চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড0%

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড লেখক:
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ: হযরত মোহাম্মদ (সা.)

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

লেখক: আয়াতুল্লাহ্ জাফার সুবহানী
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ:

ভিজিট: 103708
ডাউনলোড: 9128


পাঠকের মতামত:

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 242 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 103708 / ডাউনলোড: 9128
সাইজ সাইজ সাইজ
চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

লেখক:
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বাংলা

আবু তালিবের সাহিত্যকর্ম

আমরা তাঁর দীর্ঘ কবিতা ও কাসীদাসমূহ থেকে কিছু অংশ মনোনীত করেছি এবং বিষয়বস্তু স্পষ্ট বোধগম্য হবার জন্য এগুলোর বঙ্গানুবাদ নিচে পেশ করছি :

ليعلم خيارُ النّاس إنّ محمّدا

نبي كموسى و المسيح بن مريم

أتانا بُهدى مثل ما أتيابه

فكلّ بأمر الله يهدي و يعصم

“ভালো মানুষেরা সবাই জানুক যে,মুহাম্মদ

মূসা ও ঈসা ইবনে মরিযমের মতো নবী। এই দুই নবী যে আসমানী নূর (অর্থাৎ হেদায়েত) নিয়ে এসেছিলেন

ঠিক সেই নূর তিনিও আমাদের জন্য আনয়ন করেছেন। কারণ সকল নবী-রাসূল মহান আল্লাহর নির্দেশে মানব জাতিকে

পথ প্রদর্শন করেন এবং তাদেরকে পাপ থেকে বিরত রাখেন।”

تمنّيتم أن تقتلوه و أنّما

أمانيّكم هذى كأحلام نائم

نبيّ أتاه الوحي من عند ربّه

و من قال لا يقرع بها سن نادم

“(হে কুরাইশ সর্দারগণ!) তোমরা তাঁকে হত্যা করতে চাও,

অথচ তোমাদের এ সব চিন্তা-ভাবনা ও আকাঙ্ক্ষা আসলে ঘুমন্ত ব্যক্তির অলীক স্বপ্নের মতো। তিনি একজন নবী। তাঁর প্রভুর কাছ থেকে তাঁর কাছে ওহী এসেছে।

আর যে ব্যক্তি না’ বলবে (অর্থাৎ এ বিষয়টি অস্বীকার করবে) সে আসলে অনুতাপ ও পরিতাপ করতঃ দাঁত দিয়ে নিজ আঙ্গুলই দংশন করবে। 334

ألم تعلموا أنّا وجدنا محمّدا

رسولا كموسى خطّ في أوّل الكتب

و ان عليه في العباد محبة

و لاحيف فيمن خصه الله بالحبّ

(হে কুরাইশ!) তোমরা কি জান না যে,আমরা মুহাম্মদকে

মূসার মতো রাসূল হিসাবে পেয়েছি যাঁর কথা পূর্ববর্তী আসমানী গ্রন্থসমূহে বর্ণিত হয়েছে। মহান আল্লাহর বান্দাগণ তাঁর প্রতি বিশেষ ভালোবাসা পোষণ করে।

মহান আল্লাহ্ যে ব্যক্তির ভালোবাসা অন্তঃকরণসমূহে স্থাপন করেছেন

তাঁর প্রতি অন্যায় ও অত্যাচার করা অনুচিত। 335

و الله لن يصلوا إليك بجمعهم

حتّى اوسد في التراب دفينا

فاصدع بأمرك ما عليك غضاضة

و أبشر بذاك و قرّ منك عيونا

و دعوتني و علمت أنك ناصحي

و لقد دعوت و كنت ثمّ أمينا

و لقد علمت أنّ دين محمّد (ص)

من خير أديان البريّة دنيا

মহান আল্লাহর শপথ,আমার মাটিতে শায়িত হওয়া পর্যন্ত

(আমার মৃত্যুবরণ করা পর্যন্ত) তারা (কুরাইশ) কখনই তোমার নাগাল পাবে না।

(আর আমি তোমাকে সাহায্য করা থেকে কখনই আমার হাত গুটিয়ে নেব না।)

