ভূমিকা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
মহান আল্লাহর প্রতি লাখ লাখ শুকরিয়া যে , তিনি আমাকে অত্র গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি পরিমার্জিতভাবে প্রস্তুত করার তাওফীক্ব দিয়েছেন।
মূল পাণ্ডুলিপিটি প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েক বছর আগে প্রস্তুত করা হয় , কিন্তু সময়স্বল্পতার কারণে পরিমার্জিতভাবে প্রস্তুতকরণে বেশ বিলম্ব হয়।
এ গ্রন্থের প্রথম দিককার কয়েকটি প্রবন্ধ খৃস্টীয় বিংশ শতাব্দীর নব্বই-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকায় পর্যায়ক্রমে প্রকাশিত হয়েছিলো এবং এগুলোর মধ্য থেকে কয়েকটি প্রবন্ধ পরিমার্জিতভাবে সাপ্তাহিক রোববার-এ পুনঃপ্রকাশিত হয়। এছাড়া প্রথম দিককারই কোনো কোনো প্রবন্ধ দৈনিক আল-মুজাদ্দেদ-এ ও দৈনিক দিনকাল-এ প্রকাশিত হয়েছিলো। (এগুলোর প্রকাশে যারা ভূমিকা পালন করেছিলেন আল্লাহ্ তা‘
আলা তাঁদেরকে শুভ প্রতিদান প্রদান করুন।) তবে প্রথম দিককার কোনো কোনো প্রবন্ধ এবং শেষের দিককার প্রবন্ধগুলো (দু’
টি পরিশিষ্ট বাদে - যা কম্পিউটারে কম্পোজ করা হয় ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়) হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি আকারেই ছিলো ; কোথাও প্রকাশিত হয় নি। প্রবন্ধগুলোর কম্পিউটার কম্পোজ আমাকে নিজেকেই করতে হয়েছে এবং তা করার সময় প্রয়োজনীয় বিবেচনায় অধিকতর পরিমার্জনের চেষ্টা করেছি।
অত্র গ্রন্থে বিচারবুদ্ধির (আক্বল্) আলোকে জীবন ও জগতের পিছনে নিহিত মহাসত্য সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর জবাব উদ্ঘাটন করা হয়েছে। আশা করছি যে , এ সব প্রশ্নের জবাব যথাযথভাবেই উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়েছে। বিচারবুদ্ধি নিরপেক্ষভাবে অনুসন্ধান করে এ সব প্রশ্নের যে জবাব উদ্ঘাটন করে তা এবং জীবন ও জগতের পিছনে নিহিত মহাসত্য সম্বন্ধে ইসলাম-প্রদত্ত জবাব অভিন্ন লক্ষ্য করা যায়।
অত্র লেখক একজন জন্মসূত্রে মুসলমান এবং আজীবন ইসলামের খেদমতে আত্মনিয়োজিত বিধায় কেউ হয়তো মনে করতে পারেন যে , ইসলামের মৌলিক উপস্থাপনাসমূহকে সত্য প্রমাণ করা ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এ গ্রন্থ রচনা করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদেরকে এ নিশ্চয়তা দিতে পারি যে , জন্মসূত্রে এ সত্যের সাথে পরিচিত হলেও এখানে সত্যকে সম্পূর্ণরূপে নিরপেক্ষভাবে ও কেবল বিচারবুদ্ধির আলোকে উদ্ঘাটন করেছি। এ কারণেই পাঠক-পাঠিকাগণ লক্ষ্য করবেন যে , অত্র গ্রন্থের মৌলিক প্রতিপাদ্য