আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত0%

আল মুরাজায়াত লেখক:
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ: ইতিহাস

আল মুরাজায়াত

লেখক: আল্লামাহ্ সাইয়্যেদ আবদুল হুসাইন শারাফুদ্দীন আল মুসাভী
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ:

ভিজিট: 66912
ডাউনলোড: 8915

পাঠকের মতামত:

আল মুরাজায়াত
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 133 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 66912 / ডাউনলোড: 8915
সাইজ সাইজ সাইজ
আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত

লেখক:
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বাংলা

৮৯। মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরগণ হযরত ইবনে আব্বাস হতে যারা তাদের সম্পদ হতে দান কর (সূরা বাকারা : ২৭৪) আয়াতটির ব্যাপারে বলেছেন, এটি আলী ইবনে আবি তালিবের শানে নাযিল হয়েছে। কারণ আলীর নিকট চার দিরহাম ছিল যার একটিকে রাত্রিতে,অপরটি দিনে,তৃতীয়টি গোপনে এবং চতুর্থটি প্রকাশ্যে দান করেছিলেন।”ওয়াহেদী তাঁর আসবাবুন নুযূল গ্রন্থে হাদীসটি ইবনে আব্বাস হতে এবং মুহাদ্দিস কালবী হতে কিছু বর্ধনসহ বর্ণনা করেছেন।

৯০। সূরা জুমার : ৩৩।

‘যে সত্য নিয়ে আগমন করেছে’কথাটিতে রাসূলের প্রতি এবং যে তাঁকে সত্য প্রতিপন্ন করেছে’বলতে ইমাম আলীর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইমাম বাকির,ইমাম সাদিক,ইমাম মূসা এবং ইমাম রেযা (আ.) ছাড়াও ইবনে আব্বাস,মুহাম্মদ হানাফিয়া,আবদুল্লাহ্ ইবনে হাসান,যাঈদ ইবনে আলী ইবনুল হুসাইন এবং ইমাম সাদিকের পুত্র আলীও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.) এ আয়াতের মাধ্যমে সব সময় নিজের পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করতেন। ইবনে মাগাযেলী শাফেয়ী তাঁর মানাকিব’গ্রন্থে মুজাহিদ হতে নকল করেছেন ও বলেছেন,“ ‘ যে সত্য নিয়ে এসেছে’বলতে মুহাম্মদ (সা.) এবং যে তাঁকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে’বলতে আলীকে বুঝানো হয়েছে।”ইবনে মারদুইয়া ও আবু নাঈমও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৯১। তুর : ২১। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৪৬৮ পৃষ্ঠায় সূরা তুরের তাফসীরে ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন (الحقنا بِهم ذريتهم ) অর্থাৎ তাদের বংশধরদের মধ্য হতে তাদের সন্তানদেরও তাদের সঙ্গে মিলিত করবো”আয়াতটিতে বলা হয়েছে যদিও মুমিন ব্যক্তির সন্তানগণ আমলের ক্ষেত্রে তার থেকে কম হয় তদুপরি আল্লাহ্ তাদের আমলকে উন্নীত করে (তাদের মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে) তার সঙ্গে মিলিত করবেন।

৯২। ইবনে হাজার আসকালানী তাঁর আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ১১ অধ্যায়ে বলেছেন একদল মুফাসসির ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন, আলে ইয়াসিনের ওপর সালাম’অর্থ আলে মুহাম্মদের ওপর সালাম। কালবীও তদ্রুপ বলেছেন বলে ইবনে হাজার উল্লেখ করেছেন। ফখরে রাজী বলেন, আহলে বাইত পাঁচটি ক্ষেত্রে রাসূলের সঙ্গে উল্লিখিত হয়েছেন,এই পাঁচ আয়াত হলো-(১)السلام عليك يا أيّها النّبِيّ অর্থাৎ হে নবী! আপনার ওপর সালাম (২)سلام على آلياسين অর্থাৎ আলে ইয়াসিনের ওপর সালাম (৩) নামাযের তাশাহহুদ (৪) আল্লাহ্ যখন তাঁদেরطاهر অর্থাৎ পবিত্র বলে ঘোষণা করেছেন ও বলেছেনو يطهّركم تطهيرًا এবং (৫) তাঁদেরকে যেখানে ভালবাসতে নির্দেশ দিয়েছেন ও সদকা তাঁদের জন্য হারাম করেছেনفاتبعوني يحببكم الله   এবং

( قل لا أسئلكم عليه أجرا إلّا المودّة في القربى )

৯৩। আহযাব : ৫৬।

বুখারী তাঁর তাফসীরুল কোরআন’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডে সূরা আহযাবের উপরোক্ত আয়াতের তাফসীরে এবং মুসলিম তাঁর নবীর ওপর দরূদের আলোচনায় (কিতাবুস্ সালাওয়াত ১ম খণ্ডে) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৯৪। আস-সাওয়ায়েক,অধ্যায় ১১,পৃষ্ঠা ৮৭।

৯৫। সা লাবী তাঁর তাফসীরে কাবীর’-এ এই আয়াতের তাফসীরে মহানবী (সা.) হতে বর্ণনা করেছেন, তুবা বেহেশতী একটি বৃক্ষের নাম যা আমার বেহেশতী ঘরে রয়েছে,তার শাখাগুলো বেহেশতবাসীদের ঘরে ঘরে প্রসারিত। একজন প্রশ্ন করল : ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি বলেছিলেন বৃক্ষটি আলীর ঘরে। তখন রাসূল (সা.) বললেন : আলীর ঘর ও আমার ঘর কি ভিন্ন? বরং আমাদের ঘর একই।”

৯৬। মরহুম কুলাইনী সহীহ সনদে সালিম ইবনে কায়িস হতে বর্ণনা করেছেন,ইমাম বাকির (আ.)-কেثمّ اورثنا الكتاب আয়াতটি সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনالسّابق بالخيرات বলতে ইমাম এবংمقتصد বলতে ইমামকে যে চিনেছে ওظالم لنفسه বলতে যারা ইমামকে চিনে নি। একই অর্থবহ হাদীস ইমাম রেযা,ইমাম কাযেম এবং ইমাম সাদিক হতেও বর্ণিত হয়েছে। সাদুক এবং অন্যান্য শিয়া হাদীসবেত্তাগণও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনে মারদুইয়া হযরত আলী (আ.) হতে একই অর্থে হাদীস বর্ণনা করেছেন। এজন্য তানযিলুল আয়াত’ও গায়াতুল মারাম’গ্রন্থে লক্ষ্য করুন।

৯৭। ইবনে হাজার তাঁর আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ৩য় পর্বের ৯ম অধ্যায়ে ৭৬ পৃষ্ঠায় এবং ইবনে আসাকির তাঁর ইতিহাস গ্রন্থে ইবনে আব্বাস হতে এটি উদ্ধৃত করেছেন।

৯৮। যুক্তিশাস্ত্রের যে দু টি প্রস্তাব হতে ফলাফল পাওয়া যায় তাদেরকে প্রতিজ্ঞা বলা হয়।

৯৯। গ্রন্থটিতে যে সকল আয়াত আহলে বাইতের শানে বর্ণিত হয়েছে সেগুলো আলোচনা করা হয়েছে।

১০০। সুনানে আবু দাউদ,সুনানে তিরমিযী,সুনানে নাসায়ী ও সুনানে ইবনে মাজাহ্কে একত্রে সুনানে আরবাআহ্ বলা হয়।

১০১। মুখতাসারু জামেয়ি বায়ানিল ইলম ও ফাজলাহু-আল্লামাহ্ আহমাদ ইবনে উমর মাহমাছানী বৈরুতী।

১০২।علم جرح و تعديل

১০৩। ইবনে কুতাইবা তাঁর মা আরিফ’গ্রন্থের তাবেয়ীন অধ্যায়ে (১৬৫ পৃষ্ঠায়) এদের পরিচিতি দান করেছেন।

১০৪। ইবনে আদী বলেছেন, হুসাইন ইবনে আলী সাকুনী কুফী,মুহাম্মদ ইবনে হাসান সাকুনী,সালিহ ইবনে আসওয়াদ আ মাশ হতে এবং তিনি আতিয়া হতে আমাদের জন্য বর্ণনা করেছেন,হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ আনসারীকে জিজ্ঞেস করলাম : আপনাদের মধ্যে আলীর মর্যাদা কিরূপ? তিনি বললেন : তিনি শ্রেষ্ঠ মানুষ।”

যাহাবী এ হাদীসটি মিযান গ্রন্থে সালিহ ইবনে আসওয়াদের পরিচিতি পর্বে উল্লেখ করেছেন। যদিও সালিহ আহলে বাইত বিদ্বেষী তদুপরি সেখানে শুধু এটুকু বলেছেন যে,সম্ভবত তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ মানুষ।

১০৫। আলী কত ভাল মানুষ’যদিও আলীর প্রতি প্রশংসাবাণী তদুপরি এ কথাটি দ্বারা আলী (আ.)-এর মর্যাদা কোনক্রমেই বোঝানো হয় না এবং কথাটি এমন একজন ব্যক্তির মুখ হতে এসেছে যে ইমামের শত্রু। এক্ষেত্রে শারিকের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া আলী (আ.)-এর ব্যাপারে সাধারণের ধারণার কারণে। কেননা ইমাম আলীর ব্যাপারে তাঁর শত্রুপক্ষীয় ব্যক্তির এ কথা আলী কত ভাল মানুষ’এবং নিজের সম্পর্কে আল্লাহর কথাفقدرنا فنعم القادرون আমরা পরিমাণ নির্ধারণ করেছি,পরিমাণ নির্ধারণকারীরা কত উত্তম’(সূরা মুরসালাত : ২৩) ও আলী সম্পর্কেنعم العبد انه اواب সে কত উত্তম মানুষ কারণ সে কঠিন তওবাকারী’(সূরা সোয়াদ : ৩০) কথাটির মধ্যে কত পার্থক্য? কারণ এ কথার সাথে আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সে তওবাকারী’যোগ করেছেন উত্তম মানুষ হবার যুক্তি হিসেবে।

১০৬। তাবারীও এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং যাহাবী ইবাদ ইবনে ইয়াকুবের পরিচিতি পর্বে উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন।

১০৭। তিনি হযরত আবু বকরের খেলাফতকালে মুরতাদদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন বলে ইবনে হাজার আসকালানী তাঁর আস-সাওয়ায়েক’গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।

