চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড0%

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড লেখক:
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ: হযরত মোহাম্মদ (সা.)

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

লেখক: আয়াতুল্লাহ্ জাফার সুবহানী
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ:

ভিজিট: 103687
ডাউনলোড: 9120


পাঠকের মতামত:

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 242 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 103687 / ডাউনলোড: 9120
সাইজ সাইজ সাইজ
চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

লেখক:
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বাংলা

নবুওয়াত ও ইমামত পরস্পর নিত্যসঙ্গী

রিসালাতের সূচনালগ্নেই হযরত আলী (আ.)-এর স্থলাভিষিক্ত ও নেতৃত্বের ঘোষণা থেকে প্রমাণিত হয় যে,এ দু টি পদ পরস্পর বিচ্ছিন্ন ও আলাদা নয়। যে দিন মহানবী (সা.) জনগণের কাছে নবী হিসাবে পরিচিত হলেন তাঁর স্থলাভিষিক্ত-প্রতিনিধিও সে দিনই মনোনীত ও ঘোষিত হলেন। আর স্বয়ং এ ঘটনাটি থেকে প্রমাণিত হয় যে,নবুওয়াত ও ইমামতের মূল ভিত্তি আসলে একই জিনিস। আর এ দু টি ঐশী পদ শিকলের বলয়ের মতো পরস্পর যুক্ত এবং এতদুভয়ের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই।

এ ঘটনা থেকে হযরত আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.)-এর আত্মিক সাহস অত্যন্ত স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়ে যায়। কারণ যে সভায় অভিজ্ঞ বৃদ্ধ ও বয়স্ক নেতৃবর্গ গভীর চিন্তামগ্ন এবং উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিল সেই সভায় তিনি পূর্ণ সাহসিকতার সাথে পৃষ্ঠপোষকতা ও আত্মত্যাগ করার বিষয়টি ঘোষণা করেন এবং রক্ষণশীল ও পরিণতির ব্যাপারে চিন্তাশীল রাজনীতিবিদদের পথ অনুসরণ না করেই মহানবী (সা.)-এর শত্রুদের সাথে তাঁর নিজ শত্রুতার কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন। যদিও হযরত আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.) ঐ সভায় উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে বয়সের দিক থেকে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন তবুও দীর্ঘদিন ধরে মহানবীর সাথে তাঁর সম্পর্ক ও চলাফেরার কারণে তাঁর অন্তঃকরণ ঐ সব সত্য ও বাস্তবতা মেনে নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল যেগুলো মেনে নেবার ব্যাপারে গোত্রের বয়ঃবৃদ্ধগণ সন্দিহান ছিল।

আবু জাফর ইসকাফী এ ঘটনার ব্যাপারে যথার্থ কথা বলেছেন। সম্মানিত পাঠকবর্গকে নাহজুল বালাগার নতুন ব্যাখ্যাগ্রন্থ পাঠ করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।249

পঞ্চদশ অধ্যায় : প্রকাশ্যে দাওয়াত

মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতের দায়িত্ব পাবার তিন বছর অতিবাহিত হলে নিকটাত্মীয়দের (বনি হাশিম) কাছে ইসলাম ধর্মের দাওয়াত দেয়ার পর তিনি সর্বসাধারণের কাছে ইসলামের দাওয়াত প্রদান ও প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি তিন বছর ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে একদল লোককে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করেছিলেন। তবে এবার তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে সাধারণ জনতাকে একত্ববাদী ধর্মের দিকে আহবান করেন। একদিন তিনি সাফা পাহাড়ের পাশে একটি উঁচু পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে উচ্চকণ্ঠে বললেন,يا صباحاه ইয়া সাবাহাহ্! (আরবরা বিপদঘণ্টার স্থলে এ শব্দটি ব্যবহার করত এবং কোন ভয়ঙ্কর লোমহর্ষক সংবাদ তারা মূলত সর্বপ্রথম এ শব্দটি বলার মাধ্যমেই শুরু করত)

