আধ্যাত্মিক বিস্ময় : শেইখ রজব আলী খাইয়্যাত

আধ্যাত্মিক বিস্ময় : শেইখ রজব আলী খাইয়্যাত0%

আধ্যাত্মিক বিস্ময় : শেইখ রজব আলী খাইয়্যাত লেখক:
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ: দর্শন এবং আধ্যাত্মিকতা

আধ্যাত্মিক বিস্ময় : শেইখ রজব আলী খাইয়্যাত

লেখক: মুহাম্মাদ রেইশাহরি
: মুহাম্মদ ইরফানুল হক
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বিভাগ:

ভিজিট: 28921
ডাউনলোড: 5752

পাঠকের মতামত:

আধ্যাত্মিক বিস্ময় : শেইখ রজব আলী খাইয়্যাত
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 34 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 28921 / ডাউনলোড: 5752
সাইজ সাইজ সাইজ
আধ্যাত্মিক বিস্ময় : শেইখ রজব আলী খাইয়্যাত

আধ্যাত্মিক বিস্ময় : শেইখ রজব আলী খাইয়্যাত

লেখক:
প্রকাশক: ওয়াইজম্যান পাবলিকেশনস
বাংলা

দশম অধ্যায়

আল্লাহর বন্ধুদের ভয়

আল্লাহর প্রেম আলোচনা করার পর প্রথম যে বিষয়টি আসে তা হলো যদি আল্লাহ দয়ালু ও স্নেহশীল হন এবং তার প্রেম যদি বিবর্তনের জন্য সবচে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হয় তাহলে কেন ইসলামী কিতাবগুলোতে আল্লাহভীতিকে এত জোর দেওয়া হয়েছে। কেন পবিত্র কোরআনে আল্লাহভীতিকে আলেমদের সবচে সম্মানীয় গুণ বলা হয়েছে ? সবশেষে ভালোবাসা ও ভয় কি সাযুজ্যপূর্ণ ?

উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ ; হযরত শেইখ একটি আনন্দদায়ক উদাহরণ দিয়েছেন ভয় ও প্রেমের সাযুজ্যের উপর যা এ অধ্যায়ে আলোচনা করা হবে। তার আগে ভয় ও আল্লাহ প্রেমের অর্থ আরেকবার দেখে নেই।

আল্লাহর ভয়-এর অর্থ

ঐশী ভয় ও প্রেম ব্যাখ্যার প্রথম বিষয়টি হচ্ছে আল্লাহর ভয় গুনাহ ও খারাপ কাজ করার ভয়। ইমাম আলী (আঃ) বলেছেন :

ভয় পেয়ো না নিজের গুনাহ ছাড়া এবং আশা করো না তোমার রবকে ছাড়া। 169

আল্লাহকে ভয় করো না

একদিন আলী (আঃ) কারো মুখোমুখি হলেন যার চেহারা ভয়ে পরিবর্তন হয়ে গেছে , তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন :

তোমার কী হয়েছে ?

লোকটি বললো :

আমি আল্লাহর ভয়ে ভীত।

ইমাম আলী (আঃ) বললেন :

আল্লাহর বান্দাহ! তোমার গুনাহকে ভয় করো এবং ভয় করো ঐশী ন্যায়বিচারের। তাঁর দাসদের বিরুদ্ধে তোমার অন্যায়ের বিচারে! আল্লাহকে মানো যা তিনি তোমার জন্য বাধ্যতামূলক করেছেন এবং অবাধ্য হয়ো না যা তোমার জন্য ভালো সে বিষয়ে। তাই , আল্লাহকে ভয় করো না কারণ তিনি কখনও কারো প্রতি অবিচার করেন না এবং কাউকে শাস্তি দেন না তার প্রাপ্য পরিমাণ ছাড়া। 170

