আটান্নতম পত্র
২৭ মুহররম ১৩৩০ হিঃ
১। গাদীরের হাদীসের ভিন্নরূপ ব্যাখ্যার অবকাশ নেই।
২। যে হাদীসটি গাদীরের ঘটনার প্রেক্ষাপটরূপে উপস্থাপন করা হয়েছে সেটি মিথ্যা ও ঘটনাকে বিকৃত করার প্রয়াস ছাড়া কিছু নয়।
১। আপনি ব্যাখ্যা হিসেবে যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন আমার বিশ্বাস আপনার মন সেটিকে সায় দেয় না বা বিশ্বাসও করে না। যেহেতু রাসূল (সা.)-এর শান ও মর্যাদা আপনি অবগত সেহেতু আপনি অন্তর হতে তা গ্রহণ করতে পারেন না। রাসূলের প্রজ্ঞা,নিষ্পাপত্ব ও সর্বশেষ নবী হিসেবে তাঁর পদক্ষেপ এ সকল বিষয়ের ঊর্ধ্বে। নবীকুল শিরোমণি ও নবুওয়াতের সমাপ্তি ঘোষণাকারী মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে মহান আল্লাহ্ ঘোষণা করেছেন- তিনি নিজ প্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে কিছুই বলেন না। তিনি যা বলেন তা তাঁর প্রতি প্রত্যাদেশ বৈ কিছু নয়। তাঁকে একজন শক্তিশালী ফেরেশতা শিক্ষা দান করেন
(
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوَى إِنْ هُوَ إِلَّا وَحْيٌ يُوحَى عَلَّمَهُ شَدِيدُ الْقُوَى
)
।
সুতরাং অন্য ধর্মের অনুসারী কোন দার্শনিক ও চিন্তাশীল ব্যক্তি যদি আপনাকে প্রশ্ন করে কেন আপনাদের নবী (সা.) সেদিন সহস্র মানুষের যাত্রা বিরতি করালেন? কেন গ্রীষ্মের ঐ প্রচণ্ড দাবদাহে ঊষর মরুভূমিতে তাদের থামার নির্দেশ দিলেন? কেন তিনি অগ্রগামীদের ফিরিয়ে আনার ও পশ্চাদ্গামীদের জন্য অপেক্ষা করার নির্দেশ দান করলেন? উদ্ভিদহীন ও পানিশূন্য ঐ মরুভূমিতেই বা তাঁর এ বক্তব্যের উদ্দেশ্য কি? বিভক্তির ঐ পথের (গাদীর এমন একটি স্থান যেখান হতে বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীরা পরস্পর বিভক্ত হয়ে নিজ নিজ পথে যাত্রা করত) মাথায় দাঁড়িয়ে নিজের মৃত্যুর সংবাদ দান করার ও অনুপস্থিতদের নিকট এ বক্তব্য পৌঁছানোর আহবানই বা কোন্ উদ্দেশ্যে? তাঁর বিদায়ের সংবাদের সঙ্গে তাঁর দায়িত্বশীলতার বিষয়ের উল্লেখ করে কেনই বা বলেছেন : আমি এ বাণী সঠিকভাবে তোমাদের নিকট পৌঁছিয়েছি কিনা সে বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হব? উম্মতই বা কোন্ বিষয়ে আনুগত্যের জন্য জিজ্ঞাসিত হবে? কেনই বা একে একে আল্লাহর একত্বের,নিজের নবুওয়াতের,বেহেশত,দোযখ,মৃত্যু,মৃত্যুর পর পুনরুত্থান ও কিয়ামতের বিষয়ে তাদের বিশ্বাসের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন? সকলের নিকট এগুলোর স্বীকারোক্তি গ্রহণের পদ্ধতিই বা কেন তিনি বেছে নিলেন? কেনই বা এসব প্রশ্নের পর আলীর হাত ধরে (এতটা উঁচু করলেন যে,তাঁর শুভ্র বগল দৃষ্টিগোচর হলো) ঘোষণা করলেন,‘
হে লোকসকল! আল্লাহ্ আমার অভিভাবক আর আমি মুমিনদের অভিভাবক’
এবং‘
মাওলা’
শব্দের ব্যাখ্যার জন্য মুমিনদের ওপর তাঁর অধিকারের বিষয়টিকে টেনে আনলেন ও বললেন‘
আমি কি মুমিনদের ওপর তাদের নিজেদের হতে অধিকতর অধিকার রাখি না?’