মহানবী (সা.)-এর আহবান সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করল। বিভিন্ন কুরাইশ গোত্র থেকে একদল লোক তাঁর দিকে ছুটে গেল। এরপর মহানবী (সা.) তাদের দিকে মুখ করে বললেন, হে জনতা! আমি যদি তোমাদেরকে বলি,এ পাহাড়ের পেছনে তোমাদের শত্রুরা অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং তোমাদের জান ও মালের ওপর আক্রমণ করতে চায়,তাহলে কি তোমরা আমার এ কথা বিশ্বাস করবে? তখন সবাই বলেছিল, হ্যাঁ,কারণ আমরা কখনই তোমাকে মিথ্যা কথা বলতে দেখি নি। এরপর তিনি বললেন, হে কুরাইশ গোত্র! নিজেদেরকে তোমরা দোযখের আগুন থেকে বাঁচাও। কারণ আমি মহাপ্রভু আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারব না। আমি তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যাপারে ভয় প্রদর্শন করছি। এরপর তিনি বললেন, আমার অবস্থান ও দায়িত্ব হচ্ছে ঐ পর্যবেক্ষণকারীর অবস্থান ও দায়িত্বেরই অনুরূপ যে দূর থেকে শত্রুদের দেখে তৎক্ষণাৎ নিজ সম্প্রদায়কে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য তাদের দিকে দ্রূত ছুটে যায় এবংيا صباحاه -এ বিশেষ ধ্বনি তুলে তাদেরকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করে। 250

কুরাইশরা মহানবী (সা.)-এর ধর্ম সম্পর্কে কম-বেশি অবগত ছিল। তাই তারা এ কথা শোনার পর এতটা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে গিয়েছিল যে,কুফর ও শিরকের এক নেতা (আবু লাহাব) পীনপতন নীরবতা ভেঙ্গে মহানবীকে লক্ষ্য করে বলেই বসল, তোমার জন্য আক্ষেপ! তুমি কি আমাদেরকে এ কাজের জন্যই আহবান করেছ? এরপর জনগণ সেখান থেকে চলে গেল।

লক্ষ্য অর্জনের পথে দৃঢ়তা

প্রত্যেক ব্যক্তির সাফল্য কেবল দু টি শর্ত সাপেক্ষে অর্জিত হয়। শর্তদ্বয় নিম্নরূপ :

. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস;

. উক্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দৃঢ়তা,অবিচলতা ও প্রচেষ্টা।

ঈমান হচ্ছে মানুষের চালিকাশক্তি যা তাকে তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যস্থলের দিকে পরিচালিত করে এবং যে কোন ধরনের কঠিন সমস্যাকেই তার কাছে সহজ করে তোলে। এই ঈমান দিবারাত্র তাকে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের দিকেই আহবান করতে থাকে। কারণ এ ধরনের ব্যক্তিই কেবল দৃঢ় আস্থা পোষণ করে যে,তার সৌভাগ্য,সফলতা এবং সুপরিণতি কেবল উক্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথেই জড়িত। আরেকভাবে বলা যায় যে,যখনই কোন ব্যক্তির বিশ্বাস হবে যে,নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্যের ওপরই কাঙ্ক্ষিত সৌভাগ্য নির্ভর করছে তখনই স্বাভাবিক ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার এ ঈমানী শক্তি তাকে তার সমুদয় সমস্যা থাকা সত্ত্বেও উক্ত লক্ষ্যের দিকেই টেনে নিয়ে যাবে। উদাহরণস্বরূপ অসুস্থ রোগী যদি জানতে পারে যে,তার রোগমুক্তি বা আরোগ্য তিতা ঔষধ খাওয়ার ওপর নির্ভরশীল তাহলে সে ঐ ঔষধটি খুব সহজেই খেয়ে নেবে। যদি কোন ডুবুরির জানা থাকে যে সমুদ্রগর্ভে অনেক মূল্যবান মণিমুক্তা ও জহরত বিদ্যমান রয়েছে,তাহলে সে ইতস্তত না করেই সমুদ্রের উত্তাল তরঙ্গমালার মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়বে এবং কয়েক মিনিট পরেই সে সাফল্যের সাথে তরঙ্গমালা ভেদ করে তীরে উঠে আসবে।

