ইমাম মাহদী (আ.)

ইমাম মাহদী (আ.)0%

ইমাম মাহদী (আ.) লেখক:
: মীর আশরাফুল আলম
প্রকাশক: -
বিভাগ: ইমাম মাহদী (আ.)

ইমাম মাহদী (আ.)

লেখক: দার রাহে হাক প্রকাশনীর লেখকবৃন্দ
: মীর আশরাফুল আলম
প্রকাশক: -
বিভাগ:

ভিজিট: 13480
ডাউনলোড: 3992

পাঠকের মতামত:

ইমাম মাহদী (আ.)
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 28 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 13480 / ডাউনলোড: 3992
সাইজ সাইজ সাইজ
ইমাম মাহদী (আ.)

ইমাম মাহদী (আ.)

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

আবির্ভাবের আলামতসমূহ

যে সকল রেওয়ায়েতে আবির্ভাবপূর্ব ঘটনাবলীর বিষয়াদি উল্লেখ আছে তার পরিমান অনেক ও বিভিন্ন ধরণের। কিছু সংখ্যক রেওয়ায়েত সামাজিক অবস্থার উপর বিশেষ করে আবির্ভাবের পূর্বে মুসলিম সমাজের অবস্থা বর্ণনা করেছে এবং অন্য কিছু সংখ্যক রেওয়ায়েতে যে সকল ঘটনা আবির্ভাবকে ত্বরান্বিত করবে তার বর্ণনা দিয়েছে। অন্যান্য রেওয়ায়েতগুলো বিভিন্ন আশ্চর্য বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছে।

এই সমস্ত রেওয়ায়েতগুলোতে যে সকল জটিল ও সাংকেতিক বিষয়সমূহ বর্ণিত হয়েছে যদি বিশ্লেষণ করতে চাই তাহলে তার প্রতিটির জন্য আলাদা আলাদা বই লেখার প্রয়োজন হবে। যারা এ বিষয়ে আগ্রহী তারা যে বই বা টেক্সট সমূহে এ রেওয়ায়েতগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে তা অধ্যয়ন করতে পারেন। আমরা এই বইতে কয়েকটি আলামত যা সহজেই বোধগম্য তা উল্লেখ করব :

ক) যে সকল রেওয়ায়েত আবির্ভাবের আগেকার অবস্থার বর্ণনা করেছে যেমন : ইসলামী বিশ্বে ও পৃথিবী ব্যাপী জুলুম ,অত্যাচার ,ফিতনা-ফ্যাসাদ ,পাপ ও ধর্মহীনতার ব্যাপক বিস্তার ঘটবে : অনেক রেওয়ায়েতে ইমামগণ (আ.) ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর পবিত্র কিয়ামের ব্যাপারে এভাবে ইশারা করেছে যে ইমাম মাহ্দী (আ.) তখনই কিয়াম করবেন যখন পৃথিবী পরিপূর্ণভাবে জুলুম ,অত্যাচার ,পাপ ও পঙ্কিলতায় ভরে যাবে। এছাড়া আরও ব্যাপক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন। অন্য রেওয়ায়েতে উল্লেখ করেছেন যে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাবের আগে এমনকি একেবারে নিকটতম সময়ে বিশেষ করে মুসলিম সমাজ বিভিন্ন ধরনের পাপ-পঙ্কিলতায় ভরে যাবে যেমন :

মদ বা নেশাকর পানীয় অবাধে বেচা-কেনা হবে। সুদ খাওয়ার প্রবণতা ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পাবে। ব্যভিচার অন্যান্য অপছন্দনীয় কাজসমূহের (যেমন সমকামিতা) ব্যাপক বিস্তার ঘটবে এবং তা প্রকাশ্যে করা হবে। নির্মম-নিষ্ঠুরতা ,অবৈধ কর্ম ,মুনাফেকী ,ঘুস খাওয়া ,লোক দেখানো কাজ ,বিদআত ,গীবত ,অপরের ক্ষতি করার পরিমাণ বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। অসচ্চরিত্রতা ,বেহায়াপনা ,জুলুম-অত্যাচার ,যেখানে সেখানে দেখা যাবে। মহিলারা বেপর্দা ও উত্তেজক পোশাক পরে সমাজে বের হবে। পুরুষেরা মহিলাদের মত ,মহিলারা পুরুষের মত পোশাক পরবে এবং একই রকম সাজ-সজ্জা করবে। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা দান করার প্রক্রিয়া উঠে যাবে। মুমিন ব্যক্তিরা অপমান-অপদস্থ হবে এবং পাপ ও খারাপ কাজগুলো ঠেকানোর মত শক্তি তাদের থাকবে না। কাফের বা ধর্মহীনদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং ইসলাম ও কোরআনের প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপই থাকবে না। সন্তানরা তাদের পিতা-মাতাকে অসম্ভব কষ্ট দিবে এবং তাদের অসম্মান করবে। বড়দের সামান্য পরিমাণ সম্মান দেয়া থেকেও তারা বিরত থাকবে। কারো অন্তরে কিঞ্চিত পরিমাণ ভালবাসাও থাকবে না। কেউ খুমস ও জাকাত দিবে না আর দিলেও তা প্রকৃত পথে খরচ হবে না। বেদীন ও কাফের এবং অসৎ লোকেরা মুসলমানদের উপর আধিপত্যশীল হবে এবং তাদেরকে নিজেদের দিকে নিয়ে যাবে ,মুসলমানরা তাদের পোশাক-আষাক ,চাল-চলন ,ধ্যান-ধরনকে অনুসরণ করে চলবে এবং আল্লাহর আইন-কানুনকে অকার্যকর করে দিবে ...।