১০৮। মিযানুল ই তিদাল গ্রন্থে রাশিদ হাজরী পরিচয় পর্বে যাহাবী বর্ণনা করেছেন,শা’বীকে জিজ্ঞেস করা হলো, আলীর বন্ধুদের নিকট জ্ঞান শিক্ষা করেছো অথচ তাদের কেন গালি দাও? তিনি বললেন, কার নিকট? বলা হলো,হারিস ও সা’সাআহ্ হতে। তিনি জবাবে বললেন, সা’সাআহ্ তুখোড় বক্তা,তাঁর নিকট আমি শুধু বক্তব্য শিক্ষা করেছি ও হারিস অংকশাস্ত্রবিদ,তাঁর নিকট আমি হিসাব শিক্ষা লাভ করেছি।”

১০৯। আল কামিল,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃঃ ১৩৭।

১১০। আল কামিল,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃঃ ৩৯১।

১১১। যে সকল ব্যক্তির মধ্যে ইনসাফ রয়েছে তাঁরা এ সকল হাদীসের ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে একমত ও তাঁদের সহীহ হাদীস গ্রন্থসমূহে আগ্রহ সহকারে তা বর্ণনা করেছেন। শুধু আহলে বাইতের প্রতি কটুভাষী ও বিদ্বেষপোষণকারী নাসেবী ও খারেজীরা এ সকল হাদীস বিরোধী। সিহাহর লেখকগণ তাঁর হতে যে সকল হাদীস বর্ণনা করেছেন তার একটি হলো আহমাদ ইবনে আযহার হতে,তিনি বলেছেন : যুহরী হতে শুনেছি ও তিনি উবায়দুল্লাহ্ হতে এবং উবায়দুল্লাহ্,ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন,রাসূল (সা.) একদিন আলীর প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন : যে সকল ব্যক্তি তোমাকে ভালবাসে তারা আমাকেও ভালবাসে এবং তুমি দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের নেতা আর যারা তোমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে তারা মূলত আমার প্রতিও বিদ্বেষ পোষণ করে। তোমার শত্রু আল্লাহরই শত্রু ও তোমার প্রতি ভালবাসা পোষণকারী আল্লাহর প্রতিও ভালবাসা পোষণকারী। ধ্বংস সে ব্যক্তির যে তোমার সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করে। এ হাদীসটি হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১২৮ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করে বলেছেন বুখারী ও মুসলিমের মতে হাদীসটি সহীহ।

আবদুর রাজ্জাক আরো বলেছেন তিনি মুয়াম্মার হতে ও তিনি ইবনে নাজী হতে এবং নাজী মুজাহিদ সূত্রে ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন,তিনি বলেছেন, আমি ফাতিমাকে তাঁর পিতার নিকট বলতে শুনেছি : আমাকে একজন দরিদ্র ব্যক্তির নিকট বিবাহ দিচ্ছেন? রাসূল (সা.) বললেন : তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও,মহান আল্লাহ্ পৃথিবীর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে দুই ব্যক্তিকে মনোনীত করলেন যার প্রথমজন আমি ও দ্বিতীয়জন তোমার স্বামী।”এ হাদীসটি হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১২৯ পৃষ্ঠায় অবিচ্ছিন্ন সূত্রে সারিহ ইবনে ইউনুস,আবু হাফস,আ মাশ,আবু সালিহ এবং তিনি আবু হুরাইরা হতে বর্ণনা করেছেন।

১১২। যেমন আহলে বাইতের শত্রু মুয়াবিয়া সম্পর্কে আবদুর রাজ্জাক ইবনে উয়াইনা হতে ও তিনি আলী ইবনে যাইদ ইবনে জাযআন এবং তিনি আবি নাছরাহ হতে আবু সাঈদ খুদরীর সূত্রে অবিচ্ছিন্ন হাদীস নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, যখন মুয়াবিয়াকে আমার মিম্বারে বক্তব্য দিতে দেখবে তখন তাকে হত্যা করবে।”

১১৩। মিযানুল ই তিদাল’গ্রন্থের আবদুর রাজ্জাক পরিচয় পর্ব।

১১৪। মিযানুল ই তিদাল’আবদুর রাজ্জাক পরিচিতি পর্ব।

১১৫। মা আরিফ,পৃষ্ঠা ১৭৭।

১১৬। মা আরিফ,পৃষ্ঠা ২০৬।

১১৭। তাঁর সংকলিত হাদীস নকল করার অনুমতি প্রাপ্ত।

১১৮। অনেকে ভুল করে তাঁকে হাযেম বলেছেন। কিন্তু তাঁর প্রকৃত নাম খাযেম(خازم)

১১৯। মুখতাসার’গ্রন্থে।

২২০। তাবাকাতে ইবনে সা দ,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃষ্ঠা ২৩৫।

২২১। এটি হাযরামীর ফিতনা’বলে প্রচলিত।

২২২। ২২ পৃষ্ঠা।

২২৩। ১১৬ পৃষ্ঠা।

২২৪। শারহু নাহজুল বালাগাহ্ ইবনে আবিল হাদীদ’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ২৬৩ পৃষ্ঠা (মিশর হতে প্রকাশিত,পুরাতন ছাপা)। কিন্তু নাকজুল উসমানিয়া’গ্রন্থটি একটি অনন্য গ্রন্থ যা যে কোন সত্যান্বেষী মানুষের জন্য নির্দেশক। এ বিষয়টি ইবনে আবিল হাদীদের শারহু নাহজুল বালাগাহ’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ২৫৭ হতে ২৮১ পৃষ্ঠায় কাসিয়াহ্’নামক খুতবার শেষে বর্ণিত হয়েছে।

২২৫। সীরায়ে হালাবী’গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ৩৮১ পৃষ্ঠায় উপরোক্ত অধ্যায়ে দেখুন। সুতরাং ইবনে তাইমিয়ার গোঁড়ামীপূর্ণ বক্তব্য কোনক্রমেই ইনসাফপূর্ণ নয়। এ হাদীসটি মুহাম্মদ হাসনাইন হাইকল তাঁর জারিদাতুস্ সিয়াসাত’সাময়িকীর ২য় ইস্যুর ৫ম পৃষ্ঠায় বিস্তারিতভাবে এনেছেন। (১৩৫০ হিজরীর ১২ জিলক্বদে প্রকাশিত সাময়িকীর ২৭৫১ নং সংযুক্তিতে) এছাড়া ৪র্থ ইস্যুর ৬ষ্ঠ পৃষ্ঠায় ২৭৮৫ নং সংযুক্তিতে এ হাদীসটি তিনি সহীহ মুসলিম,মুসনাদে আহমাদ,আবদুল্লাহ্ ইবনে আহমাদের যিয়াদাতে মুসনাদ,ইবনে হাজার হাইসামীর জাময়ূল ফাওয়ায়েদ,ইবনে কুতাইবার উয়ুনুল আখবার,আহমাদ ইবনে আবদে রাব্বিহর আকদুল ফারিদ,আমর ইবনে বাহার জাহেয বনি হাশিম হতে এবং আবু ইসহাক সা লাবীর তাফসীরের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

ব্রিটিশ লেখক জর্জের গ্রন্থ যা আরবীতে মাকালাত ফিল ইসলাম’নামে অনূদিত হয়েছে (হাশিম আরাবী নামক প্রোটেস্টান্ট খ্রিস্টান কর্তৃক অনূদিত) সেই গ্রন্থের ৭৯ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত হয়েছে। (ষষ্ঠ প্রকাশ)

হাদীসটি এত প্রসিদ্ধ যে,বিভিন্ন বিদেশী গ্রন্থকারও তাঁদের বিভিন্ন ভাষায় (যেমন ফরাসী,ইংরেজী ও জার্মান) গ্রন্থে এনেছেন। টমাস কার্লাইল তাঁর গ্রন্থে এটি সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছেন।

২২৬। ৩৯২ পৃষ্ঠার ৬০০৮ নং হাদীসটি ইবনে জারীর হতে বর্ণিত হয়েছে,তা দেখুন। ৩৯৬ পৃষ্ঠার ৬০৪৫ নং হাদীসটি মুসনাদে আহমাদ সূত্রে জিয়া মুকাদ্দাসীর আল মুখতারাহ হতে বর্ণিত হয়েছে। হাদীসটি তাহাভী ও ইবনে জারীর সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন। ৩৯৭ পৃষ্ঠার ৬০৫৬ নং হাদীস ইবনে ইসহাক,ইবনে জারীর,ইবনে আবি হাতেম,ইবনে মারদুইয়া,আবু নাঈম ও বাইহাকী তাঁর শো বাল ঈমান গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। ৪০১ পৃষ্ঠার ৬১০২ নং হাদীসটি ইবনে মারদুইয়া হতে এবং ৪০৮ পৃষ্ঠার ৬১৫৫ নং হাদীসটি আহমাদ ইবনে হাম্বলের মুসনাদ গ্রন্থ হতে বর্ণিত হয়েছে। ইবনে আবিল হাদীদ প্রণীত নাহজুল বালাগাহর শারহ (ব্যাখ্যা) গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ২৫৫ পৃষ্ঠায় কাসিয়াহ্’নামক খুতবার শেষে এ হাদীসটি পূর্ণাঙ্গভাবে এনেছেন।

২২৭। যদি কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৩৯৬ পৃষ্ঠায় ৬০৪৫ নং হাদীসটি দেখেন তাহলে তাতে দেখবেন ইবনে জারীর এই হাদীসকে সহীহ বলেছেন। তাছাড়া মুসনাদে আহমাদের ৫ম খণ্ডের ৪৪ পৃষ্ঠার পাদটিকায় ইবনে জারীর যে এটিকে বিশুদ্ধ বলেছেন তা পাবেন। আবু জা ফর আসকাফী তাঁর নাকজুল উসমানিয়া’য় হাদীসটিকে সন্দেহাতীতভাবে বিশুদ্ধ বলেছেন। (শারহে নাহজুল বালাগাহ্ ইবনে আবিল হাদীদ,৩য় খণ্ড,২৬৩ পৃষ্ঠা,মিশর হতে প্রকাশিত)

