একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন0%

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন লেখক:
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ: নারী বিষয়ক

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক: মীর আশরাফ-উল-আলম
: মীর আশরাফ-উল-আলম
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বিভাগ:

ভিজিট: 42966
ডাউনলোড: 4671

পাঠকের মতামত:

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 87 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 42966 / ডাউনলোড: 4671
সাইজ সাইজ সাইজ
একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই যা জানা প্রয়োজন

লেখক:
প্রকাশক: আল মুস্তাফা (সা.) আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়, কোম-ইরান
বাংলা

2- যে সকল নারী বেপর্দা অবস্থায় ও সঠিকভাবে পর্দা না করে অন্য মানুষকে আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে সুগন্ধি মেখে বাড়ীর বাইরে যায় সে ব্যভিচারীর ন্যায় :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

যদি কোন নারী আতর বা সুগন্ধি মেখে বাড়ীর বাইরে একদল লোকের মধ্যে যায় তারা তার আতরের গন্ধ পায় ; তবে এই নারী হচ্ছে ব্যভিচারী । শুধু তাই নয় যে চোখগুলো এই নারীর দিকে তাকায় সেগুলোও ব্যভিচারী ।97

রাসূল (সা.)-এর এই হাদীস থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে , কোন নারী যদি নিজেকে সুগন্ধিযুক্ত করে এবং বে-পর্দা অবস্থায় বাড়ীর বাইরে যায় তবে তাকে পাপী বা ব্যভিচারী বলা হবে । সুতরাং ব্যভিচারের বিষয়টি শুধুমাত্র অবৈধ মিলনের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয় ।

এমন আরো অনেক হাদীসে দেখতে পাওয়া যায় যে , হাত দিয়ে যদি কোন না-মাহরামকে স্পর্শ করা হয় তবে এই স্পর্শকারী হাতটি ব্যভিচারী হাত হিসেবে গণ্য হবে । যদি চোখ দিয়ে কোন না-মাহরামের দিকে কামভাবের দৃষ্টিতে তাকানো হয় তবে এই দৃষ্টিকে চোখের ব্যভিচার বলে গণ্য করা হবে । আর যদি কোন নারী নিজেকে সুগন্ধিযুক্ত করে এবং কেউ ঐ গন্ধ পেয়ে তার দিকে তাকায় তবে তারা উভয়ই হচ্ছে ব্যভিচারী (অবশ্য লক্ষ্য রাখতে হবে ব্যভিচারের বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে) ।

3- বে-পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারী জাহান্নামের আগুনে পতিত এবং লাঞ্ছিত হবে :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﺍﺫﺍ ﺗﻄﻴﺒﺖ ﺍﳌﺮﺃﺓ ﻟﻐﲑ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﻓﺄﳕﺎ ﻫﻮ ﻧﺎﺭ ﻭ ﺷﻨﺎﺭ

যখন কোন নারী তার স্বামী ব্যতীত অন্য কারো জন্যে নিজেকে সুগন্ধিযুক্ত করে তাই জাহান্নামের আগুন এবং তার জন্যই চরম অপমান ।98

প্রকৃত পক্ষে জাহান্নাম ও বেহেশত আমাদের আমলের মাধ্যমেই প্রস্তুত হয়ে থাকে ।

পবিত্র আয়াতে বলা হয়েছে :

ﻭﻗﻮﺩﻫﺎ ﺍﻟﻨﺎﺱ

জাহান্নামের জ্বালানী হচ্ছে মানুষ ।99

আমাদের খারাপ আমলসমূহই জাহান্নামের আগুনকে প্রজ্জলিত করে । আর বে-পর্দা নারী তার আচরণ ও ভঙ্গীর মাধ্যমে আল্লাহ তা ’ য়ালাকে রাগান্বিত করে এবং জাহান্নামের আগুনের শিখাকে আরো বেশী প্রজ্বলিত হতে সাহায্য করে ।

4- বে-পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীর থেকে অবশ্যই আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া উচিৎ :

যে সকল নারী ফ্যাসাদ সৃষ্টি ও গোমরাহীর কারণ তাদের থেকে দূরে থাকা এতটাই গুরুত্বের ব্যাপার যে , প্রয়োজনে মানুষ অবশ্যই আল্লাহর আশ্রয় চাবে । কেননা আল্লাহর ভালবাসা ব্যতীত অন্য কোন শক্তিই মানুষকে ফ্যাসাদ ও গোমরাহীর হাত থেকে নাজাত দিতে পারবে না । তাই পবিত্র কোরআনে এভাবে বলা হয়েছে :

ﻭ ﻣﻦ ﺷﺮ ﺍﻟﻨﻔﺎﺛﺎﺕ ﰱ ﺍﻟﻌﻘﺪ

(হে নবী , বলুন) গ্রন্থিতে ফুৎকার দিয়ে জাদুকারিণী নারীর অনিষ্ট হতে মহান আল্লাহর আাশ্রয় চাই ।100