এবং আরও অনেক বিষয় যা আমাদের পবিত্র ইমামগণ (আ.) তাঁদের রেওয়ায়েতে উল্লেখ করেছেন। 142 ইরানের জনগণ এই ধরনের ঘটনাগুলোকে অতীত শতাব্দীতে ইরানের ভূ-খণ্ডে দেখেছেন। এ দেশের (ইরানের) মুসলমানদের ইসলামী বিপ্লব প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের পাপ-পঙ্কিলতার বিরুদ্ধেই হয়েছিল (এ বিপ্লব সম্পর্কে তাদের আশা এটাই যে হয়তো ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর কিয়ামের সূচনা স্বরূপ হতে পারে) । পাপ-পঙ্কিলতা ,ফিতনা-ফ্যাসাদ ,ধর্মহীনতা ,অসৎ লোকদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকা ও অশুভ বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধে সকলেই একযোগে রুখে দাঁড়িয়েছিল। ঐ সকল ধর্মবিরোধী কর্মের মন্দ প্রভাব মুসলমানদের জীবনের প্রতিটি দিকে পড়ছিল। আল্লাহর অশেষ প্রশংসা যে ,এই দেশের প্রচুর মন্দ বিষয়কে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সকলেই জানেন যে পৃথিবীতে বিশেষ করে ইসলামী দেশগুলোতে এ ধরনের খারাপ কাজগুলো এখনও অব্যাহত আছে ...।

খ) যে সকল রেওয়ায়েতগুলোতে আবির্ভাবের আগেকার ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে  যেমন :

1 - সুফিয়ানীর উত্থান ।

2-সুফিয়ানীর বাহিনীর মাটির তলায় প্রোথিত হওয়া।

এই আলামতগুলোর প্রতি আমাদের পবিত্র ইমামগণ (আ.) বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন এবং পরিষ্কারভাবে সেগুলো বর্ণনা দিয়েছেন। যার একটি হচ্ছে সুফিয়ানীর উত্থান। রেওয়ায়েত অনুযায়ী বুঝা যায় সুফিয়ানী হচ্ছে উমাইয়া বংশোদ্ভূত ইয়াযিদ বিন মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান এর উত্তর পুরুষ এবং জঘন্য প্রকৃতির লোক হবে। তার নাম উসমান বিন আ নবাসেহ। সে নবী ও পবিত্র ইমামদের পরিবার (বংশ) ও তাদের অনুসারীদের সাথে ঘোর শত্রুতা পোষণ করে। লাল বংয়ের চেহারা ,গাঢ় নীল বংয়ের চোখ ,মুখে বসন্তের দাগ ,দেখতে কুৎসিত ,অত্যাচারী ও বিশ্বাসঘাতক। সিরিয়ায় আবির্ভূত হবে এবং দ্রুত পাঁচটি শহরকে (দামেস্ক ,জর্ডান ,হিমস ,কানসিরিন ও ফিলিস্তিন) তার দখলে নিয়ে আসবে। তারপর একটি বড় সৈন্য বাহিনী নিয়ে ইরাকের কুফা শহরের দিকে আসবে। ইরাকের বিভিন্ন শহর বিশেষ করে নাজাফ ও কুফাতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। তার আরেকটি সৈন্য দলকে মদীনার দিকে পাঠাবে। তারা মদীনায় পৌঁছে মানুষদেরকে ব্যাপকভাবে হত্যা করবে ,তাদের অর্থ সম্পত্তি লুট করবে। তারপর সেই সৈন্য বাহিনীটি মদীনা হয়ে মক্কায় যাওয়ার পথে মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী স্থানে আল্লাহ্ রাব্বুল আ লামিনের নির্দেশে মরুভূমির মধ্যে মাটির নিচে তলিয়ে যাবে। সে সময় ইমাম মাহ্দী (আ.) আবির্ভূত হবেন। এই ঘটনার পরে তিনি মক্কা থেকে মদীনায় এবং মদীনা থেকে ইরাক ও কুফাতে আসবেন। এদিকে সুফিয়ানী ইরাক থেকে সিরিয়ায় (দামেস্কে) পালিয়ে যাবে। ইমাম একটি বিশাল সৈন্য বাহিনীকে তার পিছু ধাওয়া করার জন্য পাঠাবেন। অবশেষে তাকে বাইতুল মুকাদ্দাসের মধ্যে তার শিরোচ্ছেদ করা হবে। 143

