জ্ঞানের পথে প্রতিবন্ধকতা
বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার কারণে মানুষের কোনো জ্ঞানমাধ্যম যথাযথভাবে কাজ না-ও করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যক্তির পক্ষে ঐ মাধ্যমের সাহায্যে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হয় না।
এ ক্ষেত্রে প্রথমেই সহজাত জ্ঞানের কথা চিন্তা করা যেতে পারে। উল্লেখ্য , সহজাত জ্ঞানের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এমন যে , কোনোরূপ প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিজে নিজেই তা ব্যক্তির মধ্যে সঞ্চারিত হয়। অবশ্য এ জন্য একদিকে যেমন ব্যক্তির প্রকৃতি অবিকৃত থাকতে হবে , অন্যদিকে একটি বিশেষ সহজাত জ্ঞান ব্যক্তির মধ্যে সঞ্চারিত হবার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী পূরণ হতে হবে। উদাহরণস্বরূপ , যৌন জ্ঞানের অধিকারী হবার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট বয়সে উপনীত হওয়া অপরিহার্য ; এর আগে মানবসন্তানের মধ্যে এতদ্বিষয়ক জ্ঞানের উদয় হয় না। কিন্তু কোনো কারণে , যেমন: বয়স হওয়া সত্ত্বেও কোনো শারীরিক বা মানসিক ব্যাধির কারণে কারো মধ্যে যৌনতার জ্ঞানের উদয় না-ও হতে পারে।
ইন্দ্রিয়নিচয়ের দ্বারা আহরণযোগ্য জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রেও শারীরিক বা মানসিক রোগব্যাধি অথবা অঙ্গহানি-অবস্থা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ বাধার ফলে কোনো জ্ঞান অর্জন করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ , যে ব্যক্তি জন্মান্ধ তার পক্ষে রং সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব নয়। তেমনি জন্মবধিরের পক্ষে শব্দ ও সুর সংক্রান্ত জ্ঞান লাভ করা অসম্ভব। অন্যদিকে কারো চোখে এমন ত্রুটি থাকতে পারে যার ফলে সে কোনো কোনো রং-কে বা কোনো কোনো বস্তুর আকারকে বিকৃতরূপে দেখতে পারে এবং তার মনে হতে পারে যে , এ বস্তুগুলোর রং ও আকৃতি ঐরূপই। এ ধরনের ইন্দ্রিয়সম্পর্কিত প্রতিবন্ধকতা সাময়িক বা স্থায়ী হতে পারে। তবে উপযুক্ত চিকিৎসার দ্বারা সাময়িক প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব হতে পারে।
বিচারবুদ্ধি ও অন্তঃকরণের জ্ঞানার্জনের পথে বাধা হিসেবে কাজ করে প্রবৃত্তির তাড়না , প্রেম-ভালোবাসা , হিংসা-বিদ্বেষ , শত্রুতা , ক্রোধ , ঘৃণা ইত্যাদি মানসিক অবস্থা। মানুষের এ সব বৈশিষ্ট্য সুনির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করে গেলে তথা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে নেতিবাচক অবস্থায় উপনীত হলে তা তার বিচারবুদ্ধি ও অন্তঃকরণের জ্ঞানের পথে সাময়িক বা স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ , ক্রোধের বা ভাবাবেগের সময় কারো কাছে যুক্তিসঙ্গত কথাও অযৌক্তিক বা অগ্রহণযোগ্য বা মিথ্যা মনে হতে পারে। কিন্তু ক্রোধ ও ভাবাবেগ প্রশমিত হবার পর সে ঐ কথাটির যৌক্তিকতা বুঝতে পারে।
তেমনি অন্ধ ভালোবাসার কারণে কারো কাছে কোনো ব্যক্তিকে সমস্ত রকমের দোষত্রুটির উর্ধে অনুপম সুন্দর বা অতুলনীয় গুণাবলীসম্পন্ন বলে মনে হতে পারে। কিন্তু পরে স্বাভাবিকভাবেই তার ভালোবাসার তীব্রতা বা উচ্ছ্বাস হ্রাস পেয়ে বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গির ওপর থেকে প্রতিবন্ধকতা দূরীভূত হয়ে তার কাছে ঐ ব্যক্তির দোষত্রুটিগুলো ধরা পড়তে পারে। অন্যদিকে অন্ধ ঘৃণা-বিদ্বেষের কারণে কারো কাছে এক ব্যক্তিকে সব রকমের উত্তম গুণ থেকে বঞ্চিত জঘন্যতম ব্যক্তি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু কালের প্রবাহে তার ঘৃণা-বিদ্বেষের তীব্রতা হ্রাস পাবার পর সে ঐ ব্যক্তির মধ্যে কিছু ভালো গুণও লক্ষ্য করতে পারে।
