সৃষ্টির সাথে সম্পর্ক নির্দেশক গুণাবলী
অপরিহার্য সত্তা আরো কতক গুণ-বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ; বিচারবুদ্ধি সৃষ্টিকুলের সাথে অপরিহার্য সত্তার সম্পর্ক পর্যালোচনা করে এ সম্পর্কিত ধারণায় উপনীত হয়। অর্থাৎ তাঁর কতক সত্তাগত গুণ সৃষ্টিকুলের সাথে সম্পর্ক হিসেবে বিবেচিত হলে তখন তা নতুন রূপে প্রকাশলাভ করে ও নতুন নামে অভিহিত হয়। এসব গুণের মধ্যে রয়েছে :
এক : তিনি সৃষ্টিকর্তা
অপরিহার্য সত্তা সর্বাবস্থায়ই সৃজনীসম্ভাবনা ও তা রূপায়ণের শক্তির অধিকারী। কিন্তু তিনি তা রূপায়ণের ইচ্ছা না-ও করতে পারেন। তবে আমরা আমাদের নিজদের ও আমাদের জানা সৃষ্টিকুলের অস্তিত্ব থেকে বঝুতে পারি যে , তিনি সৃষ্টির ইচ্ছা করেছেন এবং সৃষ্টিলোককে অস্তিত্বদান করেছেন। তাই তিনি এ সৃষ্টিলোকের সৃষ্টিকর্তা।
কিন্তু সৃষ্টিকর্তা হিসেবে মানুষ ও অপরিহার্য সত্তার মধ্যে বিরাট মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। এ সব পার্থক্যের মধ্যে একটি হচ্ছে এই যে , মানুষ যে কোনো সৃষ্টির জন্যেই সৃষ্টিলোকে মওজূদ উপাদানসমূহের সাহায্য নিতে বাধ্য। কিন্তু অপরিহার্য সত্তা শূন্য থেকে সৃষ্টি করেন বা সৃষ্টির প্রক্রিয়া নির্ধারণ করে দেন।
দ্বিতীয়তঃ সৃষ্টির পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে মানুষের আত্মিক
-
মানসিক ও দৈহিক সত্তায় আলোড়ন
,
গতি ও পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু অপরিহার্য সত্তার ক্ষেত্রে এরূপ কিছু ঘটে না
,
বরং সৃষ্টি হচ্ছে তাঁর ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ তাঁর সত্তার স্বাধীন ইচ্ছার ইতিবাচক বহিঃপ্রকাশ। একে চুম্বকের সাথে চৌম্বক ক্ষেত্রের সম্পর্কের অনুরূপ গণ্য করা যেতে পারে। তবে পার্থক্য এখানে যে
,
প্রাকৃতিক চুম্বকের চৌম্বক ক্ষেত্র অনিবার্য
,
কিন্তু অপরিহার্য সত্তার সৃষ্টিসমূহ অনিবার্য নয়
,
বরং তাঁর স্বাধীন ইচ্ছার অধীন। অবশ্য বৈদ্যুতিক চুম্বকের চৌম্বক ক্ষেত্র কখনো কখনো অনুপস্থিত থাকতে পারে
,
কিন্তু এমনটি কেবল তখনই ঘটতে পারে যখন স্বয়ং চুম্বকটি আর চুম্বক থাকে না
,
বরং সাধারণ লৌহন্ডে পরিণত হয়। অর্থাৎ চুম্বক ও চৌম্বক ক্ষেত্রের অস্তিত্ব ও অনস্তিত্ব অনিবার্যরূপে
অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু অপরিহার্য সত্তা সৃষ্টিকর্ম সম্পাদন করুন বা না-ই করুন উভয় অবস্থায়ই তিনি সৃজনশীলতার অধিকারী। তাঁর সৃজনী সম্ভাবনায় ও ক্ষমতায় কখনোই কোনোরূপ হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে না।
তৃতীয়তঃ কোনো মানুষের সৃষ্টির স্থিতি সংশ্লিষ্ট মানুষটির টিকে থাকার বা কেবল তার সেটিকে টিকিয়ে রাখার ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল নয়। কিন্তু অপরিহার্য সত্তার সৃষ্টিসমূহের টিকে থাকা তাঁর ইচ্ছার ওপরে নির্ভরশীল।
দুই : তিনি ব্যবস্থাপক ও পরিচালক
