অস্তিত্ববাদী মতবাদের পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন
)
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّـهَ وَلْتَنظُرْ نَفْسٌ مَّا قَدَّمَتْ لِغَدٍ
وَاتَّقُوا اللَّـهَ
إِنَّ اللَّـهَ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
وَلَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ نَسُوا اللَّـهَ فَأَنسَاهُمْ أَنفُسَهُمْ
أُولَـٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ
(
(সূরা হাশর : ১৮ ও ১৯)
আমরা গত বৈঠকের শেষ পর্যায়ে অন্য একটি মতবাদ যাকে বর্তমান কালের সবচেয়ে নতুন মতবাদগুলোর একটি বলা যেতে পারে,সে দৃষ্টিতে পূর্ণ মানবের রূপ কিরূপ তার প্রতি ইশারা করেছি।
এ মতবাদটি স্বাধীনতাকে মানুষের পূর্ণতার মানদণ্ড অথবা মানুষের অস্তিত্বের প্রকৃত মূল্যবোধ বলে মনে করে। এ মতবাদের প্রবক্তাদের বিশ্বাস এ বিশ্বজগতে একমাত্র স্বাধীন অস্তিত্ব হলো মানুষ অর্থাৎ মানুষ কোন বাধ্যবাধকতার আওতাভূক্ত নয়,তাই তার উপর কিছুই চাপিয়ে দেয়া যায় না। পুরাতন দার্শনিকদের ভাষায়- সে এ সৃষ্টিজগতে একটি স্বাধীন অস্তিত্ব যে কারো বাধ্য ও পরাধীন নয়। তাদের কারো কারো মতে মানুষ ব্যতীত আর সকল কিছুই বাধ্য,তারা কার্যকারণের শৃঙ্খলে আবদ্ধ। কিন্তু মানুষকে কোন বিধানই,এমনকি কার্যকারণ বিধানও বাধ্য করতে পারে না।
‘
অস্তিত্বই মূল’
- অস্তিত্ববাদী মতবাদে এ ধারণার রূপ
এ মতবাদ অন্য একটি তত্ত্বে বিশ্বাস করে,আর তা হলো স্বাধীন এ মানুষ বিশেষ কোন প্রকৃতি নিয়ে সৃষ্ট হয়নি। বিশ্বজগতে অন্য সকল সৃষ্টি বিশেষ প্রকৃতি ও সত্তায় সৃষ্ট হয়েছে। যেমন পাথর পাথর হিসেবেই সৃষ্ট হয়েছে,সে পাথর ভিন্ন অন্য কিছু হতে পারে না,যেমন সে মাটির ঢিলা হতে পারে না। বিড়াল বিড়ালের প্রকৃতি নিয়ে জন্মেছে,ঘোড়া ঘোড়ার প্রকৃতি নিয়ে জন্মেছে। কিন্তু মানুষ এরূপ বিশেষ কোন প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে সৃষ্টি হয়নি। বরং সে নিজে যে প্রকৃতি ধারণ করবে সে প্রকৃতিই লাভ করবে। মানুষের স্বাধীনতার সীমা এটা যে,সে নিজের প্রকৃতি নিজেই তৈরি করবে। এ বিষয়টিকে তারা‘
অস্তিত্বই মূল’
বা বস্তুসত্তার উপর অস্তিত্বের প্রাধান্য বলেছেন।
অস্তিত্ব মূল,বস্তুই মূল- এ পরিভাষাগুলো আমাদের দর্শনে বেশ পুরাতন। প্রায় সাড়ে তিনশ বছর পূর্বে সাদরুল মুতাআল্লেহীনের সময় হতে এ আলোচনা চলে এসেছে। কিন্তু মুসলিম দার্শনিকরা‘
অস্তিত্ব মূল’
বা‘
বস্তুসত্তা মূল’
শুধু বিশেষ ক্ষেত্রেই বলেন না বরং তারা সকল বস্তুর ক্ষেত্রেই এ আলোচনাটি করে থাকেন। তাদের দৃষ্টিতে অস্তিত্বই মূল বিষয়টি ভিন্ন একটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু মানুষ যে বিশেষ কোন প্রকৃতির অধিকারী নয় বলে অন্যান্য অস্তিত্ববান প্রাণী ও বস্তু হতে ভিন্ন এবং নিজেই নিজের প্রকৃতির নির্ধারক- ইসলামী দর্শনে এ বিষয়টি আরো জোরালো যুক্তিতে উপস্থাপিত হয়েছে,২৬১ অবশ্য ভিন্নভাবে ও ভিন্ন পরিভাষায়। বিশেষত সাদরুল মুতাআল্লেহীনের দর্শনে বিষয়টি অত্যন্ত সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
