আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত0%

আল মুরাজায়াত লেখক:
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ: ইতিহাস

আল মুরাজায়াত

লেখক: আল্লামাহ্ সাইয়্যেদ আবদুল হুসাইন শারাফুদ্দীন আল মুসাভী
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ:

ভিজিট: 66910
ডাউনলোড: 8915

পাঠকের মতামত:

আল মুরাজায়াত
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 133 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 66910 / ডাউনলোড: 8915
সাইজ সাইজ সাইজ
আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত

লেখক:
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বাংলা

বাহাত্তরতম পত্র

১২ সফর ১৩২০ হিঃ

১।   তিনি রাসূল (সা.)-এর স্ত্রীদের মধ্যে সর্বোত্তম ছিলেন না।

২।   বরং তাঁদের সর্বোত্তম হলেন হযরত খাদিজাহ্ (আ.)।

৩।   হযরত আয়েশার হাদীস গ্রহণ না করার কারণের প্রতি ইশারা।

১। যদিও উম্মুল মুমিনীন হিসেবে হযরত আয়েশার অবস্থান ও মর্যাদা তাঁর স্থানে সংরক্ষিত,তদুপরি তিনি নবী (সা.)-এর স্ত্রীদের মধ্যে সর্বোত্তম নন। তিনি নবীর স্ত্রীদের মধ্যে সর্বোত্তম নন কারণ তাঁর নিজের বর্ণিত সহীহ হাদীস এরূপ- একদা রাসূল (সা.) হযরত খাদিজাহকে স্মরণ করলে আমি তাঁর সমালোচনা করে বললাম : তিনি একজন এমন ও এমন বৃদ্ধা মহিলা ছিলেন এবং আল্লাহ্ তাঁর চেয়ে উত্তম স্ত্রী আপনাকে দিয়েছেন। রাসূল (সা.) বললেন : মহান আল্লাহ্ তার হতে উত্তম স্ত্রী আমাকে দান করেন নি,সে আমার ওপর এমন অবস্থায় ঈমান এনেছিল যখন অন্যরা কাফির ছিল;অন্যরা যখন আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল তখন সে আমাকে সত্য বলে মেনেছিল;সে আমাকে তার সম্পদে অংশীদার করেছিল যখন অন্যরা আমাকে বঞ্চিত করেছিল;আল্লাহ্ তার মাধ্যমে আমাকে সন্তান দান করেছেন,অন্যদের হতে নয়।৪১৫

অন্যত্র হযরত আয়েশা হতে বর্ণিত হয়েছে,‘‘ এমন দিন ছিল না যে রাসূল (সা.) ঘর হতে বের হবার সময় খাদিজাহকে স্মরণ ও তাঁর ওপর দরূদ পড়তেন না। একদিন তিনি তাঁকে স্মরণ করলে আমার নারীসুলভ ঈর্ষা জেগে উঠল ও আমি বললাম : তিনি কি এক বৃদ্ধা রমনী বৈ আর কিছু ছিলেন? আল্লাহ্ তাঁর চেয়ে উত্তম স্ত্রী আপনাকে দিয়েছেন। রাসূল (সা.) এতে এতটা রাগান্বিত হলেন যে,ক্রোধের কারণে তাঁর কপালের সম্মুখভাগের চুলগুলো কেঁপে উঠছিল। অতঃপর তিনি বললেন : না,আল্লাহর শপথ,আল্লাহ্ তার চেয়ে উত্তম স্ত্রী কাউকে দেন নি। সে এমন অবস্থায় আমার প্রতি ঈমান এনেছিল যখন সবাই কাফির ছিল;যখন অন্যরা আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিল তখন সে আমাকে সত্যায়ন করেছিল;অন্যরা যখন আমাকে বঞ্চিত করেছিল তখন সে আমাকে তার সম্পদে অধিকার দান করেছিল;তার হতেই মহান আল্লাহ্ আমাকে সন্তান দান করেছিলেন যখন অন্য স্ত্রীরা আমাকে তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

২। সুতরাং নবী (সা.)-এর সর্বোত্তম স্ত্রী ছিলেন এ উম্মতের সত্যবাদিনী হযরত খাদিজাহ্ কুবরা যিনি ঈমান গ্রহণকারী সর্বপ্রথম নারী,আল্লাহর কিতাবকে সত্যায়নকারী ও নবীকে তাঁর সম্পদে অংশীদারকারিনী। এ কারণেই আল্লাহ্ নবীকে তাঁর বিষয়ে সুসংবাদ দিয়েছেন মনি-মুক্তা খচিত বেহেশতের৪১৬ এবং নবীর অন্যান্য স্ত্রীদের ওপর তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করে বলেছেন,