তুমি যা প্রচার করার জন্য আদিষ্ট হয়েছ তা স্পষ্ট ও প্রকাশ্যে প্রচার কর।

তোমার কোন ভয় নেই। সুসংবাদ প্রদান কর এবং নিজের চক্ষুকে শীতল কর।

তুমি আমাকে (তোমার ধর্মের প্রতি) আহবান করেছ

এবং আমি জানি যে,তুমি আমার সদুপদেশদানকারী

এবং দীন প্রচার করার ক্ষেত্রে তুমি সকল ধর্মের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। 336

أوتؤمنوا بكتاب منزل عجب

على نبيّ كموسى او كذى النون

অথবা তোমরা মূসা ও যূননূনের (ইউনুস) মতো নবীর ওপর অবতীর্ণ

আশ্চর্যজনক গ্রন্থ পবিত্র কোরআনে বিশ্বাস স্থাপন করবে। 337

চয়নকৃত এ সব টুকরো কবিতা আসলে আবু তালিবের দীর্ঘ মনোজ্ঞ কাসীদাসমূহের একটি ক্ষুদ্র অংশ যা দ্ব্যর্থহীনভাবে ভ্রাতুষ্পুত্রের ধর্মের প্রতি হযরত আবু তালিবের অগাধ বিশ্বাস ও ঈমানের কথাই ব্যক্ত করে। আমরা এখানে হযরত আবু তালিব (রা.)-এর ঈমান ও বিশ্বাসের সাক্ষ্য-প্রমাণস্বরূপ এগুলো উল্লেখ করেছি।

সংক্ষেপে এ সব কবিতা এগুলোর রচয়িতার ঈমান ও নিষ্ঠা প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট। এ সব কবিতা ও কাসীদার রচয়িতা যদি এমন এক ব্যক্তি হতেন সব ধরনের শত্রুতামূলক এবং সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ও বিদ্বেষপূর্ণ পরিবেশের বাইরে যাঁর অবস্থান-তাহলে সবাই এক বাক্যে ঈমান ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কথা স্বীকার করে নিত। কিন্তু যেহেতু এ সব কবিতা ও কাসীদার রচয়িতা আবু তালিব এবং উমাইয়্যা ও আব্বাসীয় প্রশাসন যন্ত্র ও রাজনৈতিক ধারার প্রচার মাধ্যমগুলো সব সময় আবু তালিবের বংশধরদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাত সেহেতু একটি গোষ্ঠী চায় নি যে,হযরত আবু তালিবের এ ধরনের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা প্রমাণিত হোক।

একদিকে তিনি হযরত আলী (আ.)-এর পিতা। আর উমাইয়্যা ও আব্বসীয খলীফাদের প্রচার মাধ্যমগুলো সব সময় তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাত। কারণ তাঁর পিতার ঈমান ও ইসলাম ধর্ম গ্রহণের বিষয়টি তাঁর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদা বলে গণ্য হতো। অথচ খলীফাদের পূর্বপুরুষদের কাফির ও মুশরিক হওয়ার বিষয়টি ছিল তাদের সম্মান ও মর্যাদা হানিকর।

যা হোক এ সব কবিতা,কাসীদা এবং বাণী,কর্ম ও অবদান রাখা সত্ত্বেও একটি গোষ্ঠী আবু তালিব (রা.)-কে কাফির বলে আখ্যায়িত করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে,এমনকি তারা এতেও ক্ষান্ত হয় নি এবং দাবি করেছে যে,পবিত্র কোরআনে কিছু আয়াতও অবতীর্ণ হয়েছে যেগুলো থেকে আবু তালিবের কাফির হওয়ার বিষয়টি প্রতিপন্ন হয়।

আবু তালিবের ঈমান প্রমাণ করার দ্বিতীয় পদ্ধতি

দ্বিতীয় পদ্ধতিটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সাথে আবু তালিবের আচার-আচরণ এবং মহানবীকে রক্ষা করা ও তাঁর পথে তাঁর আত্মত্যাগ ও কোরবানীর প্রক্রিয়া ও ধরন। এ সব অবদানের প্রতিটি তাঁর (আবু তালিব) মানসিকতা,আত্মিক মনোবল এবং চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশকারী। কারণ আবু তালিব (রা.) এমন এক ব্যক্তি ছিলেন যিনি চাইতেন না তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র শিশু হযরত মুহাম্মদ (সা.) ভগ্ন হৃদয় হয়ে থাক। সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা ও সুযোগ-সুবিধার অভাব সত্ত্বেও তিনি নিজের সাথে তাঁকে শামে নিয়ে যাওয়ার কষ্ট স্বীকার করেছিলেন।