3 - সাইয়্যেদ হাসানীর উত্থান : ইমামগণের রেওয়ায়েত অনুযায়ী সাইয়্যেদ হাসানী শিয়া মাযহাবের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। যিনি ইরানের দেইলামী ও কাযভীন শহর থেকে উত্থিত হবেন। তিনি একজন খোদাভীরু ও মহানুভব ব্যক্তি। ইমাম ও মাহ্দী হওয়ার দাবি করবেন না। শুধুমাত্র জনগণকে ইমামগণের পদ্ধতিতে ইসলামের প্রতি দাওয়াত দিবেন। তার এই দাওয়াতী কাজটি প্রসারলাভ করবে এবং প্রচুর সঙ্গী সাথিও পাবেন। নিজের এলাকা থেকে নিয়ে কুফা পর্যন্ত জুলুম-অত্যাচার ও সকল ধরনের পাপ-পঙ্কিলতাকে উৎখাত করবেন। ন্যায় পরায়ন শাসকের ন্যায় প্রশাসনিক কার্য পরিচালনা করবেন। তিনি যখন তার সৈন্য সামন্ত নিয়ে কুফাতে পৌঁছাবেন সে সময় তাকে খবর দেয়া হবে যে ইমাম তার সৈন্য বাহিনী ও সঙ্গী সাথিদের নিয়ে কুফার নিকটে চলে এসেছেন। তখন তিনি তার বাহিনী নিয়ে ইমামের সাখে দেখা করবেন ;ইমাম সাদিক (আ.) বলেন যে ,সাইয়্যেদ ইমামকে চেনেন ও জানেন কিন্তু যাতে করে তার সঙ্গী-সাথিরা ইমামের ইমামত ও ফযিলতকে জানতে পারে সে কারণে তিনি তার পরিচয়কে গোপন করবেন। ইমামের কাছে তাঁর ইমামতের পক্ষে প্রমাণ চাইবেন এবং নবিগণের পক্ষ থেকে যে জিনিসগুলো তাঁর কাছে আছে তা দেখাতে বলবেন। ইমাম সে জিনিসগুলোকে দেখাবেন এবং অলৌকিক ঘটনাও ঘটাবেন। সাইয়্যেদ হাসানী ইমামের হাতে বাইয়াত করবেন এবং তার সঙ্গী-সাথিরাও ইমামের হাতে বাইয়াত করবে। শুধুমাত্র চার হাজার লোক ব্যতীত আর সবাই ইমামকে মেনে নিবে। ঐ চার হাজার লোক ইমামকে যাদুকর বলে সম্বোধন করবে। ইমাম তিন দিন ধরে তাদের সাথে বিভিন্ন আলাপ-আলোচনায় রত থাকবেন। তারপরও যখন তারা তাকে মেনে নিতে রাজী হবে না ,তিনি তাদেরকে হত্যা করার জন্য নির্দেশ দিবেন। ইমামের নির্দেশে তাদেরকে হত্যা করা হবে। 144

4 - আসমানী ধ্বনি : অন্য আরেকটি আলামত হচ্ছে আসমানী ধ্বনি। এটা এরূপ যে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাবের পূর্বে মক্কায় বিরাট ভয়ংকর ও স্পষ্ট আসমানী চিৎকার ধ্বনি শোনা যাবে। তাতে ইমামের নাম ও বংশ পরিচিতি তুলে ধরে মানুষের সামনে তাঁর পরিচয় পেশ করা হবে। এই ধ্বনি হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শনসমূহের একটি। এই ধ্বনিতে জনগণকে আদেশ দান করা হবে তারা যেন ইমামের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে যাতে করে তারা হেদায়েত প্রাপ্ত হয়। তার বিরুদ্ধে যেন কেউ কথা না বলে বা তার নির্দেশের বিপরীতে যেন কেউ না চলে ,যাতে করে তারা বিভ্রান্ত না হয়ে যায়। 145

আর ইমামের আবির্ভাবের আগে অন্য আরেকটি ধ্বনি উচ্চারিত হবে তাতে ইমাম আলী (আ.) ও তাঁর অনুসারীরাই যে সত্য পথের প্রতীক ছিল তার প্রমাণ দিবে। 146

