কোরআন ও আল্লাহর ওলীদের কবরের নিকট মসজিদ নির্মাণ
মহান আল্লাহ আসহাবে কাহফের ঘটনায় বর্ণনা করেছেন :
(
وَكَذَلِكَ أَعْثَرْنَا عَلَيْهِمْ لِيَعْلَمُوا أَنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَأَنَّ السَّاعَةَ لَا رَيْبَ فِيهَا إِذْ يَتَنَازَعُونَ بَيْنَهُمْ أَمْرَهُمْ فَقَالُوا ابْنُوا عَلَيْهِمْ بُنْيَانًا رَبُّهُمْ أَعْلَمُ بِهِمْ قَالَ الَّذِينَ غَلَبُوا عَلَى أَمْرِهِمْ لَنَتَّخِذَنَّ عَلَيْهِمْ مَسْجِدً)
ا
“
এবং এমনিভাবে তাদের বিষয়ে আমি অবহিত করলাম যাতে করে তারা জানতে পারে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতের বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। যখন তারা নিজেদের কর্তব্য বিষয়ে পরস্পর বিতর্ক করছিল,
তখন তারা বলল তাঁদের উপর সৌধ নির্মাণ কর। তাদের পালনকর্তা তাদের বিষয়ে অধিকতর অবগত। তাদের কর্তব্য বিষয়ে যাদের মত প্রবল হল তারা বলল : আমরা অবশ্যই তাদের স্থানে (কবরের নিকট) মসজিদ নির্মাণ করব।
”
মহান আল্লাহ এই আয়াতে তাদের বিষয়ে মানুষদের অবগতির ধরন সম্পর্কে বলেছেন। তারা তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হলো। কেউ বলল :‘
তাদের কবরের উপর সৌধ নির্মাণ করা উচিত’
,‘
কেউ বলল :‘
তাদের কবরের নিকট মসজিদ নির্মাণ করব’
,ফলশ্রুতিতে শেষোক্তদের মতই প্রবল হলো।
ফখরুদ্দীন রাজী বলেছেন,‘
কারো কারো মতে যে দলটি মসজিদ নির্মাণের পরামর্শ দিয়েছিল তারা ছিল মুমিনদের শাসক ও আসহাবে কাহফের সমর্থক। কারো কারো মতে শহরের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা এ পরামর্শ দিয়েছিলেন যাতে করে সেখানে ইবাদত করতে পারেন এবং মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে আসহাবে কাহফের স্মৃতিকে জাগরুক রাখতে পারেন।
আবু হায়ান আন্দালুসী বলেছেন,‘
যে ব্যক্তি সৌধ নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিল সে কাফের অবস্থায় পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। কারণ সে এ কর্মের মাধ্যমে চেয়েছিল কুফরের কেন্দ্র স্থাপন করতে। কিন্তু মুমিনরা মসজিদের প্রস্তাব দানের মাধ্যমে তার উদ্দেশ্যে ও পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।’
আবুস সাউদ ও জামাখশারীও উপরোক্ত মতটি সমর্থন করেছেন অর্থাৎ বলেছেন যে,আসহাবে কাহফের কবরের উপর মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব দানকারী মুমিন ছিলেন।
অবশ্য আমরা অবগত যে,কোরআন গল্পের গ্রন্থ নয়। তাই কোন কাহিনী বর্ণনা করলে তার উদ্দেশ্য হলো মুসলমানরা যেন তা হতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
যেহেতু মহান আল্লাহ আসহাবে কাহফের কবরের নিকট মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেন নি এবং এরূপ কর্মকে শিরক মনে করেন নি সেহেতু আমরা এই নিরব সমর্থনকে আল্লাহর পক্ষ হতে নিশ্চিত সম্মতি ধরে নিতে পারি।
আল্লাহর ওলীদের কবরের নিকট মসজিদ নির্মাণ : মুসলমানদের চিরাচরিত রীতি
আমরা মুসলমানদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখব আল্লাহর ওলীদের কবরের নিকট মসজিদ নির্মাণ করা মুসলমানদের চিরাচরিত রীতির অন্তর্ভুক্ত।
