পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর দৃষ্টিতে হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) -এর ব্যক্তিত্ব
ড.মাওলানা এ.কে. এম মাহবুবুর রহমান*
ইমাম হোসাইন (আ.) শুধু একটি নাম নয় ,একটি ইতিহাস ,একটি চেতনা ,হক ও বাতিলের নির্ণয়কারী। দুনিয়ার ইতিহাসে ন্যায়-ইসাফকে প্রতিষ্ঠিত করা ,অন্যায় ,জুলুম ,নির্যাতন ,স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে রুখে দড়ানোর জন্য যারাই নিজের জান ও মাল দিয়ে সত্যের সাক্ষ্য হিসাবে কালোত্তীর্ণ অমর ব্যক্তিত্ব হিসাবে সত্যাণ্বেষীদের মন-মগজে স্থান জুড়ে আছেন ,যদের আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে যুগে যুগে কুফর ,শিরক তথা তাগুতের মসনদ জ্বলে পুড়ে ভস্মীভূত হচ্ছে এবং হবে ইমাম হোসাইন (আ.) -এর স্থান তাদের শীর্ষে রয়েছে এবং থাকবে। ইমাম হোসাইন (আ.) কিয়ামত পর্যন্ত বাতিলের বিরুদ্ধে সত্যের সকল যুদ্ধের সেরা ইমাম বা অপ্রতিদ্বন্দী নেতা ।
হোসাইন (ﺣﺴﻴﻦ
) নামটির মাঝেই রয়েছে গভীর তাৎপর্য ।ﺣﺴﻴﻦ
শব্দেরح
হরফ দিয়েﺣﺴﻦ
(হুসন) বা সুন্দেই ,আকর্ষণীয় ,দৃষ্টিনন্দন ,শ্রুতিমধুর ,বাহ্যিক ও আত্মিক অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব বুঝায়।س
(সীন) দ্বারা সাআদাতﺳﻌﺎدت
বা দৃঢ় প্রত্যয় ,ي
(ইয়া) দ্বারাﻳﻘﻴﻦ
(ইয়াকীন) বা প্রত্যয় ,ن
(নূন) হরফ ;দ্বারাﻧﻮر
বা আলো ও জ্যোতি বুঝায়। অর্থাৎﺣﺴﻴﻦ
(হোসাইন ) এমন সত্তা ,এমন ব্যক্তিত্ব যিনি জাগতিক ,মানসিক ,আত্মিক সকল প্রকারের সৌন্দর্যের প্রতীক ,সৌভাগ্য-সমৃদ্ধিরি পথ নির্দেশক ,দৃঢ় প্রত্যয়ীর সর্বশ্রেষ্ঠ নমুনা ,আপসহীনতার মূর্ত প্রতীক ,আর সকল যুগের সকল মানুষের জন্য নূর বা আলোকবর্তিকা। হাদীসের ভাষায়-
ان ا ﻟﺤﺴﻴﻦ ﻣﺼﺒﺎ ح ا ﻟﻬﺪ ى و ﺳﻔﻴﻨﺔ ا ﻟﻨﺠﺎ ة
‘
হোসাইন হেদায়েতের আলোকবর্তিকা ও নাজাতের তরী’’
‘
হোসাইন’
নামটিও অতি পবিত্র। এ নাম মানুষের দেয়া নয়। এ নামও মহান আল্লাহ তা’
আলা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লামা নাসাফী (রহ.) বলেন :
وﻟﻤﺎ وﻟﺪ اﻟﺤﺴﻴﻦ ﻗﺎل ﻳﺎ ﻣﺤﻤﺪ ان ﷲ ﻳﻬﻨﻴﻚ ﺑﻬﺬا اﻟﻤﻮﻟﻮد و ﻳﻘﻮل ﻟﻚ اﺳﻤﻪ ﺑﺎﺳﻢ اﺑﻦ هارون ﺷﺒﻴﺮ و ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺣﺴﻴﻦ -( ﻧﺰهة اﻟﻤﺠﺎﻟﺲ،ص229)
‘
হোসাইন জন্ম গ্রহণ করার পর হযরত জিবরাইল (আ.) এসে বললেন :‘‘
হে মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তা’
