কোরআনের তাফসীর
সূরা হুদ;(২৭তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
সমাজে বিজ্ঞ ও শিক্ষিত মানুষের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি। মানুষকে পাপ ও অনাচার থেকে মুক্ত করে সঠিক পথের দিশা তারাই দিতে পারেন যারা নিজেদেরকে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে সক্ষম হয়েছেন। সমাজের বিজ্ঞ ও শিক্ষিত মানুষ যদি তাদের এই মহান দায়িত্বের ব্যাপারে অবহেলা করেন তাহলে বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠে। এই অবহেলার কারণে অতীতে অনেক জাতি বিপর্যস্ত হয়েছে।
সূরা হুদ;(২৬তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে খোদোদ্রোহী শক্তির অনুপ্রেরণায় নিজের আদর্শের ব্যাপারে যেমন অমনোযোগী বা আপোষকামী হওয়া যাবে না তেমনি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সীমালঙ্ঘন বা বাড়াবাড়িও করা যাবে না। প্রতিরোধ ও ভারসাম্যমূলক অবস্থান হচ্ছে ইসলামের শিক্ষা।
সূরা হুদ;(২৫তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
আল্লাহতালা ইচ্ছে করলে কোন জাহান্নামীকে নরক থেকে বের করে স্বর্গে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারেন। আবার কোন বেহেশতবাসীকেও নরকের অধিবাসী করতে পারেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ যেটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা হচ্ছে বেহেশত বা স্বর্গ হবে মুমিনদের অনন্তকালীন আবাস। সেখান থেকে কাউকে কখনো বহিষ্কার করা হবে না। স্বর্গ বা বেহেশত মানুষের প্রাপ্য বা অধিকার নয়। এটি সৎ মানুষের প্রতি মহান আল্লাহর অনুগ্রহ মাত্র। তিনি শুধু তার পছন্দের মানুষকেই বেহেশতে প্রবেশের অনুমতি দিবেন।
সূরা হুদ;(২৪তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ সকল মানুষকে পুতপবিত্র অবস্থায় সৃষ্টি করেছেন। তাদেরকে বিবেক বুদ্ধি দিয়েছেন এবং তাদেরকে সৎপথের রাস্তা দেখানোর ব্যবস্থা করেছেন। এরপর প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর অনেকে ভুল পথে চলতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে আবার অনেকে চিন্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সত্যকে গ্রহণ করে নেয়। পরিণতিতে একদল সৌভাগ্যবান আর অপর দল হতভাগ্য হয়ে পড়ে। ফলে এটা বলা যায় যে, সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য এটা পূর্ব নির্ধারিত কোনো বিষয় নয়। মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছা শক্তির মাধ্যমে এই দুইয়ের যে কোনো একটিকে বেছে নেয়।
সূরা হুদ;(২৩তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
বন্যা, বজ্রপাত ও ভূমিকম্পের মত বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো আল্লাহর গজব বা রোষেরই পরিণতি। কখনো পাপাচারী সমাজের শাস্তি স্বরূপ কখনো কোন জাতির জন্য পরীক্ষা স্বরূপ, এ জাতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। তবে সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ কোন দেশ বা জাতির ওপর জুলুম করেন না বরং মানুষই নানা অপকর্ম ও পাপের মাধ্যমে ঐশী শাস্তির প্রেক্ষাপট তৈরি করে।
সূরা হুদ;(২২তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
কাফির ও বিরুদ্ধবাদীদের কঠোর মনোভাবের কারণে হযরত শোয়াইব (আ.) যখন নিশ্চিত হলেন যে এই জাতি কখনো সত্যকে গ্রহণ করবে না তখন তিনি অবাধ্য জাতিকে উদ্দেশ করে বললেন, তোমাদের যা খুশী তাই করতে থাক, আমিও আমার পথে চলছি। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই প্রমাণিত হবে কারা সত্য পথে রয়েছে। তবে এটা মনে রাখবে আমি আমার স্বজন-পরিজনের ওপর নির্ভর করি না যে তাদের খাতিরে তোমরা আমার অনিষ্ট করবে না। আমি একমাত্র বিশ্ব স্রষ্টা আল্লাহর ওপর নির্ভর করি, যিনি তোমাদের অবস্থা সম্পর্কে পূর্ণ অবহিত।
সূরা হুদ;(২১তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