মুসলিম ঐতিহাসিকগণ আবু জান্দাল ও আবু বাসিরের একত্রে যাত্রার একটি ঘটনা এভাবে বর্ণনা করেছেন যে,আবু বাসির মহানবীর পত্র আবু জান্দালের নিকট পৌঁছানোর পরপরই পৃথিবী হতে বিদায় নেন। যে স্থানে আবু বাসির আবু জান্দালকে পত্র পৌঁছিয়ে মৃত্যুবরণ করেন আবু জান্দাল সেখানেই তাকে দাফন করেন ও তাঁর কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করেন।
ওয়াহাবীদের উপস্থাপিত দলিলসমূহের পর্যালোচনা : আল্লাহর ওলীদের কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ হারাম হওয়ার বিষয়ে ওয়াহাবীরা যে সকল দলিল উপস্থাপন করেছে আমরা এখানে তা নিয়ে আলোচনা করব।
১। হাদীস ভিত্তিক প্রমাণ :
ওয়াহাবীরা তাদের দাবীর সপক্ষে নিম্নোক্ত হাদীসসমূহ দলিল হিসেবে উপস্থাপন করেছে :
ক) জুনদাব ইবনে আবদুল্লাহ্ বাজালী বলেছেন,‘
মহানবীর মৃত্যুর পাঁচদিন পূর্বে তাঁর হতে শুনেছি তিনি বলেছেন যে,জেনে রাখ,তোমাদের পূর্ববর্তীরা তাদের প্রতি প্রেরিত নবী রাসূলদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছিল,কিন্তু তোমরা এরূপ কর না। আমি তোমাদের তা করতে নিষেধ করছি।’
খ) মহানবী (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে যে,তিনি বলেছেন,‘
হে আল্লাহ! আমার কবরকে মূর্তি বানিও না। আপনি লানত (অভিসম্পাত) করুন সেই সম্প্রদায়গুলোকে যারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছিল।’
গ) মুসলিম বর্ণনা করেছেন যে,উম্মে হাবীবা ও উম্মে সালামা হাবশায় দেখা এক মসজিদের বা উপাসনালয়ের কথা বললেন,রাসূল (সা.) তা শুনে বললেন,‘
ঐ সম্প্রদায়ের রীতি হলো যখন তাদের মধ্যে কোন সৎকর্মশীল ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করে তার কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করে ও তার মধ্যে মূর্তি স্থাপন করে। তারা কিয়ামতের দিন নিকৃষ্ট লোক হিসেবে আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবে।’
ঘ) সহীহ বুখারীতে রাসূল (সা.) হতে বর্ণিত হয়েছে‘
আল্লাহ ইহুদী ও খৃষ্টানদের উপর অভিশম্পাত বর্ষন করুন,কারণ তারা তাদের নবীদের কবরসমূহকে মসজিদ বানিয়েছে।’
উপরিউক্ত হাদীসসমূহের প্রমাণ সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য :
প্রথমত হাদীসগুলোর উদ্দেশ্য বুঝতে হলে ওলীদের কবরের পাশে ইহুদী ও খ্রিস্টানদের সৌধ নির্মাণের কারণটি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষন করতে হবে। কারণ মহানবী (সা.) ইহুদী ও খৃস্টানরা যে বিশেষ উদ্দেশ্যে সৌধ নির্মাণ করত সেই কারণে তা করতে নিষেধ করেছেন। আমরা হাদীসগুলো থেকে বুঝতে পারি ইহুদী ও খ্রিস্টানরা আল্লাহর ওলীদের কবরকে কিবলা ও মসজিদ বানাত এবং তাদের কবরের উদ্দেশ্যে সিজদা করত অর্থাৎ তারা আল্লাহর ওলীদের ইবাদত করত। এ জন্যই মহানবী (সা.) তাদের এ কর্মের তীব্র সমালোচনা করেছেন ও মুসলমানদেরকে অনুরূপ করতে নিষেধ করেছেন। তাই যদি আল্লাহর ওলীদের কবরের নিকট তাদের হতে বরকত লাভের উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহর প্রতি মনোযোগ ও ধ্যানকে গভীর করতে মসজিদ নির্মাণে কোন অসুবিধা নেই। কারণ ইবাদত ও নামাযের নিয়তে তা করা হয় না (তবে যদি কেউ তাদের সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তা নির্মাণ করে অবশ্যই তা হারাম।)। তাই বলা যায় উল্লিখিত হাদীসগুলো আমাদের আলোচ্য বিষয়বস্তু বহির্ভূত। উম্মে হাবীবা ও উম্মে সালামার হাদীসে ইহুদী ও খ্রিস্টানদের ঐরূপ নিয়ত ও কর্মের কথা উল্লিখিত হয়েছে।
