চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড4%

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড লেখক:
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ: হযরত মোহাম্মদ (সা.)

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 242 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 106820 / ডাউনলোড: 9707
সাইজ সাইজ সাইজ
চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড

লেখক:
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বাংলা

1

2

3

4

5

6

7

8

9

10

11

12

13

14

15

16

17

18

19

তথ্যসূচী ও টিকা

১.কাযী আবদুর রহমান ইবনে মুহাম্মদ খাদরামী মালেকী (মৃ. ৮০৮ হি.);যদিও তাঁর আল মুকাদ্দামাহ্ ওয়াত তারিখ’ গ্রন্থে কতিপয় ঐতিহাসিক ঘটনার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে তিনি অনেক ভুল করেছেন,তবুও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও উপকারী একটি গ্রন্থ যা সম্পূর্ণ নতুন এবং উদ্ভাবনী দিকসম্বলিত।

২.তামাদ্দুনে ইসলাম ওয়া আরাব (ইসলাম ও আরবের সভ্যতা),পৃ. ৯৩-৯৪।

৩.সাম্প্রতিককালে ইয়েমেন উত্তর ও দক্ষিণ-এ দু অংশে বিভক্ত হয়েছে এবং প্রতিটি অংশেরই পৃথক সরকার ও সেনাবাহিনী রয়েছে।

৪.ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতা,পৃ. ৯৬।

৫.এতৎসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যের জন্য জুগরফিয়য়ে কেশভারহয়ে ইসলামী’(মুসলিম দেশসমূহের ভূগোল) নামক গ্রন্থ অধ্যয়ন করা যেতে পারে।

৬.তামাদ্দুনে ইসলাম ওয়া আরাব,পৃ. ৭৮-১০২।

৭ প্রাগুক্ত,পৃ. ৯৬।

৮. মুরুজুয্ যাহাব,৩য় খণ্ড,পৃ. ৩৭৩।

৯.নাহজুল বালাগাহ্,খুতবাহ্ নং ২৬ :

 إنّ الله بعث محمّدا (ص) نذيرا للعالمين و أمينا على التّنْزيل و أنتم معشر العرب على شرّ دين و في شرّ دار منيخون بين حجارة خشن و حيّات صمّ، تشربون الكدر و تأكلون الحشب و تسفكون دماءكم و تقطعون أرحامكم، و الأصنام فيكم منصوبة، و الآثام بكم معصوبة

১০ .( قل تعالوا أتل ما حرّم ربّكم عليكم ألّا تشركوا به شيئا )

১১.( و بالوالدين إحسانا )

১২.( و لا تقتلوا أولادكم من إملاق نحن نرزقكم و إيّاهم )

১৩.( و لا تقربوا الفواحش ما ظهر منها و ما بطن )

১৪.( و لا تقتلوا النّفس الّتي حرّم الله إلّا بالحقّ، ذالكم وصّاكم به لعلكم تعقلون )

১৫.( و لا تقربوا مال اليتيم إلّا بالّتي هي أحسن حتّى يبلغ أشدّه )

১৬.( و أوفوا الكيل و الميزان بالقسط )

১৭.( لا نكلّف نفسا إلّا وسعها )

১৮.( و إذا قلتم فاعدلوا و لو كان ذا قربى )

১৯.( و بعهد الله أوفوا ذالكم وصّاكم به لعلّكم تذكّرون )

অনুবাদ : বলে দিন,(তোমরা) এসো,তোমাদের প্রভু মহান আল্লাহ্ তোমাদের ওপর যা হারাম করেছেন তা আমি তোমাদেরকে পাঠ করে শুনাই : তোমরা যেন তাঁর সাথে কোন কিছু শরীক না কর। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন : তোমরা যেন তোমাদের পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণ কর। দারিদ্র্যের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা কর না। আমরা তোমাদেরকে এবং তাদেরকে জীবিকা দান করি। তোমরা গোপন ও প্রকাশ্য পাপাচারের নিকটবর্তী হয়ো না। একমাত্র সত্য ও ন্যায্য কারণ ব্যতীত মহান আল্লাহ্ যে সব প্রাণ হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন তা তোমরা হত্যা কর না। আল্লাহ্ তোমাদেরকে এর নির্দেশ দিয়েছেন। আশা করা যায় যে,তোমরা তা অনুধাবন করবে। তোমরা যা সর্বোত্তম তা ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত অনাথের সম্পত্তি ও সম্পদের নিকটবর্তী হয়ো না। ন্যায়পরায়ণতার সাথে ওজন ও দাড়িপাল্লা পূর্ণ কর। আমরা কোন প্রাণের ওপর তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব চাপিয়ে দেই না। আর যখন তোমরা কোন কথা বলবে তখন ন্যায়পরায়ণতা অবলম্বন করবে,এমনকি নিকটাত্মীয় হলেও। মহান আল্লাহর সাথে যে  অঙ্গীকার করেছ তা পালন কর। তোমাদের প্রতি এটিই হচ্ছে মহান আল্লাহর নির্দেশ। আশা করা যায় যে,তোমরা তা স্মরণ রাখবে।”

২০. আলামুল ওয়ারা,পৃ. ৩৫-৪০ ও বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ৮-১১।

২১. নাহজুল বালাগাহ্,খুতবাহ্ নং ১।

২২. কালবী নামে প্রসিদ্ধ নাসসাবাহ্ কর্তৃক প্রণীত আল আসনাম,পৃ. ২৩।

২৩. নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা : ৩৬।

২৪. মু জামুল মাতবূআত,পৃ. ২৯৭।

২৫. সূরা তাকভীর : ৮।

২৬. ইবনে আসীর উসদুল গাবাহ্’ গ্রন্থে কাইস’ ধাতু শিরোনামে তার থেকে বর্ণনা করেছেন : মহানবী (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন,এ পর্যন্ত কয়টা মেয়েকে তুমি জীবন্ত দাফন করেছ? সে বলেছিল,১২টি মেয়েকে। এ কাহিনী মুহম্মদ আলী সালেমীন রচিত হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনী গ্রন্থের ২৪-২৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে।

২৭. সূরা নাহল : ৬০।

২৮. তুহাফুল উকূল,পৃ. ৩৩-৩৪।

২৯. ইসলাম ও জাহেলিয়াত,পৃ. ২৪৫।

৩০. ইবনে খালদুনের মুকাদ্দামাহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ২৮৫ ও ২৮৬।

৩১. আল-আরাবু কাবলাল ইসলাম (ইসলামপূর্ব আরব জাতি),পৃ. ১২৮।

৩২. আরব জাতির ইতিহাস ও তাদের রীতিনীতিসমূহ,পৃ. ৪৭;ইবনে আসীরের আল-কামিল ফীত তারিখ,১ম খণ্ড,পৃ. ২০৪।

৩৩. আরবের ইতিহাস,ফিলিপ হিট্টি প্রণীত,১ম খণ্ড,পৃ. ১১১।

৩৪.

فليت لى بِهم قوما إذا ركبوا

شنّوا الإغارة فرسانا و ركبانا

৩৫. সূরা আলে ইমরান : ১০৩।

৩৬.أنصر أخاك ظالما و مظلوما তাদের স্লোগানই ছিল : তোমার ভাইকে সাহায্য কর-চাই সে জালেমই হোক বা মজলুমই হোক। (জালেমকে সাহায্য করার মানে হচ্ছে তাকে জুলুম করা থেকে বিরত রাখা) যদিও মহানবীর হাদীসে উপরিউক্ত বাক্যের সঠিক ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।

৩৭. বিহারুল আনওয়ার,২২তম খণ্ড,পৃ. ১৫৫।

৩৮. প্রাগুক্ত,১৫ তম খণ্ড,পৃ. ৩৯২।

৩৯. সাইয়্যেদ মাহমূদ আলূসীর রচনাবলী,২য় খণ্ড,পৃ. ২৮৬-৩৬৯।

৪০.  তুহাফুল উকূল,পৃ. ২৫;সীরাতে ইবনে হিশাম,২য় খণ্ড,পৃ. ৪১২।

৪১.সীরাতে ইবনে হিশাম,৩য় খণ্ড,পৃ. ৪১২।

৪২.গাভীগুলো পানি না খাওয়ার অপরাধে ষাঁড়গুলোকে যে প্রহার করা হতো এ প্রসঙ্গে এক আরব কবি বলেছেন,

فإنّي إذا كالثور يضرب جنبه

إذا لم يعف شربا و عافت صواحبه

অতঃপর আমি এখন ঐ ষাঁড়ের ন্যায় যার পার্শ্বদেশে প্রহার করা হয় তখন

যখন তা পান করা থেকে থাকেনি বিরত এবং গাভীগুলো থেকেছে বিরত।

৪৩. মান লা ইয়াহ্দুরুহুল ফাকীহ্,পৃ. ২২৮;জীবজন্তুর অধিকার সংক্রান্ত বর্ণনাসমূহ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার জন্য আশ্শুয়ুনুল ইকতিসাদিয়াহ্ গ্রন্থ,পৃ. ১৩০-১৫৯।

৪৪. আত্তাজ,৩য় খণ্ড,পৃ. ১৭৮।

৪৫. প্রাগুক্ত,পৃ. ১৭৯।

৪৬. প্রাগুক্ত,পৃ. ১৮৪।

৪৭. সাফীনাহ্,رقي ধাতু।

৪৮. ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও সংগ্রামে সাম্রাজ্যবাদের নীলনকশাসমূহ,পৃ. ৩৮।

৪৯. তামাদ্দুনে ইসলাম ওয়া আরাব,পৃ. ৮৭।

৫০. খসরু পারভেজ থেকে চেঙ্গিস পর্যন্ত,পৃ. ১২০-১২১।

৫১. সুরিয়ানী ভাষায় হীরা’ শব্দটির অর্থ সংরক্ষিত ও সুরক্ষিত এলাকা।

৫২. ফতহুল বুলদান,পৃ. ৪৩৭।

৫৩. সানা মুলূকিল আরদ,পৃ. ৭৩-৭৬।

৫৪. দাইনূরী প্রণীত আল আখবারুত তিওয়াল,পৃ. ১০৯,কায়রো থেকে মুদ্রিত।

৫৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,পৃ. ১২২-১২৩।

৫৬. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৭৮-৮১;আমালাকা প্রাক-ইসলাম যুগের একটি আরব গোত্র যারা কালক্রমে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

৫৭. আবুল হাসান বালাযুরী প্রণীত ফুতহুল বুলদান,পৃ. ৪৫৭ ও ৪৫৯।

৫৮. আরব জাতি ও সমাজের বিভিন্ন গোত্র,তাদের আচার-প্রথা,আকীদা-বিশ্বাস ও কৃষ্টি-সংস্কৃতি ইত্যাদির সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত দু টি বই অধ্যয়ন করা উচিত : ক. মাহমুদ আলূসী (মৃ. ১২৭০) প্রণীত বুলূগুল আরাব ফী মারেফাতি আহওয়ালিল আরব’;খ. প্রফেসর জাওয়াদ আলী প্রণীত আল মুফাসসাল ফী তারিখিল আরাব কাবলাল ইসলাম’;এ গ্রন্থটি ১০ খণ্ডে লেখা। এর সকল অধ্যায় জাহেলী আরব জাতির জীবন সংক্রান্ত।

৫৯. পয়গম্বর হযরত মুহাম্মদ (সা.),রাহনামা প্রণীত,১ম খণ্ড,পৃ. ৪২-৪৩;মুহাম্মদ তাকী খান হাকীম মুতামাদুস্ সুলতান’ গাঞ্জে দানেশ’ নামক গ্রন্থে কিসরা বা খসরুর সদর দরজার উপরিস্থ প্রশস্ত বারান্দা অর্থাৎ আইভান সংক্রান্ত গবেষণা ও তথ্যানুসন্ধান উপলক্ষে নিগারিস্তানের কার্পেটটি খুব সূক্ষ্মভাবে চিত্রিত করেছিলেন।

৬০. প্রাগুক্ত।

৬১. প্রাগুক্ত।

৬২. সানা মুলূকিল আবদ ওয়াল আম্বিয়া,পৃ. ৪২০।

৬৩. তারিখে তাবারী,ক্রিশ্চিয়ান সনের উদ্ধৃতি অনুসারে,পৃ. ৩২৭।

৬৪. ইরানের সামাজিক ইতিহাস,২য় খণ্ড,পৃ. ৬-২৪।

৬৫. মুসলমানদের পতনের কারণে বিশ্ব কেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,পৃ. ৭০-৭১।

৬৬. ইরান ফি আহ্দিস্ সাসানীঈন (সাসানী শাসনামলে ইরান),পৃ. ৪২৪।

৬৭. মুরুজুয্ যাহাব,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬৩-২৬৪।

৬৮. ইরানের সামাজিক ইতিহাস,পৃ. ৬১৮।

৬৯. ইরানের সাহিত্যের ইতিহাস,১ম খণ্ড,পৃ. ২৪৬।

৭০. মুরুজুয্ যাহাব,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬৪।

৭১. এ ব্যাপারে নিম্নোক্ত গ্রন্থাবলী লক্ষ্য করুন : আল্লামা সুয়ূতীর তাযকিরাতুল মওযূআত,আল লাআলী আল মওযূআহ্ এবং হাইসামীর মাজমাউয যাওয়ায়েদ।

৭২. এ কাহিনী কবি ফেরদৌসী শাহনামা য় পারস্য ও রোমের মধ্যকার যুদ্ধ সংক্রান্ত সম্রাট আনুশীরওয়ানের বিভিন্ন কাহিনী বর্ণনা করা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন। শাহনামা,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃ. ২৫৭-২৬০;ঠিক একইভাবে ড.সাহেবুয যামানী দীবাচেঈ বার রাহবারী’গ্রন্থে খুব চমৎকারভাবে এ কাহিনীর চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন,দীবাচেঈ বার রাহবারী,পৃ. ২৫৮-২৬২ এবং মাহ্দী কুলী খান হেদায়েত প্রণীত গুযারেশনামা-ই ইরান,পৃ. ২৩২।

৭৩. ইরানের সামাজিক ইতিহাস,২য় খণ্ড,পৃ. ২৬।

৭৪. সাসানীদের যুগে ইরান,পৃ. ৩১৮।

৭৫. মুরুজুয যাহাব,১ম খণ্ড,পৃ. ২৮১।

৭৬. ইরানের সামাজিক ইতিহাস,২য় খণ্ড,পৃ. ১৫-১৯।

৭৭. সাসানী সভ্যতার ইতিহাস,১ম খণ্ড,পৃ. ১।

৭৮. ইরানের সামাজিক ইতিহাস,২য় খণ্ড,পৃ. ২০।

৭৯  মনী ধর্মমত আসলে খ্রিষ্টধর্মের সাথে যারদোশতী ধর্মমতের সংমিশ্রণে উদ্ভব হয়েছিল।

৮০. The Dictionary of the Holy Bible, বাবিল’ শব্দ।

৮১. সূরা নাযিআত : ২৪।

৮২. সূরা কাসাস : ৩৮।

৮৩. তাফসীরে বুরহান,১ম খণ্ড,পৃ. ৫৩৫।

৮৪. এখানে ফিতরাতগত তাওহীদ বলতে ঐ স্রষ্টান্বেষী আহ্বানকে বোঝানো হয়েছে যা সকল মানুষ এ ধরনের প্রবণতার ক্ষেত্রে বহিঃস্থ কার্যকারণ ও প্রভাবকের প্রভাবাধীন না হয়েই নিজ অস্তিত্ব ও সত্তার মধ্যে শুনতে পায়।

৮৫. সূরা আনআম : ৭৪;এ আয়াত মূর্তিপূজারীদের সাথে হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর আলোচনা ও কথোপকথনের সাথে সংশ্লিষ্ট। আর পরবর্তী আয়াতসমূহ নভোমণ্ডলীয় জ্যোতিষ্ক ও তারকারাজির পূজারীদের সাথে তাঁর আলোচনা সংক্রান্ত।

৮৬.مبانى توحيد از نظر قرآن পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতে তাওহীদের মূল ভিতসমূহ’ নামক গ্রন্থে আমরা তাওহীদের বিভিন্ন পর্যায় এবং সেগুলোর মধ্যকার পার্থক্য বিস্তারিত বর্ণনা করেছি এবং সেখানে প্রমাণ করেছি যে,মহান আল্লাহর সত্তার ক্ষেত্রে তাওহীদ,সৃষ্টিকর্তার একত্ব ও তাওহীদ থেকে ভিন্ন। আর এ দু ধরনের তাওহীদ আবার প্রভুত্বের ক্ষেত্রে তাওহীদ থেকে ভিন্ন। এ তিন ধরনের তাওহীদ আবার একটি আরেকটি থেকে ভিন্ন আর এগুলোই হচ্ছে তাওহীদের বিভিন্ন পর্যায়। অনুগ্রহ করে বিস্তারিত জানার জন্য উপরিউক্ত গ্রন্থ অধ্যয়ন করুন।

৮৭. খোদাগণ বলতে আযর সে সব মূর্তি ও প্রতিমাকে বুঝিয়েছে যেগুলো মূর্তিপূজকদের দৃষ্টিতে খোদায়িত্বের পর্যায়ের অধিকারী;আর খোদা এদের দৃষ্টিতে বিশ্বব্র‎‎ হ্মাণ্ডের স্রষ্টা ও পরিচালকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়,বরং খোদার কোন কোন কাজ যার কাছেই অর্পণ করা হবে তাকেই খোদা বলা যাবে। যেমন যে সত্তা পাপ ক্ষমা করার পর্যায় অথবা শাফায়াতের পর্যায়ের অধিকারী হবে সে-ই খোদা বলে গণ্য।

৮৮. মাজমাউল বায়ান,৩য় খণ্ড,পৃ. ৩১৯ এবং আল মিযান,৭ম খণ্ড,পৃ. ১৭০।

৮৯ সূরা আম্বিয়া : ৫১-৭০;ইবরাহীম (আ.)-এর জন্ম এবং মূর্তি ধ্বংস করা সংক্রান্ত বিষয়াদির ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য ইবনে আসীরের কামিল ফীত তারিখ’,পৃ. ৫৩-৬২ এবং বিহারুল আনওয়ারের ১২তম খণ্ডের পৃ. ১৪-৫৫ অধ্যয়ন করুন।

৯০.تالله لأكيدنَّ أصنامكم بعد أن تُوَلّوا مدبرين   মহান আল্লাহর শপথ,তোমাদের মরুপ্রান্তরে গমন করার পর আমি অবশ্য অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাসমূহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করব।-সূরা আম্বিয়া : ৫৭।

৯১. বিহারুল আনওয়ার,কোম্পানী কর্তৃক প্রকাশিত,৫ম খণ্ড,পৃ. ১৩০।

৯২. সা দুস্ সুঊদ,পৃ. ৪১-৪২ এবং বিহারুল আনওয়ার,১২তম খণ্ড,পৃ. ১১৮।

৯৩. তাফসীরে কুমী,পৃ. ৫২ এবং বিহারুল আনওয়ার,১২তম খণ্ড,পৃ. ১০০।

৯৪. বিহারুল আনওয়ার,১২তম খণ্ড,পৃ. ১১২;কাসাসুল আম্বিয়া থেকে বর্ণিত।

৯৫. ইবনে আসীরের আল-কামিল ফীত তারিখ,২য় খণ্ড,পৃ. ১ ও ২১।

৯৬. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬।

৯৭. কাবার পদসমূহের অস্তিত্ব নিশ্চিতভাবে উক্ত গৃহ নির্মাণ করার সময় ছিল না। তবে বিভিন্ন উপলক্ষ,কারণ ও প্রয়োজনে ধীরে ধীরে এ সব পদের উৎপত্তি হয়েছিল। ইসলাম ধর্মের আবির্ভাবকাল পর্যন্ত পবিত্র কাবা সংক্রান্ত দায়িত্বসমূহ চার প্রকার ছিল। যথা : ক. কাবার তত্ত্বাবধান ও চাবিরক্ষকের দায়িত্ব;খ. সেকায়াত অর্থাৎ হজ্বের দিবসগুলোতে বাইতুল্লাহর যিয়ারতকারীদের জন্য পানির ব্যবস্থা;গ. রিফাদাত্ অর্থাৎ হাজীদের খাবারের ব্যবস্থা করা এবং ঘ. মক্কাবাসীদের সভাপতিত্ব ও নেতৃত্ব,পতাকাবাহী ও সেনাবাহিনীর সেনাপতির পদ;তবে সর্বশেষ পদটি কোন ধর্মীয় বিষয়সম্বলিত ছিল না।

৯৮. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৩।

৯৯. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৫।

১০০. প্রাগুক্ত।

১০১. প্রাগুক্ত,পৃ. ৬-৭।

১০২. ইবনে আসিরের কামিল গ্রন্থ,২য় খণ্ড,পৃ. ১০।

১০৩.ইবনে আসীরের কামিল ফীত তারিখ,২য় খণ্ড,পৃ. ৬,তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৮-৯,সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৮।

১০৪. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৪১।

১০৫. জনগণের মধ্যে পাপ ও অপরাধের প্রসার আসমানী বিপদাপদ অবতীর্ণ হওয়ার অন্যতম কারণ। আর এটি মোটেও অসম্ভব নয় যে,অসৎ কীর্তিকলাপ দুর্ভিক্ষ,দুর্যোগ ও বিপদাপদ আনয়নকারী কার্যকারণাদির গতিপথে প্রভাব বিস্তার করে। এ বিষয়টি দার্শনিক নীতিমালার সাথে পূর্ণ সামঞ্জস্যশীল হওয়ার পাশাপাশি পবিত্র কোরআন ও হাদীসেও স্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে। (সূরা আরাফের ৯৬ নং আয়াত দ্র.)