আর রোগী ও ডুবুরির যদি তাদের কাজের ব্যাপারে সন্দেহ থাকে অথবা যদি তারা তাদের কাজের সাফল্যের ব্যাপারে মোটেও আস্থাবান না হয়,তাহলে হয় তারা কোন কার্যকরী পদক্ষেপ ও উদ্যোগ একদম গ্রহণ করবে না অথবা যদি তারা কোন পদক্ষেপ নেয়ও তাহলে তারা এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত কষ্টের সম্মুখীন হবে। সুতরাং আসলে মানুষের মধ্যকার আত্মিক ও ঈমানী শক্তিই সকল কঠিন সমস্যা ও জটিলতাকে সহজসাধ্য করে দেয়।

তবে এতে কোন সন্দেহ নেই যে,লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা ও জটিলতা থাকতেই পারে। তাই বাধা-বিপত্তি দূর করার জন্য চেষ্টা ও পরিশ্রম করা উচিত। প্রাচীনকাল থেকে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে : যেখানেই কোন ফুল থাকবে সেখানেই কাঁটাও থাকবে । তাই এমনভাবে ফুল তুলতে হবে যাতে করে মানুষের হাত ও পায়ে কাঁটা ফুটে না যায়। কবির ভাষায় :

এ মনোরম পুষ্পোদ্যানে নেই এমন কোন ফুল

যে তা তুলতে গিয়ে চয়নকারী হয় নি কাঁটাবিদ্ধ।

পবিত্র কোরআন এ বিষয়টি (অর্থাৎ বিশ্বাস এবং তা অর্জনের পথে দৃঢ়তাই হচ্ছে সাফল্যের চাবিকাঠি) একটি ছোট বাক্যের মাধ্যমে ব্যক্ত করেছে। আয়াতটি নিম্নরূপ :

) إنّ الذّين قالوا ربّنا لله ثمّ استقاموا تتنَزّل عليهم الملائكة ألّا تخافوا و لا تحزنوا و أبشروا بالجنّة التي كنتم توعدون(

“যারা বলেছে : আমাদের প্রভু মহান আল্লাহ,অতঃপর এ কথার ওপর (এ পথে) দৃঢ়পদ থাকে,তাদের ওপর ফেরেশতাকুল অবতীর্ণ হয়ে বলতে থাকে : তোমরা ভয় পেয়ো না ও দুঃখ করো না,বরং তোমাদের কাছে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সে ব্যাপারে তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ (কর) ও আনন্দিত হও। (সূরা ফুসসিলাত : 10)

মহানবী (সা.)-এর ধৈর্য ও দৃঢ়তা

সাধারণ জনতাকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার পূর্বে মহানবী (সা.)-এর ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং সাধারণ আহবান জানানোর পর তাঁর নিরলস কর্মতৎপরতার কারণে কাফির-মুশরিকদের মোকাবিলায় মুসলমানদের একটি নিবিড় শ্রেণী সৃষ্টি হয়েছিল;যারা সর্বসাধারণ আহবান জানানোর পূর্বেই গোপনে ঈমান ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল তারা ঐ সকল নব্য মুসলমান যারা নবুওয়াতের সাধারণ ঘোষণা দেয়ার পর মহানবীর আহবানে সাড়া দিয়েছিল তাদের সাথে পূর্ণরূপে পরিচিত হয় এবং এ কারণেই মক্কার কাফির ও মুশরিকদের সকল মহলে বিপদ-ঘণ্টা বেজে উঠল। অবশ্য শক্তিশালী ও সুসজ্জিত কুরাইশদের পক্ষে একটি নব প্রতিষ্ঠিত আন্দোলন দমন করা ছিল অতি সহজ বিষয়।

