একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন0%

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন লেখক:
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ: নারী বিষয়ক

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক: মীর আশরাফ-উল-আলম
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ:

ভিজিট: 42965
ডাউনলোড: 4671

পাঠকের মতামত:

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 87 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 42965 / ডাউনলোড: 4671
সাইজ সাইজ সাইজ
একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক:
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বাংলা

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

সংকলন ও অনুবাদ

মীর আশরাফ - উল - আলম

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

সংকলন অনুবাদ : মীর আশরাফ-উল-আলম ।

সম্পাদনা : আবুল কাসেম মোঃ আনওয়ার ।

প্রকাশনায় : আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় , কোম-ইরান ।

প্রকাশকাল : 1429 হিঃ , 1415 বাং , 2008 খ্রীঃ ।

মুদ্রণে : আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রেস ।

Akjon Muslim Narir Abossoi Za Jana Proozon

( Must Knowing For Muslim Woman)

Collected & Translated by: Mir Ashraf-ul-Alam.

Published by: Al-Mustafa International Univercity, Qum-I.R.Iran.

প্রকাশকের কথা

) مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ‌ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً(

যে ব্যক্তি নেক কাজ আঞ্জাম দিবে , সে পুরুষই হোক অথবা নারীই হোক এবং যদি সে ঈমানদার হয় তবে তাকে এক প্রশান্তিময় জীবন দান করব ।1

সেই প্রাচীন কাল থেকেই নারী বিষয়টি বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মহলে এবং চিন্তাবিদগণের আলোচনার বিষয়বস্তু হিসেবে পরিগণিত হয়েছে । সাথে সাথে প্রসিদ্ধ লেখক ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রদানকারীগণও এ বিষয়ের উপর বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন । আর তাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গীর আলোকে এ বিষয়সম্পর্কে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণকরেছেন , যা বিশ্বের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ইতিহাস অধ্যয়ন করলে দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকে । যেহেতু এ গুলোর মধ্যে ইসলাম পরিপূর্ণ একটি দ্বীন তাই মানুষ ও তার অধিকার , দায়িত্ব ইত্যাদির প্রতি গভির নজর রেখে ; নারীর স্থান ও মর্যাদার বিষয়টিকে বিশেষ ব্যাখ্যা - বিশ্লেষণ ও আলোচনা - পর্যালোচনায় স্থান দিয়েছে । আর নারী সৃষ্টির উদ্দেশ্য ও গঠনগত তারতম্যের উপর দৃষ্টি রেখেই তার অধিকার বর্ণনা করেছে । যা কোন প্রকার পক্ষপাতিত্ব না করেই গভির দৃষ্টির আলোকে অবশ্যই বলতে হয় : ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীনেই এরূপে নিখুঁতভাবে নারীর অধিকার সম্পর্কে র্বণনা এবং তার শান ও মর্যাদায় নিরাপত্তা দেয়া হয় নি ।

কেননা , আমরা দেখতে পাই যে ; ইসলাম ধর্ম আবির্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত সারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে নারীর সাথে অশোভনীয় আচারণ করা হত এবং সর্বনিম্ন সমাজিক অধিকারটুকুও তাকে দেয়া হত না । ঠিক এমনই বিষাক্ত এক পরিবেশে রাসূলে আকরাম (সা.) নারীর উচ্চ শান ও মর্যাদাকে পরিপূর্ণভাবে তুলে ধরলেন এবং মানুষের স্বভাবজাত প্রক্রিয়ার প্রতি দৃষ্টি রেখেই আইন প্রণয়ন করেলন । কিন্তু অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে ,

এখনো পর্যন্ত এ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে এমন সব উক্তি শোনা যায় যার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে এটা ফুটে ওঠে যে ; তারা নারীর শান ও মর্যাদা সম্পর্কে ইসলামের দেয়া দর্শন বুঝে উঠতে পারে নি ।

তাই বিশ্ব ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রে ( ইসলামী দর্শন ও ইরাফন শাস্ত্রে ) অধ্যয়নরত গবেষক ও চিন্তাবিদ হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন মীর আশরাফ - উল - আলম বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন নামে বর্তমান বইটি সংকলন ও বাংলা ভাষায় রূপান্তর করেছেন । আমরা তাকে এবং যারা বইটি প্রকাশে বিশেষ ভুমিকা রেখেছেন সকলকেই আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি । আর আশা করি বইটি অধ্যয়ন করে পাঠক মহল বিশেষ উপকৃত এবং ইসলামের দেয়া নারীর প্রকৃত ও উপযুক্ত স্থান , মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে অবগত হবেন ।