১০৬. তবে কেন অন্যান্য ব্যক্তি এ প্রস্তাব করে নি?-এর উত্তরে বলা যায় যে,একমাত্র আবদুল মুত্তালিব ব্যতীত সকলেই সম্ভবত পানি পাবার ব্যাপারে হতাশ হয়ে গিয়েছিল।

১০৭.তারিখে ইয়াকুবী,১ম খণ্ড,পৃ. ২০৬;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৫।

১০৮. উপরিউক্ত কাহিনীটি অনেক ঐতিহাসিক ও সীরাত রচয়িতা লিখেছেন। এ ঘটনাটি যেহেতু আবদুল মুত্তালিবের আত্মার বিরাটত্ব ও মহত্ত্ব এবং তাঁর ইচ্ছাশক্তি ও সংকল্পের দৃঢ়তাকে সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত করে এবং সঠিকভাবে প্রমাণ করে যে,এ মহান ব্যক্তি তাঁর নিজ মানত ও প্রতিজ্ঞার প্রতি কতটা নিষ্ঠাবান ছিলেন! সেহেতু এটি এ দিক থেকে প্রশংসাযোগ্য।

১০৯. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৫৩;বিহারুল আনওয়ার,১৬তম খণ্ড,পৃ. ৯-৭৪;মহানবী (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে : আমি যিবহ অর্থাৎ কোরবানীর জন্য মানোনীত দু ব্যক্তির সন্তান।” এ দু জনের একজন হযরত ইসমাঈল (আ.) যিনি মুহাম্মদ (সা.)-এর পূর্বপুরুষ এবং অপর জন তাঁর (মহানবীর) পিতা আবদুল্লাহ্।”

১১০. আল কামিল ফীত তারিখ,১ম খণ্ড,পৃ. ২৫৩ থেকে সামনে: এ সব ব্যক্তি যারা সেদিন আগুনে জীবন্ত দগ্ধ হয়েছিল তাদেরকে পবিত্র কোরআনে আসহাবুল উখদূদ (অর্থাৎ গর্তওয়ালারা) বলা হয়েছে যা সূরা বুরুজের ৪-৮ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। মুফাস্সিরগণ এ আয়াতের শানে নুযূল বিভিন্নভাবে বর্ণনা করেছেন। মাজমাউল বায়ানের ৫ম খণ্ডের ৪৬৪-৪৬৬ পৃ.,সাঈদা,লেবানন থেকে মুদ্রিত।

১১১.

يا ربّ لا أرجو لهم سواكا

يا ربّ فامنع منهم حماكا

إن عدو البيت من عاداكا

امنعهم ان يخربوافناكا

لاهم ان العبد يمنع

رحله فامنع رحالك

لا يغلبن صليبهم

و محالهم عدوا محالك

হে মোর প্রভু! আপনাকে ছাড়া আমি চাই না তাদেরকে

হে প্রভু! আপনার ঘরকে রাখুন নিরাপদ তাদের থেকে

তারাই আপনার ঘরের শত্রু যারা করেছে শত্রুতা আপনার সাথে

যদি তারা আপনার গৃহপ্রাঙ্গণকে করতে চায় ধ্বংস তাহলে বাধা দিন তাদেরকে।

দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই যদি বান্দা তার ঘর-বাড়ি করে রক্ষা

তাহলে আপনি করুন আপনার গৃহ রক্ষা

অবশ্যই বিজয়ী না হয় যেন তাদের ক্রুশ

আর তাদের শত্রুতামূলক চক্রান্ত যেন না করে আপনার পরিকল্পনাকে পরাভূত।

১১২.ترميهم بحجارة من سجّيل -পবিত্র কোরআনের এ আয়াতটিতে।

১১৩. আল কামিল ফীত তারিখ,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬৩।

১১৪. পবিত্র কাবাকে কেন্দ্র করে এর চারপাশে চার ফারসাখ দূরত্বের এলাকাকে হারাম এবং অবশিষ্টকে হিল (حل ) বলে।

১১৫.

اليوم يبدو كله أو بعضه

ممّا بدا منه فلا أحله

আজ প্রকাশিত হচ্ছে এর পুরোটা বা খানিকটা

যা কিছু এর প্রকাশ পেয়েছে আমি তার কিছুই খুলে ফেলব না।"

১১৬. ইবনে আসীরের আল কামিল ফীত তারিখ,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬৬।

১১৭. তারিখে তাবারী,দ্বিতীয় খণ্ড,পৃ. ৪।

১১৮. তারিখে ইবনে আসীর,২য় খণ্ড,প.: ৪;পাদটীকা অংশ।

১১৯. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৭।

১২০. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৬;ইবনে আসীরের আল-কামিল ফীত তারিখ,২য় খণ্ড,পৃ. ৪;সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৮।

১২১. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৬;ইবনে আসীরের আল কামিল ফীত তারিখ,২য় খণ্ড,পৃ. ৪।

১২২. পূর্ববর্তী সূত্র ছাড়াও সীরাতে ইবনে হিশাম,পৃ. ১৬৮;ইমামীয়াহ্ ঐতিহাসিক সূত্র: মানাক্বিব গ্রন্থ ও বিহারুল আনওয়ার,১৫তম খণ্ড,পৃ. ১১৪।

১২৩. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭-৮;সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৫৯।

১২৪. সূরা ত্বাহা : ৪১-৪৩।

১২৫. সূরা মরিয়ম : ১৮-৩২।

১২৬. তারিখে ইয়াকুবী,২য় খণ্ড,পৃ. ৫;বিহারুল আনওয়ার,১৫তম খণ্ড,পৃ. ২৪৮;সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড, পৃ. ৬৪।

১২৭. আল ইমতা’ গ্রন্থের ৩ পৃষ্ঠায় মাকরীযী মহানবীর জন্মদিন,মাস ও সাল সংক্রান্ত যত অভিমত আছে সেগুলো উল্লেখ করেছেন।

১২৮. কাফী,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৩৯।

১২৯. একমাত্র তুরাইহী মাজমাউল বাহরাইন’ গ্রন্থে শারক’ (شرق ) ধাতু সম্পর্কে এমন এক ব্যক্তির উদ্ধৃতি নকল করেছেন যার পরিচয় অজ্ঞাত।

১৩০. মহানবী (সা.) এ সত্যটি নিম্নোক্ত বাক্যের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন,

و إنّ الزّمان قد اشتداز كهيئته يوم خلق السّماوات و الأرض যে বিন্দু থেকে সময়ের সূচনা হয়েছিল সেখানেই (আজ) তা (সময়) ফিরে গেল। আর ঐ বিন্দুটি হলো ঐ দিন যেদিন মহান আল্লাহ্ আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন।”

১৩১. বিহারুল আনওয়ার,১৫তম খণ্ড,পৃ. ২৫২।

১৩২. সীরাতে হালাবী,পৃ. ৯৭।

১৩৩,অন্য এক দল লোকের মতে মহানবীর নাম নয়,বরং এগুলো পবিত্র কোরআনের হুরুফে মুকাত্তায়াতের অন্তর্গত।

১৩৪. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৯৩;কেউ কেউ বিশ্বাস করে যে,طه (ত্বাহা) ওيس (ইয়াসীন) শব্দদ্বয় মহানবীর নামসমূহের অন্তর্গত।

১৩৫.انسان العيون في سيرة الأمين و المأمون গ্রন্থের ১ম খণ্ড,পৃ. ৯৩-১০০।

১৩৬. বিহারুল আনওয়ার,১৫তম খণ্ড,পৃ. ৩৮৪;ইবনে শাহরআশুব প্রণীত মানাকিব,১ম খণ্ড,পৃ. ১১৯।

১৩৭. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৬২-১৬৩।

১৩৮. বিহারুল আনওয়ার,১৫তম খণ্ড,পৃ. ৪৪২।

১৩৯. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ১০৬।

১৪০. বিহার,১৫তম খণ্ড,পৃ. ৩৪৫।

১৪১. মানাকিবে ইবনে শাহরআশুব,১ম খণ্ড,পৃ. ২৪।

১৪২. সূরা আলে ইমরান : ৩২।

১৪৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৬৭।

১৪৪. সূরা আরাফ : ১৫৭।

১৪৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৬৭।

১৪৬. যে ঘরে হযরত আবদুল্লাহর সমাধি অবস্থিত সে ঘরটি কিছুদিন আগেও অর্থাৎ মসজিদুন্নবী চত্বর বিস্তৃত করার পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল,তবে সম্প্রতি চত্বরটি বিস্তৃত করার বাহানায় উক্ত ঘর ধ্বংস এবং সমাধির সকল নিদর্শন মিটিয়ে দেয়া হয়েছে।

১৪৭. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ১২৫।

১৪৮. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৬৮।

১৪৯. তারিখে ইয়াকুবী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭ ও ৮;আবদুল মুত্তালিবের সীরাত এবং তিনি যে তাওহীদবাদী মুমিন ছিলেন এবং মূর্তিপূজক ছিলেন না এ ব্যাপারে আলোচনা করার পর ইয়াকুবী উল্লেখ করেছেন যে,ইসলামী শরীয়তে তাঁর প্রবর্তিত অনেক বিধান স্বীকৃত ও গৃহীত হয়েছে।

১৫০. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৭৯।

১৫১. তারিখে ইয়াকুবী,১ম খণ্ড,পৃ. ১২-এর নাজাফ সংস্করণে বর্ণিত আছে : আবু তালিব এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন নি এবং বনি হাশিমের মধ্য থেকে কোন ব্যক্তিকে তিনি এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করারও অনুমতি দেন নি।

১৫২. হযরত আবু তালিব তাঁর কবিতায় এ সফর সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। ইবনে আসাকিরের ইতিহাস গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ২৬৯-২৭২ পৃষ্ঠায় এবং দীওয়ানে আবু তালিব-এর ৩৩-৩৫ পৃষ্ঠায় দেখুন।

১৫৩. তারিখে তাবারী,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৩ ও ৩৪;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৮০-১৮৩। ইবনে হিশাম ঘটনা প্রবাহটি আমাদের প্রদত্ত বিবরণের চেয়েও আরো বিস্তৃত ও ব্যাপকভাবে বর্ণনা করেছেন;তবে এর সংক্ষিপ্ত বিবরণই আমরা ওপরে বর্ণনা করেছি।

১৫৪. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৯৪।

১৫৫. পবিত্র কোরআন,তাওরাত ও ইঞ্জিলের তুলনামূলক অধ্যয়ন করে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত বিষয়াদি যদি তাওরাত ও ইঞ্জিলের ভাষ্যের সাথে মিলিয়ে দেখা হয় তাহলে প্রাচ্যবিদদের আরোপিত এ অপবাদের বৈজ্ঞানিক ও যৌক্তিক মূল্য পরিপূর্ণরূপে স্পষ্ট হয়ে যাবে। আমরা রাযে বুযুর্গে রিসালাত’ (রিসালাতের সুমহান রহস্য) নামক গ্রন্থে প্রাগুক্ত তুলনামূলক আলোচনা ও মূল্যায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। উক্ত গ্রন্থের ২১৭-২২৩ পৃষ্ঠা অধ্যয়ন করুন।

১৫৬. তাওরাতের সৃষ্টি সংক্রান্ত পুস্তিকায় ২য় ও ৩য় অধ্যায়ে হযরত আদম ও বিবি হাওয়ার কাহিনীটির বিশদ বিবরণ দেয়া হয়েছে।

১৫৭. তাওরাতের ১৮তম অধ্যায়,১-৯ নং বাক্য।

১৫৮. ইউহান্নার ইঞ্জিল,২য় অধ্যায়,১-১১ নং বাক্য।

১৫৯. মথির ইঞ্জিল,২৬ অধ্যায়,২৭ নং বাক্য।

১৬০. সূরা মায়েদাহ্ : ৯০

১৬১. মথির ইঞ্জিল,১২তম অধ্যায়;মার্কের ইঞ্জিল,১৩তম অধ্যায়;লুকের ইঞ্জিল,৮ম অধ্যায়।

১৬২. ইঞ্জিল ও তাওরাতের কুসংস্কারসমূহ উপরিউক্ত উদাহরণগুলোর মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়;এতৎসংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে হলে ফাখরুল ইসলাম প্রণীত আনীসুল ইলাম,আল্লামা বালাগী প্রণীত আল হুদা ইলা দীনিল মুস্তাফা,এ লেখকের অনূদিত গ্রন্থ মারযহায়ে এ’জায (মুজিযার সীমা-পরিসীমাসমূহ) এবং মৎ প্রণীত রাযে বুযুর্গে রিসালাত’ গ্রন্থ অধ্যয়ন করুন।

১৬৩. মুহাম্মদ আবদুহু কর্তৃক সম্পাদিত নাহজুল বালাগাহ্,৩য় খণ্ড,পৃ. ৯২।

১৬৪. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৮৬;আন নিহায়াহ্ গ্রন্থে ইবনে আসীর উপরিউক্ত হাদীসটি উল্লেখ করেছেন এবং তাশদীদ সহকারেأنبّل (উনাব্বিলু) শব্দটি লিপিবদ্ধ করার পর বলেছেন,إذا ناولته النّبل يرمي নিক্ষেপ করার জন্য যখন তার কাছে তীর পৌঁছে দেবে...نبل ধাতু লক্ষ্য করুন।

১৬৫. আবদুহু সম্পাদিত নাহজুল বালাগাহ্,৩য় খণ্ড,পৃ. ২১৪।

১৬৬. সূরা তাওবার ৩৬ নং আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে,উক্ত চার মাসে যুদ্ধ নিষিদ্ধ হওয়ার বিধানটির ধর্মীয় ভিত্তি রয়েছে এবং হযরত ইবরাহীম (আ.)-এর সুন্নাত অনুসরণ করে জাহেলী আরবরা এ বিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করত।

১৬৭. তারিখে কামিল,১ম খণ্ড,পৃ. ৯৫৮ ও ৯৫৯;সীরাতে ইবনে হিশাম,পাদটীকা,১ম খণ্ড,পৃ. ১৮৪।

১৬৮. আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্,২য় খণ্ড,পৃ. ২৯২।

১৬৯. যুবাইর রচনা করেছেন :

إنّ الفضول تعاقدوا و تحالفوا

ألّا يقيم ببطن مكّة ظالم

أمر عليه تعاقدوا و تواثقوا

فالجار و المعتر فيهم سالم

 “ সাধু-সজ্জনগণ পরস্পর প্রতিজ্ঞা ও চুক্তি করেছে

যে মক্কার বুকে যেন কোন জালেম না থাকে

এমন একটি বিষয় যার ওপর তারা করেছে চুক্তি,

পরস্পরের ওপর করেছে আস্থা স্থাপন

তাই তো প্রতিবেশী ও আগন্তুক তাদের মাঝে নিরাপদ।

১৭০. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ১৫৫-১৫৭।

১৭১. সাফিনাতুল বিহার, নবী’ ধাতু।

১৭২. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৬৬।

১৭৩ হালাবী ও যাইনী দাহলানের মতো কতিপয় সীরাত রচয়িতা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পশুচারণের অন্তর্নিহিত দর্শন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফতহুল বারী গ্রন্থের লেখকের অভিমত অনুসরণ করে এমন সব কথা বলেছেন যা যৌক্তিক নীতিমালার সাথে মোটেও খাপ খায় না। মহানবী (সা.)-এর পশুচারণের বিষয়টি যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে এর কারণসমূহ হচ্ছে ঐগুলো যা ওপরে উল্লিখিত হয়েছে।)

১৭৪.   বিহারুল আনওয়ার,১৬তম খণ্ড,পৃ. ২২।

১৭৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৫৮;ইবনে আসীরের আল কামিল ফীত তারিখ,২য় খণ্ড,পৃ. ২৪।

১৭৬. বিহারুল আনওয়ার,১৬তম খণ্ড,পৃ. ২২।

১৭৭. তারিখে ইয়াকুবী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৬,নাজাফ সংস্করণ।

১৭৮. আল খারায়েজ,পৃ. ১৮৬;বিহার ১৬তম খণ্ড,পৃ. ৪।

১৭৯  তাবাকাতে কুবরা,১ম খণ্ড,পৃ. ১৩০,দারু সাদের কর্তৃক মুদ্রিত।

১৮০. বিহার,১৬তম খণ্ড,পৃ. ১৮।

১৮১. নাহজুল বালাগাহ্,খুতবাতুল কাসেআহ্।

১৮২. উসদুল গাবাহ্, আফীফ’ ধাতু।

১৮৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬।

১৮৪. বিহারুল আনওয়ার,১৬তম খণ্ড,পৃ. ১৯।

১৮৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২০৪।

১৮৬. প্রসিদ্ধি আছে যে,খাদীজার পিতা (খুওয়াইলিদ বিন আসাদ) ফিজার যুদ্ধে প্রাণত্যাগ করেছিলেন। এ কারণেই তাঁর চাচা তাঁর পক্ষ থেকে বিয়ের আক্দ-এর সীগাহ্ (নির্দিষ্ট ফর্মুলা) পাঠ করেছিলেন;এ কারণেই কতিপয় ঐতিহাসিক লিপিবদ্ধ করেছেন যে,খুওয়াইলিদ প্রথমে এ বিবাহে রাজী ছিলেন না;কিন্তু পরে তিনি খাদীজার তীব্র আগ্রহের কারণে রাজী হতে বাধ্য হয়েছিলেন-এটি সর্বৈব ভিত্তিহীন বলেই গণ্য।

১৮৭. মানাকিব,১ম খণ্ড,পৃ. ৩০;বিহারুল আনওয়ার,১৬তম খণ্ড,পৃ. ১৬;

 ثمّ إن ابن أخي هذا محمّد بن عبد الله (ص) لا يوازن برجل من قريش و لا يقاس باحد منهم الأعظم منه و ان كان في المال مقلّا فإن المال و ظل زائل

১৮৮. এটিই প্রসিদ্ধ যে,ওয়ারাকাহ্ ছিলেন খাদীজার চাচা। কিন্তু এ ব্যাপারে গবেষণা ও অনুসন্ধানের অবকাশ রয়েছে। কারণ খাদীজাহ্ খুওয়াইলিদের কন্যা এবং খুওয়াইলিদ আসাদের পুত্র। কিন্তু ওয়ারাকাহ্ নওফেলের পুত্র এবং নওফেল আসাদের পুত্র। অতএব,খাদীজাহ্ ও ওয়ারাকাহ্ উভয়ই পরস্পর চাচাতো ভাই-বোনই হবেন অর্থাৎ একজন চাচা ও অপর জন ভ্রাতুষ্পুত্রী ছিলেন না।

১৮৯. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ১২৩।

১৯০. ইবনে শাহরআশুবের মানাকিব,১ম খণ্ড,পৃ. ১৪০;কুরবুল আসনাদ,পৃ. ৬ ও ৭;আল খিসাল,২য় খণ্ড,পৃ. ৩৭;বিহারুল আনওয়ার,২২তম খণ্ড,পৃ. ১৫১ ও ১৫২। কেউ কেউ মহানবীর পুত্রসন্তানদের সংখ্যা দু য়ের অধিক বলেছেন,দ্র. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৩৫;বিহারুল আনওয়ার,২২তম খণ্ড,পৃ. ১৬৬।

১৯১. শেখ তূসী প্রণীত আমালী,পৃ. ২৪৭।

১৯২. হায়াতে মুহাম্মদ,পৃ. ১৮৬।

১৯৩. আল ইসাবাহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ৫৪৫;উসদুল গাবাহ্,২য় খণ্ড,পৃ. ২২৪।

১৯৪.ما حجر نطوف به لا يسمع و لا يبصر و لا يضر و لا ينفع -সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২২২ ও ২২৩।

১৯৫. ইবনে হিশাম তাঁর সীরাত গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ২২৬-২২৮ পৃষ্ঠায় দীনে হানীফের অনুসারীদের তাওহীদ সংক্রান্ত কবিতার উদ্ধৃতি দিয়েছেন;যাইদ ইবনে আমরের কবিতার শুরুতে রয়েছে :

أربّا واحدا أم ألف ربّ

أدين إذا تفسّمت الأمور

আমি কি এক-অদ্বিতীয় প্রভু কিংবা সহস্র প্রভুর প্রতি হব বিনয়াবনত

যখন (জগতের) সব বিষয় (হয়েছে) সুবিন্যস্ত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ।

১৯৬. হুবাইরাহ্ ইবনে ওয়াহাব আল মাখযূমী এ ঘটনাটি তাঁর নিম্নোক্ত কাসীদায় বর্ণনা করেছেন :

رضينا و قلنا العدل أوّل طالع

يجيئ من البطحاء من غير موعد

ففاجأنا هذا الأمين محمّد

فقلنا : رضينا بالأمين محمّد

بخير قريش كلّها أمس شيمة

و في اليوم مع ما يُحدث الله في غد

فجاء بأمر لم ير النّاس مثله

أعمّ و أرضى في العواقب و البدّ

و تلك يد منه علينا عظيمة

يروب لها هذا الرمان و يعتدي

আমরা মেনে নিলাম ও বললাম : সে-ই হবে মধ্যস্থতাকারী যে প্রথম

বাত্হা থেকে কোন (পূর্ব নির্ধারিত) প্রতিজ্ঞা ছাড়াই এখানে প্রবেশ করবে

আমাদের সামনে হঠাৎ এই আমীন (বিশ্বস্ত) মুহাম্মদ উপস্থিত হলেন

(তাঁকে দেখে) আমরা সবাই বলে উঠলাম : আমরা বিশ্বস্ত মুহাম্মদকে

মীমাংসাকারী হিসাবে মানতে রাজী

যিনি আজ এবং ভবিষ্যতে (সর্বযুগে) চরিত্র-গুণে কুরাইশদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ,

তিনি এমন এক সমাধান দিলেন জনগণ

কখনই এর নজির প্রত্যক্ষ করে নি ইতিপূর্বে

তার এ সমাধানটি ছিল সর্বজনীন এবং সবাইকে করেছিল সন্তুষ্ট

আর এটা তাঁর (পক্ষ) থেকে আমাদের ওপর (তাঁর) সুমহান অবদান ও করুণা।

দ্র. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২১২-২৩২;আল কাফী,৩য় খণ্ড,পৃ. ২১৭;এখানে সবচেয়ে লক্ষণীয় ও আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে,পবিত্র কাবাগৃহ নির্মাণ কাজ শুরু করার সময় ঘোষণা করা হয়েছিল :

لا تدخلوا في بنيانها من كسبكم إلّا طيّبا و لا تدخلوا فيها مهر بغي و لا بيع ربا و لا مظلمة أحد من النّاس

“পবিত্র কাবা নির্মাণ কাজে আপনাদের যে আয়-উপার্জন হালাল কেবল তা থেকেই ব্যয় করবেন;যে সব অর্থ অসৎ কাজ,হারাম ব্যবসা,সুদ অথবা জোর-জুলুম করে উপার্জন করা হয়েছে সে অর্থও কাবা নির্মাণ কাজে ব্যয় করতে পারবেন না।”নিশ্চিতভাবে এ সব বিষয় মহান নবীদের থেকে যাওয়া সুমহান আদর্শ ও শিক্ষামালার অন্তর্ভুক্ত যা তখনও জনগণের মধ্যে বিদ্যমান ছিল।

১৯৭. মাকাতিলুত তালিবীয়ীন,পৃ. ২৬;তারিখে কামিল,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৭;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৩৬।

১৯৮. নাহজুল বালাগাহ্,খুতবা ১৯০।

১৯৯. তারিখুল খামীস,১ম খণ্ড,পৃ. ২৫৮।

২০০. নাহজুল বালাগাহ্,আবদুহু সংকলিত,খুতবা নং ১৯০;ফাইযুল ইসলাম সংকলিত নাহজুল বালাগাহ্,পৃ. ৭৭৫।

২০১. প্রাগুক্ত।

২০২. নবুওয়াতের আগে মহানবীর ধর্ম সম্পর্কে যাঁরা অধ্যয়ন করতে চান তাঁরা নিম্নোক্ত গ্রন্থগুলো অধ্যয়ন করতে পারেন :

ক. আয-যারীআহ্ : সাইয়্যেদ মুরতাজা আলামুল হুদা প্রণীত (জন্ম ৩৫৫ হি. ও মৃত্যু ৪৩৬ হি.)

