নবী চেনার ক্ষেত্রে স্থান -
কালের ব্যবধানগত সমস্যা
কোনো নবীর সাথে অভিন্ন স্থান-কালে অবস্থানকারী ব্যক্তির পক্ষে নবীকে চেনা খুবই সহজ। নবীকে চেনার যে সব উপায় রয়েছে তার সবগুলো বা যে কোনো একটির মাধ্যমেই সে নবীকে চিনতে পারে। যিনি অকাট্যভাবেই নবীরূপে প্রমাণিত তিনি যখন কাউকে নবীরূপে পরিচয় করিয়ে দেন , তখন তিনি তাঁর অনুসারীদের মধ্যকার যে ব্যক্তিদের সামনে নতুন নবীকে পরিচয় করিয়ে দিলেন তাদের মনে নতুন নবী সম্পর্কে বিন্দুমাত্র সংশয় থাকতে পারে না। কারণ , এরূপ ক্ষেত্রে সংশয় মানে পূর্বতন নবী সম্পর্কেই সংশয় পোষণ করা।
কোনো নবী যদি ভবিষ্যতে আসবেন এমন কোনো নবী সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেন এবং ভাবী নবীর নাম , পরিচয় ও তাঁকে চেনার অন্যান্য নিদর্শন বর্ণনা করেন , সে ক্ষেত্রে যাদের সামনে এ ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে বা অকাট্যভাবে পৌঁছেছে , তাদের জন্য নতুন নবীর সাক্ষাৎ পেলে তাঁকে চিনতে পারা খুবই সহজ। এতদসহ নবীর জীবনেতিহাস ও মু‘
জিযাহ্ তাঁর পরিচিতিকে আরো শক্তিশালী করে। এমনকি যার নিকট নতুন নবীর আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী মওজূদ ছিলো না তার জন্যেও নবীর জীবন ও মু‘
জিযাহ্ প্রত্যক্ষ করার কারণে নবীকে নবী হিসেবে চিনতে পারা খুবই সহজ হয়ে যায়।
কিন্তু নবীর সাথে যে ব্যক্তির স্থানগত ও কালগত ব্যবধান রয়েছে তার পক্ষে নবীকে চিনতে পারা ততো সহজ নয়। আর এ ব্যবধান যতো বেশী হবে তার মনে নবীর নবী হওয়ার ব্যাপারে প্রত্যয় সৃষ্টি ততোই কঠিন হবে। কিন্তু যেহেতু নবী বা সৃষ্টিকর্তার পথনির্দেশলাভকারী ব্যক্তির আগমন বিচারবুদ্ধির অপরিহার্য দাবী , সেহেতু তাকে অবশ্যই নবীর সন্ধান করতে হবে এবং নবুওয়াতের দাবীদারদের সম্পর্কে প্রাপ্ত সকল তথ্য পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।
পূর্ববর্তী নবীদের অস্তিত্ব ও নবুওয়াত অন্ধ বিশ্বাস ভিত্তিক
বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা অতীতে বিভিন্ন নবীর আগমনের কথা বলে থাকে এবং তাদের ধর্মগ্রন্থসমূহেও তাঁদের নাম উল্লিখিত রয়েছে। ঐসব ধর্ম ও ধর্মগ্রন্থের অনুসারীরা অন্ধভাবে ঐ সব গ্রন্থ ও তাতে নবী হিসেবে উল্লিখিত ব্যক্তিদের ওপর বিশ্বাস পোষণ করে থাকে। কিন্তু সুস্থ ও মুক্ত বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির পক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করা ব্যতীতই কোনো গ্রন্থের বা নবী বলে অভিহিত ব্যক্তিদের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস পোষণ করা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে তাকে অবশ্যই সত্যাসত্য অনুসন্ধান করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তার মনে বেশ কতগুলো প্রশ্ন জাগ্রত হয়। এগুলো হচ্ছে:
প্রথমতঃ
যে ব্যক্তিকে নবী বলে দাবী করা হচ্ছে , আদৌ এরূপ কোনো ব্যক্তির অস্তিত্ব কখনো ছিলো কি ? নাকি ধর্মনেতা বা ধর্মযাজক সাজা ভণ্ড-প্রতারক ব্যক্তিরা নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এরূপ কল্পিত ব্যক্তিত্ব তৈরী করেছে ?