5-ঈসা (আ.)-এর প্রত্যাবর্তন এবং ইমাম মাহ্দী (আ.)-কে অনুসরণ করা :

আসমান থেকে ঈসা (আ.)-এর অবতরণ এবং নামাযের সময় ইমাম মাহ্দী (আ.)-কে অনুসরণ করা (ইমাম মাহ্দীর পিছনে নামায পড়বেন) এ সকল বিষয় তাঁর আবির্ভাবের সাথে সাথে ঘটবে। এভাবেই বিভিন্ন রেওয়ায়েতে উল্লেখ আছে। নবী আকরাম (সা.) তাঁর প্রিয় কন্যা হযরত ফাতিমা (আ.)-কে বলেছেন :

وَ مِناَّ وَ اللَّهِ الَّذِى لاَ اِلَهَ اِلاَّ هُوَ مَهْدِىُّ هَذِهِ الْاُمَّةِ الَّذِى يُصَلِّى خَلْفَهُ عِيسى بْنُ مَريمَ

সেই আল্লাহ্ যিনি এক ও অদ্বিতীয় তাঁর কসম যে ,মাহ্দী আমার উম্মতের থেকেই। আর এমনই যে ,ঈসা ইবনে মারিয়াম তাঁর পিছনে নামায পড়বে। 147

অন্যান্য আলামতসমূহ বিভিন্ন বইতে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে ,এ সমস্ত আলামত বা সংকেতের সবগুলোই কী যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবেই রূপ নেবে না প্রয়োজন বোধে তার পরিবর্তনও হতে পারে ?এটা এমন একটা বিষয় যা তার নিজের জায়গায় আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। আলামতসমূহের ব্যাপারে যেভাবে বলা হয়েছে তা হচ্ছে ,আলামত দুই ধরনের : নিশ্চিত ও অনিশ্চিত। যা কিছু নিশ্চিত তা অবশ্যই ঘটবে।

অন্য কিছু রেওয়ায়েতে আবার বলা হয়েছে যে ,এমনকি নিশ্চিত বিষয়গুলোও প্রয়োজন বোধে পরিবর্তিত হতে পারে । শুধুমাত্র ঐ বিষয়গুলোর পরিবর্তন সম্ভব নয় ,যে বিষয়গুলোর ব্যাপারে আল্লাহ্ রাব্বুল আ লামিন ওয়াদা দান করেছেন। আর আল্লাহ্ রাব্বুল আ লামিন কখনও ওয়াদার বরখেলাপ করেন না :

) ا ِنَّ اللَّهَ لاَ يُخْلِفُ الْميعادَ (  148

সুস্পষ্ট যে ,যেখানে রেওয়ায়েতসমূহে উদ্ধৃত বিষয়সমূহেরও পরিবর্তন হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সেক্ষেত্রে ইমাম মাহ্দীর জন্য অপেক্ষার অনুভূতিকে শিয়া সমাজে আরও শক্তিশালী ও মজবুত করবে। এজন্য যে ,সবসময় তাঁর আগমনের অপেক্ষায় থাকতে হবে এবং নিজেকে সেভাবে তৈরী করবে। কেননা সম্ভাবনা আছে যে হয়তো আলামত বা সংকেতের কোন খবর নেই অথচ ইমাম আবির্ভূত হয়েছেন।

ইমাম মাহ্দী ( আ .)-এর কিয়াম

যে সকল রেওয়ায়েতে আমাদের পবিত্র ইমামগণ (আ.) ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর কিয়ামের ব্যাপারে কথা বলেছেন তা থেকে বুঝা যায় :

তিনি দীর্ঘকালীন অন্তর্ধানে থাকার পর আল্লাহ্ তা য়ালার নির্দেশে মক্কায় কাবা ঘরের পাশে (রোকন ও মাকাম এর মধ্যবর্তীস্থানে) আবির্ভূত হবেন। নবী (সা.)-এর পতাকা ,তলোয়ার ,পাগড়ী ও আলখেল্লা তাঁর কাছে থাকবে এবং ফেরেশতাদের মাধ্যমে সাহায্য প্রাপ্ত হবেন। অত্যন্ত ক্রোধান্বিত অবস্থায় কিয়াম করবেন। আল্লাহ্ ও ইসলামের শত্রুদেরকে কোন প্রকার নিরাপত্তা দেয়া ছাড়াই হত্যা এবং অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন ।

