1- পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতে নারীর মর্যাদা
)
إِنَّ الْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَالْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْقَانِتِينَ وَالْقَانِتَاتِ وَالصَّادِقِينَ وَالصَّادِقَاتِ وَالصَّابِرِينَ وَالصَّابِرَاتِ وَالْخَاشِعِينَ وَالْخَاشِعَاتِ وَالْمُتَصَدِّقِينَ وَالْمُتَصَدِّقَاتِ وَالصَّائِمِينَ وَالصَّائِمَاتِ وَالْحَافِظِينَ فُرُوجَهُمْ وَالْحَافِظَاتِ وَالذَّاكِرِينَ اللَّـهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ اللَّـهُ لَهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا(
“
নিশ্চয়ই মুসলমান পুরুষ ও মুসলমান নারী , ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী , অনুগত পুরুষ ও নারী , ইবাদতকারী পুরুষ ও নারী , সত্যবাদী পুরুষ ও নারী , ধৈর্য্যশীল পুরুষ ও নারী , খোদাভীরুপুরুষ ও নারী , ছদকা দানকারী পুরুষ ও নারী , রোযাদার পুরুষ ও নারিগণ এবং যে সকল পুরুষ ও নারী তাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে এবং যে সকল পুরুষ ও নারী আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে , তাদের সকলের জন্যেই আল্লাহ তা’
য়ালার কাছে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার”
।
এই পবিত্র আয়াতে , পুরুষ ও নারীকে পাশা-পাশি উল্লেখ করা হয়েছে । আল্লাহ্ তা’
য়ালা পুরস্কার দান ও ক্ষমা করার ব্যাপারে তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করেন নি ।
)
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ اللَّـهِ أَتْقَاكُمْ إِنَّ اللَّـهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ(
হে মানব সকল! আমরা তোমাদের সকলকে একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি এ কারণে যে , তোমরা যেন একে অপরকে চিনতে পার (এবং বুঝতে পার বংশ ও গোত্র কোন গর্বের বিষয় নয়) । তোমাদের মধ্যে সেই আল্লাহর কাছে অধিক উত্তম যে অন্যের থেকে বেশী তাকওয়াসম্পন্ন । নিশ্চয়ই আল্লাহ্ জ্ঞানী এবং মানুষের ভাল ও মন্দ কাজের বিষয়ে সম্যক অবগত আছেন ।
এই পবিত্র আয়াতেও আল্লাহ তা ’ য়ালা পুরুষ ও নারী সৃষ্টির উদ্দেশ্য তাঁর ও একক , পবিত্র সত্তাকে উত্তমরূপে জানা বলে উল্লেখ করেছেন । আর বংশ , ক্ষমতা , ধন-দৌলত , জ্ঞান , রং , ভাষা ও ভৌগলিকতার (আমেরিকা , ইউরোপ , এশিয়া ইত্যাদি) ভিত্তিতে আল্লাহ মানুষের মর্যাদাকে নির্ধারণ করেন নি বরং আল্লাহর কাছে উত্তম বস্তু হচ্ছে তাকওয়া , আর তাকওয়ার অর্থ হচ্ছে আল্লাহর আদেশ-নিষেধকে মেনে চলা ।
)
مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَىٰ وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ(
“
পুরুষ ও নারীদের মধ্য থেকে যারাই ঈমান আনবে এবং উত্তম কাজ আঞ্জাম দিবে , তাদেরকে আমরা পবিত্র জীবন দান করবো এবং তাদের কাজের তুলনায় উত্তম পুরস্কার দান করব”
।
এই আয়াতেও আল্লাহ্ তা’
য়ালা উত্তম কাজের বিনিময় স্বরূপ পুরস্কার ও সওয়াব দানের অঙ্গীকার করেছেন , আর সৎকর্ম সম্পাদনকারী পুরুষই হোক অথবা নারী হোক কোন পার্থক্য করেন নি বরং যে কোন বান্দাই এই ভাল কাজ আঞ্জাম দিবে আল্লাহ তা’
য়ালা তাকেই এই পুরস্কারে পুরস্কৃত করবেন ।
)
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ(
“
আল্লাহ্ তা’
য়ালার নিদর্শনাবলীর মধ্যে একটি হচ্ছে যে , তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে সহধর্মিনীদেরকে সৃষ্টি করেছেন যাতে করে তাদের সান্নিধ্যে প্রশান্তি অনুভব করতে পার , আর তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও রহমতকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন । এ সব কিছুই হচ্ছে নিদর্শন তাদের জন্য যারা চিন্তা করে ।”