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﺍﺳﺘﻌﻴﺬﻭﺍ ﺑﺎﷲ ﻣﻦ ﺷﺮﺍﺭ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﻭ ﻛﻮﻧﻮﺍ ﻣﻦ ﺧﻴﺎﺭﻫﻦ ﰱ ﺣﺬﺭ

শয়তান ও মন্দ নারীদের খপ্পর থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় গ্রহণ কর এবং তাদের মধ্যকার ভালদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখ ।101

মানুষ যখন পাপ ও শয়তানের কু-মন্ত্রনার কারণে ঐরূপ নারীর খপ্পরে পড়ে যায় তখন তার মুক্তি পাওয়ার একটি মাত্র রাস্তা খোলা থাকে আর তা হচ্ছে আল্লাহর নিকট আশ্রয় নেয়া । বে-পর্দা বা সঠিকভাবে পর্দা না করা নারী যেহেতু শয়তানের কু-মন্ত্রণাভুক্ত তাই তাকে দেখা মাত্রই অবশ্যই আল্লাহর নিকট আশ্রয় নেয়া বাঞ্ছনীয় ।

বিষয়টি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে , যখন হযরত ইউসূফ (আ.) যুলেখার অপবিত্র আকাঙ্ক্ষার মুখোমুখি হলেন তখন বলেছিলেন :

) قَالَ رَ‌بِّ السِّجْنُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا يَدْعُونَنِي إِلَيْهِ وَإِلَّا تَصْرِ‌فْ عَنِّي كَيْدَهُنَّ أَصْبُ إِلَيْهِنَّ وَأَكُن مِّنَ الْجَاهِلِينَ(

হে আল্লাহ! আমার জন্য জেল খানার কষ্ট ও সমস্যা এই অপবিত্র কাজের থেকে অনেক উত্তম , যা এই নারিগণ আমার কাছে কামনা করে । হে আল্লাহ যদি তুমি তাদের ষড়যন্ত্র ও কু-মতলবকে তোমার দয়ায় আমার থেকে দূর না কর , তবে তাদের খপ্পরে পড়বো এবং অজ্ঞ ও পাপীদের দলভুক্ত হয়ে যাবো ।102

ফলাফল :

যেখানে আল্লাহ্ তা ’ য়ালা রাসূল (সা.)-কে বলেছেন : হে আমার রাসূল! বল দুষ্ট ও মন্দ স্বভাবের নারীর প্রতারণা ও ষড়যন্ত্র থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাই । এদিকে হযরত ইউসূফ (আ.) তাঁর মহান মর্যাদা সত্ত্বেও বলেন : হে আল্লাহ! আমি যুলেখার শয়তানী ও কু-মতলবের মুখোমুখি হওয়ার থেকে জেলখানাকে বেশী পছন্দ করি । উক্ত দুটি থেকে আমরা এটা বুঝতে পারি যে , এ সকল ঘটনাগুলোকে কোন তুচ্ছ ব্যাপার মনে করে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া যায় না । যদিও রাসূলে আকরাম (সা.) বিশেষ স্থান ও মর্যাদায় সমাসীন এবং পবিত্র তাই তিনি এ সকল বিষয় থেকে পরিপূর্ণভাবে পবিত্র ও মুক্ত । আর যেহেতু অন্যান্য নবী ও মহানবী (সা.)-এর উত্তরসূরী নিষ্পাপ ইমামগণ (আ.) সম্পূর্ণভাবে পবিত্র তাই তাদের সত্তাতেও কোন পাপ প্রবেশের সুযোগ নেই । কিন্তু এই ঘটনাগুলোর মাধ্যমে তারা চেয়েছেন আমাদেরকে শিক্ষা দিতে । যাতে করে আমরা যেন আমাদের নফসের কু- প্রবৃত্তির প্রতি কড়া দৃষ্টি রাখি এবং তা থেকে এক মুহূর্তের জন্যেও যেন দৃষ্টি সরিয়ে না নেই । এই ধরনের বিষয়গুলো মানুষকে ধ্বংস করে দেয় এবং তা দুনিয়া ও আখিরাতে তার জন্য অপমান-অপদস্থের কারণ হয়ে দাঁড়ায় । কেউ কেউ বলে থাকে যে , এই মহিলা আমার বোনের মত অথবা আমার মায়ের মত । আমি তার দিকে ভাইয়ের দৃষ্টিতে তাকাই এবং কোন উদ্দেশ্য আমার নেই । এই সকল উক্তিগুলো শয়তান আমাদেরকে শিখিয়ে থাকে । তবে কোন ব্যক্তি কোন না-মাহরাম নারীর সাথে কথা বলতে পারবে তবে তা বিশেষ প্রয়োজনে এবং তা সীমিত কয়েকটি শব্দের বেশী জায়েয নয় ।