তার বিশেষ সঙ্গী-সাথিগণের সংখ্যা হচ্ছে তিনশত তের জন যারা মক্কায় তার হাতে বাইয়াত করবেন। ইমাম কিছু সময় মক্কায় থাকবেন এবং তারপর মদীনায় আসবেন। তার সঙ্গী-সাথিগণ হচ্ছে বিশিষ্ট যোদ্ধা ,সাহসী ,ঈমানদার ,রাতে আল্লাহর ভয়ে কাতর ,দিনে সিংহের মত গর্জন করে ,তাদের অন্তরসমূহ লোহার মত মজবুত ,ইমামকে মেনে চলার ব্যাপারে যাদের কোন ত্রুটি নেই এবং যে দিকেই পাঠানো হয় বিজয়ী হয়ে ফিরে আসে।

ইমাম মদীনায় কিছু সংগ্রাম করার পর নিজের সৈন্য বাহিনী নিয়ে ইরাক ও কুফার দিকে অগ্রসর হবেন। কুফাতে সাইয়্যেদ হাসানীর সাথে দেখা হবে। সাইয়্যেদ হাসানী তার বিশাল সৈন্য বাহিনী নিয়ে ইমামের হাতে বাইয়াত করবেন। ঈসা (আ.) আসমান থেকে  নেমে আসবেন এবং ইমামকে সাহায্য করবেন ও তাঁর পিছনে নামায পড়বেন।

ইমামের শাসনকার্যের মূল কেন্দ্র হবে কুফাতে। তিনি পৃথিবীর পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত এই বিস্তীর্ণ ভূমিকে নিজের আওতায় নিয়ে আসবেন। ইসলামের আইন-কানুনকেই সমস্ত জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করবেন। দীনকে নতুন রূপ দান করবেন এবং ইসলামের চেহারাতে যে সব ধূলা মাটি পড়েছিল তা পরিষ্কার করে নতুন দীপ্তি আনবেন। আল্লাহর কিতাব (কোরআন) ও নবী (সা.)-এর সুন্নতকে অনুসরণ করে চলবেন। আমিরুল মু মিনিন আলী (আ.)-এর মতই তার খাবার হবে সাদাসিধা এবং পোশাক-আষাক হবে অমসৃন ও সাধারণ।

ইমামের সুশাসনের বরকতে জমিতে ফসল হবে প্রচুর পরিমানে ,মানুষ হবে অর্থ-বিত্তশালী ,নেয়ামত আসবে সবদিক থেকে ,সব কাজে বরকত পাওয়া যাবে ,ফল-ফলাদি হবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত। দারিদ্রের হবে অবসান ,সবাই অর্থনৈতিকভাবে এমন সুখ-শান্তিতে থাকবে যে যাকাত দেয়ার জন্য কোন অভাবীকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। যার কাছেই দিতে যাবে সেই ফিরিয়ে দিবে। ইমামকে ভালবেসে অসংখ্য মুমিন ব্যক্তি ,ভক্ত ও অনুসারী তাঁর প্রতিবেশী হিসাবে কুফায় আবাস গড়ে তুলবে। ইমামের পিছনে নামাজ পড়ার জন্য সবাই এত ভিড় করবে যে পরবর্তীতে নামাজীদের জায়গা হওয়ার জন্য এশটি বিশাল মসজিদ তৈরী করা হবে। মসজিদটি এতই বড় হবে যার একহাজারটি দরজা থাকবে।

ইমামের শাসনামলে ন্যায়-নীতি ও নিরাপত্তা এত পরিমাণে থাকবে যে ,সমস্ত জায়গায় শান্তির ছায়া ছড়িয়ে পড়বে। এমন হবে যে ,যদি কোন বৃদ্ধ মহিলা তার সর্ব শরীরে স্বর্ণ অলংকার পরে একাকী এ শহর থেকে ও শহরে ঘুরে বেড়ায় তারপরও কেউ তাকে অত্যাচার করবে না বা তার সম্পদে কেউ হাত দিবে না।

জমিন তার নিজের মধ্যে যা কিছু অর্থ সম্পদ লুকায়িত বা প্রোথিত আছে তা ইমামের জন্য বের করে দিবে। তিনি সকল অত্যাচারিত বিধ্বস্তদেরকে পুনরায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবেন। যখন তিনি কিয়াম করবেন তখন আল্লাহ্ রাব্বুল আ লামিন তার অনুসারীদের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তিকে আরও প্রখর করে দিবেন যাতে করে ইমামের ও তাদের মধ্যে কোন প্রকার অন্তরায় না থাকে। তিনি তাদের সাথে কথা বলবেন এবং তারা তার কথাকে শুনতে পাবে। ইমাম তার অবস্থানের স্থানে থাকলেও তারা তাঁকে দেখতে পারবে। আবির্ভূত হওয়ার সময় আল্লাহ্ রাব্বুল আ লামিন তার বান্দাদের উপর দয়া ও রহমতের পরশ বুলিয়ে দিবেন এবং তাদের আকলসমূহকে পরিপূর্ণ করে দিবেন। ইমাম মাহ্দী হযরত দাউদ (আ.)-এর পদ্ধতিতে হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)-এর উম্মতের মধ্যে বিচার করবেন। যা কিছু নবী আকরাম (সা.) করে গেছেন তিনি তাই করবেন। যেভাবে নবী মুহাম্মদ (সা.) জাহেলি যুগের বিদআত ও কুপ্রথাকে সমাজ থেকে ঝেড়ে মুছে সাফ করে দিতেন ,তিনিও তেমনিভাবে ইসলামী সমাজকে সেগুলো থেকে বাঁচিয়ে নতুন জীবন দান করবেন। 149