মানব ইতিহাসে যুগে যুগে সংঘটিত সকল ঘটনাই মানুষের জন্য শিক্ষণীয়। মানুষের উচিত অতীত ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা, সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর নির্দেশ অমান্যকারী ব্যক্তি বা জাতি এ জগতেই কোন না কোন উপায়ে প্রায়শ্চিত্য ভোগ করেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অধঃপতিত গোটা জাতিই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
সূরা হুদ;(২০তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
আমার দায়িত্ব হচ্ছে ঐশী নির্দেশ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া, আমি কারো কর্মের তত্ত্বাবধায়ক নই বা অবৈধ উপার্জনের কারণে কেউ বিপর্যস্ত হলে তার দায়-দায়িত্ব থেকে আমি মুক্ত। অবৈধভাবে উপার্জিত অঢেল সম্পদের চেয়ে বৈধ উপায়ে অর্জন করা পরিমিত সম্পদ যে উত্তম তা বুদ্ধিমান মাত্রই উপলদ্ধি করবেন। দুনিয়ার জীবন হচ্ছে, অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী এবং অনিশ্চিত। তাই পরকালের পাথেয় অর্জনের ব্যাপারেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
সূরা হুদ; (১৯তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
পবিত্র কুরআন কয়েক হাজার বছর আগের এই ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেছে এবং লুত সম্প্রদায়ের পরিণতি সম্পর্কে মানব জাতিকে সতর্ক করে দিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যে বিকৃত মানসিকতার জন্য কওমে লুত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল, বর্তমান সভ্য যুগে বিশ্বের অনেক জায়গায় তা অবাধে চলতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি সভ্যতার দাবিদার অনেক পশ্চিমা দেশ সমকামীতার মত নিকৃষ্ট পাপাচারকে বৈধতা দিয়েছে। পাপ মানুষকে অন্ধ করে ফেলে, অতিরিক্ত পাপের ফলে মানুষের বিবেক ও বোধশক্তি লোপ পায়। পরিণতিতে মানুষ ভালোকে খারাপ ও খারাপকে ভালো মনে করতে থাকে।
সূরা হুদ;(১৮তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
হযরত লুত (আ.) তার সম্প্রদায়ের মানুষের নোংরা অভিপ্রায়ের ব্যাপারে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। বিকৃত মানসিকতার এসব মানুষ তাদের অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য হযরত লুত (আ.)এর বাড়ীর সামনে ভিড় জমালো। হযরত লুত (আ.) তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমরা আমার কন্যাদেরকে বিয়ে করতে পার। আল্লাহকে ভয় কর এবং পাপের পথ থেকে ফিরে আস। আমার ঘরে যেসব তরুণ রয়েছে তারা আমার অতিথি, তোমরা অতিথিদের সামনে আমার অমর্যাদা কর না।
সূরা হুদ;(১৭তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
হযরত ইব্রাহীম (আ.)এর স্ত্রী সারা পাশে দাঁড়িয়ে ফেরেশতাদের কথা শুনছিলেন। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। এখন বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের জন্ম দেবেন এ কথা শুনে তিনি অভিভূত হয়ে পড়েন। হযরত ইব্রাহীম (আ.)ও ঐ সময় যথেষ্ট বৃদ্ধ ছিলেন। তাই ঐ পড়ন্ত বয়সে সন্তান জন্ম দেয়ার বিষয়টি অবাক করার মতই ঘটনা! কিন্তু আল্লাহর অসাধ্য কিছুই নেই, সব কিছুই তার ইচ্ছার অধীন। হ্যাঁ, পার্থিব জগতের কোন কিছু আল্লাহর শক্তির সঙ্গে তুলনা হয় না। তিনি অসীম ও পরাক্রমশালী।
সূরা হুদ;(১৬তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
বন্যা-খরা এবং ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভালো-মন্দ, বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সকল মানুষ সমানভাবে আক্রান্ত হয়। কিন্তু যা পাপের পরিণতিতে ঐশী শাস্তি হিসাবে আপতিত হয় তা থেকে মুমিন বিশ্বাসীরা উদ্ধার পান এবং অবিশ্বাসী কাফিররাই তাতে আক্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্যই সামুদ জাতির উপর যখন ঐশী শাস্তি নেমে আসে তখন হযরত সালেহ (আ.) এবং তার সঙ্গী মুমিনরা উদ্ধার পান এবং একমাত্র অপরাধী যারা তারাই পর্যুদস্ত হয়।
সূরা হুদ;(১৫তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