রাসূল (সা.) বলেছেন :

যখন কোন নারী কোথাও বসে এবং পরে সেখান থেকে উঠে যায় , কোন পুরুষ যেন সেখানে ততক্ষণ না বসে যতক্ষণ না (ঐ স্থানের) গরমভাবটা কেটে যায় ।103

এই সকল নির্দেশাবলী সতর্কতামূলক যা শয়তানের পক্ষ থেকে যে কোন ধরনের কু-মন্ত্রণা ও অসৎ পথে পরিচালিত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে এবং মাকরুহ বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে ।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে ,ﻣﻦ ﺧﻴﺎﺭﻫﻦ ﺣﺬﺭ ﻛﻮﻧﻮﺍ বলতে কি বুঝানো হয়েছে ?

প্রকৃতিগতভাবে মানুষ এমন যে যদিও সে মুত্তাকি হয়ে থাকে তথাপিও এরূপ যে , না-মাহরাম মহিলার বিশেষ করে যুবতী মেয়ের সাথে কথা বলার সময় প্রভাবান্বিত হয়ে পড়ে । যদি মানুষ সতর্কতা অবলম্বন করে এবং বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিরেকে না-মাহরাম মহিলার সাথে কথা না বলে তবে তা হবে অতি উত্তম এবং পছন্দনীয় ব্যাপার । এই ব্যাপারে রাসূল (সা.) বলেছেন : ভাল মহিলাদের থেকেও দূরে থাকবে । যদিও আসা- যাওয়ার কারণে অপ্রয়োজনেও তাদের সাথে কথা বলা কোন দোষের কিছু নয় ।

সুতরাং নারীরা হচ্ছে দু ’ ভাগে বিভক্ত , অর্থাৎ ভাল ও মন্দ । মন্দদের থেকে অবশ্যই আল্লাহর কাছে আশ্রয় নিতে হবে । আর ভালরা যদিও সম্মানের দাবিদার এবং আল্লাহ তা ’ য়ালা তাদেরকে পছন্দ করেন তথাপিও প্রয়োজন ব্যতিরেকে তাদের সাথে কথা বলা উচিৎ নয় ।

5- বে-পর্দা ও খারাপ হিজাব (যে পর্দায় দেহ সঠিকভাবে আবৃত হয় না বা দেহের সৌন্দর্য্য ও গঠনশৈলী প্রকাশিত থাকে) পরিহিতা নারীরা হচ্ছে নিকৃষ্টতম ফিতনা সৃষ্টিকারী :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻣﺎ ﺗﺮﻛﺖ ﺑﻌﺪﻯ ﻓﺘﻨﺔ ﺍﺿﺮ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ

আমার ইন্তেকালের পরে পুরুষদের জন্য নারীদের থেকে ক্ষতিকারক ফিতনা সৃষ্টিকারী থাকবে না ।104

তিনি আরো বলেছেন : আমার উম্মত সকল! তোমরা ফিতনা দেখেছো এবং তার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছো । কিন্তু নারীদের মাধ্যমে তোমাদের উপর এর থেকেও আরো কঠিনতম ফিতনা আসতে পারে যার জন্য আমি শঙ্কিত । আর তা তখনই হবে যে , যখন নারীরা স্বর্ণের চুড়ি হাতে দিবে , দামী কাপড়ের পোশাক পরবে এবং সম্পদশালীদেরকে কষ্টে ফেলবে ও দরিদ্রদের কাছে তাই চাইবে যা তাদের নেই ।105

তিনি আরো বলেছেন :

ﻓﺎﻥ ﺍﻭﻝ ﻓﺘﻨﺔ ﺑنی ﺍﺳﺮﺍﺋﻴﻞ ﻛﺎﻥ ﰱ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ

প্রকৃতপক্ষে নারীদের খপ্পরে পড়ে ইয়াহুদীরা সর্ব প্রথম পথভ্রষ্ট হয়েছিল ।106

ইতিহাসের পরিক্রমায় অসংখ্য কারণে মানুষ পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং জালেম ও অত্যাচারী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে তবে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো হলো ক্ষমতার লোভ , অর্থের লোভ এবং যৌনলিপ্সা । এগুলোই মানুষকে বিশেষ করে যারা সমাজে প্রতাপ-প্রতিপত্তিশালী ছিল যেমন , অত্যাচারী রাজা-বাদশা ও জালেম শাসকগণ এবং অন্যান্যদের ধ্বংস করেছে ।

এমনকি যারা আগে ভাল লোক বলে চিহ্নিত ছিল , তারা পরবর্তীতে যখন অর্থ , ক্ষমতা ও কামলিপ্সার মুখোমুখি হয়েছে , তাকওয়া ও মানসিক শক্তির অভাবের কারণে তারাও অন্যায়-অত্যাচার , জুলুম ও পাপে নিমজ্জিত হয়েছে ।