বিচ্ছেদের ভয়

তাই কারো উচিত না আল্লাহকে ভয় করা এবং আমাদের উচিত ভয় করা আমাদেরকেই যেন আমরা জটিলতায় জড়িয়ে না যাই আমাদেরই অনুচিত কাজের কারণে। আল্লাহর বন্ধুদের অনুচিত কাজের শাস্তির ভয় সাধারণ মানুষের ভয়ের চাইতে ভিন্ন । যারা তাদের অন্তর থেকে আল্লাহ ছাড়া আর সব কিছুর ভালোবাসা বিতাড়িত করেছে তাদের আল্লাহর প্রতি আনুগত্য না জাহান্নামের ভয়ে , না জান্নাতের আশায় ; তাদের একমাত্র ভয় বিচ্ছেদ। তাদের জন্য আল্লাহর সাথে বিচ্ছেদের কষ্ট জাহান্নামের কষ্টের চেয়ে কষ্টদায়ক। তাই আল্লাহর ওয়ালীদের নেতা আমিরুল মুমিনিন আলী (আঃ) বিলাপ করেন তার দোয়াতে আল্লাহর কাছে এভাবে-

তাই যদি আপনি আমাকে শাস্তি দেন আপনার শত্রুদের সাথে , জড়ো করেন আপনার শাস্তিপ্রাপ্ত লোকদের সাথে এবং আমাকে বিচ্ছিন্ন করেন আপনার বন্ধু ও পছন্দনীয়দের কাছ থেকে , তাহলে মনে করুন , হে আল্লাহ , আমার প্রভু , আমার নিরাপত্তারক্ষক এবং আমার রব যে আমি হয়তো আপনার শাস্তি সহ্য করতে পারলাম কিন্তু কীভাবে আমি আপনার বিচ্ছেদ সহ্য করবো (দোয়ায়ে কুমাইল)

হযরত শেইখ তাফসীর করেছেন এ আয়াতেরঃ

) يَدْعُونَ رَبَّهُمْ خَوْفًا وَطَمَعًا(

তারা ডাকে তাদের রবকে ভয়ে ও আশায় (সূরা সাজদাহ-16)

এভাবে :

ভয় ও আশা কী ? বিচ্ছেদের ভয় ও তাঁর সাথে মিলনের আশা। এরকমই কথা আমিরুল মুমিনিন হযরত আলীর (আঃ) দোয়ায়ে কুমাইলে :

তাই মনে করুন , আমার আল্লাহ----কীভাবে আমি সহ্য করবো আপনার কাছ থেকে বিচ্ছেদ ? এবং ইমাম সাজ্জাদ (আঃ) এর দোয়ায় :

আপনার সাথে মিলন হচ্ছে আমার সত্তার ইচ্ছা এবং আপনার দিকেই আমার আকাঙ্ক্ষা । 171

বিখ্যাত সাধক এবং ফক্বীহ মরহুম মুল্লা আহমদ নারাক্বী এ বিষয়ে বলেন : ওয়ালীদের সম্রাট দোয়াতে বলেছেন , আমার সত্তা তার জন্য কোরবানী হোক হে আমার রব , হে আল্লাহ , হয়তো আমি আপনার শাস্তি সহ্য করলাম কিন্তু কীভাবে আমি সহ্য করবো আপনার সাথে বিচ্ছেদ , হে বন্ধু ?

ধাত্রী বাচ্চাদেরকে আগুনের ভয় দেখায় (এ বলে) খেলা করো না হে অমুক , না হয় , আমি তোমার হাতে ও পায়ে আগুন রাখবো ; ছেঁকার দাগ দিবো তোমার চেহারায় ও পিঠে। কিন্তু বিচ্ছেদের শাস্তি ভয় পাইয়ে দেয় সিংহ (হৃদয়) মানুষকে (আলী (আঃ)) , হাজারগুণ বেশী ও আতংক দিয়ে।172

মাশুকের কাছে গ্রহণযোগ্য না হওয়ার ভয়

আল্লাহর বন্ধুরা ভয় করে যদিও তারা তাদের দায়িত্ব পালন করে। তারা ভয় পায় হয়তো মাশুক সেগুলো পছন্দ করবে না এবং গ্রহণ করবে না :

) وَالَّذِينَ يُؤْتُونَ مَا آتَوْا وَقُلُوبُهُمْ وَجِلَةٌ أَنَّهُمْ إِلَى رَبِّهِمْ رَاجِعُونَ(

