পরিশিষ্ট -3
ব্যবহৃত কতিপয় পরিভাষা
(
‘
আঃ ):
নবী-রাসূলগণ ও হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর আহলে বাইতের ধারায় আগত মা‘
ছ্বূম্ ইমামগণ সহ মা‘‘
ছ্বূম্ ব্যক্তিত্বগণের নাম উচ্চারণের পর পঠিতব্য দো‘
আর নির্দেশক। মূল বাক্যাবলী :‘
আলাইহিস্ সালাম - তাঁর (পুরুষ) ওপর শান্তি বর্ষিত হোক ,‘
আলাইহাস্ সালাম - তাঁর (নারী) ওপর শান্তি বর্ষিত হোক ,:‘
আলাইহিমাস্ সালাম - তাঁদের উভয়ের (দু’
জন পুরুষ , দু’
জন নারী বা দু’
জন নারী-পুরুষ) ওপর শান্তি বর্ষিত হোক ,‘
আলাইহিমুস সালাম - তাঁদের (পুরুষ বা নারী-পুরুষ) ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।
আকরাম (
اکرم
)
:
অধিকতর বা সর্বাধিক সম্মানের অধিকারী ও সম্মানার্হ। দইু ব্যক্তির মধ্যে একজনকে“
আকরাম”
বলা হলে তার অর্থ হবে‘
অধিকতর সম্মানিত ও সম্মানার্হ’
এবং বহু জন বা সকলের মধ্যে‘
আকরাম’
বলা হলে তার অর্থ হবে ঐ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বা সকল মানুষের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ও সম্মানার্হ। হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)কে সকল নবী-রাসূলের (‘
আঃ) মধ্যে তথা সমগ্র মানব প্রজাতির মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ও সম্মানার্হ অর্থে“
রাসূলে আকরাম”
বলা হয়।
‘
আক্বাএদ্ (
عقائد
)
:
عقيدة
(‘
আক্বীদাহ্) শব্দের বহুবচন।‘
আক্বীদাহ্ মানে‘
বিশ্বাস’
, তবে ভিত্তিহীন অন্ধ বিশ্বাস নয়। পারিভাষিক অর্থে জীবন ও জগতের অন্তরালে নিহিত মহাসত্য সম্বন্ধে বিচারবুদ্ধির অকাট্য রায় ও ঐশী কিতাব্ ভিত্তিক ধারণা। ইসলামে এ ধারণার মধ্যে রয়েছে তিনটি মৌলিক বিষয় এবং তা থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন শাখা-প্রশাখাগত ধারণা। তিনটি মৌলিক বিষয় হচ্ছে তাওহীদ , আখেরাত ও নবুওয়াত। এ তিনটি বিষয়কেاصول
عقاءد
(‘
আক্বাএদের মূলনীতিমালা বা‘
আক্বাএদের ভিত্তিসমূহ) বলা হয়। (1) তাওহীদ বলতে বুঝায় : এ পরিবর্তনশীল ও ধ্বংসশীল জীবন ও জগতের পিছনে একজন মহাজ্ঞানময় ও সীমাহীন শক্তি-ক্ষমতার অধিকারী একজন অক্ষয়-অব্যয় চিরন্তন চিরজীবী সত্তার অস্তিত্ব রয়েছে - আরবী ভাষায় যাকে“
আল্লাহ্”
বলা হয়েছে। তিনি সকল পূর্ণতাবাচক গুণাবলীর অধিকারী এবং সকল প্রকার দুর্বলতা থেকে মুক্ত। (2) আখেরাত্ বলতে বুঝায় : যেহেতু এ দুনিয়ার বুকে সকল ভালো-মন্দ ও ন্যায়-অন্যায়ের পুরষ্কার ও শাস্তি কার্যকর হতে দেখা যায় না সেহেতু মানবপ্রকৃতি দাবী করে যে , মৃত্যুর পরে পুনরায় জীবিত করে সৃষ্টিকর্তা এ পার্থিব জগতের শাস্তি ও পুরষ্কারের অপূর্ণতাকে 310 সম্পূরণ করুন। আর যেহেতু তিনি সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী এবং তিনিই মানুষের মনে এ ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা দিয়েছেন সেহেতু অবশ্যই তিনি তা করবেন। (3) নবুওয়াতবলতে বুঝায়: যেহেতু মানুষের সহজাত প্রকৃতি ও বিচারবুদ্ধি সব ক্ষেত্রে তাকে পথ দেখাতে সক্ষম নয় এবং ক্ষেত্রবিশেষে সহজাত প্রকৃতি ও বিচারবুদ্ধি দুর্বল ও বিকৃত হয়ে পড়ে , সেহেতু সহজাত প্রবণতাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা , অসুস্থ হয়ে পড়া বিচারবুদ্ধির ভুল সংশোধন এবং দ্বিধাদ্বন্দ্বের ক্ষেত্রগুলোতে পথ দেখানোর লক্ষ্যে সে খোদায়ী পথনির্দেশের মুখাপেক্ষী। সৃষ্টিকর্তা যুগে যুগে তাঁর সর্বোত্তম বান্দাহদের মাধ্যমে এ ধরনের পথনির্দেশ দিয়েছেন। এ পর্যায়ের সর্বশেষ , পূর্ণাঙ্গ ও সকল প্রকার ভুলত্রুটি ও বিকৃতি থেকে সুরক্ষার অধিকারী ক্বিয়ামত্ পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য পথনির্দেশ কোরআন মজীদ নাযিল্ হয় এখন থেকে চৌদ্দশ’