মানুষ সহজেই নিজস্ব ধ্যান-ধারণা ও মত বিশ্বাস পরিবর্তন করতে চায় না। নিজের মত বিশ্বাস ভুল ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হলেও সে ব্যাপারে প্রত্যেক মানুষই খুবই সংবেদনশীল। এজন্য প্রত্যেক নবী-রাসূল প্রথমে মানুষের প্রবল বিরোধীতার মুখে পড়েছেন। বর্তমান সময়েও যে কোন সংস্কারককেই একই পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হয়। এজন্য যারা মুবাল্লেগে দ্বীন বা ইসলামের প্রচারে নিয়োজিত তাদেরকে এ বিষয়ে অনেক ধৈর্যশীল হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়।
সূরা হুদ;(১৪তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
যে,পাপাচারের কারণে আল্লাহর রোষে যখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেমে আসে তখন আল্লাহ প্রিয় বান্দাদেরকে রক্ষা করেন। প্রকৃত মুমিন বিশ্বাসীরা সৃষ্টিকর্তার বিশেষ অনুগ্রহে দুর্যোগের হাত থেকে রেহাই পেয়ে যায়।
সূরা হুদ;(১৩তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
হযরত নূহ (আ.) মৃত্যুর আগে তার অনুসারীদেরকে বলেছিলেন, আমার মৃত্যুর পর অনেক বছর কোন নবী-রাসূলের আগমন ঘটবে না। ফলে পৃথিবীতে আগুন বা খোদাদ্রোহী শক্তির উত্থান ঘটবে, এরপর আমার বংশ ধারা থেকে একজন আগমন করবেন যিনি মানুষকে সত্যের দিকে আহ্বান জানাবেন এবং তাগুতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন আর তার নাম হবে হুদ।
সূরা হুদ;(১২তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
প্রকৃতপক্ষে হযরত নূহ (আ.)ই মানব জাতির দ্বিতীয় পিতা। মহাপ্লাবনে সব ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার পর হযরত নূহ ও তার অনুসারী মুমিনদের মাধ্যমেই পৃথিবীতে পুনরায় মানব বংশের বিস্তার ঘটে। এরপর ক্রমান্বয়ে মানব জাতি পুনরায় মুমিন ও কাফির দুই শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। মুমিনদের প্রতি আল্লাহর দেয়া কল্যাণ শান্তি, সৌভাগ্য ও প্রাচুর্য বয়ে আনে। অপর দিকে অবিশ্বাসী কাফিররা যে কল্যাণপ্রাপ্ত হয় তা বস্তুজগতেই তাদেরকে তৃপ্ত করে।
সূরা হুদ;(১১তম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
হযরত নূহ (আ.) এর সময়কার এই ঘটনা থেকে মানুষের শিক্ষা নেয়া উচিত। অন্যায় পাপাচার এবং সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করার পরিণতি যে কত ভয়াবহ হতে পারে তা এই ঘটনা থেকেই উপলদ্ধি করা যায়। এছাড়া বন্যা ও ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ যে অনেক ক্ষেত্রে মানুষের পাপের পরিণতিতেই হয়ে থাকে তাও এ ঘটনা থেকে আমরা উপলদ্ধি করতে পারি।
সূরা হুদ;(১০ম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
হযরত নূহ (আ.) যখন বড় নৌকা বা জাহাজ তৈরি করতে শুরু করলেন, তখন তার সম্প্রদায়ের লোকজন ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে বলতো, জীবনভর পয়গম্বরী করে এখন নৌকা ব্যবসায়ী হয়েছো। তারা আরো বলতো, ‘পাগলে কিনা করে’, ‘মরুভূমিতে জাহাজ বানাচ্ছে’- ইত্যাদি ইত্যাদি।
সূরা হুদ;(৯ম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
প্রত্যেক নবী রাসূলকে নিজ নিজ যুগে কাফির মুশরিকদের বিরোধীতা ও প্রতিবন্ধকতা ভেদ করে কাজ করতে হয়েছে। কাফির-মুশরিকরা পয়গম্বরদের এত বেশী বিরোধীতা করতো যে, তারা নবীদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও প্রবঞ্চণার অভিযোগও খাড়া করতো। হযরত নূহ (আ.)ও এ ধরনের অপপ্রচারণার সম্মুখীন হয়েছিলেন।
সূরা হুদ;(৮ম পর্ব)
- প্রকাশিত হয়েছে
নবী-রাসূলগণ হলেন,আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি। আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার গুরুদায়িত্ব তাদের ওপর ন্যস্ত। তাদের কথা ও কাজে কোন অসামঞ্জস্যতা নেই। তারা মানুষকে সৎপথে পরিচালিত করার জন্য চেষ্টা করেন। তাই বলে মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য কখনোই মিথ্যা অঙ্গীকার করেন না।