গাদীরের আচার-অনুষ্ঠান
অতীতে মুসলমানদের মধ্যে ঈদে গাদীর
যদি ঈদের অর্থ মানুষের জীবনের মহান স্মরণীয় ঘটনার প্রত্যাবর্তন হয়ে থাকে তাহলে ইসলামী সংস্কৃতির মাপকাঠিতে গাদীর দিবস এ মর্যাদার যোগ্য যে , সাধারণভাবে মানবজাতি এবং বিশেষ করে মুসলমানরা সর্ববৃহৎ ঈদ হিসেবে দিনটি উৎযাপন করবে। কেননা মানুষের জীবনে সর্ববৃহৎ ঘটনা এই দিনেই সংঘটিত হয়েছে। যেহেতু হাদীসের ভাষ্যনুযায়ী জানি যে , এই দিনেই দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণতা লাভ করেছে।
সকল ঐশী দ্বীন ছিল ইসলামের ভূমিকা স্বরূপ , আর ইসলাম গাদীর দিবসে পরিপূর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহ তায়ালাও এ ধর্মকে মানুষের জন্য নির্বাচন করেছেন।
)
ال
ْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا(
অর্থাৎ“
আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। তোমাদের প্রতি আমি আমার নেয়ামত (অনুগ্রহ) সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ (মনোনীত) করলাম।”
কোন ঘটনাই দ্বীন পূর্ণ হওয়ার ঘটনার মত মানুষের জীবনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে না। আর সে কারণেই কোন দিবসই গাদীর দিবসের মত আনন্দ-উৎসব করার ক্ষেত্রে সমতুল্য নয়। আর ঠিক এই দলিলের ভিত্তিতেই রাসূল (সা.) স্বয়ং এই দিনকে ঈদ হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং মুসলমানদেরকে বলেছেন তাকে (সা.) যেন অভিবাদন জানানো হয়।
তিনি বলেছেনঃ
هنئونی , هنئونی ان اللّه تعالی خصنی بالنبوه و خص اهل بیتی بالامامه
অর্থাৎ আমাকে অভিবাদন জানাও , আমাকে অভিবাদন জানাও মহান আল্লাহ আমাকে নবুয়্যতের আর আমার পরিবারবর্গকে ইমামতের বৈশিষ্ট্যের অধিকারী করেছেন।
তিনি আরো বলেনঃ
یوم الغدیر افضل اعیاد امتی و هو الیوم الذی امرنی اللّه تعالی ذکره بنصب اخی علی بن ابیطالب علما لا متی یهتدون به من بعدی و هو الیوم الذی اکمل اللّه فیه الدین و اتم علی امتی فیه النعمه و رضی لهم الا سلام دینا
অর্থাৎ“
গাদীর দিবসটি আমার উম্মতের জন্য সর্ববৃহৎ ঈদগুলির অন্যতম। তা এমন একটি দিন , যে দিনে আল্লাহ আমাকে নির্দেশ দান করেছেন যে , আমার ভাই আলীকে যেন আমার উম্মতের নিশান বা নিদর্শন হিসেবে নিয়োগ দান করি যাতে আমার পরে সে যেন এই পথকে অব্যাহত রাখে এবং ঐ দিন এমনই দিন , যে দিনে আল্লাহ তায়ালা দ্বীনকে পূর্ণতা ও তার নেয়ামতকে আমার উম্মতের জন্য সম্পূর্ণ করেছেন আর ইসলাম তাদের দ্বীন হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি সন্তুষ্ট হয়েছেন।”
অতএব , ইসলামী ঈদ হিসেবে গাদীর দিবসের প্রতি মনোযোগ রাসূল (সা.)-এর সময় হতেই ছিল। রাসূলই (সা.) এই দিনকে ঈদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন , তিনিই প্রকৃত পক্ষে এই ঈদের পতিষ্ঠাতা। রাসূল (সা.)-এর পরে ইমামগণও এই দিনকে ঈদের দিন হিসেবে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতেন। আমিরুল মু’
মিনীন আলী (আ.) কোন এক শুক্রবার দিনে , যে দিনটি গাদীর দিবসও ছিল সেদিন তিনি একটি খুতবা পাঠ করেন। যে খুতবায় বলেনঃ
“