আলা এ নবজাত শিশুর জন্মে আপনাকে অভিবাদন ও মুবারকবাদ জানিয়েছেন এবং বলেছেন ,হযরত হারুন (আ.)–
এর ছলের নামে তার নাম রাখতে। তার ছলের নাম শাব্বির ,যার আর বি অর্থ হয় হোসাইন’’
।’
(নুযহাতুল মাজালেস :. 229)
ইমাম হোসাইন (আ.) ছিলেন রাসূলে আকরাম নূরে মোজাসসাম (সা.)–
এর আহলে বাইতের অন্যতম স্তম্ভ । আহলে বাইত সম্পর্কে আল কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে রাসূলে পাক (সা.) তাদের পূত-পবিত্রতার কথা ঘোষণা করে ছেন। বিশ্ব বিখ্যাত হাদীস মুসলিম শরীফে বর্ণিত হয়েছে :
ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺧﺮج اﻟﻨﺒﻰصلىاللهعليهوآلهوسلم
ﻏﺪاة و ﻋﻠﻴﻪ ﻣﺮط ﻣﺮﺣﻞ ﻣﻦ ﺷﻌﺮ اﺳﻮد ﻓﺠﺎء اﻟﺤﺴﻦ ﺑﻦ ﻋﻠﻰ ﻓﺎدﺧﻠﻪ ﺛﻢ ﺟﺎء اﻟﺤﺴﻴﻦ ﻓﺪﺧﻞ ﻣﻌﻪ ﺛﻢ ﺟﺎﺋﺖ ﻓﺎﻃﻤﺔ ﻓﺎدﺧﻠﻬﺎ ﺛﻢ ﺟﺎء ﻋﻠﻰ ﻓﺎدﺧﻠﻪ ﺛﻢ ﻗﺎل :(
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّـهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرً
ا)
‘
উম্মুল মু’
মিনীন হযরত আয়েশা বলেন : মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভোরবেলায় ঘর থেকে বের হন। তার গায়ে ছিল পশমের মোটা ইয়েমেনী চাদেই । তখন হাসান ইবনে আলী আসলেন। মহানবী তাকে এই বড় চাদরের ভেতর ঢুকিয়ে নিলেন ,এরপর হোসাইন আসলেন তিনি তাকেও চাদরের ভেতর ঢুকিয়ে নিলেন ,এরপর ফাতেমা আসলেন ,পয়গম্বর (সা.) তাকেও চাদরের ভেতর ঢুকালেন। সবশেষে আলী আসলে মহানবী আলীকেও চাদরের মধ্যে ঢুকিয়ে নিলেন। তারপর মহাগ্রন্থ আল কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেন :
(
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّـهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا)
‘
আল্লাহর ইচ্ছায় হলো তিনি আহলে বাইত থেকে সকল প্রকার অপবিত্রতা দূর করবেন এবং তোমাদের সম্পূর্ণ রূপে পবিত্র করবেন’
।’’
(সূরা আহযাব : 33)
(মুসলিম শরীফ ,5ম খণ্ড ,. পৃ. 1883 ;ফতহুল কাদীর শওকানী ,4র্থ খণ্ড ,. পৃ. 279)
এ হাদীসের বক্তব্য অনুযায়ী উক্ত পাঁচজনকে চাদরের ভেতর ঢুকিয়ে কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে আল্লাহর নবী আহলে বাইতের মর্যাদা যেভাবে তুলে ধরেছেন একজন ঈমানদারের জন্য এটাই যথেষ্ট । মহান আল্লাহ তা’
আলা অন্যত্র এরশাদ করে ন :
(
قُل لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَىٰ ۗ وَمَن يَقْتَرِفْ حَسَنَةً نَّزِدْ لَهُ فِيهَا حُسْنًا ۚ إِنَّ اللَّـهَ غَفُورٌ شَكُورٌ)
‘
