চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড0%

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড লেখক:
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ: হযরত মোহাম্মদ (সা.)

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

লেখক: আয়াতুল্লাহ্ জাফার সুবহানী
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ:

ভিজিট: 103677
ডাউনলোড: 9120


পাঠকের মতামত:

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 242 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 103677 / ডাউনলোড: 9120
সাইজ সাইজ সাইজ
চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

লেখক:
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বাংলা

কোন্ দিন প্রথম ওহী অবতীর্ণ হয়েছিল

মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াত দিবস তাঁর জন্ম ও ওফাত দিবসের মতোই ঐতিহাসিকদের দৃষ্টিতে নিশ্চিত ও চূড়ান্ত নয়। শিয়া আলেমগণ প্রায় ঐকমত্য পোষণ করেন যে,মহানবী (সা.) 27 রজব নবুওয়াতের পদ লাভ করেন। ঐ দিন থেকেই তাঁর নবুওয়াত শুরু হয়েছিল। কিন্তু সুন্নী আলেমদের প্রসিদ্ধ অভিমত হচ্ছে এই যে,মহানবী (সা.) পবিত্র রামযান মাসে এ সুমহান মর্যাদা লাভ করেছিলেন এবং পবিত্র বরকতময় এ মাসেই তিনি নিখিল বিশ্বের স্রষ্টা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে জনগণকে পথ প্রদর্শন করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং রিসালাত ও নবুওয়াতের পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন।

যেহেতু শিয়ারা নিজেদেরকে মহানবীর ইতরাত ও আহলে বাইতের অনুসারী বলে বিবেচনা করে এবং হাদীসে সাকালাইন অনুসারে তাদের ইমামদের বক্তব্য ও বাণীকে সব দিক থেকে অকাট্য ও শুদ্ধ বলে বিশ্বাস করে এ কারণেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নবুওয়াতপ্রাপ্তির দিবস নির্ধারণ করার ব্যাপারে ঐ অভিমতের অনুসারী-যা মহানবী (সা.)-এর আহলে বাইত থেকে নির্ভুলভাবে বর্ণিত হয়েছে। তাঁর সন্তানগণ (আহলে বাইত) বলেছেন, আমাদের বংশের প্রধান ব্যক্তিটি (মহানবী) 27 রজব নবুওয়াতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। এ সব পূর্ব প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ ও ভূমিকার ওপর ভিত্তি করে উপরিউক্ত বক্তব্য ও অভিমতের সত্যতা ও নির্ভুল হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ ও সংশয় পোষণ করা অনুচিত।

যে বিষয়টি (মহানবীর নবুওয়াতপ্রাপ্তির দিবস নির্ধারণ করার ব্যাপারে প্রচলিত) অপর একটি অভিমতের দলিল হিসাবে বিবেচিত তা হচ্ছে পবিত্র কোরআনের ঐ সকল আয়াত যেগুলোতে উল্লিখিত হয়েছে যে,এ গ্রন্থ (পবিত্র কোরআন) পবিত্র রামযান মাসে অবতীর্ণ হয়েছিল। যেহেতু নবুওয়াত দিবস ওহীর সূচনা এবং পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার দিবস ছিল অতএব,অবশ্যই বলা উচিত যে,নবুওয়াত দিবস যে মাসে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল সে মাসেই হতে হবে। আর ঐ মাসটি হচ্ছে পবিত্র রামযান মাস। এখন যে সব আয়াতে পবিত্র রামযান মাসে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর অনুবাদসহ নিম্নে উল্লেখ করা হলো :

) شهر رمضان الّذي أنزل فيه القرآن(

রামযান মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হয়েছিল। (সূরা বাকারাহ্ : 185)

) حم و الكتاب المبين إنّا أنزلناه في ليلة مباركة(

হা মীম স্পষ্ট বর্ণনাকারী গ্রন্থের (পবিত্র কোরআন) শপথ,নিশ্চয়ই আমরা এ গ্রন্থকে একটি বরকতময় রাত্রিতে অবতীর্ণ করেছি। (সূরা দুখান : 2 ও 3)