কিন্তু বিচারবুদ্ধি ও অন্তঃকরণের পথে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা ক্ষেত্রবিশেষে এমন তীব্র হতে পারে যে , তা অপসারিত হবার সম্ভাবনা পুরোপুরি তিরোহিত হয়ে যেতে পারে। তেমনি প্রতিবন্ধকতামূলক কাজের বার বার পুনরাবৃত্তির ফলে তা ব্যক্তির স্থায়ী অভ্যাসে পরিণত হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে এ প্রতিবন্ধকতা আর অপসারিত হবার সম্ভাবনা থাকে না , বরং স্থায়ী রূপ ধারণ করে। দার্শনিক পরিভাষায় একে“
মালাকাহ্”
(ملکة
) বলা হয়। এরূপ অবস্থায় ব্যক্তি একটি ঘৃণ্য কাজেও আনন্দ লাভ করতে পারে। শুধু তা-ই নয় , এ কাজটি তার কাছে আদৌ ঘৃণ্য মনে না-ও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ একজন পাগলের আচরণের কথা বলা যায়। যেমন: একজন পাগল পাগলামির মধ্যে আনন্দ পেতে পারে , বা ধরুন , নির্দ্বিধায় নিজের গায়ে পায়খানা মাখাতে পারে। বিকৃতরুচি লোকদের অবস্থাও অনুরূপ। রুচিবিকৃতির কারণে একজন মানুষ সর্বসমক্ষে অর্ধনগ্ন হতে পারে ; এমনকি কেউ কেউ পুরোপুরি নগ্নও হতে পারে।
প্রাকৃতিক জগত থেকে উদাহরণের সাহায্যেও বিষয়টি বুঝা যেতে পারে। যেমন: কোনো কোনো গাছ গোড়া থেকে কেটে ফেললে গোড়ার যে অংশ মাটির নীচে থাকে তা থেকে নতুন করে গাছ গজায়। কিন্তু নতুন গজানো গাছ যদি বড় হওয়ার আগেই কেটে বা ভেঙ্গে ফেলা হয় এবং এভাবে পুনরাবৃত্তি চলতে থাকে তাহলে এমন একটা সময় আসে যখন আর ঐ গোড়া থেকে নতুন গাছ গজায় না অর্থাৎ গোড়াটি মরে যায়। তেমনি অব্যবহারের কারণে একটি ছুরিতে মরিচা পড়লে প্রাথমিক অবস্থায় রেত দিয়ে ঘষে তার মরিচা দূর করা যায় এবং এভাবে ছুরিটি পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী হয়ে ওঠে। আর বেশী মরিচা ধরলে অর্থাৎ মরিচা ধরা শুরু হওয়ার পর অনেক দিন ছুরিটি একই অবস্থায় পড়ে থাকলে আগুনে পুড়িয়ে মরিচার পুরু স্তর ফেলে দিয়ে এরপর রেত দিয়ে ঘষে সেটিকে ব্যবহারোপযোগী করা যায়। কিন্তু অনেক বেশীদিন পড়ে থাকার ফলে ছুরিটির পুরো ফলাই যদি মরিচায় পরিণত হয়ে যায় তাহলে অতঃপর আর তা ব্যবহারের উপায় থাকে না।
কোরআন মজীদের বিভিন্ন আয়াতে ক্বালবের অসুস্থতার কথা বলা হয়েছে। যেমন , মুনাফিকদের সম্পর্কে এরশাদ হয়েছে:
)
فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ(
“
তাদের অন্তঃকরণে ব্যাধি আছে।”
(সূরাহ্ আল্-বাক্বারাহ্: 10)
অন্তর অসুস্থ হলে তার পক্ষে যে অনেক সহজ বিষয়ও অনুধাবন করা সম্ভব হয় না সে কথাও বলা হয়েছে। দোযখের ফেরেশতা-সংখ্যা মাত্র 19 জন ; এ সংখ্যাটিকে কাফেরদের জন্য একটি পরীক্ষাস্বরূপ করার কথা উল্লেখের পর আল্লাহ্ তা‘
আলা এরশাদ করেন:
)
وَلِيَقُولَ الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ وَالْكَافِرُونَ مَاذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهَذَا مَثَلا(
“
যাতে যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা এবং কাফেররা বলে যে , আল্লাহ্ এ উপমা দ্বারা কী বুঝাতে চাচ্ছেন ?”
