3%

সে চেতনায় অবগাহন

আবদুল মুকীত চৌধুরী

এক.

বলে ,এ যে রাহর দশা :ষোলকলার রাত!

উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে ,মিথ্যা বাজীমাত!

গলাধাক্কা অর্ধচন্দ্রে দিন যাপনের গ্লানি-

বলে , দুষ্টগ্রহের ফেরে গোলক-জাড়া ঘানি!

কনুই-গুতো লাথি খেয়ে বুদ্ধুগুলো ভাবে ,

কী আনন্দ! সরাসরি বেহেশতেই যাবে !

আগ্রাসীদের আস্ফালনে পৃথিবী গোটা টলে

কালো রাতের যাত্রী সময় কুকড়ে হেটে চলে।

কাঠের পুতুল ,কুড়ের বাদশা কড়ায়-গণ্ডায়

দেখো ,কেমন আক্কেল-এর সেলামী দি যায়!

আত্মঘাতী গুতোগুতির এ মেষকুলে কবে

ভিটেয় ঘুঘু চরার আগে সুবুদ্ধিটা হবে !

আকাট মুর্খগুলো যেন আমড়া কাঠের ঢেকি

কলুর বলদ ,চিনির বলদ-গোড়ায় গলদ ,সে কী ?

দুই.

গলদটা সেই শুরুতেই এজিদী উত্থান ,

মিশিয়ে দিলো ধুলোয় সেদিন খোদার দীনের মান।

খুন ঝরালো ,ঘূণ ধরালো নবীর পতাকায়

আঘাত হানে সেই বিধানে শোকের কারবালায় !

ইমাম বিহীন সে মিম্বরে জাগে রোদন তার

আকুল আর্তি জাগে খোদা : বাচাও অধিকার।

রাষ্ট্র বিদায় ,সাম্য বিদায় -মানুষ প্রভু হয় ,

ইসলাম কি মানতে পারে এমন বিপর্যয় ?

তিন.

সে জিজ্ঞাসার খুজতে জবাব শতক শতক পার:

সে চেতনায় অবগাহন চাই যে পুনর্বার।

শাহাদাতের উজ্জীবনী ছড়ায় আলোর বান

জেগে ওঠার এই তো সময় ,রেঙেছে আসমান!

আশুরার দ্বি-প্রহর

মো.মোবারক আলী মোল্লা

দ্বি-প্রহর গড়াইয়া বিকাল হইল রক্তরাঙা রোজ আশুর

আকবর ,আজগার ,কাশেমও শহীদ ,শহীদ বাহাত্তুর।

অবশেষে যখন রহিল না কেহ অসুস্থ জয়নুল ছাড়া ,

চাপি দুল দুলে যুদ্ধ সাজ পরি ছুটালেন তিনি ঘোড়া।

শত-সহস্র কাফের কমবখত হারাইল তাদেরা প্রাণ ,

ছেড়ে নদী তীর অবশিষ্ট যারা ত্বরিৎ করে পলায়ন।

মুক্ত হইলো ফোরাতের কূল ,দেখিলেন স্বচ্ছ নীর ,

বাড়িল পিপাসা নামিলেন তিনি ঘোড়া হতে নদী তীর।

দু হাতে উঠালেন পিয়াসের বারি তুলিবেন যখন মুখে ,

একে একে বুঝি হইলো স্মরণ ব্যথা তাই বাজে বুকে।

ক্ষণকাল তিনি দড়াইয়া সেথা ফিরে এলেন নীর ছেড়ে ,

শোকে মুহ্যমান পিপাসায় কাতর চলিলেন ধীরে ধীরে।

নিদারুণ শোকে শোকাতুর তিনি চলার শক্তি নাই ,

পড়িলেন ঢলি তপ্ত মরুতে দুলদুল দেখিয়া তাই ;