أفْضَلُ نِساء أهلِ الجنَّةِ خديجة بِنْت خَويلد و فاطمة بنت محمد، آسية بنت مزاحم و مريم بنت عمران

বেহেশতের নারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো খুওয়াইলিদের কন্যা খাদিজাহ্,মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমা,মুযাহিমের কন্যা আসিয়া এবং ইমরানের কন্যা মারিয়াম।

তিনি আরো বলেছেন,‘‘ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নারী চারজন। অন্যত্র তাঁদের নাম উল্লেখ করে বলেছেন,‘‘ বিশ্বের নারীদের মধ্যে ইমরানের কন্যা মারিয়াম,খুওয়াইলিদের কন্যা খাদিজাহ্,মুহাম্মদের কন্যা ফাতিমা এবং ফিরআউনের স্ত্রী আসিয়াকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে ম্মরণ করা যায়।’’ এ বিষয়ে নবুওয়াতের সাক্ষী হিসেবে সহীহ ও নির্ভরযোগ্য সূত্রে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত হয়েছে।৪১৭

হযরত খাদিজাহকে বাদ দিলেও নবী (সা.)-এর অন্যান্য স্ত্রীদের হতেও আয়েশা উত্তম নন। রাসূল (সা.) হতে এ সম্পর্কিত সুন্নাহ্ ও হাদীসসমূহ এর সপক্ষে প্রমাণ যা কোন জ্ঞানী ব্যক্তির নিকটই অজ্ঞাত নয়। অবশ্য স্বয়ং হযরত আয়েশা এরূপ চিন্তা করতেন যে,তিনি অন্যদের হতে শ্রেষ্ঠ কিন্তু নবী (সা.) তা সমর্থন করেন নি। এটি হযরত আয়েশা ও উম্মুল মুমিনীন সাফিয়া বিনতে হুয়াই-এর মধ্যে সংঘটিত ঘটনা হতে বোঝা যায়। ঘটনাটি এরূপ- একদিন নবী (সা.) হযরত সাফিয়ার ঘরে গিয়ে দেখলেন যে,তিনি ক্রন্দন করছেন। রাসূল (সা.) তাঁকে প্রশ্ন করলেন, কেন ক্রন্দন করছ? তিনি জবাব দিলেন,‘‘ আমি জেনেছি হযরত আয়েশা ও হাফসা আমার ত্রুটি আলোচনা করে বলেন তাঁরা আমা হতে উত্তম। রাসূল (সা.) বললেন, তুমি তাদের প্রশ্ন কর নি কিরূপে তারা তোমার চেয়ে উত্তম হতে পারে যখন তোমার পিতা হারুন,তোমার চাচা মূসা ও স্বামী মুহাম্মদ! ৪১৮

যদি কেউ উম্মুল মুমিনীন আয়েশার কথা ও কর্মকে বিশ্লেষণের দৃষ্টিতে দেখেন তবে তাঁরাও আমাদের মতই তাঁর বিষযে চিন্তা করবেন।

৩। কিন্তু আমরা হযরত আয়েশার হাদীস দলিল বা হুজ্জাত না হবার কারণেই তা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমার অনুরোধ এ বিষয়ে আপনি জানতে চাইবেন না।

ওয়াসসালাম

তিয়াত্তরতম পত্র

১৩ সফর ১৩৩০ হিঃ

হযরত আয়েশার হাদীস প্রত্যাখ্যানের কারণ।

আপনি এমন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত যাঁরা প্রতারণা ও ষড়যন্ত্র করেন না,যুক্তি ব্যতীত কারো ওপর কিছু আরোপ করেন না ও প্রকৃত ঘটনা ব্যতীত অন্য কিছু বর্ণনা করেন না। আপনার মর্যাদা ও অবস্থানের কারণে আপনি অসত্যের অনুসরণ ও মন্দ ধারণা হতে অনেক দূরে এবং কারো ওপর অপবাদ আরোপ হতেও সতর্ক।

আল্লাহর ইচ্ছায় আমিও প্রতারক,ধূর্ত ও ছিদ্রান্বেষী নই যে,অন্যদের ত্রুটি অন্বেষণে লিপ্ত বা মানুষের গোপন বিষয় অনুসন্ধানে নিয়োজিত হই,বরং সত্য আমার হারানো সম্পদ এবং আমি তার সন্ধানে লিপ্ত। তাই আলোচিত বিষয়ের ব্যাখ্যা চাওয়া আমার নিকট উপেক্ষা করার মত কোন বিষয় নয় এবং আমার এ আহবান প্রত্যাখ্যান ও কোন আপত্তি উপস্থাপনের কোন সুযোগ আপনার নেই। কবির ভাষায়-