নিজ ভ্রাতুষ্পুত্রের প্রতি হযরত আবু তালিবের ঈমান ও বিশ্বাসের মাত্রা এতটা গভীর ছিল যে,তিনি দুর্ভিক্ষ ও অনাবৃষ্টির সময় তাঁকে নিজের সাথে মুসাল্লায় নিয়ে গিয়েছিলেন এবং তাঁর উসীলায় তিনি মহান আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি প্রার্থনা করেছিলেন।

হযরত আবু তালিব (রা.) মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন রক্ষা করার জন্য চেষ্টার কোন ত্রুটি করেন নি এবং হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকেন নি। তিনি মক্কা নগরীর নেতৃত্ব ও প্রশাসনিক প্রধানের পদমর্যাদার ওপর পাহাড়-পর্বতে এবং গিরি-উপত্যকায় দীর্ঘ তিন বছরের অবরুদ্ধ জীবনকে প্রাধান্য দিযেছিলেন। এ তিন বছরের শরণার্থী জীবন তাঁকে এতটা ক্লান্ত ও অবসাদগ্রস্ত করেছিল যে,তিনি এর ফলে শারীরিক সুস্থতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাই অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়া হলে নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তন করার পর অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি ইন্তেকাল করেন।

মহানবী (সা.)-এর প্রতি তাঁর ঈমান ও বিশ্বাস এতটা দৃঢ় ও শক্তিশালী ছিল যে,তাঁর সকল সন্তান নিহত হয়েও যেন মহানবী জীবিত থাকেন এটিই তিনি চাইতেন এবং এতেই তিনি সন্তষ্ট ছিলেন। তিনি আলীকে মহানবীর শয্যায় শোয়াতেন যাতে করে তাঁকে হত্যা করার কোন ষড়যন্ত্র করা হলে তা যেন কার্যকর না হয়। এর চেয়েও আরো উচ্চ ও মহান ছিল ঐ ঘটনা যে,একদিন তিনি প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য সকল কুরাইশ নেতা ও সর্দারকে হত্যা করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন। আর এর ফলশ্রুতিতে স্বাভাবিকভাবে বনি হাশিম গোত্রও সমূলে ধ্বংস হয়ে যেত।

মৃত্যুর সময় আবু তালিবের অসিয়ত

মৃত্যুর সময় তিনি তাঁর সন্তানদেরকে বলেছিলেন,‘‘ আমি মুহাম্মদের ব্যাপারে তোমাদেরকে অসিয়ত করছি। কারণ তিনি কুরাইশদের মধ্যে সবচেয়ে বিশ্বস্ত,আরবদের মধ্যে সবচেয়ে সত্যবাদী এবং সকল মানবীয় পূর্ণতা ও মহৎ গুণের অধিকারী। তিনি এমন এক ধর্ম আনয়ন করেছেন যার প্রতি জনগনের অন্তঃকরণসমূহ বিশ্বাস স্থাপন করেছে,কিন্তু কটাক্ষ,নিন্দা ও তিরস্কারের ভয়ে মুখে মুখে তারা এ ধর্মের বিরোধিতা এবং তা অস্বীকার করছে। আমি এখন দেখতে পাচ্ছি যে,আরবের দুর্বল ও অবহেলিত জনগণ তাঁকে সমর্থন এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করছে। আর মুহাম্মদও তাদের সাহায্যে কুরাইশদের আধিপত্য ভেঙে দেয়ার জন্য উঠে দাঁড়িয়েছেন। তিনি কুরাইশ সর্দারদেরকে অপদস্থ ও তাদের বাড়িগুলোকে বিরান এবং আশ্রয়হীনদেরকে শক্তিশালী করেছেন। এরপর তিনি নিম্নোক্ত বাক্যগুলোর মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য শেষ করলেন,

كونوا له ولاة و لحزبه حماة، والله لا يسلك أحد سبيله إلا رشد و لا يأخذ رشد و لا يأخذ أحد بهداه إلّا سعد، و لو كان لنفسي مدة و في احلي تأخير لكففت عنه الهزاهز، و لدافعت عنه الدوافع

