আশুরা সংকলন

আশুরা সংকলন0%

আশুরা সংকলন প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ: ইমাম হোসাইন (আ.)

আশুরা সংকলন

প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বিভাগ:

ভিজিট: 77210
ডাউনলোড: 7467

আশুরা সংকলন
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 51 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 77210 / ডাউনলোড: 7467
সাইজ সাইজ সাইজ
আশুরা সংকলন

আশুরা সংকলন

প্রকাশক: কালচারাল কাউন্সেলরের দফতর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দুতাবাস -
বাংলা

এ বইটি ইমাম হোসাইন (আ.)-এর আন্দোলনের বিশ্লেষণ এবং আশুরার ঘটনাবলী ও শিক্ষা সম্পর্কে একটি সংকলন যা ঢাকাস্থ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলরের দফতরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকল আহলে বাইত প্রেমীর উদ্দেশ্যে নিবেদেন করা হলো যাতে তা তাদের মহান আল্লাহ অভিমুখে পূর্ণতার যাত্রা পথে আলোকবর্তিকা হয় ইনশাল্লাহ।

ইমাম হোসাইন (আ.) -এর

শাহাদাত ও আশুরা সম্পর্কে বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য

হযরত ইমাম হোসাইন সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য শহীদ হয়ে অকল্যাণ থেকে মুসলমানদের মুক্ত করে তাদের নাজাত এনেছিলেন । এদিন তাই মুসলমানদের জন্য আত্ম জিজ্ঞাসার দিন এবং একটি মহিমার মধ্যে ইসলামকে নতুন করে আবিস্কার করার দিন।

সৈয়দ আলী আহসান

সাবেক জাতীয় অধ্যাপক

ইমাম হোসাইনের জীবনাদর্শ ,তার দর্শন ,তার আত্মোৎসর্গের কাহিনী আমরা প্রতি বছরই আশুরার দিনে স্মরণ করে থাকি। কিন্তু আসলে সমগ্র মুসলিম জাতি এ মহান ব্যক্তির আত্মোৎসর্গের ফলেই একটা সঠিক দিক নির্দেশনা পেয়েছিলো। স্বার্থসিদ্ধি ,অর্থ সম্পদ বা পার্থিব ভোগ-বিলাস তথা প্রলোভন দেখিয়ে ছিল ইয়াযীদ । কিন্তু তিনি তা গ্রহণ না করে আল্লাহর জ্যোতিতে উদ্ভাসিত হয়ে নিজ জীবনকে উৎসর্গ করেন তার আদর্শের জন্য ,ধর্মের জন্য ,ইসলামের গৌরবের জন্য।

প্রফেসর এম শামশুল হক

সাবেক উপদেষ্টা

ইমাম হোসাইন (আ.) অজস্র খোদাপ্রেমিকের অন্তরে ঈমান ও ইসলামকে জারি রেখেছেন। কারবালায় শাহাদাতের মাধ্যমে তিনি ইসলামের প্রকৃত সংরক্ষকের মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছেন। ইমাম হোসাইন (আ.) দীর্ঘজীবী হোন আমাদের অন্তর ও চেতনায়।

প্রফেসর ড.মুইন উদ্দিন আহমদ খান

সাবেক উপাচার্য ,সাউথইষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় ,চট্টগ্রাম।

খোরাফায়ে রাশেদীনের পর যে মর্মান্তিক ঘটনা ইসলামের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে তা হলো হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) -এর শাহাদাতের ঘটনা । তার এ শাহাদাত পৃথিবীর মানুষের জন্য কিয়ামত পর্যন্ত উজ্জ্বল আদর্শ ও দিক -নির্দেশনা হয়ে থাকবে। অন্যায়ের সামনে মাথা নত না করা এবং জীবন দিয়ে হলে ও এর প্রতিবাদ করা মুমিনের কর্তব্য। ঈমান আর অন্যায়ের সাথে আপস ,এ দুই স্বভাব একজন মুমিনের মধ্যে থাকতে পারেনা এ সত্য তিনি তার পবিত্র রক্তের ভাষায় পৃথিবীর মানুষের জন্য লিখে গেছেন।

