ইমাম হোসেইন (আ.) এর কাছে উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদের চিঠি
“
আম্মা বা’
আদ , হে হোসেইন , আমাকে জানানো হয়েছে যে , তুমি কারবালায় থেমেছো। ইয়াযীদ আমাকে লিখেছে , আমি যেন বিছানায় মাথা না রাখি এবং সন্তুষ্ট না হই যতক্ষণ না আমি তোমাকে আল্লাহর কাছে পাঠাচ্ছি অথবা তুমি আমার কাছে এবং ইয়াযীদ বিন মুয়াবিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ কর। সালাম।”
যখন এ চিঠি ইমাম হোসেইন (আ.) এর কাছে পৌঁছলো , তিনি তা পড়লেন এবং তা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললেন ,“
যে আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে মানুষের সন্তুষ্টি খোঁজে সে কখনই সফলতা লাভ করে না।”
দূত তাকে চিঠির উত্তর দিতে বললে ইমাম বললেন ,“
তার জন্য কোন উত্তর নেই , আছে গযব (আল্লাহর)।”
যখন দূত উবায়দুল্লাহর কাছে পৌঁছলো এবং ইমামের বাণী তার কাছে পৌঁছে দিলো সে ক্রোধান্বিত হলো এবং উমর বিন সা’
আদের দিকে তাকালো এবং তাকে ইমাম হোসেইন (আ.) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য নিয়োগ দিলো। এর আগে উবায়দুল্লাহ রেই শহরের শাসনভার উমর বিন সা’
আদকে দান করেছিলো। যখন উমর অপারগতা প্রকাশ করলো উবায়দুল্লাহ তাকে সে পদ ফেরত দিতে বললো যা তাকে দান করা হয়েছিলো। উমর কিছুটা সময় চেয়ে নিলো এবং এরপর তার কাছ থেকে শাসনভার কেড়ে নেয়া হবে এ ভয়ে রাজী হলো।
লেখক বলেছেন যে এটি (যুদ্ধ করতে উমর বিন সা’
আদের অপারগতা প্রকাশ) আমার কাছে সত্য বলে মনে হয় না। নির্ভরযোগ্য জীবনী লেখকগণ এবং ঐতিহাসিকরা একমত যে উমর বিন সা’
আদ কারবালায় পৌঁছায় ইমাম হোসেইন (আ.) সেখানে প্রবেশের একদিন পর এবং তা ছিলো মহররমের তিন তারিখ (তাই তা প্রমাণ করে যে সে তার জন্য শুরু থেকেই প্রস্তুত ছিলো)।
শেইখ মুফীদ , ইবনে আসীর এবং অন্যান্যরা বর্ণনা করেন যে , উমর বিন সা’
আদ বিন আবি ওয়াক্কাস পর দিন চার হাজার ঘোড়সওয়ার সৈন্য নিয়ে কুফা ত্যাগ করে কারবালার দিকে রওনা দিলো। ইবনে আসীর বলেন যে , উমর বিন সা’
আদের কারবালায় যাওয়ার কারণ হলো যে , উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদ আগে তাকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলো‘
দাশতি’
-তে ,সুসজ্জিত চার হাজার সৈন্য দিয়ে। কারণ দাইলামের লোকেরা এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছিলো এবং দ্বিতীয়ত উবায়দুল্লাহ তাকে রেই শহরের দায়িত্ব দিয়েছিলো। উমর বিন সা’
আদ হাম্মামুল আ’
য়ানে তাঁবু গেড়েছিলো। যখন ইমাম হোসেইন (আ.) এর বিষয়টি এ পর্যায়ে পৌঁছলো , উবায়দুল্লাহ উমর বিন সা’
আদকে ডাকলো এবং বললো ,“
যাও , হোসেইনের মোকাবিলা করো এবং কাজ শেষ করে তোমার অবস্থানে ফিরে যাও।”
