চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড0%

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড লেখক:
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ: হযরত মোহাম্মদ (সা.)

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড

লেখক: আয়াতুল্লাহ্ জাফার সুবহানী
: মোহাম্মাদ মুনীর হোসেন খান
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ:

ভিজিট: 79234
ডাউনলোড: 7054


পাঠকের মতামত:

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-প্রথম খণ্ড চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 238 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 79234 / ডাউনলোড: 7054
সাইজ সাইজ সাইজ
চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)-দ্বিতীয় খণ্ড

লেখক:
প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বাংলা

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)

দ্বিতীয় খণ্ড

আয়াতুল্লাহ্ জা ফার সুবহানী

অনুবাদ : মোহাম্মদ মুনীর হোসেন খান

চিরভাস্বর মহানবী (সা.)

মূল : আয়াতুল্লাহ্ জাফার সুবহানী

অনুবাদ : মোহাম্মদ মুনীর হোসেন খান

সম্পাদনা : অধ্যাপক সিরাজুল হক

তত্ত্বাবধানে : শাহাবুদ্দীন দারায়ী

কালচারাল কাউন্সেলর

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাস,ঢাকা

প্রকাশকাল : সফর-1427,চৈত্র-1412,মার্চ-2006

প্রকাশনায় :

কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাস

বাড়ী নং 54, সড়ক নং 8/এ ,

ধানমন্ডি আ/এ ,ঢাকা-1209,বাংলাদেশ

প্রচ্ছদ:রফিকউল্লাহ গাযালী

মুদ্রণে:চৌকস প্রিন্টার্স লিঃ

131 ডিআইটি এক্সটেনশন রোড (4র্থ তলা),ঢাকা-1000

Chirobhashwor Mahanabi (Sm.),Bengali translation of ‘Forugh-e-Abadiyyat’ Written by: Ayatollah Jafar Sobhani;Translated by: Mohammad Munir Hossain Khan;Edited by: Abdul Muqit Chowdhury;Supervised by: Dr. Reza Hashemi,Cultural Counsellor,Embassy of the Islamic Republic of Iran,Dhaka,Bangladesh;Published on: Rabi-al-Awwal 1427,Chaitra 1412,April 2006.

ভূমিকা

ধর্মীয় আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য

মহানবী (সা.)-এর ব্যক্তিত্বের পূর্ণতার বিশেষত্ব

মহানবী (সা.)-এর জীবনী লেখার মৌলিক ও প্রাথমিক উৎস

মানব জাতিকে কল্পকাহিনী ও কুসংস্কার এবং শক্তি মদমত্তদের ক্ষমতার দাপট থেকে মুক্তিদানের জন্য মহান নবী-রাসূলগণ যে খোদায়ী আন্দোলনের গোড়াপত্তন করেন,তা হচ্ছে সাগর তরঙ্গের মতো,যা শুরুতে একটি ছোট গোলকের আকৃতিতে সৃষ্টি হয়;এরপর ঐ গোলকের কোণ থেকে যতই দূরে সরে যায়,ততই তার ব্যাস ও পরিধি ব্যাপকতর এবং তার শক্তি তীব্রতর ও প্রচণ্ডতর হতে থাকে এবং শক্তিশালী রূপ পরিগ্রহ করে।

পবিত্র মক্কা নগরীতে মহানবী (সা.)-এর হাতে যে ধর্মীয় আন্দোলন ও আধ্যাত্মিক বিপ্লবের গোড়াপত্তন হয়,তা প্রথমেই হেরা গুহা,খাদীজার বাড়ি ও মক্কার জীর্ণ কুটিরগুলোকেই আলোকিত করে। সময় যত বয়ে যায়,সে আন্দোলন ততই ব্যাপকতা লাভ করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই বিশ্বের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত ছেয়ে ফেলে। ফলে বিশ্বের বিশাল অঞ্চল জুড়ে (ফ্রান্স থেকে চীনের প্রাচীর পর্যন্ত) তাওহীদের বাণী ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়।

এ ধরনের ধর্মীয় আন্দোলনের যাঁরা গোড়াপত্তন করেন,তাঁরা শ্রেষ্ঠ নৈতিক চরিত্র ও মানবীয় গুণাবলীর অধিকারী হন। ফলে সাগরের তরঙ্গমালার মতো তাঁদের ওপর যতই সময়ের প্রবাহ বয়ে যায়,তাঁদের ব্যক্তিত্ব ততই বিকশিত ও ব্যাপকতর হয়।