কিন্তু এ আন্দোলনের সকল সদস্য একই গোত্রভুক্ত না হওয়াই ছিল কুরাইশদের ভয়ের কারণ যাতে তারা সকল শক্তি প্রয়োগ করে তাদের গুঁড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করবে,প্রতিটি গোত্র থেকেই কিছু কিছু ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। তাই এ ধরনের গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের ব্যাপারে সুস্পষ্ট ও কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাটিই ছিল তাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার।

অবশেষে কুরাইশ গোত্রপতি ও নেতৃবৃন্দ আলোচনা ও পরামর্শের পর নব প্রতিষ্ঠিত এ মতাদর্শের মূল ভিত ও প্রতিষ্ঠাতাকে বিভিন্ন উপায়ে নির্মূল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কখনো কখনো লোভ দেখিয়ে এবং বিভিন্ন প্রকার অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দেয়ার মাধ্যমে তাঁকে ইসলাম প্রচার কার্যক্রম থেকে বিরত রাখবে। আর তারা কখনো কখনো হুমকি,ভয়-প্রদর্শন এবং কষ্ট ও যাতনা দিয়ে তাঁর ধর্ম প্রচার ও প্রসারের পথ রুদ্ধ করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এটিই ছিল কুরাইশদের দশসালা পরিকল্পনা। অবশেষে কুরাইশ গোত্র তাঁকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর মদীনায় তাঁর হিজরত করার মাধ্যমে ইসলামের শত্রুদের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র সব ভণ্ডুল হয়ে যায়।

ঐ সময় বনি হাশিম গোত্রের নেতা ছিলেন আবু তালিব। তিনি ছিলেন পূতঃপবিত্র চিত্তের অধিকারী এবং অত্যন্ত সাহসী। তাঁর গৃহ ছিল সমাজের আশ্রয়হীন,নিপীড়িত ও অনাথদের আশ্রয়স্থল। মক্কার প্রধানের দায়িত্ব এবং কাবার কতকগুলো পদ ছাড়াও তদানীন্তন আরব সমাজে তাঁর বিরাট মর্যাদা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল। আবদুল মুত্তালিবের মৃত্যুর পর যেহেতু শিশু মহানবী (সা.)-এর দেখাশুনা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব তাঁর ওপর ন্যস্ত ছিল তাই কুরাইশ নেতৃবর্গ251 একত্রে তাঁর কাছে আগমন করে তাঁকে নিম্নোক্ত ভাষায় সম্বোধন করে বলেছিল :

“হে আবু তালিব! আপনার ভ্রাতুষ্পুত্র আমাদের উপাস্য ও দেব-দেবীদেরকে গালি দিয়েছে। সে আমাদের ধর্মের বিরূপ সমলোচনা করেছে এবং আমাদের চিন্তাধারা ও আকীদা-বিশ্বাস নিয়ে উপহাস করেছে। সে আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে বিচ্যুত ও গোমরাহ্ বলেছে। হয় তাকে আপনি আমাদের ওপর থেকে তার হাত গুটিয়ে নেয়ার আদেশ দিন নতুবা তাকে আমাদের হাতে অর্পণ করুন এবং তাকে সাহায্য করা থেকে আপনি বিরত থাকুন। 252