ইমাম অন্তর্ধানে থাকার সময় তার অনুসারীদের কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য

1-নিম্মলিখিত দোয়াটি পড়া যা আল্লাহ্ রাব্বুল আ লামিনের কাছে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর ব্যাপারে বেশী করে জানতে চেয়ে প্রার্থনা করা : 

اَللَّهُمَّ عَرِّفْنى نَفْسَكَ فَاِنَّكَ اِنْ لَمْ تُعَرِّفْنى نَفْسَكَ لَمْ اَعْرِفْ نَبِيِّكَ، اَللَّهُمَّ عَرِفْنى رَسُلَكَ فَاِنَّكَ اِنْ لَمْ تُعَرِّفْنى رَسُلَكَ لَمْ اَعْرِفْ حُجَّتَكَ، اَللَّهُمَّ عَرِّفْنى حُجَّتَكَ فَاِنَّكَ اِنْ لَمْ تُعَرِّفْنى حُجَّتَكَ ضَلَلْتُ عَنْ دِينى

হে আল্লাহ্! আমাকে তোমার সত্ত্বার সাথে পরিচয় করিয়ে দাও। যদি তুমি তোমাকে আমার নিকট পরিচয় না করাও তাহলে আমি তোমার নবীর সাথেও পরিচিত হতে পারবো না। হে আল্লাহ্! আমাকে তোমার রাসূলের সাথে পরিচয় করিয়ে দাও। যদি তুমি আমাকে তোমার রাসূলের সাথে পরিচয় না করিয়ে দাও তাহলে আমি তোমার হুজ্জাতের (মনোনীত ইমামের) সাথেও পরিচিত হতে পারবো না। হে আল্লাহ্! আমাকে তোমার হুজ্জাতের সাথে পরিচয় করিয়ে দাও। যদি তুমি তোমার হুজ্জাতের সাথে আমাকে পরিচয় না করিয়ে দাও তাহলে আমি আমার দ্বীনের থেকে পথ ভ্রষ্ট হয়ে যাব। 150

2-এই দোয়াটি পড়া :

يا اَللَّه يا رَحْمَنُ يا رَحِيمُ يا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبى عَلى دِيِنك

হে আল্লাহ্! হে পরম দয়ালু! হে দয়াবান! হে হৃদয়ের উপর কর্তৃত্বশীল! আমার অন্তরকে তোমার দীনের উপর স্থিতিশীল করে দাও। 151

3-ইমামের জন্য দোয়া করা ,যেমন এই দোয়াটি পড়া :

اَللَّهُمَّ كُنْ لِوَلِيِّكَ الْحُجَّةِ بْنِ الْحَسَنِ صَلَوَتُكَ عَلَيْهِ وَ عَلىَ آبائهِ فى هَذِهِ السَّاعَةِ وَ فِى كُلِّ ساعَةِ وَلِياً وَ حافِظاً وَ قائِداً وَ ناصِراً وَ دَلِيلاً وَ عَيْناً حَتَّى تُسْكِنَهُ اَرْضَكَ طَوْعاً وَ تُمَتِّعَهُ فِيها طَويلا

হে আল্লাহ! হুজ্জাত ইবনুল হাসান (আ.) ও তাঁর পূর্বপুরুষদের উপর তোমার অগণিত রহমত বর্ষণ কর ঠিক এই সময় এবং প্রতিটি সময় তুমি তার অভিভাবক ,রক্ষাকারী ,পথনিদের্শক ,সাহায্যকারী ,নিয়ন্ত্রণকারী ,পরিচালনাকারী হও এবং তাকে তোমার জমিনের উপর ফজিলাত ও মর্যাদা দিয়ে প্রতিনিধি করে তাকে তার অনুগত কর ,আর তাঁকে দীর্ঘ সময়ের জন্য জমিনের বুকে সৌভাগ্যবান কর। 152

4-তাঁর জন্যে দরূদ শরিফ পাঠ করা এবং তাঁর আবির্ভাব তরান্বিত হওয়ার জন্য দোয়া করা :

اَللِّهُمَّ صِلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ وَ عَجِّل فَرَجَهُم