নবী-রাসূল অর্থাৎ ওহীর ধারক ও বাহকগণ যেন বিশ্বপ্রকৃতিরই হুবহু প্রতিলিপি। তার মানে প্রকৃতি নিয়ে যত বেশি গবেষণা ও অধ্যয়ন করা যাবে,তার গুরুত্ব ও রহস্য তত বেশি প্রকাশিত হবে এবং প্রকৃত অবস্থা ও বাস্তবতা অধিক অধিক আবিষ্কৃত হবে;ঠিক একইভাবে মহান ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের জীবন নিয়ে যতই গবেষণা ও পর্যালোচনা করা হবে এবং তাঁদের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি যতই গভীর হবে,তাঁদের জীবনের নিত্য-নতুন দিকও তত বেশি উদ্ঘাটিত হবে।

আমাদের এ বক্তব্যের সাক্ষী হচ্ছে সেই অগণিত রচনাসম্ভার,যা জীবনী লেখক,ইতিহাসবেত্তা ও ইলমে রিজালের গবেষকগণ ইসলামের মহান নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করেছেন। কিন্তু এ সত্বেও যতই দিন গত হচ্ছে,মানুষের চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গি যতই প্রসারিত হচ্ছে,গবেষকগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত এই মহামানবের জীবন সংক্রান্ত নতুন নতুন দিগন্তের সন্ধান পাচ্ছেন।

শুরুতে মহানবীর জীবন ও জীবনী তাঁর সাহাবিগণের স্মৃতি ও শ্রুতির উপর নির্ভরশীল ছিল। তাঁর ওফাতের পর যখন ইতিহাসে তাবেঈন নামে পরিচিত নতুন প্রজন্মের আবির্ভাব ঘটে,তাঁদের সময় মহানবীর হাদীস,সুন্নাহ্ ও তাঁর জীবনের বৈশিষ্ট্যসমূহ এবং তাঁর সময়ের যুদ্ধ-বিগ্রহের ইতিহাস নতুন দীপ্তি লাভ করে। এই নতুন প্রজন্ম মহানবীর হাদীস এবং তাঁর জীবনের ঘটনাপ্রবাহ রফ্ত করার ব্যাপারে প্রবল আগ্রহ ও আবেগ অনুভব করেন। অনুরূপভাবে এ জাতীয় ইসলামী জ্ঞানের প্রাথমিক উৎস সাহাবা ও তাবেঈন যখন একের পর এক মৃত্যুবরণ করতে থাকেন,তাঁদের মৃত্যুর সংখ্যা যতই বৃদ্ধি পায়,ততই মহানবীর হাদীস ও তাঁর জীবনের সকল বৈশিষ্ট্য শিক্ষা লাভের জন্য মুসলমানদের মধ্যে তীব্র পিপাসার সৃষ্টি হয় এবং তা অনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। অন্যদিকে একদল সাহাবী মহানবী (সা.)-এর কাছ থেকে যেসব1 হাদীস শুনেছিলেন,হাদীস2 লিপিবদ্ধ করার ব্যাপারে দ্বিতীয় খলীফার প্রচণ্ড বাধা ও কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে সেসব তাঁদের মৃত্যুর সাথে সাথে হারিয়ে যায়। দ্বিতীয় খলীফার মৃত্যুর পরও এ নিষেধাজ্ঞা বেশ কিছুদিন বলবৎ ছিল।3 অবশেষে মধ্যপন্থী উমাইয়্যা খলীফা উমর ইবনে আবদুল আজীজ মদীনার প্রশাসক ও কাযী আবু বকর ইবনে হাযমকে একখানা পত্র লিখে মহানবীর হাদীসসমূহ লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন। কারণ তিনি (খলীফা) জ্ঞান লোপ পাওয়া ও হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন।4