কুরাইশপ্রধান ও বনি হাশিম গোত্রপতি আবু তালিব এক বিশেষ বিচক্ষণতার সাথে তাদের সাথে কথা বললেন এবং তাদেরকে এমনভাবে নমনীয় করলেন যে,তারা তাদের পশ্চাদ্ধাবন করা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু ইসলাম ধর্মের প্রভাব ও প্রসার দিনের পর দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। মহানবী (সা.)-এর ধর্মের আধ্যাত্মিক আকর্ষণশক্তি,তাঁর আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গি ও ভাষা এবং বলিষ্ঠ,সাবলীল এবং বাক্যালংকারসম্দ্ধৃ পবিত্র কোরআন এ ধর্ম প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে নিষিদ্ধ মাসগুলোতে যখন পবিত্র মক্কায় আরবের বিভিন্ন জায়গা ও জনপদ থেকে হাজিগণের আগমন হতো তখন হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাদের কাছে তাঁর আনীত ধর্ম উপস্থাপন করতেন। তাঁর বলিষ্ঠ,সাবলীল ও মধুর ভাষা এবং হৃদয়গ্রাহী ধর্ম অনেক মানুষের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করেছিল। এহেন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই মক্কার ফিরআউনেরা বুঝতে পারল যে,হযরত মুহাম্মদ (সা.) সকল গোত্রের হৃদয় জুড়ে নিজের অবস্থান গড়ে তুলেছেন এবং আরবের অনেক গোত্রের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনুসারী ও সমর্থক খুঁজে পেয়েছেন। তারা আবার মহানবী (সা.)-এর একমাত্র সাহায্যকারী ও পৃষ্ঠপোষকের অর্থাৎ আবু তালিবের কাছে উপস্থিত হয়ে ইশারা-ইঙ্গিতে ও স্পষ্ট ভাষায় মক্কাবাসীদের স্বাধীনতা এবং তাদের ধর্মের ওপর ইসলামের আধিপত্যের বিপদ সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ কারণেই তারা আবার দলবেঁধে একসাথে হযরত আবু তালিবের কাছে গেল এবং তাদের সেই পুরানো বক্তব্য পুনরায় ব্যক্ত করল :

يا أبا طالب إنّ لك سنّا و شرفا و إنّا قد استنهيناك ان تنهى ابن أخيك فلم تفعل و إنّا و الله لا نصبر على هذا من شتم آلهتنا و آباءنا  سفّه احلامنا حتّى تكفه عنّا أو ننازله و إيّاك في ذلك حتّى يهلك أحد الفريقين

“হে আবু তালিব! কৌলীন্য ও বয়সের দিক থেকে আপনি আমাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। কিন্তু আমরা আপনাকে পূর্বেই বলেছিলাম যে,আপনার ভাতিজাকে নতুন ধর্ম প্রচার করা থেকে বিরত রাখবেন,কিন্তু দুঃখের বিষয় আপনি আমাদের কথায় কর্ণপাত করেন নি। এখন আমাদের ধৈর্যের সকল বাঁধ ভেঙ্গে গেছে এবং যখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে,এক ব্যক্তি আমাদের উপাস্য ও দেব-দেবীর ব্যাপারে কটুক্তি করছে এবং আমাদেরকে বিবেক-বুদ্ধিহীন এবং আমাদের চিন্তা-চেতনাকে হীন ও নীচ মনে করছে তখন আমরা এর চেয়ে বেশি আর সহ্য করব না। আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে তাকে সব ধরনের কর্মতৎপরতা থেকে বিরত রাখা। আর যদি তা না করেন তাহলে তার ও আপনার বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করব কারণ আপনি তার একমাত্র সাহায্যকারী ও পৃষ্ঠপোষক। আর যতক্ষণ পর্যন্ত উভয় দলের (আমরা এবং আপনি ও মুহাম্মদ) অবস্থা সুস্পষ্ট না হবে এবং এ দলদ্বয়ের মধ্য থেকে যে কোন একটি ধ্বংস না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার ও মুহাম্মদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ ও প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে।”

মহানবী (সা.)-এর একমাত্র সাহায্যকারী ও পৃষ্ঠপোষক তাঁর পূর্ণ বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা দিয়ে বুঝতে পারলেন যে,যে গোষ্ঠীটির অস্তিত্ব ও স্বার্থ বিপন্ন হয়েছে তাদের সামনে অবশ্যই ধৈর্যাবলম্বন করা উচিত। এজন্য এদের সাথে শান্তভাবে বুঝিয়ে শুনিয়ে কথা বলা এবং প্রতিশ্রুতি দেয়া উচিত যে,তিনি কুরাইশ নেতৃবৃন্দের বক্তব্য তাঁর ভাতিজার কাছে পৌঁছে দেবেন। অবশ্য এ ধরনের উত্তর ঐ সকল ক্রুদ্ধ ব্যক্তির ক্রোধাগ্নি নির্বাপণ করার জন্যই তিনি বলেছিলেন যাতে করে পরে সমস্যা সমাধানের জন্য অপেক্ষাকৃত সঠিক পথ অবলম্বন করা সম্ভব হয়। এ কারণেই কুরাইশ নেতৃবর্গ চলে গেলে তিনি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাদের বক্তব্য পৌঁছে দেন এবং ইত্যবসরে তিনি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি নিজ ভ্রাতুষ্পুত্রের ঈমান ও আস্থা পরীক্ষা করার লক্ষ্যে তাঁর উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। মহানবী (সা.) উত্তর দিতে গিয়ে এমন একটি কথা বলেছিলেন যা তাঁর জীবনেতিহাসের সবচেয়ে লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হিসাবে গণ্য  হয়েছে। তাঁর উত্তরটি ছিল নিম্নরূপ :