বাইদ্বাভী উপরিউক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেছেন,‘
যেহেতু ইহুদী ও খ্রিস্টানরা আল্লাহর ওলীদের কবরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য সিজদা করত ও তাকে কিবলা হিসেবে গ্রহণ করত,এ কারণেই মুসলমানদের এরূপ করতে নিষেধ করা হয়েছে। সকলের নিকট স্পষ্ট যে ঐরূপ কর্ম সুস্পষ্ট শিরক। কিন্তু যদি কেউ আল্লাহর ওলীদের কবর হতে বরকত লাভের নিয়তে তার নিকট মসজিদ নির্মাণ করে তবে তা উপরিউক্ত নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।’
সুনানে নাসায়ীর ব্যাখ্যাকারী সিন্দী বলেছেন,‘
রাসূল (সা.) নিজ উম্মতকে আল্লাহর ওলীদের প্রতি ইহুদী ও খ্রিস্টানদের ন্যায় আচরণ করতে নিষেধ করেছেন হোক তাদের সামনে সম্মান প্রদর্শনের নিয়তে সিজদাবনত হওয়া বা তাদের কবরকে কিবলা বানিয়ে নামায পড়া উভয় ক্ষেত্রেই তাতে বারণ করেছেন।’
দ্বিতীয়ত হাদীসগুলোতে আল্লাহর ওলীদের কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করতে নিষেধ করা হয়েছে কিন্তু কবরের পাশে মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে কিছু বলা হয় নি।
তৃতীয়ত হাদীসগুলোতে যে নিষেধের কথা এসেছে তা হারাম না হয়ে মাকরূহও হতে পারে। এ কারণেই বুখারী ঐ হাদীসগুলোকে কবরের স্থানকে মসজিদ হিসেবে গ্রহণ মাকরূহ হওয়ার অধ্যায়ের অধীনে এনেছেন এবং এরূপ নিষেধকে মাকরূহে তানযীহি অর্থে গ্রহণ করেছেন।
শাইখ আবদুল্লাহ্ হারভী উল্লিখিত হাদীসসমূহের ব্যাখ্যায় বলেছেন,‘
উপরিউক্ত নিষেধাজ্ঞা তাদের উপর প্রযোজ্য যারা আল্লাহর ওলীদের কবরের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ে,তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও ইবাদতের লক্ষ্যে সিজদা করে। যদি কবরের স্থান খোলা ও প্রকাশিত থাকে তবেই সেখানে নামাজ পড়া হারাম আর যদি উন্মুক্ত না থাকে তবে সেখানে নামাজ পড়া হারাম নয়।’
আবদুল গনি নাবলুসী হানাফী বলেছেন,‘
কোন ব্যক্তি যদি কোন সৎকর্মশীল বান্দার কবরের নিকট মসজিদ নির্মাণ করে এ উদ্দেশ্যে যে,তার কবর হতে নামাযের সময় বরকত লাভ করবে এবং মৃত ব্যক্তির প্রতি নামাযের সময় সম্মান প্রদর্শনের কোন নিয়ত তার না থাকে তবে কোন অসুবিধা নেই। কারণ হযরত ইসমাঈলের কবর মসজিদুল হারামে (বায়তুল্লাহ বা কাবা ঘর) হাতিমের সন্নিকটে অবস্থিত এবং ঐ স্থানটি নামায পড়ার শ্রেষ্ঠ স্থানসমূহের অন্তর্ভুক্ত।’
আল্লামা বদরুদ্দীন হাউসী বলেছেন,‘
কবরস্থানকে মসজিদ বানানোর অর্থ হলো কোন নামাজী তাকে কিবলা হিসেবে গ্রহণ করে নামাজ পড়বে।’
২। প্রতিবন্ধকতার নীতির (কায়েদায়ে সাদ্দে যারাঈ) দলিল :
আল্লাহর ওলীদের কবরের নিকট মসজিদ নির্মাণের নিষিদ্ধতার সপক্ষে ওয়াহাবীদের অন্যতম দলিল হলো প্রতিবন্ধকতার নীতি। এ নীতিটি হলো যদি কোন কর্ম বস্তুত মোবাহ বা মুস্তাহাব হয় কিন্তু তার মাধ্যমে হারামে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তবে ঐ কর্মটি হারাম বলে পরিগণিত হবে যাতে করে কেউ হারামের দিকে পরিচালিত না হতে পারে।