অস্তিত্ববাদীরা ভিন্নভাবে বিষয়টি প্রমাণ করলেও এ কথাটি সত্য ও সঠিক যে,মানুষের নির্দিষ্ট কোন প্রকৃতি নেই,বরং সে প্রকৃতি অর্জন করে নিজ প্রচেষ্টায়।
আমাদের ধর্মে পূর্ববর্তী জাতিতে রূপান্তর,বর্তমান সময়ের মানুষের চারিত্রিক দিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এবং কিয়ামতে মানুষের পুনরুত্থানের আলোচনায় বলেছে,সে দিন মানুষ বিভিন্নরূপে পুনরুত্থিত হবে। তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যকই মানুষরূপে পুনরুত্থিত হবে এবং অধিকাংশই বিভিন্ন পশুর আকৃতিতে পুনরুত্থিত হবে। এ বিষয়গুলো এ কথাকে সত্য বলে প্রমাণ করে। যদিও সকল মানুষ ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করেছে অর্থাৎ মানুষ হওয়ার যোগ্যতা ও প্রতিভা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে,তদুপরি তার জীবনের প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়ে সে অমানুষে পরিণত হতে পারে। এটা বাস্তব। (এ বিষয়টি নবীনরা অন্যভাবে অনুধাবন করেছে যদিও তা অনেক প্রাচীন। আমি এ বিষয়ে এখানে বেশি আলোচনা করতে চাচ্ছি না।)
যা হোক মানুষ যে স্বাধীন ও দায়িত্বসম্পন্ন প্রাণী হিসেবে সৃষ্ট- এ মতবাদের এ কথাটি ঠিক। আপনারা জানেন,মুসলমানদের মধ্যে দু’
দল ভিন্নমুখী দু’
টি বিশ্বাসের অধিকারী ছিল। আশাআরীরা জাবর বা বাধ্যতায় এবং মু’
তাযিলারা সম্পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করত। শিয়া এ দু’
য়ের মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী। তারা আশাআরীদের মতো সম্পূর্ণ বাধ্যতায় বা মু’
তাযিলাদের ন্যায় পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয়। অস্তিত্ববাদীরা যা বলে তা মূলত মুতাযিলাদের সম্পূর্ণরূপে দায়িত্ব হস্তান্তর বা পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদানের ধারণারই রূপ। ইসলামের মধ্যে পূর্ণ স্বাধীনতা নয়,তবে অবশ্যই স্বাধীনতা রয়েছে,যেমনটি ইমামদের হতে বর্ণিত হয়েছে-
لا جبر و لا تفویض بل أمر بین أمرین
অর্থাৎ বাধ্যতাও নয়,পূর্ণ স্বাধীনতাও নয়,বরং এ দু’
য়ের মাঝামাঝি। বর্তমানে বস্তুবাদীরা মূলত বাধ্যতায় বিশ্বাস করে অস্তিত্ববাদীদের পূর্ণ স্বাধীনতার বিশ্বাসের বিপরীতে। কিন্তু ইসলাম মধ্যপন্থায় বিশ্বাসী। মানুষের সে পর্যন্ত স্বাধীনতা রয়েছে যাতে সে বাধ্যতায় পতিত না হয়,কিন্তু এর অর্থ পূর্ণ স্বাধীনতা নয়। মানুষ অন্যান্য প্রাণীর বিপরীতে বিশেষ প্রকৃতির অধিকারী নয় বরং তার প্রকৃতি পরিবর্তনশীল বিধায় বিশেষ প্রকৃতি সে অর্জন করতে পারে- এ কথাটি খুবই সত্য।
মানুষের নির্ভরতা ও বিভিন্ন সত্তার সঙ্গে সংযুক্ততার ফল
এ মতবাদ মানুষের স্বাধীনতার বিষয়ে অন্য একটি তত্ত্বেও বিশ্বাসী। সেটা হচ্ছে নির্ভরতা ও সংযুক্ততার ফল। তারা প্রথমে স্বাধীনতাকে দার্শনিক যুক্তিতে উপস্থাপন করে বলেন,মানুষ স্বাধীনরূপে সৃষ্টি হয়েছে,এমনকি সে নিজের প্রকৃতি নিজেই গঠন করতে পারে। অতঃপর তারা বলেন,যা কিছু মানুষের স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও এর বিরোধী তা মানুষকে মনুষ্যত্ব হতে দূরে নিক্ষেপ করে ও মানবতার সঙ্গে অপরিচিত করে তোলে।