পৃথিবীতে সকল যুগেই ইয়াযীদ থাকবে ,ইবনে যিয়াদও থাকবে। তাদের হাতে আল্লাহর দীন নিরাপদ থাকবে না। রাজনৈতিক কৌশল অথবা জোর করে ক্ষমতা দখল করলেই তাকে মেনে নেয়া যায় না। এদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা ফরয। তার সে স্মরণীয় বাণী জালেমের সাথে সহাবস্থান করে জীবিত থাকার একটি মহাপাপ। তিনি দেখিয়েছেন মুমিনের জীবনে সর্বোত্তম কামনা শাহাদাত । এখানেই জীবনের সফলতা । আর জান্নাতে যাওয়ার এটাই হলো সঠিক পথ। হে আল্লাহ ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) ও তার বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ কর ,যেভাবে ইবরাহীম (আ.) ও তার বংশধরদের ওপর রহমত করেছিলে।

মাওলানা মুহাম্মদ মুহিববুল্লাহ

পীর সাহেব ,খানকায়ে বশিরিয়া ,ভোলা।

আশুরার সংস্কৃতির পুনর্জীবনে হযরত ইমাম হোসাইনের নেতৃত্ব্ আলী আকবর ,আলী আসগার ও অন্যান্য শহীদ যে আদর্শ রেখে গেছেন তা পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত একজন নিষ্ঠাবান মুসলমানকে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পাহাড়ের ন্যায় অটল থাকতে অনুপ্রাণিত করবে। অপরাধের জন্য আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা ,মহাবিপদে ধৈর্য ধারণ করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া ,তাগুতী শক্তির বিরুদ্ধে জিহাদ ,খোদার বিধানকে সমুন্নত রাখতে জীবন কুরবান করতে প্রস্তুত থাকা এবং অকুতোভয়ে খোদাদ্রোহী শক্তিকে পরাভূত করার যে সংস্কৃতি আশুরার ঘটনা প্রবাহে নিহিত তার পুনর্জীবন ঘটেছে কারবালার শহীদগণের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে । হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) ইচ্ছে করলে ইয়াযীদের আনুগত্য স্বীকার করে পার্থিব বিত্ত-বৈভেবের ,মধ্যে থেকে বিলাসী জীবন যাপন করতে পারতেন। কিন্তু আহলে বাইতের একজন মরদে মুজাহিদ হয়ে তিনি তা করতে যাননি ,বরং খোদা ও তার রাসূলের সন্তুষ্টি বিধানের মহান লক্ষ্যে তিনি পার্থিব জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করেছেন এবং ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের শিকড় উপড়ে ফেলতে বদ্ধপরিকর হয়ে জীবন দান করেছেন । শাহাদাতের পূর্ণ পেয়ালা পান করে হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) -সহ কারবালার শহীদগণ যুগে যুগে আশুরা সংস্কৃতির পুনর্জীবন ও বাস্তবায়নে অনুপ্রাণিত করতে থাকবেন এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।

ড. এ.কে. এম. ইয়াকুব আলী

সাবেক অধ্যাপক ,ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ ,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

কারবালার ঘটনায় ইয়াযীদ বাহিনীর বাহ্যিক বিজয় ঘটলেও আসলে তা ছিল ইমাম হোসাইনের বিজয়। কারবালার দুঃখজনক ঘটনা আমাদের জন্য সাফল্যের চাবিকাঠি। এ দিন সত্যের জয় হয়েছে ,মিথ্যা অপসারিত হয়েছে। আমাদের স্কুল-কলেজের পাঠ্যসূচিতে ইমাম হোসাইনের শাহাদাতের শিক্ষা ও কারবালার ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত।

সৈয়দ আশরাফ আলী

সাবেক মহাপরিচালক ,ইসলামিক ফাউণ্ডেশন

বিলাসিতার জীবন গ্রহণ না করে শাহাদাতের জীবন অবলম্বন করে ইমাম হোসাইন (আ.) এটাই প্রমাণ করেছেন যে ,তিনি যথার্থ অর্থেই আহলে বাইতের ইমাম ছিলেন । হযরত ইবরাহীম (আ.) হযরত ইসমাইল (আ.) কে কুরবানি করে একা একটি প্রতীক হয়েছিলেন ,কিন্তু ইমাম হোসাইন (আ.) পুরো পরিবার-পরিজন নিয়ে আত্মোৎসর্গ করে একটি গোটা জাতির প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।