হ্রেষারব তুলি ছুটিল শিবিরে অশ্রু ভরা দু-নয়ন ,

শূন্য পৃষ্ঠ হেরিয়া বুঝিল আশার বাতি নিভিল যে এখন।

অসহায় যত পরিগণ কাঁদে লুটায়ে ধুলাতে হায় ,

রওজা মোবারক কাপে থরথর সুদূর মদীনায় ।

কাঁদে আজও তাই বিশ্ব মুসলিম ঢালিয়া হৃদয়ের প্রীতি ,

দুনিয়া জাহান বুকে লয়ে কাঁদে আজও কারবালার স্মৃতি।

আজ এ আশুরায়

আ. শ. ম. বাবর আলী

মিথ্যের সাথে সন্ধি নয় কখনো ,

সত্যের সাথে সখ্য।

সত্যকে শক্তি করে

যে করে জীবনের ভিত রচনা ,

সে জীবনের মূল্য অনেক ।

যে মূল্য অতিক্রম করে যায়

মৃত্যুকে পৌছে দিয়ে

মহত্বের শীর্ষ তোরণে।

কারবালা !

তেমনি এক মহান সত্যের পিরামিড

যেখানে উড়লো

সত্যের আবাদী পতাকা

অসত্য আর অন্যায়

প্রতিরোধ সংগ্রামের

মানব আর মানবতার

বিশ্ব নযীর।

সে পতাকার শ্রেষ্ঠ ধারক

হাসান-হোসেন

বুকের মানিক আহা

মোর নবীজীর!

পবিত্র হলো ফোরাতের পানি

তোমাদের শহীদী রক্তের ছোয়ায়।

অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের সংগ্রামে

তোমরাই প্রেরণা হলে

আজ এ আশুরায়।

মুহররমের চাঁদ

আমিন আল আসাদ

আকাশে ঐ উঠলো দেখো

মুহররমের চাঁদ

ইমাম হোসেনের শোকে

কাঁদ রে তোরা কাদ।

এই চাঁদেরই দশ তারিখে

ফোরাত নদীর তীরে

কারবালা মাঠ লাল হয়েছে

রক্তেরই আবীরে।

এজিদ সীমার পাষণ্ডরা

ছুড়লো যখন তীর

সেই তীরেতে জীবন দিলেন

আল্লাহ প্রেমিক বীর।

ইমাম এবং তার সাথীরা

শহীদ হলেন হেসে

সত্য পথে লড়াই করে

দ্বীনকে ভালোবেসে।

এজিদ সীমার পাষণ্ডরা

আজো লেগেই আছে ;

বীর মুজাহিদ ইমাম হোসেন

অনুসারীদের নাশে।

নবীর নাতি হোসেন সাথী

আছে বিশ্ব মাঝে

করছে লড়াই ঢালছে লহ

সকাল দুপুর সাঝে।

জানার ইচ্ছে

বুলবুল সরওয়ার

ফোরাতে এখন কার পদধ্বনি ? কে জাগে দজলা-তীরে ?

আজলায় কার সুপেয় জলের ধারা ?

নাম কি তাহার ? জন্ম কাহার ঘরে ?

জানতে ইচ্ছে করে রে বন্ধু ,জানতে ইচ্ছে করে ।

যাদের স্মৃতিতে হোসেন ,তারা সব ঘুমায় কেমন করে !

শত্রু ভাবছো মাতমকারীকে ,বলছো সংযোজন

মানি হে বন্ধু ,মানি ;

অর্থই আজ মন্দিরে দেবী -মহাজগতের রাণী!

তার ঘুম নিঝ্বুম

কবর কবিতা এই থেকে উঠে বুকেতে পাচ্ছে উম ।

হায় রে দুনিয়া! কবিরা ঘুমায় ,স্বদেশ ঘুমায় ,ঘুমায় স্বপ্ন ঘোরে

কাবা কি জাগবে ? কবে থেকে খুব জানতে ইচ্ছে করে !