সীরাত রচনায় অগ্রণীগণ

সৌভাগ্যবশত খলীফা শুধু মহানবী (সা.)-এর হাদীস লিখতে নিষেধ করেন। মহানবীর নবুওয়াতের সময়কালের ঘটনাবলী লেখার ব্যাপারে তত বেশি সীমাবদ্ধতা ছিল না। এ কারণে সেই সীমাবদ্ধতা থাকা অবস্থায়ই মহানবীর জীবন সম্পর্কে গ্রন্থাদি রচনা করা হয়। রিসালতের সময়ের ঘটনাবলী লেখকদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি ছিলেন প্রসিদ্ধ সাহাবী যুবাইর ইবনে আওয়ামের পুত্র উরওয়া। তিনি হিজরী 92 বা 96 সালে ইন্তেকাল করেন।5 তারপর একদল মদীনায় এবং আরো কিছুসংখ্যক ব্যক্তি বসরায় মহানবীর সীরাত এবং সশস্ত্র জিহাদের ঘটনাবলী সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত হন। তাঁদের বৈশিষ্ট্য ও বিশেষত্ব বর্ণনা আমাদের এ আলোচনার গণ্ডির বাইরে।

এসব গ্রন্থ পরবর্তীকালে মহানবী (সা.)-এর সীরাত বা ইসলামের ইতিহাস আকারে লেখা গ্রন্থাবলীর প্রাথমিক উৎসস্বরূপ। হিজরী দ্বিতীয় শতকের প্রথমার্ধ থেকে মহানবীর জীবনী রচনার কাজটি খুব সুন্দররূপে সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে শিয়া মনীষী6 মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক (ওফাত 151 হিজরী) ছিলেন এমন ব্যক্তিত্ব,যিনি পূর্ববর্তী গ্রন্থ ও রেওয়ায়েতসমূহ অবলম্বনে মহানবীর জীবনের ঘটনাবলী ও ইসলামের ইতিহাস এক পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ বা সমগ্র আকারে লিপিবদ্ধ করেন।

ইসলামের যুদ্ধসমূহ তথা সশস্ত্র জিহাদের বর্ণনা বিস্তারিত আকারে প্রথম লিপিবদ্ধ করেন মাগাযী ফুতূহুশ্ শাম -এর লেখক ওয়াকিদী। তিনি 207 হিজরীতে ইন্তেকাল করেন।

ইবনে ইসহাকের সীরাহর সারসংক্ষেপ করেন ইবনে হিশাম আবু মুহাম্মদ আবদুল মালিক (ওফাত 218 হিজরী)। এ গ্রন্থ সীরাতে ইবনে হিশাম নামে বিখ্যাত। এ গ্রন্থ এখনো মহানবী (সা.)-এর জীবনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ হিসেবে পরিগণিত। এসব মনীষীর কথা বাদ দিলেও অপর দু জন মনীষীর নাম উল্লেখ করা যায়,যাঁরা মহানবীর জীবনী রচনায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন।

1. মুহাম্মদ ইবনে সা দ কাতিব-ই-ওয়াকিদী (আল ওয়াকিদীর সচিব)। তিনি 230 হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। তিনি তাবাকাতুল কুবরা র রচয়িতা। এ গ্রন্থে মহানবী (সা.) ও তাঁর সম্মানিত সাহাবিগণের জীবনী সবিস্তারে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এ গ্রন্থ অতীতে লন্ডনে এবং সম্প্রতি লেবাননে নয় খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে।

2. মুহাম্মদ ইবনে জরীর তাবারী (ওফাত 310 হিজরী)। তিনি বিখ্যাত ইতিহাসগ্রন্থ তারিখুল উমাম ওয়াল মুলূক -এর রচয়িতা।

তাঁদের পরিশ্রমের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানের অর্থ এই নয় যে,তাঁরা যা কিছু লিখেছেন,তা (সবই) সঠিক ও যথার্থ। বরং তাঁদের রচনাও অন্যান্য গ্রন্থের মতো বেশ সূক্ষ্ম বিচার-বিশ্লেষণের দাবী রাখে। তাঁদের পর প্রতি শতকেই মহানবী (সা.)-এর জীবনী লেখার কাজটি অব্যাহত থাকে। বর্তমান শতকেও বিভিন্ন আঙ্গিকে ও দৃষ্টিভঙ্গিতে মহানবীর জীবন নিয়ে বই রচনার কাজ ব্যাপকভাবে চলছে। ইসলামের মহান নবীর জীবনের যে পূর্ণাঙ্গতা,সেই বৈশিষ্ট্যর কারণেই এ কাজ অব্যাহত থাকবে।