গবেষণা বিভাগ ,

বিশ্ব ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র , কোন - ইরান ;

23 রমযানুল মুবারাক , 1427 হিজরী ।

দুটি কথা

সম্মানিত পাঠক-পাঠিকাবৃন্দ ,

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ ।

বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখেই এই বইটি সংকলন ও বাংলায় রূপান্তর করা হয়েছে । কারণ এক শ্রেণীর পুজিবাদী , দ্বীনহীন , পাপাচারী ও দুনিয়া প্রেমী ব্যক্তি তাদের স্বার্থ উদ্ধারের লক্ষ্যে বিশ্বের নারী সমাজকে দিনের পর দিন উচ্ছৃঙ্খলতা ও বেহায়াপনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং তারা এটাকে নারী স্বাধীনতা বলে প্রচার চালাচ্ছে ।

অবশ্য আমাদের এ লেখনিটি বিশ্বের সমগ্র নারী সমাজকে নিয়ে নয় বরং মুসলিম নারী সমাজের প্রতিই আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়েছে । কারণ ইসলামই সর্ব প্রথম ধর্ম যা নারী সমাজকে দিয়েছে পরিপূর্ণ মর্যাদা ও স্বাধীনতা । এটা অবশ্যই বোঝা প্রয়োজন যে , ইসলাম নারীকে যে মর্যাদা ও স্বাধীনতা দিয়েছে তার সাথে বর্তমানে নারী মর্যাদা ও স্বাধীনতার নামে যে লজ্জাহীনতা ও অসভ্যতার চর্চা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে বিশাল ব্যবধান । আমরা বিশ্বাস করি যে , ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মই নারীকে উপযুক্ত মর্যাদা ও স্বাধীনতা প্রদান করে নি বা করতে পারবেও না ।

ইসলামের দৃষ্টিতে নারী ও তার অধিকারসমূহ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ( যা দ্বীনের আহ্কামে লিপিবদ্ধ রয়েছে ) যে , তার ব্যক্তিত্ব হচ্ছে আল্লাহ্ সুবহানাহু তা য়ালার হকের শামিল না মানুষের । আর তাকে কোন প্রকার অপমান করা কারো জন্যে বৈধ নয় এবং সকলের উচিত তার মর্যাদা ও ব্যক্তিত্ব রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করা ।

ইসলাম নারীর মর্যাদা ও ব্যক্তিত্ব রক্ষায় সদা-সচেষ্ট । তাই যদি কেউ কোন নারীর ব্যক্তিত্বহানী করে বা সম্ভ্রমহানী ঘটায় তবে অবশ্যই ঐ ব্যক্তি শাস্তিপ্রাপ্ত (হদ প্রাপ্ত) হবে এবং তা কোন প্রকারেই লংঘনীয় নয় । না তার স্বামীর সম্মতিক্রমে আর না তার নিজের । কেননা , তার ব্যক্তিত্ব বা সম্ভ্রম হচ্ছে আল্লাহ সুবহানাহু তা য়ালার হকের শামিল । এটা অর্থ বা মালামাল নয় যে , যদি তা চুরি হয়ে থাকে তবে চুরিকৃত অর্থ বা মালের মালিক সন্তুষ্টি মুলক সম্মতি দিলেই চোর শাস্তিভোগ করা থেকে রেহাই পেয়ে যাবে । কিন্তু বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে , পশ্চিমা সমাজে নারীর ব্যাক্তিত্ব বা সম্ভ্রমকে অনুরূপ পণ্যের ন্যায় মনে করা হচ্ছে । তাই সেখানকার সম্ভ্রমহীন নারীর বা তার স্বামীর সন্তুষ্টি মুলক সম্মতিতে অপরাধী অব্যহতি পেয়ে যাচ্ছে । ঠিক যেমনটি সেই জাহেলিয়াতের যুগে হত । কিন্তু ইসলাম আসাতে সমাজে জাহেলিয়াতের কোন স্থান নেই , তা পুরাতন বা নুতনই হোক না কেন । যেরূপে পবিত্র কোরআন বলছে :

