পরিচ্ছেদ-3
কীভাবে জ্ঞানী ব্যক্তিরা ধ্বংস হয়
তাক্বওয়া (সতর্কতা) এবং ভয় হলো জ্ঞানের উত্তরাধিকার এবং এর পরিমাপ। জ্ঞান হচ্ছে আধ্যাত্মিকতার রশ্মি এবং‘ ঈমান’ -এর হৃদয় । যে তাক্বওয়া (সতর্কতা) উপেক্ষা করেছে সে জ্ঞানী ব্যক্তি নয় , এমনও যদি হয় সে জ্ঞানের অস্পষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে পারে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেনঃ
) إ ِنَّمَا يَخْشَى اللَّـهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ(
‘‘ তাঁর দাসদের মাঝে একমাত্র জ্ঞানী ব্যক্তিরাই আল্লাহকে ভয় পায়।’’ ( সূরা ফাতিরঃ 28)
জ্ঞানী ব্যক্তিরা আটটি জিনিসে ধ্বংস হয়ঃ লোভ এবং কৃপণতা , লোক দেখানো (রিয়া) এবং স্বজনপ্রীতি , প্রশংসার প্রতি ভালোবাসা , সে বিষয়ের ভিতরে সন্ধান করা যার বাস্তবতায় তারা পৌঁছাতে অক্ষম , অতিরঞ্জিত প্রকাশভঙ্গি দিয়ে বক্তব্যকে সৌন্দর্যমন্ডিত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা , আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সামনে বিনয়ের অভাব , আত্মম্ভরিতা এবং যা জানে সে অনুযায়ী কাজ না করা।
ঈসা (আ.) বলেছেনঃ মানুষের মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণ্য হলো ঐ ব্যক্তি যে তার জ্ঞানের জন্য প্রসিদ্ধ , তার কাজের জন্য নয়।’’ রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ‘‘ কোন বেয়াদব আহবানকারীর সাথে বসো না যে তোমাকে আহবান করে নিশ্চিত জ্ঞান থেকে সন্দেহের দিকে , আন্তরিকতা থেকে লোক দেখানোর দিকে , বিনয় থেকে অহংকারের দিকে , সৎ উপদেশ থেকে শত্রুতার দিকে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ থেকে আকাঙ্ক্ষার দিকে। তার কাছে যাও যে জ্ঞানী , যে তোমাকে আহবান করে অহংকার থেকে বিনয়ের দিকে , লোক দেখানো থেকে আন্তরিকতার দিকে , সন্দেহ থেকে নিশ্চিত জ্ঞানের দিকে , আকাঙ্ক্ষা থেকে আত্মনিয়ন্ত্রণের দিকে , শত্রুতা থেকে সৎ উপদেশ-এর দিকে।’’ কোন ব্যক্তিই সৃষ্টির কাছে উপদেশ দেয়ার যোগ্যতা রাখে না শুধু সে ছাড়া যে এ খারাপ জিনিসগুলোকে পিছনে ফেলতে পেরেছে তার সত্যবাদিতার মাধ্যমে। সে বক্তৃতার ত্রুটিগুলো দেখতে পায় এবং জানে কী সঠিক ও কী সঠিক নয় এবং চিন্তার ক্রটিসমূহ এবং নফসের লালসা ও আকাঙ্ক্ষাগুলো সম্পর্কে জানে।
ইমাম আলী (আ.) বলেছেনঃ‘‘ দয়ালু ও স্নেহশীল চিকিৎসকের মত হও যে ওষুধ নিবার্চন করে যা উপকারী হবে।’’ তারা ঈসাকে (আ.) জিজ্ঞেস করলোঃ‘‘ কার সাথে আমরা বসবো , হে রুহুল্লাহ ?’’
তিনি বললেনঃ‘‘ তার সাথে যার চেহারা তোমাকে আল্লাহর কথা মনে করায় এবং যার কথা তোমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং যার কাজ তোমাকে আখেরাতকে পেতে উৎসাহিত করে।’’