২২৮। বুখারী ও মুসলিম তাঁদের সহীহতে তাঁর হাদীস দলিল উপস্থাপনে ব্যবহার করেছেন এবং দু জনই শিয়া হতে তাঁর হাদীস বর্ণনার কথা বলেছেন। তাছাড়া বুখারীর মতে তিনি আবদুল আযীয ইবনে আবি সালামাহ্ হতে ও মুসলিমের মতে তিনি যুহাইর ইবনে মুয়াবিয়া এবং হাম্মাদ ইবনে সালামাহ্ হতে হাদীস শ্রবণ করেছেন। বুখারীর বর্ণনানুসারে মুহাম্মদ ইবনে হাতেম ইবনে বাজিঈ ও মুসলিমের বর্ণনানুসারে হারুন ইবনে আবদুল্লাহ্,নাকিদ,ইবনে আবি শাইবা এবং যুহাইর তাঁর হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

২২৯। মুসলিম তাঁর সহীহতে তাঁর হাদীস দলিল হিসেবে ব্যবহার করেছেন যা আমরা ১৬ নং পত্রে উল্লেখ করেছি।

২৩০। বুখারী ও মুসলিম তাঁর হাদীস যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করেছেন,১৬ নং পত্রে আমরা তা উল্লেখ করেছি।

২৩১। বুখারী তাঁর হাদীস দলিল হিসেবে ব্যবহার করেছেন,১৬ নং পত্রে দেখুন।

২৩২। তাঁর নাম ইবাদ ইবনে আবদুল্লাহ্ ইবনে যুবাইর ইবনে আওয়াম কুরশী আমাদী। বুখারী ও মুসলিম তাঁর হাদীস হতে প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন। তিনি হযরত আবু বকরের দুই কন্যা হযরত আয়েশা ও আসমা বিনতে আবু বকর হতে হাদীস শুনেছেন।

২৩৩। পৃষ্ঠা ২৫। বুখারী নিজেই বলেছেন, অনেক সহীহ হাদীস রয়েছে যা আমি বুখারীতে উল্লেখ করি নি।”

২৩৪। সূরা আহযাব : ৩৩।

২৩৫। সূরা আ রাফ : ১৪২।

২৩৬। সূরা ত্বাহা : ২৯।

২৩৭। সূরা মায়েদাহ্ : ৬৭।

২৩৮। ছাব্বিশতম পত্রে এটি আমরা উল্লেখ করেছি।

২৩৯। আস-সাওয়ায়েক,পৃষ্ঠা ২৯।

২৪০। মুসলিম,২য় খণ্ড,৩২৪ পৃষ্ঠা,ফাজায়েলে আলী অধ্যায়।

২৪১। হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১০ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন, বুখারী ও মুসলিমের শর্ত মতে হাদীসটি সহীহ।”যাহাবী তালখিসে মুসতাদরাক’গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

২৪২। মাকাসিদের ৫ম মাকসাদের ১১ অধ্যায়ে ১০৭ পৃষ্ঠায় ১৪ নং আয়াতের আলোচনায়।

২৪৩। মানাকিবে আলী (আ.)।

২৪৪। ফাজায়েলে আলী ও তাবুকের যুদ্ধ।

২৪৫। ৩য় খণ্ড,পৃষ্ঠা ৫৮।

২৪৬। ২য় খণ্ড,পৃষ্ঠা ৩২৩।

২৪৭। ১ম খণ্ড,পৃষ্ঠা ২৮।

২৪৮। ৩য় খণ্ড,পৃষ্ঠা ১০৯।

২৪৯। ১ম খণ্ড,পৃষ্ঠা ১৭৩,১৭৫,১৮২ ও ১৮৫।

২৫০। মুসনাদ,১ম খণ্ড,পৃষ্ঠা ৩৩১।

২৫১। মুসনাদ,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃষ্ঠা ৩৬৯ ও ৪৩৮।

২৫২। ৩য় খণ্ড,পৃষ্ঠা ৩২।

২৫৩। আস-সাওয়ায়েক,পৃষ্ঠা ১০৭,৫ম মাকসাদ,১৪ নং আয়াতের ব্যাখ্যা।

২৫৪। যুক্ত-বিশেষায়ক হলো যে বাক্যে বিশেষায়ক ও বিশেষিত অংশ একই শ্রেণীভুক্ত হয়।

২৫৫। হযরত উম্মে সালিম,মালহান ইবনে খালিদ আনসারীর কন্যা। পিতা মালহান ও ভ্রাতা হারাম ইবনে মালহান রাসূলের সামনে শহীদ হন। তিনি রাসূল (সা.) হতে অনেক হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং বিশেষ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। ইবনে আব্বাস,যায়িদ ইবনে সাবিত,আবু সালামাহ্ ইবনে আবদুর রহমান ও তদীয় পুত্র আনাস ও অন্যান্যরা তাঁর হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি ইসলামের দিকে আহবানকারী ব্যক্তিবর্গের মধ্যে অগ্রগামী দলের অন্তর্ভুক্ত। তিনি জাহেলীয়াতের যুগে মালিক ইবনে নাজরের স্ত্রী ছিলেন। আনাস ইবনে মালিক এ দম্পতিরই সন্তান। ইসলামের আগমনের পর তিনি তাঁর স্বামীকে ইসলামের দিকে আহবান করেন কিন্তু সে ইসলাম গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে ও তাঁকে ত্যাগ করে সিরিয়া গমন করে এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করে। উম্মে সালিম তাঁর

সন্তান আনাসকে উপদেশ দিয়ে রাসূলের খেদমতে নিয়োজিত করেন। তখন তার বয়স ছিল দশ বছর। নবী (সা.) এই মাতার সম্মানে তাকে খাদেম হিসেবে গ্রহণ করেন। আরবের অনেক সম্ভান্ত ব্যক্তিই তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি এ অজুহাতে তা প্রত্যাখ্যান করেন যে,আনাস প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিয়ে করবেন না । আনাস তাই সব সময়ে বলতেন, আমার মাতাকে আল্লাহ্ উত্তম পুরস্কার দিন। কারণ তিনি আমাকে উত্তমরূপে মানুষ করেছেন।”আবু তালহা আনসারী এ নারীর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। যখন তিনি এ নারীকে বিয়ের প্রস্তাব করেন তখন তিনি বলেন, যদি ইসলাম গ্রহণ কর তবে তোমার প্রস্তাব গ্রহণ করব।”

আবু তালহা তাঁর প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং উম্মে সালিম তাঁর মোহরানা এ ইসলাম গ্রহণকেই ধরে নেন। আবু তালহার ঔরসে উম্মে সালিমের গর্ভে যে সন্তান হয় সে অকালেই মৃত্যুবরণ করে। তিনি সবাইকে বলেন তাঁর পুত্রের মৃত্যু সংবাদ যেন তাঁর পূর্বে কেউ তাঁর স্বামীকে না জানায়। আবু তালহা বাড়ীতে এসে পুত্রের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন যেখানে সে আছে শান্তিতে আছে। আবু তালহা ভাবলেন পুত্র ঘুমিয়েছে। তাই তিনি যথারীতি খাদ্য গ্রহণ করে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে ঘুমাতে গেলেন। কারণ স্ত্রী সুসজ্জিত ও উৎফুল্ল ছিল এবং বোঝার উপায় ছিল না যে,পুত্র মৃত্যুবরণ করেছে। সকাল বেলা তিনি তাঁর স্বামীকে বুদ্ধিমত্তার সাথে পুত্রের মৃত্যুর সংবাদ দিলেন। আবু তালহা রাসূলের কাছে এসে পুরো ঘটনা খুলে বললেন। রাসূল (সা.) বললেন, এই রাত তোমাদের জন্য শুভ হোক।”উম্মে সালিম বলেন, রাসূল (সা.) আমার জন্য দীর্ঘ দোয়া করলেন।”ঐ রাতের মিলনেই আবদুল্লাহ্ ইবনে আবি তালহা তাঁর গর্ভে আসে যিনি বিশিষ্ট ফকীহ্ ইসহাক ইবনে আবদুল্লাহ্ ইবনে আবি তালহার পিতা। ইসহাকের অন্যান্য পুত্ররাও জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

উম্মে সালিম রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধেও যোগদান করেছিলেন। উহুদের যুদ্ধে তিনি একটি তরবারী নিয়ে গিয়েছিলেন মুশরিকদের কেউ তাঁর নিকটবর্তী হলে তাকে হত্যা করার জন্য। তিনি এমন এক মহিলা যিনি ইসলামের জন্য অনেক কষ্ট ও মুসিবত সহ্য করেছেন। আমি এরূপ অন্য কোন নারীর কথা জানি না যে,রাসূল তাঁর গৃহে উপহার নিয়ে যেতেন। তিনি রাসূলের মান ও মর্যাদা সম্পর্কে সম্যক অবহিত ছিলেন।

২৫৬। ইমাম নাসায়ী এ হাদীসটি তাঁর খাসায়েসুল আলাভীয়া’গ্রন্থের ১৯ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন।

২৫৭। হাকিম তাঁর আলকুনা’গ্রন্থে,শীরাযী তাঁর আল কাব’গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাসান ইবনে বদর ও নাজ্জারও হাদীসটি নকল করেছেন। কানযুল উম্মাল গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৩৯৫ পৃষ্ঠার ৬০২৯ এবং ৬০৩২ নং হাদীস হিসেবে এটি এসেছে।

২৫৮। ইবনে আবদুল বার তাঁর ইসতিয়াব’গ্রন্থে হযরত আলীর জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, রাসূল (সা.) মুহাজিরদের মধ্যে প্রথম ভ্রাতৃত্বের আকদ পাঠ করেন,অতঃপর মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন স্থাপন করে দেন এবং উভয় স্থানেই হযরত আলীকে লক্ষ্য করে বললেন : তুমি দুনিয়া ও আখেরাতে আমার ভাই (أنت أخي في الدّنيا و الآخرة )। এ ঘটনার ইতিহাস,সীরাত ও হাদীস গ্রন্থসমূহে এসেছে। প্রথম ভ্রাতৃবন্ধনের ঘটনা হালাবীর সীরাত গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ২৬ পৃষ্ঠায় ও দ্বিতীয় ভ্রাতৃবন্ধনের ঘটনাকে তিনি ঐ গ্রন্থেরই ১২০ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন। উভয় স্থানে লক্ষ্য করলে দেখবেন ঘটনার বর্ণনা অন্যদের ওপর আলীর শ্রেষ্ঠত্বকে প্রমাণ করে। যাইনী দাহলান হালাবীর মত তাঁর সীরাত গ্রন্থে উভয় ভ্রাতৃবন্ধনের দিনের ঘটনা বর্ণনা করেছেন এবং দ্বিতীয় ভ্রাতৃবন্ধন যে হিজরতের ৫ম মাসে সংঘটিত হয়েছিল তা স্বীকার করেছেন।

