :

ইসলামে প্রথম যার পবিত্র মৃতদেহটি তাবুতে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তিনি হচ্ছেন হযরত ফাতিমা (আ.) ।199

ইবনে আব্বাস বলেন : যখন হযরত ফাতিমা (আ.) (তার উপর আপতিত বিভিন্নরূপ মুসিবত ও নির্যাতনে) অসুস্থ হয়ে পড়লেন তখন তিনি আসমাকে বলেন : আমার জানাযাটি এমন ভাবে নিয়ে যেও না যাতে করে আমার শরীরের আকৃতি বাইরে থেকে বুঝা যায় । আসমা বিনতে উ ’ মাইস খেজুর গাছের শাখা দিয়ে তাঁর জন্য একটি তাবুত তৈরী করেছিল এবং সেটাই ছিল ইসলামের প্রথম তাবুত । যখন হযরত ফাতিমা (আ.) তা দেখলেন তখন একটু মুচকি হেসে ছিলেন । এ সম্পর্কে আসমা বলেন , রাসূল (সা.) ওফাতের পর থেকে ঐ দিন পর্যন্ত তাকে এত খুশি দেখি নি । তারপর তাঁর পবিত্র জানাযাটি তাতে করে রাতে নিয়ে যাওয়া এবং দাফন করা হয় ।200

হিজাব সম্পর্কে আমিরুল মু মিনিন হযরত আলী (আ.)-এর অতি মর্যাদা সম্পন্ন কন্যার কথা

হযরত জয়নাব (আ.) সিরিয়ার দামেস্ক শহরে অভিশপ্ত ইয়াযিদকে উদ্দেশ্য করে বলেন :

এই মুক্তি প্রাপ্ত লোকের ছেলে (ইয়াযিদ) এটা কি ন্যায়পরায়ণতা যে , নিজের স্ত্রী ও কাজের মেয়েদেরকে ভাল স্থানে পর্দার মধ্যে রাখবে আর রাসূল (সা.)-এর কন্যাদেরকে বন্দী , উম্মুক্ত মুখ মণ্ডল ও পর্দাহীন অবস্থায় তাদের শত্রুদের সাথে এ শহর থেকে ও শহরে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়াবে এবং সেসব স্থানের লোকজন তাদেরকে দেখবে আর কাছের ও দূরের খারাপ ও ভাল (সকল প্রকৃতির) লোক তাদের চেহারার উপর দৃষ্টি ফেলবে ?201

হযরত যয়নাব (আ.) কারবালার ঐ মর্মান্তিক ঘটনা যার মত বড় শোকাবহ ঘটনা পৃথিবীতে ঘটে নি সেই মসিবতের মধ্যেও তিনি নারীদের পর্দার প্রতি ইশারা করেছেন । ঐ সময়ে তাকে যে বিষয়টি বেশী পীড়া দিয়েছে এবং অন্তরে জালার সৃষ্টি করেছিল তা হচ্ছে বেপর্দা অবস্থায় নামাহরামদের সামনে থাকাটা । হে মুসলমান নারীরা হযরত জয়নাবের এই কাজটি আমাদের জন্য শিক্ষা স্বরূপ নয় কি ? হে আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন যুবকরা! পৌরুষত্বের অধিকারী কেউ কি এটা মেনে নিতে পারে যে , তাদের স্ত্রী , কন্যা , বোন ও নারীরা পাতলা পোশাক পরে নামাহরামদের দৃষ্টিতে পড়ুক এবং তার মাধ্যমে ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি হোক ?