و الله يا عمّاه لو وضعوا الشّمس في يميني و القمر في شمالي على أن أترك هذا الأمر حتّى يُظهره الله أو اهلك فيه ما تركته

“হে পিতৃব্য! মহান আল্লাহর শপথ,যদি আমার ডান হাতে সূর্য এবং বাম হাতে চন্দ্র স্থাপন করা হয় (অর্থাৎ সমগ্র বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডের বাদশাহীও যদি আমার কাছে অর্পণ করা হয়) এ শর্তে যে,আমি ইসলাম ধর্ম প্রচার এবং আমার লক্ষ্য অর্জন করা থেকে বিরত থাকব,তবুও আমার লক্ষ্য অর্জন করা থেকে বিরত থাকব না। মহান আল্লাহ্ এ ধর্মকে বিজয়ী করা পর্যন্ত অথবা এ পথে আমার প্রাণ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত আমি কখনই এ কাজ থেকে বিরত থাকব না।”

এরপর স্বীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রতি আগ্রহ ও মহব্বতের অশ্রু তার চোখে দেখা গেল এবং পিতৃব্য আবু তালেবের কাছ থেকে তিনি উঠে চলে গেলেন। মহানবীর প্রভাব বিস্তারকারী ও আকর্ষণীয় বাণী মক্কাপ্রধান আবু তালিবের অন্তরে এতটা বিস্ময়কর প্রভাব রেখেছিল যে,স্বতঃস্ফূর্তভাবে এবং শত বিপদ থাকা সত্ত্বেও তিনি ভ্রাতুষ্পুত্র হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, মহান আল্লাহর শপথ,আমি কখনই তোমাকে সাহায্য করা থেকে বিরত থাকব না এবং এ ক্ষেত্রে তোমার যে দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে তা তুমি আঞ্জাম দাও। 253