) إنّا أنزلناه في ليلة القدر(

আর উক্ত বরকতময় রজনী হচ্ছে ঐ শবে কদর (মহিমাময় রাত্রি) যা সূরা কদরে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরশাদ হচ্ছে : আমরা পবিত্র কোরআনকে কদরের রাতে অবতীর্ণ করেছি। (সূরা কদর : 1)

শিয়া আলেমদের জবাব

শিয়া মুহাদ্দিস ও মুফাসসিরগণ বিভিন্ন উপায়ে উপরিউক্ত যুক্তি ও দলিল-প্রমাণ খণ্ডন করেছেন। আমরা তন্মধ্যে কেবল কয়েকটি এখানে উল্লেখ করব :

প্রথম উত্তর : উপরিউক্ত আয়াতসমূহ থেকে প্রতীয়মান হয় যে,পবিত্র কোরআন রমযান মাসের একটি বরকতময় রাতে অবতীর্ণ হয়েছিল। আর উক্ত রজনী পবিত্র কোরআনে শবে কদর’ অর্থাৎ ভাগ্য রজনী নামে পরিচিত হয়েছে। আর এ সব আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় না যে,ঐ রাতেই পবিত্র কোরআন মহানবী (সা.)-এর পবিত্র হৃদয়ের ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল,বরং পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন ধরনের নুযূল থাকার সম্ভাবনাই বেশি। এ সব নুযূলের অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে মহানবীর ওপর পবিত্র কোরআনের ধারাবাহিক ও পর্যায়ক্রমিক নুযূল। আরেক ধরনের নুযূল হচ্ছে একত্রে একবারে সম্পূর্ণ কোরআনের নুযূল। লওহে মাহফূয (সংরক্ষিত ফলক) থেকে বাইতুল মামূরে সম্পূর্ণ কোরআন একত্রে একবারে অবতীর্ণ (নাযিল) হয়েছিল।220 সুতরাং 27 রজব যদি মহানবী (সা.)-এর ওপর সূরা আলাকের কয়েকটি আয়াত এবং পবিত্র রমযান মাসে যদি (পবিত্র কোরআনের ভাষায়) লওহে মাহফূয নামক একটি স্থান থেকে অন্য এক স্থান যা রেওয়ায়েতসমূহে বাইতুল মামূর নামে অভিহিত (হয়েছে) সেখানে সম্পূর্ণ কোরআন একত্রে একবারে অবতীর্ণ হয়,তাহলে কি এতে কোন অসুবিধা ও আপত্তি থাকতে পারে?

এ বক্তব্য ও অভিমতের পক্ষে প্রমাণ হচ্ছে সূরা দুখানের 3 নং আয়াতটি যাতে এরশাদ হচ্ছে:

আমরা পবিত্র কিতাবটি (কোরআন) একটি বরকতময় রজনীতে অবতীর্ণ করেছি। [যে সর্বনামটি কিতাব’ (গ্রন্থ)-এর দিকে প্রত্যাগমন করে সেই সর্বনামটি প্রমাণস্বরূপ উপস্থাপন করলে] এ আয়াতটির স্পষ্ট প্রকাশিত অর্থ হচ্ছে এই যে,সম্পূর্ণ কিতাবটি পবিত্র রমযানের একটি বরকতময় রজনীতে অবতীর্ণ হয়েছে। অবশ্যই এ নুযূলটি ঐ নুযূল থেকে ভিন্ন ও স্বতন্ত্র যা মহানবীর নবুওয়াতের মাকামে অভিষেকের দিবসে বাস্তবায়িত হয়েছিল। কারণ নবুওয়াতের মাকামে অভিষেক দিবসে গুটিকতক আয়াতই (সূরা আলাকের প্রথম 5 আয়াত) অবতীর্ণ হয়েছিল।