হে রাসূল আপনি বলুন : আমি আমার দাওয়াতের জন্য তোমাদের কাছে আমার আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা ছাড়া অন্য কিছু চাইনা । যে কেউ উত্তম কাজ করে আমি তার জন্য তাতে পূণ্য বাড়িয়ে দেই । নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাকারী ,গুণগ্রাহী।’
(সূরা আশ শুরা : 23)
আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা এবং তাদের পদাংক অনুসরণই সত্য পথে টিকে থাকা এবং গোমরাহী থেকে নিজেকে রক্ষা করার অন্যতম উপায় হিসাবে আল্লাহর নবী বিদায় হজ্জের ভাষণে ঘোষণা দিয়েছেন।
ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮرضياللهعنه
ﻗﺎل رأﻳﺖ رﺳﻮل ﷲصلىاللهعليهوآلهوسلم
ﻓـﻰ ﺣﺠﺘﻪ ﻳﻮم ﻋﺮﻓﺔ و هو ﻋﻠﻰ ﻧﺎﻗﺘﻪ اﻟﻘﺼﻮاى ﻳﺨﻄﺐ ﻓﺴﻤﻌﺘﻪ ﻳﻘﻮل ﻳﺎ اﻳﻬﺎ اﻟﻨﺎس اﻧـﻰ ﺗﺮکت ﻓﻴﻜﻢ ﻣﺎ ان اﺧﺬﺗﻢ ﺑﻪ ﻟﻦ ﺗﻀﻠﻮا کتاب ﷲ و ﻋﺘﺮﺗﻰ اهل ﺑﻴﺘﻲ
‘
হযরত জাবের (রা.) বলেন ,‘
আমি আরাফার দিনে হজ্ব অনুষ্ঠানে রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে তার কাসওয়া নামক উটনীর পিঠে বসা অবস্থায় সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে বলতে শুনেছি-হে মানবমণ্ডলী! আমি তোমাদের কাছে এমন বস্তু রেখে যাচ্ছি তোমরা তা ধারণ করলে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তা হলো আল্লাহর কিতাব ও আমার আহলে বাইত ।’
(জামে তিরমিজি)
হযরত ইমাম হাসান (আ.) ও ইমাম হোসাইন (আ.) কত বড় ব্যক্তিত্ব ছিলেন ,রাসূলে আকরাম (সা.)–
এর ঘোষণা থেকে তা সহজেই অনুমেয়।
ﻋﻦ اﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﻗﺎل ﻗﺎل رﺳﻮل اﷲ ﺻﻠﻲ اﷲ ﻋﻠﻴﻪ و ﺳﻠﻢ اﻟﺤﺴﻦ و اﻟﺤﺴﻴﻦ ﺳﻴﺪا ﺷﺒﺎب اهل اﻟﺠﻨﺔ (رواﻩ اﻟﺘﺮﻣﺬى ، ج 2، ص 218)
হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) হতে বর্ণিত ,রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করে ছেন :‘
হাসান ও হোসাইন দু’
জন বেহেশতবাসী যুবকদের নেতা।’
(জামে তিরমিযি ,2য় খণ্ড ,. 217)
পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর ঘোষণার প্রেক্ষিতিই মুফতী শফী (রহ.) লিখেছেন :
‘
পবিত্র আহলে বাইতের মুহাববাত ঈমানের অংশ বিশেষ। আর তাদের প্রতি কৃত পাশবিক অত্যাচারের কাহিনী ভুলে যাওয়ার মতো নয়। হযরত হোসাইন (রা.) এবং তার সাথী দের ওপর নিপীড়নমূলক ঘটনা এবং হৃদয়বিদারক শাহাদাত যার অন্তরে শোক এবং বেদনা সৃষ্টি করে না ,সে মুসলমান তো নয়ই ,মানুষ নামের অযোগ্য।’