“হে আমার আত্মীয়স্বজনগণ! মুহাম্মদের দলের বন্ধু ও সমর্থক হয়ে যাও। মহান আল্লাহর শপথ,যে কেউ তাঁর অনুসরণ করবে,তাঁর পথে চলবে,সে সুপথপ্রাপ্ত ও সৌভাগ্যমণ্ডিত হবে। আমার জীবন যদি অবশিষ্ট থাকত এবং আমার মৃত্যু যদি পিছিয়ে যেত তাহলে আমি তাঁর নিকট থেকে সব ধরনের বিপদাপদ ও তিক্ত ঘটনা প্রতিহত করতাম এবং তাঁকে রক্ষা করতাম। 338

আমাদের কোন সন্দেহ নেই যে,তিনি তাঁর এ আশা-আকাঙ্ক্ষার ক্ষেত্রে সত্যবাদী ছিলেন। কারণ  তাঁর দীর্ঘ দশ বছরের অবদান ও আত্মত্যাগ তাঁর বক্তব্য ও কথা সত্য হওয়ার সাক্ষ্য-প্রমাণস্বরূপ। তাঁর কথা ও বক্তব্যের সত্যতার সাক্ষ্যপ্রমাণ হচ্ছে (তাঁর) ঐ অঙ্গীকার যা তিনি হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে তাঁর নবুওয়াতের সূচনালগ্নে দিয়েছিলেন। কারণ যে দিন হযরত মুহাম্মদ তাঁর সকল চাচা ও নিকটাত্মীয়কে নিজ গৃহে একত্র করে তাদের সামনে ইসলাম ধর্ম উপস্থাপন করেছিলেন সে দিন হযরত আবু তালিব (রা.) তাঁকে বলেছিলেন,

أخرج ابن أخي فإنّك الرّفيع كعبا، و المنيع حزبا والأعلى أبا و الله لا يسلقك لسان إلّا سلقته ألسن حداد، واجتذبته سيوف حداد، و الله لتذلّنّ لك العرب ذلّ البهم لحاضنها

“হে আমার ভ্রাতুষ্পুত্র! তুমি (দৃঢ়ভাবে) দাঁড়াও। কারণ তুমি সুউচ্চ মাকাম ও মর্যাদার অধিকারী,তোমার দলই অত্যন্ত সম্মানিত দল। তুমি অত্যন্ত সম্মানিত পিতার সন্তান। মহান আল্লাহর শপথ,যখন তোমাকে কোন কণ্ঠ কষ্ট দেবে তখন অত্যন্ত ধারালো কণ্ঠসমূহ তোমার পক্ষাবলম্বন করে সেই কণ্ঠকেই আঘাতে জর্জরিত করে দেবে এবং ধারালো তরবারিগুলো তাদেরকে বধ করবে। মহান আল্লাহর শপথ,পশুপালকের কাছে পশুগুলো যেভাবে নত হয় ঠিক সেভাবে আরবগণ তোমার কাছে নতজানু হবে ও বশ্যতা স্বীকার করবে। 339

সর্বশেষ পথ

হযরত আবু তালিবের ঈমান ও নিষ্ঠা সম্পর্কে তাঁর নিরপেক্ষ নিকটাত্মীয়দেরকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম পন্থা। কারণ ঘরে যা ঘটে সে সম্পর্কে ঘরের অধিবাসীরাই সবচেয়ে বেশি জ্ঞাত।

1. যখন হযরত আলী (আ.) মহানবী (সা.)-কে হযরত আবু তালিবের মৃত্যু সংবাদ জানালেন তখন মহানবী খুব কেঁদেছিলেন এবং তিনি হযরত আলীকে হযরত আবু তালিবের লাশের গোসল,কাফন ও দাফনের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং মহান আল্লাহর কাছে তাঁর মাগফেরাত কামনা করেছিলেন।340