নিজের কর্ম শুরু করতে কোন সঙ্কোচ ও দোষ নেই

তাই এর মাধ্যমে নিজের চোখকে উজ্জ্বল করার সুসংবাদ দাও।

আমার এ বিষয়ে জানতে চাওয়ার পেছনে যুক্তি হলো কোরআনের এ আয়াত-

( إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَىٰ مِن بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ أُولَـٰئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّـهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ )

নিশ্চয়ই যারা গোপন করে আমি যেসব বিস্তারিত তথ্য ও হেদায়েতের কথা অবতীর্ণ করেছি মানুষের জন্য,কিতাবের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও;সে সকল লোকের প্রতিই আল্লাহর অভিসম্পাত এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীগণেরও। (সূরা বাকারা : ১৫৯)

ওয়াসসালাম

চুয়াত্তরতম পত্র

১৫ সফর ১৩৩০ হিঃ

১।   হযরত আয়েশার হাদীস প্রত্যাখ্যানের কারণ ব্যাখ্যা।

২।   বুদ্ধিবৃত্তি ওসিয়তের পক্ষে হুকুম করে (ফয়সালা দেয়)।

৩।   উম্মুল মুমিনীনের এ দাবী যে,রাসূল (সা.) তাঁর পার্শ্বে মৃত্যুবরণ করেছেন এ বর্ণনার বিপরীত হাদীসও রয়েছে।

১। আল্লাহ্ আপনাকে সহায়তা করুন। আপনি আলোচ্য বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়ে অনুনয়ের মাধ্যমে আমাকে কিছু বলতে বাধ্য করেছেন। অথচ আপনি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের তেমন মুখাপেক্ষী নন এবং আপনি জানেন ইতোপূর্বে আমরা যা বর্ণনা করেছি তার শুরু এখান হতেই। সুস্পষ্ট দলিল অগ্রাহ্যের মাধ্যমে ওসিয়তের মৃত্যু ঘটানো হয়েছে এখানেই। খুমস,উত্তরাধিকার,দান ও হেবার বিধানসমূহ এখানেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। ফিতনা এখান হতেই৪১৯ । সব শহরের অধিবাসীদের আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.)-এর বিরুদ্ধে সংগঠিত করা হয়েছিল। কবির কথায়-

যা সংঘটিত হয়েছিল তা আর স্মরণ করবো না।

তোমরাও এ বিষয়ে ভাল ধারণা পোষণ কর ও এ বিষয়ে কোন প্রশ্ন কর না।

সুতরাং হযরত আয়েশার কথায় ওসিয়তের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করা কোন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির নিকট কাঙ্ক্ষিত নয়,কারণ তিনি হযরত আলীর প্রতি প্রচণ্ড বিদ্বেষ পোষণ করতেন। শুধু এ স্থানে নয় অনেক স্থানেই তিনি হযরত আলীর বিরুদ্ধে শত্রুতার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। আপনার নিকট প্রশ্ন রাসূলের ওসিয়তকে অস্বীকার করা অধিকতর সহজ,নাকি হযরত আলীর বিরুদ্ধে উষ্ট্রের যুদ্ধে ( জঙ্গে জামালে আসগর )নেতৃত্ব দান করা অধিকতর সহজ,নাকি জঙ্গে জামালে আকবার ৪২০ -এর জন্ম দান? এ দুই যুদ্ধে তিনি তাঁর অন্তরে যা লুক্কায়িত ছিল তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন। অথচ যুদ্ধ দু টি নমুনা হিসেবে তাঁর সাথে আলীর সম্পর্ককে আমাদের নিকট পরিষ্কার করে। যুদ্ধের পূর্বে নিজ ওয়ালী বা অভিভাবক ও রাসূলের ওয়াসি বা মনোনীত নির্বাহী প্রতিনিধির সাথে তাঁর আচরণ এবং যুদ্ধ পরবর্তীতে আলী (আ.)-এর শাহাদাতের খবর শুনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সিজদা আদায়ের পর তাঁর পঠিত নিম্মোক্ত এ দু টি চরণ তাঁর আলীবিদ্বেষী মনোভাবকেই আমাদের নিকট প্রকাশিত করে-