হে আল্লাহ্! নবী (সা.) ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর তোমার রহমত বর্ষণ কর আর ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর আবির্ভাবকে ত্বরান্বিত কর।

ইমাম মাহ্দী (আ.) কাছ থেকে রেওয়ায়েত এসেছে যে ,তিনি বলেছেন : আমার দ্রুত আবির্ভাবের জন্য প্রচুর দোয়া করবে ,কেননা তাতে তোমাদের সুফল রয়েছে। 153

5-জুমার দিনে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর যিয়ারত পড়া যা মাফাতিহুল জিনানে উল্লিখিত আছে।

6-দোয়ায়ে নুদবাহ্ পড়া। প্রতি জুমার দিনে ,ঈদে ফিতর ও ঈদে কোরবান এবং ঈদে গাদীরের দিনে।

7-তাঁর নাম শোনার সাথে সাথে উঠে দাঁড়ানো।

8-বিভিন্ন যিয়ারত পড়ার সময় তাঁর প্রতি দৃষ্টি রাখা।

9-বিভিন্ন সমস্যার থেকে থেকে উদ্ধারের জন্য তাঁর উছিলা দিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া চাওয়া। নিজের ভাল আমলকে তাঁর প্রতি উৎসর্গ করা। যেমন : কোরআন তেলওয়াত ,হজ ,ওমরাহ্ ,তাওয়াফ ,তাঁর পক্ষ থেকে ইমামগণের মাজার যিয়ারত করা ,তার সুস্থ থাকার জন্য ছদকা দেয়া।

10-গুনাহ থেকে প্রকৃতভাবে তওবা করা। যদিও গোনাহ্গারদের জন্য সকল সময় তওবা করা ফরজ কাজ। কেননা আমাদের পাপের কারণেই তাঁর অন্তর্ধান ঘটেছে।

11-জনগণকে তার প্রতি নিবন্ধ করা। অর্থাৎ প্রতিটি শিয়া যেন তাঁর কথাকে (আমলের মাধ্যমে ও বলার মাধ্যমে) অন্যের কাছে পৌঁছে দেয় । যতদূর সম্ভব দীন প্রচারের লক্ষ্যে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করা এবং এটি হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও কর্তব্য। কেননা আমরা সব সময় তাঁর আসার অপেক্ষায় থাকবো। আর তাঁর আসার অপেক্ষায় থাকার অর্থই হচ্ছে ,আমাদের জীবনকে এমনভাবে তৈরী করবো যেন তিনি তাতে রাজী থাকেন। আমরা আমাদের আচার-আচরণে প্রমাণ করবো যে আমরা ন্যায়ের সাথী এবং তাঁর ন্যায়-নীতিপূর্ণ শাসনামলের অপেক্ষায় আছি। যদি আমাদের দৃষ্টি আল্লাহ্ ,নবী ও ইমামগণের প্রতি নিবদ্ধ না থাকে এবং আচার-আচরণ ও কর্ম তাঁদের নির্দেশিত পথে না হয় তাহলে আমরা যতই বলি না কেন যে আমরা তাঁর আসার অপেক্ষায় আছি ,আমাদের এই বলা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।