অপরিহার্য সত্তা সৃষ্টিনিচয়কে শুধু সৃষ্টিই করেন নি বা করছেন না , বরং তাদের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা এবং প্রাণশীল ও প্রাণহীন নির্বিশেষে এ সৃষ্টিলোকের সকল সৃষ্টির প্রয়োজন পূরণের কাজও আঞ্জাম দিচ্ছেন। তবে এ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় তিনি মানুষের মতো কোনোরূপ দুর্বলতার মুখোমুখি হন না। মানুষ যেভাবে ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা করতে গিয়ে স্বয়ং শারীরিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয় অপরিহার্য সত্তার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। বরং তাঁর ইতিবাচক অস্তিত্বের বহিঃপ্রকাশরূপে যে নিখুঁত নিয়ম-শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনার প্রকাশ ঘটেছে তা তাঁরই ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ এবং তাঁরই ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। এ অর্থেই তিনি গোটা সৃষ্টিলোকের ব্যবস্থাপক ও পরিচালক। সৃষ্টিজগতে বিদ্যমান প্রাকৃতিক বিধিবিধানসমূহ এ ব্যবস্থাপনারই অংশবিশেষ মাত্র। এছাড়া ইচ্ছাশক্তির অধিকারী সৃষ্টিসমূহের স্বাধীন ইচ্ছা আর কর্মতৎপরতাও এ ব্যবস্থাপনারই আওতাধীন। অধিকন্তু তিনি এদের স্বাধীন ইচ্ছা ও কর্মতৎপরতার প্রতি সদা দৃষ্টি রাখেন এবং গোটা সৃষ্টিলোকের ব্যবস্থাপনার স্বার্থে প্রয়োজন হলে তাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন।
তিন : তিনি সর্বজ্ঞ
অপরিহার্য সত্তা যে সৃষ্টিনিচয়কে অস্তিত্বদান করেছেন তার ভূত-ভবিষ্যত-বর্তমান সম্বন্ধে তিনি সদা অবগত এবং তা তাঁর নিকট সদা বর্তমান। কোনো সৃষ্টির কী প্রয়োজন হবে তা তিনি পূর্ব থেকেই অবগত। কারণ , সে সৃষ্টির সৃষ্টিপরিকল্পনা তো তিনিই করেছিলেন এবং সে পরিকল্পনা তৈরীর সময় তার প্রয়োজনও তিনিই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। এ কারণে তিনি তার প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থাও প্রকৃ তিতে তৈরী করে রেখেছেন। এভাবে গোটা সৃষ্টিলোকের জন্যে তিনি এক ইতিবাচক লক্ষ্যাভিসারিতার সুনিশ্চিত ব্যবস্থা করেছেন। তিনি সৃষ্টিকর্মের সূচনাকালেই গোটা সৃষ্টিলোকের জন্যে সামগ্রিকভাবে যে চূড়ান্ত লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন এতদ্ব্যতীত সে লক্ষ্য পূরণের নিশ্চয়তা ছিল না। তাই তিনি শুধু সর্বজ্ঞই নন , বরং তিনি পরম জ্ঞানময় ও মহাপ্রজ্ঞাময় (হাকীম)ও বটে।
চার : তিনি পথপ্রদর্শন করেন ও বাণী পৌঁছে দেন
বিচারবুদ্ধি লক্ষ্য করে যে
,
অপরিহার্য সত্তা প্রতিটি প্রাণশীল সৃষ্টিপ্রজাতিকে তাদের জীবনপথে চলা ও জীবনলক্ষ্যে উপনীত হবার সুবিধার্থে সহজাত প্রবণতার মাধ্যমে ও বাণীর মাধ্যমে পথ প্রদর্শন করেছেন। উন্নততর প্রজাতিকে
,
বিশেষতঃ মানুষকে তিনি বাণী দিয়েছেন। এ বাণী কখনো বা প্রত্যক্ষ অনুভূতি
( intuition)-
এর মাধ্যমে
,
কখনো বা বক্তব্যের মাধ্যমে দিয়েছেন। কখনো বা ভাব আকারে দিয়েছেন
,
কখনো বা ভাষার ছাঁচে ফেলে দিয়েছেন। কখনো অবস্তুগত বাণীবাহক সত্তার মাধ্যমে দিয়েছেন
,
কখনো সরাসরি দিয়েছেন। কখনো স্বপ্নে দিয়েছেন
,
কখনো জাগরণে দিয়েছেন। কখনো বায়ুম
-
লে শব্দতরঙ্গ সৃষ্টি করে দিয়েছেন
,
কখনো শুধু সুনির্দিষ্ট শ্রোতার কর্ণকুহরে পৌঁছে দিয়েছেন তথা কেবল তারই কানের পর্দায় কম্পন সৃষ্টির মাধ্যমে তাকে এ বাণী শুনিয়েছেন।