فالقت عصاها و استقرت بها النوى

লাঠি ভূলুণ্ঠিত হয়ে তার ঘাড়ে স্থান নিল

كما قرّ عينا بالاياب المسافر

যেরূপ মুসাফিরের ঘরে ফেরার আনন্দে চক্ষু উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।৪২১

যদি চান তাহলে হযরত আয়েশার জীবনী হতে এ ধরনের আরো কিছু নমুনা আপনার জন্য বর্ণনা করবো যাতে আপনার নিকট তাঁর সঙ্গে আলীর দূরত্বের বিষয়টি পরিষ্কার হয়। এতে আপনি বুঝতে পারবেন রাসূলের স্থলাভিষিক্ত প্রতিনিধি হিসেবে আলীর মনোনয়নের বিষয়টি তাঁর নিকট কতটা কষ্টের ছিল!৪২২

হযরত আয়েশা বলেন,‘‘ রাসূলুল্লাহ্ (সা.) অসুস্থ হলে তাঁর ব্যথা তীব্র হলো এ অবস্থায় তিনি ঘর থেকে বের হলেন। দু ব্যক্তি তাঁর বাহুর নীচে হাত দিয়ে ধরেছিল ও তাঁর পা মাটিতে টেনে চলছিল। ঐ দুই ব্যক্তির একজন হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব ও অন্যজন অপর এক ব্যক্তি। উবাইদুল্লাহ্ ইবনে আবদুল্লাহ্ ইবনে উতবা ইবনে মাসউদ যিনি এ হাদীসটি হযরত আয়েশা হতে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন, ইবনে আব্বাস আমাকে বলেন : ঐ দ্বিতীয় ব্যক্তি যাঁর নাম আয়েশা বলেন নি,তুমি কি জান তিনি কে? আমি বললাম : না। তিনি বললেন : ঐ ব্যক্তি আলী ইবনে আবি তালিব। অতঃপর তিনি বলেন : হযরত আয়েশা আলীকে পছন্দ করতেন না,এ কারণে কখনোই ভালভাবে আলীকে স্মরণ করতেন না। ৪২৩

যখন হযরত আয়েশা কল্যাণের (ভালভাবে) সঙ্গে আলীর নাম স্মরণ করতে পছন্দ করতেন না এবং এতটুকুও উল্লেখ করতে রাজী নন যে,তিনি রাসূলের বাহু ধরে কয়েক ধাপ অতিক্রম করেছেন তখন কিরূপে সম্ভব ওসিয়তের মত বিষয় যা পূর্ণ কল্যাণের সঙ্গে আলীর স্মরণ তা তিনি স্বীকার ও উল্লেখ করবেন?

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১১৩ পৃষ্ঠায় আতা বিন ইয়াসার হতে বর্ণনা করেছেন যে,একদিন এক ব্যক্তি হযরত আয়েশার নিকট এসে হযরত আলী ও আম্মার ইবনে ইয়াসির সম্পর্কে মন্দ কথা বলল। আয়েশা বললেন,‘‘ আলী সম্পর্কে আমি কিছুই তোমাকে বলব না কিন্তু আম্মার সম্পর্কে রাসূল (সা.) হতে শুনেছি। তিনি আম্মার সম্পর্কে বলেছেন : যদি আম্মারকে দু টি বস্তুর মধ্য থেকে একটিকে গ্রহণের স্বাধীনতা দেয়া হয় তবে সে যার মধ্যে অধিকতর কল্যাণ ও হেদায়েত রয়েছে সেটিকেই গ্রহণ করবে।

আফসোস! উম্মুল মুমিনীন আম্মারের কুৎসা হতে বিরত হতে বলছেন কারণ রাসূল (সা.) হতে শুনেছেন যে,দু টি বস্তুর মধ্যে স্বাধীনতা দেয়া হলে আম্মার যেদিকে অধিকতর হেদায়েত ও কল্যাণ রয়েছে সেটিকেই গ্রহণ করবেন। অথচ রাসূলের হারুনরূপ ভ্রাতা,প্রতিনিধি,অন্তরঙ্গ সাথী,উম্মতের সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী ও সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক,তাঁর জ্ঞানের দ্বার,যাঁকে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ভালবাসেন এবং তিনিও আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে ভালবাসেন,প্রথম মুসলমান,ঈমানের ক্ষেত্রে সবার চেয়ে অগ্রগামী,ফজীলত ও মর্যাদার ক্ষেত্রে সবার ওপরে তাঁর সম্পর্কে কৎসা রটনা করা উম্মুল মুমিনীনের নিকট অপরাধ নয়।