বিষয়সমূহের কতক শাখা-প্রশাখাগত ব্যাপারে সমাজে ইসলামের নামে প্রচলিত ধ্যান-ধারণা থেকে স্বতন্ত্র উপসংহারে উপনীত হয়েছি ; নিরপেক্ষভাবে বিচারবুদ্ধির রায় অনুসরণ করার ফলেই এমনটি হয়েছে। অর্থাৎ অত্র গ্রন্থকারের মতে , যেহেতু ইসলাম তার মৌলিক উপস্থাপনাসমূহকে বিচারবুদ্ধির আলোকে উপস্থাপন করেছে , সেহেতু ইসলামের নামে প্রচলিত ধারণাসমূহ নয় , বরং বিচারবুদ্ধি যে উপসংহারে উপনীত হয়েছে তা-ই ঐ সব বিষয়ে প্রকৃত ইসলামী মত।
বস্তুতঃ অত্র গ্রন্থ রচনার ভিত্তিভূমি তৈরীর পিছনে গ্রন্থকারের আজীবন অধ্যয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু এ কাজ করতে গিয়ে কেবল ইসলামের ধ্যান-ধারণাকে নয় , বরং এ বিষয়ে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম ও দর্শনের ধ্যান-ধারণা এবং নাস্তিক্যবাদী তত্ত্বসমূহকেও পর্যালোচনামূলক দৃষ্টিকোণ থেকে অধ্যয়ন করেছি ও বিচারবুদ্ধির আলোকে বিশ্লেষণ করে উপসংহারে উপনীত হয়েছি। তারপরও যেহেতু বিচারবুদ্ধি ভুল করতে বা প্রভাবিত হতে পারে , অন্যদিকে বিচারবুদ্ধির ভুলভ্রান্তি নির্দেশ ও সংশোধনের কাজও স্বয়ং বিচারবুদ্ধির পক্ষেই সম্ভব , সেহেতু মুক্ত ও সুস্থ বিচারবুদ্ধির অধিকারী পাঠকগণ , বিশেষ করে অমুসলিম পাঠকগণ এ গ্রন্থে উপস্থাপিত যুক্তিসমূহকে বিচারবুদ্ধির আলোকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কোনো দুর্বলতা পেলে তা নির্দেশ করতে পারেন এবং সে ক্ষেত্রে তাঁদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে দেখবো ; গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হলে অবশ্যই গ্রহণ করবো এবং গ্রহণযোগ্য বিবেচিত না হলে বিচারবুদ্ধির আলোকে তা গ্রহণ না করার কারণ পেশ করবো।
অনেক মুসলিম পাঠক-পাঠিকার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে , ইসলামের সত্য দ্বীন হওয়ার ব্যাপারে যেখানে সন্দেহের অবকাশ নেই সেখানে ইসলামের মৌলিক উপস্থাপনাসমূহকে বিচারবুদ্ধি দ্বারা নতুন করে উদ্ঘাটনের কী প্রয়োজন রয়েছে ? এ প্রশ্নের জবাবে বলবো , দু’
টি কারণে এর প্রয়োজন রয়েছে। প্রথমতঃ এ দেশে ও বিশ্বে মুসলমানের সংখ্যা যতো বেশীই হোক না কেন , ইসলাম কোনো সুনির্দিষ্ট সংখ্যক মুসলমান পেয়ে সন্তুষ্ট নয় , বরং বিশ্বের বুকে একজন অমুসলিমও বর্তমান থাকতে তার নিকট সত্যকে তুলে ধরা মুসলমানদের ইসলামী ও ঈমানী দায়িত্ব। কিন্তু কোনো অমুসলিমের কাছে সত্যকে তুলে ধরতে হলে তা‘
কোরআনে বলা হয়েছে’