এরূপ ব্যাখ্যার পরেই বা কেন বললেন‘
আমি যার মাওলা এই আলী তার মাওলা’
(
من كنت مولاه فهذا عليّ مولاه)
এবং আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন‘
যে আলীকে ভালবাসে তাকে তুমি ভালবাস আর যে তার সঙ্গে শত্রুতা করে তুমিও তার সঙ্গে শত্রুতা পোষণ কর। যে তাকে সাহায্য করে তুমি তাকে সাহায্য কর আর যে তাকে অপদস্থ করে তুমিও তাকে অপদস্থ কর।’
কেন তিনি যে দোয়া কেবল আল্লাহর খলীফা ও ইমামদের জন্য প্রযোজ্য সেই দোয়া আলীর জন্য করলেন? কেনই বা মুমিনদের ওপর তাঁর নিজ অধিকারের বিষয়টি আনার পর তাদের স্বীকৃতি নিয়ে ঘোষণা করলেন : আমি যার মাওলা এই আলী তার মাওলা’
এবং কি ভিত্তিতেই বা আহলে বাইতকে কোরআনের সমকক্ষ বললেন এবং আলী (আ.) ও আহলে বাইতের অভিভাবকত্বের বিষয়টিকে এর মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহতের ঘোষণা দিলেন? প্রজ্ঞাবান এ নবীর এ বিষয়ে এত গুরুত্ব আরোপের কারণই বা কি? এরূপ বৃহৎ সমাবেশের আয়োজনের উদ্দেশ্যই বা কি?
)
يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ(
(হে রাসূল! আপনার ওপর আপনার প্রভুর পক্ষ হতে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার করুন,যদি তা না করেন তাহলে আপনি তাঁর রেসালতের কিছুই প্রচার করেন নি) এ আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ই বা কোন্ বাণী ঘোষণার নির্দেশ দিয়েছেন যা পালন না করলে রাসূল (সা.) রেসালতের কোন দায়িত্বই পালন করেন নি বলা হয়েছে? কেনই বা তিনি তাঁর রাসূলকে এ বিষয়ে এতটা উদ্বুদ্ধ করেছেন যা অনেকটা ভীতি প্রদর্শনের পর্যায়ে উপনীত হয়েছে? এটি কিরূপ দায়িত্ব ছিল যা পালনে রাসূল (সা.) ফিতনার ভয় পাচ্ছিলেন? আর এ কারণেই কি মহান আল্লাহ্ তাঁর রাসূলকে মুনাফিকদের হতে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দান করেছেন?