এই পবিত্র আয়াতেও আল্লাহ তা’
য়ালা নারী সৃষ্টিকে তাঁর অন্যতম নিদর্শন হিসেবে পেশ করেছেন । তিনি উল্লেখ করেছেন যে , নারীরা হচ্ছে ভালবাসা , রহমত ও প্রশান্তির কারণ । বিশিষ্ট মুফাসসির আল্লামা তাবাতাবাই (রহ:) এই আয়াতের তাফসীরে বলেন , পুরুষ ও নারী এমনই এক সৃষ্টি একে অপরের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলে যারা উভয়ই পূর্ণতা অর্জন করে এবং এ দু’
য়ের মিলনের মাধ্যমে মানব জাতির বংশ বিস্তার ঘটে থাকে , আর তারা একজন অপরজন ছাড়া অসম্পূর্ণ ।
আল্লাহ্ তা’
য়ালা এই আয়াতের শেষে বলছেন : এই বিষয়টি তাদের জন্য নিদর্শন যারা চিন্তা করে বা যারা বিবেক সম্পন্ন । তারা এর মাধ্যমে বুঝতে পারবে যে , পুরুষ ও নারী একে অপরের পরিপূরক । আর নারীই একটি পরিবারকে সতেজ ও উদ্যমী করে রাখে এবং এর সদস্যদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করে । যে কারণে পুরুষ ও নারী শুভ বন্ধনে আবদ্ধ হয় তা হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত ভালবাসা ও রহমত । শুধুমাত্র দৈহিক চাহিদার কারণেই তারা এ বন্ধনে আবদ্ধ হয় না ।
কিন্তু পুরুষ ও নারীর বন্ধনের মধ্যে দু’
টি দিক বিদ্যমান । তার একটি হচ্ছে ঐশী ও ভালবাসার দিক অপরটি হচ্ছে পাশবিক দিক । তবে মানুষ তার ঐ ঐশী ও ভালবাসার বোধের মাধ্যমেই পূর্ণতায় পৌঁছে থাকে ।
এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা বিশেষ প্রয়োজন বলে মনে করছি তা হচ্ছে , অনেক মুফাসসির উল্লিখিত আয়াত ও এ ধরনের আরো কিছু আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন যে , নারী পুরুষের শরীরের অংশ । কেননা তাদেরকে পুরুষের শরীরের অংশ থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে । আর এই ধরনের তফসিরের ফলে অনেক সুবিধাবাদী পুরুষ , নারীদেরকে তাদের থেকে নিম্ন পর্যায়ের মনে করে থাকেন যা নারীর জন্যে একটি অপমান জনক বিষয় । এক্ষেত্রে নিম্নলিখিত আয়াতসমূহকে তারা প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন :
)
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً(
হে মানব সকল ! তোমাদের পরওয়ারদিগারকে ভয় কর । যিনি তোমাদেরকে একক সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন । আর তা থেকে তার সহধর্মিণীকেও এবং ঐ দু’
জন থেকে অনেক পুরুষ ও নারী সৃষ্টি করেছেন ।
)
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا(
তিনিই তোমাদেরকে একক সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকে তার স্ত্রী ।
)
خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَاحِدَةٍ ثُمَّ جَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا(
তোমাদেরকে এক সত্তা থেকে সৃি ষ্ট করেছেন এবং তা থেকে তার স্ত্রীকেও ।
)
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا(
আর এটা তাঁর নিদর্শনমূহের নমুনা স্বরূপ যে , তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সহধর্মিণী সৃষ্টি করেছেন ।
)
وَاللَّـهُ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا وَجَعَلَ لَكُم مِّنْ أَزْوَاجِكُم بَنِينَ وَحَفَدَةً(
আর আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রী নির্দিষ্ট করেছেন এবং তোমাদের স্ত্রীদের থেকে সন্তান ও পৌত্রদের সৃষ্টি করেছেন ।
)
جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا(
তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন ।
