5%

অষ্টম অধ্যায়

রাজনীতি

হযরত শেইখ রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না কিন্তু তিনি ঘৃনিত পাহলভী সরকার ও শাসকগোষ্টির তীব্র বিরোধী ছিলেন। তিনি শুধু শাহের বিরোধিতাই করতেন না , মুসাদ্দেককেও সমর্থন করেন নি। তিনি আয়াতুল্লাহ ক্বাশানীর প্রশংসা করতেন এবং বলতেন :

তার ভেতরটি একটি ঝর্ণার উৎসমুখের মত

দু টি রাজনৈতিক ভবিষ্যৎবাণী

হযরত শেইখের সন্তান বলেনঃ 30 তীর 1130 ফার্সী বছর (21 জুলাই 1951) যখন শেইখ বাড়িতে আসলেন , তিনি কেঁদে ফেললেন এবং বললেনঃ

হযরত সাইয়্যেদ আল-শুহাদা এ আগুন নিভিয়ে দিয়েছেন এবং দূর্যোগকে বাধা দিয়েছেন ; অনেক লোককে হত্যার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিলো আজ। আয়াতুল্লাহ ক্বাশানী সফল (বিজয়ী) হবেন না। এক সাইয়্যেদ আসবেন তিনি বিজয়ী হবেন।

পরে তার ভবিষ্যৎবাণী প্রমাণিত হয় যে তিনি হলেন ইমাম খোমেইনী (রহঃ)।

ইসলামী বিপ্লবের ভবিষ্যৎ

ইমাম খোমেইনী সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে আনন্দ হয় যখন ইসলামী বিপ্লব সম্পর্কে তার ভবিষ্যৎবাণী জানা যায়।

প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জনাব আলী মুহাম্মাদ বিশারাতি বর্ণনা করেন যে 1979র গ্রীষ্মে যখন তিনি সিপাই-ই-পাসদারানের (ইসলামী বিপ্লবী গার্ডবাহিনী) গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান ছিলেন তিনি একটি রিপোর্ট পান যে জনাব শরিয়ত মাদারী (তৎকালীন বিদ্রোহী আলেম) মাশহাদে বলেছেন : আমি শেষ পর্যন্ত ইমাম খোমেনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবো। জনাব বিশারাতি বলেন : আমি ইমাম খোমেনীর (রাঃ) সাথে সাক্ষাত করতে গেলাম এবং অন্যান্য রিপোর্টের সাথে তাকে জানালাম যে তাঁর সম্পর্কে জনাব শরিয়ত মাদারী কী বলেছেন। ইমাম (রঃ) মাথা নিচু করে শুনলেন এবং যখন আমি কথা শেষ করলাম তিনি তার মাথা তুলে বললেনঃ

তারা কী বলছে ? আমাদের বিজয়ের নিশ্চয়তা দিয়েছেন আল্লাহ। আমরা সফল হবো এবং একটি ইসলামী সরকার গঠন করবো এবং পতাকা হস্তান্তর করবো এর প্রকৃত বহনকারী (ইমাম মাহদী -আঃ) -এর নিকট।

আমি জিজ্ঞেস করলাম : আপনি নিজে [হস্তান্তর করবেন] ?

ইমাম (রঃ) নীরব রইলেন এবং উত্তর দিলেন না ।

বারযাখে নাসির আল-দ্বীন ক্বাজার

হযরত শেইখের একজন শিষ্য নাসির আল দ্বীন শাহ কাজার-এর বারযাখের অবস্থা সম্পর্কে তার কাছ থেকে জেনে বলেনঃ

তার আত্মাকে মুক্ত করা হয় শুক্রবারে । ঐ সন্ধ্যাতে তাকে আবার জোর করে তার পূর্বস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সে কাঁদছিলো এবং প্রহরীদের কাছে ভিক্ষা চাইছিলো তাকে ফেরত না নেয়ার জন্য। যখন সে আমাকে দেখলো সে বললো : আমি যদি জানতাম আমার স্থান হবে এরকম আমি কোন দিন চিন্তাও করতাম না পৃথিবীতে আমোদ ফূর্তি করার।