তৃতীয় বারের মতো কুরাইশ গোত্রের আবু তালিবের কাছে গমন

ইসলাম ধর্মের উত্তরোত্তর প্রচার ও প্রসার কুরাইশ গোত্রকে চিন্তিত করে তোলে এবং এ থেকে উদ্ধার পাওয়ার পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে থাকে। তারা পুনরায় একত্র হয়ে বলল, যেহেতু আবু তালিব মুহাম্মদকে সন্তান হিসাবে গ্রহণ করেছেন তাই তিনি তাকে সাহায্য করছেন। এমতাবস্থায় সবচেয়ে সুন্দর একটি যুবক তার কাছে নিয়ে গিয়ে আমরা তাঁকে বলতে পারি যে,তিনি যেন ঐ যুবককে পুত্র হিসাবে গ্রহণ করেন। এ বিষয়টি বিবেচনা করে তারা আম্মারাহ্ ইবনে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরাকে তাদের নিজেদের সাথে নিয়ে গেল। এই আম্মারাহ্ ইবনে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরাহ্ ছিল মক্কার সবচেয়ে সুদর্শন যুবকদের একজন। তারা হযরত আবু তালিবের কাছে তৃতীয়বাবের মতো অভিযোগ করে বলল, হে আবু তালিব! ওয়ালীদপুত্র একজন কবি,বাগ্মী,সুদর্শন ও বুদ্ধিমান যুবক। আমরা তাকে আপনার কাছে সোপর্দ করতে রাজি আছি এক শর্তে,আর তা হলো যে,আপনি তাকে সন্তান হিসাবে গ্রহণ করবেন এবং আপনার নিজ ভাতিজার প্রতি সমর্থন ও তাকে সাহায্য করা থেকে বিরত থাকবেন। এ কথা শোনার পর আবু তালিবের শিরা-উপশিরা ও ধমনীতে আত্মমর্যাদাবোধের রক্ত প্রবাহিত হতে লাগল। তিনি অত্যন্ত উজ্জ্বল বদনমণ্ডলে তাদের কাছে উচ্চৈঃস্বরে বলে উঠলেন, তোমরা আমার সাথে একটি জঘন্য লেনদেন করতে চাইছ। আমি তোমাদের সন্তানকে আমার সান্নিধ্যে প্রতিপালন করব। আর আমার সন্তান ও কলিজার টুকরাকে তোমাদের হাতে তুলে দেব যাতে করে তোমরা তাকে হত্যা করতে সক্ষম হও? মহান আল্লাহর শপথ,এটি কখনই বাস্তবায়িত হবে না। 254 মুতইম বিন আদি ইত্যবসরে দাঁড়িয়ে বলল, কুরাইশদের প্রস্তাব আসলে খুবই ন্যায়ভিত্তিকই ছিল,তবে আপনি কখনই তা মেনে নেবেন না। আবু তালিব তখন বললেন, তুমি কখনই ইনসাফপূর্ণ আচরণ কর নি। আর আমি নিশ্চিতভাবে জানি,তুমি আমার অপদস্থ হওয়াটিই কামনা করছ এবং কুরাইশদেরকে আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছ। তবে তোমার যা করার ক্ষমতা আছে তা করো তো দেখি।”

মহানবী (সা.)-কে কুরাইশদের প্রলোভন

কুরাইশগণ নিশ্চিত হতে পেরেছিল যে,তারা কখনই আবু তালিবের সন্তুষ্টি ও সম্মতি অর্জন করতে পারবে না। তবে তিনি গোপনে তাঁর নিজ ভাতিজার প্রতি এক অপরিসীম ভালোবাসা ও বিশ্বাস পোষণ করতেন। এজন্য তারা (কুরাইশ) সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল যে,তারা তাঁর সাথে যে কোন ধরনের আলোচনা করা থেকে বিরত থাকবে। তবে আরেকটি পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র তাদের মাথায় খেলে গেল। আর তা হলো হযরত মুহাম্মদ (সা.) যাতে করে তাঁর ইসলাম প্রচার কার্যক্রম থেকে হাত গুটিয়ে নেন সেজন্য তারা তাঁকে উচ্চ সামাজিক পদমর্যাদা ও বিস্তর ধন-সম্পদের প্রস্তাব,মূল্যবান উপঢৌকন এবং অনিন্দ্য সুন্দরী রমণী প্রদানের প্রলোভন দেখাবে। তাই তারা সদলবলে আবু তালিবের ঘরের দিকে গমন করল। ঐ সময় হযরত মুহাম্মদ (সা.) চাচার পাশেই বসা ছিলেন। কুরাইশ নেতৃবর্গের মুখপাত্র আবু তালিবকে লক্ষ্য করে কথা বলা শুরু করল, হে আবু তালিব! মুহাম্মদ আমাদের ঐক্যবদ্ধ কুরাইশ গোত্রকে বিভক্ত করে ফেলেছে এবং আমাদের মাঝে অনৈক্যের বীজ বপন করেছে। সে আমাদের বিবেক-বুদ্ধি নিয়ে হাসাহাসি করেছে এবং আমাদেরকে ও আমাদের প্রতিমাদেরকে বিদ্রূপ করেছে। যদি তার এ ধরনের কাজ করার কারণ তার অভাব,দারিদ্র্য ও কপর্দকহীনতাই হয়ে থাকে তাহলে আমরা তাকে বিস্তর ধনসম্পদ তার হাতে প্রদান করব। আর তার এ কাজ করার কারণ যদি উচ্চ সামাজিক মর্যাদা লাভ করার আকাঙ্ক্ষা হয়ে থাকে তাহলে আমরা তাকে আমাদের নেতা ও অধিপতি করব। আমরা তখন তার কথা শুনব। আর যদি সে অসুস্থ হয়ে থাকে এবং তার সুচিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা তার সুচিকিৎসার জন্য সবচেয়ে দক্ষ চিকিৎসক আনব।...