তাঁর আচরণে মনে হয় তিনি আল্লাহর নিকট আলীর মর্যাদা ও রাসূলের অন্তরে আলীর অবস্থান সম্পর্কে অজ্ঞাত। ইসলামে আলীর মর্যাদা ও আল্লাহর পথে যে কষ্ট ও মুসিবত আলী সহ্য করেছেন উম্মুল মুমিনীন তা যেন কখনোই শোনেন নি এবং আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের কথায় যেন আলী সম্পর্কে এমন কিছুই বলা হয় নি যাতে করে অন্তত আম্মারের মর্যাদায় আলীকে স্থান দিতে পারতেন।

নবী আমার বুকে মাথা রেখে পাত্র চাইলেন এমতাবস্থায় তাঁর শরীর দুর্বল ও ফ্যাকাশে হয়ে পড়ল এবং তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। অথচ আমিই বুঝলাম না রাসূল (সা.) আলীকে নিজের ওয়াসি বা স্থলাভিষিক্ত,নির্বাহী প্রতিনিধি মনোনীত করে গেলেন? আল্লাহর কসম,উম্মুল মুমিনীনের এ কথা আমার চিত্তকে দ্বিধাগ্রস্ত ও আমার সমগ্র অস্তিত্বকে হতবিহ্বল করেছে। যেহেতু কয়েকভাবে তাঁর এ কথার সমালোচনা করা যায় তাই বুঝতে পারছি না তাঁর মন্তব্যের অসারতার কোন্ দিকটি উল্লেখ করবো। হযরত আয়েশা যেরূপে রাসূলের মৃত্যুঘটনা বর্ণনা করেছেন তা কিরূপে রাসূলের ওসিয়ত করার বিপক্ষে যুক্তি হতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়। উম্মুল মুমিনীনের মতে কি শুধু মৃত্যুর পূর্বমুহূর্তে ওসিয়ত করা চাই,অন্যথায় নয়? অবশ্যই এরূপ নয়। তাই সুস্পষ্ট যে কেউ সত্যের মোকাবিলায় দাঁড়ায় তার যুক্তি হীন ও অসার। মহান আল্লাহ্ কি তাঁর নবীকে উদ্দেশ্য করে কোরআনে বলেন নি,

) كُتِبَ عَلَيْكُمْ إِذَا حَضَرَ‌ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ إِن تَرَ‌كَ خَيْرً‌ا الْوَصِيَّةُ(

তোমাদের ওপর ওসিয়তকে ফরয করা হলো যখন তোমাদের মধ্যে কারো মৃত্যু উপস্থিত হয় ও তার কোন সম্পদ অবশিষ্ট থাকে। (সূরা বাকারা : ১৮০)

উম্মুল মুমিনীন কি মনে করতেন রাসূল (সা.) আল্লাহর নির্দেশের বিরোধিতা করেছেন? তাঁর নির্দেশ হতে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন? এরূপ কথা হতে আল্লাহর আশ্রয় চাই কারণ কখনো তা হতে পারে না। অবশ্যই উম্মুল মুমিনীন বিশ্বাস করতেন রাসূল (সা.) তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ কোরআনের নির্দেশ মত গ্রহণ করতেন। তিনি এর সূরা ও আয়াতগুলোর ওপর আমল করতেন এবং এর আদেশ ও নিষেধের বিষয়ে অন্য সকলের চেয়ে অধিক পালনকারী ছিলেন,এমন কি এর নির্দেশাবলী মেনে নেয়ার ক্ষেত্রে সর্বোত্তম আনুগত্য প্রদর্শন করতেন। সন্দেহাতীতভাবে হযরত আয়েশা রাসূল (সা.) হতে এ হাদীসটি শুনেছেন যে,যে মুসলমানের ওসিয়ত করার মত কোন বস্তু রয়েছে সে যেন দু রাত্রিও ওসিয়ত ব্যতীত না ঘুমায়। সুতরাং ওসিয়তের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহর কঠোর নির্দেশসমূহের বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। নবী (সা.) ও অন্য কোন নবীর জন্যই বৈধ নয় কোন বিষয়ে নির্দেশ প্রদান করেন অথচ নিজে তা সম্পাদন করেন না অথবা কোন বিষয়ে নিষেধ করেন অথচ নিজেই তা হতে বিরত থাকেন না। মহান আল্লাহ্ এমন ব্যক্তিকে নবী হিসেবে মনোনীত বা প্রেরণ করতে পারেন না।