ইসলামে সাজসজ্জার ব্যাপারে নারীদের প্রতি অনেক উপদেশই দেয়া হয়েছে । কেননা স্বভাবগত কারণেই নারী সমাজ সাজসজ্জা করতে বেশী পছন্দ করে । এটা এ কারণেই যে , তারা সাজসজ্জার মাধ্যমে তাদের স্বামীদেরকে নিজেদের প্রতি আকর্ষণ করে থাকে । তবে তা যেন কখনোই প্রকাশ্যে অন্যদের সামনে না হয় । তাহলে তা অন্যদের পথভ্রষ্টতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে ।

6- বে-পর্দা নারী ও সঠিক পর্দা না মানা নারীরা হচ্ছে জাহান্নামী :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻋﺎﻣﺔ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﻨﺎﺭ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ

জাহান্নামের অধিবাসীদের বেশীর ভাগই হচ্ছে নারী ।107

তিনি আরো বলেছেন :

ﺍﻥ ﺍﻗﻞ ﺳﺎﻛنی ﺍﳉﻨﺔ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ

বেহেশতবাসীদের মধ্যে কম সংখ্যক হচ্ছে নারী ।108

বেহেশত ও জাহান্নাম আমাদের আমলের সাথে সম্পর্কিত । প্রকৃতপক্ষে এই আমরাই হচ্ছি বেহেশতের বাগিচাকে সবুজ মনোরম অথবা জাহান্নামকে আরো উত্তপ্ত করি । আল্লাহ্ তা ’ য়ালা পবিত্র কোরআনে বেশীরভাগ স্থানে তাঁর বান্দাদেরকে তওবার মাধ্যমে তাঁর নিকটবর্তী হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন । যদি কেউ একটুখানি আল্লাহর দিকে অগ্রসর হয় তবে তিনি তাঁর সেই বান্দাকে দূরে সরিয়ে দেন না , বরং তাকে সাহায্য করে থাকেন । যে আল্লাহ! আমাদেরকে এত অধিক পরিমানে নে ’ য়ামত , বরকত ও ভালবাসা দান করেছেন , তিনি কিভাবে আবার আমাদেরকে পোড়ানোর জন্য জাহান্নাম তৈরী করতে পারেন । অতএব জাহান্নামের এই আগুন হচ্ছে আমাদের আমলসমূহের ফলাফল । তাই আল্লাহ পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন :

ﻭ ﻗﻮﺩﻫﺎ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻭ ﺍﳊﺠﺎﺭﺓ

জাহান্নামের জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর থেকে প্রজ্বলিত ।109

7- প্রকৃত পক্ষে বে-পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীরা হচ্ছেশয়তান :

মানুষের মধ্যে ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি ও তাদেরকে পথভ্রষ্ট করা ব্যতীত শয়তানের আর অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই । যে কেউ শয়তানের পথে পা বাড়ায় ও ফিতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে প্রকৃত পক্ষে সে শয়তানের পদাঙ্কানুসরণ করেছে । বে-পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীরাও অনুরূপভাবে নিজের মন্দ কর্মের মাধ্যমে শয়তানের উদ্দেশ্য হাসিলে সহায়তা করলো ।

8- বে-পর্দা নারী ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীরা শয়তানের প্রেরিত সৈনিক এবং তার গোপনীয়তার স্থান :

শয়তান নারীকে বলল : তুমি আমার সৈন্য বাহিনীর অর্ধেক হয়ে যাও । তুমি হচ্ছো এমন তীর যে , যখন তা ছুড়বো কোন ভুল হবে না । তুমি আমার গোপন আস্তানা এবং যা কিছু আমার গোপন বিষয় আছে আমি তোমাকে বলবো । তুমি আমার পক্ষ থেকে প্রেরিত এবং আমার বিভিন্ন প্রয়োজনের সাথী ।110

উক্ত বিষয়টি মন্দ স্বভাবের নারীর প্রতি ইঙ্গিত করে বে-হায়াপনা কারণে ফ্যাসাদ সৃষ্টি হয় ।

শয়তানের একটিই মাত্র উদ্দেশ্য , আর তা হচ্ছে মানুষকে পথভ্রষ্ট করা । বে-পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীর বে-হায়াপনার কারণে মানুষও পথভ্রষ্ট হয় ।

পবিত্র কোরআন বলছে :

) قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لَأُغْوِيَنَّهُمْ أَجْمَعِينَ ﴿٨٢﴾ إِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِينَ(

(যখন আল্লাহ তা ’ য়ালা শয়তানকে অবকাশ দিলেন তখন) সে বলল , হে আল্লাহ! তোমার মর্যাদার কসম যে , আমি তোমার সমস্ত সৃষ্টিকে পথভ্রষ্ট করবো ; তোমার খাঁটি বান্দাদের ব্যতীত (কেননা তাদেরকে তো তোমার জন্য খাঁটি করেছো) । 111