আবু তালিব তখন হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দিকে মুখ ফিরিয়ে বললেন, তোমার সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এসেছে এবং তোমাকে অনুরোধ করে বলেছে,তুমি প্রতিমাসমূহের বিরুদ্ধে মন্দ বলা ও কটুক্তি করা থেকে বিরত থাক,তাহলে তারাও তোমাকে ছেড়ে দেবে। এ কথা শোনার পর মহানবী (সা.) চাচা আবু তালিবকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি তাদের কাছ থেকে কিছুই চাই না। আর এ চারটি প্রস্তাবের মধ্যে অন্তত আমার একটি কথা তো তারা গ্রহণ করতে পারে,তাহলে তারা এর ফলে সমগ্র আরব জাতির ওপর কর্তৃত্ব করতে পারবে এবং অনারবগণকেও তাদের আজ্ঞাবহ করতে পারবে। 255 ঐ সময় আবু জাহল নিজের স্থান ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,‘‘ আমরা তোমার দশটি কথা শুনতে আগ্রহী। তখন হযরত মুহাম্মদ (সা.) বললেন,‘‘ আমার বক্তব্য একটিই। আর তা হলো : তোমরা সবাই সাক্ষ্য দেবে যে,মহান আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই। 256 মহানবী (সা.)-এর অপ্রত্যাশিত এ বক্তব্য ঠাণ্ডা পানির মতোই ছিল যা তাদের তপ্ত ও উষ্ণ আশার ওপর পতিত হলো। প্রচণ্ড বিস্ময়,নীরবতা এবং একই সাথে হতাশা ও নিরাশা তাদের সমগ্র অস্তিত্বকে এতটাই আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল যে,তারা অনিচ্ছাকৃতভাবে বলেই ফেলল, আমরা 360 ইলাহকে বাদ দিয়ে কেবল এক ইলাহর উপাসনা করব? 257

এ কথা শুনে কুরাইশদের চোখে ও মুখে ক্রোধের অগ্নিশিখা প্রজ্বলিত হয়ে উঠল।258 তারা হযরত আবু তালিবের ঘর থেকে বের হয়ে গেল। সে সময় তারা তাদের কৃতকর্মের পরিণতির ব্যাপারে গভীরভাবে চিন্তা করতে লাগল। নিচের আয়াতগুলো এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয়েছিল :

) وعحبوا ان جاءهم منذر منهم و قال الكافرون هذا ساحر كذّاب-أجعل الآلهة إلها واحذا إنّ هذا لشيء عجاب و انطلق الملأ منهم ان امشوا واصبروا على آلهتكم إنّ هذا لشيء يراد-ما سمعنا بهذا في الملة الآخرة إن هذا إلّا اختلاق(

“তারা এ ব্যাপারে আশ্চর্যান্বিত হয়েছে যে,তাদের মধ্য থেকেই একজন ভয়প্রদর্শনকারী এসেছে। আর কাফিররা বলেছে : এ (এই ভয় প্রদর্শনকারী) অতি মিথ্যাবাদী যাদুকর। সে কিভাবে বহু উপাস্য ও খোদাকে এক উপাস্য করে ফেলেছে,আর এটি তো অত্যন্ত আশ্চর্যজনক বিষয়। তাদের (কাফির-মুশরিকদের) নেতৃবর্গ উঠে প্রস্থান করল এবং বলছিল : চলে যাও এবং তোমাদের নিজেদের উপাস্যদের পূজা ও উপাসনার ওপর দৃঢ়তার সাথে বহাল থাক। আর এটিই হচ্ছে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত পথ ও কাজ। আমরা অন্য কোন জাতি থেকে এ ধরনের কথা কখনই শুনি নি,আর এটি মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। (সূরা সাদ : 4-7)