8%

মধ্যপন্থা

মধ্যপন্থা হলো একটি আলো যার সারাংশ হলো বিশ্বাসের প্রাণকেন্দ্র , এর অর্থ হলো সে সব কিছুর সতর্কপূর্ণ বিবেচনা যেগুলোকে তাওহীদ ও ইরফান (আধ্যাত্মিক জ্ঞান) নিন্দা করেছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ মধ্যপন্থা হলো বিশ্বাসের অংশ।’’ মধ্যপন্থা গ্রহণ করা হয় বিশ্বাসের মাধ্যমে এবং বিশ্বাসগুলো গ্রহণ করা হয় মধ্যপন্থার মাধ্যমে। মধ্যপন্থী ব্যক্তির সব ভালো। যাকে মধ্যপন্থা দেয়া হয় নি তার সব খারাপ , যদি সে ইবাদাত করে ও সাবধানী হয় তবুও।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ভয়ের উঠোনে মধ্যপন্থায় এক কদম ফেলা সত্তর বছর ইবাদাতের চাইতে উত্তম। অন্যদিকে ঔদ্ধত্য হলো মোনাফেক্বী , সন্দেহ ও অবিশ্বাসের শুরু।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ যদি তোমার কোন লজ্জা না থাকে তাহলে যা ইচ্ছা কর।’’ এর অর্থ হচ্ছে যখন মধ্যপন্থা তোমাকে ছেড়ে যায় তখন তোমাকে শাস্তি দেয়া হবে সব ভালো অথবা খারাপ কাজের জন্য যা তুমি কর। মধ্যপন্থার শক্তি আসে দুঃখ ও ভয় থেকে এবং মধ্যপন্থা হলো ভয়ের বাসা। মধ্যপন্থার শুরু হচ্ছে ভয় এবং এর শেষ হচ্ছে স্বচ্ছ দৃষ্টি। একজন মধ্যপন্থী ব্যক্তি নিজের বিষয়গুলো নিয়ে ব্যস্ত , লোকজনের কাছ থেকে দূরে এবং তারা যা করে তা থেকে দূরে। যদি তারা সবাই এ মধ্যপন্থী লোকটিকে পরিত্যাগ করে তবুও।

রাসূলূল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ যখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা একজন বান্দাহর জন্য ভালো চান , তিনি তাকে তার ভালোগুণগুলো সম্পর্কে ভুলিয়ে দেন , তার খারাপ গুণগুলো তার চোখের সামনে তুলে ধরেন এবং যারা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার স্মরণ করে না তাদের সাথে বসাকে তার কাছে অপছন্দনীয় করে দেন।’’

মধ্যপন্থা পাঁচ প্রকারেরঃ ভুল কাজের জন্য লজ্জা , অক্ষমতার জন্য লজ্জা , সম্মানিত সমসাময়িকের সামনে মধ্যপন্থা , ভালোবাসার মধ্যপন্থা , এবং ভয়ের মধ্যপন্থা। এদের প্রত্যেকটিরই অনুসারী আছে যাদেরকে মধ্যপন্থার এ বিভিন্ন শ্রেণীতে মর্যাদা দেয়া হয়েছে।

মারেফাহ

একজন আরেফ (যার মারেফাহ আছে) থাকে মানুষের সাথে কিন্তু তার অন্তর থাকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাথে। যদি তার অন্তর চোখের এক পলকের জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে ভুলে যায় তাহলে সে তাঁর টানে মারা যাবে। আরেফ হলেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ঘটনাগুলোর আমানত রক্ষাকারী , তাঁর গোপন রহস্যের ভান্ডার , তার নূরসমূহের সিন্দুক , তাঁর সৃষ্টিকূলের প্রতি তাঁর রহমতের প্রমাণ , তাঁর বিজ্ঞানগুলোর হাতিয়ার এবং তাঁর নেয়ামত ও ন্যায়বিচারের পরিমাপ। সে লোকজনের কোন প্রয়োজন অনুভব করে না , না কোন লক্ষ্যের , আর না এ পৃথিবীর। তার ঘনিষ্ট কেউ নেই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা ছাড়া। না আছে কোন বক্তব্য , না কোন ইশারা অথবা শ্বাস একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার মাধ্যমে , আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সাথে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কাছ থেকে ছাড়া , কারণ সে তাঁর পবিত্রতার বাগানে আসা যাওয়া করছে এবং সে তাঁর সবচেয়ে সূক্ষ্ণ সহানুভূতিতে সমৃদ্ধ। মারেফাহ হচ্ছে শিকড় যার শাখা হচ্ছে বিশ্বাস।