উমর বিন সা’
আদ নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইলো , তখন উবায়দুল্লাহ বললো ,“
ঠিক আছে , তাহলে তুমি তা ফেরত দাও যা তোমাকে দেয়া হয়েছে।”
যখন উবায়দুল্লাহ এরকম বললো তখন উমর জবাব দিলো ,“
আজকের দিনটি আমাকে সময় দিন যেন আমি একটি সিদ্ধান্তনিতে পারি।”
এ কথা বলে সে স্থান ত্যাগ করলো এবং হিতাকাঙ্ক্ষীদের কাছে মতামত চাইলো। তাদের সকলে তাকে তা থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ দিলো। তার ভাগ্নে হামযা বিন মুগীরা বিন শা’
বাহ তার কাছে এলো ও বললো ,“
আমি আপনাকে আল্লাহর নামে অনুরোধ করছি হোসেইনকে মোকাবিলা না করার জন্য , কারণ তা করলে আপনি গুনাহ করবেন এবং তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন। আল্লাহর শপথ , যদি আপনাকে পৃথিবী , এর সম্পদ ও পৃথিবীর উপর রাজত্ব ছাড়তে হয় , তাহলেও এটি আপনার জন্য উত্তম তার চাইতে যে , আপনি আল্লাহর কাছে যাবেন আর হোসেইনের রক্ত আপনার ঘাড়ে থাকবে।”
উমর বললো সে তা করবে না এবং সারারাত ভেবে কাটালো এই বলে ,“
আমি কি রেই-এর শাসনভার প্রত্যাখ্যান করতে পারি , অথচ তা আমার স্বপ্ন , নাকি ফেরত আসবো হোসেইনের হত্যায় অভিযুক্ত হয়ে ? যদি আমি তাকে হত্যা করি আমি জাহান্নামে চলে যাবো , যেখান থেকে পালানোর কোন পথ নেই অথচ রেই-এর শাসনভার আমার চোখের জ্যোতি।”
এরপর সে উবায়দুল্লাহর কাছে ফিরে গেলো এবং বললো ,“
আপনি আমাকে এ কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন এবং সব মানুষ তা শুনেছে। যদি আপনি চান আপনি আমাকে এ কাজে পাঠাতে পারেন অথবা কুফার সম্মানিতদের মাঝে থেকে অন্য কাউকে হোসেইনের বিরুদ্ধে পাঠাতে পারেন , যে আমার চাইতে যোগ্য হবে।”
এরপর সে তাদের কারো কারো নাম উল্লেখ করলো। উবায়দুল্লাহ বললো ,“
যদি আমাকে অন্য কাউকে পাঠাতে হয় তাহলে আমি তোমার মতামত জিজ্ঞেস করবো না। তাই এখন যদি তুমি কারবালায় যেতে প্রস্তুত থাকো আমাদের সৈন্যদলের উপর আদেশের দায়িত্ব নিয়ে , তাহলে যাও অথবা যে পদ তোমাকে দেয়া হয়েছে তা ফেরত দাও।”
এ কথা শুনে উমর বললো ,“
আমি নিজেই যাবো।”
এ কথা বলে সে রওনা দিলো এবং শেষ পর্যন্ত ইমাম হোসেইন (আ.) এর উল্টোদিকে তাঁবু ফেললো।
লেখক বলছেন যে , ইমাম আলী (আ.) যে ভবিষ্যদ্বাণী বাণী করেছিলেন তা সত্যে পরিণত হয়েছিলো। সিবতে ইবনে জাওযি তার‘
তাযকিরাহ’
তে বর্ণনা করেছেন যে , ইমাম আলী (আ.) এর মর্যাদা এখানে সুস্পষ্ট হয়ে যায়। একদিন তিনি উমর বিন সা’
আদের সাক্ষাত পান , যখন সে বালক ছিলো , এবং বললেন ,“
হে সাদের সন্তান , আক্ষেপ তোমার জন্য , তখন তোমার অবস্থা কেমন হবে যেদিন তুমি বেহেশত ও দোযখের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে থাকবে এবং তুমি দোযখ পছন্দ করবে ?”
যখন উমর কারবালায় পৌঁছলো সে নাইনাওয়াতে থামলো।
[‘
ইরশাদ’
গ্রন্থে আছে] যখন উমর বিন সা’
আদ কারবালায় পৌঁছলো , সে উরওয়াহ বিন ক্বায়েস আহমাসিকে ডাকলো এবং বললো ,“
হোসেইনের কাছে যাও এবং জিজ্ঞেস করো কেন সে এখানে এসেছে এবং সে কী চায়।”
সে বললো , সে যেতে লজ্জাবোধ করছে , কারণ সে ছিলো তাদের একজন যারা তাকে আসতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এরপর উমর একই বিষয়ে তার সৈন্যদলের যাকেই বললো সে অপারগতা প্রকাশ করলো। কারণ তারা ছিলো তাদের অন্তুর্ভুক্ত যারা ইমামকে চিঠি লিখেছিলো। তখন কাসীর বিন আব্দুল্লাহ শা’
বি , যে ছিলো একজন সাহসী ব্যক্তি এবং যে কোন কাজ থেকে কখনো মুখ ফিরিয়ে নিতো না , উঠে দাঁড়ালো এবং বললো ,“
আমি যাবো এবং আপনি যদি চান আমি তাকে হত্যা করবো।”
উমর বললো ,“
আমি তাকে হত্যা করতে চাই না , তার কাছে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস করো কেন সে এখানে এসেছে।”
কাসীর গেলো এবং আবু সামামাহ সায়েদি তাকে দেখলেন এবং বললেন ,“
হে আবা আবদিল্লাহ আল্লাহ আপনাকে বন্ধুত্ব দিন , এক ব্যক্তি আপনার দিকে আসছে যে এথিপ বীর বাসিন্দাদের মধ্যে নিকৃষ্টতম এবং যে সবচেয়ে উদ্ধত এবং যে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী রক্ত ঝরিয়েছে।”
এরপর আবু সামামাহ নিজে উঠে দাঁড়ালেন এবং তার কাছে গেলেন এবং তাকে বললেন তার তরবারি নামিয়ে রাখতে। সে তা করতে অস্বীকার করলো এবং বললো ,“
আমি শুধু একজন দূত , যদি চাও আমি তা তোমার কাছে বলবো অথবা ফিরে যাবো।”
আবু সামামাহ বললেন ,“
সে ক্ষেত্রে আমি আমার হাত রাখবো তোমার তরবারির হাতলের উপর এরপর তুমি তোমার সংবাদ পৌঁছাতে পারো।”
সে বললো ,“
না , আমি তোমার হাতকে সেখানে পৌঁছতে দিবো না।”
আবু সামামাহ বললেন ,“
তাহলে তুমি তোমার সংবাদ আমার কাছে বলো আমি তা হোসেইনের কাছে পৌঁছে দিবো। কিন্তু আমি তোমাকে তার কাছে যেতে দিবো না , কারণ তুমি একজন বদমাশ ব্যক্তি।”
তারপর তারা পরস্পরকে গালিগালাজ করতে লাগলো , যতক্ষণ না উমর বিন সা’
দের কাছে কাসীর ফেরত গেলো এবং তাকে সব জানালো।
উমর কুররাহ বিন ক্বায়েস হানযালিকে ডাকলো এবং বললো ,“
আক্ষেপ তোমার জন্য , হোসেইনের কাছে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস করো কেন সে এখানে এসেছে এবং সে কী চায়।”
যখন ইমাম (আ.) কুররাহকে দেখলেন , তিনি জিজ্ঞেস করলেন ,“
কেউ কি এ লোককে চেনে ?”
হাবীব বিন মুযাহির বললেন ,“
হ্যাঁ , সে তামীমের হানযালা উপগোত্রের এবং সে আমাদের বোনের ছেলে , আমি তাকে বিশ্বাসী হিসেবে জানতাম এবং কখনো ভাবিনি সে এখানে এভাবে আসবে।”
কুররাহ এসে ইমামকে সালাম জানালো এবং উমরের সংবাদ পৌঁছে দিলো। ইমাম উত্তর দিলেন ,“
তোমাদের শহরের লোকেরা আমাকে চিঠি লিখেছে এবং আমাকে এখানে আসার জন্য অনুরোধ করেছে , কিন্তু যদি তোমরা আমার উপস্থিতিকে ঘৃণা করো তাহলে আমি ফিরে যাবো।”
তখন হাবীব বিন মুযাহির বললেন ,“
হে কুররাহ , আক্ষেপ তোমার জন্য , তুমি কি অত্যাচারীদের কাছে ফেরত যাচ্ছো ? এ মানুষটিকে সাহায্য করো যার পিতৃপুরুষদের কারণে আল্লাহ তোমাকে দয়া করবেন।”
কুররাহ বললো ,“
আমি ফিরে যাবো এবং ইমামের সংবাদ উমরের কাছে পৌঁছে দিবো এবং এ বিষয়ে চিন্তা করবো।”
সে ফিরে গেলো এবং উমরের কাছে পৌঁছে দিলো যা ইমাম তাকে বলেছেন। তখন উমর বললো ,“
আমি আশা করি আল্লাহ আমাকে রক্ষা করবেন তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা থেকে।”
এরপর সে উবায়দুল্লাহর কাছে লিখলো ,“
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম , আম্মা বা’
আদ , যখন আমি আমার গন্তব্যে পৌঁছেছি , আমি হোসেইনের কাছে একজন দূত পাঠালাম তাকে জিজ্ঞেস করে কেন সে এখানে এসেছে এবং সে কী চায়। সে উত্তর দিয়েছে যে , এ শহরের লোকেরা তাকে চিঠি লিখেছে এবং তার কাছে দূত পাঠিয়েছে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে। তাই সে এখানে এসেছে। সে বলছে যে: যদি এ লোকেরা আমার উপস্থিতি পছন্দ না করে এবং তাদের কথার বিপরীত দিকে চলে গিয়ে থাকে , যা আমার কাছে তাদের দূত মারফত জানানো হয়েছিলো তাহলে আমি ফিরে চলে যাবো।”
হাসান বিন আয়েয আসাবি বলেছে যে , আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম যখন উমরের চিঠি উবায়দুল্লাহর কাছে পৌঁছে। উবায়দুল্লাহ যখন এ চিঠি পড়লো সে বললো ,“
যখন সে আমাদের থাবার ভিতর আটকা পড়েছে সে পালাবার আশা করছে। এখন পালানোর পথ নেই।”
এরপর সে উমর বিন সা’
আদের কাছে চিঠি লিখলো ,“
আম্মা বা’
আদ , আমি তোমার চিঠি পেয়েছি এবং তুমি সেখানে যা লিখেছো তা বুঝতে পেরেছি। হোসেইন ও তার সাথীদের কাছে একটি প্রস্তাব দাও যে তারা ইয়াযীদের প্রতি বাইয়াত হোক। যদি সে তা করে আমরা দেখবো কী করা যায়। সালাম।”
যখন উমর চিঠি পেলো সে বললো ,“
আমি শঙ্কায় ছিলাম যে উবায়দুল্লাহ ন্যায়বিচার করবে না।”
মুহাম্মাদ বিন আবি তালিব বলেন যে , উমর বিন সা’
আদ উবায়দুল্লাহ বিন যিয়াদের এ প্রস্তাব ইমাম হোসেইন (আ.) এর কাছে পৌঁছায় নি , কারণ সে জানতো যে ইমাম কখনোই ইয়াযীদের কাছে বাইয়াত হবেন না , এরপর উবায়দুল্লাহ সবরুপষকেফকার বড় মসজিদে জমায়েত হতে আদেশ দিলো। তারপর সে বেরিয়ে এসে মিম্বরে উঠলো এবং বললো ,“
হে জনগণ , তোমরা আবু সুফিয়ানের পরিবারকে ভালোভাবেই পরীক্ষা করেছো এবং তোমরা তাদেরকে যেমন চেয়েছো তেমন পেয়েছো ; এ হলো বিশ্বাসীদের আমির ইয়াযীদ। যার আচার-ব্যবহার সুন্দর , যার চেহারা ভালো এবং তার প্রজাদের প্রতি দয়ালু। সে প্রত্যেকের অধিকার দেয় এবং তার রাজ্যে রাস্তাগুলো নিরাপদ। তার পিতা মুয়াবিয়াও তার সময় একই রকম ছিলো। তার পরে তার সন্তান ইয়াযীদও আল্লাহর বান্দাহদের সম্মান করেন এবং তাদেরকে সম্পদ দিয়ে ধনী করেন এবং তাদের মর্যাদা দেন। তিনি তোমাদের অধিকারকে একশ গুণ বৃদ্ধি করেছেন এবং আমাকে আদেশ করেছেন তা আরও বৃদ্ধি করতে এবং তোমাদেরকে প্রস্তুত করতে তার শত্রু হোসেইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে। তাই তার কথা শোন এবং তার আদেশ পালন করো।”
এ কথা বলে সে মিম্বর থেকে নেমে গেলো এবং লোকজনের মাঝে প্রচুর উপহার বিতরণ করলো এবং তাদেরকে হোসেইনের বিরুদ্ধে উমর বিন সা’
আদকে সাহায্য করতে পাঠালো।
[‘
মানাক্বিব’
গ্রন্থে আছে] উবায়দুল্লাহ কারবালাতে সৈন্য পাঠাতে থাকলো যতক্ষণ না উমর বিন সা’
আদের সাথে বিশ হাজার অশ্বারোহী সৈন্য [মালহুফ] জমায়েত হলো মহররমের ছয় তারিখ পর্যন্ত। [তাসলীয়াতুল মাজালিস অনুযায়ী] এরপর উবায়দুল্লাহ একজনকে পাঠালো শাবাস বিন রাব’