অত্যাচারী রাজাদের প্রশংসা করা

হযরত শেইখ তার বন্ধু ও শিষ্যদের পাহলভী সরকারের সাথে সহযোগিতাতে বাধা দিতেন , বিশেষ করে তাদের প্রশংসা ও (কর্মকর্তাদের) শ্রদ্ধা করার বিষয়ে।

হযরত শেইখের এক শিষ্য তার উদ্বৃতি দেন যে তিনি বলেছেনঃ

আমি দেখলাম বারযাখে এক ধার্মিক ব্যক্তির বিচার হচ্ছে এবং যত খারাপ কাজ তার সময়কার স্বেচ্ছাচারী শাসক করেছে তা তার ওপর আরোপ করা হচ্ছে। যার বিচার হচ্ছিল সে প্রতিবাদ করলোঃ

আমি এ অপরাধগুলোর কোনটিই করি নি , তাকে বলা হলো : তুমি কি তার প্রশংসায় বলো নি যে দেশকে কী সুন্দর নিরাপত্তা দিয়েছে ?

সে উত্তর দিলো : হ্যা

তখন তাকে বলা হলো : তুমি তার কার্যক্রমে সন্তুষ্ট ছিলে ; সে এসব অপরাধগুলো করেছে তার রাজ্য লাভের উদ্দেশ্যে।

নাহজুল বালাগাতে ইমাম আলী (আঃ) বলেছেনঃ

যে-ই অন্য লোকের আচরণে সন্তুষ্ট সে এমন যে ঐ কাজে তাদের সাথে সহযোগিতা করেছে এবং যে-ই অন্যায় কাজ করলো দু টো গুনাহ তার জন্য লিপিবদ্ধ হয়ঃ একটি তা করার জন্য এবং অপরটি তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার জন্য। 33

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক দূতের সাথে সহযোগিতা :

হযরত শেইখের এক বন্ধু , যার ছেলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক দূতের সাথে কাজ করতো , বললোঃ মাশহাদে যাওয়ার পথে আমি হযরত শেইখের সাথে ছিলাম। তার সাথে একত্রে আমরা পবিত্র মাজার যিয়ারতে গেলাম । তিনি এক কোনায় যিয়ারত পড়তে দাঁড়ালেন ও ইমাম রেযা (আঃ) সাথে কথা বললেন ঠিক সেভাবে যেভাবে আমি আপনার সাথে কথা বলছি। যিয়ারত শেষ হওয়ার পর তিনি একটি সেজদা করলেন (কাবার দিকে ফিরে)। যখন তিনি তার মাথা সিজদা থেকে ওঠালেন তিনি আমাকে ডাকলেন (কাছে) এবং বললেনঃ

পবিত্র ইমাম (আঃ) বলেছেনঃ তোমার ছেলেকে একাজ করতে বাধা দিতে। নয়তো সে তোমার পিঠে এক ভারী বোঝা চাপিয়ে দেবে!

আমরা জানতাম না যে সে আমেরিকানদের সাথে আমেরিকা যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করেছে । প্রায় পঁচিশ বছর আগে , একদিন আমার ছেলে আমার কাছে এলো এবং বললোঃ আমি বিদেশ যাচ্ছি , আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলেছি এবং এমনকি ভিসাও নিয়ে নিয়েছি। আমরা যা করলাম তাতে তার সিদ্ধান্তে কোন পরিবর্তন এলো না , শেষ পর্যন্ত আমেরিকা চলে যাবার কিছুদিন পর সে আমাদের চিঠি লিখলো যে , তার স্ত্রী বন্ধ্যা এবং সে তাকে তালাক দিচ্ছে। তখন থেকে তার কারণে আমরা অনেক সমস্যার মাঝ দিয়ে গিয়েছি ।