মানুষ সত্তাগতভাবেই স্বাধীন হিসেবে সৃষ্ট হয়েছে। কোন কোন সময় কিছু প্রভাবক,যেমন কোন কিছুর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা মানুষের স্বাধীনতাকে হরণ করে। এ মতবাদের মতে মানুষ যদি কোন কিছুর সাথে সম্পর্কিত হওয়ার মাধ্যমে তার কাছে দায়বদ্ধ বা তার দাস ও অনুগত হয়ে পড়ে,তবে সে মনুষ্যত্বের সীমা হতে বেড়িয়ে পড়ে। কারণ সে তার স্বাধীনতাকে হারিয়েছে। যেহেতু মানুষ মুক্ত-স্বাধীন এক অস্তিত্ব সেহেতু যে কোন কিছুর অধীন হওয়ার অর্থ স্বাধীনতা বর্জিত হওয়া।
মানুষ কোন কিছুর সংশ্লিষ্টতা বা অধীনতাকে মেনে নিলে কয়েকটি বিষয় উদ্ভূত হয়। প্রথমত মানুষ যখন কোন বস্তুর,যেমন অর্থের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে তখন অর্থ তার জীবনে প্রথম ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় এবং মানুষকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে তার নিজ সত্তা হতে অসচেতন করে তোলে। বস্তু সংশ্লিষ্টতা মানুষের স্বাধীনতা হরণ করে। বস্তু আসক্তি মানুষকে তার সত্তা সম্পর্কে অসচেতন করে ফেলে। তাই সে নিজ সম্পর্কে চিন্তা করে না,বরং ঐ বস্তুর চিন্তায় নিমগ্ন হয়,সে আত্ম সচেতন সত্তা হতে আত্মবিস্মৃত ও অসেচতন সত্তায় পরিণত হয় এবং এটা মনুষ্যত্বের স্খলন। মানুষ তৎসংশ্লিষ্ট বস্তু সম্পর্কে নিখুত তথ্য প্রদানে সক্ষম হলেও নিজের সম্পর্কে অসচেতনতার কারণে আপনসত্তা সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানে অক্ষম।
দ্বিতীয়ত এ সংশ্লিষ্টতা মানুষকে মানবীয় মূল্যবোধ হতে দূরে নিক্ষেপ করে এবং সে ঐ সংশ্লিষ্ট বস্তু বা বিষয়ের মূল্য সংরক্ষণে নিয়োজিত হয়। অর্থলোলুপ কোন ব্যক্তির নিকট মানবীয় মূল্যবোধ সমূহের কোন গুরুত্ব নেই এবং প্রকৃতপক্ষে তার নিকট তার নিজেরই কোন মূল্য নেই। আত্মসম্মান ও মর্যাদাতার চিন্তায় কোন ভূমিকা রাখে না। মুক্তি ও স্বাধীনতার ধারণা তার মনে কোন রেখাপাত করে না,তার চিন্তায় একমাত্র উপাস্য বস্তু ঐ অর্থ। অর্থাৎ অর্থের মূল্য তার নিকট গুরুত্ব পেলেও নিজস্ব মূল্যবোধগুলো তার নিকট গুরুত্ব রাখে না। এ মূল্যবোধগুলো তার নিকট মৃত এবং ঐ বস্তুর মূল্য তার নিকট জীবন্ত হয়ে উঠে।
তৃতীয়ত বস্তু সংশ্লিষ্টতা মানুষকে ঐ বস্তুর দাসে পরিণত করে তার হাতে বন্দি করে ফেলে। ঐ বস্তুর সাথে যেহেতু সে আবদ্ধ সেহেতু তার উন্নয়নের পথ বাঁধাগ্রস্ত। যেমন কোন প্রাণী একটি খুটি বা
বৃক্ষের সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধা থাকলে তার স্থানান্তরের পরিধি সীমিত হয়ে পড়ে বা একটি মোটরগাড়ি শৃঙ্খলাবদ্ধ হলে তার গতি ব্যাহত হয় তেমনি বস্তু সংশ্লিষ্টতা মানুষের পূর্ণতার পথের গতিকে রুদ্ধ করে দেয়,তার‘
গতি’
কে‘
স্থিতি’
তে পরিণত করে। দার্শনিক পরিভাষায় তার‘
সাইরুরাত’
‘
লা সাইরুরাত’
এ কখনো কখনো‘
কাইলুনাত’
বা স্থবিরতায় পর্যবসিত হয়।এ
মতবাদ অনুসারে‘
আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের ধারণা’
সুতরাং আমরা জানলাম,এ মতবাদের দৃষ্টিতে মানবের প্রকৃত সত্তা হলো তার স্বাধীনতাবোধ। অন্যভাবে বললে,সকল মানবীয় মূল্যবোধের মাতা ও প্রাণ হলো স্বাধীনতা। মানুষ যদি তার মনুষ্যত্বকে সংরক্ষণ করতে চায়,তবে অবশ্যই তাকে তার স্বাধীনতাকে সংরক্ষণ করতে হবে। আর স্বাধীনতা সংরক্ষণের জন্য তাকে‘