দ্বিতীয়তঃ
কথিত ব্যক্তি যদি ঐতিহাসিক হয়ে থাকে তো সত্যিই নবী ছিলো কি ? নাকি ভণ্ড নবী ছিলো এবং তার স্বার্থান্বেষী অনুসারীরা তাকে নবী বলে প্রচার করেছে ? নাকি নিজে নবুওয়াত দাবী না করলেও স্বার্থান্বেষীরা তাকে নবী বলে মিথ্যা পরিচয় পেশ করেছে ?
তৃতীয়তঃ
তিনি যদি সত্যি সত্যিই নবী হয়ে থাকেন তো তাঁর জীবনেতিহাস ও তাঁর মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রেরিত পথনির্দেশ কি নির্ভুলভাবে আমাদের নিকটে পৌঁছেছে , নাকি বিকৃত হয়েছে ?
চতুর্থতঃ
উক্ত নবীর জীবনেতিহাস ও পথনির্দেশসমূহ যদি অবিকৃতভাবে আমাদের কাছে পৌঁছে থাকে তো তা কি শুধু তাঁর স্থান-কালের প্রয়োজন পূরণের জন্যই ছিলো , নাকি আমাদের বর্তমান স্থান-কালের প্রয়োজন পূরণের জন্যও তা যথেষ্ট ?
পঞ্চমতঃ
নবুওয়াতের ধারাবাহিকতা কি উক্ত নবীর মাধ্যমে শেষ হয়ে গিয়েছে , নাকি তাঁর পরেও কোনো নবী এসেছেন বা আসার সম্ভাবনা আছে ?
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে , কোনো ঘটনার বর্ণনা প্রত্যয় সৃষ্টিকারী হবার জন্য মুতাওয়াতির্ পর্যায়ের হওয়া অপরিহার্য।‘
মুতাওয়াতির্’
হচ্ছে যুক্তিবিজ্ঞানের একটি পরিভাষা। এর মানে হচ্ছে , ঘটনাটি বর্ণনা ধারাক্রমে প্রতিটি স্তরে এতো বেশী সংখ্যক লোকের দ্বারা বর্ণিত হওয়া চাই যতো লোকের পক্ষে মিথ্যা রচনার জন্য মতৈক্যে উপনীত হওয়া বিচারবুদ্ধির দৃষ্টিতে অসম্ভব। অর্থাৎ এরূপ সংখ্যক , ধরুন একশ’
জন বা তার চেয়ে কিছু কম বা বেশী সংখ্যক লোক ঘটনাটি চাক্ষুষভাবে দেখে বর্ণনা করেছে। অতঃপর তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে শুনে অনুরূপ বিরাট সংখ্যক লোক (ধরুন কারো কাছ থেকে 50 জন , কারো কাছ থেকে 100 জন , কারো কাছ থেকে 200 জন ইত্যাদি) বর্ণনা করেছে এবং এই দ্বিতীয় স্তরের বর্ণনাকারীদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পূর্বানুরূপ সংখ্যক লোক বর্ণনা করেছে। এভাবে বর্ণনাটি লিপিবদ্ধকারী পর্যন্ত পৌঁছেছে এবং বর্ণনাটি লিপিবদ্ধ করার সময় সকল স্তরের বর্ণনার ধারাক্রম ও প্রতিটি বর্ণনাকারীর ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অনুরূপভাবে বর্ণনাটি যে ঐ ব্যক্তি সংগ্রহ , সংকলন ও লিপিবদ্ধ করেছেন , পরবর্তীকালে কেউ তাঁর নামে চালিয়ে দেয় নি - এ ব্যাপারেও মুতাওয়াতির্ পর্যায়ের বা অন্য ধরনের সাক্ষ্য-প্রমাণ (যেমন: এ যুগে স্থান-কাল ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা উল্লেখ সহ মুদ্রিত দলীল) মওজূদ থাকা প্রয়োজন।
অনুরূপভাবে ঘটনাটি যদি সরাসরি তা প্রত্যক্ষকারী কোনো ব্যক্তি কর্তৃক লিপিবদ্ধ হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রেও মুতাওয়াতির্ সংখ্যক প্রত্যক্ষদর্শী কর্তৃক এ মর্মে সাক্ষ্য প্রয়োজন যে , লেখক ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছেন ও যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন। এ ক্ষেত্রে সাক্ষ্যদাতাদের ঐতিহাসিকতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্বন্ধেও প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ মওজূদ থাকা অপরিহার্য।