9- যদি খোদাভীতিশূন্য নারী না থাকতো তবে অনেক বেশী পরিমান পুরুষ বেহেশতে যেত :

রাসূল খোদা (সা.) বলেছেন :

ﻟﻮ ﻻ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﻟﺪﺧﻞ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﺍﳉﻨﺔ

যদি খারাপ নারী না থাকতো অনেক বেশী পরিমান পুরুষ বেহেশতে যেত ।112

10- বে-পর্দা নারী ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারী আল্লাহ তা য়ালা ও তাঁর বান্দাদের মধ্যকার সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটায় :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻟﻮ ﻻ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ ﻳﻌﺒﺪ ﺍﷲ ﺣﻖ ﻋﺒﺎﺩﺗﻪ

যদি (মন্দ)নারী না থাকতো তবে আল্লাহ তা ’ য়ালাকে যেরূপে উপাসনা করা উপযুক্ত ছিল সেরূপেই উপাসনা করা হতো ।113

আল্লাহ্ সুবহানাহু তা ’ য়ালার সাথে মানুষের সম্পর্ক যত গভীর হবে তাদের আধ্যাত্মিকতাও তত বেশী হবে । আর এর ফলশ্রুতিতে তারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন কিছুর সাথে অন্তরের সম্পর্ক করবে না । প্রকৃত পক্ষে মানুষ আল্লাহ তা ’ য়ালাকে যত বেশী চিনতে পারবে তাদের কাছে ক্ষমতা , মর্যাদা , অর্থ ও যৌন সম্পর্কিত বিষয়সমূহ তত বেশী তুচ্ছ হয়ে যাবে । আর যখন এই সব তাদের কাছে তুচ্ছ হয়ে যাবে তখন সেগুলো পাওয়ার জন্য নিজেকে পাপে লিপ্ত করে ধ্বংস করবে না । আর যারা নারীর কারণে অনাচারে লিপ্ত হয় তা এ কারণেই যে , তারা মানসিক দিক দিয়ে দুর্বল হওয়ায় আল্লাহ তা য়ালার থেকে সেগুলোকে বেশী প্রাধান্য দিয়ে থাকে । দুষ্ট ও নষ্ট স্বভাবের নারীরা এ ধরনের দুর্বলচেতা ব্যক্তিদেরকে শয়তানের পক্ষে নিয়ে আসে এবং তাদেরকে আধ্যাত্মিক ভাবে গড়ে ওঠার সুযোগ দেয় না । কেননা তাকওয়া সম্পন্ন মানুষ ঐ ধরনের নারীদের প্রতি আকৃষ্ট তো হয়ই না বরং তাদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে ।

11- বে-পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীদের দ্বীন ও ঈমান হচ্ছে দুর্বল :

হযরত আলী (আ.) বলেছেন :

ﻋﻠﻴﻜﻢ ﺑﺎﻟﺼﻔﻴﻖ ﻓﺎﻥ ﻣﻦ ﺭﻕ ﺛﻮﺑﻪ ﺩﻳﻨﻪ

তোমাদের জন্য উচিত হলো মোটা পোশাক পরা । যার পোশাক পাতলা তার দ্বীনও ঐ পোশাকের মত পাতলা ও দুর্বল ।114

পোশাক হচ্ছে মানুষের মানসিক অবস্থা , ঈমানের দৃঢ়তা ও ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক । যে নারী পাতলা পোশাক ও মোজা পরে বাইরে আসে তার কর্ম হলো অন্তসারশূন্য এবং আল্লাহ ও কিয়ামতের প্রতি তার বিশ্বাস যে দুর্বল তাই তার কর্মে প্রকাশ পায় । আর যে নারী পর্দা পরে বাইরে আসে তার অন্তর পবিত্র এবং আক্বীদা ও বিশ্বাসগতভাবে সে অত্যন্ত দৃঢ় । তার বাহ্যিক অবয়বে তাই প্রকাশ পায় ।

পবিত্র কোরআন বলছে ,

) قُلْ كُلٌّ يَعْمَلُ عَلَىٰ شَاكِلَتِهِ فَرَ‌بُّكُمْ أَعْلَمُ بِمَنْ هُوَ أَهْدَىٰ سَبِيلًا(

(হে রাসূল!) বলে দিন , প্রত্যেককে তার রীতি ও অভ্যন্তরীণ রূপ অনুযায়ী কাজ করে । সুতরাং তোমাদের পালনকর্তা , যাদের পথ ও পদ্ধতি অধিক উত্তম তাদের কে ঠিকই চেনেন ।115