মুসলিম ও অন্যান্যরা আয়েশা হতে বর্ণনা করেছেন যে,রাসূল (সা.) কোন দিরহাম,দিনার,দুম্বা,উট কিছুই রেখে যান নি এবং কোন কিছুই ওসিয়ত করে যান নি। তাঁর পূর্ববর্তী কথাগুলোর মত এটিও ভিত্তিহীন এবং এও সঠিক নয় যে,তিনি বাস্তুবিকই কোন কিছু রেখে যান নি এবং সব কিছুই শূন্যাবস্থায় রেখে প্রস্থান করেছেন। অবশ্য যেহেতু তিনি পৃথিবীর অধিবাসীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা দুনিয়াবিমুখ ছিলেন তাই এ জগতের বিধানুযায়ী তাঁর অবস্থানের ব্যক্তিরা যেরূপ সম্পদ রেখে যান তেমন কোন সম্পদ তিনি রেখে যান নি। তদুপরি ইন্তেকালের সময় তাঁর কিছু ঋণ ছিল৪২৪ ,তাঁর নিকট কিছু আমানতও ছিল এবং তিনি কিছু প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। এসব বিষয়ে তাঁর ওসিয়ত করা অপরিহার্য ছিল। কারণ তাঁর মালিকানাধীন সম্পদ যা তিনি রেখে গিয়েছিলেন তা দিয়ে তাঁর ঋণ পরিশোধ করার পর স্বল্প হলেও উত্তরাধিকার হিসেবে কিছু ছিল। সহীহ হাদীস সূত্রে প্রমাণিত হয় হযরত যাহরা (আ.) তাঁর উত্তরাধিকার দাবী করেছিলেন।৪২৫

২। সব কিছু বাদ দিলেও রাসূল (সা.) এমন এক বস্তু রেখে গিয়েছিলেন যা অন্য কেউ রেখে যান নি ও যার জন্য ওসিয়ত করা অপরিহার্য ছিল। আর তা হলো আল্লাহর অবিচল দীন যা তখন বৃদ্ধি ও বিকাশের প্রথম পর্যায়ে ছিল এবং স্বর্ণ,রৌপ্য,বাড়ী,বাগান,কৃষিক্ষেত্র,গৃহপালিত পশু ও অন্যান্য সম্পদ থেকে অধিকতর ওসিয়তের মুখাপেক্ষী ছিল। তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর উম্মত ইয়াতিম ও অভিভাবকহীন হয়ে পড়ায় তাঁর স্থলাভিষিক্ত,নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী এক অভিভাবকের মুখাপেক্ষিতা তাঁর উম্মতকে চিন্তান্বিত করার কথা যে তারা কিভাবে তাদের দীন ও দুনিয়ার জীবনকে রাসূলের মহান লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত করবে। তাই এটি রাসূলের জন্য অসম্ভব,যে দীন তার বিকাশের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে তা মানুষের ইচ্ছা ও প্রবৃত্তির ওপর ছেড়ে দিয়ে সে দীনের শরীয়ত,আহকাম ও বিধি-বিধানকে সংরক্ষণের জন্য তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামতের ওপর নির্ভর করবেন এবং এ উম্মতের দীন ও দুনিয়ার বিভিন্ন বিষয়ের দিক-নির্দেশনা দানকারী কোন নির্ভরযোগ্য সর্বজনীন অভিভাবক মনোনীত না করেই চলে যাবেন। তিনি তার ইয়াতিম উম্মতকে ঝড়-ঝঞ্ঝাময় অন্ধকার রাত্রিতে চালকবিহীন ও রাখালহীন একদল মেষপালকের ন্যায় অভিভাবকহীন অবস্থায় রেখে যাবেন তা অচিন্তনীয়। আল্লাহ্ তাঁকে ওহী মারফত ওসিয়ত করার নির্দেশ দান করলে তিনি এ বিষয়ে উম্মতের ওপর কঠোরতা আরোপ করে অবশ্যই ওসিয়ত করার কথা বলবেন অথচ নিজেই তা করবেন না এরূপ কর্ম হতে আল্লাহ্ তাঁকে মুক্ত রেখেছেন। সুতরাং আমাদের বিবেক ওসিয়তকে অস্বীকার করতে পারে না। যদিও কোন বড় ব্যক্তিত্ব তা অস্বীকার করে থাকেন। আমরা দেখি নবুওয়াতী দাওয়াতের শুরুতেই মক্কায় যখন ইসলাম তেমন পরিচিতি পায় নি এবং প্রকাশিতও হয় নি তখনই রাসূল (সা.) কোরআনের এ আয়াতটিو أنزر عشيرتك الأقربين  (আর তোমার নিকটাত্মীয়দের ভয় প্রদর্শন কর) অবতীর্ণ হবার মুহূর্তে আলী (আ.)-কে নিজের ওয়াসি বা স্থলাভিষিক্ত প্রতিনিধি হিসেবে ঘোষণা করেছেন যা বিশতম পত্রে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এ ঘটনার পরও রাসূল (সা.) প্রায়ই এ বিষয়টির পুনরাবৃত্তি করতেন। এ রকম কয়েকটি ঘটনার প্রতি আমরা পূর্বে ইশারা করেছি। এমন কি তাঁর ওফাতের পূর্বেও তিনি (আমার পিতামাতা তাঁর জন্য উৎসর্গীকৃত হোক) চেয়েছিলেন আলীর স্থলাভিষিক্তের বিষয়টি লিপিবদ্ধ করে যাবেন যাতে করে তাঁর মুখনিঃসৃত বাণী মজবুত ও দৃঢ়তর হয়। এজন্যই বলেছিলেনایتونی اکتب لکم کتابا لن تضلوا بعدهُ أبدًا   আনো (কালি ও কলম),আমি তোমাদের জন্য এমন লেখা লিখে দিয়ে যাব যাতে তোমরা কখনোই বিপথগামী হবে না। অথচ কেউ কেউ তাঁর শয়নকক্ষে বাক-বিতণ্ডায় লিপ্ত হয়েছিলেন (যদিও তাঁর সম্মুখে এরূপ কর্মে লিপ্ত হওয়া বৈধ নয়) ও বলেছিলেন নবী প্রলাপ বকছেন (নাউযুবিল্লাহ্)।৪২৬