আল্লাহ তোমাদেরকে রহমত দান করুন। আজ তোমাদের পরিবারের জন্য তোমরা উদার হস্তে খরচ কর , তোমাদের ভ্রাতাদের প্রতি তোমরা সদয় হও , এই নেয়ামত যা আল্লাহ তোমাদেরকে প্রদান করেছেন তার জন্য তার নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। ঐক্যবদ্ধ থাক যাতে আল্লাহ তোমাদেরকে বিক্ষিপ্ত অবস্থা হতে একত্রিত করতে পারেন। একে অন্যের পতি সদাচারী ও সদয় হও যাতে আল্লাহ এই সদাচরণ ও দয়ার কারণে তোমাদের সমাজের উপর কল্যাণ দান করেন। তাই এই ঈদের সওয়াব বা প্রতিদান অন্যান্য ঈদের তুলনায় কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। তার প্রেরিত নেয়ামত হতে একে অপরকে উপহার প্রদান কর। এই দিনের কল্যাণকর কাজ তোমাদের ধন-সম্পদকে বৃদ্ধি করবে ও তোমাদের আয়ু বৃদ্ধি করবে। এই দিনে তোমাদের দয়া-অনুগ্রহ আল্লাহর দয়া-অনুগ্রহকে আকৃষ্ট করবে।”
আমরা জানি যে , আমিরুল মু’
মিনীন আলী (আ.)-এর শাসনামলে অনেক সাহাবী জীবিত ছিলেন যারা এই কথাগুলি শ্রবণ করেছিলেন। যদি এই ঈদ তাদের নিকট সুনিশ্চিত না হত তাহলে তারা অবশ্যই প্রতিবাদ করতেন।
অতএব , আমিরুল মু’
মিনীন আলী (আ.)-এর সময়কাল হতে যতদিন হাদীস বর্ণনাকারীগণ হাদীস লিপিবদ্ধ করেছেন ততদিন পর্যন্ত এবং সকল ইমামই এই দিনের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার বিষয় থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে , তারাঁ সকলেই এই দিনকে ঈদ হিসেবেই জানতেন এবং সম্মানের সাথে তা উদযাপন করতেন। এই দিনে তারাও রোজা রাখতেন এবং সাহাবী ও আত্মীয়-স্বজনকেও রোজা রাখতে বলতেন।
সিকাতুল ইসলাম কুলাইনী , তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ কাফী’
তে সালেম হতে বর্ণনা করেছেন , তিনি বলেনঃ আমি ইমাম সাদিককে (আ.) জিজ্ঞেস করলামঃ মুসলমানদের জন্য জুম’
আ , ফিতর ও আযহা ব্যতীত অন্য কোন ঈদ আছে কি ?
বললেনঃ হ্যাঁ , সবচেয়ে বড় ঈদ।
বললামঃ সেটা কোন্ দিন ?
বললেনঃ যে দিন আল্লাহর রাসূল (সা.) আমিরুল মু’
মিনীন আলীকে (আ.) অভিভাবক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন ও বলেছিলেনঃ
من کنت مولاه فعلی مولاه
অর্থাৎ আমি যাদের অভিভাবক এই আলীও তাদের অভিভাবক।
হাসান ইবনে রাশেদ থেকেও বর্ণিত হয়েছে যে , তিনি বলেন- ইমাম সাদিক (আ.) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ
আমার প্রাণ আপনার জন্য উৎসর্গিত। মুসলমানদের ঈদুল ফিতর ও আযহা ছাড়াও কি ঈদ আছে ? বললেনঃ হা আছে। যেটা ঐ দু’
টার চেয়েও বড় ও সম্মানের। বললামঃ সেটা কোন্ দিন ? বললেনঃ যেদিন আমিরুল মু’
মিনীন আলী (আ.) অভিভাবকত্বের পদলাভ করেন। বললামঃ আপনার জন্য আমি উৎসর্গিত। উক্ত দিনে আমাদের করণীয় কি ? বললেনঃ রোজা রাখ , রাসূল (সা.)-এর উপর ও তার পরিবারবর্গের উপর বেশি বেশি দূরদ পাঠ কর এবং যারা তাদের উপর জুলুম-অত্যাচার করেছে তাদের প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ ও ব্যক্ত কর। আল্লাহর প্রেরিত রাসূলগণ তাদের স্থলাভিষিক্তদেরক নির্দেশ দিতেন যে , স্থলাভিষিক্ত নির্ধারণের দিনকে যেন ঈদ হিসাবে উদযাপন করা হয়। বললামঃ যে এই দিনে রোজা রাখবে তার পুরস্কার কি ? বললেনঃ তার পুরস্কার 60 মাস রোজা রাখার পুরস্কারের সমান।
অনুরূপভাবে ফুরাত ইবনে ইব্রাহিম তার তাফসীর গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে , ইমাম সাদিক (আ.)-এর নিকট প্রশ্ন করা হলঃ মুসলমানদের কি ফিতর , আযহা , জুমআ’
র দিন ও আরাফার দিন ব্যতীত অন্য কোন উত্তম ঈদের দিন আছে ?