নির্ভরযোগ্য কয়েকজন বর্ণনাকারী যেমন আহমাদ ইবনে হাম্বল,ইবনে আসাকির ও মুত্তাকী আল হিন্দী তাঁদের গ্রন্থে হাদীসটি এনেছেন। মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’গ্রন্থের ৫ম খণ্ডের ৪০ পৃষ্ঠার প্রথমে ও ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৩৯০ পৃষ্ঠায় আহমাদ ইবনে হাম্বলের মানাকিবে আলী’অধ্যায়ের সূত্রে যথাক্রমে ৯১৮ ও ৫৯১২ নং হাদীস হিসেবে এনেছেন।

২৫৯। এ হাদীসটি রাবীদের সত্যায়নকারী একদল হাদীসবেত্তা ইবনে আদী ও অন্যান্যদের থেকে বর্ণনা করেছেন। এসব সত্যায়নকারী হাদীসবেত্তার অন্যতম মুত্তাকী আল হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মালের ৫ম খণ্ডের ৪১ পৃষ্ঠার শুরুতে ৯১৯ নং হাদীস হিসেবে এটি এনেছেন। সেখানে দেখতে পারেন।

২৬০। সূরা হিজর : ৪৭।

২৬১। মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল এবং যাহাবী তাঁর মুনতাখাবে কানযুল উম্মালে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। মুসনাদে আহমাদের পঞ্চম খণ্ডের ৩১ নম্বর পৃষ্ঠার টীকায় হাদীসটি আমরা যেভাবে বর্ণনা করেছি সেভাবেই এসেছে। হাদীসটির এ অংশ আমার প্রতি অভিমান করেছ’কথাটি কতটা মোলায়েম,এতে কতটা উষ্ণতা,আবেগ ও পিতৃসুলভ ভালবাসা জড়িয়ে রয়েছে! যদি বলা হয় দ্বিতীয়বার কেন আলী এরূপ সন্দেহে পতিত হয়েছেন যদিও প্রথমবার রাসূল এমন করেছিলেন ও পরে আলীর নিকট বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছিল যে,রাসূল নিজের জন্যই এমনটি করেছেন। কেন তিনি দ্বিতীয়বারের ঘটনাটির সঙ্গে প্রথমবারের ঘটনাটিকে মিলেয়ে দেখলেন না? উত্তর হলো দ্বিতীয়বারকে প্রথমবারের সঙ্গে তুলনা করার মত অবস্থা ছিল না কারণ প্রথমবার শুধু মুহাজিরদের মধ্যে রাসূল ভ্রাতৃত্বের আকদ পাঠ করেন অথচ দ্বিতীয়বার মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের আকদ পড়েন। সেখানে প্রত্যেক মুহাজিরের সঙ্গে একজন আনসার ভাইয়ের ভ্রাতৃত্ব বন্ধন স্থাপিত হয়। রাসূল ও আলী দু জনই মুহাজির ছিলেন তাই আলী (আ.) সন্দেহে পতিত হন যে রাসূল (সা.) আর তাঁর ভাই থাকছেন না,বরং আনসার হতে তাঁর ভাই নির্বাচিত হবে। যেহেতু নবী (সা.) আলী (আ.) ও আনসারদের মধ্য হতে কাউকে পরস্পর ভ্রাতৃত্বের ঘোষণা দেন নি সেহেতু আলীর মধ্যে এরূপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল তাঁর জন্য এর চেয়ে উত্তম কিছু নির্ধারণ করেছিলেন এবং তা সেদিনের ধারার বিপরীতে তাঁর ও নবীর মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল।

২৬২। ইয়ানাবিয়ুল মাওয়াদ্দাহ্ গ্রন্থের ৯ম অধ্যায়ে আহলে বাইতের মর্যাদা বর্ণনায় হাদীসটি এসেছে।

২৬৩। ইয়ানাবিয়ুল মাওয়াদ্দাহ্,১৭তম অধ্যায়।

২৬৪। মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৬৫ ও ১৬৭ পৃষ্ঠায় হাকিম নিশাবুরী হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন, সহীহ বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুসারে হাদীসটি সহীহ এবং মুহাদ্দিসগণও সহীহ সূত্রে নবী হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।”আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদের প্রথম খণ্ডে হাদীসটি এনেছেন। ইবনে আবদুল বার ইমাম হাসান (আ.)-এর জীবনী আলোচনা করতে গিয়ে তাঁর ইসতিয়াব’গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যাহাবী তাঁর তালখিসুল মুসতাদরাক গ্রন্থে হাদীসটি সহীহ বলে স্বীকার করেছেন কিন্তু বাস্তব কর্মে এই উম্মতের হারুন শাব্বার ও শাব্বির হতে মুখ ফিরিয়ে রেখেছেন। বাগাভী তাঁর মু জাম গ্রন্থে এবং আবদুল গণী তাঁর আল ই দ্বাহ গ্রন্থেও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এছাড়া সাওয়ায়েকুল মুহরাকাহ্’গ্রন্থে হযরত সালমান ফারসী হতে ও ইবনে আসাকিরও তাঁর হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

২৬৫। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৪ পৃষ্ঠায় দু টি সূত্রে ইবনে উমর হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ও বলেছেন বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীস দুটি সহীহ। যাহাবী তাঁর তালখিসুল মুসতাদরাক’গ্রন্থে হাদীসটি সহীহ ও বিশুদ্ধ বলেছেন। ইবনে হাজার আসকালানী তাঁর সাওয়ায়েকুল মুহরাকাহ্’-এর ৭২ পৃষ্ঠায় ( বাব’অধ্যায়ের সাত নম্বর হাদীস) তিরমিযীর সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যাঁরাই এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন তাঁরাই নির্ভরযোগ্য সূত্রে তা বর্ণনা করেছেন।

২৬৬। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৫৯ পৃষ্ঠায়,ইবনে হাজার আসকালানী তাঁর সাওয়ায়েকুল মুহরাকাহ্’তে এবং যে কেউ হযরত ফাতিমা (আ.)-এর বিবাহের ঘটনা বর্ণনা করেছেন তিনি এই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যাহাবী তাঁর তালখিস’গ্রন্থে হাদীসটিকে বিশুদ্ধ বলেছেন।

২৬৭। শিরাজী তাঁর আল কাব’গ্রন্থে,ইবনে নাজ্জার ইবনে উমর হতে এবং মুত্তাকী আল হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’-এ এবং যাহাবী তাঁর মুনতাখাবে কানযুল উম্মাল’-এর (যা মুসনাদে আহমাদের ব্যাখ্যাকারী গ্রন্থ হিসেবে পাদটিকায় এসেছে) ৫ম খণ্ডের ৩৩ পৃষ্ঠার পাদটিকায় হাদীসটি এনেছেন।

২৬৮। ইবনে আবদুল বার তাঁর ইসতিয়াব’গ্রন্থে হযরত আলী (আ.)-এর জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে ইবনে আব্বাস হতে হাদীসটি এনেছেন।

২৬৯। খাতীব বাগদাদী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪০২ পৃষ্ঠায় ৬১০৫ নম্বর হাদীস হিসেবে এটি এনেছেন।

২৭০। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ২১৭ পৃষ্ঠায় মুসলিমের শর্তানুসারে সহীহ সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যাহাবীও তাঁর তালখিস’গ্রন্থে উপরোক্ত শর্তানুসারে হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।

২৭১। তাবরানী তাঁর কাবীর’গ্রন্থে ইবনে উমর সূত্রে এবং মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’ও যাহাবী তাঁর মুনতাখাবে কানযুল উম্মাল’-এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। মুসনাদের তাফসীরের পাদটিকায় যে মুনতাখাব এসেছে তার ৫ম খণ্ডের ৩২ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

২৭২। ইবনে সা দ তাঁর তাবাকাত’গ্রন্থের ২য় খণ্ডের দ্বিতীয় অংশে এবং কানযুল উম্মাল’-এর ৪র্থ খণ্ডের ৫৫ পৃষ্ঠায় হাদীসটি রয়েছে।

২৭৩। তাবরানী তাঁর আওসাত’গ্রন্থে,খাতীব বাগদাদী তাঁর মুত্তাফিক ওয়াল মুফতারিক’গ্রন্থে ও মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’-এ হাদীসটি এনেছেন। মুসনাদে আহমাদের ৫ম খণ্ডের ৩৫ পৃষ্ঠায় টিকার মুনতাখাবে কানযুলে এবং ইবনে আসাকিরের সূত্রে ৪৬ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

২৭৪। সুনানের লেখকগণ তাঁদের মুসনাদসমূহে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম ফখরে রাযী তাঁর তাফসীরে কাবীর গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ১৮৯ পৃষ্ঠায় সূরা বাকারার ২০৭ নং আয়াতের তাফসীরে উপরোক্ত হাদীস সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছেন।

২৭৫। নাসায়ী তাঁর খাসায়েসুল আলাভিয়া’গ্রন্থে,হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১১২ পৃষ্ঠায় এবং ইবনে আবি শাইবাহ্ ও ইবনে আবি আছেম তাঁর আস-সুন্নাহ্ ,আবু নাঈম তাঁর আল মা রেফা’,মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’-এ,মুসনাদে আহমাদের টীকায় মুন্তাখাবে কানযুল উম্মাল’-এর ৫ম খণ্ডের ৪০ পৃষ্ঠায় হাদীসটি এনেছেন।

২৭৬। মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১২৬ পৃষ্ঠায় হাদীসটি দেখুন। যাহাবী মুসতাদরাকের তালখিসে হাদীসটি বর্ণনা করে একে সহীহ বলেছেন।

২৭৭। ইবনে আবদুল বার তাঁর ইসতিয়াব’গ্রন্থে হযরত আলীর জীবনীতে ও প্রসিদ্ধ লেখকদের অনেকেই হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

২৭৮। ইবনে সা দ তাঁর তাবাকাত’গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ১ম অংশের ১৫ পৃষ্ঠায় বদর যুদ্ধের ঘটনায় হাদীসটি এনেছেন।