অন্য মতবাদের কোন দার্শনিক আপনাকে উপরোক্ত প্রশ্নগুলো করলে আপনি কি এ জবাব দেবেন,মহান আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল মুসলমানদের সমবেত করেছিলেন এ উদ্দেশ্যে যে,তিনি ঘোষণা করবেন আলী তাঁদের সহযোগী ও বন্ধু। আমার বিশ্বাস হয় না আপনি এ জবাবে সন্তুষ্ট হবেন এবং এরূপ একটি সাদামাটা কর্মের দায়িত্ব মহান আল্লাহ্ যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক এবং তাঁর নবী যিনি অন্য সকল নবীর নেতা ও প্রজ্ঞাবানদের সর্দার তাঁদের ওপর আরোপ করাকে যথেষ্ট মনে করবেন। আপনি এসবের ঊর্ধ্বে যে রাসূলের প্রতি এমন ধারণা পোষণ করবেন যে,তিনি তাঁর সমগ্র প্রচেষ্টাকে এমন কর্মে নিয়োজিত করবেন যা ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই এবং সবার নিকট স্পষ্ট। নিঃসন্দেহে আপনি বিশ্বাস করেন রাসূলের যে কোন কর্ম প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিদের দৃষ্টিতে ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে না এবং তাঁদের পক্ষে তাঁর কর্মের ভুল ধরাও অসম্ভব। বরং নবীর বাক্য ও কর্ম প্রজ্ঞাজনোচিত ও ভুলত্রুটির ঊর্ধ্বে বলে তাঁকে আপনি নিষ্পাপ মনে করেন। স্বয়ং আল্লাহ্ সূরা তাকভীরে বলেছেন,“
নিশ্চয় এটি সম্মানিত রাসূলের বাণী। যিনি শক্তিশালী আরশের অধিপতির নিকট মর্যাদাশীল। সবার মান্যবর,বিশ্বাসভাজন এবং তোমাদের এ সঙ্গী (রাসূল) উম্মাদ নন।”
মহান আল্লাহর এরূপ সুস্পষ্ট বর্ণনার পর তাঁকে কোন ত্রুটির অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় কি বা তাঁর কর্মকে অসংলগ্ন প্রতিজ্ঞা ও যুক্তির আলোকে ব্যাখ্যার সুযোগ থাকে কি? এমন সব প্রতিজ্ঞা ও যুক্তি যার মূল ঘটনার সঙ্গে কোন সংশ্লিষ্টতাই নেই। আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল এরূপ বিষয়ের ঊর্ধ্বে। গাদীর দিবসে ঊষর ও উত্তপ্ত মরু প্রান্তরে নবীর বাক্য ও কর্মের একমাত্র ব্যাখ্যা হতে পারে এই যে,তিনি আল্লাহর নির্দেশ পালনের নিমিত্তে অর্থাৎ তাঁর স্থলাভিষিক্ত ও খলীফা মনোনয়নের ঘোষণা দানের জন্যই এরূপ করেছিলেন। গাদীরের হাদীসের শাব্দিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংশ্লিষ্টতা হতেও এটি স্পষ্ট যে,নবী (সা.) তাঁর পরবর্তী নেতা হিসেবে আলীকে ঘোষণা করার জন্যই এমন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। সুতরাং এ হাদীস এর পারিপার্শ্বিক ঘটনা ও প্রেক্ষাপটের কারণে আলী (আ.)-এর খেলাফতের পক্ষে অকাট্য দলিল যা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যার সুযোগ নেই। যে ব্যক্তি বুদ্ধিবৃত্তিকে কর্মে নিয়োজিত করবে এবং কর্ণ ও চক্ষুকে উন্মুক্ত করবে সে দেখতে পাবে এরূপ ব্যাখ্যা হতে প্রত্যাবর্তনের কোন পথ নেই।
২। কিন্তু হাদীসটিকে ব্যাখ্যার জন্য সহযোগী যে হাদীসের আশ্রয় গ্রহণ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন এবং সত্যকে গোপন ও মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রণের মাধ্যমে একে বিকৃতির পোষাক পরানোর প্রচেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। কারণ রাসূল (সা.) আলী (আ.)-কে দু’
বার ইয়েমেনে প্রেরণ করেন। প্রথম বার অষ্টম হিজরীতে এবং এবারই নিন্দুকেরা আলীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় ও মদীনায় ফিরে রাসূলের নিকট অভিযোগ করে। নবী (সা.) এতে তাদের ওপর এতটা ক্ষুব্ধ হন যে,তাঁর চেহারা পরিবর্তিত হয়ে যায়
এবং তারা আলীর বিষয়ে এরূপ কথা আর বলে নি।
দ্বিতীয়বার যখন রাসূল (সা.) আলীকে ইয়েমেন প্রেরণ করেন (দশম হিজরীতে) তখন তিনি স্বয়ং আলীর হাতে পতাকা তুলে দেন ও নিজের পাগড়ী খুলে আলীর মাথায় বেঁধে দিয়ে বলেন,“
যাত্রা কর। অন্য কোন দিকে দৃষ্টি দিও না।”
আলী (আ.) রাসূলের নির্দেশমত সকল দায়িত্ব পালন করে ফিরে বিদায় হজ্বে রাসূলের সঙ্গী হন ও তাঁর সঙ্গে হজ্বের নিয়ত করে ইহরামের পোষাক পড়েন এবং হজ্বের সকল দায়িত্ব একসঙ্গে সম্পাদন করেন। এমন কি রাসূল (সা.) তাঁর কুরবানীতে আলীকে শরীক করেন।
এইবার কেউই রাসূলের নিকট আলীর বিষয়ে অভিযোগ করে নি। সুতরাং কিরূপে আমরা বলতে পারি গাদীরের হাদীস আলীর বিরূদ্ধে অভিযোগের ফলশ্রুতিতে বলা হয়েছে?