﴿ قُلْ جَاءَ الْحَقُّ وَمَا يُبْدِئُ الْبَاطِلُ وَمَا يُعِيدُ

বল : হক এসেছে আর বাতিলের না সূচনা হবে আর না পুনরাবৃত্তি । 2

নারী সমাজকে ইসলাম যে স্বাধীনতা বা মর্যাদা দান করেছে সে সম্পর্কে বর্তমান নারী সমাজের অজ্ঞতার মূল কারণ হচ্ছে আমাদের মত কিছু আলেম যারা লেখা-লেখি করি তারা এই বিষয়টিকে সুন্দর ও সঠিকভাবে নারী সমাজের সামনে তুলে ধরতে পারি নি । ইসলাম নারীকে যে প্রকৃত স্বাধীনতা ও মর্যাদা দিয়েছে তা যদি আমরা তাদের সামনে উপযুক্ত ভাবে তুলে ধরতে পারতাম তাহলে আজ এই লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না । তবুও দেরি হলেও সময় ফুরিয়ে যায় নি , এখনো সম্ভব আমাদের সন্তানদেরকে উপযুক্ত ইসলামী দিক-নির্দেশনায় গড়ে তোলা । কেননা , যখনই ক্ষতির পথরোধ করতে পারব তখনই লাভ শুরু হবে ।

যদিও সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় করতে পারিনি তবুও আশা করছি এ সংকলনে ইসলামে নারীর মর্যাদা ও স্বাধীনতার বিষয়টি সার্বিকভাবে তুলে ধরতে পেরেছি । ইনশাআল্লাহ আগামীতে আমরা এ ধরনের আরো লেখনি প্রকাশ করে সমাজ জীবনে ইসলামের সঠিক নির্দেশাবলী আপনাদের মত সচেতন পাঠক মহলে পৌঁছে দেয়ার সর্বোপরি চেষ্টা করব ।

এই সংকলনটি নারী সমাজকে নিয়ে রচিত হয়েছে তার অর্থ এই নয় যে , সমস্তনিয়ম-কানুন ও বাধ্য-বাধকতা শুধুমাত্র নারীদের জন্যেই । ইসলামে নারীর ব্যাপারে যেভাবে নিয়ম-কানুন ও বাধ্য-বাধকতা এসেছে পুরুষের জন্যও রয়েছে অনুরূপ নিয়ম-কানুন ও বাধ্য-বাধকতা । তবে যেহেতু বর্তমান বিশ্বে নৈতিকতাকে নষ্ট করার ক্ষেত্রে নারীকেই ব্যবহার করা হচ্ছে , তাই প্রথমে নারী নিয়েই এ সংকলনের প্রকাশ । আগামীতে পুরুয়ের ব্যাপারেও অনুরূপ সংকলন প্রকাশ করার চেষ্টা করব ইন্শাআল্লাহ তা য়ালা ।

এই বইটির জন্য অনেকেই আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন , তাদের অনুপ্রেরণাই আমাকে সাতটি অধ্যায়ে এ বইটি সংকলিত ও অনুদিত করতে শক্তি যুগিয়েছে । আর বইটি সম্পাদনা ও প্রকাশে যারা ভূমিকা পালন করেছেন তাদের জন্য মহান আল্লাহ তা য়ালার দরবারে উত্তম পুরস্কার কামনা করছি ।

প্রিয় পাঠক মহল আশা করি বইটি অধ্যয়ন করে উপকৃত হবেন । আর আপনারা উপকৃত হলেই আমাদের শ্রম সার্থক হবে । বইটি অধ্যয়নে কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে আমাদেরকে জানাতে দ্বিধাবোধ করবেন না । আপনাদের দিক-নির্দেশনা পেলে আমরা আমাদের কাজে আরো অনুপ্রেরণা পাব ।

ওয়াসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্

( رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أَنتَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ)

মীর আশরাফ-উল-আলম

তৌহিদী ব্যবস্থার দৃষ্টিতে নারী সমাজ দু শ্রেণীতে বিভক্ত

প্রথম শ্রেণী

যে সকল নারী আল্লাহর নির্দেশ ও নীতিমালাকে নিজেদের জীবনের আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেন , তাদের ব্যাপারে পবিত্র কোরআন , মহানবী (সা.) ও তাঁর আহলে বাইতের ইমামগণ (আ.) -এর হাদীসসমূহে প্রশংসামূলক বাণী উচ্চারিত হয়েছে । এখন এ পর্যায়ে আমরা সংক্ষিপ্তাকারে আপনাদের সামনে উক্ত আয়াত ও রেওয়ায়েতসমূহকে তুলে ধরার চেষ্টা করব ।