২৭৯। দারে কুতনী তাঁর মাকাসিদ’-এর ৫ম মাকসাদে সূরা শুরার ২৩ নং আয়াতের (مودّة في القربى ) তাফসীরে ও ইবনে হাজার আসকালানী তাঁর সাওয়ায়েক গ্রন্থের ১১ অধ্যায়ের ১০৭ পৃষ্ঠায় হাদীসটি এনেছেন।

২৮০। হাদীসটি বেশ দীর্ঘ ও এতে আলী (আ.)-এর কিছু শ্রেষ্ঠত্ব ও বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে যা ছাব্বিশতম পত্রে আমরা উল্লেখ করেছি।

২৮১। মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১২৫ পৃষ্ঠায় হাদীসটি এসেছে। সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ৩য় পর্বের ৯ম অধ্যায়ে ৭৬ পৃষ্ঠায় আবু ইয়ালী হতে এটি বর্ণিত হয়েছে। আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদ গ্রন্থে ২য় খণ্ডের ২৬ পৃষ্ঠায় আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর হতে কাছাকাছি ও সদৃশ শব্দের ব্যবহারে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাছাড়া হযরত উমর ও অন্যান্য সূত্রেও তিনি হাদীসটি এনেছেন।

২৮২। যেমনটি মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১১৭ পৃষ্ঠায় এসেছে। এ হাদীসটি সহীহ সুনান গ্রন্থসমূহে এসেছে। আহলে সুন্নাহর নির্ভরযোগ্য রাবীরা তা বর্ণনা করেছেন।

২৮৩। আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদের ৪র্থ খণ্ডের ৩৬৯ পৃষ্ঠায় এবং কানযুল উম্মাল’ও মুনতাখাবে কানযুল উম্মাল’-এ হাদীসটি এসেছে। মুসনাদের ৫ম খণ্ডের ২৯ পৃষ্ঠার টীকায় মুনতাখাবে কানযুল উম্মালে দেখুন।

২৮৪। মুত্তাকী হিন্দী মুসনাদের উপরোক্ত টীকায় এটি বর্ণনা করেছেন।

২৮৫। তিরমিযী তাঁর সহীহতে ও মুত্তাকী হিন্দী তাঁর মুনতাখাবে যেভাবে এনেছেন তা এরূপ। ইবনে হাজার আসকালানী তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ২য় পর্বের ৯ম অধ্যায়ে ১৩ নম্বর হাদীসে বাযযারের সূত্রে সা দ হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। ঐ গ্রন্থের ৭৩ পৃষ্ঠায় লক্ষ্য করুন।

২৮৬। শাফেয়ী মাজহাবের বিশিষ্ট ফকীহ্ ও খাতীব আলী ইবনে মুহাম্মদ (ইবনে মাগাজেলী বলে প্রসিদ্ধ) তাঁর মানাকিব গ্রন্থে বিভিন্ন সূত্রে এই সকল সাহাবী হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। নির্ভরযোগ্য রাবী বালখী তাঁর ইয়ানাবিয়ুল মাওয়াদ্দাহ্ গ্রন্থের ১৭ অধ্যায়ে হাদীসটি এনেছেন।

২৮৭। ইমাম আবু ইসহাক সা লাবী তাঁর তাফসীরে কাবীর’গ্রন্থে সূরা মায়েদাহর ৫৫ নম্বর আয়াতের তাফসীরে হযরত আবু যর হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসবেত্তা বালখীও মুসনাদে আহমদের সূত্রে হাদীসটি নকল করেছেন।

২৮৮। কানযুল উম্মাল’গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত ৬১৫ নং হাদীস।

২৮৯। বহুসূত্র পরম্পরায় অকাট্যভাবে বর্ণিত যাতে সন্দেহের অবকাশ থাকে না।

২৯০। সুনান লেখকদের মধ্যে কয়েকজন যেমন নাসায়ী তাঁর খাসায়েসুল আলাভীয়া’গ্রন্থে এবং আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদের চতুর্থ খণ্ডের ৪৩৮ পৃষ্ঠার প্রথমে ইমরান হতে এবং হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১১১ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যাহাবী তাঁর‘তালখিসে মুসতাদরাক’-এ হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন, মুসলিমের শর্তানুসারে হাদীসটি সহীহ।”মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’-এর ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪০০ পৃষ্ঠায় ইবনে আবি শাইবাহ্ ও ইবনে জারির হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং হাদীসটি সহীহ বলে স্বীকার করেছেন।

আসকালানী তাঁর আল ইসাবাহ্’গ্রন্থে আলীর জীবনীতে তিরমিযীর সূত্রে শক্তিশালী সনদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আল্লামাহ্ ইবনে আবিল হাদীদ মুতাযিলী তাঁর শারহে নাহজুল বালাগাহ্’র ২য় খণ্ডের ৪৫০ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন, আবু আবদুল্লাহ্ আহমাদ তাঁর মুসনাদ গ্রন্থে একাধিকবার এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আলীর ফাজায়েল অধ্যায়ে তা এনেছেন।”

২৯১। রাসূল (সা.) তাঁর জীবদ্দশায় আলী (আ.)-এর ওপর কাউকেই নেতা নিযুক্ত করেন নি,বরং সকল অবস্থায় আলী নেতৃত্ব দিয়েছেন ও অন্যদের বিপরীতে পতাকা ধারণ করেছেন,এমন কি হযরত আবু বকর ও হযরত উমর উসামার নেতৃত্বে গঠিত বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এবং মুতার যুদ্ধে রাসূল (সা.) নিজে নির্দেশ দিয়ে এ দু জনকে তাঁর নেতৃত্বে যুদ্ধে যেতে বলেন। রাসূল জাতুস্ সালাসিলের যুদ্ধে আমর ইবনে আসের অধীনেও তাঁদের দু জনকে প্রেরণ করেছিলেন। এ সম্পর্কিত ঘটনা হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ৪৩ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন ও যাহাবী তাঁর তালখিসে মুসতাদরাকে এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। কিন্তু আলী (আ.) রাসূল (সা.)-এর নবুওয়াত প্রাপ্তি থেকে ওফাত পর্যন্ত রাসূল ব্যতীত অন্য কারো নেতৃত্বে যুদ্ধ করেন নি।

২৯২। এ হাদীসটি আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসতাদরাক গ্রন্থের ৫ম খণ্ডের ৩৫৬ পৃষ্ঠায় আবদুল্লাহ্ ইবনে বুরাইদাহ্ সূত্রে তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন। একই খণ্ডের ৩৪৭ পৃষ্ঠায় তিনি সাঈদ ইবনে বুরাইদাহ্ হতে ইবনে আব্বাসের সূত্রে বুরাইদাহ্ হতে বর্ণনা করেছেন, আলীর সঙ্গে ইয়েমেনের যুদ্ধে ছিলাম এবং এক বিষয়ে তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে রাসূলকে বললাম। তা শুনে রাসূলুল্লাহর চেহারা পরিবর্তিত হয়ে গেল এবং তিনি বললেন : হে বুরাইদাহ্! আমি কি মুমিনদের নিজেদের ওপর তাদের অপেক্ষা অধিক অধিকার রাখি না? আমি বললাম : অবশ্যই ইয়া রাসূলুল্লাহ্! তিনি বললেন : আমি যার মাওলা,আলী তার মাওলা।” হাকিম তাঁর মুসতাদরাক গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১১০ পৃষ্ঠায় ও অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ এটি বর্ণনা করেছেন। এই হাদীসে রাসূল নিজের অভিভাবকত্বের বিষয়টি পূর্বে এনে বুঝাতে চেয়েছেন মাওলা অর্থ এখানে কোন বিষয়ে ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার। অনুরূপ হাদীস ইমাম আহমাদ মুসনাদের ৩য় খণ্ডের ৪৮৩ পৃষ্ঠায় আমর ইবনে শাস হতে বর্ণনা করেছেন। আমর যিনি হুদায়বিয়ার সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন,তিনি বলেন, আলীর সঙ্গে ইয়েমেন গিয়েছিলাম। এই সফরে তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলাম এবং তা প্রকাশের জন্য মসজিদে নববীতে বর্ণনা করলাম যেন রাসূলের কানে পৌঁছে। একদিন সকালে সেখানে প্রবেশ করে দেখি রাসূল (সা.) একদল সাহাবীর সঙ্গে বসে রয়েছেন। আমি প্রবেশ করা মাত্র তিনি বিশেষ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন যতক্ষণ না আমি বসলাম। তিনি (সা.) বললেন : হে আমর! তুমি আমাকে কষ্ট দিয়েছ। আমি বললাম : এরূপ কাজ হতে আল্লাহর আশ্রয় চাই। তিনি বললেন : যে আলীকে কষ্ট দিল সে আমাকেই কষ্ট দিল।”

২৯৩। মুত্তাকী হিন্দী মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৩৯৮ পৃষ্ঠা হতে তাঁর মুনতাখাবে কানযুলে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

২৯৪। নবী (সা.) আলী হতে শ্রেষ্ঠ যেমনভাবে তিনি ইবরাহীম হতেও শ্রেষ্ঠ। যেহেতু তাঁর সৃষ্টি ইবরাহীম হতে,যাতে কেউ ইবরাহীম (আ.)-কে তাঁর অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ না ভাবে এ কারণেই নবী (সা.) বিশেষভাবে তা বলেছেন।

২৯৫। ইবনে হাজার তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ১০৩ পৃষ্ঠায় মাকাসেদের ২য় মাকসাদে ১৪ নং আয়াতে (সাওয়ায়েক ১১ অধ্যায়) তাবরানী হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। যদিও তিনি প্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে আলী আমার পর তোমাদের ওপর অভিভাবক’অংশটুকু উদ্ধৃত না করে বলেছেন,إلى آخر الحديث হাদীসের শেষ পর্যন্ত’।

২৯৬। হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ১৩৪ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং যাহাবী তাঁর তালখিস’গ্রন্থে হাদীসটির বিশুদ্ধতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। নাসায়ী তাঁর খাসায়েসুল আলাভীয়া’গ্রন্থের ৬ পৃষ্ঠায় ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদ’গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ৩৩১ পৃষ্ঠায় হাদীসটি এনেছেন যা হুবহু আমরা ২৬ নং পত্রে উল্লেখ করেছি।

২৯৭। কানযুল উম্মাল’গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৩৬৯ পৃষ্ঠার ৬০৪৮ নং হাদীস।