সংক্ষিপ্তাকারে জামকারান মসজিদের পরিচিতি

কোম শহরের ইতিহাসের বইতে মরহুম নাসিরুস শারিয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে হাজী মির্যা হুসাইন নূরী তার মুসতাদরাকুল ওয়াসায়েল নামক গ্রন্থে লিখেছেন : শেখ হাসান বিন মোসাল্লা জামকারানী (রহঃ) বলেন : 17ই রমযান 393 হিজরী মঙ্গলবার রাতে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ একদল লোক আমার ঘরের সামনে এসে আমাকে জাগ্রত করে বলল , ওঠো ,ইমাম মাহ্দী (আ.) তোমাকে যেতে বলেছেন। সদর দরজায় এসে দেখি বড় বড় ব্যক্তিত্বরা সেখানে উপস্থিত। তারা আমাকে নিয়ে গেলেন যেখানে বর্তমানে মসজিদটি অবস্থিত আছে। সেখানে এসে দেখলাম ইমাম একটি সিংহাসনের উপর বসে আছেন। আমাকে আমার নাম ধরে ডেকে বললেন : হাসন মুসলিমকে (যে ঐ জমির মালিক) বল যে ,আল্লাহ্ অন্য সব জমির মধ্যে এই জমিকে পছন্দ করেছেন। সাইয়্যেদ আবুল হাসানের কাছে গিয়ে বল যে ,এই জমিটিকে হাসান মুসলিমের কাছ থেকে কিনে অন্যদেরকে দিয়ে দিতে তারা এখানে মসজিদ তৈরী করবে। জনগণের উদ্দেশ্যে বল যে ,এই জমির দিকে যেন খেয়াল রাখে আর এটার প্রতি ভালবাসা দেখায় এবং এই মসজিদে চার রাকাত নামায পড়ে ,যার দুই রাকাত হচ্ছে মসজিদের সম্মানে যা হচ্ছে এরূপ : প্রতি রাকাতে একবার সূরা হামদ ও সাতবার সূরা এখলাস ,রুকু ও সেজদাতে সাতবার তসবীহ্ পড়তে হবে। অন্য দুই রাকাত হচ্ছে ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর উদ্দেশ্যে যা হচ্ছে এরূপ : প্রতি রাকাতে সূরা হামদ পড়ার সময় ( اياك نعبد و اياك نستعين ) এই বাক্যটিকে একশতবার পড়ে সূরা শেষ করতে হবে। রুকু ও সেজদায় তসবীহ্ পড়তে হবে সাতবার। তারপর নামায শেষে লা ইলাহা ইল্লালাহ্ বলে হযরত ফাতিমা (সা.)-এর তসবীহ্ পড়তে হবে এরূপে (আল্লাহ্ আকবার 34 বার ,আলহামদুলিল্লাহ্ 33 বার ,সুবহানা আল্লাহ্ 33 বার)। তারপর সেজদায় গিয়ে একশতবার দরূদ শরিফ পাঠ করতে হবে। এই দুই রাকাত নামাযের মূল্য কাবা ঘরে নামায পড়ার সমতুল্য। এভাবেই এই মসজিদ তৈরী হয় যা আজও ইমাম মাহদীর ভক্ত-অনুরাগীদের যিয়ারতের স্থান হয়ে আছে।

আরও অধিক জানতে হলে মির্যা হুসেইন নূরী রচিত নাজমুস সাকিব নামক গ্রন্থ দেখা যেতে পারে।

তৌকি য়াত154

শেখ সাদুক রচিত কামাল উদ্দিন ও শেখ তুসি রচিত গাইবাত এ দুটি গ্রন্থে প্রায় আশিটি তৌকি য়াত উল্লেখিত হয়েছে। যার কিছু তিনি বিশিষ্ট আলেম ও ফকীহদের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেছেন। এ থেকেই বুঝা যায় যে ,ইমাম মাহ্দী (আ.) অন্তর্ধানে থেকেও তিনি তাঁর অনুসারী ও প্রিয় লোকদের প্রতি দৃষ্টি রাখছেন এবং যারা হেদায়াত পেতে ও পরিশুদ্ধ হতে চায় তাদের প্রতি তিনি বিশেষ দৃষ্টি রাখছেন। যারা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে যেমন : গুরুত্বপূর্ণ কাজের ব্যাপারে ,বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে ,জ্ঞান অর্জনের ব্যাপারে ,দীনি কাজের ব্যাপারে তাঁর কাছে কাতর হয়ে সাহায্য কামনা করেছে ,তারা তাঁর মাধ্যমে দিক নির্দেশনা পেয়েছে ও উপকৃত হয়েছে। বিশেষ করে যাদের হাতে দীনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে তাদেরকে তিনি বিশেষভাবে সাহায্য করেছেন। এগুলো ইমামের কাছ থেকে প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে তাঁর তৌওকি য়াতের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় যেমন :

উল্লেখ আছে যে ,এই সংবাদটি ইমাম মাহ্দী (আ.)-এর নিকট থেকে মরহুম আয়াতুল্লাহ্ আল উযমা আগা সাইয়্যেদ আবুল হাসান ইসফাহানী (মৃত্যু 1365 হিজরী) যিনি শিয়া মাযহাবের বিশিষ্ট ফকীহ্ ছিলেন প্রায় 50 বছর আগে তার কাছে এসেছে :

اَرْخِص نَفْسَكَ وَ اجْعَلْ مَجْلِسَكَ فِى الدِّهْليز وَ اَقْضِ حَوائِجَ النَّاس ، نَحْنُ نَنْصُرُكَ

তোমাকে মানুষের মাঝে বিলীন করে দাও এবং তোমার বসার জায়গাটিকে সদর দরজার কাছে কর (যাতে করে মানুষ সহজেই তোমার সাথে সাক্ষাত করতে পারে) এবং মানুষের চাওয়া পাওয়াকে পূরণ কর ,আমরা তোমাকে সাহায্য করবো।

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ وَ عَلَى آبائِهِ الطاَّهِرينَ وَ عَجِّلْ فَرَجَهُ الشَّريفَ وَ سَهلْ مَخْرَجَهُ وَ اَقْضِ جَميعَ حَوائِجِهِ بِرَحْمَتِكَ يا اَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ ، وَ آخِرُ دَعَوانا أَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمينَ