মানুষ মহাবিস্ময়ের আধার
এ পর্যন্তকার সমস্ত রকমের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের মধ্যে জেনেটিক বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক আবিষ্কার সর্বাধিক বিস্ময়কর।
এ আবিষ্কার অনুযায়ী যে কোনো প্রাণীদেহের প্রতিটি কোষে এমন কতগুলো বিশেষ উপাদান-একক রয়েছে যা তার বংশগত বৈশিষ্ট্য বহন করে ; জীববিজ্ঞানীগণ এগুলোর নামকরণ করেছেন ডিএন্এ , আর ডিএন্এ-র গঠন-উপাদান বা অংশসমূহের নামকরণ করেছেন জিন্। এই সাথে থাকে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক উপাদান। একটি জিনে 150 থেকে 6 ,000 নিউক্লিওটাইড্ থাকে। একটি ছোট ভাইরাস্-ডিএন্এ-তে 5 ,386 জোড়া নিউক্লিওটাইড্ বেস্ থাকে। মানবদেহের প্রতিটি কোষে 46টি ক্রোমোজম্ থাকে যার মধ্যে 23টি পিতার ও 23টি মাতার বৈশিষ্ট্য বহন করে। (পিতার শুক্রকীটে 23টি ক্রোমোজম্ থাকে এবং এই 23টি ক্রোমোজমের মধ্যে একটি থাকে সেক্স ক্রোমোজম্ যা থেকে নির্ধারিত হয় সন্তানটি ছেলে হবে , নাকি মেয়ে হবে।) মানবদেহের একেকটি কোষে (46টি ক্রোমোজমে) এক লাখ জিন্ ও 660 কোটি নিউক্লিওটাইড্ বেস্ থাকে এবং এতে জৈব রাসায়নিক উপাদানের সংখ্যা 300 কোটি।
বিভিন্ন মানুষের জিনের মধ্যে অভিন্নতা ও বিভিন্নতা রয়েছে এবং সব মিলিয়ে মানবিক জিনের সংখ্যা 300 কোটি জোড়ার মতো
-
যার মধ্যে 1999
-
র শেষ নাগাদ 100 কোটি জোড়া চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। ডিএন্এগুলোর গঠন মই
-
এর মতো
,
বা বলা চলে
,
যিপারের
( zipper)মতো। এগুলো কতো সূক্ষ্ম আর কতো সরু তা এ থেকেই ধারণা করা যেতে পারে যে
,
আধা গ্রাম ডিএন্এ
-
কে সোজা করে সামনাসামনি জোড়া দিলে নয় কোটি 30 লাখ মাইল
(
অর্থাৎ পৃথিবী থেকে সূর্য পর্যন্ত
)
দীর্ঘ হবে। প্রতিটি ড
িএন্এ
-
র মধ্যে সংশ্লিষ্ট মানুষ বা প্রাণীর সারা জীবনের
(
দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া পর্যন্ত সময়ের
)
এবং তার পিতামাতার
....
এভাবে প্রথম মানুষ পর্যন্ত
(
প্রতিটি স্তরে পিতামাতার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন না হওয়া পর্যন্ত সময়ের
)
পূর্বপুরুষদের জীবনের ইতিহাস
(
চিন্তা
-
চেতনা
,
চরিত্র ও কর্ম সহ
)
কোড্ আকারে লিপিবদ্ধ আছে যার মধ্য থেকে বড় বড় বৈশিষ্ট্যগুলো বর্তমানে গবেষণাগারে পরীক্ষা করে বের করা সম্ভব হচ্ছে
।
কিন্তু কী আশ্চর্য! মস্তিস্কের কোষে কোষকেন্দ্র থাকলেও ক্রোমোজম্ নেই , ফলে কারো পক্ষেই স্বীয় পূর্বপুরুষদের ইতিহাস , জ্ঞান ও চিন্তাধারা স্মরণ করা সম্ভব হয় না , বরং কেবল চেষ্টাসাধনা করে জ্ঞানার্জনের পন্থায়ই তা আয়ত্ত করা সম্ভব হয়। তবে একটি মানুষের মস্তিষ্কে রয়েছে একশ’