প্রতিটি স্তরে প্রত্যয় সৃষ্টিকারী বিপুল সংখ্যক নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারীর বর্ণনা ছাড়াও কারো সম্পর্কে তার প্রতিপক্ষের অনুকূল বা ইতিবাচক সাক্ষ্যও প্রত্যয় সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে , তবে প্রত্যয় উৎপাদনের মূল হাতিয়ার হচ্ছে মুতাওয়াতির্ পর্যায়ের সাক্ষ্য-প্রমাণ ও বর্ণনা।
এ মানদণ্ডে বিচার করলে হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)-এর পূর্ববর্তী যে সব ব্যক্তিকে নবী বলে দাবী করা হয় তাঁদের নবী হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়া তো দূরের কথা , তাঁদের ঐতিহাসিক অস্তিত্বই সংশয়ের কবলে নিক্ষিপ্ত হয়। অবশ্য তাঁদের মধ্যকার কারো কারো নাম , নবী হওয়ার কথা ও তাঁদের গ্রন্থের কথা হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)-এর পেশকৃত গ্রন্থ কোরআন মজীদে উল্লিখিত রয়েছে। কিন্তু তার ভিত্তিতে তাঁদের ঐতিহাসিক অস্তিত্ব এবং নবী হওয়া ও গ্রন্থ রেখে যাওয়ার বিষয়টি গ্রহণ করতে চাইলে তা কোরআনের সত্যতা অর্থাৎ এর উপস্থাপনকারীর ঐতিহাসিকতা ও এটির ঐশী গ্রন্থ হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার ওপর নির্ভরশীল।
বস্তুতঃ মুসলমানদের দৃষ্টিতে ঐ সব নবী-রাসূল (আঃ) ও তাঁদের ওপর ঐশী গ্রন্থ নাযিল হওয়ার বিষয়টি যে সত্য বলে পরিগণিত হয়ে থাকে তা বিচারবুদ্ধির দৃষ্টিতে বা মুতাওয়াতির্ বর্ণনার কারণে নয় , বরং কোরআন মজীদে উল্লেখ থাকার কারণে। যেহেতু মুসলমানদের নিকট কোরআন মজীদের ঐশিতা বিচারবুদ্ধি দ্বারা প্রমাণিত এবং মুতাওয়ইতর্ সূত্রে প্রমাণিত যে , হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ) এ গ্রন্থটি রেখে গেছেন , সেহেতু তাদের দৃষ্টিতে এ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত সব কিছুই সত্য এবং এ কারণে এতে উল্লিখিত নবী-রাসূলগণ (আঃ) ও তাঁদের ওপর নাযিলকৃত গ্রন্থাবলীও সত্য।
কিন্তু অমুসলিমরা যেহেতু কোরআন মজীদকে ঐশী গ্রন্থ ও হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)-কে নবী বলে মানে না , তাই তাদের নিকট কোরআন মজীদের বক্তব্য কোনো দলীল নয়। ফলে তাদের বিচারবুদ্ধির পক্ষে কোরআন মজীদে উল্লেখের ভিত্তিতে পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণকে (আঃ) নবী মনে করা ও তাঁদের ওপর আসমানী কিতাব নাযিল হয়েছিলো বলে মনে করা সম্ভব নয়।
এ থেকে বিচারবুদ্ধি উপসংহারে উপনীত হয় যে , হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)-এর পূর্ববর্তী যে সব ব্যক্তিকে নবী বলে দাবী করা হয় , সাধারণভাবে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হবার জন্য যে মুতাওয়াতির্ বর্ণনা প্রয়োজন তার অনুপস্থিতির কারণে , সর্বজনীন বিচারবুদ্ধির দৃষ্টিতে তাঁদের ঐতিহাসিক অস্তিত্ব নিঃসন্দেহ নয়। অবশ্য তাঁদের মধ্যকার কারো কারো অস্তিত্ব বিভিন্ন প্রাচীন ইতিহাস গ্রন্থ থেকে জানা যায়। তবে ঐ সব ইতিহাস-গ্রন্থের অবিকৃত থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত নয়।