2. চতুর্থ ইমাম হযরত যয়নুল আবেদীন (আ.)-এর কাছে হযরত আবু তালিবের ঈমান প্রসঙ্গে কথা উঠলে তিনি বলেছিলেন, আমি আশ্চর্যান্বিত হচ্ছি যে,মানুষ কেন তাঁর ঈমান ও ইখলাসের ব্যাপারে সন্দিহান অথচ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর কোন মুসলিম নারী কাফির স্বামীর বিবাহবন্ধন ও তত্ত্বাবধানে থাকতে পারবে না (অর্থাৎ তাদের বিবাহ বন্ধনই টুটে যাবে)। ফাতিমা বিনতে আসাদ আস সাবিকুনাল আউওয়ালুন’-এর অন্তর্ভুক্ত এবং তিনি ঐ সব মহিলা ও নারীর অন্তর্ভুক্ত যাঁরা অনেক আগে মহানবী (সা.)-এর প্রতি ঈমান এনেছিলেন। আর হযরত আবু তালিবের মৃত্যু পর্যন্ত এ মহিলা তাঁর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন।

3. ইমাম বাকির (আ.) বলতেন,‘‘ আবু তালিবের ঈমান বহু লোকের ঈমানের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.) হযরত আবু তালিবের পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করার নির্দেশ দিতেন।341

4. ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন, হযরত আবু তালিব (রা.) ছিলেন আসহাবে কাহাফসদৃশ যাঁদের অন্তরে ঈমান ছিল এং যাঁরা বাহ্যত (মুখে) শিরকের বাণী উচ্চারণ করতেন। এ কারণেই তাঁরা দু বার পুরস্কারপ্রাপ্ত হবেন (أسرّوا الإيمان و أظهروا الشّرك فأتاهم الله أجرهم مرّتين )। 342

শিয়া আলেমদের অভিমত

ইমামীয়াহ্ ও যায়েদীয়াহ্ আলেমগণ আহলে বাইতের অনুসরণ করে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে,হযরত আবু তালিব (রা.) ইসলামের সুমহান ও ঊচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। যে দিন তিনি মৃত্যুবরণ করলেন সে দিন তাঁর অন্তর ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি বিশ্বাস ও নিষ্ঠার দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। তাঁর ঈমান ও নিষ্ঠার ব্যাপারে অনেক বই ও প্রবন্ধ লিখা হয়েছে। পূর্ববর্তী যুগগুলো থেকে এ পর্যন্ত হযরত আবু তালিব (রা.)-এর ঈমান প্রসঙ্গে 18টি গ্রন্থ রচনা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অধিক অবগতির জন্য নাজাফ থেকে প্রকাশিত আল গাদীর’ গ্রন্থের 7ম খণ্ডের 402-404 পৃষ্ঠা অধ্যয়ন করুন।

বাইশতম অধ্যায় : মিরাজ

কোরআন,হাদীস ও ইতিহাসের দৃষ্টিতে মিরাজ

রাত্রির অন্ধকার দিগন্তকে আচ্ছাদন করে রেখেছিল। চারিদিকে তখন বিরাজ করছিল নিস্তব্ধতা। সকল প্রাণী দিবসের ক্লান্তি দূর করার উদ্দেশ্যে নিদ্রার কোলে ঢলে পড়েছিল। তারা যেন প্রকৃতি-দর্শন হতে সীমিত সময়ের জন্য বিরত হয়ে পরবর্তী দিবসের কর্মব্যস্ততার জন্য শক্তি সঞ্চয় করছিল। স্বয়ং মহানবীও প্রকৃতিজগতের এ নিয়ম থেকে ব্যতিক্রম ছিলেন না। তিনিও তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদনের পর খেজুর পাতার বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছিলেন। হঠাৎ এক পরিচিত কণ্ঠস্বর তাঁর কানে ভেসে আসল। এ কণ্ঠ প্রত্যাদেশ বহনকারী ফেরেশতা জিবরাইলের। তিনি তাঁকে বললেন, আজ রাতে আপনার সামনে এক দীর্ঘ সফর রয়েছে। আপনি ঊর্ধ্বগামীযান বোরাকে আরোহণ করে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ করবেন। এ সফরে আমিও আপনার সহযাত্রী।”

মহানবী (সা.) তাঁর বোন উম্মে হানীর গৃহ হতে এ সফর শুরু করলেন। মহাশূন্যযান বোরাকে চেপে ফিলিস্তিনে অবস্থিত বায়তুল মোকাদ্দাসের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছে মসজিদের নিকটবর্তী বিভিন্ন স্থান,যেমন ঈসা (আ.)-এর জন্মভূমি বেথেলহেম,অন্যান্য নবী-রাসূলের গৃহ ও স্মৃতিচি‎‎ হ্নসমূহ পরিদর্শন করেন। কোন কোন স্থানে দু রাকাত নামায পড়েন।