২৯৮। কানযুল উম্মাল’গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত ২৫৭৯ নং হাদীস।

২৯৯। কারণ সে আমার পর তোমাদের অভিভাবক’বাক্যটির অর্থ হচ্ছে এটিই যে,সে-ই আমার পরে তোমাদের অভিভাবক,অন্য কেউ নয়।

৩০০। সিরিয়ার অধিবাসীরা শিয়াদের মুতাওয়ালী বলে এ কারণে যে,তারা আল্লাহ্,রাসূল (সা.) ও আহলে বাইতের প্রতি ভালবাসা পোষণকারী।

৩০১। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ডের ৩৯১ পৃষ্ঠা এবং মুসনাদের আহমাদের ৫ম খণ্ডের ৩৮ পৃষ্ঠার টীকায় মুনতাখাব অংশে দেখুন।

৩০২। ওয়াফাইয়াতুল আ য়ান’গ্রন্থে ইবনে খাল্লেকানের বর্ণনানুসারে তিনি ৩৩৭ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। ইবনে খাল্লেকান বলেন, তিনি তাঁর যুগে তাফসীরের ক্ষেত্রে একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন। তিনি এমন এক বিরাট তাফসীর রচনা করেছিলেন যা ছিল সকল তাফসীরের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। অতঃপর ইবনে খাল্লেকান তাঁর প্রসঙ্গে আরো বলেছেন, আবদুল গাফের ইবনে ইসমাঈল ফার্সী তাঁর সিয়াক-ই নিশাবুর’গ্রন্থে তাঁর নাম উল্লেখ করে প্রশংসা করেছেন।”এরপর তিনি বলেছেন, তিনি বিশুদ্ধভাবে হাদীস বর্ণনা করেন এবং নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত

৩০৩। সূরা মায়েদাহ্ : ৫৪।

৩০৪। কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৩ পৃষ্ঠায় ২৫২৭ নং হাদীস; সা লাবী তাঁর তাফসীরে কাবীর’গ্রন্থে হযরত আবু যর হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৩০৫। বারুদী,ইবনে কানে,আবু নাঈম,বাযাযার এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কানযুল উম্মাল’গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৭ পৃষ্ঠায় ২৬২৮ নং হাদীস হিসেবে এটি এসেছে।

৩০৬। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৭ পৃষ্ঠা,২৬৩০ নং হাদীস।

৩০৭। ইবনে আবিল হাদীদ প্রণীত শারহে নাহজুল বালাগাহ্’,২য় খণ্ড,৪৫০ পৃষ্ঠা,১১ নং হাদীস। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৭ পৃষ্ঠা,১৬২৭ নং হাদীস।

৩০৮। আবু নাঈম তাঁর হুলইয়াতুল আউলিয়া’গ্রন্থে আনাস হতে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনে আবিল হাদীদের শারহে নাহজুল বালাগাহ্’গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৪৫০ পৃষ্ঠায় ৯ নং হাদীসটি লক্ষ্য করুন।

৩০৯। আবু নাঈম তাঁর হুলইয়াতুল আউলিয়া’গ্রন্থে আবু বারজা আসলামী এবং আনাস হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনে আবিল হাদীদের নাহজুল বালাগাহর ব্যাখ্যা গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৪৪৯ পৃষ্ঠায় ৩য় হাদীস হিসেবে এটি এসেছে।

৩১০। তাবরানী তাঁর কাবীর’গ্রন্থে হযরত সালমান ও আবু যর হতে এবং বায়হাকী তাঁর সুনান গ্রন্থে,ইবনে আদী তাঁর কামিল’গ্রন্থে হুযাইফা হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৬ পৃষ্ঠায় ২৬০৮ নং হাদীস হিসেবে এটি এসেছে।

৩১১। তাবরানী তাঁর কাবীর’গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি কানযুল উম্মাল গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৭ পৃষ্ঠায় ২৬২৮ নং এবং ইবনে আবিল হাদীদের শারহে নাহজুল বালাগাহ্’গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৪৫০ পৃষ্ঠায় ১০ নং হাদীস হিসেবে এসেছে। লক্ষ্য করুন হাদীসটিতে কিরূপে আলীকে আঁকড়ে ধরার মাধ্যমে বিচ্যুতি থেকে মুক্তি এবং তাঁর হতে দূরে থাকাকে বিপথগামিতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদীসটিতে এই নির্দেশও দেয়া হয়েছে যে,রাসূলকে যেরূপ ভালবাস আলীকেও সেরূপ ভালবাস ও সম্মান কর। এ নির্দেশ এ কারণেই যে,তিনি রাসূলের পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত। তদুপরি রাসূল (সা.) এ নির্দেশ আল্লাহর পক্ষ হতে উল্লেখ করে বিষয়টির গভীরতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। এ বাক্যটির বিষয়ে চিন্তা করুন।

৩১২। তাবরানী তাঁর কাবীর’গ্রন্থে এবং আল্লামাহ্ সুয়ূতী তাঁর জামেয়ুস্ সাগীর’গ্রন্থে ১০৭ পৃষ্ঠায় ইবনে আব্বাস হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাকিম নিশাবুরী তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডে ২২৬ পৃষ্ঠায় মানাকিবে আলী’অধ্যায়ে দু টি সহীহ সনদে-একটি ইবনে আব্বাস হতে ও অপরটি জাবের ইবনে আবদুল্লাহ্ আনসারী হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং এর সপক্ষে সুস্পষ্ট দলিল উপস্থাপন করেছেন। ইমাম আহমাদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সিদ্দীক মাগরেবী (কায়রোর অধিবাসী) এই হাদীসটি যে বিশুদ্ধ তা প্রমাণের জন্য ফাতহুল মুলকিল আলী বি সিহহাতী বাবি মাদীনাতুল ইলমি আলী’নামক একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। গবেষকদের জন্য এ মূল্যবান গ্রন্থটি অধ্যয়ন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়,তাহলে তাঁরা বুঝতে পারবেন আলী বিদ্বেষীরা (নাসেবীরা) এ হাদীসটিকে আরবের প্রচলিত একটি প্রবাদ বলে প্রচারের যে অপচেষ্টা চালিয়েছে তা কতটা অসার। এ হাদীসটির ওপর তাঁরা যে অযাচিত সমালোচনা করেছেন তা গলাবাজী ও অন্ধ বিশ্বাস ছাড়া কিছু নয়। হাফিজ সালাহ্উদ্দীন আলায়ী তা স্বীকার করেছেন এবং যাহাবী হতে নাসেবীদের কথার অগ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ এনে বলেছেন, তারা তাদের কথার সপক্ষে মিথ্যা দাবী ছাড়া কোন প্রমাণ উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছে।”

৩১৩। ইবনে জারির ও তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪০১ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন, ইবনে জারির বলেছেন : এই হাদীসটি আমাদের দৃষ্টিতে সহীহ সনদে বর্ণিত এবং জালালুদ্দীন সুয়ূতী জামেয়ুল জাওয়ামেহ্’ও জামেয়ুস সাগীর’গ্রন্থে তিরমিযী হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। জামেয়ুস্ সাগীর,১ম খণ্ড,১৭০ পৃষ্ঠায় দেখুন।

৩১৪। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৬ পৃষ্ঠায় দাইলামীর সূত্রে আবু যর গিফারী (রা.) হতে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

৩১৫। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৬ পৃষ্ঠা,দাইলামীর সূত্রে আনাস ইবনে মালিক হতে বর্ণিত।

৩১৬। সূরা নাহল : ৬৪।

৩১৭। ইবনে হাজার তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ১১ অধ্যায়ে ১০৬ পৃষ্ঠায় ৫ম মাকসাদের ১৪ নং আয়াতে এ হাদীসটি এনেছেন।

৩১৮। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৩ পৃষ্ঠা,২৫২৮ নং হাদীস।

৩১৯। ইবনে মাজাহ্ তাঁর সুনান’গ্রন্থে ফাজায়েলে সাহাবা’অধ্যায়ে (৯২ পৃষ্ঠা) এবং তিরমিযী ও নাসায়ী তাঁদের সহীহ গ্রন্থে হাদীসটি এনেছেন। মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৫৩ পৃষ্ঠায় ২৫৩১ নং হাদীস হিসেবে এটি এনেছেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদ’গ্রন্থের ৪র্থ খণ্ডে ১৬৪ নং পৃষ্ঠায় হাবশী ইবনে জুনাদাহ্ হতে কয়েকটি সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যার সবগুলোই সহীহ। তিনি হাদীসটি এই ধারাবাহিকতায় যে,ইয়াহিয়া ইবনে আদাম ইসরাঈল ইবনে ইউনুস হতে,তিনি তাঁর দাদা আবু ইসহাক সাবিয়ী হতে এবং তিনি হাবশী ইবনে জুনাদাহ্ হতে বর্ণনা করেছেন। বুখারী ও মুসলিমের মতে এ হাদীসের সকল রাবীই নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত এবং তাঁরা দলিল-প্রমাণ উপস্থাপনে এদের বর্ণিত হাদীস ব্যবহার করতেন।

কেউ মুসনাদে আহমাদে হাদীসটি দেখলে লক্ষ্য করবেন হাদীসটি বিদায় হজ্বে বর্ণিত হয়েছে যার পর রাসূল (সা.) বেশি দিন জীবিত ছিলেন না। আহমাদ তাঁর মুসনাদের প্রথম খণ্ডের ১৫১ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করছেন ইতোপূর্বেও রাসূল অনুরূপ কথা বলেছেন। নবম হিজরীতে রাসূল (সা.) হযরত আবু বকরকে সূরা তওবার (বারাআত) ১০টি আয়াত প্রদান করে মক্কাবাসীদের উদ্দেশ্যে তা পাঠ করে শুনানোর নির্দেশ দেন। পরে হযরত আলীকে হযরত আবু বকরের পশ্চাতে প্রেরণ করে বলেন, যেখানেই পাও আবু বকর হতে তা গ্রহণ করে নিজেই তা পাঠ কর।” আলী (আ.) জুহফাতে হযরত আবু বকরের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাঁর নিকট হতে আয়াতগুলো গ্রহণ করেন। আহমাদ ইবনে হাম্বল বলেন, হযরত আবু বকর মদীনায় নবীর নিকট ফিরে এসে প্রশ্ন করলেন : আমার ব্যাপারে বিছু নাযিল হয়েছে কি? রাসূল (সা.) বললেন : না,তবে জিবরাঈল এসে আমাকে বলেছেন এ দায়িত্ব স্বয়ং আমি অথবা আমার হতে (নিজ হতে) কাউকে পালন করতে হবে।” আহমাদ তাঁর মুসনাদের ১ম খণ্ডের ১৫০ পৃষ্ঠায় হযরত আলী (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন, যখন রাসূল (সা.) আমাকে আহবান করে বললেন : তোমাকে অথবা আমাকে স্বয়ং এ আয়াতগুলো মক্কাবাসীদের উদ্দেশ্যে পাঠ করতে হবে। আমি বললাম : যখন অবস্থা এরূপ তখন আমি যাব। নবী (সা.) বললেন : আল্লাহ্ তোমার জিহ্বাকে দৃঢ় এবং অন্তরকে হেদায়েত করুন।”