নবী (সা.) জানতেন যে,তাঁর বিষয়ে এরূপ মন্তব্যের পর তাঁর লিখিত বক্তব্যের কোন মূল্য থাকে না ও তা ফিতনা ব্যতীত অন্য কিছুর জন্ম দেবে না। এ কারণেই তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, বেড়িয়ে যাও এবং মৌখিক ঘোষণা দিয়েই শেষ করেছিলেন। এ অবস্থাতেও তিনি তিনটি বিষয়ে ওসিয়ত করেছিলেন। প্রথমত,আলীকে উম্মতের স্থলাভিষিক্ত অভিভাবক হিসেবে ঘোষণা;দ্বিতীয়ত,মুশরিকদের মদীনা থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দান এবং তৃতীয়ত,বিভিন্ন গোত্র ও দল হতে মদীনায় আগত নও মুসলিমদের পুরস্কৃত করা যেমনটি তিনি করতেন। কিন্তু তৎকালীন ক্ষমতাসীন ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ব মুহাদ্দিসদের এ হাদীসটির প্রথম অংশ বর্ণনা হতে নিবৃত্ত রেখেছিলেন। তাঁরা মনে করেছিলেন তাতে এ কথাগুলো হারিয়ে যাবে। বুখারী যে হাদীসটির শেষে রাসূল (সা.) প্রলাপ বকছেন অংশটি উদ্ধৃত করেছেন সেখানে বলেছেন রাসূল (সা.) তাঁর মৃত্যুর সময় তিনটি বিষয়ে ওসিয়ত করেছিলেন। প্রথমত,আরব উপদ্বীপ হতে মুশরিকদের বহিষ্কার;দ্বিতীয়ত,বিভিন্ন গোত্র থেকে যে সকল ব্যক্তি (ইসলাম শিক্ষার উদ্দেশ্যে) মদীনায় আসবে তাদের পূর্বের ন্যায় পুরস্কৃত করা। অতঃপর উল্লেখ করেছেন তৃতীয় বিষয়টি কারোরই মনে নেই। মুসলিম এবং অন্যান্য সুনান ও মুসনাদ লেখকগণও এমনটি করেছেন।

৩। কিন্তু উম্মুল মুমিনীন আয়েশা যে দাবি করেছেন রাসূল (সা.) তাঁর বুকে মাথা রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন তা প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন হাদীস ও রেওয়ায়েতের বিরোধী। কারণ সেগুলোতে বলা হয়েছে রাসূল (সা.) তাঁর ভ্রাতা ও স্থলাভিষিক্ত প্রতিনিধি আলী (আ.)-এর কোলে মাথা রেখে তাঁর প্রিয় ও শ্রেষ্ঠ বন্ধুর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। এ বিষয়ে সহীহ ও মুতাওয়াতির সূত্রে নবীর আহলে বাইত হতে এবং সহীহ সূত্রে আহলে সুন্নাহর রেওয়ায়েতসমূহে বিভিন্ন হাদীস বর্ণিত হয়েছে। হাদীস বিশারদগণ এ সম্পর্কে সম্যক অবগত।