বছর আগে হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)-এর ওপর। তিনি সর্বশেষ নবী বিধায় তাঁর পরে আর কোনো নতুন নবীর আগমন ঘটবে না। ফেরেশতা , বেহেশত-দোযখ ইত্যাদি বিষয় হচ্ছে‘
আক্বাএদের প্রশাখাগত বিষয়। প্রথমতঃ‘
আক্বাএদের তিনটি মৌলিক বিষয়ে বিচারবুদ্ধির আলোকে পর্যালোচনা করে ফয়ছালায় পৌঁছতে হবে। বিচারবুদ্ধি তাওহীদ , আখেরাত ও শেষ নবীর নবুওয়াতের সত্যতায় উপনীত হলে অতঃপর বিচারবুদ্ধির কাছে ঐশী গ্রন্থ হিসেবে প্রমাণিত কোরআন মজীদের আলোকে‘
আক্বাএদের এ তিনটি বিষয়ের জ্ঞান সম্প্রসারিত হবে ও অধিকতর শক্তিশালী হবে এবং সেই সথে‘
আক্বাএদের প্রশাখাগত বিষয়গুলোর জ্ঞানও অর্জিত হবে।
‘
আক্বীদাহ্ (
عقيدة
)
:‘
আক্বাএদ্-এর একবচন।
আখলাক্ব্ (
اخلق
) :
আচার-আচরণ। পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের সকল প্রকার সম্পর্ক এর মধ্যে শামিল।
আখলাক্বী (
اخلقی
)
: আখলাক্ব্ সম্বন্ধীয়।
আখেরাত্ (
آخرة
)
: পরকাল। মৃত্যুর পর পুনর্জীবন , পার্থিব জীবনের ভালোমন্দ কাজের বিচার এবং তদনুযায়ী শাস্তি ও পুরষ্কার সহ অনন্ত জীবন। মৃত্যু ও পুনর্জীবনের মধ্যবর্তী সময়টিতে মানুষের ব্যক্তিসত্তাকেنفس
) ) একটি অন্তবর্তী জগতে রাখা হয় যাকে‘
আালমে বারযাখ বলা হয়।
আযাব্ (
عذب
)
: ইসলামী পরিভাষায় প্রাকৃতিক পন্থায় বা অতিপ্রাকৃতিক পন্থায় কোনো জনগোষ্ঠীকে সাধারণভাবে প্রদত্ত শাস্তি। এছাড়া অপরাধীদেরকে‘
আালমে বারযাখে বা কবরের জগতে যে শাস্তি দেয়া হয় এবং শেষ বিচারের পরে যে শাস্তি দেয়া হবে তাকেও‘
আযাব্ বলা হয়।
‘
আরশ
(
عرش
)
: শাব্দিক অর্থ‘
ডেক্’
, যেমন : জাহাযের ডেককে‘
আরশ বলা হয়। কিন্তু ইসলামী পরিভাষায়‘
আরশ হচ্ছে এ পৃথিবীর বহির্ভূত ও মানবীয় জ্ঞানের আওতার বাইরে অবস্থিত এক বিশাল-বিস্তৃত ও বিস্ময়কর মহাসৃষ্টি - যার স্বরূপ একমাত্র আল্লাহ্ তা‘
আলাই জানেন।
আালে ইব্রাহীম্ (
آل
ابرا
ههم
)
: হযরত ইবরাহীমের (‘
আঃ) বংশধরগণ। পারিভাষিক অর্থে তাঁর বংশে আগত নবী-রাসূলগণ (‘
আঃ) ও আল্লাহ্ তা‘
আলার পক্ষ থেকে মনোনীত মা‘
ছ্বূম্ ইমামগণ (‘
আঃ)।
আালে
‘
ইমরান
(
آل
عمران
)
: হযরত মূসা (‘
আঃ)-এর পিতার নাম ছিলো‘
ইমরান । তেমনি হযরত মারইয়ামের (‘
আঃ) পিতার নামও ছিলো‘
ইমরান । তবে আালে‘
ইমরান বলতে প্রথমোক্ত‘
ইমরানের বংশে আগত নবী-রাসূলগণ (‘
আঃ) ও আল্লাহ্ তা‘
আলার পক্ষ থেকে মনোনীত মা‘
ছ্বূম্ ইমামগণকে (‘
আঃ) বুঝানো হয়। আালে মুহাম্মাদ (آل
محمد
) : আহলে বাইত্ (‘
আঃ)।
আশা
‘
এরী (
اشاعری
)
: আবূ মূসা আশ্‘
আরীর চিন্তা-বিশ্বাসের অনুসারী। আবূ মূসার মতে , মানুষের কোনো এখতিয়ার নেই ; আল্লাহ্ যা চান মানুষকে দিয়ে তা-ই করিয়ে নেন এবং মানুষ তা-ই (পাপ-পুণ্য নির্বিশেষে) করতে বাধ্য।
আহলে বাইত্ (
اهل
البيت
)
: আভিধানিক অর্থ‘
গৃহের অধিবাসী’
অর্থাৎ যে কোনো ব্যক্তির বাড়ীতে বসবাসকারী তার পরিবারের সদস্য ও পোষ্যগণ। কিন্তু ইসলামী পরিভাষায় আহলে বাইত্ মানে হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর আহলে বাইত্ - ব্যক্তি হিসেবে নয় , রাসূল হিসেবে। এতে শামিল নবী করীম (ছ্বাঃ)-এর কন্যা হযরত ফাত্বেমাহ্ (‘
আঃ) ও জামাতা হযরত আলী (‘
আঃ) , তাঁদের দু’
জনের সন্তান হযরত ইমাম হাসান (‘
আঃ) ও হযরত ইমাম হোসেন (‘
আঃ) এবং হযরত ইমাম হোসেন (‘
আঃ)-এর বংশে আগত নয়জন মা‘
ছ্বূম ইমাম (‘
আঃ)।
আয়াত (
آية
)
: শাব্দিক অর্থ নিদর্শন বা চিহ্ন। পারিভাষিক অর্থ বিশেষ খোদায়ী নিদর্শন। এ কারণেই মু‘
জিযাহকেও আয়াত্ বলা হয়। তবে শব্দটির প্রথম ব্যবহারিক অর্থ হচ্ছে কোরআন মজীদের বিশেষ তাৎপর্যজ্ঞাপক বাক্য , বা বাক্যসমষ্টি।
ইজতিহাদ (
اجتهاد
)
: গবেষণা। দ্বীনের মৌলিক জ্ঞানসূত্রসমূহ অধ্যয়ন ও তা নিয়ে গবেষণা করে যুগসমস্যাবলীর সমাধান উদ্ভাবনের নাম ইজতিহাদ। এ কাজ যিনি করেন তাঁকে বলা হয় মুজতাহিদ্।
ইব্নে রাসূলিল্লাহ্ (
ابن
رسول
الله
)
: আল্লাহর রাসূলের পুত্র বা বংশধর। আরবী ভাষায়ابن
শব্দ‘
পুত্র’
ও‘
পুরুষ বংশধর’
- এ উভয় অর্থেই ব্যবহৃত হয়। তাই হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর বংশধর তথা হযরত ফাত্বেমাহ্ (‘
আঃ)-এর বংশধর বুযুর্গ ব্যক্তিদেরকে সম্মান সহকারে“
ইব্নে রাসূলিল্লাহ্”
বলে সম্বোধন করা হতো। তেমনি হযরত ফাত্বেমাহ্ (‘
আঃ) ও তাঁর কন্যা বংশধর মহীয়ষী নারীদেরকে“
বিন্তে রাসূলিল্লাহ্”
বলে সম্বোধন করা হতো।
‘
ইবাদত্ (
عبادة
)
: উপাসনা।
ইমাম (
امام
)
: নেতা। ইসলামী পারিভাষিক অর্থে বিশেষ দ্বীনী মর্যাদা সম্পন্ন দ্বীনী নেতা। যেমন : আহলে বাইতের ধারাবাহিকতায় আগত ইমামগণ (‘
আঃ) , চার সুন্নী মাযহাবের চার ইমাম। এছাড়া“
ছ্বিহাহ্ সিত্তাহ্”
নামে বিখ্যাত ছয়টি হাদীছগ্রন্থের সংকলকগণ ও আরো অনেক বিখ্যাত দ্বীনী ব্যক্তিত্বকে , যেমন : ইমাম খোমেইনী (রহ্ঃ) কে ইমাম বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া সাধারণ অর্থে , নামাযে যিনি সবার সামনে থাকেন - অন্যরা যার অনুসরণে নামায আদায় করে , তাঁকেও ইমাম বলা হয়।
ইলাহ (
اله
)
: উপাস্য। ইসলামে‘
ইবাদত্-উপাসনা ও নিরঙ্কুশ-নিঃশর্ত আনুগত্য লাভের একমাত্র অধিকারী (আল্লাহ্)।
ঈমান (
ايمان
)
: আভিধানিক অর্থ‘
নিরাপদকরণ’
। ইসলামী পারিভাষিক অর্থ আল্লাহকে জীবন ও জগতের একমাত্র আদি উৎস ও‘
ইবাদত্-আনুগত্যের একমাত্র অধিকারী , মৃত্যুর পরে আল্লাহ্ মানুষকে পুনরায় জীবিত করে তাদের পার্থিব কাজের ভালোমন্দের পুরষ্কার ও শাস্তি দেবেন এবং হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ) মানুষের কাছে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পৌঁছানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বশেষ নবী ও রাসূল - এ বিষয়গুলোকে সত্য জানার পর তা মুখে ঘোষণা করা এবং তদনুযায়ী কাজ করে পরকালীন জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে নিজেকে নিরাপদ করা।
‘
ঈসা (
عيسی
)
: আল্লাহ্ তা‘
আলার পক্ষ থেকে প্রেরিত অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নবী -খৃস্ট ধর্মাবলম্বীরা যাকে যীশূখৃস্ট বলে থাকে।
উম্মাত্ /
উম্মাহ্
(
امة
)
: আদর্শভিত্তিক জাতি বা জনগোষ্ঠী। সমস্ত মুসলমানকে একত্রে“
মুসলিম উম্মাহ্”
বা“
ইসলামী উম্মাহ্”
বলা হয়।
এখতিয়ার (
اختيار
)
: আভিধানিক অর্থ‘
বেছে নেয়া’
। ইসলামী কালামশাস্ত্রের পরিভাষায় মানুষের নিজের ইচ্ছা মতো কোনো কাজ করা বা করা হতে বিরত থাকার ক্ষমতা। বাংলা ভাষায় আইনগত অধিকার ও কর্তৃত্ব অর্থে ব্যবহার করা হয়।
ওয়াহী (
وحی
)
: ঐশী প্রত্যাদেশ। আল্লাহ্ তা‘
আলার পক্ষ থেকে নবী-রাসূলগণের (‘
আঃ) নিকট সরাসরি বা ফেরেশ্তার মাধ্যমে পৌঁছানো জ্ঞান , বাণী ও নির্দেশাবলী।
করীম (
کريم
)
: সম্মানিত , সম্মানার্হ। নবী করীম - সম্মানিত নবী। কোরআনে করীম - বিশেষ মর্যাদার অধিকারী ও সম্মানার্হ গ্রন্থ কোরআন।
ক্বাছীদাহ্ (
قصيدة
)
: বিশেষ ধরনের আরবী , ফার্সী বা উর্দূ কবিতা। সাধারণতঃ প্রশংসাবাচক বা গৌরবগাথা মূলক নাতিদীর্ঘ কবিতা।
কাফের (
کافر
)
: ইসলামী পরিভাষায় অমুসলিম - প্রধানতঃ নাস্তিক ও অংশীবাদী।
কা
‘
বাহ্ (
کعبة
)
: পবিত্র মক্কাহ্ নগরীতে অবস্থিত মানবজাতির ইতিহাসের প্রাচীনতম গৃহ ও‘
ইবাদত-গৃহ - যা প্রথমে প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী হযরত আদম (‘
আঃ) কর্তৃক নির্মিত হয় এবং পরে তা হযরত ইব্রাহীম্ (‘
আঃ) কর্তৃক পুনঃনির্মিত হয়। এটি মুসলমানদের জন্য পবিত্রতম গৃহ এবং মুসলমানরা এ গৃহের দিকে মুখ করে নামায আদায় করে।
কায্যাব্ (
کذاب
)
: যে ব্যক্তি অত্যন্ত বেশী বা নিয়মিত মিথ্যা বলে। মুসাইলামাহ্ যেহেতু মিথ্যা নবুওয়াতের দাবী করেছিলো , সেহেতু (এহেন অতি গুরুত্বপূর্ণ ও সুস্পষ্ট বিষয়ে মিথ্যা বলার কারণে) তাকে“
মুসাইলামাহ্ কায্যাব্”
(অতি বড় মিথ্যাবাদী মুসাইলামাহ্) বলে ইতিহাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্বারী (
قاری
)
: পাঠক। ইসলামী পারিভাষিক অর্থে যিনি শুদ্ধ করে ও নির্ধারিত সুললিত ভঙ্গিতে কোরআন পাঠ করেন। তবে ইসলামের প্রথম যুগে ক্বারী বলতে শুধু শুদ্ধ ও সুন্দর করে কোরআন পাঠ সহ কোরআনের জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তিকে বুঝাতো।
কালাম্ (
کلم
)
: কথা , বক্তব্য। কালামশাস্ত্র (‘
ইলমে কালাম্) মানে ইসলামী‘
আক্বাএদ্ সংক্রান্ত শাস্ত্র।
ক্বিবলাহ্ (
قبلة
)
: কেন্দ্র - যাকে সামনে রাখা হয়। ইসলামী পরিভাষায় মসজিদুল হারাম - মুসলমানরা যেদিকে মুখ করে নামায আদায় করে থাকে।
ক্বিয়াম্ (
قيام
)
: দাঁড়ানো। ইসলামী পরিভাষায় নামাযের একটি অংশ আদায়ের সময় দাঁড়ানো অবস্থা। এছাড়া ক্বিয়াম্-এর আরো অর্থ আছে , যেমন : জাগরণ ও অভ্যুত্থান।
ক্বিয়ামত্ (
قيامة
)
: শেষ বিচারের আগে সমগ্র সৃষ্টিলোকের ধ্বংস।
কেরাম (
کرام
)
:کريم
-এর বহুবচন।
খবরে ওয়াহেদ্ (
خبر
واحد
)
: হাদীছ শাস্ত্রের একটি প্রকরণ বাচক পরিভাষা। যে সব হাদীছ বিশেষ করে প্রথম দিককার কোনো স্তরে এক বা একাধিক বর্ণনাকারী কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে , কিন্তু একাধিক বর্ণনাকারী কর্তৃক বর্ণিত হলেও বর্ণনাকারীদের সংখ্যা তাওয়াতোর পর্যায়ে উপনীত হওয়ার মতো বেশী নয়।
খোদা (
خدا
)
:“
আল্লাহ্”
র সমার্থক ফার্সী শব্দ।
গযব (
غذب
)
: ক্রোধ , অসন্তুষ্টি , আক্রোশ। পারিভাষিক অর্থে পার্থিব জীবনে আল্লাহ্ তা‘
আলার পক্ষ থেকে আগত শাস্তি। গ্বাফেল্ (غافل
) : অমনোযোগী।
ছ্বাহীফাহ্ (
صحيفة
)
: ঐশী পুস্তিকা।
ছ্বালাত্ (
صلة
/
صلوة
)
: নামায। কোরআন মজীদে এর ক্রিয়াপদ দরূদ অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে।
ছ্বাহাবী (
صحابی
)
: সঙ্গী। পারিভাষিক অর্থে হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর সঙ্গী-সাথীগণ।জান্নাত্ (
جناة
)
: বেহেশত , স্বর্গ ; পরকালীন জীবনে ঈমানদার সৎকর্মশীলদের বসবাসের স্থান। জাবর (جبر
) : বাধ্যতামূলক অবস্থা। কালামশাস্ত্রে“
এখতিয়ার”
-এর বিপরীত। অর্থাৎ মানুষ শুধু তা-ই করে আল্লাহ্ তাকে দিয়ে যা করান -এ বিশ্বাস।
জাহান্নাম (
جهنم
)
: দোযখ , নরক।
জাহেলী যুগ (
ايام
جاهلية
/
عهد
جاهلية
)
: মূর্খতার যুগ , অজ্ঞতার যুগ। আরবের ইসলাম-পূর্ব যুগ। তৎকালে আরবরা শিক্ষা , জ্ঞান-বিজ্ঞান , সভ্যতাসং স্কৃতি ও দ্বীনী হেদায়াত থেকে বঞ্চিত ছিলো।
জিবরাঈল (
جبرئيل
)
: নবী-রাসূলগণের (‘
আঃ) নিকট ঐশী ওয়াহী পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব পালনকারী ফেরেশতা।
জ্বিন্ (
جن
)
: আগুনের উপাদানে তৈরী সূক্ষ্ম দেহধারী বুদ্ধিমান প্রজাতি।
তা
‘
আলা (
تعالی
)
: সমুন্নত , মহান।
তাওহীদ্ (
توحيد
)
: এ সৃষ্টিলোকের অস্তিত্ব দান ও টিকিয়ে রাখার পিছনে একজন মাত্র চিরন্তন পরম জ্ঞানী ও অসীম ক্ষমতাবান সত্তা আছেন (আরবী পরিভাষায় যার নাম“
আল্লাহ্”
) - যার সৃষ্টি ও পরিচালনায় অন্য কোনো অংশীদার নেই এবং এ কারণে তিনি ছাড়া কেউ ইবাদত-উপাসনা ও নিঃশর্ত আনুগত্যের অধিকারী নেই - এ মর্মে অকাট্য প্রত্যয় এবং তার মৌখিক ও কার্যতঃ স্বীকৃতি।
তাওয়াজ্জুহ্ (
توجه
)
: মনোযোগ , দৃষ্টিদান।
তাওয়াতোর
(
تواتر
)
: কোনো ঘটনার বর্ণনা বা কোনো উক্তির উদ্ধৃতি বর্ণনাকারীদের প্রতিটি স্তরে এতো বেশী সংখ্যক লোক কর্তৃক বর্ণিত হওয়া যে সংখ্যক লোকের পক্ষে মিথ্যা রচনার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়াকে সুস্থ বিচারবুদ্ধি সম্ভব বলে মনে করে না। এরূপ সূত্রে বর্ণিত হাদীছকে মুতাওয়াতির ((متواتر
হাদীছ বলা হয়।
তাক্ব্ওয়া (
تقوی
)
: আভিধানিক অর্থ বেঁচে থাকা (ক্ষতিকর জিনিস থেকে)। ইসলামী পরিভাষায় পারলৌকিক জীবনে চরম ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকার লক্ষ্যে আল্লাহ্ তা‘
আলার নির্দেশিত ও সন্তুষ্টিদায়ক কার্যাবলী সম্পাদন এবং তাঁর অসন্তুষ্টি সৃষ্টিকারী ও সন্দেহজনক কার্যাবলী পুরোপুরি পরিহার করে চলা।
তাক্ভীনী (
تگوينی
)
: সৃষ্টি ও পরিচালনা সংশ্লিষ্ট ঐশী কাজকর্ম।
দরূদ (
درود
)
: আভিধানিক অর্থ দো‘
আ। পারিভাষিক অর্থে হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর জন্য বিশেষ দো‘
আ যাতে তাঁকে ও তাঁর নেককার বংশধরদেরকে অভিনন্দিত করার জন্য আল্লাহ্ তা‘
আলার কাছে আবেদন জানানো হয়। এ জন্য বিভিন্ন বিধিবদ্ধ বাক্য আছে। এর মধ্যে সংক্ষিপ্ততম বাক্য হচ্ছে :“
আল্লাহুম্মা ছ্বাল্লে‘
আলা মুহাম্মাদ্ ওয়া আালে মুহাম্মাদ্ - হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ ও আালে মুহাম্মাদ্কে অভিনন্দিত করুন।”
দলীল (
دليل
)
: প্রমাণ। লিপিবদ্ধ ডকুমেন্ট , সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক তথা যার সাহায্যে কোনো কিছু প্রমাণ করা যায়। এর মধ্যে ডকুমেন্ট ও সাক্ষ্যকে বলা হয়دليل
نقلی
- উদ্ধৃতিযোগ্য দলীল এবং যুক্তিতর্ককে বলা হয়ليل
عقلید
- বিচারবুদ্ধিজাত দলীল।
দ্বীন (
دين
)
: পথ , পন্থা , ব্যবস্থা। এ পরিভাষাটির আরো অনেক অর্থ আছে। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য দেয়া জীবনের সকল দিক সম্পর্কে বিধিবিধান সম্বলিত ব্যবস্থা।
দো
‘
আ (
دعا
)
: আভিধানিক অর্থ‘
আহ্বান’
। পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ্ তা‘
আলার নিকট নিজের বা অন্যের ইহকালীন ও পরকালীন যে কেনো প্রয়োজন পূরণ ও কল্যাণের জন্য প্রার্থনা।
দোযখ (
دوزخ
)
: জাহান্নাম , নরক।
নবী (
نبی
)
: আভিধানিক অর্থ বার্তাবাহক। পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ্ তা‘
আলার পক্ষ থেকে মানুষকে আল্লাহর পসন্দনীয় ও আদিষ্ট পথ দেখানো ও সেদিকে আহ্বান করা এবং তাঁর পসন্দনীয় পথে চলার শুভ পরিণতি , বিশেষতঃ পরকালীন পুরস্কারের সুসংবাদ প্রদানের এবং তাঁর অপসন্দনীয় পথে চলার খারাপ পরিণতি সম্পর্কে , বিশেষতঃ পরকালীন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
নবুওয়াত্ (
نبوة
)
: নবীর পদ।
না
‘
ঊযু বিল্লাহি মিন্ যালিক্ (
نعوذ
بالله
من
ذالک
)
: দো‘
আ বিশেষ - যার অর্থ :“
আমরা ঐ (বিষয়/ বস্তু/ জিনিস/ কাজ/ কথা) থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় নিচ্ছি।”
যা শোনা অনুচিত এমন কথা কানে এলে অথবা যা উচ্চারণ বা উদ্ধৃত করা অনুচিত অপরিহার্য প্রয়োজনে তা উচ্চারণ বা উদ্ধৃত করলে এ দো‘
আ পড়তে হয়। এক বচনে“
নাঊযু”
স্থলে“
আ‘
ঊযু”
বলা হয়।
নাযিল্ (
نازل
)
: যা অবতরণ করে। খোদায়ী ওয়াহী অবস্তুগত জগত থেকে মানবিক জগতে মানগভাবে অবতরণ করে বিধায় একে ওয়াহী নাযিল্ হওয়া বলে।
নে
‘
আমত্ (
نعمة
)
: দান , অনুগ্রহ। আল্লাহ্ তা‘
আলা মানুষকে শারীরিক , মানসিক , নৈতিক এবং বস্তুগত ও অবস্তুগত কল্যাণকর যতো কিছু দিয়েছেন তার সবই এর মধ্যে শামিল। এমনকি সে নিজ চেষ্টা-সাধনায় উত্তম ও কল্যাণকর যা কিছু অর্জন করে তা-ও আল্লাহ্ তা‘
আলার নে‘
আমত্। কারণ , সে সবের উপায়-উপকরণ এবং অর্জনকারী নিজে ও তার শক্তিক্ষমতা আল্লাহ্ তা‘
আলারই দান।
পরহেযগারী (
پرهيزکاری
)
: (ফার্সী শব্দ) তাক্ব্ওয়ার অধিকারী হওয়া।
ফক্বীহ্ (
فقيه
)
: ইসলামের সকল দিক সম্পর্কে , বিশেষ করে সকল প্রকার করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞানের অধিকারী।
ফাসাদ (
فساد
)
: বিপর্যয় , বিশৃঙ্খলা , আল্লাহ্ তা‘
আলার হুকুম অমান্যমূলক কাজ , দুর্নীতি ইত্যাদি।
ফাছ্বাহাত্
(
فصاحة
)
: সাহিত্যণ্ডিত বাচননৈপুণ্য। এ সম্পর্কে মূল গ্রন্থে‘
বালাগ্বাত্ ও ফাছ্বাহাত্ কী ?’
শীর্ষক প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ফিক্ব্হী (
فقهی
)
: ফিক্বাহ্ সংক্রান্ত।
ফিক্বাহ্ (
فقه
)
:‘
ইবাদত-বন্দেগী , আচার-আচরণ , লেনদেন , আইন ও বিচার সহ জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলাম নির্দেশিত সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান।
ফিতনাহ্ (
فتنة
)
: পরীক্ষা। পারিভাষিক অর্থে দ্বীনী বিষয়ে বিভ্রান্তি , দিশাহারা অবস্থা , বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয়।
ফিরক্বাহ্ (
فرقة
)
: প্রধানতঃ গৌণ ও বিশেষ ইজতিহাদী মতের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ধর্মীয় উপদল।
ফেরেশ্তা (
فرشته
)
: (ফার্সী শব্দ) সদাসর্বদা আল্লাহ্ তা‘
আলার হুকুম পালনে নিরত একদল অবস্তুগত আত্মিক সৃষ্টি (আরবী : মালাক্ ; বহুবচনে মালাএকাহ্)।
বন্দেগী (
بندگی
)
: (ফার্সী শব্দ)‘
ইবাদত-উপাসনা , দাসত্ব (আরবী :‘
ইবাদত্)।
বান্দাহ্ (
بنده
)
: (ফার্সী শব্দ) গোলাম , দাস (আরবী :‘
আব্দ্)।
বালাগ্বাত্ (
بلغة
)
: সাহিত্যমণ্ডিত বাচননৈপুণ্য। এ সম্পর্কে মূল গ্রন্থে‘
বালাগ্বাত্ ও ফাছ্বাহাত্ কী ?’