এমনকি প্রাচীন ইতিহাস গ্রন্থাবলীতে যে সব নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে তার ভিত্তিতে তাঁদের ঐতিহাসিক অস্তিত্বের বিষয়টি স্বীকার করে নিলেও তাঁদের নবী হওয়ার বিষয়টি বিচারবুদ্ধিগ্রাহ্যভাবে প্রমাণ করা সম্ভব নয়। কারণ , ইতিহাসে উল্লেখ থাকার কারণে পাত্রপাত্রীগণ ও তাঁদের সংশ্লিষ্ট বড় বড় ঘটনা সম্বন্ধে প্রত্যয় সৃষ্টি হওয়া সম্ভব হলেও পাত্রপাত্রীদের গুণাবলী ও তাঁদের প্রত্যেকের সাথে সংশ্লিষ্ট বিস্তারিত ও ছোটখাট ঘটনাবলী সম্বন্ধে প্রত্যয় সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। কারণ , এসব বর্ণনা সংশ্লিষ্ট পাত্রপাত্রীদের সাথে লেখকের বা তাঁর তথ্যসূত্রের সম্পর্ক দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকা খুবই স্বাভাবিক। এ কারণেই অনেক ক্ষেত্রে অভিন্ন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বকে দুই ইতিহাসকার কর্তৃক বিপরীতভাবে চিত্রিত করতে দেখা যায়।
এমতাবস্থায় নবী হিসেবে পরিগণিত কোনো ব্যক্তির ঐতিহাসিক অস্তিত্ব ইতিহাস থেকে প্রমাণিত হলেও , এমনকি ইতিহাসে তাঁকে নবী বলে উল্লেখ করা হলেও , তা থেকে তাঁর নবুওয়াত সংশ্লিষ্ট প্রমাণ ও ঘটনাবলী সম্পর্কে সুস্থ ও মুক্ত বিচারবুদ্ধির জন্যে প্রত্যয় সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। কারণ , নবীর ব্যক্তিচরিত্রের প্রকৃত অবস্থা এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলী ও তথ্যাদি মুতাওয়াতির্ পর্যায়ের অথবা বিরোধীদের ইতিবাচক সত্যায়নের অধিকারী না হলে বিচারবুদ্ধির কাছে তা প্রত্যয় উৎপাদক হয় না। আর বলা বাহুল্য যে , হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)-এর পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণ (আঃ) সম্পর্কে এ জাতীয় বিষয়াদি ইতিহাসে যেভাবে পাওয়া যায় তা এ ধরনের নয় , বিশেষতঃ তা মুতাওয়াতির্ সূত্রে আমাদের নিকট পৌঁছে নি।
এরপরও , ইতিহাসে যাদের নাম নবী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তাঁদেরকে নবী বলে ধরে নিলেও তাঁদের নামে যে সব ধর্মগ্রন্থ প্রচলিত আছে সেগুলো যে তাঁদেরই রেখে যাওয়া এবং তাঁদের রেখে যাওয়া হলে তা যে অবিকৃত রয়েছে এ ব্যাপারে প্রত্যয় সৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। আর নবীকে স্বীকার করার মানে কেবল তাঁদের ঐতিহাসিক অস্তিত্ব ও তাঁদের নবী হওয়ার সত্যতা স্বীকার করা এবং তাঁদের প্রতি সম্মান , শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পোষণ মাত্র নয়। কারণ , নবীর আবির্ভাবের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শন। তাই কোনো নবীর রেখে যাওয়া গ্রন্থ অবিকৃতভাবে সংরক্ষিত না থাকলে তাঁর ঐতিহাসিক অস্তিত্ব ও তাঁর নবী হওয়ার সত্যতা স্বীকার এবং তাঁর প্রতি সম্মান , শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পোষণ করা ও না করায় মানুষের জীবন গঠন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে খুব একটা পার্থক্য ঘটে না।