এবং যারা দান করে এবং তাদের অন্তর থাকে ভয়ে পরিপূর্ণ , কারণ তারা তাদের রবের কাছে ফিরবে। (সূরা মুমিনিন-60)

মাশুক , যিনি পরম ও নিখুঁত , তার কাছে গৃহীত হওয়া আল্লাহর ওয়ালীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ , একইভাবে তাঁর কাছ থেকে বিচ্ছেদ হৃদয়বিদারক ও তাদের সহ্য ক্ষমতার বাইরে। এটি এমন জরুরী যে তেহরানের জুময়ার ইমাম বলেছেন যে ইমাম খোমেইনী (রঃ) তার জীবনের শেষ মুহূর্তে জনগণকে বলেছেন আল্লাহর কাছে দোয়া করতে যেন তিনি তাকে গ্রহণ করেন।

এখন দেখুন হযরত শেইখ কীভাবে একটি সুক্ষ্ণ আধ্যাত্মিক বিষয় একটি সাধারণ উদাহরণ দিয়ে বোঝান।

হযরত শেইখের এক শিষ্য বলেন : একবার তিনি (হযরত শেইখ) আমাকে বললেন :

হে অমুক! কার জন্য নববধূ নিজেকে সাজায় ?

আমি বললামঃ স্বামীর জন্য।

তিনি বললেন : তুমি বুঝেছো ?

আমি চুপ করে রইলাম। তখন তিনি বললেন :

বাসর রাতে নববধূর আত্মীয়-স্বজনরা তাকে যতটুকু সম্ভব সুন্দর করে সাজায় যেন বর তাকে পছন্দ করে। কিন্তু বধূর একটি গোপন অংশ থাকে যা অন্যরা খেয়াল করে না ; সে শংকায় থাকে সে কী করবে যদি বরের আগ্রহ সৃষ্টি করতে না পারে অথবা যদি সে (বর) তার প্রতি ঘৃণা বোধ করে।

কীভাবে একজন দাস , যে জানে না তার কাজ আল্লাহ গ্রহণ করছেন কিনা , ভয় পাবে না ও দুশ্চিন্তা করবে না ?! তুমি কি নিজেকে সাজাও তাঁর অথবা নিজের জন্য এবং লোকদের মাঝে সুনাম অর্জনের জন্য ?!

যখন মানুষ মারা যায় তারা আবেদন করে :

) رَبِّ ارْجِعُونِ لَعَلِّي أَعْمَلُ صَالِحًا(

হে আমার রব! আমাকে ফেরত পাঠান (পৃথিবীর জীবনে) যেন আমি সৎকাজ করি যা আমি অবহেলা করেছি। (সূরা মুমিনিন- 99-100)

তাই হযরত শেইখ সব সময় আল্লাহর সাথে মিলনের ভয়ে থাকতেন এবং বলতেন :

তোমরা বলো আল্লাহর ভয় নেই ,

) وَأَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ(

তার জন্য যে তার রবের সামনে দাঁড়াতে ভয় পায়। (সূরা নাযিয়াত-40)

কিন্তু আমরা কী করবো যদি তিনি আমাদেরকে পছন্দ না করেন এবং আমাদের কাজ গ্রহণ না করেন ?

এর উত্তরে হযরত শেইখের ছেলে বলেন যে তিনি বলেছেনঃ হে রব! কিনে নিন এবং গ্রহণ করুন আমাদেরকে পুরাতন ফালতু জিনিসের মত , যেমন ফেরীওয়ালা ডাক দেয় : আমি ভাঙ্গা ও ফালতু জিনিস কিনি : -হে রব গ্রহণ করুন এবং আমাদেরকে কিনে নিন।

চতুর্থ ভাগ

ইন্তেকাল

প্রথম অধ্যায়

শেইখ রজব আলী খাইয়্যাতের ইন্তেকাল

শেষ পর্যন্ত সেপ্টেম্বর 13 , 1961 সনে হযরত শেইখের বরকতময় জীবন শেষ হয়ে আসে এবং সত্তার পাখিটি এ জীবন থেকে বিদায় নেয় জীবনভর আত্ম -উন্নয়ন ও অন্যকে সমৃদ্ধ করার পর। তার আলোকিত সত্তার এ পৃথিবী থেকে উচ্চতর জগতে চলে যাওয়ার ঘটনাটি খুবই আগ্রহ সৃষ্টিকারী ও শিক্ষামূলক।