৩২০। আমর ইবনে শাশের বর্ণিত হাদীসটি ৩৩ নং পত্রের টীকায় আমরা উল্লেখ করেছি।

৩২১। মুসলিম তাঁর সহীহ গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ৪৬ পৃষ্ঠায় কিতাবুল ঈমান’অধ্যায়ে এবং ইবনে আবদুল বার তাঁর ইসতিয়াব’গ্রন্থে আলী (আ.)-এর জীবনী পর্বে হাদীসটি কতিপয় সাহাবী  হতে বর্ণনা করেছেন। ৩৬ নং পত্রে বুরাইদাহর হাদীসে দেখুন।

৩২২। তিনি হাদীসটি আবুল আযহার হতে,তিনি আবদুর রাজ্জাক হতে,তিনি মুয়াম্মার হতে,তিনি যুহরী হতে,যুহরী উবাইদুল্লাহ্ ইবনে আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস সূত্রে বর্ণনা করেছেন। এ সূত্রের সকল রাবীই বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য। এজন্যই হাকিম বলেছেন, বুখারী ও মুসলিমের শর্তে এটি বিশুদ্ধ।”

তিনি আরো বলেন, আবুল আযহার সকল হাদীসবেত্তার সম্মিলিত মতে (এজমা) বিশ্বস্ত এবং যখন বিশ্বস্ত রাবী হতে কোন হাদীস বর্ণিত হয় তখন তাঁদের নিজস্ব মৌলনীতিতে তা সহীহ বলে পরিগণিত।”অতঃপর তিনি আবু আবদুল্লাহ্ কারাশী হতে বলেছেন, যখন আবুল আযহার ইয়েমেনের সানআ হতে ফিরে এসে বাগদাদের অধিবাসীদের জন্য হাদীসটি বর্ণনা করেন তখন ইয়াহিয়া ইবনে মুঈন বলেন : এটি সঠিক নয়। একদিন এক আলোচনা সভার শেষে ইবনে মুঈন বলেন : নিশাবুরের ঐ মিথ্যাবাদী কোথায় যে এ হাদীসটি আবদুর রাজ্জাক হতে বর্ণনা করেছে? আবুল আযহার দাঁড়িয়ে বলেন : আমি এখানে। ইয়াহিয়া ইবনে মুঈন তাঁকে দাঁড়াতে দেখে হেসে তাঁকে নিকটে ডাকেন এবং বলেন : আবদুর রাজ্জাক এই হাদীসটি কিভাবে অন্য কাউকে না বলে শুধু তোমাকেই বললেন? আবুল আযহার বলেন : হে আবু যাকারিয়া! আমি যখন সানআয় পৌঁছি তখন আবদুর রাজ্জাক ছিলেন না। দূরবর্তী এক স্থানে গিয়েছিলেন,আমি অসুস্থাবস্থায় সেখানে উপস্থিত হই। আমি তাঁর নিকট গেলে তিনি আমার নিকট খোরাসানের অবস্থা জানতে চান,আমি তা জানালে তিনি কিছু হাদীস আমার জন্য বর্ণনা করেন যা আমি লিপিবদ্ধ করি। আমি বিদায় চাইলে তিনি আমাকে বলেন : আমার স্কন্ধে তোমার একটি অধিকার আছে,আমি একটি হাদীস তোমাকে বলব যা অন্য কেউ আমার নিকট শুনে নি। আল্লাহর শপথ,অতঃপর এই হাদীসটি ঠিক যেভাবে আমি বলেছি তিনি তা আমার জন্য বর্ণনা করেন। ইয়াহিয়া ইবেন মুঈন তাঁকে সত্যায়ন করে ক্ষমা চান।

যাহাবী তাঁর তালখিসে মুসতাদরাক’গ্রন্থে এ সূত্রের সকল রাবীকে বিশ্বস্ত বলেছেন এবং বিশেষভাবে আবুল আযহারের বিশ্বস্ততার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন,তদুপরি কোন যুক্তি উল্লেখ ছাড়াই হাদীসটির বিষয়ে সন্দেহ ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু আবদুর রাজ্জাক কেন অন্যদের হতে হাদীসটি গোপন করতেন? কারণ অত্যাচারী শাসকের ভয়। উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করছি যখন মালিক ইবনে দুনিয়া সাঈদ ইবনে যুবায়েরের নিকট রাসূলের পতাকাধারী কে-এ বিষয়ে প্রশ্ন করলেন তখন তিনি বিশেষ দৃষ্টিতে মালিকের দিকে তাকিয়ে বললেন, মনে হয় তুমি মুক্ত ও নিরাপদ,তাই এরূপ প্রশ্ন করছ।”মালিক অসন্তুষ্ট হয়ে ফিরে এসে তাঁর ভ্রাতা ফাররাকে তা বর্ণনা করলে ফাররা বলেন, তিনি হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফের ভয়ে ভীত ছিলেন,তাই বলার সাহস পান নি যে,আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) ছিলেন রাসূলের পতাকাধারী।

হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৩৭ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন, হাদীসটি সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে অথচ বুখারী ও মুসলিম তা বর্ণনা করেন নি।”

৩২৩। দশম পত্রে হাদীসটি উল্লিখিত হয়েছে।

৩২৪। এ হাদীসটিও দশ নম্বর পত্রে উল্লিখিত হয়েছে। দশম পত্রে এ হাদীসটি ও এর পূর্ববর্তী হাদীসটির ব্যাখ্যা দেখুন।

৩২৫। দশম পত্রে এ হাদীস ও এর পূর্ববর্তী হাদীসের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা এসেছে।

৩২৬। কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৬ পৃষ্ঠায় দাইলামীর সূত্রে হযরত আম্মার ও আবু আইউব আনসারী হতে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।

৩২৭। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৩ পৃষ্ঠা,২৫৩৯ নং হাদীস।

৩২৮। হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১২৯ নম্বর পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করে সহীহ বলেছেন। অন্যান্য সুনান লেখকগণও হাদীসটি সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।

৩২৯। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৭ পৃষ্ঠায় ২৬৩১ নং হাদীস হিসেবে এটি এসেছে যা দাইলামী ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন।

৩৩০। ৩৪ নম্বর প্রত্রে দেখুন। উক্ত পত্রে এ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য হাদীসও যত্ন সহকারে লক্ষ্য করুন।

৩৩১। ইবনে হাজার তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ৯ম অধ্যায়ে চল্লিশ হাদীসের আলোচনায় ১৩ নং হাদীস হিসেবে এটি এনেছেন।

৩৩২। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৭ পৃষ্ঠা,২৬৩২ নং হাদীস।

৩৩৩। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৯ পৃষ্ঠার বর্ণনামতে খাতীব বাগদাদী তাঁর আল মুত্তাফিক ওয়াল মুফতারিক’গ্রন্থে এবং তাবরানী তাঁর আল আওসাত’গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ৩৪ নং পত্রে হাদীসটিকে আমরা বিশ্লেষণ করেছি যা গবেষকদের জন্য সহায়ক হবে বলে মনে করি।

৩৩৪। তাবরানী তাঁর আল কাবীর’গ্রন্থে এবং ইবনে আসাকির আবিল হামরা হতে মারফু সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৮ পৃষ্ঠায়ও বর্ণিত হয়েছে।

৩৩৫। ইবনে আবিল হাদীদ,বায়হাকী ও আহমাদ উভয় হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি তাঁর শারহে নাহজুল বালাগাহ্’র ২য় খণ্ডের ৪৪৯ পৃষ্ঠায় এটি এনেছেন। ইমাম ফখরে রাজী তাঁর তাফসীরে কাবীর’গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ২৮৮ পৃষ্ঠায় মুবাহালার আয়াতের তাফসীরে শিয়া-সুন্নী নির্বিশেষে সকলের দৃষ্টিতে হাদীসটি অকাট্য বলেছেন। আহমাদ ইবনে সিদ্দীক হাসানী মাগরেবী তাঁর ফাতহুল মুলকিল আলী ফি সিহ্হাতে হাদীসে বাবি মাদীনাতে ইলমে আলী’গ্রন্থের ৩৪ পৃষ্ঠায় হাদীসটিকে সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন। আরেফকুল শিরোমণি মুহিউদ্দীন আরাবী হতে আরেফ শা রানী তাঁর আল ইয়াওয়াকীত ওয়াল জাওয়াহির’গ্রন্থের ১৭২ পৃষ্ঠায় (৩২ নম্বর আলোচনায়) বলেছেন, মুহিউদ্দীন বলেছেন : সকল নবীর সৎ গুণাবলী হযরত আলীর মধ্যে সমন্বিত হয়েছিল এবং তিনি সকল নবীর গোপনভেদ সমন্বয়কারী।”

৩৩৬। হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১২২ পৃষ্ঠায় হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৩৩৭। তাবরানী ও ইবনে মারদুইয়া ইবনে আব্বাস হতে এবং দাইলামী হযরত আয়েশা হতে হাদীসটি বর্ণনা করে একে মুস্তাফিয বলেছেন।

৩৩৮। আবু নাঈম ও ইবনে আসাকির আবু ইয়ালী হতে মারফু সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনে হাজার তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ৯ম অধ্যায়ের ২য় পর্বে ৩০ ও ৩১ নম্বর হাদীস হিসেবে ইবনে নাজ্জারের সূত্রে ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করে একে মারফু হাদীস বলেছেন।

৩৩৯। হাদীসটি হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৪৭ নম্বর পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন এবং হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। যাহাবী তাঁর তালখিস’গ্রন্থেও হাদীসটির বিশুদ্ধতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