মানবজাতির ইতিহাসে যুগে যুগে বহুসংখ্যক বিশিষ্ট মানুষ সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে কোনো না কোনো ধরনের বা একাধিক ধরনের বাণী লাভের দাবী করেছেন। এ সব দাবীকারীর মধ্যে অবশ্য কতক দাবীকারী মিথ্যা দাবী করেছিলো। তবে বিচারবুদ্ধি পরীক্ষা
-
নিরীক্ষা করে দেখেছে যে
,
এদের মধ্যে অনেকের দাবী নিঃসন্দেহে সত্য ছিলো
।
উদাহরণস্বরূপ
,
যখন লেখাপড়া না
-
জানা ও জ্ঞানার্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত কোনো সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত
সত্যবাদী ব্যক্তি মহাজ্ঞানময় বাণী উপস্থাপন করেন এবং দাবী করেন যে , এ বাণী তাঁর নিকট অপরিহার্য সত্তার নিকট থেকে পৌঁছানো হয়েছে তখন বিচারবুদ্ধির পক্ষে তাঁর সে দাবীকে সত্য বলে গ্রহণ করা ব্যতীত গত্যন্তর থাকে না , বিশেষ করে বিচারবুদ্ধি যখন অপরিহার্য সত্তার পক্ষে তাঁর সৃষ্টির নিকট এভাবে বিশেষ বাণী পৌঁছানোকে অসম্ভব গণ্য করে না।
বলা বাহুল্য যে , এ বাণীসমূহ ওপরে বর্ণিত পন্থাসমূহেই প্রদান করা হয়েছে , মানুষের মতো মুখের বাকযন্ত্রের দ্বারা কথা উচ্চারণ করে নয়। কারণ , অন্যের নিকট বক্তব্য ও বাণী পৌঁছানোর জন্যে মুখ ও বাকযন্ত্রের মুখাপেক্ষী হওয়ার ন্যায় দুর্বলতা অপরিহার্য সত্তার থাকতে পারে না।
পাঁচ : তিনি সত্যবাদী
বিচারবুদ্ধি স্বীকার করে যে , মানুষ যে মিথ্যা বলে তা তার অপূর্ণতা ও অভাব জনিত দুর্বলতার কারণে , যদিও ব্যক্তিভেদে অভাবের অনুভূতির মধ্যে বিভিন্নতা রয়েছে। কিন্তু অপরিহার্য সত্তা সকল প্রকার অভাব-অভিযোগ ও অপূর্ণতার উর্ধে। অতএব , তিনি যে পথনির্দেশ দেন বা যে বাণী প্রদান করেন বা যে তথ্য প্রকাশ করেন তাতে মিথ্যা বা অসত্যের লেশমাত্র থাকতে পারে না। তাঁর প্রদত্ত পথনির্দেশে ও তথ্যে প্রকৃত অবস্থা বা সত্য বৈ প্রতিফলিত হয় না।
ছয় : তিনি দেখেন ও শোনেন
অপরিহার্য সত্তা সর্বাবস্থায়ই ও সর্বোত্তমরূপে তাঁর সৃষ্টিকুলকে দেখেন , তাদের কথা শোনেন ও তাদেরকে জানেন। তবে তাঁর দেখার জন্যে চোখের , শোনার জন্যে কানের ও জানার জন্যে তথ্যসংগ্রহ মাধ্যম (যন্ত্রপাতি ও প্রতিনিধিবর্গ) প্রয়োজন হয় না। কারণ , তিনি স্থান-কালের উর্ধে সর্বত্র ও সদা বিদ্যমান বিধায় সৃষ্টিকুলের ক্ষুদ্রতম সৃষ্টির ক্ষুদ্রতম গতিবিধি বা কর্মতৎপরতাও তাঁর নিকট সদাই স্বতঃপ্রকাশিত ও সদাসংরক্ষিত।
সাত : তিনি দয়ালু ও কঠোর
অপরিহার্য সত্তা সকল প্রয়োজনের উর্ধে হওয়া সত্ত্বেও এবং ইচ্ছা করলে তাঁর পক্ষে সৃষ্টি না করা সম্ভব হওয়া সত্ত্বেও তিনি ইতিবাচক ইচ্ছা দ্বারা এ সৃষ্টিলোককে সৃষ্টি করেছেন এবং সৃষ্টিকুলের পূর্ণতাবিধানে প্রয়োজনীয় সকল উপায়
-
উপকরণ সরবরাহ করেছেন। এই অ
স্তিত্ব ও এতো সব উপায়
-
উপকরণ কারো পাওনা ছিলো না। কারো অধিকার নয়
,
তাই কার্যতঃ তা তাঁর অনুগ্রহ বৈ
নয়। অন্যদিকে যারা এসব অনুগ্রহগ্রহ
ণ করে নি বা তা লাভের উপযোগী কাজ না করায় তথা প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক শর্তাবলী পূরণ না করায় তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বা এ সব অনুগ্রহের অপচয় বা ভুল ব্যবহার করেছে স্বভাবতঃই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা হতে বাধ্য। অপরিহার্য সত্তা ও সৃষ্টির মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটাই হচ্ছে তাঁর কঠোরতা।
