14. নবীগণ আজীবন মা‘ সুম (নিষ্পাপ) :
আমরা বিশ্বাস করি : সমস্ত নবী-রাসূলগণ মা‘ সুম বা নিষ্পাপ অর্থাৎ তাদের সমস্ত জীবন (নবুয়্যাতের পূর্বে হোক অথবা পরে হোক) সব রকমের গুনাহ্ ও ভুল-ত্রুটি থেকে আল্লাহর সাহায্য ও সহযোগিতায় নিরাপদে থাকা। কেননা , যিনি নবী হবেন তিনি যদি গুনাহ কিংবা ভুল- ত্রুটির মধ্যে লিপ্ত হন তাহলে নবুয়্যাতের পদের জন্যে যে আস্তা ও নির্ভরতা দরকার তা হারিয়ে যাবে এবং লোকেরা তাঁকে আল্লাহ্ ও তাদের নিজেদের মধ্যেকার একজন নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসাবে মেনে নিবে না। আর তাঁকে জীবনের সমস্ত কাজ-কর্মের ক্ষেত্রে নিজেদের আদর্শ নেতা হিসাবে মেনে নিবে না।
এ কারণেই আমরা বিশ্বাস করি : যদিও কোরআনের কোন কোন আয়াতে বাহ্যিকভাবে কোন কোন নবীর গুনাহ্ সম্পর্কে ইংগিত করা হয়েছে ; যেমন : (তারকে আওলা) (অর্থাৎ দু ' টি ভাল কাজের মধ্যে যে কাজটি কম ভাল সেটি গ্রহণ করেছেন। বস্তুতঃপক্ষে উচিৎ ছিল অধিক ভাল কাজটি বাছাই করা।) অথবা অন্য কথায় যেমন :‘ নেককার লোকদের ভাল কাজ কখনও নৈকট্য হাসিলকারীদের গুনাহ্ হিসাবে পরিগণিত হয়’ । কেননা , প্রত্যেকের কাছে তার পদ-মর্যাদা হিসাবে কাজ-কর্ম আশা করা হয়। (আল্লামা মাজলিসী বিহারুল আনোয়ারে এই হাদীসটির কোন ইমামে বলেছেন তা উল্লেখ না করে বলেছেন , কোন এক ইমাম থেকে বর্ণিত হয়েছে। (বিহারুল আনোয়ার , 25 তম খঃ , পৃঃ 205)।
15. তাঁরা আল্লাহর অনুগত বান্দা :
আমরা বিশ্বাস করি : নবী-রাসূলগণের সবচেয়ে বড় গর্ব ও গৌরবের বিষয় ছিল এই যে , তাঁরা আল্লাহর অনুগত ও বাধ্যগত বান্দা ছিলেন , এ কারণেই আমরা প্রতিদিন আমাদের নামাযসমূহে আমাদের নবী (সাঃ) সম্পর্কে এ বাক্যটি বার বার উচ্চারণ করি :‘ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে , মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল’ ।
আমরা বিশ্বাস রাখি : কোন একজন নবী ও“ উলুহিয়্যাত” তথা নিজেকে উপাস্য হিসাবে দাবী করেননি এবং লোকদেরকে তাঁদের পুজা করার জন্যে আহ্বান জানাননি। আল্লাহ্ বলেন :
‘ কোন মানুষের পক্ষেই এটা সমিচীন নয় যে , মহান আল্লাহ্ তাকে ঐশী কিতাব , বিজ্ঞতা ও নবুয়্যাত দান করবেন , অতঃপর সে লোকদেরকে বলবে যে , আল্লাহকে ত্যাগ করে আমার উপাসনা কর’ ( সূরা : আলে ইমরান 79)।
এমনকি হযরত ঈসাও (আঃ) কখনও লোকদেরকে তাঁর পুজা করতে আহ্বান জানাননি এবং সব সময় নিজেকে আল্লাহর সৃষ্টি ও তাঁর বান্দা ও তাঁর প্রেরিত পুরুষ বলে জানতেন। আল্লাহ্ বলেন :
‘ ঈসা (আঃ) কখনও একথা অস্বীকার করেননি যে , তিনি আল্লাহর বান্দা। আর (আল্লাহর) নৈকট্য লাভকারী ফেরেশ্তাও (কখনো নিজেদেরকে আল্লাহর বান্দা হিসাবে অস্বীকার করেননি’ (সূরা : নিসা 172)।
খৃষ্টবাদীদের এখনকার ইতিহাসই সাক্ষী দেয় যে ,“ ত্রিত্ববাদ বিশ্বাস” (তিন খোদার বিশ্বাস) খৃষ্টবাদের প্রথম শতাব্দীতে অস্তিত্ব ছিল না। তাদের এ ত্রিত্ববাদের মতবাদ পরবর্তীতে সৃষ্টি হয়েছে ।