সার সংক্ষেপ

যে সব আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে,পবিত্র কোরআন রামযান মাসের কদরের পুণ্যময় রাতে অবতীর্ণ হয়েছিল সেগুলো থেকে প্রমাণিত হয় না যে,যে দিবসে মহানবী (সা.) নবুওয়াতের পদে অভিষিক্ত হয়েছিলেন এবং সর্বপ্রথম কয়েকটি আয়াতও অবতীর্ণ হয়েছিল সে দিবসটি ছিল পবিত্র রামযান মাসে। কারণ উপরিউক্ত আয়াতসমূহ থেকে প্রতীয়মান হয় যে,সম্পূর্ণ ঐশী গ্রন্থটি ঐ মাসে (রামযান মাসে) অবতীর্ণ হয়েছিল,অথচ মহানবীর নবুওয়াতের অভিষেক দিবসে কেবল গুটিকতক আয়াতই অবতীর্ণ হয়েছিল। এমতাবস্থায় পবিত্র কোরআনের সম্পূর্ণ অবতীর্ণ হওয়াটাই ঐ মাসে (রামযান মাসে) লওহে মাহফূয থেকে বাইতুল মামূরে সমগ্র পবিত্র কোরআনের অবতীর্ণ হওয়াকেই সম্ভবত বুঝিয়ে থাকবে। শিয়া ও সুন্নী আলেমগণ এতদ্প্রসঙ্গে বেশ কিছু হাদীসও বর্ণনা করেছেন। বিশেষ করে আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল আযীম আয-যারকানী মানাহিলুল ইরফান ফী উলূমুল কোরআন’ নামক গ্রন্থে ঐ সব রেওয়ায়েত বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।221

দ্বিতীয় উত্তর

সবচেয়ে শক্তিশালী ও দৃঢ় উত্তর যা এখন পর্যন্ত আলেমদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে তা হচ্ছে এই দ্বিতীয় উত্তর। আল্লামা তাবাতাবাঈ তাঁর মূল্যবান তাফসীর গ্রন্থ আল মীযান’-এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন।222 এ উত্তরটির সার সংক্ষেপ নিচে উল্লেখ করা হলো :

‘আমরা এ গ্রন্থকে রামযান মাসে অবতীর্ণ করেছিলাম’-পবিত্র কোরআনের এ আয়াতটির প্রকৃত অর্থ কি? এ আয়াতটির প্রকৃত ও যথার্থ অর্থ হচ্ছে সম্পূর্ণ কোরআনের প্রকৃত স্বরূপ ও হাকীকত রামযান মাসে মহানবী (সা.)-এর পবিত্র অন্তঃকরণের ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল। কারণ পর্যায়ক্রমিক (ধারাবাহিক) অস্তিত্ব ছাড়াও পবিত্র কোরআনের এমন এক প্রকৃত বাস্তব স্বরূপ আছে যার সাথে মহান আল্লাহ্ তাঁর প্রিয় রাসূলকে রামযান মাসের কোন একটি নির্দিষ্ট রজনীতে পরিচিত করিয়ে দিয়েছিলেন।

যেহেতু মহানবী সম্পূর্ণ পবিত্র কোরআন সম্পর্কে অবগত ছিলেন তাই যতক্ষণ পর্যন্ত পবিত্র কোরআনের ধারাবাহিক নুযূলের বিধান বাস্তবে জারী করা না হয়েছে ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর প্রতি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে পবিত্র কোরআনের ব্যাপারে ত্বরা না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।223

এ উত্তরটির সার সংক্ষেপ

পবিত্র কোরাআনের যেমন একটি সার্বিক তাত্ত্বিক ও প্রকৃত বাস্তব অস্তিত্ব আছে যা একযোগে একত্রে (একবারেই) পবিত্র রামযান মাসে অবতীর্ণ হয়েছিল ঠিক তেমনি এ গ্রন্থের আরেকটি অস্তিত্ব আছে যা পর্যায়ক্রমিক (ধারাবাহিক)-যার সূচনা মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতে অভিষেক দিবসে কয়েকটি আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হয়েছে এবং মহানবীর জীবন সায়াহ্ন পর্যন্ত বলবৎ ছিল (অর্থাৎ পবিত্র কোরআনের ধারাবাহিক অবতরণ মহানবীর নবুওয়াতে অভিষেক দিবসে শুরু হয়ে তাঁর ওফাত পর্যন্ত বলবৎ ছিল।)

তৃতীয় উত্তর

পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার সাথে মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতের দায়িত্বে অভিষিক্ত হওয়ার বিষয়টি যুগপৎ ছিল না।