পাতলা পোশাক পরা তখনই অপছন্দনীয় যখন তা সর্ব সাধারণের মধ্যে পরে বাইরে আসা হবে । তবে স্ত্রী তার স্বামীর জন্য অনেক পাতলা পোশাকও পরতে পারে । এ ক্ষেত্রে তা কোন ঈমানের দুর্বলতা হিসেবে গণ্য হবে না বরং তা তাকওয়ার নির্দশন হিসেবে পরিগণিত হবে । অবশ্য সন্তান ও অন্যান্য মাহরামদের (যাদের সাথে বিয়ে করা হারাম) সামনে এ ধরনের পোশাক পরে শরীর উম্মুক্ত না করাই শ্রেয় । কেননা এতে করে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনার উদ্ভব হতে পারে ।

12- বে-পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীরা প্রকৃত মুসলমান নয় :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻟﻴﺲ ﻣﻨﺎ ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻐﲑﻧﺎ

যে ব্যক্তি নিজেকে অমুসলমানদের মত করে রাখে , সে আমাদের মধ্যে নয় ।116

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻘﻮﻡ ﻓﻬﻮ ﻣﻨﻬﻢ

যে ব্যক্তি নিজেকে কোন দলের অনুরূপ করে , সে ঐ দলের অন্তর্ভূক্ত ।117

প্রকৃত মুসলমান হচ্ছে তারাই যারা তাদের নাম , পোশাক , চলা- ফেরা , খাওয়া-দাওয়া , গৃহ নির্মাণ কৌশল , ঘরের আসবাবপত্র , সামাজিকতাসহ সমস্ত কিছুই এক কথায় তাদের সংস্কৃতি ও আদব কায়দা সম্পূর্ণরূপে রাসূল (সা.) ও ইমামগণ (আ.)-এর কাছ থেকে গ্রহণ করে থাকে । কাফেরদের মত চলা-ফেরা , পোশাক পরা ও ইত্যাদির অথ হর্চ্ছে তাদের রসম-রেওয়াজকে স্বীকৃতি দেয়া এবং নিজেকে তাদের একজন হিসেবে পরিচয় দেয়া । আর তাদের অনুকরণ বা অনুসরণ করতে করতে এক সময় দেখা যাবে যে , আমাদের আক্বীদা-বিশ্বাসের উপর তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে । হয়তো এমনও হতে পারে যে , ঐ কারণে আমাদের অনেকে প্রকৃত ও সত্য পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বে ।

13- প্রসিদ্ধি লাভের উদ্দেশ্যে অপ্রচলিত নতুন কোন পোশাক পরা :

এই পোশাক এমনই পোশাক যা সমাজে তেমন প্রচলিত নয় । কেউ যখন তা পরে সকলেই তাকে লক্ষ্য করে । এ কারণেই আমাদের আলেম ও মার্জায়ে তাকলীদ এবং বুজুর্গ ব্যক্তিগণ বলেছেন যে , ঐরূপ পোশাক পরা হচ্ছে হারাম । আমাদের যুবকদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখা উচিৎ যে , তারা যেন উপযুক্ত পোশাক পরিধান করে এবং ঐ ডিজাইনের পোশাক যা এখন ফ্যাশন হয়েছে তাই পরতে হবে , এমনটা যেন না হয় । যেন না করে । কেননা কাফেরদের সদৃশ হওয়ার কারণে তাতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) কোন সম্মতি নেই । আর প্রকৃত পক্ষে এ ধরনের কাজ ইসলামের শত্রুদেরকে সন্তুষ্ট ও খুশী করে থাকে ।

ফ্যাশন ও আধুনিকতার নামে অপ্রচলিত পোশাক পরার কারণে মানুষ আল্লাহ্ তা ’ য়ালার কৃপা পাওয়ার উপযুক্ততা হারায় ।

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﻣﻦ ﻟﺒﺲ ﻣﺸﻬﻮﺭﺍ ﻣﻦ ﺍﻟﺜﻴﺎﺏ ﺃﻋﺮﺽ ﺍﷲ ﻋﻨﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ

যে ব্যক্তি প্রসিদ্ধি লাভের উদ্দেশ্যে অপ্রচলিত পোশাক পরে , আল্লাহ তা য়ালা কিয়ামতের দিনে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবেন ।

14- যে নারীরা নিজেদেরকে পুরুষের অনুরূপ করে রাখে, তারা আখিরাতে মুক্তি পাবে না :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﺛﻼﺛﺔ ﻻﻳﺪﺧﻠﻮﻥ ﺍﳉﻨﺔﺍﺍﺑﺪﹰ ﺍﻟﺪﻳﻮﺙ ﻭ ﺍﻟﺮﺟﻠﺔ ﻣﻦ ﺍ ﻟﻨﺴﺎﺀ ﻭ ﻣﺪﻣﻦ ﺍﳋﻤﺮ

তিনটি দল কখনই বেহেশতে প্রবেশ করবে না :

1- দাইয়্যুছ , অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার নিজের স্ত্রী , কন্যার ব্যাপারে কোন খবর রাখে না অর্থাৎ তাদের পর্দার ব্যাপারে উদাসীন ।