বাহ্যিকভাবে দেখা যায় যে , প্রথম তিনটি আয়াতে বলা হয়েছে সমস্ত মানুষ একটি নফস (সত্তা) থেকে সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের স্ত্রীগণও ঐ নফস থেকেই সৃষ্টি হয়েছে ।
কিন্তু পরের তিনটি আয়াতে উক্ত বিষয়টিকে সমস্তপুরুষের প্রতি ইশারা করে বলা হচ্ছে যে , তোমাদের স্ত্রীগণকে তোমাদের থেকেই সৃষ্টি করা হয়েছে । যদি আমরা একটুখানি এই বিষয়ের প্রতি গভীর দৃষ্টি দেই তবে এটা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে , এ আয়াতসমূহে আল্লাহ তা’
য়ালা এটাই বুঝাতে চেয়েছেন যে , তাদের স্ত্রীগণ উৎসের দৃষ্টিতে তাদেরই প্রকৃতির , অন্য প্রকৃতির নয় । এটা নিশ্চয় বুঝাতে চাননি যে , স্ত্রীগণ তাদের দেহের অংশ থেকে সৃষ্টি হয়েছে । যদি তাই হয়ে থাকে তবে বলতে হয় যে , প্রতিটি স্ত্রীই তার স্বামীর দেহের অংশ থেকে সৃষ্টি হয়েছে । পরবর্তী তিনটি আয়াত প্রথম তিনটি আয়াতকে ব্যাখ্যা করেছে , যাতে করে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায় ।
আল্লামা তাবাতাবাই এই আয়াতের তফসিরে বলেছেন :‘
ওয়া খালাকা মিনহা যাওজাহা’
আয়াতের বাহ্যিক অর্থ হচ্ছে যে , স্ত্রীদের পুরুষের প্রকৃতিতে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তাদের উভয়েরই সৃষ্টির উৎস হচ্ছে এক ।
এই আয়াতে‘
মিন’
শব্দটি উৎস বর্ণনা অর্থে এসেছে অর্থাৎ এখানে‘
মিন’
কোন কিছু সৃষ্টির উৎসকে বর্ণনা করছে । এই আয়াতটি অন্যান্য আয়াতের মতই পুরুষ ও নারীর সৃষ্টির উৎস বর্ণনা করেছে , যা পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে ।
অতএব , এটা আমাদের কাছে পরিস্কার এবং বিভিন্ন তফসির গ্রন্থের ভাষ্য অনুযায়ী যে বলা হয়ে থাকে আল্লাহ তা’
য়ালা নারীকে পুরুষের বাম
পাজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করেছেন তা সম্পূর্ণরূপে দলিলহীন উক্তি ।
উপরোল্লিখিত ভ্রান্ত ধারণাটির পক্ষে রয়েছেন আহলে সুন্নাতের মুফাসসিরগণ যেমন : ওয়াহ্বাহ্ যুহাইলী এবং ফাখরুদ্দীন রাযি তারা তাদের নিজ নিজ গ্রন্থে তা উল্লেখ করেছেন ও গ্রহণ করেছেন ।
সুতরাং কোরআনের আয়াত থেকে আমাদের কাছে যা প্রমাণিত হয়েছে তা হচ্ছে , পবিত্র কোরআন পুরুষ ও নারী সৃষ্টির উৎসগত আলোচনা করেছে এবং তাদের মধ্যকার সাদৃশ্যকে তুলে ধরেছে । এর পক্ষে আমাদের আরো জোরাল যুক্তি রয়েছে যা নিম্নরূপ :
ইমাম সাদিক (আ.)-এর কাছে প্রশ্ন করা হল যে ,‘
একদল লোক বলে হযরত হাওয়াকে হযরত আদমের বাম পাজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে ’ এ ব্যাপারে আপনার মত কি ?
তিনি বললেন : আল্লাহ তা’
য়ালা এমন ধরনের কাজ করা থেকে
পবিত্র । এরপর তিনি তাদেরকে পাল্টা প্রশ্ন করে বললেন :
আল্লাহর কি
ক্ষমতা ছিল না যে ,
হযরত আদমের জন্য স্ত্রী সৃষ্টি করবেন যে তার
পাজরের হাড় থেকে হবে না ?
যাতে করে পরবর্তীতে কেউ বলতে না পারে
যে ,
হযরত আদম নিজেই নিজের সাথে বিয়ে করেছেন । আল্লাহ তাদের ও
আমাদের মধ্যে এ বিষয়ে ফায়সালা করুন ।
(অর্থাৎ এখানে ইমাম বুঝাতে চেয়েছেন যে , আল্লাহ যখন হযরত আদমকে মাটি থেকে সৃষ্টি করতে পেরেছেন তবে তার সৃষ্টির জন্য , তার পাজরের হাড় থেকে করতে হবে কেন ? যেহেতু আল্লাহ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী । তাই এ কথা বললে তাঁর অক্ষমতাকেই তুলে ধরা হয় , নয় কি ? -নাউযুবিল্লাহ । )
অন্য আরেকটি হাদীসে এসেছে যে ,‘
আল্লাহ তা ’ য়ালা হযরত আদম সৃষ্টির পরে অবশিষ্ট কাদা-মাটি থেকে হযরত হাওয়াকে (হযরত আদমের মতই) স্বতন্ত্রভাবে সৃষ্টি করেছেন ।
)
وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ أُمِّ مُوسَىٰ أَنْ أَرْضِعِيهِ فَإِذَا خِفْتِ عَلَيْهِ فَأَلْقِيهِ فِي الْيَمِّ وَلَا تَخَافِي وَلَا تَحْزَنِي إِنَّا رَادُّوهُ إِلَيْكِ وَجَاعِلُوهُ مِنَ الْمُرْسَلِينَ(