ওহীর শ্রেণীবিভাগ বর্ণনা করার সময় সার সংক্ষেপে আলোচনা করা হয়েছে যে,ওহীরও বেশ কিছু পর্যায় আছে। ওহীর প্রথম পর্যায় : সত্য স্বপ্নদর্শন (এ পর্যায়ে নবী কেবল সত্য স্বপ্ন দর্শন করেন।) ওহীর দ্বিতীয় পর্যায় : নবী কর্তৃক গায়েবী ও ঐশী আহবান শুনতে পাওয়া (অর্থাৎ এ পর্যায়ে নবী অদৃশ্য ঐশী আহবান শুনতে পান),তবে এ ক্ষেত্রে তিনি কোন ফেরেশতাকে প্রত্যক্ষ করেন না;ওহীর চূড়ান্ত ও সর্বশেষ পর্যায় হচ্ছে নবী ফেরেশতার কাছ থেকে মহান আল্লাহর বাণী শোনেন যাঁকে তিনি দেখেন এবং যাঁর মাধ্যমে তিনি অন্যান্য জগতের প্রকৃত অবস্থা ও বাস্তবতাসমূহের সাথেও পরিচিত হন।

যেহেতু মানবাত্মার একেবারে প্রাথমিক পর্যায় ওহীর বিভিন্ন পর্যায় ধারণ করতে অক্ষম সেহেতু অবশ্যই ওহী ধারণ করার বিষয়টি পর্যায়ক্রমিকভাবে বাস্তবায়িত হতে হবে। সুতরাং নির্দ্বিধায় বলা উচিত মহানবীর নবুওয়াতে অভিষেক দিবসে (27 রজব) এবং এর পরেও আরো বেশ কিছুদিন পর্যন্ত তিনি স্বর্গীয় ঐশী আহবানই শুনতে পেতেন। তিনি শুনতে পেতেন যে,তিনি মহান আল্লাহর রাসূল। নবুওয়াত দিবসে তাঁর ওপর কোন আয়াতই অবতীর্ণ হয় নি। অতঃপর বেশ কিছুদিন পর পবিত্র রামযান মাসে পবিত্র কোরআনের ধারাবাহিক নুযূল শুরু হয়।

সুতরাং সংক্ষেপে বলা যায় যে,রজব মাসে মহানবীর নবুওয়াতে অভিষিক্ত হওয়ার বিষয়টি ঐ মাসেই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার সাথে মোটেও সংশ্লিষ্ট নয়। এ বক্তব্যের ভিত্তিতে মহানবীর যদি রজব মাসে নবুওয়াতে অভিষিক্ত এবং পবিত্র কোরআন যদি একই বছরের রমযান মাসে অবতীর্ণ হয় তাহলে কি কোন অসুবিধা আছে?

উপরিউক্ত উত্তরটি যদিও অনেক ঐতিহাসিক বর্ণনা ও বিবরণের সাথে খাপ খায় না (কারণ ঐতিহাসিকগণ স্পষ্ট বলেছেন যে,সূরা আলাকের কতিপয় আয়াত নবুওয়াতে অভিষিক্ত হওয়ার দিবসেই অবতীর্ণ হয়েছিল।) কিন্তু এতদ্সত্ত্বেও এমন কিছু রেওয়ায়েত আছে যেগুলোতে মহানবীর নবুওয়াতে অভিষিক্ত হওয়ার দিবসের ঘটনাটি বলতে কেবল গায়েবী অর্থাৎ অদৃশ্য (ঐশী) আহবানের কথাই উল্লিখিত হয়েছে এবং পবিত্র কোরআন অথবা কতিপয় আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার বিষয়টি বর্ণিত হয় নি;বরং নবুওয়াত দিবসের ঘটনা ঠিক এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে,ঐ দিন মহানবী একজন ফেরেশতাকে দেখতে পেয়েছিলেন যিনি তাঁকে সম্বোধন করে বলেছিলেন,

يا محمّد أنّك لرسول الله হে মুহাম্মদ! নিশ্চয়ই আপনি মহান আল্লাহর রাসূল। আবার কিছু সংখ্যক বর্ণনায় কেবল গায়েবী আহবান ও সম্বোধনধ্বনি শোনার কথাই বর্ণিত হয়েছে এবং কোন ফেরেশতাকে দেখার বিষয় উল্লিখিত হয় নি। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে হলে বিহারুল আনওয়ার অধ্যয়ন করুন।224