ইমাম হোসাইন (আ.) ছিলেন মহানবী (সা.) ,শেরে খোদা হযরত আলী (আ.) এবং খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমা যাহরা (আ.)–
এর হাতে গড়া এক মহান ব্যক্তিত্ব । আল্লাহর দীনের জন্য নিবেদিত প্রাণ। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় না করে আপসহীনভাবে সত্যের সাক্ষি হিসাবে নিজেকে অটল ,অবিচল রেখে প্রয়োজনে জীবন দিয়ে দীনকে ঠিক রাখার বাস্তব উদাহরণ ছিলেন হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) । সত্যের প্রতি অবিচল থাকার অনন্য দৃষ্টান্ত ফুটে উঠেছিল হোর ইবনে ইয়াযীদ তামিমীর সেনাবাহিনীর সামনে ইমাম হোসাইনের প্রদত্ত ভাষণে। তিনি বলেন :
اﻳﻬﺎ اﻟﻨﺎس ان رﺳﻮل الله علیه صلی الله و سلم قال من رای سلطانا جائزا مستحلا لحرام الله ناکثا لعهد الله مخالفا لسنة رسول الله یعمل فی عباد الله بالاثم و العدوان فلم یغیر علیه بفعل و لا قول کان حقا علی الله ان یدخله مدخلة، الا و ان هولاء قد لزموا طاعة الشیطان و ترکو طاعة الرحمن اظهر الفساد و عطلوا الحدود و استأثروا بالفئ و احلو حرام الله و حرموا حلاله و انا احق من غیر
‘
হে লোকসকল! রাসূলুল্লাহা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন ,যে ব্যক্তি এমন অত্যাচারী শাসককে দখবে যে আল্লাহর হারামকে হালাল করছে ,আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে ,রাসূলের সুন্নাতের খেলাফ করছে ,আল্লাহর বান্দাদের সাথে গুনাহ ও শত্রুতাপূর্ণ কাজ করছে ,কাজ ও কথার দ্বারা কেউ যদি তা প্রতিহত করার না থাকে তখনই আল্লাহ তা’
আলা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে ন।’
তিনি বলেন :‘
সাবধান! ওরা (ইয়াযীদ গোষ্ঠি) রহমানের (আল্লাহর) আনুগত্য ছেড়ে দিয়েছে ,বিপর্যয় সৃষ্টি করে ছে ,আল্লাহর হদ বা সীমা বন্ধ করে দিয়েছে ,বিনা পরিশ্রমে সম্পদ ভোগে মতে উঠেছে ,আল্লাহ যা হারাম করে ছেন তা হালাল করছে ,আর যা হালাল করে ছেন তা হারাম করছে ,এ ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ উল্টিয়ে দিতে আমিই সবচেয়ে বেশি অধিকার রাখি।’
(তারিখে তাবারী ,2য় খণ্ড ,. 307)
কারবালায় যাওয়ার পথে অনেকেই ইমাম হোসাইন (আ.) -কে বলেছেন এ পথ বিপজ্জনক। আপনি বরং ফিরে যান। ইমাম হোসাইন (আ.) তাদের জবাবে বলেছিলেন :
ﺳﺎﻣﻀﻰ و ﻣﺎ ﺑﺎﻟﻤﻮ ت ﻋﺎ ر ﻋﻠﻰ ا ﻟﻔﺘﻰ
اذا ﻣﺎ ﻧﻮ ى ﺣﻘﺎ و ﺟﺎ هد ﻣﺴﻠﻤﺎ
‘
আমাকে যেতে নিষেধ করছো ? কিন্তু আমি অবশ্যই যাবো ,আমাকে মৃত্যুর ভয় দেখাও ? একজন বীরের কাছে কি মৃত্যু অপমানজনক ?’