2- যে নারী পুরুষের অনুরূপ পোশাক পরে এবং তার চলা- ফেরাও ঠিক পুরুষের মতই ।

3- যে ব্যক্তি মদ পান করে ।118

নারী ও পুরুষের মধ্যে বিভিন্ন দিক থেকে পার্থক্য রয়েছে (আগেই এ ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে) । আর এ কারণেই তাদের চলা-ফেরা ও পোশাকের মধ্যেও পার্থক্য বিদ্যমান । সুতরাং অবশ্যই পুরুষ যেন পোশাক , চলা-ফেরা ও ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিজেকে নারীর অনুরূপ না করে , তদ্রূপ নারীও যেন নিজেকে পুরুষের অনুরূপ না করে বরং তারা যেন তাদের স্বভাব ও প্রকৃতিগত বিষয়ের দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখে ।

রাসূল (সা.) বলেছেন : আল্লাহ্ তা ’ য়ালা সেই সব নারীর উপর লা ’ নত বর্ষণ করুন যারা নিজেদেরকে পুরুষের অনুরূপ করে রাখে এবং তিনি ঐ সব পুরুষের উপরও লা ’ নত বর্ষণ করুন যারা নিজেদেরকে নারীর অনুরূপ করে রাখে ।119

এই বিষয়টির প্রতি একজন যুবক যেন দৃষ্টি রাখে । কেননা একজন যুবকের অবশ্যই উচিৎ যে , সে তার পোশাকের ব্যাপারে লক্ষ্য রাখবে ।

যেভাবে তাদের সম্মানিত ব্যক্তিরা উপযুক্ত পোশাক পরিধান করেছেন ঠিক সেভাবে যুবকরাও উপযুক্ত পোশাক পরিধান করবে । অন্যদিকে বয়োজ্যোষ্ঠরা অবশ্যই পোশাক পরিধানের সময় বিশেষ দৃষ্টি রাখবেন । তারা অবশ্যই এমন পোশাক পরবেন না যা তাদের শানে বেমানান । এটা অত্যন্ত দৃষ্টি কটু যে , একজন বয়স্ক ব্যক্তি এক যুবকের মত পোশাক পরবেন ।

রাসূল (সা.) বলেছেন :

خیر ﺷﺒﺎﺑﻜﻢ ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻜﻬﻮﻟﻜﻢ ﻭ ﺷﺮ ﻛﻬﻮﻟﻜﻢ ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﺸﺒﺎﺑﻜﻢ

উত্তম যুবক হচ্ছে তারাই যারা নিজেদেরকে (পোশাক পরা , চাল-চলন) বয়স্কদের সদৃশ করে এবং নিকৃষ্টতম বৃদ্ধ তারাই যারা নিজেদেরকে যুবকদের সদৃশ করে ।120

অবশ্যই আমাদের এই হাদীসের দিকে লক্ষ্য করা উচিৎ যে , এই হাদীসে অনুসরণের ক্ষেত্রে কোন বিষয়কে নির্দিষ্ট করে বলা হয় নি । সে কারণে যুবকরা বড়দের কাছ থেকে অনেক বিষয় যেমন নৈতিকতা , ইবাদত , জ্ঞানগত বিষয় ছাড়াও অন্যান্য শিক্ষা নিতে পারে । এমনকি পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে , রং পছন্দের ক্ষেত্রে তাদের মতামত গ্রহণ করতে পারে । সাথে সাথে যে সকল পোশাক পরলে অন্যরা দেখা-দেখি করে এমন ধরনের পোশাক পরা থেকে দূরে থাকবে।

15 - বে - পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীরা হচ্ছে মুনাফিকদের সারিতে :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

خیر ﻧﺴﺎﺋﻜﻢ ﺍﻟﻮﻟﻮﺩ ﺍﻟﻮﺩﻭﺩ ﺍﳌﻮﺳﻴﺔ ﺍﳌﻮﺍﺗﻴﺔ ﺍﺫﺍ ﺍﺗﻘﲔ ﺍﷲ ﻭ ﺷﺮ ﻧﺴﺎﺋﻜﻢ ﺍﳌﺘﱪﺟﺎﺕ ﺍﳌﺘﺨﻴﻼﺕ ﻭﻫﻦ ﺍﳌﻨﺎﻓﻘﺎﺕ ﻻﻳﺪﺧﻞ ﺍﳉﻨﺔ ﻣﻨﻬﻦ ﺍﻻ ﻣﺜﻞ ﺍﻟﻐﺮﺍﺏ ﺍﻻﻋﺼﻢ