এ গ্রন্থের  লেখক তাঁর সীমিত সামর্থ্য নিয়ে চেষ্টা করেছেন যাতে মহানবীর জীবনের একটি বিশদ ব্যাখ্যা পেশ করা যায়। এক্ষেত্রে দুই পক্ষের অর্থাৎ শিয়া ও সুন্নী মাযহাবের নির্ভরযোগ্য সূত্রসমূহের শরণাপন্ন হতে কুণ্ঠিত হন নি,যদিও সূত্র উল্লেখের সময় মাক্কী সূত্রসমূহের দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং প্রথম খণ্ডের শুরুতে তার কৈফিয়ত দিয়েছেন।

এ গ্রন্থের প্রথম খণ্ড মহানবী (সা.)-এর তের বছরের মক্কার জীবন এবং হিজরত-পরবর্তী দু বছরের ঘটনাবলী সম্পর্কিত। এখন হিজরতের পর বাকী আট বছরের ঘটনাবলী শ্রদ্ধেয় পাঠকবর্গের খেদমতে পেশ করা হলো।

জাফর সুবহানী

হাওযা-ই-এলমীয়াহ্,কোম

বত্রিশতম অধ্যায় : তৃতীয় হিজরীর ঘটনাপ্রবাহ

উহুদ যুদ্ধ

দৃষ্টিকাড়া ঘটনাবলীর দিক থেকে হিজরতের তৃতীয় বছরটি দ্বিতীয় বছরের তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। হিজরী দ্বিতীয় সালে যদি বদর যুদ্ধ সংঘটিত হয়ে থাকে,তৃতীয় হিজরীতে উহুদ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। দু টি যুদ্ধই ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উহুদ যুদ্ধই তৃতীয় হিজরীর একমাত্র যুদ্ধ নয়;বরং ঐ বছর কতকগুলো সারিয়াসহ বাহরান ও হামরাউল আসাদের মতো আরো কিছু গায্ওয়াহ্ (যুদ্ধ) সংঘটিত হয়। তন্মধ্যে আমরা এখানে একটি সারিয়া ও দু টি গায্ওয়ার বিবরণ পেশ করব।

মুহাম্মদ ইবনে মাসলামার সারিয়া

বদর যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয়ের খবর দু জন মুসলমান সৈনিকের মাধ্যমে মদীনায় পৌঁছে। তখনও বিজয়ী মুসলিম বাহিনী মদীনায় ফিরে আসেনি,ইত্যবসরে মায়ের দিক থেকে ইহুদী এবং কবিতা ও বাগ্মিতায় পারদর্শী কা ব আশরাফ মুসলমানদের এ বিজয়ে দারুণভাবে বিচলিত হয়ে পড়ে। সে গুজব রটনায় নেমে পড়ে এবং মদীনায় নানা অপ্রীতিকর সংবাদ ছড়ায়। সে সবসময়,এমনকি বদর যুদ্ধের আগেও তার কবিতায় মহানবী (সা.)-এর নিন্দা করত এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে শত্রুদের উত্তেজিত করত। বদর যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয়ের সংবাদ শুনে সে মন্তব্য করে : ভূ-গর্ভ বা মাটির তলদেশ ভূ-পৃষ্ঠ অপেক্ষা উত্তম। এরপর সে মক্কার পথে রওয়ানা হয়। মক্কায় সে কবিতা রচনা করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুরাইশদের উত্তেজিত করে। সে মদীনায় ফিরে আসার সময় মুসলমানদের অবমাননা করার ক্ষেত্রে এতখানি বেড়ে গিয়েছিল যে,তার কবিতায় মুসলিম মহিলাদের নাম উল্লেখ করে তাঁদের ব্যাপারে অবমাননাকর মন্তব্য করে। এ ধরনের লোক সত্যিকার অর্থেই পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারীদের বাস্তব নমুনা ছিল। তাই শেষ পর্যন্ত মহানবী (সা.) সিদ্ধান্ত নেন,তিনি তার অনিষ্টতা থেকে মুসলমানদেরকে রক্ষা করবেন। তাই তার দফা রফা করার দায়িত্ব তিনি মুহাম্মদ ইবনে মাসলামার হাতে অর্পণ করেন। তিনি কা বকে হত্যা করার জন্য একটি চমৎকার পরিকল্পনা নেন। এর জন্য তিনি একটি দল গঠন করেন। ঐ দলে কা ব-এর দুধ-ভাই আবু নায়েলাকেও শামিল করেন যাতে করে তিনি এভাবে তাঁর পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হন। কা ব-এর দুধ-ভাই আবু নায়েলা কা ব-এর কাছে গেলেন। তাঁরা দু জন বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললেন এবং কবিতাও পাঠ করলেন। এক সময় আবু নায়েলা কা বের উদ্দেশে বললেন : আমার একটি গোপন কথা আছে,যা তোমার কাছে বলতে চাই;কিন্তু তোমাকে অবশ্যই তা গোপন রাখতে হবে। সেই গোপন কথাটি হচ্ছে এ লোকটি (রাসূল) আমাদের শহরটিকে বিপদ-আপদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। গোটা আরব জাতি আমাদের সথে শত্রুতায় লিপ্ত হয়েছে। সবাই আমাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে। এখন আমাদের পরিবার কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়ে অত্যন্ত অসহায় হয়ে গেছে।