(সূরাহ্ আল্-মুদ্দাছছির্: 31)
কোরআন মজীদের অন্য এক আয়াতে অন্তরের বক্রতার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ; বলা হয়েছে:الذين فی قلوبهم زيغ
-“
যাদের অন্তঃকরণসমূহে বক্রতা রয়েছে।”
(সূরাহ্ আালে‘
ইমরান: 7)
এছাড়া অন্তরে মোহর মেরে দেয়ার কথাও বলা হয়েছে ; যেমন , এরশাদ হয়েছে:
)
خَتَمَ اللَّهُ عَلَى قُلُوبِهِمْ وَعَلَى سَمْعِهِمْ وَعَلَى أَبْصَارِهِمْ غِشَاوَةٌ(
“
আল্লাহ্ তাদের (কাফেরদের) অন্তরসমূহের ওপর ও তাদের শ্রবণশক্তির ওপর মোহর মেরে দিয়েছেন এবং তাদের দর্শনশক্তির ওপর আবরণ রয়েছে।”
(সূরাহ্ আল্-বাক্বারাহ্: 7)
মানুষের এ অবস্থার জন্য অবশ্য সে নিজেই দায়ী। অন্তঃকরণ ও বিচারবুদ্ধির অনুধাবনক্ষমতার পথে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা যে মানুষের নিজেরই সৃষ্ট কোরআন মজীদের বিভিন্ন আয়াতে তা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন , এরশাদ হয়েছে:
)
أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ أَفَأَنْتَ تَكُونُ عَلَيْهِ وَكِيلًا أَمْ تَحْسَبُ أَنَّ أَكْثَرَهُمْ يَسْمَعُونَ أَوْ يَعْقِلُونَ إِنْ هُمْ إِلَّا كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ سَبِيلًا(
“
(হে রাসূল!) আপনি কি তাকে দেখেছেন যে তার প্রবৃত্তিকে ইলাহ্ হিসেবে গ্রহণ করেছে ? এরপরও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন ? আপনি কি মনে করেন যে , তাদের বেশীরভাগ লোকই (মনোযোগ দিয়ে/ শোনার মতো করে) শোনে , অথবা (শুনলেও) বিচারবুদ্ধি কাজে লাগায় ? তারা তো পশু ছাড়া কিছু নয় ; বরং পথ বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে অধিকতর বিচ্যুত।”
(সূরাহ্ আল্-ফুরক্বান্: 43-44)
কোরআন মজীদের দৃষ্টিতে পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণের প্রবণতাও জ্ঞানের পথে অন্যতম বড় বাধা। যেমন , এরশাদ হয়েছে:
)
وَإِذَا قِيلَ لَهُمُ اتَّبِعُوا مَا أَنْزَلَ اللَّهُ قَالُوا بَلْ نَتَّبِعُ مَا أَلْفَيْنَا عَلَيْهِ آبَاءَنَا أَوَلَوْ كَانَ آبَاؤُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ شَيْئًا وَلَا يَهْتَدُونَ (170) وَمَثَلُ الَّذِينَ كَفَرُوا كَمَثَلِ الَّذِي يَنْعِقُ بِمَا لَا يَسْمَعُ إِلَّا دُعَاءً وَنِدَاءً صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَعْقِلُونَ(
“
তাদেরকে যখন বলা হয় যে , আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তার অনুসরণ করো , তখন তারা বলে:“
আমরা তো তারই অনুসরণ করবো যার ওপরে আমাদের বাপ-দাদাদের পেয়েছি।”
তাদের বাপ-দাদারা যদি কোনো বিষয়ে বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ না করে থাকে এবং সঠিক পথ প্রাপ্ত না হয়ে থাকে তবুও (কি তারা তাদের বাপ-দাদাদের অনুসরণ করবে) ? আর (এ ধরনের) কাফেরদের উপমা হচ্ছে এরূপ যে , যেন কোনো ব্যক্তি এমন কোনো জীবকে আহবান করছে যে হাঁকডাক ও চীৎকার ছাড়া আর কিছুই শুনতে পায় না (তাৎপর্য বুঝতে পারে না)। তারা বোবা , বধির ও অন্ধ , অতএব , তারা বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করবে না।”
(সূরাহ্ আল্-বাক্বারাহ্: 170-171)
আল্লাহ্ তা‘
আলা যুলুম-অত্যাচারকে সঠিক পথ প্রাপ্তির সম্ভাবনা স্থায়ীভাবে রুদ্ধ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এরশাদ হয়েছে:
)
وَيُضِلُّ اللَّهُ الظَّالِمِينَ(
“
আর আল্লাহ্ যালেমদেরকে পথভ্রষ্ট করে দেন।”
(সূরাহ্ ইবরাহীম: 27)
)
وَمَنْ يُضْلِلِ اللَّهُ فَمَا لَهُ مِنْ سَبِيلٍ(
“
আর আল্লাহ্ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তার জন্য (সত্যে উপনীত হওয়ার) কোনো পথই নেই।”
(সূরাহ্ আশ্-শূরা: 46)
এছাড়া পাপাচারে গভীরভাবে নিমজ্জিত হয়ে যাওয়াও সত্যে বা সঠিক জ্ঞানে উপনীত হবার পথকে রুদ্ধ করে দেয়। আল্লাহ্ তা‘
আলা এরশাদ করেন:
)
وَمَا يُضِلُّ بِهِ إِلَّا الْفَاسِقِينَ (26) الَّذِينَ يَنْقُضُونَ عَهْدَ اللَّهِ مِنْ بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَنْ يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ(
“
আর তিনি এর (মশা-মাছির উপমা) দ্বারা সেই পাপাচারীদের ব্যতীত কাউকে পথভ্রষ্ট করেন না যারা আল্লাহর সাথে অঙ্গীকারাবদ্ধ হবার পর তা লঙ্ঘন করে এবং আল্লাহ্ যা যুক্ত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তা বিচ্ছিন্ন করে , আর ধরণীর বুকে পাপাচার ও বিশৃঙ্খলা-বিপর্যয় সৃষ্টি করে।”
(সূরাহ্ আল্-বাক্বারাহ্: 26)
জ্ঞানের পথে স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির আরো কতক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে নবী-রাসূলগণের (‘
আঃ) উদ্দেশে ঠাট্টা-বিদ্রুপ অন্যতম (সূরাহ্ আল্-ফুরক্বান্: 40-44)।
বস্তুতঃ নিজেদের অনুসৃত কর্মনীতি বা কৃতকর্মের ফলে যাদের জন্য সঠিক জ্ঞানে বা সঠিক পথে উপনীত হবার সম্ভাবনা চিরতরে বিনষ্ট হয়ে গেছে এরূপ লোকদের সম্বন্ধেই আল্লাহ্ তা‘
আলা এরশাদ করেছেন:
)
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا سَوَاءٌ عَلَيْهِمْ أَأَنْذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنْذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ(
“
নিঃসন্দেহে যারা কুফরী করেছে , (হে রাসূল!) আপনি তাদেরকে সতর্ক করে থাকুন বা না করে থাকুন (উভয়ই) তাদের জন্য সমান ; অতএব , তারা ঈমান আনয়ন করবে না।”
(সূরাহ্ আল্-বাক্বারাহ্: 6)
তবে জ্ঞানের পথে বিরাজমান অস্থায়ী বা সাময়িক প্রতিবন্ধকতা বিভিন্ন পন্থায় অপসারণ করা সম্ভব। প্রতিবন্ধকতা প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে যথোপযুক্ত ব্যক্তিদের সাহচর্য ও উপদেশ বা যথাযথ গ্রন্থাবলী অধ্যয়নের ফলে দূরীভূত হতে পারে। কিন্তু প্রতিবন্ধকতা খুবই দৃঢ়মূল হয়ে গেলে (কিন্তু স্থায়ী হয়ে না গিয়ে থাকলে) বিপদাপদ ও বালা-মুছ্বীবতের ফলে তা দূরীভূত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ , কোনো লোহায় অল্পস্বল্প মরিচা পড়লে রেত দ্বারা ঘষে তা দূর করা যেতে পারে। কিন্তু মরিচার মাত্রা খুব বেশী হলে আগুনে পোড়ানো ছাড়া গত্যন্তর থাকে না। সুতরাং বিপদাপদ ও বালা-মুছ্বীবত যখন কারো সঠিক জ্ঞানে উপনীত হওয়ার পথ থেকে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে ও তার চক্ষু উন্মীলনে সহায়ক হয় তখন কার্যতঃ সে বালা-মুছ্বীবত তার জন্য আল্লাহ্ তা‘
আলার রহমত স্বরূপ।