ওয়াসসালাম

পঁচাত্তরতম পত্র

১৭ সফর ১৩৩০ হিঃ

১।   উম্মুল মুমিনীন আবেগতাড়িত হয়ে কিছু করতেন না।

২।   আকল (বিবেক) ভাল-মন্দের নির্ণায়ক নয়।

৩।   উম্মুল মুমিনীনের সাক্ষ্যের বিপরীতে কোন হাদীস বর্ণিত হয় নি।

১। আপনার আলোচনায় উম্মুল মুমিনীনের সুস্পষ্ট ঐ হাদীসে ওসিয়ত অস্বীকার করার বিষয়টিকে দু টি দৃষ্টিতে সমালোচনা করা হয়েছে। প্রথমত,আপনি মনে করেছেন ইমামের পথ থেকে বিচ্যুতির কারণে তিনি ওসিয়তকে অস্বীকার করেছেন।

কিন্তু উম্মুল মুমিনীনের জীবনী হতে বোঝা যায় যে,তিনি রাসূলের হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে ভালবাসা,হিংসা,দ্বেষ ও আবেগ দ্বারা তাড়িত হতেন না। সুতরাং রাসূল হতে যখন তিনি কোন হাদীস বর্ণনা করতেন তখন তাঁকে অভিযুক্ত করা যাবে না এ বলে যে,অমুক ব্যক্তিকে তিনি পছন্দ করতেন বা অমুক ব্যক্তিকে তিনি পছন্দ করতেন না তাই এমনটি বলেছেন। আল্লাহ্ না করুন তিনি রাসূল হতে অসত্য কোন হাদীস বর্ণনা করে সত্যের ওপর নিজ প্রবৃত্তি ও প্রবণতার প্রাধান্য দিয়ে থাকবেন,তা হতে পারে না।

২। দ্বিতীয়ত,আপনি মনে করেছেন আকলের ওপর নির্ভর করে এ হাদীসটির সত্যত্য অস্বীকার করা যায়। যেহেতু আকল হাদীসটির বিষয়বস্তুকে অসম্ভব বলে মনে করে এ যুক্তিতে যে,রাসূল (সা.) আল্লাহর দীনকে এর বিকাশের প্রথম পর্যায়ে যখন এর অনুসারীরা সবেমাত্র ইসলাম গ্রহণ করেছে এ অবস্থায় স্থলাভিষিক্ত প্রতিনিধি ব্যতীত রেখে যেতে পারেন না।

আপনার এ যুক্তিকে আমরা তখনই গ্রহণ করতে পারি যখন আকলকে ভাল-মন্দ নির্ণায়ক হিসেবে গ্রহণ করবো। কিন্তু আহলে সুন্নাহ্ আকলের ভাল-মন্দ পার্থক্য জ্ঞানকে গ্রহণ করে না। কারণ আকল কোন বিষয়ের ভাল-মন্দকে যথার্থরূপে অনুধাবনে সক্ষম নয় যাতে করে সে বলতে পারে এটি ভাল বা ঐটি মন্দ। সুতরাং উম্মতকে অভিভাবকহীন রেখে যাওয়া আল্লাহর জন্য ভাল কি মন্দ তা মূল্যায়নের দায়িত্ব আকলের নয়,বরং শরীয়ত আমাদের সকল কর্মের ভাল-মন্দ নির্ণয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত। এজন্য শরীয়ত যা ভাল বলে তাই ভাল আর যাকে মন্দ বলে তাই মন্দ এবং আকল এ বিষয়ে মোটেই বিশ্বস্ত নয়।

৩। চুয়াত্তর নম্বর পত্রের শেষে আপনি উল্লেখ করেছেন উম্মুল মুমিনীনের বুকে মাথা রেখে রাসূল (সা.) মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁর এ দাবীর বিপরীতে সহীহ হাদীস রয়েছে,আমার জানা মতে আহলে সুন্নাহ্ হতে এরূপ একটি হাদীসও বর্ণিত হয় নি। আপনার নিকট যদি এরূপ কোন হাদীস থাকে তাহলে তা বর্ণনা করুন।

ওয়াসসালাম