যুক্তিতে তুলে ধরলে তা তার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না , কারণ , সে তো কোরআনকে ঐশী গ্রন্থ জ্ঞান করে না। তাই তার নিকট গ্রহণযোগ্য সর্বজনীন মানদণ্ডে অর্থাৎ বিচারবুদ্ধির আলোকে তার সামনে সত্যকে পেশ করতে হবে। আর এটা করতে হলে স্বয়ং মুসলমানকে বিষয়টি বিচারবুদ্ধির আলোকে জানতে হবে। দ্বিতীয়তঃ অন্ধ বিশ্বাস সর্বাবস্থায়ই ঝুঁকিপূর্ণ ও ঠুনকো , এমনকি ঘটনাক্রমে তা সত্য হলেও (যদিও অনেক অন্ধ বিশ্বাসই ভ্রান্ত হয়ে থাকে)। কারণ , বাস্তবতার আঘাতে অথবা কোনো সঠিক বা বিভ্রান্তিকর ভ্রান্ত যুক্তির আঘাতে যে কোনো সময় এ বিশ্বাস ভেঙ্গে যেতে পারে। ইতিহাসে ও যে কারো অভিজ্ঞতায় এর ভুরি ভুরি দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে। অতএব , সত্যকে বিচারবুদ্ধির সর্বজনীন মানদণ্ডে জেনে নিলে অতঃপর কোনো বাস্তবতা বা কোনো বিভ্রান্তিকর অপযুক্তিই ব্যক্তির মন-মগয থেকে সে সত্যকে মুছে দিতে ও তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারবে না।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন মনে করি যে , জীবন ও জগতের অন্তরালে নিহিত মহাসত্য সম্পর্কে বিচারবুদ্ধির রায় উদ্ঘাটন করার মানে এ নয় যে , এ বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। কারণ , বিচারবুদ্ধি যা উদ্ঘাটন করে তা হচ্ছে সত্যসমূহের মৌলিকতম ও সংক্ষিপ্ততম রূপ। এ ব্যাপারে জানার এখানেই শেষ নয়। আর যেহেতু বিচারবুদ্ধি কোরআন মজীদকে অকাট্য সত্য এবং পূর্ণাঙ্গ , সর্বশেষ ও একমাত্র সংরক্ষিত ঐশী গ্রন্থ রূপে উদ্ঘাটন করে , অতঃপর তাকে এ সব সত্য সম্পর্কে কোরআন মজীদ থেকে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে কোরআন মজীদের সঠিক তাৎপর্য গ্রহণেও বিচারবুদ্ধি সহায়তা করবে। কারণ , কোরআন মজীদের সঠিক তাৎপর্য গ্রহণে এর পাঠক-পাঠিকাদের মধ্যে যে সব মতপার্থক্যের উদ্ভব ঘটে তার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে প্রথমতঃ একে ঐশী গ্রন্থ হিসেবে বিচারবুদ্ধির রায়ের ভিত্তিতে গ্রহণ না করে অন্ধ বিশ্বাসের ভিত্তিতে গ্রহণ করা , দ্বিতীয়তঃ এর তাৎপর্য গ্রহণে বিচারবুদ্ধিকে অন্যতম সহায়ক শক্তি হিসেবে গ্রহণ না করা ও অন্যান্য পূর্বপ্রস্তুতির অভাব।
কোরআন মজীদের তাৎপর্য গ্রহণের লক্ষ্যে বিভিন্ন মনীষী যে সব মানদণ্ড উদ্ঘাটন করেছেন তার মধ্যে যেমন পারস্পরিক অভিন্নতা রয়েছে , তেমনি বিভিন্নতাও রয়েছে এবং ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্যের জন্য মতের এ বিভিন্নতা সবচেয়ে বড় কারণ। এমতাবস্থায় সকলের জন্যে সমভাবে গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড বিচারবুদ্ধিকে অন্যতম মানদণ্ড হিসেবে গ্রহণ করলে এবং তার আলোকে তাঁদের মতপার্থক্যের মূলনীতিসমূহকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্রহণ-বর্জন করলে নিঃসন্দেহে তাঁদের মধ্যে মতপার্থক্য হ্রাস পেতে বাধ্য।