খ. আল-ইদ্দাহ্ : মুহাম্মদ বিন হাসান তূসী প্রণীত (জন্ম ৩৮৫ হি. মৃত্যু ৪৬০ হি.)

গ. বিহারুল আনওয়ার,১৮তম খণ্ড,পৃ. ২৭১-২৮১ : আল্লামা বাকের আল মাজলিসী (মৃত্যু ১১১০ হি.) কর্তৃক সংকলিত।

২০৩. হেদায়েতে তাকভীনী : অস্তিত্বজগতে প্রতিটি বস্তু,পদার্থ ও প্রপঞ্চের অস্তিত্বের সুষ্ঠু বিকাশের যাবতীয় উপায়-উপকরণ নির্ধারণ ও সে দিকে সেগুলোকে পরিচালিত করা।

২০৪. এ বিষয়টি নিম্নোক্ত আয়াত থেকেও স্পষ্ট হয়ে যায়। আয়াতটি হলো :

كان النّاس أمّة واحدة فبعث الله النّبيّين مبشّرين و منذرين و أنزل معهم الكتاب بالحقّ ليحكم بين النّاس فيما اختلفوا فيه

“মানব জাতি অবিভক্ত একক জাতি ছিল;তাই মহান আল্লাহ্ নবীদেরকে সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারী হিসাবে প্রেরণ করেছেন এবং যে সব ক্ষেত্রে জনগণ মতবিরোধ করেছে সে সব ক্ষেত্রে ফায়সালা করার জন্য সত্যসহ ঐশী গ্রন্থও তাঁদের (নবীদের) সাথে অবতীর্ণ করেছেন।” (সূরা বাকারাহ্ : ২১২)

২০৫. নাহজুল বালাগাহ্,ভাষণ ১।

২০৬. সহীহ বুখারী,১ম খণ্ড,ইলম (জ্ঞান) অধ্যায় পৃ. ৩;বিহারুল আনওয়ার,১৮তম খণ্ড,পৃ. ১৯৪।

২০৭. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৩৬;সহীহ আল বুখারী,১ম খণ্ড,পৃ. ৩;হাদীসের এ অংশটি যা আমরা এখানে বর্ণনা করেছি তা সহীহ (সত্য) ও নির্ভুল। তবে এ হাদীসের নিচে পাদটীকায় কোন শোভাবর্ধক বাড়তি বর্ণনা নেই;আর যদি থেকে থাকে তাহলে তা অবশ্যই প্রত্যাখ্যাত বলে গণ্য হবে। আমরা মাফাহীমুল কোরআন গ্রন্থের ৩য় খণ্ডে সনদ ও মতনের (মূল পাঠ) দিক থেকে এ হাদীস প্রসঙ্গে আলোচনা করেছি।

২০৮. এ সব দলিল-প্রমাণের বিস্তারিত বিবরণ ইশারাত ও আসফারের মতো দর্শনশাস্ত্রের গ্রন্থাবলীতে পাঠ করে দেখুন। এ সব দলিল-প্রমাণের মধ্যে কয়েকটি মৎ প্রণীত পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতে আত্মার মৌলিকত্ব’ এবং ইসলামী বিশ্বদৃষ্টি’ গ্রন্থদ্বয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। আগ্রহী পাঠকদেরকে উক্ত গ্রন্থদ্বয় অধ্যয়ন করার অনুরোধ করা হচ্ছে।

২০৯. আমরা যদি বলি, সম্ভব’,তাহলে তা এজন্য যে,এ ধরনের ইলহামসমূহের উৎস স্পষ্ট নয়;আর অন্তঃকরণের ওপর যে কোন ধরনের আকস্মিক প্রক্ষিপ্ত ও অনুপ্রবিষ্ট বিষয়াদি যেগুলোর উৎসমূল অজ্ঞাত সেগুলোর ওপর নির্ভর করা যায় না। অন্যভাবে বলা যায় যে,মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে ইলহাম এবং শয়তানের পক্ষ থেকে ইলহামের মধ্যে অবশ্যই শরীয়তভিত্তিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক মূলনীতিসমূহের আলোকে পার্থক্য করতে হবে।

২১০. বিহারুল আনওয়ারের ১৮তম খণ্ড,পৃ. ১৯৩,১৯৪,২৫৫ ও ২৫৬ অধ্যয়ন করে দেখুন।

২১১.( نزل به الرّوح الأمين على قلبك لتكون من المنذرين بلسان عربيّ مبين )   -সূরা শুআরা : ১৯৫। আর সূরা শুরায় উপরিউক্ত সকল পথ ও পদ্ধতি সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। আর এতদ্প্রসঙ্গে রিসালাতে জাহানীয়ে পিয়াম্বারান’ (মহান নবীদের বিশ্বজনীন রিসালাত) গ্রন্থ অধ্যয়ন করতে পারেন।

২১২. মাজমাউল বায়ান,১০ম খণ্ড,পৃ. ৩৮৪।

২১৩. তাবাকাতে ইবনে সা দ,১ম খণ্ড,পৃ. ২৭৯;হায়াতু মুহাম্মদ (সা.),১ম খণ্ড,পৃ. ১৯৫।

২১৪. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ২০৫।

২১৫. তাফসীরে তাবারী,৩০তম খণ্ড,পৃ. ১৬১,সূরা আলাকের ব্যাখ্যা এবং সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৩৮।

২১৬. সূরা ত্বাহা : ২৯।

২১৭.هذا النّاموس الّذي أنزل على موسى بن عمران - সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৩৮;মরহুম আল্লামা মাজলিসী বিহারুল আনওয়ার গ্রন্থের ১৮তম খণ্ডের ২২৮ পৃষ্ঠায় আল মুনতাকা গ্রন্থ থেকে এবংو عيسى এবং ঈসা শব্দও বর্ণনা করেছেন;তবে এ কাহিনীর উৎস সহীহ বুখারী ও সীরাতে ইবনে হিশামেو عيسى   শব্দটির উল্লেখ নেই।

২১৮.إنّ الله اتّخذ عبدا رسولا أنزل عليه السّكينة و الوقار فكان الّذي يأتيه من قبل الله مثل الّذي يراه بعينه -বিহারুল আনওয়ার,১১তম খণ্ড,পৃ. ৫৬।

২১৯. মাজমাউল বায়ান,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৮৪।

২২০. লওহে মাহফূয ও বাইতুল মামূর সংক্রান্ত ব্যাখ্যা জানার জন্য আগ্রহী পাঠকবর্গকে তাফসীরের গ্রন্থসমূহ অধ্যয়ন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

২২১. মানাহিলুল ইরফান ফী উলূমুল কোরআন,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৭।

২২২. আল মীযান,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪-১৬।

২২৩.( لا تعجل بالقرآن من قبل أن يُقضى إليك وحيه ) আপনার প্রতি ওহী (অবতীর্ণ) করার আগেই পবিত্র কোরআনের ব্যাপারে ত্বরা করবেন না”-সূরা ত্বাহা : ১১৪।

২২৪. বিহারুল আনওয়ার,১৮তম খণ্ড,পৃ. ১৮৪-১৯০,১৯৩,২৫৩;আল কাফী,২য় খণ্ড,পৃ. ৪৬০;তাফসীর-ই আইয়াশী,১ম খণ্ড,পৃ. ৮০;এ উত্তরটি সহীহ আল বুখারীতে যা বর্ণিত হয়েছে অর্থাৎ সূরা আলাকের নুযূল এবং মহানবীর বেসাত একই সাথে সংঘটিত হওয়ার সেই বর্ণনার সাথে মোটেও সংগতিশীল নয়।

২২৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৪০।

২২৬. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৩৬;এ ঘটনাটি মহানবীর নবুওয়াতে অভিষেকপূর্ব ঘটনাবলী সংক্রান্ত  অধ্যায়েও বর্ণিত হয়েছে।

২২৭. শেখ মুহাম্মদ আবদুহু সম্পাদিত নাহজুল বালাগাহ্,২য় খণ্ড,পৃ. ১৮২;মিশর থেকে মুদ্রিত এবং তিনি ঐ একই  খুতবায় বলেছেন,اللّهمَّ إنّي أوّلَ مَنْ أناب وسمِعَ وأجابَ لم يسبِقْني إلّا رسولُ اللهِ بالصّلاةِ হে আল্লাহ্! নিশ্চয়ই আমি সর্বপ্রথম ব্যক্তি যে তওবা করেছে,শুনেছে এবং আহ্বানে সাড়া দিয়েছে এবং নামায পড়ার ক্ষেত্রে একমাত্র রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ব্যতীত আর কোন ব্যক্তিই আমার চেয়ে অগ্রগামী হতে পারে নি।”

২২৮. আল ইসাবাহ্,২য় খণ্ড,পৃ. ৪৮০;তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ২১১;আল কামিল ফীত তারীখ,২য় খণ্ড,পৃ. ৩৭ ও ৩৮;আ লামুল ওয়ারা,পৃ. ২৫;এবং উসদুল গাবাহ্,৩য় খণ্ড,পৃ. ৪১৪।

২২৯. কোন কোন বর্ণনায় পাঁচ বছরের উল্লেখ আছে। আর অগণিত দলিল ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায় যে,এ বছরগুলোর মধ্যে কয়েকটি বছর মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতের অভিষেকেরও আগে ছিল। অর্থাৎ নবুওয়াতে অভিষেকের আগেও কয়েক বছর হযরত আলী (আ.) মহানবী (সা.)-এর সাথে মহান আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগী করেছেন।

২৩০. আল গাদীর গ্রন্থে এ সব ব্যক্তির নাম বর্ণিত হয়েছে।

২৩১. ইকদুল ফারীদ,৩য় খণ্ড,পৃ. ৪৩।

২৩২. তাফসীর-ই রুহুল মাআনী,৩০তম খণ্ড,পৃ. ১৫৭;সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৪৯-৩৫০।

২৩৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩০০-৩০১।

২৩৪. তাফসীরে কুরতুবী,১০ম খণ্ড,পৃ. ৭১-৮৩;সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ.৩৪৯।

২৩৫. প্রাগুক্ত।

২৩৬. তাফসীরে রূহুল মাআনী,৩০তম খণ্ড,পৃ. ১৫৭।

২৩৭. তাফসীরে তাবারীর টীকা সম্বলিত গোরায়েবুল কোরআন’ (পবিত্র কোরআন সংক্রান্ত আশ্চর্যজনক বিষয়াদি) নামক গ্রন্থ;তাফসীরে আবুল ফাতূহ,১২শ খণ্ড,পৃ. ১০৮।

২৩৮. মাজমাউল বায়ান,১০ম খণ্ড,সূরা আদ দুহার তাফসীর।

২৩৯. তাফসীরে তাবারী,৩য় খণ্ড,পৃ. ২৫২।

২৪০. যানজানী প্রণীত তারীখুল কোরআন,পৃ. ৫৮।

২৪১. পবিত্র কোরআনের পর্যায়ক্রমিক অবতরণের রহস্যসমূহ সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হওয়ার জন্য খিমা-ই ইনসানে কামেল দার কোরআন’ (পবিত্র কোরআনে ইনসানে কামিলের স্বরূপ) নামক গ্রন্থের ১৪০-১৫০ পৃষ্ঠা অধ্যয়ন করুন।

২৪২. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড;পৃ. ২৪৫-২৬২।

২৪৩. তারীখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৬১। 

২৪৪. গৃহটি সাফা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ছিল এবং কিছুকাল আগেও তা খাইযুরান’-এর গৃহ নামে প্রসিদ্ধ ছিল।-সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬৩ এবং সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৩১৯।

২৪৫. একজন কাজার সুলতান যখন তিনি ইংল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন।

২৪৬. আমরা সর্বসাধারণ পর্যায়ে মহানবী (সা.)-এর ইসলাম ধর্ম প্রচার কার্যক্রমের ব্যাপারে আগামী অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

২৪৭. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৩২১।

২৪৮. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৬২-৬৩;তারিখে কামিল,২য় খণ্ড পৃ. ৪০-৪১;মুসনাদে আহ্মাদ,১ম খণ্ড,পৃ. ১১১ এবং ইবনে আবিল হাদীদ প্রণীত শারহু নাহজিল বালাগাহ্,১৩শ খণ্ড,পৃ. ২১০-২২১।

২৪৯. শারহু নাহ্জিল বালাগাহ্,ইবনে আবিল হাদীদ প্রণীত,মিশরীয় সংস্করণ,১৩শ খণ্ড,পৃ. ২১৫-২৯৫।

২৫০.إنّما مثلي و مثلكم كمثل رجل رأى العدوّ فانطلق يريد أهله فخشى أن يسبقوه إلى أهله فجعل يصيح يا صباحاه -সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৩২১।

২৫১. এ সব ব্যক্তির নাম ও বিশেষত্ব ইবনে হিশাম তাঁর সীরাত গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।

২৫২. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬৫ :

يا أبا طالب إن ابن أخيك قد سبّ آلهتنا و عاب ديننا و سفه احلامنا و ضلّل آباءنا فأمّا ان تكفّه عنا و أمّا ان  تخلي بيننا و بينه

২৫৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬৫-২৬৬।

২৫৪.لبئس ما تسومونني أتعطوني ابنكم أغذوه لكم و أعطيكم إبني تقتلوننه -তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৬৭-৬৮ এবং সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৬৬-২৬৭।

২৫৫.يعطوني كلمة يملكون بها العرب و يدين لهم بها غير العرب

২৫৬.تشهدون : أن لا إله إلّا الله

২৫৭.ندع ثلاث مأة و ستّين إلها و نعبد إلها واحدا

২৫৮. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৬৬-৬৭;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৯৫-২৯৬।

২৫৯.فضربه بها فشجه شحة منكرة ثمّ قال أ تشتمه فأنا على دينه أقول ما يقول فردّ ذلك عليّ إن استطعت

২৬০. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩১৩;তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭২।

২৬১. আল কামিল ফীত তারিখ,৩য় খণ্ড,পৃ. ৫৯।

২৬২. আল বিদায়াহ্ ওয়ান নেহায়া,৩য় খণ্ড,পৃ. ২৬।

২৬৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩১;তাবারী খলীফা আবু বকরের মাথা ফেটে যাবার পুরো ঘটনা তাঁর ইতিহাস গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৭২ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন।

২৬৪. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩১৭।

২৬৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৯৮-২৯৯।

২৬৬. আল কামিল ফীত তারীখ,২য় খণ্ড,পৃ. ৪৭।

২৬৭. বিহারুল আনওয়ার,১৮তম খণ্ড,পৃ. ২০৪।

২৬৮. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড পৃ. ৩১৮।

২৬৯. তাবাকাতে ইবনে সা দ,৩য় খণ্ড,পৃ. ২৩৩;হযরত বিলালের ধৈর্য ও সাহসিকতার ব্যাপারে অধিক তথ্য পাওয়ার জন্য মাকতাবে ইসলাম,৯ম বর্ষ,৫ম থেকে ৭ম সংখ্যায় মহানবী (সা.)-এর মুয়াযযিন বিলাল হাবাশী প্রবন্ধ দ্রষ্টব্য।

২৭০. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩১৪।

২৭১. উসদুল গাবাহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ৩০১;আল ইসাবাহ্,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ৬৪;আল ইস্তিয়াব,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ৬২।

২৭২.السّابقون السّابقون أُولئك المقرَّبون যারা অগ্রগামী-অগ্রবর্তী এবং প্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী তারাই (মহান আল্লাহর) নিকটবর্তী।”-সূরা ওয়াকিয়াহ্ : ১০-১১;

) و السّابقون الأوّلون من المهاجرين و الأنصار و الّذين اتبعوهم بإحسان رضي الله عنهم و رضوا عنه و أعدّلهم جنّات تجري من تحتها الأنهار خالدين فيها أبدا ذالك الفوز العظيم(

“আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে অগ্রবর্তী ও সর্বপ্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী এবং যারা তাদেরকে ইহ্সানের সাথে অনুসরণ করেছে তাদের প্রতি মহান আল্লাহ্ সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তিনি তাদের জন্য এমন সব জান্নাত প্রস্তুত করে রেখেছেন যেগুলোর তলদেশ দিয়ে নহর ও ঝরনাসমূহ প্রবাহিত সেখানে তারা চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবে। আর এটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সাফল্য।”-সূরা তওবা : ১০০।

২৭৩. হুলইয়াতুল আউলিয়া,১ম খণ্ড,পৃ. ১৫৮-১৫৯;ইবনে সা দের তাবাকাত,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ২২৫;আল ইসতিয়াব,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ৬৩;আল ইসাবাহ্,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ৬৪;আদ দারাজাতুর রাফীয়াহ্,পৃ. ২২৮।

২৭৪. মক্কার মূর্তিপূজকগণ যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করত তাদেরকে সায়েবী’ হয়ে গেছে বলে অভিযুক্ত করত।

২৭৫. ইবনে সা দের তাবাকাত,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ২২৩।

২৭৬. তাবাকাতে ইবনে সা দ,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ২২১-২২২;আদ-দারাজাতুর রাফীআহ্,পৃ. ২২৫-২২৬ এবং ২২৯-২৩০।

২৭৭. আল কামিল ফীত তারীখ,২য় খণ্ড,পৃ. ৪৭-৫১;উসদুল গাবাহ্;আল ইসাবাহ্;আল ইসতিয়াব।

২৭৮. মুজিযার প্রকৃত স্বরূপ সম্পর্কে রিসালাতে আসমানীয়ে পায়াম্বারান’ (মহান আম্বিয়া-ই-কেরামের আসমানী রিসালাত) নামক গ্রন্থ এবং পবিত্র কোরআনের অলৌকিকত্বের স্বরূপ সম্পর্কে রিসালাতের দলিল’ নামক গ্রন্থ অধ্যয়ন করুন।

২৭৯. আলামুল ওয়ারা,পৃ. ২৭-২৮;বিহারুল আনওয়ার,১৭তম খণ্ড,পৃ. ২১১-২২২।

২৮০. মাজমাউল বায়ান,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৮৭।

২৮১. আল্লামা শাহরিস্তানী তাঁর আল মুজিযাতুল খালিদাহ্’ (চিরস্থায়ী মুজিযা) নামক গ্রন্থে (পৃ. ৬৬) উল্লেখ করেছেন।

২৮২. তাফসীরে তিবইয়ান,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃ. ৫১৯।

২৮৩. সূরা ইসরা : ৯০

২৮৪. সূরা যুখরুফ : ৩২।

২৮৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৬১।

২৮৬. প্রাগুক্ত,পৃ. ৩১৬।

২৮৭. বর্তমানকালের ইথিওপিয়া।

২৮৮.إنّ أرضي واسعة فإيّاي فاعبدون

২৮৯. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩২১;তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭০।

২৯০. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭০।

২৯১. তারিখে কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৫২-৫৩।

২৯২. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২২২-৩২৩ :

كلّ أمرئ من عباد الله مضطهد

ببطن مكة مقهور و مفتون

انا وجدنا بلاد الله واسعة

تنجي من الذل و المخزاة و الهون

فلا تقيموا على ذل الحياة وخز

ي في الممات و عيب غير مـأمون

২৯৩. পবিত্র কাবাঘরের পাশে একটি জায়গা দারুন নাদওয়া’ বলে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। কুরাইশরা সেখানে নিজেদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা ও পরামর্শ করত।

২৯৪. আত তারিখ আল কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৫৪-৫৫;তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৩।

২৯৫.هو عبد الله و رسوله و روحه و كلمته القاها إلى مريم البتول العذراء

২৯৬. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৩৮;ইমতাউল আসমা,পৃ. ২১।

২৯৭. প্রাগুক্ত,পৃ. ৩৭১।

২৯৮. প্রাগুক্ত,পৃ. ৩৮২-৩৯২;এতদ্প্রসঙ্গে সূরা কাসাসের ৫২-৫৩ নং আয়াতসমূহ অবতীর্ণ হয়েছিল।

২৯৯. প্রাগুক্ত,পৃ. ৩০০-৩০১।

৩০০. গণক বা জ্যোতিষী ঐ ব্যক্তিকে বলা হতো জ্বিন যার বশীভূত ছিল এবং যার কণ্ঠে কথা বলত। এ ধরনের ব্যক্তিদের কথাগুলো ছিল প্রধানত ছন্দময়। আর তারা অদ্ভুত ও অভিনব শব্দগুলোই বেশি ব্যবহার করত।