কোটি স্মৃতিকোষ সহ বিভিন্ন ধরনের এক হাজার কোটি স্নায়ুকোষ। একটি স্মৃতিকোষ বা নিউরনের ক্ষমতা একটি সুপার কম্পিউটারের চেয়ে বেশী। একটি সুপার কম্পিউটারের দাম আনুমানিক চার হাজার ডলার ধরা হলে একটি মানুষের মস্তিষ্কের শুধু স্মৃতিকোষগুলোর দামই দাঁড়ায় চার হাজার বিলিয়ন ডলার । আর অধিকাংশ মানুষের অবস্থাই এমন যে , তার মস্তিষ্কের ক্ষমতার হাজার ভাগের এক ভাগও সে সারা জীবনে ব্যবহার করে না। কেউ যদি তার মস্তিষ্কের ক্ষমতার তিনশ’
ভাগের এক ভাগও সারা জীবনে ব্যবহার করতে পারে তো সে ব্যক্তি বিস্ময়কর প্রতিভা হিসেবে পরিচিত হতে ও প্রচলিত কথায় , অসাধ্য সাধন করতে পারবে।
মানব মস্তিষ্কের এই প্রায় সীমাহীন ক্ষমতা সম্পর্কে কিছুটা ভিন্নভাবে বললে বলা যেতে পারে যে , মানসিক প্রতিবন্ধী নয় এমন যে শিশুটি মেধার দিক থেকে অন্য সকলের তুলনায় পিছনে পড়ে আছে তার মেধার‘
যথাযথ’
পরিচর্যা ও বিকাশের ব্যবস্থা করা হলে তার পক্ষেও এমন বহুদর্শী মনীষী হয়ে গড়ে ওঠা সম্ভব যে , সে একই সাথে আইনস্টাইনের চেয়ে বড় পদার্থবিজ্ঞানী , ইবনে সীনার চেয়ে বড় দার্শনিক ও চিকিৎসা বিজ্ঞানী , রূমী ও হাফিযের চেয়ে বড় কবি , ইবনে খাল্দূনের চেয়ে বড় ইতিহাসবিশারদ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও তথা মানব জাতির ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম মেধা-প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে যাওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রসমূহেও তাঁদের তুলনায় শ্রেষ্ঠতর হতে সক্ষম হবে। (কিন্তু যথাযথ বিকাশের জন্যে মনোযোগী না হওয়ার কারণেই মানবমস্তিষ্কের এ বিস্ময়কর সম্ভাবনা অবিকশিত থেকে যাচ্ছে।)
এই হলো মহাবিস্ময়কর ও জটিলতম সৃষ্টি মানুষ। বিজ্ঞানীরা আজ কৃত্রিম জীবকোষ তৈরীর চেষ্টা করছেন। এজন্য কত আয়োজন! একটি জীবকোষ সৃষ্টির জন্যে জটিলতম যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ গবেষণাগার সহ লক্ষ লক্ষ ডলারের বাজেট নিয়ে কাজ করছেন বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীগণ। এমতাবস্থায় কোনো মহাবিজ্ঞানী স্রষ্টা ছাড়াই এমনি এমনিই প্রাণহীন পদার্থ থেকে এককোষ বিশিষ্ট জীবাণু ও তা থেকে পর্যায়ক্রমে প্রজাতিসমূহ এবং সবশেষে মহাবিস্ময়কর প্রাণশীল সৃষ্টি মানুষ অস্তিত্বলাভ করলে! ?
মানবদেহের প্রতিটি কোষে যে সব ডিএন্এ রয়েছে তাতে যে কেবল তার নিজের জীবনেতিহাস লিপিবদ্ধ আছে তা নয় , বরং এ ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী প্রথম মানুষ থেকে শুরু করে তার সকল পূর্বপুরুষের জীবনেতিহাসও এক বিশেষ পদ্ধতিতে লিপিবদ্ধ রয়েছে , আর প্রতিনিয়ত সে যা কিছুই করছে তার সবই লিপিবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে - এ সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার কি তার মধ্যে এ চিন্তার উদয় ঘটায় না যে , কোন্ সূক্ষ্মদর্শী মহাজ্ঞানী মহাশক্তিধর সত্তা তার প্রতিটি ডিএন্এ-র মধ্যে আড়িপাতা যন্ত্র বসিয়ে রেখেছেন ?