তদুপরি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের কারণে নবী (সা.) সকলকেই যাত্রাবিরতি করিয়ে উটের পিঠে বসার সামগ্রীগুলো নামিয়ে মিম্বার তৈরী করার নির্দেশ দেবেন ও দীর্ঘক্ষণ তাঁর প্রশংসা ও গুণকীর্তন করবেন এরূপ কথা তাঁর মর্যাদার পরিপন্থী বলেই গণ্য হবে। এরূপ বিশ্বাস হতে আল্লাহর আশ্রয় চাই যে,আমরা রাসূলের কাজকে অযথা ও অতিরঞ্জিত মনে করবো,কারণ তাঁর প্রজ্ঞা এ কর্মের অনুমতি দেয় না। মহান আল্লাহ্ তাঁর সম্পর্কে বলেছেন,“
নিশ্চয়ই এই কোরআন একজন সম্মানিত রাসূল কর্তৃক আনীত এবং এটি কোন কবির বাণী নয়;তোমরা কমই বিশ্বাস কর এবং এটি কোন অতীন্দ্রীয়বাদীর কথা নয়;তোমরা কমই অনুধাবন কর। এটি বিশ্ব পালনকর্তার নিকট হতে অবতীর্ণ।”
যদি রাসূল (সা.) চাইতেন (বিরোধীদের কথাকে প্রত্যাখ্যান করে) শুধু আলী (আ.)-এর মর্যাদা বর্ণনা করতে তবে তা এভাবে বলতে পারতেন-
هذا ابن عمّي و صهري و أبو ولدي و سيّد أهل بيتي فلا تؤذوني فيه
অর্থাৎ সে (আলী) আমার চাচাতো ভাই,জামাতা,আমার সন্তানদের (দৌহিত্র) পিতা এবং আমার আহলে বাইতের নেতা সুতরাং তাকে কষ্ট দান কর না।
অথবা এরূপ কোন বাক্য যা রাসূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ও মর্যাদা নির্দেশ করে। কিন্তু তা তিনি করেন নি,বরং হাদীসের শুরু এবং শেষে এমন কথা বলেছেন যা তাঁর নেতৃত্বের দিকেই ইঙ্গিত করে বলে আমাদের বৃদ্ধিবৃত্তি সর্বপ্রথম বলে।
এখন এরূপ বক্তব্য উপস্থাপনের কারণ যা-ই হোক বক্তব্যের শব্দ ও বাচনভঙ্গীর প্রতি আমাদের অবশ্যই দৃষ্টি দিতে হবে।
তাছাড়া গাদীরের হাদীসে আহলে বাইতের স্মরণ আমাদের কথাকেই সমর্থন করে,কারণ আহলে বাইতকে তিনি কোরআনের সমকক্ষ ঘোষণা করে জ্ঞানবানদের ইমাম বলে তাঁদের পরিচিত করিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
إنّي تارك فيكم الثّقلين ما إن تَمسّكتم به لن تضلّوا كتاب الله و عترتي أهل بيتي
“
আমি তোমাদের মাঝে দু’
টি মূল্যবান ও ভারী বস্তু রেখে যাচ্ছি,যদি তোমরা তা আঁকড়ে ধর তাহলে কখনো বিচ্যুত হবে না,তা হলো আল্লাহর কিতাব এবং আমার রক্ত সম্পর্কীয় আহলে বাইত।”
তিনি এরূপ করেছেন যাতে উম্মত জানতে ও বুঝতে পারে রাসূলের পর দীনের জন্য এ দু’
য়ের ওপরই নির্ভর করতে হবে ও এ দু’