এ সময়ে কা ব আবু নায়েলার বক্তব্যের সমর্থনে বলে : আমি এ কথাটি তোমাকে আগেও বলেছিলাম। এখন আমার কাছে কী চাও? আবু নায়েলা জবাব দিলেন : আমি কিছু খাদ্য-দ্রব্য কিনতে এসেছি। আমার যেহেতু নগদ টাকা-পয়সা নেই,আমার কাছ থেকে কিছু জিনিস বন্ধক নাও। তোমার কাছ থেকে আমি সদ্ব্যবহারই আশা করি। কা ব বলল : তুমি কি তোমার স্ত্রীদের বন্ধক রাখতে পার? আবু নায়েলা বললেন : এটা কি ঠিক হবে যে,আমার স্ত্রীদেরকে তোমার কাছে বন্ধক রাখব। অথচ তুমি হলে ইয়াসরিবের (মদীনা) একজন সুদর্শন তরুণ। তখন কা ব বলল : তা হলে তোমার ছেলেকে আমার কাছে বন্ধক রেখে যাও। নায়েলা বলল : তুমি কি আমাকে অপমানিত করতে চাও? 7 তখন তিনি বললেন : আমি তো একা নই যে,তোমার কাছ থেকে খাদ্য-শস্য কিনতে চাই। আরো একদল লোক আমার সাথে আছে,তারাও এভাবে বন্ধক রেখে খাদ্য-শস্য কিনতে চায়। তারা তোমার কাছ থেকে খাদ্য-শস্য কিনে এর মূল্যের বিপরীতে তাদের যুদ্ধাস্ত্র বন্ধক রাখতে চায়। কা ব বলল : অসুবিধা নেই। অবশ্য যুদ্ধাস্ত্র বন্ধক রাখার প্রস্তাব ওঠানোর পেছনে উদ্দেশ্য ছিল পরবর্তী বৈঠকে সশস্ত্র লোকদের দেখে সে যেন ঘাবড়ে না যায়;বরং ভাবে যে,এরা যুদ্ধাস্ত্র বন্ধক রাখার জন্য তার কাছে এসেছে।

আবু নায়েলা এরপর সেখান থেকে চলে গেলেন এবং এমন একটি দলের সাথে মিলিত হলেন যাদের সাথে কা ব-এর বাড়িতে গিয়ে খাদ্য-সামগ্রী কেনা ও অস্ত্র বন্ধক রাখার নামে উপরিউক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা ছিল।