বস্তুতঃ ইসলামের মৌলিক উপস্থাপনাসমূহকে বিচারবুদ্ধির আলোকে গ্রহণ না করে অন্ধভাবে গ্রহণ করলে শাখা-প্রশাখাগত দিকসমূহে কতক ভিত্তিহীন ভ্রান্ত বিশ্বাসকে ইসলামী ধারণা নামে গ্রহণ করা হতে পারে এবং এর ফলেই অনেক বিষয়ে মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে পরস্পর বিরোধী বিভিন্ন ধারণা ও বিতর্ক বিস্তারলাভ করেছে। কিন্তু ইসলামের মৌলিক উপস্থাপনাসমূহকে প্রথমে বিচারবুদ্ধির আলোকে গ্রহণ করলে এ জাতীয় বিতর্কের ও ধারণার ক্ষেত্রে পারস্পরিক বৈপরীত্যের অবসান ঘটতে বাধ্য। অতঃপর কোরআন মজীদ অধ্যয়ন করলে তার অনেক আয়াত থেকে এমন তাৎপর্য ধরা পড়বে যা অন্ধ বিশ্বাস জাত ধারণা থেকে ভিন্ন এবং তা বহু বিতর্ক ও বিভ্রান্তির অবসান ঘটাতে সক্ষম।
তেমনি বিচারবুদ্ধি হাদীছকে যাচাই-বাছাই করে গ্রহণ-বর্জনেও সাহায্য করে। এখানে উদাহরণস্বরূপ উল্লেখ করা যায় যে , যেহেতু বিচারবুদ্ধি কোরআন মজীদের আয়াতের হুকুম বা পাঠ মানসূখ্ (রহিত) হওয়ার ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে , সেহেতু এর ভিত্তিতে কোরআন মজীদের বহু আয়াতের তাৎপর্য মানসূখে বিশ্বাসীদের গৃহীত তাৎপর্য থেকে ভিন্নতর রূপে ধরা পড়বে। দৃশ্যতঃ কোরআন মজীদের যে সব আয়াতে কোনো কোনো নবীর (আ.) ওপর গুনাহ্ আরোপিত হয়েছে সে সব আয়াতের ক্ষেত্রেও তা-ই। তেমনি খেজুর গাছে ফুল পিটিয়ে দেয়া সংক্রান্ত যে বিখ্যাত হাদীছ বর্ণনা করা হয় - যার ভিত্তিতে বলা হয় যে , হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ) অনেক পার্থিব ব্যাপারে তাঁর সঠিক জ্ঞান না থাকার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু বিচারবুদ্ধির রায় হচ্ছে , যেহেতু নবী ভুলের উর্ধে , সেহেতু তিনি কোনো বিষয়ে না জানলে সে বিষয়ে কোনো মত প্রকাশ থেকে বিরত থাকবেন ; না জানা সত্ত্বেও মত প্রকাশ করবেন না। কারণ , না জানা বিষয়ে মত প্রকাশ করা সাধারণ মানুষের জন্যও অনিচ্ছাকৃত ভুলের চেয়েও গুরুতর ও গর্হিত কাজ , সুতরাং তা নবীর মর্যাদার গুরুতর বরখেলাফ। অতএব , বিচারবুদ্ধি উক্ত হাদীছকে মিথ্যা হিসেবে চিহ্নিত ও প্রত্যাখ্যান করে।