য়ের দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তাই আহলে বাইতের পবিত্র ইমামদের অনুসরণের অপরিহার্যতা প্রমাণের জন্য এটিই যথেষ্ট যে,তাঁদেরকে সেই কোরআনের সমকক্ষ ঘোষণা করা হয়েছে যাতে কোনক্রমেই বিচ্যুতি প্রবেশ করতে পারে না। এ কারণেই আল্লাহর কিতাবের পরিপন্থী নির্দেশের অনুসরণ যেমন বৈধ নয় তেমনি এমন কোন নেতা বা নেতৃত্বের অনুসরণও বৈধ নয় যারা আহলে বাইতের ইমামদের নির্দেশের পরিপন্থী নির্দেশ দান করে।
তাই রাসূলের এ কথাفإنّهما لن ينقضيا أو لن يفترقا حتّى يردا عليّ الحوض
অর্থাৎ‘
এরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না হাউজে কাউসারে আমার সঙ্গে মিলিত হবে’
-এ হতে সুস্পষ্ট যে,রাসূলের ওফাতের পর হতে কিয়ামত পর্যন্ত কখনোই পৃথিবী কোরআনের সমকক্ষ আহলে বাইতের মধ্য হতে কোন ইমামবিহীন হবে না। এ হাদীস হতে আরো বোঝা যায় খেলাফতও আহলে বাইতের বাইরে হতে পারবে না। এর সপক্ষে যুক্তি হিসেবে মুসনাদে আহমাদের ৫ম খণ্ডের ১২২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত নিম্নোক্ত হাদীসটি লক্ষণীয়।
হযরত যাইদ ইবনে সাবিত রাসূল (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন,
إنّي تارك فيكم خليفتين كتاب الله حبل محدود من السّماء إلى الأرض و عترتي أهل بيتي فإنّهما لن يفترقا حتّى يردا عليّ الحوض
“
আমি তোমাদের মাঝে দুই খলীফা (প্রতিনিধি) রেখে যাচ্ছি আল্লাহর কিতাব যা আসমান হতে যমীন পর্যন্ত বিস্তৃত এক রজ্জু এবং আমার আহলে বাইত। এরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না যতক্ষণ না হাউজে আমার সঙ্গে মিলিত হবে।”
এ হাদীসটিও আহলে বাইতের ইমামদের খেলাফতের সপক্ষে একটি অকাট্য দলিল। আপনি অবগত যে,আহলে বাইতের অনুসরণের অপরিহার্যতার দলিল হযরত আলীর অনুসরণের অপরিহার্যতা দান করে,কারণ আলী (আ.) নিঃসন্দেহে রাসূলের আহলে বাইতের প্রধান।
তাই গাদীর ও অনুরূপ অন্যান্য হাদীস হতে বোঝা যায় এর কোনটিতে হযরত আলী আহলে বাইতের প্রধান হিসেবে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর পক্ষ হতে কোরআনের সমমর্যাদায় অধিষ্ঠিত আবার কোনটিতে নিজের ব্যক্তিত্বের কারণে রাসূলের মত মুমিনদের নেতা হিসেবে তাঁদের পক্ষ হতে ঘোষিত।
ওয়াসসালাম
শ