শুধু তার শরীরের গঠনকৌশল ও মেধা-প্রতিভা-সম্ভাবনাই বিস্ময়কর নয় , বরং গোটা সৃষ্টিলোকের সাথে তার অস্তিত্বের যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক রয়েছে , তা-ও এক বিরাট বিস্ময়। তার জন্ম , বৃদ্ধি , বিকাশ ও লক্ষ্যপানে অভিযাত্রার ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বলোক তাকে সহযোগিতা করছে। তার জন্যে এবং তার লক্ষ্যে উপনীত হবার জন্যে যা কিছু প্রয়োজন এ বিশ্বলোকে তার সব কিছুই মওজূদ রয়েছে। আলো , বায়ু , বায়ুতে অক্সিজেন , পানি , পানিতে শরীর বিশোধন ক্ষমতা , বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য , তাতে ভিটামিন , শর্করা ইত্যাদি খাদ্য-উপাদান , রোগ-ব্যাধিতেও শরীরে প্রতিরোধশক্তি সৃষ্টির ব্যবস্থা ও তার পাশাপাশি প্রকৃতিতে রোগনিরাময়কারী ওষুধের ব্যবস্থা , তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মানসিক ও মনস্তাত্ত্বিক চাহিদা এবং তা পূরণের জন্যে রং , রস , স্বাদ , ঘ্রাণ , রূপ ও যৌন কামনা , আর তা পূরণের উপাদান তথা সবকিছুই রয়েছে। যেন গোটা প্রাকৃতিক জগতই তার প্রয়োজন পূরণের জন্যই অস্তিত্বলাভ করেছে। (‘
যেন’
নয় , প্রকৃতই তা-ই।)
বায়ু ও পানি হচ্ছে তার জীবনরক্ষার অপরিহার্য উপাদান। তার এবং অন্যান্য ভূচর , খেচর ও উভচর প্রাণীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও অন্যবিধ বহু উপায়ে (তারই গড়া যানবাহন ও কল-কারখানার দ্বারা) এ বায়ু বিষাক্ত হচ্ছে , কিন্তু উদ্ভিদকুল তা বিশোধন করে দিচ্ছে। পানি গড়িয়ে সমুদ্রে চলে যাচ্ছে বা মাটির নীচে বসে যাচ্ছে , মেঘ ও বৃষ্টির আকারে আবার তা তার কাছে ফিরে আসছে। পানি সমুদ্রে যাবার পথে মাটি ধুয়ে নিয়ে যাচ্ছে , কিন্তু তার অন্যান্য উপাদান থিতিয়ে সমুদ্রতলদেশে গিয়ে জমা হলেও লবণ পানিতে মিশ্রিত হয়ে থাকছে , তবে পানি যখন সূর্যের তাপে জলীয় বাস্পে পরিণত হচ্ছে তখন লবণ পরিত্যক্ত হয়ে থাকছে , ফলে সে বৃষ্টি থেকে সুপেয় পানি লাভ করছে। শুধু কি তা-ই ?
অত্যন্ত বিস্ময়কর ব্যাপার যে , তার মধ্যে যৌন প্রেরণার সম্ভাবনা নিহিত রয়েছে যা যথাসময়ে বিকাশলাভ করছে। আর তাদেরকে নারী ও পুরুষরূপে সৃষ্টি করে তাদের এ চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে কি ভেবে দেখেছে যে , অন্ধ প্রকৃতির পক্ষে তার মধ্যে এরূপ প্রেরণা ও চাহিদা সৃষ্টি এবং তা পূরণের ব্যবস্থা রাখা সম্ভবপর নয় ? আসলে এভাবে তাকে সৃষ্টির ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভূমিকা পালনে বাধ্য করা হয়। তখন বুঝতে না পারলেও , পরে দেরীতে হলেও সে বুঝতে পারে যে , তার কাছ থেকে এ ভূমিকা আদায় করার লক্ষ্যেই নারীর মধ্যে পুরুষের প্রতি এবং পুরুষের মধ্যে নারীর প্রতি এহেন দুর্দমনীয় আকর্ষণ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এ ভূমিকা পালনের পুরস্কারস্বরূপই তাকে দাম্পত্য জীবনের অতুলনীয় আনন্দ দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রকৃতিতে শুধু মানুষের অস্তিত্ব রক্ষা ও প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা রাখা হয় নি , বরং প্রতিটি প্রাণশীল সৃষ্টিরই অস্তিত্বরক্ষা ও প্রয়োজন পূরণের দিকে দৃষ্টি রাখা হয়েছে। যেমন: যে সব বস্তু তাপমাত্রাভেদে কঠিন , তরল ও বায়বীয় এই তিন অবস্থা ধারণ করে তার সবগুলোরই কঠিন অবস্থায় আয়তনে হ্রাস পায় , ফলে আয়তন অনুপাতে তার ওযন বৃদ্ধি পায় , কিন্তু পানি এ নিয়মের একমাত্র ব্যতিক্রম ; পানি যখন কঠিন অবস্থা ধারণ করে অর্থাৎ জমে বরফ হয়ে যায় তখন তার আয়তন হ্রাস না পেয়ে পানির তুলনায় বৃদ্ধি পায়। এ কারণে বরফ পানিতে ভাসে। এরূপ কেন হয় ? বরফ পানির চেয়ে আয়তনে কম ও ওযনে ভারী হলে ক্ষতির কী ছিল ? হ্যা , তাহলে শীতে নদী ও সমুদ্রের উপরিভাগের পানি বরফ হয়ে তা পানিতে ডুবে তলদেশে চলে যেতো , ফলে তার নীচে চাপা পড়ে মাছসহ সকল পানির প্রাণী মরে যেতো। এই যে , ব্যতিক্রম , এটা কি অন্ধ প্রকৃতির কাজ , নাকি কোনো মহাজ্ঞানী স্রষ্টার সুবিবেচনা প্রসূত ব্যবস্থাপনা ?