পবিত্র হজ্ব অনুষ্ঠানের মাত্র দু’
দিন বাকি ,এ সময় হজ্ব আদায় না করে কিয়ামের (আন্দোলনের ) পথ বছে নিয়ে মক্কা থেকে কুফার পথে পাড়ি জমানো কত বলিষ্ঠ ঈমান ও খেলাফতে ইলাহিয়া রক্ষার বাস্তব প্রমাণ তা ইতিহাস ,দর্শন ও শিক্ষা গ্রহণ কারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
ইমাম হোসাইন (আ.) ছিলেন রাসূলে খোদা (সা.) -কে ভালোবাসার মাধ্যম ।
ﻋﻦ اﺑﻰ هریرة ﻗﺎل ﻗﺎل رﺳﻮل اﷲ ﺻﻠﻲ اﷲ ﻋﻠﻴﻪ وﺳﻠﻢ ﻣﻦ اﺣﺐ اﻟﺤﺴﻦ و اﻟﺤﺴﻴﻦ ﻓﻘﺪ اﺣﺒﻨﻰ و ﻣﻦ اﺑﻐﻀﻬﻤﺎ ﻓﻘﺪ اﺑﻐﻀﻨﻰ
হযরত আবু হুরায়রা বর্ণনা করে ন :‘
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন ,যে ব্যক্তি হাসান ও হোসাইন কে ভালোবাসবে সে অবশ্যই আমাকে ভালোবাসবে ,আর যে তাদের প্রতি দুশমনী রাখবে ,সে অবশ্যই আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে।’
(ইবনে মাজা)
আল কুরআনের আয়াত ও রাসূলে খোদা (সা.)–
এর ঘোষণা মোতাবেক উম্মতের নাজাতের তরী হযরত হোসাইন (আ.) । তার শাহাদাতের ঘটনা শুনে শুধু ক্রন্দন বা আফসোস করাই তার প্রতি ভালোবাসার প্রকৃত প্রমাণ নয় বরং ইয়াযীদ ও তার উত্তরসূরি নব্য ইয়াযীদ যারা আল্লাহর এ যমিনে হারামকে হালাল করছে ,আবার হালাল কে হারাম করছে ,যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের বিধানকে বাদ দিয়ে তাগুতী শাসন চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে জান ,মাল তথা সব কিছু দিয়ে‘
বাঁচলে গাজী আর মরলে শহীদ’
এ প্রত্যয় নিয়ে প্রত্যক্ষ জিহাদে অবতীর্ণ হওয়াই হযরত হোসাইন (আ.)–
এর প্রতি ভালোবাসার সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। ইয়াযিদী শাসন চলবে ,সব বাতিলকে মেনে নেবো আর ইমাম হোসাইন (আ.) -এর জন্য কাদবো এটা হবে মুনাফিকের ঘৃণ্যপথ। তাই আজকে আসুন ইমাম হোসাইন (আ.)–
এর মতো দীপ্ত শপথ গ্রহণ করি। হয় আমরা হকপন্থীরা হকের ঝাণ্ডা উচু করে ই ছাড়বো ,না হয় শাহাদাতের পেয়ালা পান করে শহীদানে কারবালার সাথী হবো। আর কবি নজরুলের কন্ঠে বলে উঠবো :
উষ্ণীষ কোরানের ,হাতে তেগ আরবির ,
দুনিয়াতে নত নয় মুসলিম কারো শির ,
তবে শোন ঐ বাজে কোথা ফের দামামা
শমশের হাতে নাও ,বাধো শিরে আমামা
বেজেছে নাকাড়া ,হাঁকে নকীবের তূর্য
হুশিয়ার ইসলাম ,ডুবে তব সূর্য।
জাগো ,ওঠো মুসলিম ,হাঁকো হায়দারি হাঁক
শহীদের খুনে সব লালে-লাল হয়ে যাক। (অগ্নিবীণা)
পরিশেষে সুলতানুল হিন্দ খাজা গরীবে নওয়াজ মঈনুদ্দীন চিশতী আজমেরী (রহ.)–
এর কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে চাই :
ﺟﺎ ن ﻣﻦ ﻧﺜﺎ رم ﺑﻨﺎ م ﺣﺴﻴﻦ
ﻣﻦ ﻏﻼ م ﻏﻼﻣﺎ ن ﺣﺴﻴﻦ
‘
হোসাইনের নামে আমার জীবন উৎসর্গকৃত
আমি কেবল তারই গোলাম যিনি হোসাইনের গোলাম’
গ্রন্থপঞ্জি :
*অধ্যক্ষ ,ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসা ও
চেয়াম্যান ,ফার্সী ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