“
আমরা মুসার মায়ের প্রতি এরূপ এলহাম করেছিলাম যে , তাকে দুধ দাও এবং যখনই তার ব্যাপারে ভয় পাবে তখনই তাকে ( নীল নদের ) পানিতে নিক্ষেপ কর , তুমি ভয় করো না ও দুঃখিত হয়োনা আমরা তাকে পুনরায় তোমার কাছে ফিরিয়ে দিব এবং তাকে রাসূলগণের মধ্যে স্থান দিব”
।
এই আয়াতে এ বিষয়টি পরিস্কার যে , আল্লাহ তা’
য়ালা হযরত মুসা (আ.)-এর মায়ের প্রতি এলহাম করেছেন , আল্লাহ একজন নারীকে উদ্দেশ্য করে কথা বলেছেন এটা হচ্ছে নারীদের জন্য একটি মর্যাদার বিষয় ।
)
إِذْ قَالَتِ الْمَلَائِكَةُ يَا مَرْيَمُ إِنَّ اللَّـهَ يُبَشِّرُكِ بِكَلِمَةٍ مِّنْهُ اسْمُهُ الْمَسِيحُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ وَجِيهًا فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَمِنَ الْمُقَرَّبِينَ(
“
(ঐ সময়কার কথাকে স্মরণে আন ) যখন ফেরেশতাগণ বলেছিলেন :‘
হে মারিয়াম ! আল্লাহ তা’
য়ালা তোমাকে তার পক্ষ থেকে এক বাণীর সুসংবাদ দান করছেন যে , তার নাম হচ্ছে মাসিহ্ ঈসা ইবনে মারিয়াম , সে এই দুনিয়া ও আখেরাতেও একজন সম্মানিত ব্যক্তি এবং নৈকট্যপ্রাপ্তদের মধ্যে শামিল হবে ।”
তাহলে আমাদের কাছে এটা পরিস্কার যে , একজন নারীর পক্ষে এটা সম্ভব যে , সে পরিপূর্ণতার এমন পর্যায়ে পৌছাবে , যার কারণে আল্লাহ তা’
য়ালা আসমানী কিতাবে তাকে উদ্দেশ্য করে কথা বলবেন । আর আল্লাহর ফেরেশ্তাগণ ও স্বয়ং জিব্রাঈল (আ.) তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হয়ে তাঁর সাথে কথা বলবেন । আর এমন নজির পুরুষদের মধ্যেও কম দেখা যায় ।
)
وَضَرَبَ اللَّـهُ مَثَلًا لِّلَّذِينَ آمَنُوا امْرَأَتَ فِرْعَوْنَ إِذْ قَالَتْ رَبِّ ابْنِ لِي عِندَكَ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ وَنَجِّنِي مِن فِرْعَوْنَ وَعَمَلِهِ وَنَجِّنِي مِنَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ(
“
আল্লাহ্ তা’
য়ালা মু’
মিনদের জন্য ফিরআউনের স্ত্রীকে উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন , যখন সে বলেছিল যে , হে আল্লাহ ! বেহেশ্তে তোমার কাছে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ কর এবং আমাকে ফিরআউনের কু -কর্ম ও তার অত্যাচারী দলবল থেকে রক্ষা কর”
।
1-আল্লাহ তা’
য়ালা এই আয়াতে সকল পুরুষ ও নারীর সামনে একজন নারীকে আদর্শ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন ।
2-আছিয়া (ফিরআউনের স্ত্রী) সকল নারীকে এটাই শিক্ষা দিলেন যে , আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা কোন বাদশাহর প্রাসাদে জীবন-যাপন করার (সেখানে সব ধরনের সুব্যবস্থা থাকা সত্বেও) থেকেও উত্তম । তিনি আরো প্রমাণ করলেন যে , কোন নারীরই উচিৎ নয় এই দুনিয়ার বাহ্যিক রূপের মোহে ভুল করা । কেননা দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা ধ্বংস হয়ে যাবে । আর শুধুমাত্র আল্লাহ্ই থাকবেন ।
3-তিন আরো শিক্ষা দিলেন যে , নারীদের স্বাধীনতা থাকবে (যতটুকু আল্লাহ অনুমতি দিয়েছেন) এবং তারা জুলুম ও জালিমের প্রতি ঘৃণা রাখবে ; যদিও ঐ জালিম তার স্বামীও হয়ে থাকে ।
)
إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ ﴿١﴾ فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ ﴿٢﴾ إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ﴾
হে রাসূল ! আমরা তোমাকে অফুরন্ত নেয়ামত - নবুওয়াত , শাফা ’ য়াতের ন্যায় উচ্চ মর্যাদাসহ কাউসার ( ফাতিমাকে ) - দান করেছি । সুতরাং তুমি এই নে ’ য়ামতসমূহের শুকরিয়া স্বরূপ নামায আদায় এবং কুরবানী কর । আর প্রকৃতপক্ষে তোমার শত্রুরাই হচ্ছে নির্বংশ । ”