শীর্ষক প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বেহেশ্ত্ (
بهشت
)
: (ফার্সী শব্দ) জান্নাত্ , স্বর্গ।
মজীদ (
مجيد
)
: সম্মানিত , বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। এ অর্থেই কোরআনকে“
কোরআন মজীদ”
বলা হয়।
মায্হাব (
مذهب
)
: আভিধানিক অর্থ চলার পথ। পারিভাষিক অর্থ ইসলামের প্রধান প্রধান ধর্মীয় উপদল এবং তার অনুসৃত বিধিবিধান।
মাসীহ্ (
مسيح
) :
হযরত‘
ঈসা (‘
আঃ)।
মুক্বাদ্দামাহ (
مقدمة
) :
পটভূমি , ক্ষেত্র , পূর্বশর্ত , পূর্বপ্রস্তুতি , ভূমিকা। মূল কথা বা কাজের আগে অবস্থানের কারণে মুক্বাদ্দামাহ্ বলা হয়।
মুজতাহিদ্ (
مجتهد
) :
ইজতিহাদ্কারী ও ইজতিহাদের যোগ্যতার অধিকারী ব্যক্তি।
মুতাওয়াতির (
متواتر
) :
তাওয়াতোর পর্যায়ভুক্ত (হাদীছ ও বর্ণনা)।
মুনাজাত (
مناجات
) :
দো‘
আ (প্রধানতঃ হাত তুলে)।
মুফাসসির (
مفسر
) :
কোরআন মজীদের ব্যাখ্যাকারী।
মুফাসসিরীন্ (
مفسرين
) :
“
মুফাসসির”
-এর বহু বচন।
মুহাম্মাদ (
محمد
) :
আল্লাহ্ তা‘
আলার পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবীর নাম।
মোশরেক (
مشرک
) :
অংশীবাদী , বহু-ঈশ্বরবাদী , পৌত্তলিক , মূর্তিপূজারী।
মোস্তফা (
مصطفی
) :
মহাসম্মানিত। রাসূলে আকরাম হযরত মুহাম্মাদ (ছ্বাঃ)- এর অন্যতম খেতাব। (রহ্ঃ) :“
রাহমাতুল্লাহি‘
আলাইহি - তাঁর ওপর আল্লাহর রহমত হোক।”
মৃত বিশিষ্ট দ্বীনী ব্যক্তির নামোল্লেখের পর দো‘
আ বাচক বাক্য (এক বচনে পুরুষের জন্য)। এক বচনে নারীর জন্য“
রাহমাতুল্লাহি‘
আলাইহা”
, দ্বিবচনে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে“
রাহমাতুল্লাহি‘
আলাইহিমা”
ও বহুবচনে“
রাহমাতুল্লাহি‘
আলাইহিম্”
বলা হয়।
রাসূল্ (
رسول
) :
“
নবী”
দ্রষ্টব্য।
রিসালাত্ (
رسالة
) :
রাসূলের পদ।
রেওয়াইয়াত্ (
رواية
) :
বর্ণনা। সাধারণতঃ ছ্বাহাবী ও তদপরবর্তী দ্বীনী ব্যক্তিত্বগণের বক্তব্য। অবশ্য অনেক ক্ষেত্রে নবী করীম (ছ্বাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীছকেও রেওয়াইয়াত্ বলা হয়।
শরী
‘
আত্ (
شرعية
) :
দ্বীনী বিধিবিধান (সমষ্টিগতভাবে)।
শহীদ (
شهيد
) :
আল্লাহর দ্বীনের প্রচার-প্রসার ও হেফাযতের চেষ্টা করার পরিণামে ইসলামের দুশমনদের হাতে নিহত ব্যক্তি।
শিয়া (
شيعة
) :
মুসলমানদের মধ্যকার প্রধান দু’
টি মাযহাবী ধারার অন্যতম। শিয়া মায্হাবের অনুসারীরা হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর ওফাতের পর উম্মাতের দ্বীনী ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধিকার হযরত আলীর (‘
আঃ) এবং তাঁর ও হযরত ফাতেমার (‘
আঃ) সন্তান ও বংশধর আরো এগারো জন নিস্পাপ দ্বীনী ব্যক্তিত্বের (পর্যায়ক্রমিকভাবে) বলে‘
আক্বীদাহ্ পোষণ করে।
(
ছ্বাঃ ) :
হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর নামোচ্চারণ ও শ্রবণের পর দরূদ পড়ার নির্দেশক যাতে বলা হয় :“
ছ্বাল্লাল্লাহু‘
আলাইহি ওয়া আালেহি ওয়া সাল্লাম্ - আল্লাহ্ তাঁর প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠান”
। বাংলা ভাষায় অতীতে এ জন্য সাধারণতঃ (দঃ) লেখা হতো , কারণ , তা আল্লাহ্ তা‘
আলার দরূদ পাঠানোর উল্লেখ নয় , বরং দরূদ পাঠের নির্দেশক। এ অর্থে , হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর নামোচ্চারণ ও শ্রবণের পর দরূদ পড়তে হবে যার সংক্ষিপ্ততম হচ্ছে“