তোমাদের মধ্যে উত্তম নারী হচ্ছে তারাই যারা সন্তান জন্ম দানের ক্ষমতা রাখে , স্বামীর প্রতি আন্তরিক হয় , স্বামীর সুখ-দুঃখের অংশীদার হয় , স্বামীকে মান্য করে , এরাই হচ্ছে উত্তম নারীদের অন্তর্ভুক্ত । তবে শর্ত হলো অবশ্যই তাদের তাকওয়া থাকতে হবে । আর নিকৃষ্টতম নারী হচ্ছে তারাই যারা স্বামী ব্যতীত অন্য কারো জন্যে সাজসজ্জা করে থাকে এবং স্বামীর উপর খবরদারী করে ও নিজের ইচ্ছা তার উপর চাপিয়ে দেয় । এরপর (সা.) রাসূল আরো বলেন : এই দ্বিতীয় প্রকৃতির নারীরাই হচ্ছে মুনাফিক । এমনকি গলায় সাদা রেখাধারী কাকের সমপরিমানেও বেহেশতে যাবে না (অর্থাৎ তাদের স্বল্পসংখ্যকই বেহেশতে যাবে) ।

তাকওয়া সম্পন্ন , দ্বীনদার ও উপযুক্ত নারী তারাই যারা স্বামীদের জন্য সাজসজ্জা করে এবং স্বামীর খেদমত করে ও তার উপর কথা বলে না । আর না-মাহরাম ব্যক্তির সামনে নিজেকে ঢেকে রাখে এবং আড়ালে থাকে । সাথে সাথে সব ধরনের অঙ্গভঙ্গী করা ও উত্তেজক পোশাক পরা থেকে বিরত থাকে ।

আর যে সকল নারী স্বামীর জন্য সাজসজ্জা করে না , অহংকারী , স্বার্থপর এবং না-মাহরামদের জন্য সাজসজ্জা করে সাথে সাথে বিনয়ী ভাব প্রকাশ করে তারা হচ্ছে মুনাফিকদের মত বহুরূপী মানুষ । কেননা বাহ্যিকভাবে সে নিজেকে বন্ধু এবং ভিতরে ভিতরে শত্রুতা পোষণ করে । এই ধরনের নারীরা খুব কমই বেহেশতে প্রবেশ করবে । কেননা বেহেশত তো তাকওয়া ও উত্তম আমলের ফলশ্রুতিতে হাতে আসে । তারা এ ধরনের আমল দ্বারা নিজেদের জন্য জাহান্নামের অগ্নি শিখাকে আরো উত্তপ্ত করে থাকে ।

16 - খোদাভীতিশূন্য নারী শয়তান রূপে প্রকাশিত হয় :

রাসূল (সা.) বলেছেন :

ﺍﻥ ﺍﳌﺮﺃﺓ ﺗﻘﺒﻞ ﻗﻰ ﺻﻮﺭﺓ ﺷﻴﻄﺎﻥ ﻭ ﺗﺪﺑﺮ ﰱ ﺻﻮﺭﺓ ﺷﻴﻄﺎﻥ ﻓﺎﺫﺍ ﺭﺃﻯ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﺇﻣﺮﺃﺓ ﻓﺎﻋﺠﺒﺘﻪ ﻓﻠﻴﺄﺕ ﺃﻫﻠﻪ ﺍﻥ ﺫﻟﻚ ﻳﺮﺩ ﻣﺎ ﰱ ﻧﻔﺴﻪ

নারী শয়তান রূপে আসবে আবার শয়তান রূপে চলে যাবে । যখন তোমাদের কেউ কোন নারীকে দেখে আকর্ষিত হবে তখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সংস্পর্শে যাবে , কেননা এরূপে যা কিছু তোমাদের অন্তরে আছে তা ধ্বংস হয়ে যাবে ।121

17- বে-পর্দা ও সঠিকভাবে পর্দা না করা নারীর লজ্জা নেই :

একজন উত্তম নারীর গর্বের বিষয় হচ্ছে তার লজ্জা যা তার তাকওয়া ও পরহেযগারিতার পরিচায়ক । অন্য দিকে যে নারী বেপরোয়া ভাবে নিজের শরীরকে হাজার হাজার যুবক যারা না-মাহরাম তাদের সামনে উম্মুক্ত করে এবং বেহায়াভাবে চলাফেরা করে শয়তানকে খুশি করে থাকে , এর মাধ্যমে তারা তাদের লজ্জাহীনতারই পরিচয় দিয়ে থাকে ।

হযরত আলী (আ.) বলেছেন :

ﺍﳊﻴﺎﺀ ﻳﺼﺪ ﻋﻦ ﺍﻟﻔﻌﻞ ﺍﻟﻘﺒﻴﺢ

লজ্জা (মানুষকে) নোংরা কাজ করা থেকে বিরত রাখে ।122

তিনি অন্যত্র বলেছেন :

ﺳﺒﺐ ﺍﻟﻌﻔﺔ ﺍﳊﻴﺎﺀ

পবিত্র থাকার (সতীত্বের) কারণ হচ্ছে লজ্জা ।123