রাতের বেলা এ দলটি কা ব-এর বাড়িতে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। তার বাড়ি ছিল একটি দুর্গের মাঝখানে। সেখানেই সে বসবাস করত। আবু নায়েলা কেল্লার দরজার বাইরে থেকে উচ্চকণ্ঠে ডাক দিল। কা ব দরজা খুলে দেয়ার জন্যে কক্ষের বাইরে গেল। সে সময় তার অল্পবয়ষ্কা স্ত্রী তাকে বাইরে যেতে বারণ করার চেষ্টা করছিল। সে বলছিল : আমি এই ডাকের মধ্যে বিপদের আশংকা করছি। কিন্তু কা ব দরজা খুলে দিল এবং বাহ্যত খাদ্য-শস্য কেনার জন্য আসা দলটির সাথে কথা-বার্তায় মশগুল হলো। কথা-বার্তা নানা দিক থেকে জমে উঠল এবং বেশ অন্তরঙ্গ আসরের পরিবেশ সৃষ্টি হলো। তখন আবু নায়েলা আনুরোধ করলেন,বাদবাকী রাত শেবুল আজূয অর্থাৎ বৃদ্ধাদের গিরিপথে গিয়ে সেখানেই খোশগল্পের আসরটা চালিয়ে যাওয়া হোক। সবাই প্রস্তাব মতো ঐ দিকে পথ চলতে লাগল। পথিমধ্যে আবু নায়েলা কা ব-এর কানের লতির চুলের ভেতর হাত ঢুকিয়ে নিয়ে নাকে শুঁকে বললেন : আজ রাত পর্যন্ত এমন সুঘ্রাণ আমি কোনদিন শুঁকি নি। তিনি আরো একবার এ কাজটি করলেন। তৃতীয় বারে তিনি তাঁর হাতটি কানের লতি বরাবর চুলের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে শক্ত মুঠি করে চুল টেনে ধরলেন এবং সঙ্গীদের বললেন : হত্যা কর। আল্লাহর দুশমনকে হত্যা কর। সাথে সাথে এই ফিতনাসৃষ্টিকারীর দেহের ওপর তরবারিগুলো পতিত হলো। তার চিৎকারে কোন লাভ হলো না। আবু নায়েলাও তাঁর হাতের ছুরিটি কা ব-এর নাভির নিচে ঢুকিয়ে দিয়ে তার দফা রফা করে দিলেন। কা ব-এর লাশ মাটিতে ফেলে রেখে তাঁরা চলে এলেন। মদীনার জান্নাতুল বাকী গোরস্তানে পৌঁছে সবাই তাকবীর ধ্বনি দিলেন এবং এর মাধ্যমে তাঁরা জানিয়ে দিলেন যে,তাঁদের অভিযান সফল হয়েছে। এভাবে মুসলমানদের সম্মুখ-পথ থেকে এক বিপজ্জনক উপাদান অপসারিত হলো।8

আরেক দুষ্ট নিধন

ইহুদী আবু রাফেও কা ব-এর ভূমিকাই পালন করত। তার গোয়েন্দাগিরি আর উত্তেজনার বিষ ছড়ানোর মাত্রা কা ব-এর চেয়ে কম ছিল না। কা বকে হত্যার অল্প দিনের ব্যবধানেই সে নিহত হয়। এর বিবরণ ঐতিহাসিক ইবনে আসীর তাঁর ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন।9

যুদ্ধের ব্যয়ভার কুরাইশদের গ্রহণ

বহুদিন আগে থেকেই মক্কায় বিপ্লব ও বিদ্রোহের বীজ বপন করা হয়েছিল। কান্নাকাটিতে বাধাদান কুরাইশদের মাঝে প্রতিশোধের স্পৃহা তীব্রতর করেছিল। মদীনা ও ইরাকের মধ্য দিয়ে মক্কাবাসীদের বাণিজ্যপথ বন্ধ হয়ে যাওয়া তাদের সাংঘাতিকভাবে অসন্তুষ্ট ও উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। কা ব আশরাফ অসন্তুষ্টির এ আগুনে ইন্ধন যুগিয়ে আরো প্রজ্বলিত করেছিল। এসব কারণে সাফওয়ান ইবনে উমাইয়্যাহ্ ও আবু জাহলের পুত্র ইকরামাহ্ আবু সুফিয়ানের কাছে প্রস্তাব দিল,যেহেতু কুরাইশ গোত্রপতি ও নেতারা এবং আমাদের বীরেরা মক্কার বাণিজ্য কাফেলার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হয়,কাজেই ঐ কাফেলায় যে ব্যক্তিরই ব্যবসায়িক পণ্য-সামগ্রী থাকুক,তাকে যুদ্ধের খরচ বাবদ কিছু পরিমাণ অর্থ দিতে হবে। এই প্রস্তাব আবু সুফিয়ান কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা বাস্তবায়ন করা হয়। কুরাইশ নেতারা মুসলমানদের শৌর্য-বীর্য সম্পর্কে অবহিত ছিল এবং নিকট থেকে তাদের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের প্রমাণ বদরের প্রান্তরে দেখেছিল। কাজেই তারা সিদ্ধান্ত নিল,আরবের অধিকাংশ গোত্রের দক্ষ বীরদের নিয়ে গঠিত একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সাহায্যে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে।

আমর ইবনুল আস এবং আরো কয়েকজনকে দায়িত্ব দেয়া হয় যাতে তারা কিনানাহ্ ও সাকীফ গোত্রে গিয়ে যোগাযোগ করে এবং তাদের কাছ থেকে সাহায্য সংগ্রহ করে। আর সেসব গোত্রের বীরদের মুহাম্মদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য নানাভাবে আহবান জানায় এবং তারা প্রতিশ্রুতি দেয়,যুদ্ধ এবং যাবতীয় সামরিক সাজ-সরঞ্জামের ব্যয়ভার কুরাইশরা বহন করবে। তারা ব্যাপক তৎপরতার মাধ্যমে কিনানাহ্ ও তিহামাহ্ গোত্র থেকে বেশ কিছুসংখ্যক বীর যোদ্ধা যোগাড় করতে এবং চার হাজার যোদ্ধার এক বিশাল সৈন্যবাহিনী গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।10

যা কিছু বলা হলো,তা ঐসব লোকের সংখ্যা যারা এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মহিলাদের যদি গণনায় নেয়া হয়,তা হলে সংখ্যা অনেক বেশি হবে। আরবদের মধ্যে এ প্রথার প্রচলন ছিল না যে,তারা মহিলাদের যুদ্ধের ময়দানে নিয়ে যাবে। কিন্তু এবার কুরাইশদের মূর্তিপূজারী মহিলারাও পুরুষদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধের ময়দানে আসে।

যুদ্ধে তাদের ভূমিকা ছিল এই যে,সৈন্যদের সারিগুলোর মাঝে তারা ঢোল-তবলা বাজাবে আর কবিতা পাঠ করবে এবং উত্তেজনাপূর্ণ বক্তৃতা দিয়ে পুরুষদের প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য উৎসাহ যোগাবে।

মহিলাদের যুদ্ধের ময়দানে আনার আরেকটা উদ্দেশ্য ছিল (সৈনিকদের) যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে যাবার পথ বন্ধ করা। কেননা,যুদ্ধের ময়দান থেকে পালানোর অর্থ ছিল তাদের স্ত্রী ও মেয়েদের বন্দী হবার ব্যবস্থা করা,আর আরবদের যে সাহসিকতা ও জাত্যাভিমানবোধ ছিল,তা কিছুতেই এমন কাজ করার প্রশ্রয় দিত না।

বহু ক্রীতদাস নানা ধরনের উৎসাহব্যঞ্জক প্রতিশ্রুতি পেয়ে কুরাইশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল। হাবশী গোলাম ওয়াহ্শী ইবনে হারব ছিল মুত্ইমের ক্রীতদাস। যুদ্ধাস্ত্র যুবীন ব্যবহারে সে অত্যন্ত পারদর্শী ছিল। তাকে সুসংবাদ দেয়া হয়েছিল,যদি সে ইসলামের প্রধান তিন ব্যক্তির (মুহাম্মদ-আলী-হামযা) মধ্য হতে কোন একজনকে হত্যা করতে পারে,তা হলে তাকে মুক্তি দেয়া হবে। মোটকথা অনেক কষ্টে তারা একটি সেনাবাহিনী গঠন করে যেখানে সাত শ বর্মধারী সৈনিক,তিন হাজার উট,দু শ অশ্বারোহী ও একদল পদাতিক সৈন্য অন্তর্ভুক্ত ছিল।

মহানবী (সা.)-এর গোপন গোয়েন্দা

তথ্যসূত্র থেকে জানা যায়,মহানবী (সা.)-এর চাচা হযরত আব্বাস ছিলেন একজন সত্যিকারের মুসলমান। কিন্তু তিনি তাঁর ইসলাম গ্রহণের কথা গোপন রাখেন। তিনি কুরাইশদের যুদ্ধ পরিকল্পনা সম্পর্কে মহানবীকে অবহিত করেন। আব্বাস তাঁর স্বাক্ষর ও মোহরযুক্ত একখানা পত্র স্বহস্তে লিখে তা বনী গিফার গোত্রের এক ব্যক্তির হাতে অর্পণ করে প্রতিশ্রুতি নেন,তিন দিনের মধ্যে পত্রটি মহানবীর হাতে পৌঁছে দেবে। পত্রবাহক এমন সময় পত্রটি পৌঁছে দেয় যখন মহানবী শহরের বাইরে এক বাগানে অবস্থান করছিলেন। লোকটি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে খামে বন্ধ পত্রটি মহানবীর হাতে অর্পণ করে। মহানবী পত্রটি পড়লেন;কিন্তু পত্রের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সাহাবিগণকে কিছুই বললেন না।11

আল্লামা মাজলিসী12 ইমাম সাদিক (আ.) থেকে বর্ণনা করেন,মহানবী (সা.) পত্র লিখতেন না;কিন্তু পাঠ করতেন। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না,মহানবী অবিলম্বে শত্রুদের পরিকল্পনা সম্পর্কে তাঁর সঙ্গীদের অবহিত করার তাকীদ অনুভব করেন। কাজেই মদীনা নগরীতে ফিরে আসার পর সবার উদ্দেশে পত্রটি পাঠ করা হয়।

কুরাইশ বাহিনীর যুদ্ধযাত্রা

কুরাইশ বাহিনী যাত্রা করে কিছু দূর অতিক্রম করার পর আবওয়া নামক স্থানে পৌঁছে,যেখানে মহানবীর মা হযরত আমেনাকে দাফন করা হয়েছিল। কুরাইশ বাহিনীর অস্থির-মস্তিষ্ক যুবকরা চাচ্ছিল,মহানবীর মায়ের কবর খনন করবে এবং তাঁর লাশ বের করে আনবে। কিন্তু তাদের মধ্যকার দূরদর্শী লোকেরা এই কাজের তীব্র নিন্দা করে। তারা বলল,এমন কাজ করলে তা পরবর্তীতে প্রথায় পরিণত হতে পারে,আর তখন বনী বকর ও বনী খোজাআ গোত্রভুক্ত আমাদের শত্রুরা আমাদের মৃত লোকদের কবর খুঁড়ে লাশ বের করতে পারে।

মহানবী (সা.) হিজরী তৃতীয় সালের 5 শাওয়াল বৃহস্পতিবার রাতে ফুজালার পুত্র আনাস ও মুনিসকে সংবাদ সংগ্রহের জন্য মদীনার বাইরে প্রেরণ করেন। উদ্দেশ্য ছিল,কুরাইশদের গতিবিধি সম্পর্কে খবরাখবর নিয়ে আসা। ঐ দু জন যুবক সংবাদ নিয়ে এল,কুরাইশ বাহিনী মদীনার উপকণ্ঠে এসে পৌঁছেছে এবং তাদের বাহনগুলোকে মদীনার কৃষিভূমিতে চরার জন্য ছেড়ে দিয়েছে। হাব্বাব ইবনে মুনযির সংবাদ নিয়ে এল,কুরাইশ বাহিনীর অগ্রবর্তী দল মদীনার নিকটবর্তী হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ কথার আরো সমর্থন পাওয়া গেল যে,মদীনার দিকে কুরাইশ বাহিনী আরো এগিয়ে এসেছে এবং উহুদ পর্বতের পাদদেশে তারা সেনা মোতায়েন করেছে। মুসলমানরা আশংকা করছিল,কুরাইশ বাহিনী রাতের বেলা অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে ক্ষতিসাধন করবে। এ কারণে আউস ও খাযরাজ গোত্রের নেতৃস্থানীয় লোকেরা যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে মসজিদে অবস্থান করে। রাত কেটে দিনের আলো বের হওয়া এবং যুদ্ধের কৌশলগত দিক থেকে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত তারা মহানবীর বাসগৃহ এবং মদীনা নগরীর প্রবেশদ্বারগুলো পাহারা দিচিছল।