৩০১. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ২৭০।

৩০২. মাজমাউল বায়ান,১০ম খণ্ড,পৃ. ৩৮৭।

৩০৩. ইউহান্নার ইঞ্জিল,অধ্যায় ১০,ছত্র-২০ এবং অধ্যায় ৭,ছত্র ৪৮ ও ৫২।

৩০৪. পূববর্তী আয়াতসমূহ যেভাবে এখানে অনূদিত হয়েছে তদনুসারে শব্দ ও আয়াতসমূহের সর্বনাম পদগুলোর ক্ষেত্রে যে সূক্ষ্মদৃষ্টি আরোপ করা হয়েছিল সেটারই ফলাফল। অতএবشديد القوى এর কাক্সিক্ষত অর্থ ওহীর ফেরেশতা (জিবরাইল) এবংفاستوى وهو بالأفق الأعلى অতঃপর তিনি নিজ আকৃতিতে প্রকাশ পেলেন,উর্ধ্ব দিগন্তে-এ আয়াতটির সকল সর্বনামপদ ওহীর ফেরেশতার দিকেই প্রত্যাবর্তন করে। ঠিক তেমনিأوحى (ওহী বা প্রত্যাদেশ করলেন) এ সর্বনাম পদ (তিনি) ফেরেশতার দিকে,عبده (তাঁর বান্দার প্রতি) এর সর্বনাম (তাঁর) মহান আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করে। এ সব আয়াতের মধ্য থেকে এ অংশটির ব্যাখ্যায় কতিপয় মুফাস্সির ভুল করেছেন এবং এমন ব্যাখ্যা করেছেন যা সত্য থেকে বহুদূর। এ কারণেই কখনো কখনো তাঁরা এ ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন ও বিশ্বাস করে নিয়েছেন যে,মহানবী (সা.),মহান আল্লাহ্কে দেখেছেন। যদিأوحى এবংعبده এর সর্বনামের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি তাহলে আয়াতের অর্থ অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে যাবে।

৩০৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩০০।

৩০৬. প্রাগুক্ত,পৃ. ৩৬৩।

৩০৭. মাজমাউল বায়ান,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৩৭;সূরা আবাসার তাফসীরে তাফসীরুল মীযানের ২০তম খণ্ডে আল্লামা তাবাতাবাঈ মনোজ্ঞ ও সাবলীল ভাষায় সূরাটির শানে নুযূল ব্যাখ্যা করেছেন এবং প্রমাণ করেছেন যে,عبس (ভ্রুকুটি করল)-এ ক্রিয়াপদের কর্তাপদ স্বয়ং মহানবী (সা.) নন;তবেوما يدريك (আর আপনি কি জানেন না যে...)-এ আয়াতটিতে মহানবী (সা.)-কেই সম্বোধন করা হয়েছে। আর এ দু টি বিষয়ের মধ্যে কোন বৈপরীত্য নেই।

৩০৮. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৩৭।

৩০৯. আ শার সেই কাসীদাটি থেকে কয়েকটি পঙ্ক্তি এখানে উদ্ধৃত করা হলো :

نبيا يرى مالا يرون و ذكره

اغار لعمرى في البلاد وانجدا

فإياك والميتات لا تقربنها

ولا تأخذن سهماً حديداً التفصدا

وذا النصب المنصوب لا تنسكنه

ولا تعبد الاوثان والله فاعبدا

ولا تقربن حرة كان سرها

عليك حراماً فانكحن او تابدا

وذا الرحم القربى فلا تقطعنه

لعاقبة ولا الأسير المقيدا

وسبع على حين العشيات والضحى

ولا تحمد الشيطان والله فأحمدا

৩১০. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৮৬-৩৮৮।

৩১১. গারানিক (غرانيق ) শব্দটি গিরনাওক (غرنوق ) অথবা গারনিক-এরই বহুবচন যার অর্থ হচ্ছে এক ধরনের গাংচিল অথবা সুদর্শন যুবক।

৩১২.فاسجدوا لِلّه واعبدوا -যা হচ্ছে সূরাটির সর্বশেষ আয়াত।

৩১৩. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৫-৭৬।

৩১৪. এ শূন্যস্থানে  تلك الغرانيقُ العلى ও منها الشّفاعةُ ترتَجى -এ দু বাক্যের অনুবাদ রাখা হলে নিশ্চিতভাবে দেখতে পাবেন যে,এর ফলে তা আদ্যোপান্ত স্ব-বিরোধিতায় পূর্ণ হয়ে যাবে। অনুবাদ : এগুলো (লাত,উয্যা ও মানাত) হচ্ছে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন বলাকা (সুন্দর যুবা);এগুলো থেকে কেবল শাফায়াতই প্রত্যাশা করা যায়।

৩১৫. সূরা হজ্ব ৫২ নং আয়াত।

৩১৬. সূরা হজ্ব ৫৩ নং আয়াত।

৩১৭. সূরা হজ্ব ৫৪ নং আয়াত।

৩১৮. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৫০;তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৮। এই চুক্তিটি নবুওয়াতের সপ্তম বর্ষের প্রথম রাতে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।

৩১৯. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৭৪;তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৯।

৩২০. তারিখে ইয়া’কুবী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৯;তারিখে কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৬১;তাবাকাতে ইবনে সা দ,১ম খণ্ড,পৃ. ২০৮-২১০।

৩২১. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৭৪-৩৮০।

৩২২. আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী তাঁর প্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থে লিখেছেন : এই গায়েবী তথ্য এতটা সত্য ও দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত ছিল এবং আছে যে,এ মুহূর্তেও হযরত ফাতিমাতুয্ যাহরা (আ.)-এর বংশধরগণ পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছেন,যদিও তাঁদের মধ্য থেকে বেশ কিছুসংখ্যক ব্যক্তি বিভিন্ন ঘটনায় নিহতও হয়েছেন। হযরত যাহরা (আ.)-এর মাধ্যমে মহানবী (সা.)-এর বংশধারা পৃথিবীর সকল অঞ্চলে বিস্তৃতি লাভ করেছে।-দ্র. মাফাতিহুল গাইব,৩০তম খণ্ড,সূরা কাওসারের ব্যাখ্যা।

৩২৩. ২৪০ পৃষ্ঠা সম্বলিত এ বইটি বৈরুত থেকে প্রকাশিত হয়েছে। প্রখ্যাত লেবাননী কবি বোলিস সালামাহ্ এ পুস্তকটির ওপর একটি সমালোচনা লিখেছেন।

৩২৪.নজদী সৌদি বংশের নামে হিজায, নজদ তিহামাহ- তিনটি অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে এবং বিস্তীর্ণ ভূ- ভাগ المملكة العربية السعودية Royal Kingdom of Saudi Arabia ’নামে পরিচিত হয়েছে। দেখুন একচেটিয়া প্রাধান্য আধিপত্য কতদূর সীমাতিক্রম করেছে।

৩২৫. মহান শ্রদ্ধেয় শিয়া আলেম ও মারজাদের কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে এ যুবক অবশেষে সৌদি কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেছেন এবং কিছুদিন আগে তিনি যিয়ারত ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য পবিত্র কোম নগরীতে এসেছিলেন। একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে কিছু বন্ধু একত্র হলে সেখানে তাঁর সাথে লেখকেরও সাক্ষাৎ হয়েছিল। তিনি তখন তাঁর মূল্যবান গ্রন্থ সম্পর্কে বেশ কিছু কথা বলেছিলেন।

৩২৬. কখনো কখনো বলা হয় যে,একটি যিয়ারতনামায় (যা দূর থেকে পড়া মুস্তাহাব) আমরা মহানবীকে এভাবে সম্বোধন করিالسّلام على عمّك عمرانِ أبي طالباً আপনার চাচা ইমরান আবু তালিবের ওপর সালাম। অথচ কেউ কেউ এ যিয়ারতনামা থেকে ধারণা করেছেন যে,তাঁর নাম আবু তালিব এবং তা তাঁর কুনিয়াত ছিল না।

৩২৭. আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আ.) পিতা আবু তালিবকে বলেছিলেন :

أتأْمرني بالصّبر في نصْرِ أحمدَ

و واللهِ ما قُلْتُ الّذي قلتُ جارعاً

ولكن أحبَبتُ أن ترى نصرَتي

وتعلمَ إن لم لم أزلْ لك طائعاً

আহমাদকে সাহায্য করার ব্যাপারে আমাকে কি আপনি ধৈর্যাবলম্বন করার নির্দেশ দিচ্ছেন

খোদার শপথ! আমি যা বলেছি তা আসলে মনঃক্ষুণ্ণ হওয়ার কারণে বলি নি

তবে আমি পছন্দ করেছি যে,আমাকে আপনি দেখবেন আমি তাঁকে সাহায্য করছি

আর আপনি জানবেন যে,আমি আজও আপনার প্রতি আনুগত্যশীল আছি।

-মানাকিবে ইবনে শাহরআশুব,২য় খণ্ড,পৃ. ২৭,আল হুজ্জাহ্,পৃ. ৭০।

فلا تحسبونا خاذلين محمّداً

لذى غربة منا ولا متقرب

نه ستمنحه منّا يد هاشمية

و مركبها في النّاس اخشن مركب

৩২৮. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ১২৫।

৩২৯. হযরত আবু তালিবের দিওয়ান,পৃ. ৩৩-৩৫;তারিখে ইবনে আসাকির,১ম খণ্ড,পৃ. ৮৪;আর রওযুল আন্ফ,১ম খণ্ড,পৃ. ১২০;কাসীদাটি নিম্নোক্ত এই পঙ্ক্তিটি দ্বারা শুরু হয়েছে :

إنَّ ابْنَ آمنةَ النّبيّ محمّداً

عندي يفوقُ منازلَ الأوْلادِ

নিশ্চয় আমিনা তনয় নবী মুহাম্মদ আমার কাছে

আমার সন্তানদের স্থান ও মর্যাদারও ঊর্ধ্বে।

৩৩০. তবে এ ক্ষেত্রে আকীদা-বিশ্বাস বলতে পবিত্র ইসলামী আকীদা-বিশ্বাসকেই বোঝানো হয়েছে,যে ক্ষেত্রে আত্মমুখিতা ও আত্মকেন্দ্রিকতা খোদামুখিতার মাঝে বিলীন হয়ে যায়। তাই এ ব্যাপারে বলা হয়েছে :

قِفْ عند رأيك

واجتهدْ إنّ الحياةَ عقيدةٌ وَجِهادٌ

নিজ অভিমত ও দৃষ্টিভঙ্গির সামনে দাঁড়িয়ে যাও (বলিষ্ঠ চিত্তে দাঁড়াও)

চেষ্টা-সাধনা ও সংগ্রাম কর,কারণ জীবনই হচ্ছে বিশ্বাস ও সংগ্রাম।

৩৩১. মাজমাউল বায়ান,৭ম খণ্ড,পৃ. ৩৬;আর ইবনে হিশামও তাঁর সীরাত গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ২৫২-২৫৩ পৃষ্ঠায় এ কাসীদার ১৫টি পঙ্ক্তি উল্লেখ করেছেন।

৩৩২.و الله لو قتلتموه ما أبقيت منكم أحدا حتّى نتفانى نحن و أنتم -তাবাকাত-ই কুবরা,১ম খণ্ড,পৃ. ২০২-২০৩;তারায়েফ,পৃ. ৮৫;আল হুজ্জাহ্,পৃ. ৬১।

৩৩৩. ইবনে আবীল হাদীদ তাঁর শারহু নাহজুল বালাগায় (১৪ খণ্ড,পৃ. ৮৪) লিখেছেন : এক শিয়া আলেম হযরত আবু তালিব (রা.)-এর ঈমান সংক্রান্ত একটি পুস্তক রচনা করে তা আমার কাছে পাঠিয়েছিলেন যাতে করে আমি ঐ পুস্তক সংক্রান্ত একটি  সমালোচনা লিখি। আমি পুস্তকটির সমালোচনা লেখার পরিবর্তে এ সাতটি কবিতা ঐ পুস্তকের ওপর লিখে দিয়েছিলাম।

৩৩৪. আবু তালিবের দীওয়ান (কাব্যসমগ্র) পৃ. ৩২ এবং সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৭৩।

৩৩৫. আবু তালিবের দীওয়ান,পৃ. ৩২ এবং সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৭৩।

৩৩৬. তারিখে ইবনে কাসীর,২য় খণ্ড,পৃ. ৪২।

৩৩৭. ইবনে আবীল হাদীদ,১৪ খণ্ড,পৃ. ১৭৪;দীওয়ানই আবু তালিব,পৃ.১৭৩।

৩৩৮. সীরাতে হালাবী,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৯০;তারিখুল খামীস,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৩৯।

৩৩৯. সাইয়্যেদ ইবনে তাউস প্রণীত আত-তারায়েফ,পৃ. ৮৫;ইবরাহীম ইবনে আলী দইনূরী প্রণীত গায়াতুস সুউল ফী মানাকিব-ই আলে রাসূল’ গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত।

৩৪০. ইবনে আবীল হাদীদ প্রণীত শারহে নাহজুল বালাগাহ্,১৪ তম খণ্ড,পৃ. ৭৬।

৩৪১. ইবনে আবীল হাদীদ প্রণীত শারহে নাহজুল বালাগাহ্,১৪ খণ্ড,পৃ. ৬৭।

৩৪২. উসূল-ই কাফী,পৃ. ২৪৪।

৩৪৩. মাজমাউল বায়ান,৩য় খণ্ড,পৃ. ৩৯৫।

৩৪৪. সীরাতে ইবনে হিশাম,২৭তম খণ্ড,পৃ. ২৭।

৩৪৫. এ বিষয়ে গবেষণার জন্য ওযু,নামায ও আযান সম্পর্কিত কাফী’ হাদীস গ্রন্থের আলোচনাটি (৩য় খণ্ড,পৃ. ৪৮২-৪৮৯) দেখতে পারেন।

৩৪৬. বিশিষ্ট শিয়া ফকীহ শেখ তাবারসী তাঁর মাজমাউল বায়ানে (৩য় খণ্ড,পৃ. ৩৯৫) মিরাজ দৈহিক ছিল বলে শিয়া আলেমদের মধ্যে মতৈক্য রয়েছে বলেছেন।

৩৪৭. দায়েরাতুল মা রেফ,(عرج ধাতু) ৭ম খণ্ড,পৃ. ৩২৯।

৩৪৮. রাসূল (সা.) বলেছেন,إنّي لست كأحدكم إنّي أظل عند ربّي فيطعمني و يسقيني আমি তোমাদের কারো মতো নই;আমি আমার প্রতিপালকের নিকট সর্বক্ষণ অবস্থান করি এবং তিনি আমাকে খাদ্য ও পানীয় দান করেন। -ওয়াসায়েলুশ্ শিয়া,৮ম খণ্ড, কিতাবুস্ সাওম’ অবিচ্ছিন্ন রোযা নিষিদ্ধ’অধ্যায়,পৃ. ৩৮৮।

৩৪৯. ইরানের ইসলামী বিপ্লবের অন্যতম অবদান হচ্ছে এই যে,তা উপনিবেশবাদী আমলের সৃষ্ট পথভ্রষ্ট ধর্মীয় ফির্কা ও উপদলসমূহের মূল কর্তন করেছে এবং সকল মাজহাবকে ইসলাম ধর্মের মৌলিক ও খাঁটি পথের অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে,এ সব নব আবির্ভূত উপদলসমূহ আসলে সাম্রাজ্যবাদ কর্তৃক সৃষ্ট অথবা তাদেরই ইচ্ছার ফল। আর ইসলামী বিপ্লবের পূর্বের সরকার এ ধরনের সাম্প্রদায়িক বিভেদের উদ্গাতা ছিল। মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এ জন্য যে,(ঐ সব বিচ্যুত ও নব আবির্ভূত ফির্কাসমূহের) মূল কর্তিত হবার মাধ্যমে এগুলোর শাখা-প্রশাখাও কর্তিত হয়ে গেছে।

৩৫০. শেখ আহমদ কাতিফিয়া’ গ্রন্থে-যা ৯২টি প্রবন্ধের সমন্বয়ে জাওয়ামেয়ুল কালাম’ নামে ১২৭৩ হিজরীতে প্রকাশিত হয়েছে সেখানে বলেছেন,দেহ ঊর্ধ্বজগতে যাত্রার সময় প্রত্যেক স্তরের উপাদানকে সেখানেই ত্যাগ করে যায়। যেমন বায়ুকে বায়ুর স্তরে এবং অগ্নিকে অগ্নির স্তরে ত্যাগ করে এবং প্রত্যাবর্তনের সময় পুনরায় ঐ স্তর থেকে তা গ্রহণ করে। সুতরাং মহানবী (সা.) মিরাজের সময় তাঁর দেহের চারটি উপাদানকে তার সমস্তরে পরিত্যাগ করেন এবং এ চারটি উপাদানশূন্য দেহ নিয়ে ঊর্ধ্বলোকে যাত্রা করেছেন এবং এ চার উপাদানহীন দেহ বারযাখী দেহ ছাড়া আর কিছুই নয়। এ দেহকে হোরকুলিয়ায়ী’ বলে অভিহিত করা হয়। শেখ আহমদ শারহে যিয়ারত’ গ্রন্থের ২৮-২৯ পৃষ্ঠায় স্পষ্ট বলেছেন যে,নয় নভোমণ্ডল অতিক্রম করা সম্ভব নয়। এ উক্তি করা সত্ত্বেও তাঁর বিচ্যুতি গোপন রাখার জন্য তাঁর কতিপয় অনুসারী জোর দাবি করেছেন যে,তাঁদের নেতা মহানবী (সা.)-এর মিরাজকে দৈহিক’ বলে বিশ্বাস করেন এবং এ ক্ষেত্রে তিনি প্রসিদ্ধ অভিমতের সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন।

৩৫১. আলোর গতি প্রতি সেকেন্ডে তিন লক্ষ কিলোমিটার।

৩৫২. ১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল বুধবার রুশ মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারিন কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে প্রথম ব্যক্তি হিসাবে মহাশূন্য ভ্রমণ করেন। তিনি ভূমি থেকে ৩০২ কিলোমিটার দূর দিয়ে পৃথিবীর চারিদিকে দেড় ঘণ্টা পরিভ্রমণ করেন। ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে মার্কিন নভোখেয়াযান অ্যাপোলো-১১ তিনজন নভোচারী নিয়ে চাঁদে যাত্রা করে এবং দু জন নভোচারী চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণে সক্ষম হন। যদি মানুষ এরূপ কর্মে সক্ষম হয়ে থাকে তবে তাদের সৃষ্টিকর্তা কি সে কর্মে সক্ষম নন?

৩৫৩. শিয়াদের সপ্তম ইমামও মিরাজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অনুরূপ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন,

إنّ الله لا يوصف بمكان و لا يجري عليه زمان و لكنّه عز و جل أراد أن يشرف به ملائكته سكان سماواته و يكرّمهم بمشاهدته و يريه من عجائب عظمته ما يخبر به بعد هبوطه

-তাফসীরে বুরহান,২য় খণ্ড,পৃ. ৪০০।

৩৫৪. ইবনে সা দ তাঁর তাবাকাত গ্রন্থের ১ম খণ্ডের ১০৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন,হযরত আবু তালিবের মৃত্যুর এক মাস পাঁচ দিন পর খাদীজাহ্ (রা.) মৃত্যুবরণ করেন। ইবনে আসির তাঁর কামিল’ গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৬৩ পৃষ্ঠায় হযরত খাদীজার মৃত্যু আবু তালিবের পূর্বে হয়েছিল বলেছেন।

৩৫৫.ما نالت منّى قريش شيئا اكرهه حتّى مات أبو طالب অর্থাৎ কুরাইশ আমার প্রতি অপছন্দনীয় কোন আচরণ করতে সক্ষম হয় নি আবু তালিবের মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত।

৩৫৬. এ দু ব্যক্তি কুরাইশ ও উমাইয়্যা বংশোদ্ভূত। তায়েফেও তাদের সম্পদ ছিল।

৩৫৭. তাবাকাতে ইবনে সা দ,১ম খণ্ড,পৃ. ২১০-২১২;আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্,৩য় খণ্ড,পৃ. ১৩৭।

৩৫৮. তাবাকাতে ইবনে সা দ,১ম খণ্ড,পৃ. ২১৬;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪২২।

৩৫৯.الأمر إلى الله يضعه حيث يشاء -সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪২৬।

৩৬০. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪২৫।

৩৬১. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৮৬।

৩৬২. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ১৩১।

৩৬৩.أبايعكم على أن تمنعوني ممّا تمنعون منه نسائكم و أبنائكم

৩৬৪. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৩৮-৪৪৪;তাবাকাতে ইবনে সা দ,১ম খণ্ড,পৃ. ২২১-২২৩।

৩৬৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৪৮-৪৫০।

৩৬৬. আ লামুল ওয়ারা,পৃ. ৩৭;বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ১০-১১।

৩৬৭. তাবাকাতে ইবনে সা দ,৭ম খণ্ড,পৃ. ২১০।

৩৬৮. যেহেতু মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াত প্রাপ্তির পর থেকে হিজরতের পূর্ব পর্যন্ত এ তের বছরের ঘটনাগুলো ঘটার তারিখ সুনির্দিষ্ট ছিল না তাই পূর্ববর্তী ২৪টি অধ্যায়ে প্রধানত সেগুলোর তারিখ উল্লেখ করা হয় নি। তবে ২৫তম অধ্যায় থেকে ৩১তম অধ্যায় (প্রথম খণ্ডের শেষ) পর্যন্ত হিজরতোত্তর ঘটনাবলী তারিখ (সন) সহ উল্লেখ করা হবে।

৩৬৯. তাবাকাতুল কুবরা,১ম খণ্ড,পৃ. ২২৭-২২৮;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৮০-৪৮২।

৩৭০. সূরা আনফাল,আয়াত ৩০।

৩৭১. তাবাকাতুল কুবরা,১ম খণ্ড,পৃ. ২২৮;তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১০০।

৩৭২. সীরাতে হালাবী,২য় খণ্ড,পৃ. ৩২।

৩৭৩. আ লামুল ওয়ারা,পৃ. ৩৯;বিহারুল আনওয়ার ১৯তম খণ্ড,পৃ. ৫০।

৩৭৪. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১০০।

৩৭৫. তাবাকাতুল কুবরা,১ম খণ্ড,পৃ. ২২৯। প্রায় সকল ঐতিহাসিক ও জীবনী লেখক এ ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন। আমরা আবরাহার হস্তীবাহিনী ধ্বংসের ঘটনাটি যেভাবে মুজিযা হিসাবে বর্ণনা করেছি এটিও তেমনি। এতে বিকৃতির কোন সুযোগ নেই।

৩৭৬. মুসনাদে আহমাদ,১ম খণ্ড,পৃ. ৮৭;কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃ. ৪০৭;আল গাদীর,২য় খণ্ড,পৃ. ৪৪-৪৫।