৩৪০। এ হাদীস ও এর পরের দু টি হাদীস হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৪০ পৃষ্ঠায় ইবনে আব্বাস হতে বর্ণনা করেছেন। যাহাবীও তাঁর তালখিস’গ্রন্থে হাদীস দু টি বর্ণনা করে বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুসারে সহীহ বলেছেন।

৩৪১। হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১২২ নম্বর পৃষ্ঠায় হাদীসটি এনে বুখারী ও মুসলিমের শর্তানুসারে সহীহ বলেছেন। যাহাবীও তা স্বীকার করেছেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদ’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ৩৩ ও ৮২ পৃষ্ঠায় হাদীসটি আবু সাঈদ খুদরী হতে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী তাঁর শুআবুল ঈমান’গ্রন্থে,সাঈদ ইবনে মানসুর এবং আবু ইয়ালী তাঁদের সুনানে,আবু নাঈম হুলইয়াহ্’গ্রন্থে এবং মুত্তাকী হিন্দী তাঁর কানযুল উম্মাল’এর ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৫ পৃষ্ঠায় ২৫৮৫ নম্বর হাদীস হিসেবে এটি এনেছেন।

৩৪২। হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১৩৯ পৃষ্ঠায় দু টি সূত্রে এ হাদীস ও এর পরবর্তী হাদীস দু টি বর্ণনা করেছেন।

৩৪৩। এটি ইবনে আসাকিরের বর্ণনা যা কানযুল উম্মাল গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৫ পৃষ্ঠায় ২৫৮৮ নম্বর হাদীস হিসেবে এসেছে।

৩৪৪। দায়লামীর বর্ণনানুসারে হাদীসটি এভাবে এসেছে। কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,১৫৫ পৃষ্ঠা।

৩৪৫। কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে। তাবরানী তাঁর কাবীর’গ্রন্থেও হাদীসটি বর্ণনা  করেছেন।

৩৪৬। এ হাদীসটি হারেস ইবনে হাছিরা জাবের জো ফী হতে এবং তিনি ইমাম বাকের (আ.) হতে তাঁর পিতার সূত্রে আখদ্বার আনসারী হতে বর্ণনা করেছেন। আখদ্বার সম্পর্কে ইবনে সাকান বলেন, তিনি সাহাবী হিসেবে প্রসিদ্ধ নন এবং তাঁর হাদীসের সনদের বিষয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে।”আসকালানী তাঁর আল ইসাবাহ্’গ্রন্থে আখদ্বারের জীবনী আলোচনায় এটি বলেছেন। দারে কুতনী উপরোক্ত হাদীসটি তাঁর আল আফরাদ’গ্রন্থে এনেছেন ও বলেছেন, এ হাদীসের একমাত্র রাবী জাবের জো ফী,তিনি রাফেযী।”

৩৪৭। আবু নাঈম তাঁর হুলইয়াতুল আউলিয়া’গ্রন্থে মাআয ইবনে জাবাল হতে এ হাদীসটি এবং আবু সাঈদ খুদরী হতে পরবর্তী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। মুত্তাকী হিন্দী এ দু টি হাদীস তাঁর কানযুল উম্মাল’গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ১৫৬ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন।

৩৪৮। হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থে এবং যাহাবী তাঁর তালখিস’গ্রন্থে হাদীসটি এনেছেন।

৩৪৯। ইবনে আসাকির এবং সুনান লেখকদের কয়েকজন হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৩৫০। ইবনে আসাকির হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৩৫১। তাবরানী,ইবনে আবি হাতেমসহ কয়েকজন সুনান লেখক হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

ইবনে হাজার উপরোক্ত চারটি হাদীস তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থের (৩য় পর্বের) ৯ম অধ্যায়ের ৭৬ পৃষ্ঠায় এনেছেন।

৩৫২। সুনান লেখকগণ ইবনে আইয়াশ হতে কথাটি বর্ণনা করেছেন। সাওয়ায়েক’গ্রন্থে এ বিষয়ে দেখতে পারেন।

৩৫৩। সালাফী তাঁর আত্ তুয়ুরীয়াত’গ্রন্থে এটি বর্ণনা করছেন। ইবনে হাজারও তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থে এটি এনেছেন।

৩৫৪। এ বাণীগুলো মুস্তাফিয সূত্রে বর্ণিত হয়েছে এবং সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ২য় পর্বের ৯ম অধ্যায়ের ৭২ পৃষ্ঠায় ইবনে হাজার তা বর্ণনা করেছেন।

৩৫৫। বিশ,ছাব্বিশ,ছত্রিশ এবং চল্লিশতম পত্রে আমরা এটি উল্লেখ করেছি।

৩৫৬। হাকিম তাঁর মুসতাদরাক’গ্রন্থের ৩য় খণ্ডের ১২৪ পৃষ্ঠায় এবং যাহাবী তাঁর তালখিসে মুসতাদরাক’গ্রন্থের একই পৃষ্ঠায় হাদীসটির বিশুদ্ধতার বিষয়টি উল্লেখ করে একে মুস্তাফিয হাদীস বলেছেন। অনুরূপ অষ্টম পত্রে উল্লিখিত হাদীসে সাকালাইন’-এ আহলে বাইত হাউজে কাউসারে মিলিত হওয়া পর্যন্ত কোরআন হতে বিচ্ছিন্ন হবে না বলা হয়েছে এবং আলী আহলে বাইতের নেতা।

৩৫৭। খাতীব বাররা থেকে এবং দায়লামী ইবনে আব্বাস থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবনে হাজার সাওয়ায়েক গ্রন্থের ৭৫ পৃষ্ঠায় হাদীসটি এনেছেন। সাওয়ায়েক গ্রন্থের ৯ম বাব-এর ২য় অধ্যায়ের ৪০ হাদীসের ৩৫ নং হাদীসটি দেখুন।

৩৫৮। এ হাদীসটি কানযুল উম্মালের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪০৫ পৃষ্ঠার ৬১৩৩ নং হাদীস। আপনার জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে,মুবাহিলার আয়াতে হযরত আলী (আ.)-কে মহানবী (সা.)-এর নাফ্স অর্থাৎ সত্তা বলা হয়েছে। দ্রঃ ইমাম ফখরে রাযীর তাফসীরে কাবীরে মাফাতিহুল গাইব-এর ২য় খণ্ডের ৪৮৮ পৃষ্ঠা; স্মতর্ব্য যে,الكلمة الغراء (আল-কালিমাতুল গাররা) গ্রন্থে এ আয়াতটির আলোচনায় আমরা যা বলেছিলাম তা আপনি হারিয়ে ফেলবেন না।

৩৫৯। প্রথম খলীফা নির্বাচনের স্থান।

৩৬০। এটি হাদীসগুলোর উৎপত্তির সময়কাল নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি করে,নয় কি?-অনুবাদক

৩৬১। আহলে সুন্নাহর প্রথম সারির ব্যক্তিত্বদের অনেকেই হাদীসটির বিশুদ্ধতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এমন কি ইবনে হাজার তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থের ৫ম পর্বের প্রথম অধ্যায়ের ২৫ পৃষ্ঠায় এগারতম সন্দেহের আলোচনায় তাবরানী ও অন্যান্যদের হতে হাদীসটি বর্ণনা করে হাদীসটি সহীহ হবার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

৩৬২। নিজের মৃত্যুর বিষয়ে সকলকে জানালেন এজন্য যে,তাঁর দীনের মিশন পরিচালনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ও খেলাফতের বিষয়টি সম্পর্কে সকলকে জানানোর সময় এসেছে। এর মাধ্যমে তিনি চেয়েছেন তাদের মানসিক ভিত্তিকে মজবুত করতে যাতে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর মিশন পূর্ণতায় পৌঁছায়।

৩৬৩। ভ্রাতার খেলাফতের ঘোষণা সরাসরি দেয়ার পূর্বে বিষয়টি এভাবেই উপস্থাপনের উদ্দেশ্য মুনাফিক,হিংসুক ও বিদ্বেষ পোষণকারীদের মৌখিক আক্রমণ ও অপতৎপরতার প্রভাব কমিয়ে আনা।

ওয়াহেদী( يا ايّها الرّسول بلّغ ما أنزل إليك من ربّك ) আয়াতটির শানে নুযূল বা অবতীর্ণ হবার কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন আয়াতটি আলী ইবনে আবি তালিব সম্পর্কে গাদীরে খুমে অবতীর্ণ হয়েছে।

৩৬৪। তোমরাও দায়িত্বশীল ও দায়িত্বের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে”নবীর এ কথাটির উদ্দেশ্য বোধ হয় দাইলামী হতে বর্ণিত এ হাদীসটি যা ইবনে হাজার তাঁর সাওয়ায়েক’গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন-ইবনে সাঈদ বলেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন : কোরআনেরو قفوهم إنّهم مسئولون   আয়াতটির তাফসীর হলো তাদেরকে দাঁড় করাও আলীর বেলায়েত ও আনুগত্যের বিষয়ে তাদের প্রশ্ন করা হবে। অনুরূপ ওয়াহেদীও বলেছেন তারা আলী ও আহলে বাইতের বেলায়েত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। সুতরাং তোমরা দায়িত্বশীল’রাসূলের একথা এক প্রকার ভীতি প্রদর্শন আলীর বেলায়েত ও খেলাফতের বিরোধীদের জন্য।

৩৬৫। এ খুতবাটি নিয়ে চিন্তা করুন। এই হাদীসটি যে চিন্তা,বিশ্লেষণ ও মূল্যায়নের দাবী রাখে তা কেউ আদায় করলে বুঝতে পারবে এ খুতবার উদ্দেশ্য আলীর বেলায়েতের বিষয়টি যে দীনের মৌল বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত তা বোঝানো যেমনটি শিয়ারা বিশ্বাস করে। কারণ প্রথমে রাসূল (সা.) প্রশ্ন করেছেন, তোমরা কিلا اله الّا الله محمّد رّسول الله   এ কালেমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর নি? তারপর একে একে মৃত্যু পরবর্তী জীবন ও কিয়ামতের প্রতি বিশ্বাসের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন এবং আলীর বেলায়েতের বিষয়টি এনেছেন। এতে বোঝা যায় ওগুলোর প্রতি বিশ্বাসের মত এর প্রতি বিশ্বাসও দীনের মৌল বিষয় হিসেবে পরিগণিত।