মানুষ যেভাবে কারো প্রতি দয়ায় চিত্তচাঞ্চল্য অনুভব করে ও কারো প্রতি ক্রোধে ক্ষিপ্ত হয়ে যায় অপরিহার্য সত্তার অনুগ্রহ ও কঠোরতা তদ্রূপ নয়। বরং এর তুলনা আলো ও আঁধারের ন্যায়। যে আলোর সন্ধান করলো ও তা পেয়ে তার সহায়তায় স্বীয় লক্ষ্যপানে এগিয়ে গেলো সে সফল হলো । আর যে আলো পরিত্যাগ করে অন্ধকারে পথ চললো সে অন্ধকারে হাতড়ে মরলো ও বিপদাপদে নিপতিত হলো।
বস্তুতঃ মানুষের ভালো-মন্দ কাজকর্ম এবং তাঁর আদেশনিষে
ধ মানা বা না মানার ক্ষেত্রে তাঁর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি আমাদের সন্তুষ্টি- অসন্তুষ্টির মতো নয়। কেউ ভালো কাজ করলে বা আমাদের আদেশ পালন করলে স্বভাবতঃই আমরা অন্তরে খুশী হই এবং আমাদের চেহারায় , কাজে ও কথায় তার প্রকাশ ঘটে। অন্যদিকে কেউ মন্দ কাজ করলে বা আমাদের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে বা আদিষ্ট কাজ না করলে আমাদের মধ্যে তার বিপরীত প্রতিক্রিয়া ঘটে তথা আমরা অসন্তুষ্ট বা ক্রুদ্ধ হই। অপরিহার্য সত্তার সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি এ ধরনের নয়। বরং ভালো-মন্দ কাজকর্ম সম্পাদন এবং তাঁর আদেশ-নিষেধের অনুসরণ করা-না করার জন্য তিনি যে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া (পার্থিব ও পরকালীন উভয় জীবনের জন্যে) নির্ধারণ করে রেখেছেন তা-ই প্রতিফলিত হয় এবং এটাই তাঁর সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির তাৎপর্য। এর তুলনা করা যায় কোনো কল্যাণকামী কর্তৃক দুষিত পানি পান না করার জন্যে প্রদত্ত উপদেশ মান্য ও অমান্য করার এবং অসুস্থ অবস্থায় ডাক্তারের নির্দেশিত ওষুধ সেবন করার ও না করার পরিণতির সাথে।
অবশ্য এর সামান্যতম ব্যতিক্রমও হবে না এমন নয়। কারণ , ইতিপূর্বে যেমন আভাস দেয়া হয়েছে , অস্তিত্বমাত্রই ইতিবাচক। সুতরাং অপরিহার্য অস্তিত্ব ইতিবাচক এবং তাঁর সৃষ্টিকমর্ও ইতিবাচক। তাই এ ক্ষেত্রে যান্ত্রিক হিসাব-নিকাশ ভিত্তিক প্রতিক্রিয়া অনিবার্য নয়। কারণ , এরূপ হলে সৃষ্টিজগৎ অস্তিত্বই লাভ করতো না। যেহেতু তিনি ইতিবাচক এবং তাঁর সৃষ্টিজগৎ ও ইতিবাচক সেহেতু ইতিবাচক কর্মের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ক্ষেত্রবিশেষে কমবেশী বৃদ্ধি পাওয়া এবং নেতিবাচক কর্মের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া কিছুটা হ্রাস পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। এর বিপরীত ঘটা অসম্ভব। এটাই অপরিহার্য সত্তা ও তাঁর সৃষ্টিনিচয়ের মধ্যকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে দয়া , অনুগ্রহ , ক্ষমা , প্রত্যাবর্তন (তাওবাহ) ইত্যাদি বিভিন্ন রূপে বহিঃপ্রকাশিত হয়।
অপরিহার্য সত্তার আরো কতক গুণ-বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্রভাবে চিহ্নিত করে আলোচনা করা চলে। কিন্তু সে সব গুণ-বৈশিষ্ট্য কোনো না কোনোভাবে এখানে আলোচিত কোনো না কোনো গুণ-বৈশিষ্ট্যের আওতাভুক্ত বিবেচনা করা যেতে পারে।