অবশ্য তৃতীয় এ উত্তরটি চতুর্থ উত্তর থেকে ভিন্ন ও স্বতন্ত্র। চতুর্থ উত্তরে বলা হয়েছে যে,মহানবীর বেসাত (নবুওয়াতে অভিষিক্ত হওয়া) রজব মাসেই হয়েছিল এবং গোপনে দাওয়াত অর্থাৎ গোপনে ইসলাম প্রচারের পর্যায় যা বেসাতের পর থেকে দীর্ঘ তিন বছর স্থায়ী হয়েছিল তা অতিবাহিত হওয়ার পরই পবিত্র কোরআনের অবতরণ (নুযূল) শুরু হয়। (অর্থাৎ বে সাতের পর দীর্ঘ তিন বছর গোপনে ইসলাম প্রচারের পর্যায় অতিবাহিত হওয়ার পরপরই পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ হতে থাকে।)

ত্রয়োদশ অধ্যায় : সর্বপ্রথম যে পুরুষ ও মহিলা মহানবীর প্রতি ঈমান এনেছিলেন

সমগ্র বিশ্বে ইসলাম ধর্মের প্রসার ধীরে ধীরেই হয়েছিল। পবিত্র কোরআনের পরিভাষায় যে সব ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ এবং এ ধর্মের প্রচার করার ক্ষেত্রে অগ্রগামী ছিলেন তাঁদেরকেالسّابقون (অগ্রগামিগণ) বলা হয়েছে। আর ইসলামের প্রাথমিক যুগে মহানবী (সা.)-এর পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ক্ষেত্রে অগ্রগামিতা শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি বলে গণ্য হতো। অতএব,বিশুদ্ধ ঐতিহাসিক দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে এ বিষয়টি (ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রগামিতা) আলোচনা করা উচিত। তাহলে আমরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রগামী মহিলা ও পুরুষকে চিনতে পারব।

মহিলাদের মধ্যে হযরত খাদীজাহ্

ইসলামের ইতিহাসের অকাট্য বিষয়াদির মধ্যে অন্যতম বিষয় হচ্ছে এই যে,হযরত খাদীজাহ্ (আ.) ছিলেন প্রথম নারী যিনি মহানবী (সা.)-এর প্রতি ঈমান এনেছিলেন। আর এ ব্যাপারে কোন মতপার্থক্যও নেই।225 আমরা বর্ণনা সংক্ষেপ করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল এখানে উল্লেখ করব যা ঐতিহাসিকগণ মহানবী (সা.)-এর একজন স্ত্রীর কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন।

হযরত আয়েশা বলেন, আমি খাদীজাকে কখনই দেখি নি বলে সব সময় আফসোস করতাম এবং তাঁর প্রতি মহানবী (সা.) সব সময় যে টান ও ভালোবাসা প্রদর্শন করতেন তাতে আমি খুব আশ্চর্যান্বিত হতাম। কারণ মহানবী তাঁকে খুব বেশি স্মরণ করতেন। যদি কখনো কোন দুম্বা জবাই করতেন তখন তিনি হযরত খাদীজার বান্ধবীদের খোঁজখবর নিয়ে তাঁদের কাছে জবাইকৃত দুম্বার মাংস প্রেরণ করতেন। একদিন মহানবী ঘর থেকে বের হওয়ার সময় খাদীজার কথা স্মরণ করে তাঁর প্রশংসা করছিলেন। অবশেষে অবস্থা এমন হলো যে,আমি আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলাম না। পূর্ণ স্পর্ধা সহকারে আমি বলেই বসলাম : তিনি তো একজন বৃদ্ধা নারী বৈ আর কিছুই ছিলেন না। মহান আল্লাহ্ আপনাকে তাঁর চেয়ে উত্তম ভালো ভালো স্ত্রী দিয়েছেন! আমার এ কথা মহানবী (সা.)-এর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করল। তাঁর মুখমণ্ডলে ক্রোধ ও অসন্তোষের চি‎‎ হ্ন স্পষ্ট ফুটে উঠল। তিনি বললেন : কখনই এমন হয় নি। তাঁর চেয়ে উত্তম স্ত্রী আমি পাই নি। তিনি ঐ সময় আমার প্রতি ঈমান এনেছিলেন যখন সবাই শিরক ও কুফরে লিপ্ত ছিল। তিনি সবচেয়ে কঠিন সময় তাঁর সমুদয় ধন-সম্পদ আমার হাতে অর্পণ করেছিলেন। মহান আল্লাহ্ তাঁর মাধ্যমে আমাকে সন্তান-সন্ততি দিয়েছেন যা আমার অন্য কোন স্ত্রীকে দেন নি।”