৩৭৭. শারহে নাহজুল বালাগাহ্-ইবনে আবিল হাদীদ,১৩তম খণ্ড,পৃ. ২৬২।

৩৭৮. সামারাতা ইবনে জুনদুব বনি উমাইয়্যার শাসনকালের একজন চি হ্নিত অপরাধী। ওপরে তার হাদীস বিকৃতির নমুনাটি শুধু এ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল না,বরং সে বলে যে,(ইবনে আবিল হাদীদের বর্ণনা মতে) আলী সম্পর্কিত যে আয়াতটি কোরআনে অবতীর্ণ হয়েছে তা হলো :

) و من النّاس من يعجبك قوله في الحيوة الدّنيا و يشهد الله على ما في قلبه و هو ألدّ الخصام(

“মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আছে যাদের কথা এ পৃথিবীতে তোমাকে প্রতারিত করে এবং সে তার অন্তরে যা আছে সে সম্পর্কে আল্লাহ্কে সাক্ষী হিসাবে উপস্থাপন করে,অথচ সে আল্লাহর কঠোরতম শত্রু।” (সূরা বাকারা : ২০৪)

সামারাতের অন্যতম জঘন্য কাজ হলো সে ইরাকে যিয়াদ ইবনে আবির প্রাদেশিক শাসনকর্তা থাকাকালীন বসরার দায়িত্বে ছিল। সে বসরায় নবীর আহ্লে বাইতের অনুরক্ত আট হাজার মুসলামানকে হত্যা করে। যিয়াদ ইবনে আবি তাকে প্রশ্ন করে, তুমি যে এত লোককে হত্যা করলে,চিন্তা করলে না এর মধ্যে নিরপরাধ ব্যক্তিবর্গও থাকতে পারে? সে জবাবে বলে,لو قتلت مثلهم ما خشيت এর সমপরিমাণ আরো মানুষকে হত্যা করলেও আমি শঙ্কিত হতাম না।” যা হোক এ ব্যক্তির অপরাধের বর্ণনা দেয়া এ ক্ষুদ্র গ্রন্থে সম্ভব নয়। এই একগুঁয়ে দাম্ভিক ব্যক্তিটি হচ্ছে ঐ লোক যে প্রতিবেশীর অধিকার সংরক্ষণ করার ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করলে তিনি তাকে বলেছিলেন,إنّك رجل مضار و لا ضرر و لا ضرار في الإسلام নিশ্চয়ই তুমি কষ্টদানকারী ও অনিষ্ট সাধনকারী। আর ইসলামে যেমন অনিষ্ট নেই ঠিক তেমনি পারস্পরিক অনিষ্ট সাধন ও কষ্টদানেরও অনুমতি নেই।” এ ব্যাপারে অধিক তথ্য ও অবগতির জন্য ইতিহাস ও রিজালশাস্ত্রের গ্রন্থাদি অধ্যয়ন করুন।

৩৭৯. ইতিপূর্বে আহ্লে সুন্নাতের অপর এক ব্যক্তি জাহেয তাঁর আল উসমানিয়া’ গ্রন্থে এ বিষয়ে কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন। দ্র. শারহু নাহজুল বালাগাহ্-ইবনে আবিল হাদীদ,১৩তম খণ্ড,পৃ. ২৬২।

৩৮০. নবী বলেছিলেন, তোমার কোন ক্ষতিই হবে না।”

৩৮১. বিহারুল আনওয়ার গ্রন্থের ১৯তম খণ্ডের ৩৯ পৃষ্ঠায় ইমাম গাজ্জালীর এহ্ইয়াউল উলূমুদ্দীন’ গ্রন্থ সূত্রে এটি বর্ণিত হয়েছে।

৩৮২. সূরা তাওবা : ৪০।

৩৮৩. কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৩।

৩৮৪. সীরাতে হালাবী,২য় খণ্ড,পৃ. ৩৭।

৩৮৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৯১;তারিখে কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৫।

৩৮৬. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১০৪।

৩৮৭. উপরিউক্ত তারিখ লেখকের গ্রন্থ প্রণয়নের বছরের সাথে সংশ্লিষ্ট।

৩৮৮. আখবারে ইসফাহান-আবু নাঈম,১ম খণ্ড,পৃ. ৫২-৫৩।

৩৮৯. মাকাতিবুর রাসূল,পৃ. ২৮৯।

৩৯০. আল আমওয়াল,পৃ. ২৯৭,মিশরে মুদ্রিত।

৩৯১. আল মাশায়িখুস সুয়ূতী গ্রন্থ সূত্রে আত তারতিবুল ইদারিয়া,পৃ. ১৮১।

৩৯২. সহীফায়ে সাজ্জাদিয়াহ্,পৃ. ১৫;সাফিনাতুল বিহার,২য় খণ্ড,পৃ. ৬৪১।

৩৯৩. মাজমায়ুর রাওয়ায়িদ,৯ম খণ্ড,পৃ. ১৯০।

৩৯৪. তারিখুল খামিস,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৬৭।

৩৯৫. প্রাগুক্ত,পৃ. ৩৬৯।

৩৯৬. মাগাযিয়ে ওয়াকেদী,২য় খণ্ড,পৃ. ৫৩১।

৩৯৭. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ৩৮৮।

৩৯৮. প্রাগুক্ত।

৩৯৯. আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়া,৭ম খণ্ড,পৃ. ৭৪-৮৩;শারহে নাহজুল বালাগাহ্-ইবনে আবিল হাদীদ ১৪তম খণ্ড,পৃ. ৭৪।

৪০০. তারিখে ইয়াকুবী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪৫।

৪০১. আমি স্বয়ং আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শেখ মুহাম্মদ আবদুল হালিমের পত্রে এ বিষয়টি লক্ষ্য করেছি।

৪০২. তারিখে কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৪।

৪০৩. রাসূলের জীবনী লেখকদের অনেকেই,যেমন ইবনে আসির তাঁর কামিল’ গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৭৪ পৃষ্ঠায় এটি বর্ণনা করেছেন এবং আল্লামা মজলিসী তাঁর বিহার’ গ্রন্থের ১৯তম খণ্ডের ৮৮ পৃষ্ঠায় ইমাম সাদিক (আ.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

৪০৪. বিহার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ৭৫।

৪০৫. তারিখুল খামিস,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৩৩;তাবাকাতে ইবনে সা দ,১ম খণ্ড,পৃ. ২৩০-২৩১;বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ৯৯-১০৩।

৪০৬. আমালী,পৃ. ৩০০।

৪০৭. তারিখে কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৫।

৪০৮. সওর পর্বতের গুহা ত্যাগের তিন দিন পর।

৪০৯. আমতাউল আসমা,পৃ. ৪৮। সুতরাং নবীর গৃহ অবরোধের ঘটনাটি প্রথম হিজরী সালের ১ রবিউল আউয়ালের তিন রাত্রি পূর্বে ঘটেছিল। নবী (সা.) সোমবার রাত্রিতে গৃহ ত্যাগ করে সওর পর্বতের গুহায় আশ্রয় নেন এবং তিন দিন অবস্থানের পর বৃহস্পতিবার ১ রবিউল আউয়াল গুহা থেকে বেরিয়ে মদীনার পথ ধরেন। তিনি ১২ রবিউল আউয়াল কুবায় পৌঁছেন।

৪১০. উসদুল গাবাহ্,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ৯৯।

৪১১. বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ১০৮;তবে তারিখে কামিলসহ অনেক ইতিহাস গ্রন্থে ঐ দু ইয়াতীম বালক মায়ায ইবনে আযরার অভিভাবকত্বে ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

৪১২. বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ১০৮।

৪১৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৫০০-৫০১;বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ১২৬।

৪১৪. এখানে প্রথম হিজরী বর্ষ বলতে রবিউল আউয়াল মাসে মহানবীর হিজরতের পরবর্তী দশ মাস বোঝানো হয়েছে।

৪১৫. সহীহ বুখারী,১ম খণ্ড, কিতাবুল ইলম’ অধ্যায়। পরবর্তী সময়ে মাদ্রাসা মসজিদ হতে পৃথক হলেও মসজিদ সংলগ্ন স্থানেই তা স্থাপিত হওয়া শুরু হয়। ধর্ম ও জ্ঞান যে পরস্পর অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত তারই যেন প্রতিচ্ছবি এখানে লক্ষণীয়।

৪১৬. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৯৬;তারিখুল খামিস,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৪৫;সীরাতে হালাবী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৬। ইবনে ইসহাক তাঁর বর্ণনায় স্পষ্টভাবে উসমান ইবনে আফ্ফানের নাম উল্লেখ করলেও ইবনে হিশাম তা উল্লেখ করেন নি।المواهب اللدنية গ্রন্থের লেখক বলেন,এ দ্বারা উসমান ইবনে মাযউনের কথাই বুঝানো হয়েছে।

৪১৭. সীরাতে হালাবী,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৬-৭৭।

৪১৮. মুসতাদরাকে হাকিম,৩য় খণ্ড,পৃ. ৩৮৫ এবং ইবনে মুজাহিম রচিত ওয়াকেয়ে সিফ্ফিন’ গ্রন্থ দ্রষ্টব্য।

৪১৯. মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল,২য় খণ্ড,পৃ. ১৯৯।

৪২০. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া,৩য় খণ্ড,পৃ. ২১৮।

৪২১.يدعوهم إلى الجنّة و يدعونه إلى النّار

৪২২. সূরা আনকাবুত : ৮।

৪২৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,২য় খণ্ড,পৃ. ১২৩-১২৬।

৪২৪. ইউনাবীউল মুয়াদ্দাহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ২২৬।

৪২৫. আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া,২য় খণ্ড,পৃ. ২২৬।

৪২৬. তাযকিরাতুল খাওয়াস,পৃ. ৪৬।

৪২৭. মদীনার তিনটি ইয়াহুদী গোত্র বনি কাইনুকা,বনি নাদির (নাজির) ও বনি কুরাইযাহ্,যাদের সঙ্গে মহানবী একটি স্বতন্ত্র চুক্তি করেছিলেন যা নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করব।

৪২৮. সীরাতে ইবনে হিশাম,২য় খণ্ড,পৃ. ৫০১।

৪২৯. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৫০৩-৫০৪ এবং আল আমওয়াল,পৃ. ১২৫ ও ২০২।

৪৩০. বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ১১০-১১১। এ চুক্তিনামার পরিপ্রেক্ষিতে মহানবী (সা.) পরবর্তী সময়ে ইয়াহুদীদের চুক্তিভঙ্গের শাস্তি দিয়েছিলেন।

৪৩১. সূরা বাকারা : ৮৮।

৪৩২. তাঁর সঙ্গে মহানবীর সংলাপের বিস্তারিত বিবরণ সীরাতে ইবনে হিশামের ১ম খণ্ডের ৫৩৪-৫৭২ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে। বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ১৩১।

৪৩৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৫৫৫-৫৫৬।

৪৩৪. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৫০০।

৪৩৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,২য় খণ্ড,পৃ. ২২২;বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ১৮৬-১৯০;আমতাউল আসমা,পৃ. ৫১;তারিখে কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৭৭-৭৮;মাগাযী ওয়াকেদী,১ম খণ্ড,পৃ. ৯-১৯।

৪৩৬. মহানবী (সা.) প্রথম হিজরী থেকেই কুরাইশদের বিভিন্ন বাণিজ্য পথে টহলদার সেনা প্রেরণ ও মোতায়েন করেন। এ কারণেই সেনাদল প্রেরণের কোন কোন ঘটনা,যেমন হযরত হামযার নেতৃত্বে এবং উবাইদাতা ইবনে হারেসের নেতৃত্বে সেনাদল প্রেরণের ঘটনাসমূহ প্রথম হিজরীর ঘটনাপ্রবাহে বর্ণনা দান সংগত মনে হলেও যেহেতু দ্বিতীয় হিজরীতেও এরূপ সেনাদল প্রেরণ অব্যাহত থাকে সেহেতু দ্বিতীয় হিজরীর ঘটনাপ্রবাহের সঙ্গে সংযুক্ত করে এটি বর্ণনা করা হলো। অবশ্য ইবনে হিশাম ইবনে ইসহাকের অনুকরণে এ ঘটনাসমূহ দ্বিতীয় হিজরীতে ঘটেছিল বলেছেন,যদিও ঐতিহাসিক ওয়াকেদী এর কোন কোনটি প্রথম হিজরীতে ঘটেছিল বলেছেন।

৪৩৭. মুরুযুয যাহাব,২য় খণ্ড,পৃ. ২৮৭-২৮৮।

৪৩৮. বাওয়াত পর্বতটি মদীনা থেকে ৯০ কি.মি. দূরে রাদাভী নামক স্থানে অবস্থিত।

৪৩৯. তারিখুল খামিস,পৃ. ৩৬৩।

৪৪০. কামিল,৩য় খণ্ড,পৃ. ৭৮।

৪৪১. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬০১;তাবাকাতে ইবনে সা দ,২য় খণ্ড,পৃ. ৯। কেউ কেউ এ ঘটনাকে গাজওয়ার অন্তর্ভুক্ত করে বদরের প্রথম গাজওয়া বলেছেন।

৪৪২. কথিত আছে,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত সৈনিকের হাতে দিকনির্দেশনামূলক পত্র প্রদানের এ প্রথা প্রচলিত ছিল যা সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে তাদের সার্টিফিকেটের সঙ্গে দেয়া হতো।

৪৪৩.ما امرتكم بقتال في الشّهر الحرام

৪৪৪. সূরা বাকারা : ২১৭।

৪৪৫. তাবাকাতে ইবনে সা দ,১ম খণ্ড,পৃ. ২৪১-২৪২;আলামুল ওয়ারা লি আলামুল হুদা,পৃ. ৮১-৮২। ইবনে হিশাম বলেছেন,মহানবী (সা.)-এর মদীনায় হিজরতের অষ্টাদশ মাসের প্রথমে এ ঘটনা ঘটেছিল। ইবনে আসির ১৫ শাবানে কিবলা পরিবর্তিত হয়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন। সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬০৬;কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৮০।

৪৪৬. সূরা বাকারা : ১৪৪।

৪৪৭. সূরা বাকারা : ১৪৩।

৪৪৮. সূরা বাকারা : ১৪৩। ঈমান শব্দটি আমল বা কর্ম অর্থে যে সকল স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে এ আয়াতটি তার একটি।

৪৪৯. তোহফাতুল আজেল্লাহ্ ফি মারেফাতিল কিবলা,পৃ. ৭১।

৪৫০. সাদুক,মান লা ইয়াহদারুহুল ফকীহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ৮৮;ওয়াসায়েলুশ্ শিয়া,হুররে আমালী,৩য় খণ্ড,পৃ. ২১৮।

৫৫১. বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ২১৭।

৫৫২. মাগাজী ওয়াকেদী,১ম খণ্ড,পৃ. ২০।

৫৫৩. যাফরান মরুপ্রান্তর বদর নামক স্থানের নিকটে অবস্থিত। ইবনে হিশাম তাঁর সীরাত গ্রন্থে মদীনা থেকে যাফরান পর্যন্ত যে সকল স্থানে মহানবী বিশ্রাম নিয়েছেন তার উল্লেখ করেছেন। যাফরান থেকে বদর পৌঁছার মধ্যবর্তী সময়ে কুরাইশদের আগমনের সংবাদ প্রাপ্তির ঘটনাও বর্ণনা করেছেন। বদর সিরিয়ার পথে মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী একটি স্থান যাতে প্রতি বছর বাজার বসত এবং আরবরা ক্রয়-বিক্রয় ও কবিতা পাঠের আসরের উদ্দেশ্যে সেখানে সমবেত হতো।-সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬১৩-৬১৬।

৫৫৪. সূরা হজ্ব : ৩৯।

৫৫৫. তারিখে কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৮১।

৫৫৬. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৩৮;তারিখে কামিল,২য় খণ্ড,পৃ. ৮২।

৫৫৭. সীরাতে ইবনে হিশাম,২য় খণ্ড,পৃ. ২৪৮-২৪৯।

৫৫৮.إنها قريش وخيلائها ما آمنت منذكفرت و ما ذلّت منذعزت و لم نخرج على اهبة للحرب -মাগাজী-ওয়াকেদী,১ম খণ্ড,পৃ. ৪৮।

৫৫৯.اذهب أنت و ربّك فقاتلا، انّا معكما مقاتلون

৫৬০. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬১৫।

৫৬১. আল ইমতা,পৃ. ৭৪।

৫৬২. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪০।

৫৬৩. মাগাজী-ওয়াকেদী,১ম খণ্ড,পৃ. ২৪৮;সীরাতে হালাবী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৬০,বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ২১৭।

৫৬৪. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪০।

৫৬৫. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬১৭।

৫৬৬. সূরা আনফাল : ৭।

৫৬৭. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬২০;তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪৪।

৫৬৮. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪৫;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬২০।

৫৬৯. তাবাকাত,২য় খণ্ড,পৃ. ২৫।

৫৭০.سيهزم الجمع و تولّون الدّبر   -সূরা কামার,৪৫।

৫৭১. নাহজুল বালাগাহ্,বাণী নং ২১৪।

৫৭২. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬২২।

৫৭৩. মাগাজী,১ম খণ্ড,পৃ. ৬২;বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ২৩৪।

৫৭৪. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬২৩;বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ২২৪।

৫৭৫. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪৯।

৫৭৬. তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪৮;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬২৫।

৫৭৭. নাহজুল বালাগাহ্,পত্র নং ৬৪।

৫৭৮. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬২৬।

৫৭৯.اللهم ان تهلك هذه العصابة اليوم لا تعبد -তারিখে তাবারী,২য় খণ্ড,পৃ. ১৪৯।

৫৮০. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬২৮।

৫৮১. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬৩২।

৫৮২. তাবাকাতে ইবনে সা দ,২য় খণ্ড,পৃ. ২৩।

৫৮৩. সীরাতে ইবনে হিশাম,২য় খণ্ড,পৃ. ৭০৬-৭০৮;মাগাজী-ওয়াকেদী,১ম খণ্ড,পৃ. ১৩৮-১৭৩।

৫৮৪. সহীহ বুখারী ৫ম খণ্ড,পৃ. ৯৭,৯৮ ও ১১০,বদর যুদ্ধের ঘটনার অধ্যায়;সহীহ মুসলিম,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ৭৭,কিতাবুল জান্নাত অধ্যায়;সুনানে নাসায়ী,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ৮৯ ও ৯০;মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বাল,২য় খণ্ড,পৃ. ১৩১;সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬৩৯;মাগাজী-ওয়াকেদী,১ম খণ্ড,বদরের যুদ্ধ অধ্যায়;বিহারুল আনওয়ার,১৯তম খণ্ড,পৃ. ৩৪৬।

৫৮৫. সূরা আনফাল : ৪১।

৫৮৬. কোন কোন ঐতিহাসিক তাঁকে রাসূলের কন্যা না বলে হযরত খাদীজার পূর্ববর্তী স্বামীর সন্তান বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মতে রাসূলের ঔরসে হযরত খাদীজার গর্ভে এক পুত্রসন্তান (যিনি মারা যান) এবং এক কন্যা সন্তানই (হযরত ফাতিমা) শুধু জন্মগ্রহণ করেছেন।

৫৮৭. এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য লেখকের ফার্সী ভাষায় লিখিত মুনাফিকুন দার কোরআন ওয়া তারিখ’ গ্রন্থ দ্রষ্টব্য। বিষয়টি নিয়ে তিনি মানশুরে জভিদ’ গ্রন্থেও আলোচনা করেছেন।

৫৮৮. ফেহেরেসতে নাজ্জাশী,পৃ. ৫।

৫৮৯. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬৪৮।

৫৯০. সীরাতে ইবনে হিশাম,১ম খণ্ড,পৃ. ৬৫১-৬৫৮।

৫৯১.نحن معاشر الأنبياء لا نورّث

৫৯২. বদর যুদ্ধের পরই হযরত ফাতিমা যাহরা (আ.)-এর বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।-বিহারুল আনওয়ার,৪৩ খণ্ড,পৃ. ৭৯ ও ১১১।

৫৯৩. মান লা ইয়াহদারুহুল ফকীহ্,পৃ. ৪১০।

৫৯৪. অত্র গ্রন্থ লেখার সময় ও পরিস্থিতির সাথে এ অংশটি সংশ্লিষ্ট। অতঃপর মহান আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা এজন্য যে,আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ইরানের ইসলামী বিপ্লব সমাজের এ ধরনের অনেক অস্বাভাবিক অবস্থার অবসান ঘটিয়েছে।

৫৯৫. সূরা আলে ইমরান : ৬১।

৫৯৬. নাজরানের খ্রিষ্টানদের সাথে মুবাহালার ঘটনায় মহানবী (সা.) কেবল আলী,ফাতিমা,হাসান ও হুসাইন (আ.)-কে নিজের সাথে মদীনার বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন। এ ঘটনার পূর্ণ বিবরণ দশম হিজরীর ঘটনাবলীতে উল্লেখ করা হবে।

৫৯৭. বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৯৩।

৫৯৮. প্রাগুক্ত।

৫৯৯. বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৯৪;কাশফুল গাম্মাহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ৩৫৯।

৬০০. ওয়াসাইলুশ শিয়া,১৫তম খণ্ড,পৃ. ৮।

৬০১. বিহারুল আনওয়ার,৪৩তম খণ্ড,পৃ. ৯৬।

৬০২. প্রাগুক্ত।

৬০৩. মুসনাদে আহমাদ,২য় খণ্ড,পৃ. ২৫৯।

৬০৪. আল ওয়াকিদীর মাগাযী,১ম খণ্ড,পৃ. ১৮৬।

৬০৫. আল ওয়াকিদী প্রণীত মাগাযী,১ম খণ্ড,পৃ. ১৭৭-১৭৯ এবং তাবাকাতই কুবরা,২য় খণ্ড,পৃ. ২৯-৩৮।

৬০৬. আল ওয়াকিদীর মাগাযী,১ম খণ্ড,পৃ. ১৮২;তাবাকাত ই কুবরা,২য় খণ্ড,পৃ. ৩০।

৬০৭. আটা ও খেজুর দ্বারা তৈরি এক ধরনের খাদ্য।

৬০৮. আল ওয়াকিদী প্রণীত মাগাযী,১ম খণ্ড,পৃ. ১৮১।

৬০৯. মানাকিব,১ম খণ্ড,পৃ. ১৬৪;আল ওয়াকিদীর আল মাগাযী,১ম খণ্ড,পৃ. ১৯৪-১৯৬।

৬১০. আল ইমতা,পৃ. ১১২।

অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়া মানুষের উন্নতির কারণ

বস্তুতঃ মানব প্রজাতির অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে , প্রাকৃতিক , প্রাণীজ ও মানব-জাত অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়া অসংখ্য বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের কারণ হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। মানুষ এ সব প্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচার পথ খুঁজতে গিয়ে চিন্তা-গবেষণা করেছে এবং এমন সব বিস্ময়কর আবিষ্কার-উদ্ভাবন করেছে যা মানবসভ্যতার সৃষ্টি করেছে এবং তাকে এগিয়ে নিয়েছে। আর সৃষ্টিলোকের চূড়ান্ত লক্ষ্যের বাস্তবায়নের জন্য যে সব ঘটনা সংঘটিত হওয়া প্রয়োজন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি মানুষ সৃষ্টিলোকে নিহিত সকল প্রাকৃতিক বিধিবিধান উদ্ঘাটন করবে ও নিজেদের কল্যাণের জন্য তা কাজে লাগাবে। কিন্তু কথিত অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়াসমূহ না থাকলে মানুষ আবিষ্কার-উদ্ভাবনে অনুপ্রাণিত হতো না।

অবশ্য প্রাকৃতিক জগতে , বিশেষতঃ প্রাণীজগতে এমন অনেক উপায়-উপকরণ পরিলক্ষিত হয় যার মধ্যে দৃশ্যতঃ অকল্যাণ ছাড়া কোনোরূপ কল্যাণ নিহিত নেই। মানুষ মনে করে , এ সব সৃষ্টি না থাকলেই বা কী অসুবিধা ছিলো ?