পূর্ণিমার চাঁদের’
রূপে মুগ্ধ হওয়া বা প্রেমের দাসে পরিণত হওয়া চলবে না।
“
এ বিশ্ব-পুষ্পোদ্যানে একটি ফুলই যথেষ্ট আমার জন্য
ঐ ঘাসে ঘেরা দেবদারুর একটু ছায়াই আমার কাম্য
হে খোদা! তোমার গৃহ হতে আমায় পাঠিয়ো না বেহেশতে
তোমার গৃহে আশ্রয় লাভ অধিক আকাঙ্ক্ষার এ বিশ্ব হতে।”
এ মতবাদের দৃষ্টিতে মানুষকে পূর্ণ ও নিরঙ্কুশ মুক্ত ও স্বাধীন হতে হবে। এ ক্ষেত্রে এ মতবাদ সম্পূর্ণরূপে দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদের বিপরীতে অবস্থান করছে যদিও তারা উভয়েই আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয়। অস্তিত্ববাদীদের মতে দু’
টি কারণে আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস তাদের চিন্তার পরিপন্থী; প্রথমত আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করলে আমাদের ভাগ্যে (قضا
و
قدر
) বিশ্বাস করতে হবে। আর ভাগ্যে বিশ্বাস অর্থ মানুষের স্থির প্রকৃতি বা বাধ্যবাধকতায় (جبر
) বিশ্বাস। যদি আল্লাহর অস্তিত্ব থাকে,তবে মানুষকে ঐ আল্লাহর জ্ঞানে বিশেষ প্রকৃতির অধিকারী হতে হবে অর্থাৎ সে আর অনির্দিষ্ট প্রকৃতির থাকছে না আবার আল্লাহর অস্তিত্বের কারণে মানুষের উপর ভাগ্যের বাধ্যবাধকতা চলে আসে এবং তার কোন স্বাধীনতা থাকে না। সুতরাং আমরা যখন স্বাধীনতাকে গ্রহণ করেছি তখন আল্লাহর অস্তিত্বকে গ্রহণ করতে পারি না।
দ্বিতীয়ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস শুধু আমাদের স্বাধীনতা হরণ করে না,বরং তার প্রতি বিশ্বাস অর্থ একই সাথে তার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া এবং যে কোন রকম সংশ্লিষ্টতা বা সংযুক্তিই স্বাধীনতা বিরোধী। বিশেষত আল্লাহ্ সংশ্লিষ্টতা অন্য সকল সংযুক্তি হতে উচ্চ পর্যায়ের সংশ্লিষ্টতা। কবির ভাষায়-
“
আমি তোমার সঙ্গে আবদ্ধ তাই সব আবদ্ধতা হতে মুক্ত
আমি তোমার চুক্তিতে আবদ্ধ তাই তা ভঙ্গের আশংকামুক্ত।”
যদি কেউ আল্লাহর সঙ্গে আবদ্ধ হয়,তবে তা কখনই বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়। তাই এ মতবাদ এ আবদ্ধতাকে অস্বীকার করে।
এ মতবাদ সম্পর্কে দু’
টি দৃষ্টিকোণ হতে আলোচনা করা যেতে পারে। প্রথমত এ মতবাদের বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্বাধীনতা পরিপন্থী যা একটি ভ্রান্ত ধারণা। আমার‘
বস্তুবাদের প্রতি ঝুকে পড়ার কারণসমূহ’
এবং‘
মানুষ ও তার ভাগ্য’
নামক গ্রন্থ দু’
টিতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করে বলেছি যে,বিষয়টি এরূপ নয়,যা তারা ধারণা করেন।‘
কাযা ও কাদর’
বা ভাগ্যসম্পর্কে তাদের ধারণা বৃদ্ধা মহিলাদের ধারণার মতো। এরা কাযা ও কাদর বোঝেননি। নতুবা ইসলামী দৃষ্টিকোণে কাযা ও কাদরের বিষয়টি এমনরূপে রয়েছে যা মানুষের স্বাধীনতার পরিপন্থী নয়। যা হোক এটা আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়। বরং এখানে আমাদের আলোচ্য বিষয় দ্বিতীয় দিকটি নিয়ে যেখানে তারা বলছেন,যে কোন বস্তুর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা স্বাধীনতা বিরোধী,এমনকি যদি সে সংশ্লিষ্টতা আল্লাহর সঙ্গেও হয়। এখানে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করব।