এরপর তাঁর দ্বিতীয় পর্যায়ের সফর শুরু হয়। এখান থেকেই ঊর্ধ্বজগতের উদ্দেশে যাত্রা করেন। তিনি গ্রহ-নক্ষত্র ও বিশ্বজগতের পরিচালনা ব্যবস্থা দেখেন,নবী ও ফেরেশতাদের সঙ্গে কথোপকথন করেন,আল্লাহর রহমত ও আযাবের প্রতিকৃতি (বেহেশত ও দোযখ) লক্ষ্য করেন। বেহেশতবাসী ও দোযখবাসীদের বিভিন্ন স্তর নিকট থেকে দেখেন। সর্বোপরি বিশ্বজগতের ব্যাপকতা,এর গুপ্ত রহস্য এবং মহান আল্লাহর অসীম ক্ষমতা সম্পর্কে পূর্ণরূপে অবহিত হন। অতঃপর তাঁর গন্তব্যের শেষ স্থান সিদরাতুল মুনতাহা য় পৌঁছেন এবং মহান আল্লাহর অসীমত্ব ও মহান মর্যাদাকে অনুভব করেন। এখানেই তাঁর ঊর্ধ্ব সফরের পরিসমাপ্তি ঘটে। পরে একই পথে তিনি বায়তুল মোকাদ্দাসে ফিরে আসেন। বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে মক্কায় ফেরার পথে কুরাইশ গোত্রের একটি কাফেলার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। তারা তাদের উট হারিয়ে ফেলেছিল এবং রাতের অন্ধকারে খুঁজছিল। তিনি তাদের রক্ষিত পাত্র থেকে কিছু পানি পান করে অবশিষ্ট পানি মাটিতে ছড়িয়ে দেন এবং পাত্রটি পুনরায় ঢেকে রাখেন। সুবহে সাদিকের পূর্বেই তিনি উম্মে হানীর গৃহে ফিরে আসেন। এ রাতের ঘটনাটি তিনি উম্মে হানীকেই প্রথম বলেন। পরবর্তী দিন সকালে কুরাইশদের সমাবেশে তিনি তাঁর এ সফরের ঘটনা বর্ণনা করেন। তাঁর এ আশ্চর্য সফরের ঘটনা-যা মিরাজ’ নামে অভিহিত তা তাদের নিকট অসম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়,কিন্তু ঘটনাটি লোকমুখে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং কুরাইশদের ক্ষোভের উদ্রেক করে।

কুরাইশগণ তাদের প্রাচীন অভ্যাস অনুযায়ী তাঁকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে ও বলে, এখানে অনেকেই আছে যারা বায়তুল মোকাদ্দাস দেখেছে। যদি তুমি সত্য বলে থাক তাহলে এর গঠন কাঠামোর বর্ণনা দাও। তিনি শুধু বায়তুল মোকাদ্দাসের বৈশিষ্ট্যই বর্ণনা করলেন না,সে সাথে বায়তুল মোকাদ্দাস থেকে মক্কার মধ্যবর্তী স্থানে যে সকল ঘটনা ঘটেছে তা বর্ণনা করে বললেন, আমি ফেরার পথে অমুক স্থানে অমুক গোত্রের কাফেলার সাথে দেখা হয়েছিল যারা তাদের উট হারিয়ে ফেলেছিল এবং আমি তাদের রক্ষিত পাত্র থেকে পানি পান করে পাত্রটি পুনরায় ঢেকে রাখি। অন্য স্থানে একদল লোকের সঙ্গে দেখা হয় যাদের উট ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে গিয়ে সামনের পা ভেঙে ফেলেছিল। কুরাইশরা খবর পেল একটি কাফেলা মক্কার নিকটবর্তী স্থানে পৌঁছেছে। একটি মেটে রঙের উট তাদের কাফেলার সম্মুখে রয়েছে। তারা রাগান্বিত হয়ে বলল, তোমার কথার সত্যতা এখনই প্রমাণিত হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আবু সুফিয়ানসহ ঐ কাফেলার অগ্রগামী অংশ কাবা ঘরে পৌঁছল। তারা রাসূল (সা.) কর্তৃক বর্ণিত ঘটনাকে সত্যায়ন করল। উপরিউক্ত বর্ণনাটি তাফসীর ও হাদীস গ্রন্থসমূহের বর্ণনার সংক্ষিপ্ত রূপ। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বিহারুল আনওয়ার’ গ্রন্থের মিরাজ’ অধ্যায় দ্রষ্টব্য।