ঈমান আনয়ন করার ক্ষেত্রে বিশ্বের সকল নারীর চেয়ে হযরত খাদীজার শ্রেষ্ঠত্ব ও অগ্রগামিতার আরেকটি দলিল হচ্ছে ওহীর শুভ সূচনা ও পবিত্র কোরআনের অবতীর্ণ হওয়ার প্রসঙ্গ। কারণ যখন মহানবী (সা.) হিরা গুহা থেকে নিচে নেমে আসলেন এবং বে সাতের (নবুওয়াতের অভিষেকের) পুরো ঘটনাটি খাদীজার কাছে সবিস্তারে বর্ণনা করলেন তখন সাথে সাথে তিনি স্পষ্টভাবে ও ইঙ্গিতে স্ত্রী খাদীজার ঈমানের সাথে পরিচিত হলেন। এছাড়া হযরত খাদীজাহ্ (আ.) আরবের ভবিষ্যদ্বক্তা ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের কাছ থেকে তাঁর স্বামীর নবুওয়াতের ব্যাপারে অনেক কথা শুনেছিলেন। আর এ সব কথা ও বাণী এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সত্যবাদিতা ও বিশ্বস্ততার কারণেই হযরত খাদীজাহ্ তাঁর সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।

ঈমানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রগামী ছিলেন আলী

শিয়া ও সুন্নী নির্বিশেষে সকল ঐতিহাসিকের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে,পুরুষদের মধ্য থেকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি প্রথম যে ব্যক্তি ঈমান এনেছিলেন তিনি ছিলেন হযরত আলী (আ.)। আর এ প্রসিদ্ধ অভিমতের বিপক্ষে ইতিহাসে আরো কিছু বিরল অভিমতও আছে যেগুলোর বর্ণনাকারিগণ উক্ত প্রসিদ্ধ অভিমতটির বিপরীতটি বর্ণনা করেছেন। যেমন বলা হয়ে থাকে যে,প্রথম যে ব্যক্তি পুরুষদের মধ্য থেকে মহানবী (সা.)-এর প্রতি ঈমান এনেছিলেন তিনি ছিলেন মহানবী (সা.)-এর পালক পুত্র যায়েদ ইবনে হারিসা অথবা হযরত আবু বকর। তবে অগণিত দলিল এ দুই অভিমতের বিপক্ষে বিদ্যমান আছে;আমরা এ সব দলিল থেকে মাত্র কয়েকটি সংক্ষেপে নিচে উল্লেখ করছি :

1. হযরত আলী মহানবী (সা.)-এর তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হয়েছিলেন

হযরত আলী বাল্যকাল থেকেই মহানবী (সা.)-এর গৃহে প্রতিপালিত হয়েছিলেন এবং মহানবীও একজন স্নেহময় পিতার মতোই তাঁর লালন-পালনের ব্যাপারে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। সকল সীরাত রচয়িতা এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করে লিখেছেন :

“মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতে অভিষিক্ত হবার আগেই পবিত্র মক্কায় একবার এক মারাত্মক দুর্ভিক্ষ ও অনাবৃষ্টি দেখা দিয়েছিল। মহানবী (সা.)-এর চাচা আবু তালিবের পরিবার বেশ বড় হওয়ার কারণে এবং যেহেতু তাঁর আয় তাঁর সাংসারিক ব্যয় ও খরচের সাথে সামঞ্জস্যশীল ছিল না এবং ভাই আব্বাসের তুলনায় তিনি বিস্তর সম্পদ ও বিত্তের অধিকারী ছিলেন না সেহেতু এ ধরনের দুর্ভিক্ষের সময় তাঁর আর্থিক অবস্থা সংকটজনক হয়ে পড়লে মহানবী (সা.) চাচা আব্বাসের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলেন যে,হযরত আবু তালিবের আর্থিক সংকট ও অসচ্ছলতা কিছুটা লাঘব করার জন্য তাঁরা তাঁর কতিপয় সন্তানকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে প্রতিপালন করবেন। যার ফলে তাঁরা আবু তালিবের সাংসারিক খরচ ও ব্যয় নির্বাহ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে সক্ষম হবেন। এ সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতিতে মহানবী (সা.) আলীকে এবং আব্বাস জাফরকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসেন। 226