আল্লাহুম্মা ছ্বাল্লে‘
আলা মুহাম্মাদ্ ওয়া আালে মুহাম্মাদ্ - হে আল্লাহ্! মুহাম্মাদ ও আালে মুহাম্মাদের প্রতি দরূদ বর্ষণ করুন”
।
সালাম্ (
سلم
) :
শান্তি। মুসলমানদের পারস্পরিক সাক্ষাতে পরস্পরের উদ্দেশে আন্তরিক সম্ভাষণ ও দো‘
আ। সংক্ষিপ্ততম সালাম হচ্ছে :“
সালামুন্‘
আলাইকুম”
ও“
আস্-সালামু‘
আলাইকুম”
যার মানে“
আপনাদের ওপর সালাম”
এবং এর জবাব“
ওয়া‘
আলাইকুমুস সালাম”
- যার অর্থ অভিন।ড়ব সেই সাথে আরো শব্দ যোগ করা যেতে পারে , যেমন :“
আস্-সালামু‘
আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়্ বারাকাতুহ্”
(“
আপনাদের ওপর সালাম্ এবং আল্লাহর রহমত ও তাঁর বরকত বর্ষিত হোক)।
সালামুল্লাহি
‘
আলাইহা (
سلم
الله
عليها
) :
‘
আলাইহাস্ সালাম্-এর বিকল্প।
সুন্নাত্
(سنة
) :
আদর্শ , নীতি , নিয়ম। ইসলামী পরিভাষায় হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর নির্দেশিত বা আচরিত অনুসরণীয় নীতি ও আচরণ। কথাটি ছ্বাহাবীগণের অনুসরণীয় আচরণ সম্বন্ধেও ব্যবহৃত হয়। সে ক্ষেত্রে“
সুন্নাতে ছ্বাহাবাহ্”
বলা হয়।
সুন্নী
(سنی
) :
মুসলমানদের মধ্যকার প্রধান দু’
টি মায্হাবী ধারার অন্যতম। সুন্নী মতে , হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর ইন্তেকালের পর উম্মাতের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব বেছে নেয়ার দায়িত্ব স্বয়ং উম্মাতের।
সূরাহ্ (
سورة
) :
কোরআন মজীদের স্বতন্ত্র শিরোনামযুক্ত অধ্যায় সমূহ।
হযরত (
حضرت
) :
বিশিষ্ট দ্বীনী ব্যক্তিত্বগণের নামের শুরুতে উল্লেখনীয় সম্মানার্থক শব্দ যা ইংরেজী Excellency-এর সমার্থক।
হাদীছ (
حديث
) :
হযরত রাসূলে আকরাম (ছ্বাঃ)-এর কথা ও কাজ এবং তাঁর সামনে সম্পাদিত ছ্বাহাবীগণের কাজ। সম্প্রসারিত অর্থে ছ্বাহাবীগণের শিক্ষণীয় কথা ও কাজকেও হাদীছ বলা হয় এবং এ জন্য সাধারণতঃ“
হাদীছে ছ্বাহাবী”
পরিভাষা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অনেক প্রাচীন গ্রন্থে হাদীছ অর্থে“
রেওয়াইয়াত্”
পরিভাষারও ব্যবহার আছে।
হাফেয (
حافظ
) :
আভিধানিক অর্থ সংরক্ষক। পারিভাষিক অর্থ পুরো কোরআন মজীদ মুখস্তকারী ব্যক্তি।
হিকমত্ (
حکمة
) :
পরম জ্ঞান , অকাট্য জ্ঞান , প্রজ্ঞা।
হিজরত (
هجرة
) :
ইসলাম গ্রহণ বা ইসলাম অনুযায়ী জীবন যাপনের কারণে ইসলামের দুশমনদের দুশমনীর ফলে নিজ জন্মভূমি বা বাসস্থানে বসবাস করা দুর্বিষহ হয়ে পড়ায় অন্যত্র চলে যাওয়া ও তথায় অভিবাসী হওয়া।
হুরূফে মুক্বাত্ব্ত্বা
‘
আত্ (
حروف
مقطعات
) :
কোরআন মজীদের কোনো কোনো সূরাহর শুরুতে ব্যবহৃত বিচ্ছিন্ন বর্ণসমষ্টি যা ঐ সূরাহর প্রথম আয়াত্ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে , যেমন :الم،
الر،
یس
ইত্যাদি। এসব হরফের তাৎপর্য নিয়ে পরবর্তী প্রজন্মসমূহের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে নিশ্চয়তার সাথে যা বলা যায় তা হচ্ছে , তৎকালে আরবদের মধ্যে বক্তৃতা ভাষণের শুরুতে এ ধরনের বিচ্ছিন্ন বর্ণসমষ্টি উচ্চারণের প্রচলন ছিলো এবং এ কারণেই মোশরেকরা এগুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলে নি এবং ছ্বাহাবীগণও এগুলোর অর্থ জানতে চান নি।
হেদায়াত্ (
هداية
) :
পথনির্দেশ , পথপ্রদশর্ন , পরিচালনা করে লক্ষস্থলে পৌঁছে দেয়া।