বললেনঃ হ্যাঁ , ঐগুলির চেয়ে উত্তম , বড় ও আল্লাহর নিকট ঐগুলির চেয়েও সম্মানিত আর ঐ দিনটি হচ্ছে সেই দিন যেদিন আল্লাহ তার দ্বীনকে পরিপূর্ণ করেছেন এবং তার রাসূল (সা.)-এর উপর এভাবে আয়াত অবতীর্ণ করেছেন যে ,
)
ال
ْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِينًا(
অর্থাৎ“
আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। তোমাদের প্রতি আমি আমার অনুগ্রহকে সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।”
বর্ণনাকারী বললেনঃ সেটা কোন্ দিন ?
বললেনঃ বনী ইসরাঈলের নবীগণ সর্বদা স্থলাভিষিক্ত নির্বাচনের দিনটিকে ঈদ হিসেবে উদযাপন্ করতেন। আর মুসলমানদের ঈদ হচ্ছে সেদিন যেদিন রাসূল (সা.) আলীকে (আ.) অভিভাবক বা স্থলাভিষিক্ত নির্ধারণ করেছেন। আর এ উপলক্ষে কোরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে এবং দ্বীনকে পরিপূর্ণতা দান করেছেন ও তার নেয়ামতকে মু’
মিনদের জন্য সম্পূর্ণ করেছেন।
অনুরূপভাবে বলেনঃ এই দিবসটি হচ্ছে ইবাদত , নামাজ , আনন্দ-উৎসব ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন। কারণ , এই দিনে আল্লাহ আমাদের অভিভাবকত্বের নেয়ামত তোমাদেরকে দান করেছেন। আমি চাই যে , তোমরা এই দিনে রোজা রাখ।
ফাইয়াজ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে উমর তুসী হতে বর্ণিত আছে যে , গাদীর দিবসে আমি ইমাম রেযার (আ.) নিকট উপস্থিত হলাম , দেখলাম যে তিনি তার কিছু সংখ্যক সঙ্গ-সাথিকে ইফতারের জন্য বাড়িতে বসিয়ে রেখেছেন এবং পোশাক-পরিচ্ছদ এমনকি জুতা ও আংটি যেগুলো তাদেরকে উপহার দিয়েছেন , সেগুলো তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তার বাড়িতে ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে যেন ভিন্ন রকম পরিবেশ বিরাজ করছে। তার কর্মচারীবৃন্দকে দেখলাম তারা নতুন নতুন জিনিস পরিধান করেছে এবং বিগত দিনের ব্যবহৃত জিনিসগুলোকেও পাল্টে নতুন করা হয়েছে আর ইমাম রেযা (আ.) উক্ত দিনের মর্যাদা সম্পর্কে তাদের সামনে বক্তব্য দিচ্ছেন।
আলোচ্য বিষয়টি ইতিহাসেও বর্ণনা করা হয়েছে যে , মুসলমানগণ যুগ যুগ ধরে এই দিনটিকে ঈদ হিসেবে পালন করে আসছেন।
আবু রাইহান বিরুনী তার রচিত গ্রন্থ“
আল আসারুল বাকিয়্যাহ”
তে লিখেছেনঃ
জিলহজ্জ মাসের 18 তারিখে , ঈদে গাদীরে খুম আর ঐ নামটি এমন এক স্থানের নাম যেখানে রাসূল (সা.) বিদায় হজ্জের পর অবস্থান করেছিলেন এবং উটের জিনগুলোকে একত্র করে তার উপর উঠে আলী ইবনে আবী তালিবের (আ.) হাত ধরে বলেছিলেনঃ আমি যাদের অভিভাবক এই আলীও তাদের অভিভাবক।
এবং মাসউদী তার গ্রন্থ“
আত্ তানবিহ ওয়াল আশরাফ”
এ লিখেছেনঃ আলী (আ.)-এর সন্তানগণ ও তার শিয়াগণ (অনুসারীগণ) এই দিনটিকে মহান দিবস হিসেবে গণ্য করে।
এবং ইবনে তালহা শাফেয়ী তার গ্রন্থ“
মাতালেবুস সুউল”
এ লিখেছেনঃ এই দিনটিকে গাদীরে খুম দিবস নামে নামকরণ করা হয়েছে এবং এই দিনে ঈদ উৎসব পালন করা হয়। যেহেতু সে সময়টি এমনই সময়ছিল যে সময়ে রাসূল (সা.) তাকে উচ্চ সম্মানে ভূষিত করেন এবং সকল মানুষের মধ্য হতে তাকেই কেবল এই সম্মানিত স্থানে অধিষ্ঠিত করেন।
সালাবী তার“
সিমারুল কুলুব”
গ্রন্থে লিখেছেনঃ গাদীরের রাতটি ঐ রাত যে রাতের পরের দিন রাসূল (সা.) গাদীরে খুমে উটের জিনের উপর উঠে খুতবা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেনঃ
من کنت مولاه فعلی مولاه اللهم و ال من والاه و عاد من عاداه من نصره و اخذل من خذله
অর্থাৎ“
আমি যাদের অভিভাবক এই আলীও তাদের অভিভাবক হে আল্লাহ! যারা তাকে ভালবাসে তাকে তুমি ভালবাস আর যারা তার সাথে শত্রুতা করে তার সাথে শত্রুতা কর ও যারা তাকে সাহায্য করে তাকে সাহায্য কর এবং যারা তাকে লাঞ্চিত করে তুমি তাকে লাঞ্চিত কর।”
শিয়াগণ এই রাতকে অনেক মর্যাদাপূর্ণ বলে মনে করে এবং ইবাদতের মাধ্যমে তাকে স্মরণীয় করে রেখেছে।
অনুরূপভাবে ইবনে খাল্লাকান মুসতানসারের ছেলে মুসতাআলী ফাতেমীর জীবনী অধ্যায়ে লিখেছেনঃ
ঈদে গাদীরের দিনে অর্থাৎ 18ই জিলহজ্জে 487 হিজরীতে জনগণ তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ (অঙ্গীকারাবদ্ধ) করেছেন।
এবং মুসতানসার ফাতেমীর জীবনী অধ্যায়ে লিখেছেনঃ সে বুধবার দিবাগত রাতে যখন 487 হিজরীর জিলহজ্জ মাস শেষ হতে বার দিন বাকী ছিল তখন ইন্তেকাল করে। আর ঐ রাতটি ছিল ঈদে গাদীরের রাত অর্থাৎ 18ই জিলহজ্জ বা ঈদে গাদীরে খুম।
যেমনভাবে আমরা হাদীসসমূহ ও ঐতিহাসিকদের বিবরণে লক্ষ্য করলাম যে , গাদীর দিবসটি রাসূল (সা.)-এর জীবনের শেষ বছরে অর্থাৎ যে বছরে আলীকে (আ.) খেলাফতে অধিষ্টিত করেন সেই বছরেই ঈদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং সেই বছর ও সেই মরুভূমি থেকে যুগ যুগ ধরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মুসলমানদের মাঝে এবং ইসলামী দেশসমূহে এই ঈদ জীবন্ত হয়ে রয়েছে।
ইতিহাসের দৃষ্টিতে , এই দিনটি ইমাম সাদিকের (শাহাদাত 148 হিঃ) যুগে , ইমাম রেযার (শাহাদাত-203 হিঃ) যুগে , ইমাম মাহদী (আ.)-এর গুপ্তকালীন অন্তর্ধানের (গায়বাতে ছোগরা) যুগ অর্থাৎ যে সময় ফুরাত ইবনে ইব্রাহিম কুফী ও কুলাইনী রাজী জন্ম নিয়েছিলেন সে যুগে , মাসউদীর (মৃত্যুঃ 345হিঃ) যুগে , সালাবী নিশাবুরীরু (মৃত্যুঃ 429হিঃ) যুগে , আবু রাইহান বিরুনীর (মৃত্যুঃ 430হিঃ) যুগে , ইবনে তালহা শাফেয়ীর (মৃত্যু 654 হিঃ) যুগে এবং ইবনে খাল্লাকানের (মৃত্যুঃ 681 হিঃ) যুগে ঈদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল।
ভৌগলিক বিস্তৃতির দৃষ্টিকোণ থেকে তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের প্রাচ্যে অর্থাৎ মধ্য এশিয়ার যে অঞ্চলে আবু রাইহান জন্মলাভ করেছিলেন , নিশাবুর যেখানে সালাবী জন্মলাভ করেছিলেন , এই সব স্থান হতে রেই যেখানে কুলাইনী জন্মলাভ করেছিলেন এবং শায়িত আছেন , বাগদাদ যেখানে মাসউদী জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ও বড় হয়েছিলেন , হালাব যেখানে ইবনে তালহা জীবন যাপন করেছেন ও মৃত্যু বরণ করেছেন এবং মিশর যেখানে ইবনে খাল্লাকান জীবন অতিবাহিত করেন এবং ইহলোক ত্যাগ করেন এ সকল স্থানের জনগণ এই ঈদ সম্পর্কে ওয়াকেফহাল ছিলেন এবং তাকে ঈদ হিসেবেই পালন করতেন। এটা এমনি এক অবস্থায় যে , যদি মনেও করি এই মহান ব্যক্তিগণ প্রত্যেকেই তাদের স্বীয় এলাকায় অবস্থান করে এ বিষয়ে খবর প্রদান করেছেন , তারপরেও আমরা জানি যে , তাদের মধ্যে অনেকেই যেমন- মাসউদী ও বিরুনী বেশীরভাগ মুসলিম দেশ সফর করেছেন। দ্বিতীয়তঃ তাদের লিখিত বিভিন্ন রচনাদিতে এই দিনটিকে তারা মুসলমানদের ঈদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।