আসলে বাহ্যতঃ অকল্যাণকর হিসেবে পরিদৃষ্ট সৃষ্টিসমূহের মধ্যেও যে কল্যাণ নিহিত নেই এরূপ মনে করা ঠিক নয়। কারণ , ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বাহ্যিক ক্ষতিকর উপাদান বা প্রাণী থেকে এমন সব কল্যাণকর উপাদান আবিষ্কৃত হয়েছে যা মানুষ পূর্বে কল্পনাও করতে পারতো না। উদাহরণ স্বরূপ , সাপের ন্যায় মারাত্মক প্রাণঘাতী প্রাণীর বিষ মানুষের বিরাট কল্যাণ সাধনে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে সম ওযনের স্বর্ণের তুলনায় বিষের দাম কয়েক গুণ বেশী দেখা যায়।

ক্ষতিকারকতা আপেক্ষিক

এমতাবস্থায় এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই যে , সৃষ্টিকুলের সকল সৃষ্টির মধ্যেই কল্যাণকারিতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাহ্যতঃ ক্ষতিকারক যা পরিলক্ষিত হয় তার ক্ষতিকারকতাও আপেক্ষিক। প্রথমতঃ অনেক প্রাণীর ক্ষতিকারকতা তাদের আত্মরক্ষার স্বার্থে অপরিহার্য। যেমন: সাপের বিষ এবং বাঘ ও সিংহের দন্ত-নখর তাদের আত্মরক্ষার জন্য যরূরী। দ্বিতীয়তঃ এক সৃষ্টির ক্ষতিকারকতা কেবল অন্য সৃষ্টির সংস্পর্শেই অর্থাৎ পারস্পরিক সংঘাতের পরিস্থিতিতেই প্রকাশ পায়। অন্যথায় প্রতিটি সৃষ্টিই তার তার নিজস্ব অবস্থানে সুন্দর। একটি সাপকে বা একটি সিংহকে তাদের নিজস্ব অবস্থানে রেখে পর্যবেক্ষণ করলে তার সৌন্দর্য ও তার সৃষ্টিতে সৃষ্টিকর্তার চমৎকার সৃষ্টিকুশলতাই ধরা পড়বে । তেমনি একটি কাঁটাগাছকে তার নিজস্ব অবস্থানে রেখে দেখলে তাকেও সুন্দর ও সুকৌশল সৃষ্টি রূপে দেখা যাবে।

এরপর আসে মানুষের মধ্যকার অবাঞ্ছিত দিকসমূহের কথা। ইতিপূর্বেই আমরা উল্লেখ করেছি যে , প্রাণীকুল , বিশেষতঃ মানুষ কমবেশী স্বাধীনতার অধিকারী। আর এদের স্বাধীনতার মধ্যে পারস্পরিক সংঘাতও অনিবার্য।

ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যের নেতিবাচক ব্যবহার

প্রাণী হিসেবে অপরিহার্য স্বাধীনতার অতিরিক্ত মানুষের রয়েছে আরেক ধরনের স্বাধীনতা যাকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি নামে অভিহিত করা যায়। অর্থাৎ তার ইচ্ছাশক্তি অন্যান্য প্রাণীর ইচ্ছাশক্তির ন্যায় শুধু সহজাত প্রবণতা তথা আত্মরক্ষার তাগিদ থেকেই উদ্ভূত নয় , বরং সৃষ্টির সেরা হিসেবে তার মধ্যে রয়েছে ধরণীর বুকে স্বীয় নেতৃত্ব , কর্তৃত্ব , আধিপত্য , শ্রেষ্ঠত্ব ও মালিকানা প্রতিষ্ঠার প্রবণতা। এ প্রবণতা থেকে উদ্ভূত বিশেষ ধরনের ইচ্ছা ও তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালানো তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

মানুষের এ বিশেষ ইচ্ছাশক্তি ও ক্ষমতা খারাপ কিছু তো নয়ই , বরং এ হচ্ছে তার এক বিরাট ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এ বৈশিষ্ট্যকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার না করে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করার ফলে অবাঞ্ছিত অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ক্ষতিকারকতা রোধ করতে হলে হয় তাকে এ ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করতে হতো , অথবা এ ক্ষমতার অপব্যবহারপ্রবণতা থেকে তাকে মুক্ত রাখতে হতো। কিন্তু তাহলে তার পরিণতি কী হতো ?

প্রাণী হিসেবে প্রদত্ত স্বাধীনতার পাশাপাশি মানুষকে প্রদত্ত ম্বাধীন ইচ্ছাশক্তি তাকে দেয়া না হলে মানুষ মানুষ হতো না ; স্রেফ একটি উন্নত স্তরের প্রাণীপ্রজাতি হতো। সে ক্ষেত্রে তার দ্বারা জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশ ও সভ্যতার সৃষ্টি হতো না। অন্যদিকে তাকে সৃজনক্ষমতা প্রদান করার পাশাপাশি তার অপব্যবহার করার ক্ষমতা বিলুপ্ত করে দেয়া হলে কার্যতঃ সে ফেরেশতার কাছাকাছি কোনো প্রাণীতে পরিণত হতো , মানুষ হতো না এবং মানুষের মধ্যে সৃষ্টিকর্তার সকল গুণের (সীমিত মাত্রায় হলেও) যে সমাহার দেখা যাচ্ছে তথা সে যেভাবে সৃষ্টিকর্তার প্রতিচ্ছবি বা প্রতিনিধি রূপে আবির্ভূত হয়েছে তার মধ্যে এ বৈশিষ্ট্যের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটতো না। অন্য কথায় , তার মধ্যে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিক্ষমতার যে সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তা ঘটতো না। কারণ , সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিক্ষমতার সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ মানে হচ্ছে তাঁর গুণাবলীর অনুরূপ গুণাবলী সম্পন্ন সৃষ্টির উদ্ভব ঘটানো , যদিও সৃষ্টি ও সসীম হবার কারণে এ সৃষ্টির মধ্যে তাঁর সে গুণাবলীর বহিঃপ্রকাশ ঘটবে সীমিত পরিমাণে। সে সীমা কতখানি তা বড় কথা নয় , তবে সৃষ্টির মাঝে স্রষ্টার গুণাবলী সর্বোচ্চ যে মাত্রায় দেয়া সম্ভব তিনি তাকে তা সে মাত্রায়ই প্রদান করবেন এটাই স্বাভাবিক , অন্যথায় এ সৃষ্টি না সর্বোত্তম হবে , না তাঁর প্রতিচ্ছবি বা প্রতিনিধি হবে।

মানুষকে সৃষ্টিকর্তার সকল গুণ সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় প্রদানের মানেই হচ্ছে তাকে শুধু সৃষ্টির ক্ষমতাই দেয়া হবে না , বরং ধ্বংসের ক্ষমতাও দেয়া হবে , যদিও উভয়ই সীমিত পরিমাণে ; এ সীমা কতোখানি তা বড় কথা নয় , তবে সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় হওয়াই স্বাভাবিক। আর এ ধরনের গুণাবলীর অধিকারী হওয়ার মানেই হচ্ছে মানুষ সৃষ্টিলোকের ওপর স্বাধীনভাবে তার ইচ্ছার বাস্তবায়ন ঘটাবে। এ ক্ষেত্রে তার ইচ্ছাকে শুধু কল্যাণ-ইচ্ছার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেয়া হলে বা অকল্যাণ-ইচ্ছা দেয়া সত্ত্বেও তার বাস্তবায়ন অসম্ভব করে দেয়া হলে তার মানে হতো তার স্বাধীনতাকে প্রায় বিলুপ্ত করে দেয়া তথা তাকে সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় স্রষ্টার সকল গুণ না দেয়া। আর তাহলে সে সৃষ্টিকর্তার সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রার বহিঃপ্রকাশ বা তাঁর সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রার প্রতিনিধি হতো না। সে অবস্থায় সৃষ্টিকর্তার গুণাবলী বহুলাংশে অপ্রকাশিত থেকে যেতো।

মূলতঃ প্রতিনিধিত্বের শর্তই হচ্ছে প্রতিনিধিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। তাকে প্রদত্ত এ স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করবে দু টি জিনিস: প্রথমতঃ প্রাকৃতিক বিধিবিধান , দ্বিতীয়তঃ নৈতিক বিধিবিধান তথা ঔচিত্য-অনৌচিত্যবোধ। মানুষের ইচ্ছা ও শক্তির নিয়ন্ত্রণকারী এ দু টি জিনিস। প্রাকৃতিক বিধিবিধানকে লঙ্ঘন করার সাধ্য মানুষের নেই। (অবশ্য অজ্ঞাত কোনো প্রাকৃতিক বিধান আবিষ্কার করে তার প্রয়োগের মাধ্যমে পূর্ব থেকে জ্ঞাত প্রাকৃতিক বিধিবিধানের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তিলাভ সম্ভব হতে পারে। এরূপ হলে প্রকৃত পক্ষে তাকে প্রাকৃতিক বিধানের লঙ্ঘন বলে গণ্য করা চলে না।) কিন্তু নৈতিক বিধিবিধান লঙ্ঘনের সুযোগ তার রয়েছে।

তবে যে মানুষ স্বীয় স্বরূপ তথা সে যে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধিত্ব করছে - এ সত্য যথাযথভাবে উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে তার পক্ষে নৈতিক বিধান লঙ্ঘন করা সম্ভব নয়। যে সৃষ্টি প্রকৃতই সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধি সে জ্ঞানের আলোয় এতোখানি উদ্ভাসিত যে , নৈতিক বিধান লঙ্ঘনের বর্তমান (ইহজাগতিক) ও ভবিষ্যৎ (পরজাগতিক) প্রতিক্রিয়া তার সামনে দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট থাকে। ফলে স্বাধীনতা থাকা সত্ত্বেও তার পক্ষে নৈতিক বিধান লঙ্ঘন করা সম্ভব নয়।

পিতামাতার কারণে সন্তানের দুর্ভাগ্য কেন ?

সবশেষে আরো একটি প্রশ্নের জবাব দেয়া প্রয়োজন বলে মনে হয়। তা হচ্ছে , অনেক ক্ষেত্রেই পিতামাতার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যের পরিণামে সন্তান সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যের অধিকারী হয়। ধনীর সন্তান ধনী , গরীবের সন্তান গরীব হয়। অনেক ক্ষেত্রেই কঠিন রোগগ্রস্ত পিতা বা মাতার সন্তান জন্মগতভাবে রোগগ্রস্ত হয়ে থাকে। প্রশ্ন হচ্ছে , এ ক্ষেত্রে একজনের কর্মফল আরেক জন ভোগ করবে কেন ?

আসলে কয়েকটি বিষয়ে সচেতনতার অভাব থেকে এ প্রশ্নের উদয় হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রথমেই প্রশ্ন জাগে , সুখ-দুঃখের স্বরূপ কি মানুষ উদ্ঘাটন করতে পেরেছে ? সুখ-দুঃখ ও সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য প্রতিটি মানুষের বর্তমান , অতীত ও সম্ভাব্য বা প্রার্থিত ভবিষ্যৎ অবস্থার মধ্যে তুলনার ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃত পক্ষে বিষয়টি আপেক্ষিক। সে কী আছে , কী চায় এবং কী হলো - এ তিনের সমন্বয় হচ্ছে তার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য নির্ণয়ের প্রকৃত মানদণ্ড।

তাই প্রশ্ন করতে হয় , জন্মগতভাবে বাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্যাবলীর অধিকারী তথা সুন্দর , স্বাস্থ্যবান , শক্তিশালী , শক্তিক্ষমতার অধিকারী ও প্রভূত ধনসম্পদের মালিক মাত্রই কি ভাগ্যবান ? তাদের প্রত্যেকেই কি সুখী ? তাদের সকলেই কি শান্তির অধিকারী ?

নিঃসন্দেহে উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর ক্ষেত্রে একই শ্রেণীর সকলের জবাব এক নয়।

তেমনি জন্মগতভাবে অবাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্যাবলীর অধিকারী তথা অসুন্দর , স্বাস্থ্যহীন , দুর্বল , শক্তিক্ষমতাহীন ও দরিদ্র বস্তিবাসীমাত্রই কি দুঃখী ? এ প্রশ্নের জবাবও একই শ্রেণীর সকল বস্তিবাসীর ক্ষেত্রে অভিন্ন নয়। আর এদের মধ্যে যদি কেউ নিজেকে দুঃখী বলে অনুভব না করে তাহলে তাকে ভাগ্যহীন বলা চলে কি ?

অনুরূপভাবে একই ব্যক্তির সকল সময়ের অবস্থা এক নয়। একই ধনী ব্যক্তি যেমন কখনো সুখী , কখনো অসুখী , তেমনি একই বস্তিবাসী ব্যক্তি কখনো সুখী , কখনো অসুখী।

সুখ-দুঃখ ও সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্যের বাহ্যিক ও পার্থিব মানদণ্ড যদি চূড়ান্ত হতো তাহলে রাজপুত্র স্বেচ্ছায় সিংহাসন ত্যাগ করে ফকীর-দরবেশ হয়ে যেতো না , ধনী যাত্রীর ভুল করে ফেলে যাওয়া লক্ষ টাকা গরীব রিকশাওয়ালা ফেরত দিতে যেতো না , দেশ বা ধর্মের জন্য বা মানবতার জন্য কেউ প্রাণ উৎসর্গ করতো না।

এখানে মনে রাখার দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে এই যে , প্রতিটি ব্যক্তি যেমন একেকটি একক সত্তা তেমনি সে তার পরিবার , সমাজ , দেশ ও বিশ্বের এবং সর্বোপরি গোটা সৃষ্টিলোকের সত্তারও অবিচ্ছেদ্য অংশবিশেষ বটে।

সন্তান নিঃসন্দেহে পিতামাতার সত্তার অংশবিশেষ এবং পিতামাতাও সন্তানের সত্তার অংশবিশেষ। এভাবে পরস্পরের সত্তার অংশবিশেষ হওয়ার কারণেই তারা শারীরিকভাবে পরস্পর স্বাধীন সত্তা হওয়া সত্ত্বেও পরস্পরের সুখ-দুঃখ , ভালো-মন্দ ও সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য দ্বারা পারস্পরিকভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে। এ কারণেই পিতামাতার সন্তান-জন্মলাভপূর্ব অবস্থার দ্বারা সন্তানের প্রভাবিত হওয়ার মধ্যেই তাদের পারস্পরিক প্রভাব সীমাবদ্ধ নয় , বরং সন্তানের জন্মপরবর্তী-কালীন পারস্পরিক সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্যও তাদেরকে পারস্পরিকভাবে স্পর্শ করে। অনেক সময় সন্তানের দুর্ভাগ্য স্বয়ং সন্তানের তুলনায় পিতামাতার জন্য অধিকতর যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে।

একটি জন্মান্ধ শিশু পার্থিব জগতের সৌন্দর্য কী জানে না এবং তা তাকে হাজারো ব্যাখ্যা দিয়েও বুঝানো সম্ভব নয়। তাই পার্থিব জগতের সৌন্দর্য দেখতে না পারার কারণে তার তেমন কোনো দুঃখ হবার কথা নয় , কিন্তু সন্তানের জন্মান্ধতার কষ্ট এমনই যন্ত্রণাদায়ক হয় যে , অনেক সময় পিতামাতা সন্তানের অন্ধত্ব দেখার আগে নিজেদের মৃত্যু হলো না কেন - এ মর্মে আফসোস করে থাকে।

বিষয়টি একই দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যকার সম্পর্কের সাথে তুলনীয়। একই দেহের কোনো অঙ্গ রোগাক্রান্ত হলে তা দ্বারা সুস্থ অঙ্গও প্রভাবিত হয়। এ ক্ষেত্রে যে অঙ্গের সাথে যে অঙ্গের দূরত্বগত বা কর্মগত নৈকট্য বেশী সে সব অঙ্গ পরস্পর অধিকতর প্রভাবিত হয়। তেমনি সমাজ , দেশ ও বিশ্বের সামগ্রিক পরস্থিতির ভালো-মন্দ দ্বারা ব্যক্তি প্রভাবিত হয় , কারণ , সে সমাজ , দেশ ও বিশ্বের অংশ।

চিকিৎসাযোগ্য নয় এমন কোনো ব্যাধি কোনো ব্যক্তি বিদেশ থেকে নিয়ে এলে এবং তা সমাজে সংক্রামিত হলে তাতে একজন সুস্থ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার এবং তা থেকে আদৌ সুস্থ না হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। পিতামাতার সাথে সন্তানের সম্পর্কও তেমনি। সন্তানের জন্মগ্রহণপূর্ব তথা মাতৃগর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় এ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতম থাকে বিধায় সন্তানের মধ্যে পিতামাতার ভালোমন্দ বৈশিষ্ট্য স্থানান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশী। পিতার দেহের প্রাণবীজ থেকে মাতৃগর্ভে সন্তানের সূচনা হয় এবং মাতৃদেহের উপাদানে পরিপুষ্ট হয়ে সে একটি পরিপূর্ণ শিশুরূপে ভূমিষ্ঠ হয়। ফলে পিতামাতার বৈশিষ্ট্য তার মধ্যে সর্বাধিক মাত্রায় স্থানান্তরিত হওয়াটাই স্বাভাবিক।

এ বিষয়টিকে গাছের বীজ থেকে গাছ হওয়ার সাথে তুলনা করা যায়। টক আমের আঁটি থেকে টক আমের গাছই হবে , মিষ্টি আমের গাছ হবে না। অন্যদিকে যে মাটিতে এ আঁটি বপন করা হয়েছে তার প্রভাবও গাছ ও তার ফলে বিস্তার লাভ করবে। বলা হয় , ছাতকের কমলার বীজ দার্জিলিং-এ লাগালে তাতে ছাতকের কমলা পাওয়া যাবে না , তেমনি হুবহু দার্জিলিং-এর কমলাও পাওয়া যাবে না , বরং ছাতক ও দার্জিলিং উভয় জাতের কমলাগাছের কমলা থেকে তার বৈশিষ্ট্য কিছুটা স্বতন্ত্র হবে। এর বিপরীত করা হলেও তার ফল হবে প্রায় অনুরূপ। তবে বীজ থেকে চারা গজানোর পর সে চারা তুলে নিয়ে তৃতীয় কোন জায়গায় লাগালে এর বৈশিষ্ট্য হবে আরো ভিন্ন ধরনের। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে বীজ , জন্মকালীন পরিপুষ্টি ও জন্মপরবর্তী পরিপুষ্টি তিনটিই প্রভাবশালী হবে এবং মিশ্র ফলাফল প্রদান করবে।

তেমনি পোকায় ধরা , ত্রুটিপূর্ণ ও দুর্বল বীজ থেকে সৃষ্ট গাছ এবং দূষিত মাটিতে বপনকৃত ভালো বীজ থেকে সৃষ্ট গাছও নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হবে - এটাই স্বাভাবিক।

মানুষের বেলায় , একই প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী সন্তানের মধ্যে পিতা ও মাতার কাছ থেকে জন্মসূত্রে প্রাপ্ত প্রভাবের পাশাপাশি জন্মপরবর্তী পরিবেশ ও শিক্ষাও প্রভাবশালী হয়ে থাকে। তবে মানুষ তার বিচারবুদ্ধির পরিপক্বতায় উপনীত হবার পর স্বীয় চেষ্টা-সাধনা ও সংগ্রাম-সাধনার মাধ্যমে জন্ম , পরিবেশ ও শিক্ষা থেকে প্রাপ্ত অবাঞ্ছিত প্রভাব শারীরিক ও পার্থিব ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও এবং নৈতিক ক্ষেত্রে পুরোপুরি কাটিয়ে ঊঠতে পারে।

তৃতীয়তঃ সৃষ্টির সাফল্য ও ব্যর্থতার মানদণ্ড হচ্ছে সে জন্মগতভাবে যে সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে তার বিকাশ ও পূর্ণতায় উপনীত হওয়া বা না-হওয়াতে , অন্যের অনুরূপ হওয়া বা না-হওয়াতে নয়। বিড়ালের জন্য পরিপূর্ণ বিড়াল হওয়াতেই সার্থকতা , বাঘ হতে না পারা তার জন্য ব্যর্থতা নয়। একই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যের ক্ষেত্রেও তা-ই। অন্যদিকে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে মূল পার্থক্য তার বিচারবুদ্ধি ও ঐশী গুণাবলী , অতএব , তার সাফল্য ও ব্যর্থতার মানদণ্ড হচ্ছে এ গুণাবলীর বিকাশ ও ব্যবহার। এতে যে সফল , সে-ই প্রকৃত সফল এবং এতে যে ব্যর্থ সে-ই প্রকৃত ব্যর্থ।

অন্যদিকে পার্থিব ও অপার্থিব মিলিয়ে ব্যক্তির আশা-আকাঙ্ক্ষা ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে স্বতন্ত্র। তাই দেখা যায় যে , এক ব্যক্তি যা পাওয়ার জন্য লালায়িত এবং না পাওয়ার দুঃখে বুক ফেটে মারা যাবার উপক্রম , আরেক ব্যক্তি তা-ই অবজ্ঞাভরে পরিহার করছে। অতএব , সাফল্য-ব্যর্থতার অন্যতম ব্যক্তিগত মানদণ্ড এই আশা-আকাঙ্ক্ষও বটে , তবে কারো ব্যক্তিগত মানদণ্ড প্রকৃত বিচারে যথার্থ হতে পারে এবং কারো মানদণ্ড অযথার্থও হতে পারে। এ মানদণ্ডের যথার্থতা-অযথার্থতা নির্ণীত হবে অপার্থিব মানবিক মানদণ্ডের সাথে তুলনা করে। কারণ , এটাই মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মাঝে পার্থক্য নির্দেশ করে।

মানুষ অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পারছে যে , বস্তুজগতের সাফল্য ও ব্যর্থতা এবং সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য একদিকে যেমন বিভিন্ন প্রাকৃতিক , অপ্রাকৃতিক ও মানবিক কারণের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত , তেমনি মরণশীল মানুষের জন্য তা খুবই অস্থায়ী। অন্যদিকে মানুষ অবস্তুগত যা কিছু অর্জন করে তা বস্তুজগতের কারণাদির প্রভাবে তার হাতছাড়া হয় না এবং তা চিরস্থায়ী। তাই তার উচিত মানবিক ও আত্মিক সম্পদ অর্জনকেই সাফল্য ও ব্যর্থতার মানদণ্ড হিসেবে গণ্য করা এবং পার্থিব জীবন ও উপায়-উপকরণকে এ লক্ষ্যে উপনীত হবার মাধ্যমরূপে ব্যবহার করা।

মোদ্দা কথা , সৃষ্টিলোকে যা কিছু অবাঞ্ছিত উপাদান ও কারণ বলে মনে হয় তা মোটেই অযথা , বা অবাঞ্ছিত , বা অকল্যাণকর নয়। বরং সামগ্রিক ও চূড়ান্ত বিচারে সব কিছুতেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে।

আমি কেন তুমি হলাম না ?!