এ ধরনের পরিস্থিতিতে অবশ্যই বলতে হয় যে,যখন হযরত আলী (আ.) মহানবী (সা.)-এর গৃহে আসলেন তখন তাঁর বয়স 8 বছরের চেয়ে কম ছিল না। কারণ হযরত আলীকে নিয়ে যাবার উদ্দেশ্য ছিল মক্কা নগরীর প্রধান হযরত আবু তালিবের সংসারে সচ্ছলতা আনয়ন। আর যে শিশুর বয়স 8 বছরেরও কম তাকে তার পিতা-মাতা থেকে পৃথক করা খুবই কঠিন কাজ। এ ছাড়াও হযরত আবু তালিবের জীবনে এ ধরনের শিশু ততটা প্রভাব রাখবে না।

অতএব,হযরত আলী (আ.)-এর বয়সের ব্যাপারে আমাদের অবশ্যই এমনভাবে চিন্তা করা উচিত যে,তাঁকে নিয়ে যাওয়ার ফলে হযরত আবু তালিবের জীবনে লক্ষণীয় প্রভাব পড়ে। তাই এমতাবস্থায় কিভাবে বলা সম্ভব যে,যায়েদ ইবনে হারিসা ও অন্য ব্যক্তিবর্গ ওহীর গুপ্তভেদ ও রহস্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন,অথচ তাঁরই পিতৃব্যপুত্র যিনি ছিলেন অন্য সকলের চেয়ে তাঁর সবচেয়ে নিকটবর্তী এবং সর্বদা তাঁরই সাথে থেকেছেন তিনি মহানবী (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ ঐশী রহস্যাবলী সম্পর্কে অজ্ঞ থাকবেন?!

হযরত আলীকে প্রতিপালন করার উদ্দেশ্য ছিল তাঁর প্রতি চাচা হযরত আবু তালিবের খেদমত ও অবদান একটি পর্যায় পর্যন্ত পূরণ করা। কোন ব্যক্তিকে সুপথে পরিচালিত করার চেয়ে আর কোন কাজ বা বিষয় মহানবী (সা.)-এর কাছে এত বেশি প্রিয় ও মর্যাদাসম্পন্ন ছিল না। এতদ্সত্ত্বেও এ কথা কিভাবে বলা সম্ভব যে,মহানবী (সা.) নিজ চাচাত ভাই যিনি ছিলেন আলোকিত মন ও হৃদয় এবং বিবেক-বুদ্ধির অধিকারী তাঁকে এ বিরাট নেয়ামত থেকে বঞ্চিত করবেন? স্বয়ং আলী (আ.)-এর বাণী থেকেই এ কথা শোনা উত্তম :

وقد علمتم موضعي من رسول الله بالقرابة القريبة والمنزلةِ الخصيصةِ وضعني في حجره وأنا وليدٌ يضمُّني إلى صدره ويكنفني في فراشهِ ويمسُّني جسدَه ويُشِمُّني عرفَه ولقد كنتُ أتَّبِعُه اتّباع الفصيل أثر أمِّه، يرفع لي في كلِّ يومٍ من أخلاقه علماً ويأمرني بالإقتداءِ به، ولقد كان يجاورُ في كلِّ سنةٍ بِحراءَ فأراه لا يراه غيري، ولم يحمعْ بيتٌ واحدٌ يومئذٍ في الإسلامِ غيرَ رسولِ اللهِ وخديجةَ وأنا ثالثهما! أرى نورَ الوحْيِ والرِّسالةَ وأشُمُّ ريحَ النُّبُوَّةِ ...