তার ইন্তেকালের আগের দিন

হযরত শেইখের ছেলে তার ইন্তেকালের আগের দিনটি বর্ণনা করেন এভাবে :

ইন্তেকালের আগের দিন , আমার বাবা ভালো ও সুস্থ ছিলেন। আমার মা বাইরে ছিলেন এবং আমি একা ছিলাম। দুপুরের পরে আমার বাবা বাসায় ফিরে আসলেন , ওযু করলেন এবং আমাকে ডেকে বললেনঃ

আমি একটু অসুস্থবোধ করছি , যদি আল্লাহর বান্দাহ (একজন খদ্দের) আসে তার পোষাক নিয়ে যেতে , অতিরিক্ত কাটা কাপড় গুলো এর পকেটেই আছে এবং তাকে ত্রিশ তোমান মজুরী দিতে হবে।

আমার বাবা কখনোই এর আগে আমাকে বলেন নি যে , কেউ তার পোষাক নিতে এলে কত মজুরী হবে। কিন্তু ঐ দিন আমি বুঝতে পারি নি কী ঘটতে যাচ্ছে।

তার এক শিষ্যের স্বপ্ন

হযরত শেইখের একজন ভক্ত তার বিদায়ের আগেই দেখেছে এক সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে। সে ঘটনাটি এভাবে বর্ণনা করেছে :

শেইখ এ পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার আগের রাতে স্বপ্নে দেখলাম মসজিদে ক্বাযভীনের পশ্চিম দিকের দোকানগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম : কী হয়েছে ? তারা বললো আগা শেইখ রজব আলী খাইয়্যাত ইন্তেকাল করেছেন। আমি জেগে উঠলাম হতবিহবল ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে। তখন রাত বাজে তিনটা , আমি মনে করলাম আমার স্বপ্ন সত্য। আমি সকালের আজানের পর নামায পড়েই সাথে সাথে রওয়ানা দিলাম আগা রাদমানিশের বাড়িতে। তিনি আশ্চর্য হয়ে আমার অসময়ে আগমনের কারণ জানতে চাইলেন এবং আমি তাকে বললাম স্বপ্নের কথা।

তখন ছিলো সকাল 5টা। সূর্য উঠার সময় আমরা হযরত শেইখের বাড়ির দিকে রওয়ানা দিলাম। হযরত শেইখ দরজা খুললেন। আমরা ভিতরে গেলাম এবং বসলাম। হযরত শেইখও বসলেন এবং বললেন :

এত সকালে তোমরা কী উদ্দেশ্যে বেরিয়েছো ?

আমি আমার স্বপ্নটি তার কাছে বললাম না। আমরা কিছু সময় ধরে কথা বললাম এরপর হযরত শেইখ কাত হয়ে শুলেন এবং তার হাত মাথার নীচে রাখলেন :

কিছু বলো , একটি কবিতা আবৃত্তি করো!

কেউ একজন গাইলেন :

প্রেমের দিনগুলোর চাইতে বেশী আনন্দের কোন সময় ছিলো না

প্রেমিকদের দিনগুলোর জন্য কোন রাত নেই

আনন্দের ঘন্টাগুলো কেটেছে বন্ধুর সাথে

বাকী সব ছিলো অযথা ও মূর্খতা।

হযরত শেইখের অন্তিমকালে

এক ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে হযরত শেইখের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যেতে দেখলাম। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তার জন্য কোন ডাক্তার ডাকবো কি না। আমি নিশ্চিত ছিলাম যে তিনি সেদিন ইন্তেকাল করবেন। হযরত শেইখ বললেন :

এটি তোমার বিষয়।

ডাক্তার একটি প্রেস ক্রি পশন দিলেন এবং আমি ওষুধ আনতে গেলাম। আমি ফিরে এসে দেখলাম হযরত শেইখকে আরেকটি কক্ষে নেয়া হয়েছে। তিনি ক্বিবলামুখী হয়ে বসেছিলেন এবং তার পা একটি সাদা চাদরে ঢাকা ছিলো ; তিনি সাদা চাদরটিকে তার বুড়ো আঙ্গুল ও শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে স্পর্শ করছিলেন।