মানুষের মধ্যে ও প্রকৃতিতে নিহিত এ সব বিস্ময় সাম্প্রতিক আবিষ্কার , তাই এটা কি অধিকতর বিস্ময়কর নয় যে , এখন থেকে চৌদ্দ শতাব্দী পূর্বে নিরক্ষর নবী হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ) তাঁর নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত যে কিতাব (কোরআন মজীদ) পেশ করেন তাতে বলা হয়েছে :“
আর ধরণীর বুকে এবং তোমাদের নিজেদের সত্তার ভিতরেও অকাট্য প্রত্যয়ী জ্ঞানীদের জন্যে (আল্লাহ্ তা‘
আলার অস্তিত্বের) নিদর্শনাদি রয়েছে ; তোমরা কি তা দেখতে পাও না ?”
সমগ্র সৃষ্টিলোকের সকল সৃষ্টি শুধু বিস্ময় আর বিস্ময়। অধিকতর বিস্ময়কর এ সবের পারস্পরিক পরিপূরকতা এবং প্রাকৃতিক বিধানসমূহের সুসমন্বয়। সর্বত্রই এক নিখুঁত পরিকল্পনার ছাপ বিদ্যমান। ক্ষুদ্রতম থেকে শুরু করে বৃহত্তম প্রাণশীল সৃষ্টিতে , বিশেষ করে মানুষের সত্তায় , চন্দ্র-সূর্য ও গ্রহ-নক্ষত্রাদির সৃষ্টি ও আবর্তনে , পৃথিবীর আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতিতে তথা সব কিছুতেই এক মহাজ্ঞানোচিত পরিকল্পনা ও নিখুঁত শৃঙ্খলা একজন মহা পরিকল্পনাকারী ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাকারীর অস্তিত্বের কথা ঘোষণা করছে। তাই যে ব্যক্তি তার নিজের অস্তিত্ব ও এ বিশ্বলোকের অস্তিত্ব অনুভব করে তার পক্ষে তার নিজের ও এ বিশ্বলোকের সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব অনুভব না করা একেবারেই অসম্ভব।
তবে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব অনুভব করা সত্ত্বেও কোনো বিশেষ কারণে কেউ তা অস্বীকার করতে পারে। অবশ্য বিজ্ঞানের সাম্প্রতিকতম আবিষ্কারের দৃষ্টিতে , তার এ স্ববিরোধী আচরণ অর্থাৎ তার জ্ঞানের সাথে তার মৌখিক দাবী ও আচরণের বৈপরীত্য তারই বস্তুগত সত্তায় - যার অস্তিত্ব সে অস্বীকার করে না - ডিএন্এ-র অভ্যন্তরে লিপিবদ্ধ হয়ে থাকছে।
বস্তুতঃ স্রষ্টাকে সে স্বীকার করুক বা অস্বীকারই করুক তাতে স্রষ্টার কোনোই লাভ-ক্ষতি নেই ; বরং সর্বাবস্থায়ই স্রষ্টার চিরন্তন অস্তিত্ব ছিলো , আছে ও থাকবে , তাতে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। লাভ-ক্ষতি যা হবার তারই হবে।“
অতএব , শিক্ষা গ্রহণ করো , হে দৃষ্টিমান লোকেরা!”