ঈর কাছে এ কথা বলে ,“
আমার কাছে আসো যেন আমি তোমাকে হোসেইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠাতে পারি।”
সে অসুস্থ থাকার ভান করলো এবং নিজেকে সরিয়ে নিলো। উবায়দুল্লাহ তাকে একটি চিঠি পাঠালো এ বলে ,“
আম্মা বা’
আদ , আমার দূত আমাকে জানিয়েছে যে তুমি অসুস্থতার ভান করছো এবং আমি শঙ্কিত যে তুমি না জানি তাদের একজন যারা
)
وَإِذَا لَقُوا الَّذِينَ آمَنُوا قَالُوا آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْا إِلَى شَيَاطِينِهِمْ قَالُوا إِنَّا مَعَكُمْ إِنَّمَا نَحْنُ مُسْتَهْزِئُون(
‘
যখন তারা বিশ্বাসীদের সাথে মিলিত হয় তারা বলে: আমরা বিশ্বাস করি ; কিন্তু যখন তারা তাদের শয়তানদের কাছে ফেরত যায় , তারা বলে , নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের সাথে আছি , আমরা শুধু মশকরা করছিলাম।’
[সূরা বাকারা: ১৪]
যদি তুমি আমাদের আনুগত্যে দৃঢ় থাকো , আমাদের কাছে দ্রুত আসো।”
শাবাস ইশার নামাযের পর এলো যেন উবায়দুল্লাহ তার চেহারা না দেখতে পারে যা অসুস্থতা মুক্ত ছিলো। যখন শাবাস এলো উবায়দুল্লাহ তাকে স্বাগত জানালো এবং তাকে তার কাছে বসালো এবং বললো ,“
আমি চাই যে তুমি সে লোকটির (হোসেইনের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাও এবং উমর বিন সা’
আদকে সাহায্য করো।”
শাবাস বললো যে , সে তা অবশ্যই করবে [মানক্বিব] । সে তাকে এক হাজার অশ্বারোহী দিয়ে পাঠালো।
[‘
ইরশাদ’
গ্রন্থে , তাবারি উল্লেখ করেন] এরপর উবায়দুল্লাহ উমর বিন সা’
আদকে লিখলো ,“
আম্মা বা’
আদ , হোসেইন ও তার সাথীদেরকে পানি পানে বাধা দাও। তারা এক ফোঁটা পানিও যেন না পায় যেভাবে (খলিফা) উসমান বিন আফফানের সাথে আচরণ করা হয়েছিলো।”
উমর বিন সা’
আদ সাথে সাথে আমর বিন হাজ্জাজকে পাঁচ শত অশ্বারোহী দিয়ে ফোরাত নদীর তীরে পাঠালো এবং ইমাম ও তার সাথীদের পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিলো। তারা তাদেরকে এক ফোঁটা পানি নিতে দিলো না এবং তা ছিলো ইমাম হোসেইন (আ.) এর শাহাদাতের তিন দিন আগে থেকে (সাত মহররম) ।
[তাবারির গ্রন্থে উল্লেখ আছে] উবায়দুল্লাহ বিন হাসীন আযদি ছিলো বাজিলা গোত্রের (সৈন্যদলের) অন্তর্ভুক্ত , সে উচ্চ কণ্ঠে বললো , [ইরশাদ]“
হে হোসেইন , তুমি কি পানিকে বেহেশতের নহরের মত দেখতে পাও ? আল্লাহর শপথ , তুমি এর এক ফোঁটাও স্বাদ নিতে পারবে না যতক্ষণ না তৃষ্ণায় মৃত্যুবরণ কর।”
ইমাম হোসেইন (আ.) উত্তর দিলেন ,“
হে আল্লাহ , তাকে তৃষ্ণায় মৃত্যু দাও এবং তাকে কখনো ক্ষমা করো না।”
হামিদ বিন মুসলিম বলেছে যে ,“
আল্লাহর শপথ , আমি তাকে তার অসুস্থ অবস্থায় দেখতে গিয়েছিলাম। আল্লাহর শপথ যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই , আমি তাকে পানি পান করতে দেখলাম তার কণ্ঠনালী পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত এরপর সে তা বমি করে ফেললো। তখন সে চিৎকার করে বললো: পিপাসা , পিপাসা , এবং পানি পান করলো তার কণ্ঠনালী পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত এবং সে তৃপ্ত হলো না , সে এ অবস্থায় রইলো মৃত্যু পর্যন্ত (তার উপর আল্লাহর অভিশাপ) ।”