“আর তোমরা সবাই রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর কাছে আমার নিকটাত্মীয়তা জনিত অবস্থান এবং বিশেষ মর্যাদার কথা জান;আমি যখন শিশু তখন তিনি আমাকে তাঁর কোলে বসাতেন। তিনি আমাকে তাঁর বুকে টেনে নিতেন এবং তাঁর বিছানায় আমাকে শোয়াতেন। তাঁর দেহ তখন আমার দেহে স্পর্শ করত;তিনি আমাকে তাঁর দেহের সুঘ্রাণ নেওয়াতেন;... যেমন করে উট-শাবক তার মাকে অনুসরণ করে ঠিক তেমনি আমিও তাঁকে অনুসরণ করতাম;তিনি আমাকে প্রতিদিন তাঁর (মার্জিত) চারিত্রিক গুণাবলী থেকে একটি নিদর্শন আমার সামনে উপস্থাপন করতেন এবং আমাকে তা অনুসরণ করার আদেশ দিতেন। তিনি প্রতি বছর হিরা গুহায় নির্জনে বাস করতেন;অতঃপর আমি তাঁকে দেখতাম এবং আমি ব্যতীত তাঁকে অন্য কোন ব্যক্তি প্রত্যক্ষ করত না। তখন (ওহী অবতীর্ণ হওয়ার পরবর্তী দিনগুলোতে) রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ও খাদীজাহ্ (আ.)-এর পরিবার ছাড়া ইসলামে বিশ্বাসী আর কোন পরিবার ছিল না;আর আমি ছিলাম তাঁদের (পরিবারের) তৃতীয় সদস্য। আমি ওহী ও রিসালাতের আলো প্রত্যক্ষ করি এবং নবুওয়াতের সুঘ্রাণ পাই...। 227

2. আলী ও খাদীজাহ্ মহানবীর সাথে নামায পড়তেন

ইবনে আসীর উস্দুল গাবা য়,ইবনে হাজর আল-ইসাবা য় আফীফ কিন্দীর জীবন বৃত্তান্তে এবং বহু ঐতিহাসিক তাঁর (আফীফ) থেকে নিম্নোক্ত ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন : একবার জাহেলিয়াতের যুগে আমি পবিত্র মক্কা নগরীতে প্রবেশ করে হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের আতিথেয়তা গ্রহণ করলাম। আমরা দু জন পবিত্র কাবার পাশে ছিলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম একজন পুরুষ আসল এবং পবিত্র কাবামুখী হয়ে দাঁড়াল;এরপর একটি ছেলেকে দেখলাম-যে এসে ঐ লোকটির ডানপাশে দাঁড়াল। এর পরপরই একজন মহিলাকে দেখলাম যে এসে এদের পেছনে দাঁড়াল। আমি দেখলাম যে,এ দু ব্যক্তি (ছেলেটি ও স্ত্রীলোকটি) ঐ লোকটিকে অনুসরণ করে রুকু ও সিজদাহ্ করছে। এ অভূতপূর্ব দৃশ্য আমাকে অনুসন্ধান করতে উদ্বুদ্ধ করল। তাই আমি আব্বাসকে ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে বলেছিলেন : ঐ লোকটি মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ্;ঐ ছেলেটি তার পিতৃব্যপুত্র এবং ঐ স্ত্রীলোকটি যে এদের দু জনের পেছনে দাঁড়িয়েছিল সে মুহাম্মদের স্ত্রী। অতঃপর তিনি বললেন : আমার ভাতিজা (মুহাম্মদ) বলে : এমন একদিন আসবে যে দিন পারস্যসম্রাট খসরু ও রোমানসম্রাট কায়সারের সকল ধনভাণ্ডার তার করায়ত্তে আসবে। তবে মহান আল্লাহর শপথ! একমাত্র এ তিনজন ব্যতীত পৃথিবীর বুকে এ ধর্মের আর কোন অনুসারী নেই। এরপর রাবী বলেন, আমিও আশা করছিলাম যে,হায় যদি আমি তাদের চতুর্থ ব্যক্তি হতাম।”

এমনকি যে সব ব্যক্তি হযরত আলী (আ.)-এর গুণ বর্ণনা করার ক্ষেত্রে অবহেলা প্রদর্শন করেছেন তাঁরাও উপরিউক্ত ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন। আগ্রহী পাঠকবর্গ উপরিউক্ত ঘটনা বিস্তারিত জানার জন্য নিম্নোক্ত গ্রন্থগুলো অধ্যয়ন করতে পারেন।228