মিরাজের কোরআনী ভিত্তি

রাসূল (সা.)-এর মিরাজ কোরআনের দু টি সূরায় স্পষ্টরূপে বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন সূরায় এ বিষয়ে কিছুটা ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। আমরা এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে এরূপ একটি আয়াতের অনুবাদ ও ব্যাখ্যা উপস্থাপন করছি। মহান আল্লাহ্ সূরা বনি ইসরাইলের প্রথম আয়াতে বলেছেন,

) سبحان الّذي أسرى بعبده ليلا من المسجد الحرام إلى المسجد الأقصا الّذي باركنا حوله لنريه من ءاياتنا إنّه هو السّميع البصير(

পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি,যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রিবেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত-যার চারদিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দিই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। (সূরা ইসরা : 1)

উপরিউক্ত আয়াতের বাহ্যিক অর্থ থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বোঝা যায় :

1.মহানবী (সা.) যে মানবীয় ক্ষমতা দ্বারা এ সফর করেন নি,বরং ঐশী শক্তির সাহায্যে স্বল্প সময়ে এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছিলেন তা বুঝানোর জন্য আয়াতটিسبحان الّذي (সুবহানাল্লাযি) দ্বারা অর্থাৎ মহান আল্লাহর ত্রুটি ও অপূর্ণতা থেকে পবিত্রতা ঘোষণার মাধ্যমে শুরু হয়েছে। শুধু তা-ই নয় মহান আল্লাহ্ এ যাত্রার উদ্গাতা হিসাবে নিজেকে উল্লেখ করে বলেছেনأسرى (আসরা) অর্থাৎ তিনিই এ পরিভ্রমণ করিয়েছেন যাতে কেউ মনে না করে যে,সাধারণভাবে প্রাকৃতিক নিয়মে তা সম্পন্ন হয়েছে,বরং এ সফরটি মহান সত্তা ও প্রতিপালকের বিশেষ ক্ষমতায় সম্পাদিত হয়েছে।

2. এ সফরটি রাত্রিতে সম্পাদিত হয়েছিল। তাইليلا (লাইলা) শব্দটির পাশাপাশিأسرى (আসরা) শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে যা আরবগণ রাত্রিকালীন পরিভ্রমণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে।

3. যদিও এ সফরের শুরু আবু তালিবের কন্যা উম্মে হানীর গৃহ থেকে হয়েছিল তদুপরি এ যাত্রার শুরুটি মসজিদুল হারাম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্ভবত আরবরা যেহেতু সমগ্র মক্কাকে হারাম বলে অভিহিত করে থাকে সেহেতু সমগ্র মক্কাই মসজিদে হারামের অন্তর্ভুক্ত বলে ধরা হয়েছে। সুতরাং তিনি মসজিদুল হারাম থেকে পরিভ্রমণ করিয়েছেন কথাটি সঠিক। অবশ্য কোন কোন হাদীসের বর্ণনায় মিরাজ মসজিদে হারাম থেকেই হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ আয়াতটিতে যদিও সফরের শুরু মসজিদে হারাম হতে এবং পরিসমাপ্তি মসজিদে আকসা উল্লেখ করা হয়েছে তদুপরি তা নবী (সা.)-এর ঊর্ধ্বজগতের পরিভ্রমণ সম্পর্কিত বর্ণনার পরিপন্থী নয়। কারণ এ আয়াতে এই পরিসীমার মধ্যে সফরের বর্ণনা থাকলেও সূরা নাজমের আয়াতসমূহে ঊর্ধ্বজগতের ভ্রমণের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