এ প্রসঙ্গে আনুষঙ্গিক হিসেবে আরো একটি বিষয়ের ওপরে সংক্ষেপে হলেও আলোকপাত করা প্রয়োজন বলে মনে হয়। তা হচ্ছে , অনেক সময় অপূর্ণতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে দেখা যায়। যেমন: বলা হয় , সৃষ্টিকর্তা অমুককে বিকলাঙ্গ করে সৃষ্টি করলেন কেন ? আমি কেন সুন্দর চেহারার অধিকারী হলাম না ? তিনি কেন আমাকে ধনীর ঘরে পাঠালেন না অর্থাৎ আমি কেন ধনীর সন্তান হলাম না ? আমার মেধা-প্রতিভা অমুকের তুলনায় কম হলো কেন ? এ পরিবারে জন্ম নেয়ার কারণেই আমি দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছি। ইত্যাদি।

এসব অভিযোগের জবাবে যা বলতে হয় তা হচ্ছে , সৃষ্টিপ্রকৃতিতে অপূর্ণতা বলতে স্বতন্ত্র কিছু নেই , বরং পূর্ণতার অভাব বা ঘাটতিই অপূর্ণতা। আর পূর্ণতার অভাব বা ঘাটতি সৃষ্টিজগতের কার্যকারণ থেকেই উদ্ভূত হয় ; সৃষ্টিকর্তা পরিকল্পিতভাবে কারো মধ্যে ঘাটতি সৃষ্টি করে দেন না বা কাউকে পূর্ণতা থেকে বঞ্চিত করেন না। বিশেষ করে মানুষের ক্ষেত্রে এই অপূর্ণতা বা ঘাটতি অজ্ঞতা বা ভুল পদক্ষেপ থেকে উদ্ভূত হয়।

ওপরে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে , কোনো বীজে ত্রুটি থাকলে বা ত্রুটিপূর্ণ মাটিতে বীজ বপন করা হলে অথবা পরিবেশগত অবনতি ঘটলে একটি বীজ থেকে ত্রুটিপূর্ণ গাছ জন্ম নিতে পারে এবং তা স্বাভাবিক পরিবৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত হতে পারে ও স্বাভাবিক ফল প্রদানে অসমর্থ হতে পারে। অনুরূপভাবে পিতার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন প্রাণবীজে বা মাতার ডিম্বে বা শরীরে ত্রুটি থাকলে অথবা পারিপার্শ্বিক ত্রুটির কারণে (যেমন: হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ-পরবর্তীকালে সেখানকার বেঁচে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে ঘটেছে) বিকলাঙ্গ সন্তান জন্ম নিতে পারে। অতএব , এ জন্য সৃষ্টিকর্তাকে দোষারোপ করা ঠিক নয়।

সুন্দর চেহারার অধিকারী বা ধনীর সন্তান হওয়ার বিষয়টিও অনুরূপ। বিষয়টি নিম্নোক্ত উদাহরণের সাহায্যে অপেক্ষাকৃত সহজে বুঝা যেতে পারে।

-এর যে প্রাণবীজ -এর গর্ভে মানবশিশুতে পরিণত হয়েছে তা-ই রূপে জন্মগ্রহণ করেছে এবং উক্ত প্রাণবীজ ও গর্ভধারিনীর গর্ভকালীন অবস্থার ফলে যে ধরনের শিশু তৈরী হওয়া সম্ভব সে শিশুরূপেই ভূমিষ্ঠ হয়েছে। যে সময়ে -এর -বীজ দ্বারা -এর গর্ভসঞ্চার হয়ে -এর ভ্রূণ তৈরী হয়েছে সে সময় তা না হয়ে অন্য সময় হলে -এর অন্য কোনো বীজ দ্বারা -এর গর্ভসঞ্চার হলে তাতে -এর জন্ম হতো না , বরং -এর জন্ম হতো এবং হয়তোবা বীজ অথবা গর্ভকালীন অবস্থার পার্থক্যের কারণে সুন্দর চেহারা নিয়ে জন্মগ্রহণ করতো। অর্থাৎ -এর পক্ষে যা হওয়া সম্ভব ছিলো সে তা-ই হয়েছে , -এর পক্ষে হওয়া সম্ভব ছিলো না , কারণ উভয়ই স্বতন্ত্র।

ওপরের উদাহরণের -এর পক্ষে ধনীর সন্তান বা নামীদামী লোকের সন্তান হওয়ার বিষয়টিও অনুরূপ , বরং এর অসম্ভাব্যতা অধিকতর সুস্পষ্ট। কারণ , দরিদ্র -এর -প্রাণবীজ থেকে -এর জন্ম হয়েছে এবং ধনী -এর -প্রাণবীজ থেকে -এর জন্ম হয়েছে। এখন -এর পক্ষে কী করে হওয়া বা -এর সন্তান হওয়া সম্ভব হতো ?

অনুরূপভাবে -এর প্রাণবীজ দ্বারা -এর পরিবর্তে গর্ভবতী হলে সে সন্তান হতো না। এমনকি যদি ধরে নেয়া হয় যে , -এর -প্রাণবীজ থেকেই গর্ভবতী হয়েছে তথাপি সে সন্তান হতো না। কারণ , বৃক্ষের বৈশিষ্ট্য বিনির্মাণে বীজের ভূমিকা মুখ্য হলেও মাটির ভূমিকা উপেক্ষণীয় নয় , যে কারণে ছাতকের কমলার বীজ দার্জিলিং-এ লাগালে তাতে না ছাতকের কমলা হয় , না দার্জিলিং-এর , বরং তৃতীয় ধরনের কমলা হয়ে থাকে। অতএব , -প্রাণবীজ থেকে -এর পরিবর্তে -এর গর্ভে সন্তান হলে সে বর্তমান থেকে ভিন্ন এক ব্যক্তিরূপে জন্ম নিতো , এমনকি তার নাম রাখা হলেও।

আর -এর গর্ভে -এর -প্রাণবীজের পরিবর্তে -এর কোনো প্রাণবীজ থেকে গর্ভসঞ্চার হলে তা থেকে -এর জন্মগ্রহণের তো দূরতম সম্ভাবনাও থাকে না। কারণ , সন্তানের ব্যক্তিসত্তা নির্ধারণের মূল উপাদান হচ্ছে প্রাণবীজ ; ল্যাংরা আমের বীজ থেকে ল্যাংরা আম এবং ফজলী আমের বীজ থেকে ফজলী আম জন্ম নেবে ; মাটির অভিন্নতা একটিকে আরেকটিতে পরিবর্তিত করে দেয় না , যদিও মাটির পরিবর্তনে একই বীজের গাছের বৈশিষ্ট্যে অনেকখানি পার্থক্য হয়ে থাকে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে , যারা অসুন্দর , হীনস্বাস্থ্য , দুর্বল , বিকলাঙ্গ , ক্ষমতাহীন বা নিঃস্ব হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছে তাদের পক্ষে অন্য কেউ হয়ে জন্মগ্রহণ করা সম্ভব ছিলো না। অবশ্য তার জন্ম না হওয়া সম্ভব ছিলো , (কারণ , সে একজন সম্ভব অস্তিত্ব)। কিন্তু বিষয়টি তার পিতামাতার ওপর নির্ভরশীল এবং তার জন্মের জন্য তার পিতামাতার দায়িত্বহীন ইচ্ছা অথবা দায়িত্বহীন ইচ্ছা না থাকা সাপেক্ষে অজ্ঞতাই দায়ী।

আর ক্ষেত্রবিশেষে (যেমন: বিকলাঙ্গতা বা জন্মগত ব্যাধির ক্ষেত্রে) এ ধরনের সন্তানের জন্মগ্রহণের কারণে স্বয়ং সন্তানটির মনঃকষ্টের পরিমাণের চেয়ে তার পিতামাত্রার মনঃকষ্টের পরিমাণ অনেক গুণে বেশী হয়ে থাকে এবং ক্ষেত্রবিশেষে (যেমন: দারিদ্র্য ও অসৌন্দর্যের ক্ষেত্রে) সন্তানটি তার জন্মগ্রহণকে সম্ভাব্য জন্ম না নেয়ার ওপর অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। কোনো দরিদ্রসন্তানকে যদি জানানো হয় যে , দারিদ্র্যজনিত কারণে তার পিতামাতাকে কেউ এ সন্তানটি গর্ভে থাকাকালে গর্ভপাত ঘটানোর পরামর্শ দিয়েছিলো তখন ঐ পরামর্শদাতার প্রতি সন্তানটি সন্তুষ্ট হয় , নাকি অসন্তুষ্ট হয় তা লক্ষণীয়। নিঃসন্দেহে সে তার জন্ম না নেয়ার কথাটি কিছুতেই মেনে নিতে পারে না।

অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়া মানুষের উন্নতির কারণ

বস্তুতঃ মানব প্রজাতির অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে , প্রাকৃতিক , প্রাণীজ ও মানব-জাত অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়া অসংখ্য বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের কারণ হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। মানুষ এ সব প্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচার পথ খুঁজতে গিয়ে চিন্তা-গবেষণা করেছে এবং এমন সব বিস্ময়কর আবিষ্কার-উদ্ভাবন করেছে যা মানবসভ্যতার সৃষ্টি করেছে এবং তাকে এগিয়ে নিয়েছে। আর সৃষ্টিলোকের চূড়ান্ত লক্ষ্যের বাস্তবায়নের জন্য যে সব ঘটনা সংঘটিত হওয়া প্রয়োজন তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি মানুষ সৃষ্টিলোকে নিহিত সকল প্রাকৃতিক বিধিবিধান উদ্ঘাটন করবে ও নিজেদের কল্যাণের জন্য তা কাজে লাগাবে। কিন্তু কথিত অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়াসমূহ না থাকলে মানুষ আবিষ্কার-উদ্ভাবনে অনুপ্রাণিত হতো না।

অবশ্য প্রাকৃতিক জগতে , বিশেষতঃ প্রাণীজগতে এমন অনেক উপায়-উপকরণ পরিলক্ষিত হয় যার মধ্যে দৃশ্যতঃ অকল্যাণ ছাড়া কোনোরূপ কল্যাণ নিহিত নেই। মানুষ মনে করে , এ সব সৃষ্টি না থাকলেই বা কী অসুবিধা ছিলো ?

আসলে বাহ্যতঃ অকল্যাণকর হিসেবে পরিদৃষ্ট সৃষ্টিসমূহের মধ্যেও যে কল্যাণ নিহিত নেই এরূপ মনে করা ঠিক নয়। কারণ , ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বাহ্যিক ক্ষতিকর উপাদান বা প্রাণী থেকে এমন সব কল্যাণকর উপাদান আবিষ্কৃত হয়েছে যা মানুষ পূর্বে কল্পনাও করতে পারতো না। উদাহরণ স্বরূপ , সাপের ন্যায় মারাত্মক প্রাণঘাতী প্রাণীর বিষ মানুষের বিরাট কল্যাণ সাধনে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে সম ওযনের স্বর্ণের তুলনায় বিষের দাম কয়েক গুণ বেশী দেখা যায়।

ক্ষতিকারকতা আপেক্ষিক

এমতাবস্থায় এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই যে , সৃষ্টিকুলের সকল সৃষ্টির মধ্যেই কল্যাণকারিতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাহ্যতঃ ক্ষতিকারক যা পরিলক্ষিত হয় তার ক্ষতিকারকতাও আপেক্ষিক। প্রথমতঃ অনেক প্রাণীর ক্ষতিকারকতা তাদের আত্মরক্ষার স্বার্থে অপরিহার্য। যেমন: সাপের বিষ এবং বাঘ ও সিংহের দন্ত-নখর তাদের আত্মরক্ষার জন্য যরূরী। দ্বিতীয়তঃ এক সৃষ্টির ক্ষতিকারকতা কেবল অন্য সৃষ্টির সংস্পর্শেই অর্থাৎ পারস্পরিক সংঘাতের পরিস্থিতিতেই প্রকাশ পায়। অন্যথায় প্রতিটি সৃষ্টিই তার তার নিজস্ব অবস্থানে সুন্দর। একটি সাপকে বা একটি সিংহকে তাদের নিজস্ব অবস্থানে রেখে পর্যবেক্ষণ করলে তার সৌন্দর্য ও তার সৃষ্টিতে সৃষ্টিকর্তার চমৎকার সৃষ্টিকুশলতাই ধরা পড়বে । তেমনি একটি কাঁটাগাছকে তার নিজস্ব অবস্থানে রেখে দেখলে তাকেও সুন্দর ও সুকৌশল সৃষ্টি রূপে দেখা যাবে।

এরপর আসে মানুষের মধ্যকার অবাঞ্ছিত দিকসমূহের কথা। ইতিপূর্বেই আমরা উল্লেখ করেছি যে , প্রাণীকুল , বিশেষতঃ মানুষ কমবেশী স্বাধীনতার অধিকারী। আর এদের স্বাধীনতার মধ্যে পারস্পরিক সংঘাতও অনিবার্য।

ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যের নেতিবাচক ব্যবহার

প্রাণী হিসেবে অপরিহার্য স্বাধীনতার অতিরিক্ত মানুষের রয়েছে আরেক ধরনের স্বাধীনতা যাকে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি নামে অভিহিত করা যায়। অর্থাৎ তার ইচ্ছাশক্তি অন্যান্য প্রাণীর ইচ্ছাশক্তির ন্যায় শুধু সহজাত প্রবণতা তথা আত্মরক্ষার তাগিদ থেকেই উদ্ভূত নয় , বরং সৃষ্টির সেরা হিসেবে তার মধ্যে রয়েছে ধরণীর বুকে স্বীয় নেতৃত্ব , কর্তৃত্ব , আধিপত্য , শ্রেষ্ঠত্ব ও মালিকানা প্রতিষ্ঠার প্রবণতা। এ প্রবণতা থেকে উদ্ভূত বিশেষ ধরনের ইচ্ছা ও তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালানো তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

মানুষের এ বিশেষ ইচ্ছাশক্তি ও ক্ষমতা খারাপ কিছু তো নয়ই , বরং এ হচ্ছে তার এক বিরাট ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এ বৈশিষ্ট্যকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার না করে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করার ফলে অবাঞ্ছিত অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ক্ষতিকারকতা রোধ করতে হলে হয় তাকে এ ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করতে হতো , অথবা এ ক্ষমতার অপব্যবহারপ্রবণতা থেকে তাকে মুক্ত রাখতে হতো। কিন্তু তাহলে তার পরিণতি কী হতো ?

প্রাণী হিসেবে প্রদত্ত স্বাধীনতার পাশাপাশি মানুষকে প্রদত্ত ম্বাধীন ইচ্ছাশক্তি তাকে দেয়া না হলে মানুষ মানুষ হতো না ; স্রেফ একটি উন্নত স্তরের প্রাণীপ্রজাতি হতো। সে ক্ষেত্রে তার দ্বারা জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশ ও সভ্যতার সৃষ্টি হতো না। অন্যদিকে তাকে সৃজনক্ষমতা প্রদান করার পাশাপাশি তার অপব্যবহার করার ক্ষমতা বিলুপ্ত করে দেয়া হলে কার্যতঃ সে ফেরেশতার কাছাকাছি কোনো প্রাণীতে পরিণত হতো , মানুষ হতো না এবং মানুষের মধ্যে সৃষ্টিকর্তার সকল গুণের (সীমিত মাত্রায় হলেও) যে সমাহার দেখা যাচ্ছে তথা সে যেভাবে সৃষ্টিকর্তার প্রতিচ্ছবি বা প্রতিনিধি রূপে আবির্ভূত হয়েছে তার মধ্যে এ বৈশিষ্ট্যের পরিপূর্ণ প্রকাশ ঘটতো না। অন্য কথায় , তার মধ্যে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিক্ষমতার যে সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তা ঘটতো না। কারণ , সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিক্ষমতার সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ মানে হচ্ছে তাঁর গুণাবলীর অনুরূপ গুণাবলী সম্পন্ন সৃষ্টির উদ্ভব ঘটানো , যদিও সৃষ্টি ও সসীম হবার কারণে এ সৃষ্টির মধ্যে তাঁর সে গুণাবলীর বহিঃপ্রকাশ ঘটবে সীমিত পরিমাণে। সে সীমা কতখানি তা বড় কথা নয় , তবে সৃষ্টির মাঝে স্রষ্টার গুণাবলী সর্বোচ্চ যে মাত্রায় দেয়া সম্ভব তিনি তাকে তা সে মাত্রায়ই প্রদান করবেন এটাই স্বাভাবিক , অন্যথায় এ সৃষ্টি না সর্বোত্তম হবে , না তাঁর প্রতিচ্ছবি বা প্রতিনিধি হবে।

মানুষকে সৃষ্টিকর্তার সকল গুণ সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় প্রদানের মানেই হচ্ছে তাকে শুধু সৃষ্টির ক্ষমতাই দেয়া হবে না , বরং ধ্বংসের ক্ষমতাও দেয়া হবে , যদিও উভয়ই সীমিত পরিমাণে ; এ সীমা কতোখানি তা বড় কথা নয় , তবে সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় হওয়াই স্বাভাবিক। আর এ ধরনের গুণাবলীর অধিকারী হওয়ার মানেই হচ্ছে মানুষ সৃষ্টিলোকের ওপর স্বাধীনভাবে তার ইচ্ছার বাস্তবায়ন ঘটাবে। এ ক্ষেত্রে তার ইচ্ছাকে শুধু কল্যাণ-ইচ্ছার মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেয়া হলে বা অকল্যাণ-ইচ্ছা দেয়া সত্ত্বেও তার বাস্তবায়ন অসম্ভব করে দেয়া হলে তার মানে হতো তার স্বাধীনতাকে প্রায় বিলুপ্ত করে দেয়া তথা তাকে সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় স্রষ্টার সকল গুণ না দেয়া। আর তাহলে সে সৃষ্টিকর্তার সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রার বহিঃপ্রকাশ বা তাঁর সম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রার প্রতিনিধি হতো না। সে অবস্থায় সৃষ্টিকর্তার গুণাবলী বহুলাংশে অপ্রকাশিত থেকে যেতো।

মূলতঃ প্রতিনিধিত্বের শর্তই হচ্ছে প্রতিনিধিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। তাকে প্রদত্ত এ স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ করবে দু টি জিনিস: প্রথমতঃ প্রাকৃতিক বিধিবিধান , দ্বিতীয়তঃ নৈতিক বিধিবিধান তথা ঔচিত্য-অনৌচিত্যবোধ। মানুষের ইচ্ছা ও শক্তির নিয়ন্ত্রণকারী এ দু টি জিনিস। প্রাকৃতিক বিধিবিধানকে লঙ্ঘন করার সাধ্য মানুষের নেই। (অবশ্য অজ্ঞাত কোনো প্রাকৃতিক বিধান আবিষ্কার করে তার প্রয়োগের মাধ্যমে পূর্ব থেকে জ্ঞাত প্রাকৃতিক বিধিবিধানের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তিলাভ সম্ভব হতে পারে। এরূপ হলে প্রকৃত পক্ষে তাকে প্রাকৃতিক বিধানের লঙ্ঘন বলে গণ্য করা চলে না।) কিন্তু নৈতিক বিধিবিধান লঙ্ঘনের সুযোগ তার রয়েছে।

তবে যে মানুষ স্বীয় স্বরূপ তথা সে যে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধিত্ব করছে - এ সত্য যথাযথভাবে উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে তার পক্ষে নৈতিক বিধান লঙ্ঘন করা সম্ভব নয়। যে সৃষ্টি প্রকৃতই সৃষ্টিকর্তার প্রতিনিধি সে জ্ঞানের আলোয় এতোখানি উদ্ভাসিত যে , নৈতিক বিধান লঙ্ঘনের বর্তমান (ইহজাগতিক) ও ভবিষ্যৎ (পরজাগতিক) প্রতিক্রিয়া তার সামনে দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট থাকে। ফলে স্বাধীনতা থাকা সত্ত্বেও তার পক্ষে নৈতিক বিধান লঙ্ঘন করা সম্ভব নয়।

পিতামাতার কারণে সন্তানের দুর্ভাগ্য কেন ?