আমি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছিলাম কীভাবে একজন আল্লাহর লোক এ পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। হঠাৎ তার ভিতরের অবস্থার এক পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম যেন কেউ তার কানে কানে কিছু বলছে। তিনি বললেন : ইনশাআল্লাহ

তারপর বললেন :

আজকে কী বার ? আজকের দোয়া আনো!

আমি সেদিনের দোয়া পড়লাম।

তারপর বললাম :

আগা সাইয়্যেদ আহমদও তা পড়ুক।

তিনিও তা পড়লেন। এরপর হযরত শেইখ বললেন : তোমাদের হাত আকাশের দিকে তোল এবং বলো :

ইয়া কারীম আল-আফ , ইয়া আযীম আল আফ।

(হে মর্যাদাবান ক্ষমা করো , হে বিরাট ক্ষমা করো)

আমি আমার বন্ধুর দিকে তাকালাম এবং বললাম :

আমি যাই আগা সুহাইলকে নিয়ে আসি মনে হচ্ছে আমার দেখা স্বপ্ন সত্যি হতে যাচ্ছে। তিনি তার শেষ সময়ে এসে গেছেন , এবং আমি চলে গেলাম।

স্বাগতম আমার মাওলা (অভিভাবক)

হযরত শেইখের ছেলে বাকি ঘটনা এভাবে বর্ণনা করেছেন :

আমি দেখলাম আমার বাবার কক্ষ ভর্তি লোক। তারা বলছিলো হযরত শেইখের অবস্থা খুবই খারাপ। আমি সাথে সাথে কক্ষে প্রবেশ করলাম এবং দেখলাম আমার বাবা যিনি কয়েক মুহূর্ত আগে ওযু করে এসেছেন হেলান দিয়ে কেবলামুখী হয়ে বসে আছেন । হঠাৎ করে তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং মুচকি হেসে বললেন :

স্বাগতম আমার প্রিয় মাওলা! 173

মনে হলো তিনি কারো সাথে হাত মেলালেন , শুয়ে গেলেন এবং চলে গেলেন মুখে মুচকী হাসি নিয়ে!

দাফনের পর প্রথম রাতে

তার আরেক বন্ধু বলেন :

আমি স্বপ্নে হযরত শেইখকে দাফনের পর প্রথম রাত্রে দেখলাম । আমি দেখলাম মাওলা আমিরুল মুমিনিন আলী (আঃ) তাকে এক বিরাট মাক্বাম দান করেছেন। আমি সেই মাক্বামের দিকে অগ্রসর হলাম , আমাকে দেখার সাথে সাথে তিনি খুব একটি নরম দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালেন যেমন একজন বাবা তার সন্তানকে সতর্ক করেন যখন সে কোন বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছে না। তার চাউনি আমাকে মনে করিয়ে দিলো যা তিনি সব সময় বলতেন :

আল্লাহ ছাড়া আর কিছু চেয়ো না।

(কিন্তু আমরা তখনও শরীরী আকাঙ্ক্ষায় বন্দী ছিলাম)। আমি আরো কাছে গেলাম। তিনি দু টো বাক্য বললেন :

প্রথম বাক্য : জীবনের আনন্দ হচ্ছে আল্লাহর ও তাঁর বন্ধুদের সান্নিধ্য। 174

এবং দ্বিতীয় বাক্য : তিনি [ইমাম আলী (আঃ)] জীবন যাপন করেছিলেন [এমন এক সত্য জীবন] যে তার স্ত্রী (হযরত ফাতেমা (আঃ) তার শার্টটি আল্লাহর পথে দান করে দিয়েছিলেন বাসর রাতে।

তাই তার উপর সালাম যেদিন তিনি জন্ম নিয়েছিলেন , যে দিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন এবং যেদিন তাঁকে জীবিত উত্থিত করা হবে , (আবার)।