4. মহানবী (সা.)-এর এ পরিভ্রমণ দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে হয়েছিল। কখনই তা শুধু আত্মিক ছিল না। এ কারণেই এ আয়াতেبعبده   (বিআবদিহি) বলা হয়েছে যা দেহ ও আত্মার সমন্বিত রূপের প্রতি ইঙ্গিত করে। মিরাজ যদি শুধু আত্মিক হতো তবে আল্লাহ্ বলতেনبروحه (বিরূউহিহি)।

5. এ মহাসফরের উদ্দেশ্য ছিল অস্তিত্বজগতের বিশালতা ও এর উল্লেখযোগ্য নিদর্শনসমূহ রাসূলকে দেখানো।

অন্য যে সূরাটি মিরাজের ঘটনাকে স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছে তা হলো সূরা আন্ নাজম। এ সূরার নিম্নোক্ত আয়াতটির শানে নুযূল হলো যখন নবী (সা.) কুরাইশদের বললেন, আমি প্রত্যাদেশ বহনকারী ফেরেশতাকে তাঁর প্রকৃত চেহারায় প্রথম ওহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় দেখেছিলাম’,তখন কুরাইশরা এ কথায় তাঁর সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হয়। কোরআন তাদের জবাবে বলে,

) أفتما رونه على ما يرى و لقد راه نزلة أخرى عند سدرة المنتهى عندها جنّة المأوى إذ يغشى السّدرة ما يغشى ما زاغ البصر و ما طغى لقد رأى من آيات ربّه الكبرى(

“রাসূল যা দেখেছেন তোমরা কেন সে বিষয়ে তাঁর সঙ্গে বিতর্ক কর? তিনি আরেকবার তাঁকে (ফেরেশতা) দেখেছিলেন সিদরাতুল মুনতাহার নিকট যা সৎকর্মশীলদের জন্য নির্ধারিত বেহেশতের সন্নিকটে অবস্থিত। তখন সিদরাতুল মুনতাহাকে যা আচ্ছাদিত করার ছিল পূর্ণরূপে আচ্ছাদিত করে রেখেছিল। তাঁর দৃষ্টি কোন ভুল করে নি এবং কোনরূপ বিচ্যুতও হয় নি এবং তিনি তাঁর প্রতিপালকের মহান নিদর্শনের কিয়দংশ প্রত্যক্ষ করেন।”

মিরাজ সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

মুফাসসির ও মুহাদ্দিসগণ রাসূল (সা.)-এর মিরাজ ও তাতে তিনি কি দেখেছেন সে সম্পর্কে প্রচুর হাদীস বর্ণনা করেছেন। এর সবগুলোই অকাট্য ও নির্ভুল নয়। বিশিষ্ট শিয়া মুফাসসির আল্লামা তাবারসী এ সম্পর্কিত হাদীসসমূহকে চার ভাগে ভাগ করেছেন343 :

1. অকাট্য হাদীসসমূহ যাতে মিরাজ সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি কিছু বিশেষত্বসহ বর্ণিত হয়েছে।

2. যে সকল রেওয়ায়েত সহীহ হিসাবে বর্ণিত হয়েছে,তবে অকাট্য নয় এবং বুদ্ধিবৃত্তি ও প্রজ্ঞার পরিপন্থীও নয়। যেমন ঊর্ধ্বাকাশে পরিভ্রমণ,বেহেশত-দোযখ দর্শন এবং নবিগণের আত্মার সঙ্গে কথোপকথন।

3. ঐ সকল হাদীস যেগুলোর বাহ্যিক অর্থ গ্রহণীয় নয়,তবে তা ব্যাখ্যাসাপেক্ষ। যেমন মিরাজের রাত্রিতে বেহেশতবাসী ও দোযখবাসীদের সঙ্গে নবী করীম (সা.)-এর কথোপকথন। একে ব্যাখ্যা করে বলতে হয় তিনি তাদের অভ্যন্তরীণ আকৃতি ও বৈশিষ্ট্যের প্রতিকৃতির সঙ্গে কথা বলেছেন।

4. এ সম্পর্কে মিথ্যাবাদী বর্ণনাকারীরা যে সকল জাল হাদীস তৈরি করেছে। যেমন কোন বর্ণনায় এ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে,রাসূল (সা.) আল্লাহর পাশে গিয়ে বসেন এবং তাঁর কলমের খসখস শব্দ শুনতে পান।