ইবনে কাইয়্যেম জাওযীয়া উপরিউক্ত নীতির সপক্ষে অনেকগুলো দলিল এনেছেন যেমন পবিত্র কোরআনের আয়াতটি যে,
(
وَلَا تَسُبُّوا الَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ فَيَسُبُّوا اللَّهَ عَدْوًا بِغَيْرِ عِلْمٍ)
“
যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর উপাসনা করে তাদেরকে (উপাস্যদের) গালি দিও না। কারণ এতে তারা শত্রুতাবশত জ্ঞানহীনতার কারণে আল্লাহকে গালি দিবে।
”
(সূরা আনআম : ১০৮)
এ আয়াতে যেহেতু মূর্তিকে গালি দিলে মুশরিকরা অজ্ঞতাবশত আল্লাহকে গালি দিতে পারে তাই মূর্তিকে গালি দিতে নিষেধ করা হয়েছে।
অন্যত্র নারীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে,
(
وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ)
“
(
নারীদের বলুন) তারা যেন তাদের পদযুগল দ্বারা মাটিতে আঘাত না করে (শব্দ না করে হাটে) যাতে করে অন্য কেউ তাদের অপ্রকাশিত সৌন্দর্য সম্পর্কে জানতে না পারে।
”
(সূরা নূর : ৩১)
এ আয়াতে নারীরা তাদের যে সৌন্দর্য গোপন রাখে তা প্রকাশিত যাতে না হয় ও অন্যরা সে সম্পর্কে জানতে না পারে সেজন্য মাটিতে পদাঘাত করতে নিষেধ করা হয়েছে। তারা উপরিউক্ত নীতির সপক্ষে কিছু বুদ্ধিবৃত্তিক যুক্তিও উপস্থাপন করেছেন।
আমরা তাদের যুক্তির বিরুদ্ধে বলব :
কোন ওয়াজিবের প্রাথমিক শর্ত তখনই ওয়াজিব হবে যখন ঐ প্রাথমিক শর্ত ওয়াজিবের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত হবে এবং অবধারিত ও অবিচ্ছিন্নভাবে ঐ শর্ত ঐ ওয়াজিবে পৌঁছার কারণ হবে। তাই যে কোন প্রাথমিক শর্তই শর্ত হওয়ার কারণে ওয়াজিব বলে পরিগণিত হয় না। যেমন ছাদের উপর উঠা যদি আমাদের উপর ওয়াজিব হয় তবে যেহেতু ছাদে উঠার শর্ত হল মই বা সিঁড়ি সংযোজন সেহেতু ছাদে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় মই বা সিড়ি সংযোজন আমাদের জন্য ওয়াজিব হবে। কোন বিষয় হারাম হওয়ার ক্ষেত্রেও তাই অর্থাৎ যে শর্তটি আমাদের সরাসরি হারামে ফেলে ও হারামের অবধারিত শর্ত বলে পরিগণিত হয় শুধু সেরূপ শর্তই হারাম।
সুতরাং আল্লাহর ওলীদের কবরের পাশে মসজিদ নির্মাণ যদি শিরক করা ও তাদের উদ্দেশ্যে সম্মান প্রদর্শন ও নামায আদায়ের নিয়তে না হয় তবে এরূপ মসজিদ নির্মাণে কোন সমস্যা ও বাধা নেই।
যদিও এমন হয় যে কেউ কেউ নামাজ পড়ার সময় তাদের সম্মান প্রদর্শনের নিয়তের কথা চিন্তা করে ও সে উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ে কিন্তু যেহেতু মসজিদটি সেরূপ উদ্দেশ্যে নির্মিত হয় নি,তাই এ ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা নেই। যদি আমরা এ স্বতঃসিদ্ধ রীতিটি মেনে না নেই,তবে আমাদের প্রতিদিনের লেনদেনের অনেক বিষয়বস্তুই হারাম বলে পরিগণিত হবে বিশেষত যে মাধ্যম ও বিষয়গুলো হালাল ও হারাম উভয় কাজেই ব্যবহৃত হতে পারে সেগুলো হারাম হয়ে যাবে যেহেতু সম্ভাবনা রয়েছে তা হারাম পথে ব্যবহৃত হওয়ার। যেমন কেউ চাকু বা রেডিও অন্যায় পথে ব্যবহার করতে পারে এই অজুহাত দেখিয়ে আমরা চাকু ও রেডিও বিক্রয় হারাম ঘোষণা করি তবে তা কখনোই যুক্তিযুক্ত হবে না। তাই এরূপ লেনদেনকে কেউই হারাম বা বাতিল বলে ঘোষণা করেন নি। তবে কেউ যদি এই অন্যায় নিয়তে তা বিক্রয় করে তবে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।