বিচারবুদ্ধির দলীল সম্পর্কে উল্লেখ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে এই যে , এ দলীল যদি ব্যক্তিবিশেষের পক্ষ থেকেও উপস্থাপন করা হয় তথাপি তা ব্যক্তিবিশেষের বক্তব্য হিসেবে গণ্য করা উচিত হবে না। কারণ , বিচারবুদ্ধির দলীল হচ্ছে সর্বজনীন দলীল। এমতাবস্থায় পাঠক-পাঠিকাগণ যখন অত্র গ্রন্থে উপস্থাপিত বক্তব্যকে সত্যিকারের সুস্থ বিচারবুদ্ধির রায় হিসেবে দেখতে পাবেন এবং অন্যত্র তা ব্যবহার করবেন তখন তাকে অত্র লেখকের উপস্থাপিত যুক্তি হিসেবে পেশ করা বা উদ্ধৃত করা উচিত হবে না , বরং তাকে সর্বজনীন বিচারবুদ্ধির রায় হিসেবে পেশ করাই উচিত হবে। কারণ , বিচারবুদ্ধির দলীল ব্যক্তিবিশেষ উদ্ঘাটন করলেও তা ব্যক্তিবিশেষের সম্পদ নয় , বরং সকলের সম্পদ ; ব্যক্তিবিশেষ তা উদ্ঘাটন করেছে মাত্র। একে ব্যক্তিবিশেষের বক্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করা হলে তাতে বরং এ দলীলের গুরুত্ব হ্রাস পাবে। বলা বাহুল্য যে , এই একই কারণে অত্র গ্রন্থে বিচারবুদ্ধির যে সব দলীল পেশ করা হয়েছে তার মধ্য থেকে অনেক দলীলই অনেক মনীষী লেখকের গ্রন্থ অধ্যয়ন থেকে পাওয়া গেলেও তা তাঁদের যুক্তি হিসেবে পেশ করা হয় নি , বরং সর্বজনীন বিচারবুদ্ধির রায় হিসেবে পেশ করা হয়েছে।
অত্র গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত প্রথম প্রবন্ধটি (বিচারবুদ্ধি ও ইসলাম) সম্পর্কে কৈফিয়ৎ দেয়া প্রয়োজন মনে করছি যে , বিচারবুদ্ধির দলীল ভিত্তিক এ গ্রন্থের শুরুতে কোরআন মজীদের দলীল ভিত্তিক উক্ত প্রবন্ধটি অন্তর্ভুক্তকরণের কারণ , মূল প্রবন্ধে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে , মুসলমানদের মধ্যে বিচারবুদ্ধির বিরোধিতার যে একটি প্রবণতা গড়ে উঠেছে সে ভ্রান্তি থেকে মুক্ত করে তাদেরকে বিচারবুদ্ধির মহাসড়কে উঠে আসতে সহায়তা করা। তাই প্রকৃত পক্ষে উক্ত প্রবন্ধটি অত্র ভূমিকারই একটি সম্প্রসারিত অংশ মাত্র। মূল গ্রন্থ শুরু হয়েছে‘
জীবন জিজ্ঞাসার জবাব সন্ধানে জ্ঞানতত্ত্বের পথনির্দেশ’
প্রবন্ধ থেকে।
পরিশিষ্টের প্রবন্ধ দু’
টি পত্রিকায় প্রকাশিত বিচ্ছিন্ন প্রবন্ধ , কিন্তু বিষয়বস্তু গ্রন্থের বিষয়বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট বিধায় গ্রন্থের ধারাবাহিকতায় ঊভয় প্রবন্ধের কতক বক্তব্য অভিন্ন বা পুনরাবৃত্তিমূলক। এতদ্সত্ত্বেও কিছু অতিরিক্ত বক্তব্য থাকায় এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা বিধায় স্বতন্ত্রভাবে তা গ্রন্থশেষে স্থান দেয়া হলো।
সব শেষে , অত্র গ্রন্থ পাঠক-পাঠিকাদের সামনে জীবন ও জগতের অন্তরালে নিহিত মহাসত্যের দরযা উন্মুক্ত করে দিতে সক্ষম হলেই আমার শ্রমকে সার্থক গণ্য করবো। আল্লাহ্ তা‘
আলা অত্র গ্রন্থকে এর লেখক এবং এর প্রচার-প্রসারের সাথে জড়িত সকলের জন্য অনন্ত জীবনের পাথেয় করে দিন। আমীন ।
বিনীত
নূর হোসেন মজিদী
3রা ছ্বাফার্ 1435
23শে অগ্রহায়ণ 1420
7ই ডিসেম্বর 2013।