সবশেষে আরো একটি প্রশ্নের জবাব দেয়া প্রয়োজন বলে মনে হয়। তা হচ্ছে , অনেক ক্ষেত্রেই পিতামাতার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যের পরিণামে সন্তান সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্যের অধিকারী হয়। ধনীর সন্তান ধনী , গরীবের সন্তান গরীব হয়। অনেক ক্ষেত্রেই কঠিন রোগগ্রস্ত পিতা বা মাতার সন্তান জন্মগতভাবে রোগগ্রস্ত হয়ে থাকে। প্রশ্ন হচ্ছে , এ ক্ষেত্রে একজনের কর্মফল আরেক জন ভোগ করবে কেন ?

আসলে কয়েকটি বিষয়ে সচেতনতার অভাব থেকে এ প্রশ্নের উদয় হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রথমেই প্রশ্ন জাগে , সুখ-দুঃখের স্বরূপ কি মানুষ উদ্ঘাটন করতে পেরেছে ? সুখ-দুঃখ ও সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য প্রতিটি মানুষের বর্তমান , অতীত ও সম্ভাব্য বা প্রার্থিত ভবিষ্যৎ অবস্থার মধ্যে তুলনার ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃত পক্ষে বিষয়টি আপেক্ষিক। সে কী আছে , কী চায় এবং কী হলো - এ তিনের সমন্বয় হচ্ছে তার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য নির্ণয়ের প্রকৃত মানদণ্ড।

তাই প্রশ্ন করতে হয় , জন্মগতভাবে বাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্যাবলীর অধিকারী তথা সুন্দর , স্বাস্থ্যবান , শক্তিশালী , শক্তিক্ষমতার অধিকারী ও প্রভূত ধনসম্পদের মালিক মাত্রই কি ভাগ্যবান ? তাদের প্রত্যেকেই কি সুখী ? তাদের সকলেই কি শান্তির অধিকারী ?

নিঃসন্দেহে উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর ক্ষেত্রে একই শ্রেণীর সকলের জবাব এক নয়।

তেমনি জন্মগতভাবে অবাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্যাবলীর অধিকারী তথা অসুন্দর , স্বাস্থ্যহীন , দুর্বল , শক্তিক্ষমতাহীন ও দরিদ্র বস্তিবাসীমাত্রই কি দুঃখী ? এ প্রশ্নের জবাবও একই শ্রেণীর সকল বস্তিবাসীর ক্ষেত্রে অভিন্ন নয়। আর এদের মধ্যে যদি কেউ নিজেকে দুঃখী বলে অনুভব না করে তাহলে তাকে ভাগ্যহীন বলা চলে কি ?

অনুরূপভাবে একই ব্যক্তির সকল সময়ের অবস্থা এক নয়। একই ধনী ব্যক্তি যেমন কখনো সুখী , কখনো অসুখী , তেমনি একই বস্তিবাসী ব্যক্তি কখনো সুখী , কখনো অসুখী।

সুখ-দুঃখ ও সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্যের বাহ্যিক ও পার্থিব মানদণ্ড যদি চূড়ান্ত হতো তাহলে রাজপুত্র স্বেচ্ছায় সিংহাসন ত্যাগ করে ফকীর-দরবেশ হয়ে যেতো না , ধনী যাত্রীর ভুল করে ফেলে যাওয়া লক্ষ টাকা গরীব রিকশাওয়ালা ফেরত দিতে যেতো না , দেশ বা ধর্মের জন্য বা মানবতার জন্য কেউ প্রাণ উৎসর্গ করতো না।

এখানে মনে রাখার দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে এই যে , প্রতিটি ব্যক্তি যেমন একেকটি একক সত্তা তেমনি সে তার পরিবার , সমাজ , দেশ ও বিশ্বের এবং সর্বোপরি গোটা সৃষ্টিলোকের সত্তারও অবিচ্ছেদ্য অংশবিশেষ বটে।

সন্তান নিঃসন্দেহে পিতামাতার সত্তার অংশবিশেষ এবং পিতামাতাও সন্তানের সত্তার অংশবিশেষ। এভাবে পরস্পরের সত্তার অংশবিশেষ হওয়ার কারণেই তারা শারীরিকভাবে পরস্পর স্বাধীন সত্তা হওয়া সত্ত্বেও পরস্পরের সুখ-দুঃখ , ভালো-মন্দ ও সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য দ্বারা পারস্পরিকভাবে প্রভাবিত হয়ে থাকে। এ কারণেই পিতামাতার সন্তান-জন্মলাভপূর্ব অবস্থার দ্বারা সন্তানের প্রভাবিত হওয়ার মধ্যেই তাদের পারস্পরিক প্রভাব সীমাবদ্ধ নয় , বরং সন্তানের জন্মপরবর্তী-কালীন পারস্পরিক সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্যও তাদেরকে পারস্পরিকভাবে স্পর্শ করে। অনেক সময় সন্তানের দুর্ভাগ্য স্বয়ং সন্তানের তুলনায় পিতামাতার জন্য অধিকতর যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে।

একটি জন্মান্ধ শিশু পার্থিব জগতের সৌন্দর্য কী জানে না এবং তা তাকে হাজারো ব্যাখ্যা দিয়েও বুঝানো সম্ভব নয়। তাই পার্থিব জগতের সৌন্দর্য দেখতে না পারার কারণে তার তেমন কোনো দুঃখ হবার কথা নয় , কিন্তু সন্তানের জন্মান্ধতার কষ্ট এমনই যন্ত্রণাদায়ক হয় যে , অনেক সময় পিতামাতা সন্তানের অন্ধত্ব দেখার আগে নিজেদের মৃত্যু হলো না কেন - এ মর্মে আফসোস করে থাকে।

বিষয়টি একই দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যকার সম্পর্কের সাথে তুলনীয়। একই দেহের কোনো অঙ্গ রোগাক্রান্ত হলে তা দ্বারা সুস্থ অঙ্গও প্রভাবিত হয়। এ ক্ষেত্রে যে অঙ্গের সাথে যে অঙ্গের দূরত্বগত বা কর্মগত নৈকট্য বেশী সে সব অঙ্গ পরস্পর অধিকতর প্রভাবিত হয়। তেমনি সমাজ , দেশ ও বিশ্বের সামগ্রিক পরস্থিতির ভালো-মন্দ দ্বারা ব্যক্তি প্রভাবিত হয় , কারণ , সে সমাজ , দেশ ও বিশ্বের অংশ।

চিকিৎসাযোগ্য নয় এমন কোনো ব্যাধি কোনো ব্যক্তি বিদেশ থেকে নিয়ে এলে এবং তা সমাজে সংক্রামিত হলে তাতে একজন সুস্থ মানুষের আক্রান্ত হওয়ার এবং তা থেকে আদৌ সুস্থ না হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। পিতামাতার সাথে সন্তানের সম্পর্কও তেমনি। সন্তানের জন্মগ্রহণপূর্ব তথা মাতৃগর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় এ সম্পর্ক ঘনিষ্ঠতম থাকে বিধায় সন্তানের মধ্যে পিতামাতার ভালোমন্দ বৈশিষ্ট্য স্থানান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশী। পিতার দেহের প্রাণবীজ থেকে মাতৃগর্ভে সন্তানের সূচনা হয় এবং মাতৃদেহের উপাদানে পরিপুষ্ট হয়ে সে একটি পরিপূর্ণ শিশুরূপে ভূমিষ্ঠ হয়। ফলে পিতামাতার বৈশিষ্ট্য তার মধ্যে সর্বাধিক মাত্রায় স্থানান্তরিত হওয়াটাই স্বাভাবিক।

এ বিষয়টিকে গাছের বীজ থেকে গাছ হওয়ার সাথে তুলনা করা যায়। টক আমের আঁটি থেকে টক আমের গাছই হবে , মিষ্টি আমের গাছ হবে না। অন্যদিকে যে মাটিতে এ আঁটি বপন করা হয়েছে তার প্রভাবও গাছ ও তার ফলে বিস্তার লাভ করবে। বলা হয় , ছাতকের কমলার বীজ দার্জিলিং-এ লাগালে তাতে ছাতকের কমলা পাওয়া যাবে না , তেমনি হুবহু দার্জিলিং-এর কমলাও পাওয়া যাবে না , বরং ছাতক ও দার্জিলিং উভয় জাতের কমলাগাছের কমলা থেকে তার বৈশিষ্ট্য কিছুটা স্বতন্ত্র হবে। এর বিপরীত করা হলেও তার ফল হবে প্রায় অনুরূপ। তবে বীজ থেকে চারা গজানোর পর সে চারা তুলে নিয়ে তৃতীয় কোন জায়গায় লাগালে এর বৈশিষ্ট্য হবে আরো ভিন্ন ধরনের। অর্থাৎ সে ক্ষেত্রে বীজ , জন্মকালীন পরিপুষ্টি ও জন্মপরবর্তী পরিপুষ্টি তিনটিই প্রভাবশালী হবে এবং মিশ্র ফলাফল প্রদান করবে।

তেমনি পোকায় ধরা , ত্রুটিপূর্ণ ও দুর্বল বীজ থেকে সৃষ্ট গাছ এবং দূষিত মাটিতে বপনকৃত ভালো বীজ থেকে সৃষ্ট গাছও নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হবে - এটাই স্বাভাবিক।

মানুষের বেলায় , একই প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী সন্তানের মধ্যে পিতা ও মাতার কাছ থেকে জন্মসূত্রে প্রাপ্ত প্রভাবের পাশাপাশি জন্মপরবর্তী পরিবেশ ও শিক্ষাও প্রভাবশালী হয়ে থাকে। তবে মানুষ তার বিচারবুদ্ধির পরিপক্বতায় উপনীত হবার পর স্বীয় চেষ্টা-সাধনা ও সংগ্রাম-সাধনার মাধ্যমে জন্ম , পরিবেশ ও শিক্ষা থেকে প্রাপ্ত অবাঞ্ছিত প্রভাব শারীরিক ও পার্থিব ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও এবং নৈতিক ক্ষেত্রে পুরোপুরি কাটিয়ে ঊঠতে পারে।

তৃতীয়তঃ সৃষ্টির সাফল্য ও ব্যর্থতার মানদণ্ড হচ্ছে সে জন্মগতভাবে যে সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে তার বিকাশ ও পূর্ণতায় উপনীত হওয়া বা না-হওয়াতে , অন্যের অনুরূপ হওয়া বা না-হওয়াতে নয়। বিড়ালের জন্য পরিপূর্ণ বিড়াল হওয়াতেই সার্থকতা , বাঘ হতে না পারা তার জন্য ব্যর্থতা নয়। একই প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যের ক্ষেত্রেও তা-ই। অন্যদিকে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে মূল পার্থক্য তার বিচারবুদ্ধি ও ঐশী গুণাবলী , অতএব , তার সাফল্য ও ব্যর্থতার মানদণ্ড হচ্ছে এ গুণাবলীর বিকাশ ও ব্যবহার। এতে যে সফল , সে-ই প্রকৃত সফল এবং এতে যে ব্যর্থ সে-ই প্রকৃত ব্যর্থ।

অন্যদিকে পার্থিব ও অপার্থিব মিলিয়ে ব্যক্তির আশা-আকাঙ্ক্ষা ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে স্বতন্ত্র। তাই দেখা যায় যে , এক ব্যক্তি যা পাওয়ার জন্য লালায়িত এবং না পাওয়ার দুঃখে বুক ফেটে মারা যাবার উপক্রম , আরেক ব্যক্তি তা-ই অবজ্ঞাভরে পরিহার করছে। অতএব , সাফল্য-ব্যর্থতার অন্যতম ব্যক্তিগত মানদণ্ড এই আশা-আকাঙ্ক্ষও বটে , তবে কারো ব্যক্তিগত মানদণ্ড প্রকৃত বিচারে যথার্থ হতে পারে এবং কারো মানদণ্ড অযথার্থও হতে পারে। এ মানদণ্ডের যথার্থতা-অযথার্থতা নির্ণীত হবে অপার্থিব মানবিক মানদণ্ডের সাথে তুলনা করে। কারণ , এটাই মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মাঝে পার্থক্য নির্দেশ করে।

মানুষ অভিজ্ঞতা থেকে জানতে পারছে যে , বস্তুজগতের সাফল্য ও ব্যর্থতা এবং সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য একদিকে যেমন বিভিন্ন প্রাকৃতিক , অপ্রাকৃতিক ও মানবিক কারণের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত , তেমনি মরণশীল মানুষের জন্য তা খুবই অস্থায়ী। অন্যদিকে মানুষ অবস্তুগত যা কিছু অর্জন করে তা বস্তুজগতের কারণাদির প্রভাবে তার হাতছাড়া হয় না এবং তা চিরস্থায়ী। তাই তার উচিত মানবিক ও আত্মিক সম্পদ অর্জনকেই সাফল্য ও ব্যর্থতার মানদণ্ড হিসেবে গণ্য করা এবং পার্থিব জীবন ও উপায়-উপকরণকে এ লক্ষ্যে উপনীত হবার মাধ্যমরূপে ব্যবহার করা।

মোদ্দা কথা , সৃষ্টিলোকে যা কিছু অবাঞ্ছিত উপাদান ও কারণ বলে মনে হয় তা মোটেই অযথা , বা অবাঞ্ছিত , বা অকল্যাণকর নয়। বরং সামগ্রিক ও চূড়ান্ত বিচারে সব কিছুতেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে।

আমি কেন তুমি হলাম না ?!

এ প্রসঙ্গে আনুষঙ্গিক হিসেবে আরো একটি বিষয়ের ওপরে সংক্ষেপে হলেও আলোকপাত করা প্রয়োজন বলে মনে হয়। তা হচ্ছে , অনেক সময় অপূর্ণতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে দেখা যায়। যেমন: বলা হয় , সৃষ্টিকর্তা অমুককে বিকলাঙ্গ করে সৃষ্টি করলেন কেন ? আমি কেন সুন্দর চেহারার অধিকারী হলাম না ? তিনি কেন আমাকে ধনীর ঘরে পাঠালেন না অর্থাৎ আমি কেন ধনীর সন্তান হলাম না ? আমার মেধা-প্রতিভা অমুকের তুলনায় কম হলো কেন ? এ পরিবারে জন্ম নেয়ার কারণেই আমি দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছি। ইত্যাদি।

এসব অভিযোগের জবাবে যা বলতে হয় তা হচ্ছে , সৃষ্টিপ্রকৃতিতে অপূর্ণতা বলতে স্বতন্ত্র কিছু নেই , বরং পূর্ণতার অভাব বা ঘাটতিই অপূর্ণতা। আর পূর্ণতার অভাব বা ঘাটতি সৃষ্টিজগতের কার্যকারণ থেকেই উদ্ভূত হয় ; সৃষ্টিকর্তা পরিকল্পিতভাবে কারো মধ্যে ঘাটতি সৃষ্টি করে দেন না বা কাউকে পূর্ণতা থেকে বঞ্চিত করেন না। বিশেষ করে মানুষের ক্ষেত্রে এই অপূর্ণতা বা ঘাটতি অজ্ঞতা বা ভুল পদক্ষেপ থেকে উদ্ভূত হয়।

ওপরে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে , কোনো বীজে ত্রুটি থাকলে বা ত্রুটিপূর্ণ মাটিতে বীজ বপন করা হলে অথবা পরিবেশগত অবনতি ঘটলে একটি বীজ থেকে ত্রুটিপূর্ণ গাছ জন্ম নিতে পারে এবং তা স্বাভাবিক পরিবৃদ্ধি থেকে বঞ্চিত হতে পারে ও স্বাভাবিক ফল প্রদানে অসমর্থ হতে পারে। অনুরূপভাবে পিতার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন প্রাণবীজে বা মাতার ডিম্বে বা শরীরে ত্রুটি থাকলে অথবা পারিপার্শ্বিক ত্রুটির কারণে (যেমন: হিরোসিমা ও নাগাসাকিতে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ-পরবর্তীকালে সেখানকার বেঁচে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে ঘটেছে) বিকলাঙ্গ সন্তান জন্ম নিতে পারে। অতএব , এ জন্য সৃষ্টিকর্তাকে দোষারোপ করা ঠিক নয়।

সুন্দর চেহারার অধিকারী বা ধনীর সন্তান হওয়ার বিষয়টিও অনুরূপ। বিষয়টি নিম্নোক্ত উদাহরণের সাহায্যে অপেক্ষাকৃত সহজে বুঝা যেতে পারে।

-এর যে প্রাণবীজ -এর গর্ভে মানবশিশুতে পরিণত হয়েছে তা-ই রূপে জন্মগ্রহণ করেছে এবং উক্ত প্রাণবীজ ও গর্ভধারিনীর গর্ভকালীন অবস্থার ফলে যে ধরনের শিশু তৈরী হওয়া সম্ভব সে শিশুরূপেই ভূমিষ্ঠ হয়েছে। যে সময়ে -এর -বীজ দ্বারা -এর গর্ভসঞ্চার হয়ে -এর ভ্রূণ তৈরী হয়েছে সে সময় তা না হয়ে অন্য সময় হলে -এর অন্য কোনো বীজ দ্বারা -এর গর্ভসঞ্চার হলে তাতে -এর জন্ম হতো না , বরং -এর জন্ম হতো এবং হয়তোবা বীজ অথবা গর্ভকালীন অবস্থার পার্থক্যের কারণে সুন্দর চেহারা নিয়ে জন্মগ্রহণ করতো। অর্থাৎ -এর পক্ষে যা হওয়া সম্ভব ছিলো সে তা-ই হয়েছে , -এর পক্ষে হওয়া সম্ভব ছিলো না , কারণ উভয়ই স্বতন্ত্র।

ওপরের উদাহরণের -এর পক্ষে ধনীর সন্তান বা নামীদামী লোকের সন্তান হওয়ার বিষয়টিও অনুরূপ , বরং এর অসম্ভাব্যতা অধিকতর সুস্পষ্ট। কারণ , দরিদ্র -এর -প্রাণবীজ থেকে -এর জন্ম হয়েছে এবং ধনী -এর -প্রাণবীজ থেকে -এর জন্ম হয়েছে। এখন -এর পক্ষে কী করে হওয়া বা -এর সন্তান হওয়া সম্ভব হতো ?

অনুরূপভাবে -এর প্রাণবীজ দ্বারা -এর পরিবর্তে গর্ভবতী হলে সে সন্তান হতো না। এমনকি যদি ধরে নেয়া হয় যে , -এর -প্রাণবীজ থেকেই গর্ভবতী হয়েছে তথাপি সে সন্তান হতো না। কারণ , বৃক্ষের বৈশিষ্ট্য বিনির্মাণে বীজের ভূমিকা মুখ্য হলেও মাটির ভূমিকা উপেক্ষণীয় নয় , যে কারণে ছাতকের কমলার বীজ দার্জিলিং-এ লাগালে তাতে না ছাতকের কমলা হয় , না দার্জিলিং-এর , বরং তৃতীয় ধরনের কমলা হয়ে থাকে। অতএব , -প্রাণবীজ থেকে -এর পরিবর্তে -এর গর্ভে সন্তান হলে সে বর্তমান থেকে ভিন্ন এক ব্যক্তিরূপে জন্ম নিতো , এমনকি তার নাম রাখা হলেও।

আর -এর গর্ভে -এর -প্রাণবীজের পরিবর্তে -এর কোনো প্রাণবীজ থেকে গর্ভসঞ্চার হলে তা থেকে -এর জন্মগ্রহণের তো দূরতম সম্ভাবনাও থাকে না। কারণ , সন্তানের ব্যক্তিসত্তা নির্ধারণের মূল উপাদান হচ্ছে প্রাণবীজ ; ল্যাংরা আমের বীজ থেকে ল্যাংরা আম এবং ফজলী আমের বীজ থেকে ফজলী আম জন্ম নেবে ; মাটির অভিন্নতা একটিকে আরেকটিতে পরিবর্তিত করে দেয় না , যদিও মাটির পরিবর্তনে একই বীজের গাছের বৈশিষ্ট্যে অনেকখানি পার্থক্য হয়ে থাকে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে , যারা অসুন্দর , হীনস্বাস্থ্য , দুর্বল , বিকলাঙ্গ , ক্ষমতাহীন বা নিঃস্ব হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছে তাদের পক্ষে অন্য কেউ হয়ে জন্মগ্রহণ করা সম্ভব ছিলো না। অবশ্য তার জন্ম না হওয়া সম্ভব ছিলো , (কারণ , সে একজন সম্ভব অস্তিত্ব)। কিন্তু বিষয়টি তার পিতামাতার ওপর নির্ভরশীল এবং তার জন্মের জন্য তার পিতামাতার দায়িত্বহীন ইচ্ছা অথবা দায়িত্বহীন ইচ্ছা না থাকা সাপেক্ষে অজ্ঞতাই দায়ী।

আর ক্ষেত্রবিশেষে (যেমন: বিকলাঙ্গতা বা জন্মগত ব্যাধির ক্ষেত্রে) এ ধরনের সন্তানের জন্মগ্রহণের কারণে স্বয়ং সন্তানটির মনঃকষ্টের পরিমাণের চেয়ে তার পিতামাত্রার মনঃকষ্টের পরিমাণ অনেক গুণে বেশী হয়ে থাকে এবং ক্ষেত্রবিশেষে (যেমন: দারিদ্র্য ও অসৌন্দর্যের ক্ষেত্রে) সন্তানটি তার জন্মগ্রহণকে সম্ভাব্য জন্ম না নেয়ার ওপর অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। কোনো দরিদ্রসন্তানকে যদি জানানো হয় যে , দারিদ্র্যজনিত কারণে তার পিতামাতাকে কেউ এ সন্তানটি গর্ভে থাকাকালে গর্ভপাত ঘটানোর পরামর্শ দিয়েছিলো তখন ঐ পরামর্শদাতার প্রতি সন্তানটি সন্তুষ্ট হয় , নাকি অসন্তুষ্ট হয় তা লক্ষণীয়। নিঃসন্দেহে সে তার জন্ম না নেয়ার কথাটি কিছুতেই মেনে নিতে পারে না।


23

24

25

26

27

28

29

30

31

32

33

34

35

36

37

38

39

40

41

42

43

44

45

46

47

48

49

50

51

52

53

54

55

56

57

58

59

60

61