অধ্যাপক আ.ন.ম.আবদুল মান্নান খান

সাবেক অধ্যাপক ,আরবী বিভাগ ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কারবালা প্রান্তরে মাত্র 72 জন সাথী নিয়ে ইমাম হোসাইন (আ.) -এর শাহাদাত বরণ ইসলামী ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা । ইসলামের জন্য নবী দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আ.) -এর শাহাদাত বরণ মানব ইতিহাসে চিরঞ্জীব ও চিরজাগরুক। তিনি ইসলামের জন্য সর্বস্ব ত্যাগ স্বীকার করে প্রকৃতপক্ষে ইসলামকেই গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক জীবন্ত আদর্শ হিসাবে রেখে গেছেন। ইমাম হোসাইনের আপসহীন ভূমিকাই মুসলিম উম্মাহকে যুগ যুগ ধরে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে আসছে। ইমাম হোসাইন (আ.) প্রমাণ করে গেছেন হকের জন্য জান দেয়া সম্ভব তবুও তাগুতি শক্তির সাথে আপস করা সম্ভব নয়।

হাফেজ মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান

আমীর ,ইসলামী ঐক্য আন্দোলন

ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে তো বটেই ,এমনকি সাধারণ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও কারবালার ঘটনা পৃথিবীর সবচেয়ে বিয়োগান্ত ঘটনা ,নিষ্ঠুর ও পাশবিক। এ ঘটনাই মূল নায়ক হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) । তার সুউচ্চ মর্যাদা সম্বন্ধে স্বয়ং বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন যে ,তিনি হচ্ছেন চিরাস্থায়ী জগতের চিরকালীন শান্তি ,সফলতা ও কল্যাণের স্থান জান্নাতে সব যুবকের সর্দার। ইমাম হোসাইন (আ.) ছিলেন তার নানাজীর আদর্শের নিশানবর্দার। কোনো ভীতি বা প্রলোভন তাকে ইসলামের মহান আদর্শ থেকে সামান্যতমও বিচ্যুত করতে পারেনি। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে তার এ আপসহীন ,প্রশ্নাতীত ও সামগ্রিক আত্মত্যাগ কেয়ামত পর্যন্ত সত্যকামী মানুষের জন্য অফুরন্ত প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

অধ্যাপক ড.আনিসুজ্জামান

দর্শন বিভাগ ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কারবালার দু পীঠ আছে। একটি আলোকময় আর একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন। ইমাম হোসাইন (আ.) সত্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য সাথিগণসহ কারবালার প্রান্তরে শহীদ হয়েছেন। এটি আলোকময় দিক । ইয়াযীদের দল সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে ক্ষণিকের জন্য বাহ্যিকভাবে বিজয়ী হলেও এ দিকটি হলো অন্ধকারাচ্ছন্ন। সারা বিশ্বের মানুষ তাদের ঘৃণার সাথে স্মরণ এবং অভিসম্পাত করে । ইমাম হোসাইন ও তার সাথিগণকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। ইমাম হোসাইন (আ.) শাহাদাতের পর আরও বেশি জীবন্ত হয়ে উঠেছেন। ইয়াযীদের দল তাকে শহীদ করে ভেবেছিল সব কিছু মিটে গেল। কিন্তু জীবিত হোসাইন হতে মৃত হোসাইন আরও বেশি মারাত্মক হয়ে তাদের পতনকে আর ত্বরান্বিত করে দিয়েছেন। অনুভূতিসম্পন্ন প্রতিটি মানবের মণিকোঠায় তিনি জীবন্ত থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়ার উদ্যম যোগাচ্ছেন। তার বোন হযরত যায়নাব (আ.) সত্যিই বলেছেন- তোমরা আমার ভাইকে হত্যা করতে পারবে না। ইমাম হোসাইন (আ.) -এর শাহাদাতের ফলে ইয়াযিদী ইসলামের বিরুদ্ধে মুহাম্মাদী ইসলামের আত্মিক ও বাস্তব উভয় প্রকার বিজয় সংঘটিত হয়েছিল । ইসলাম প্রচার যেমন প্রতিটি মুসলমানদের ওপর ফরয তদ্রূপ ইমাম হোসাইনের শাহাদাতের স্মরণে শোকানুষ্ঠান পালন করাও প্রতিটি নবীপ্রেমিক মুসলমানের একান্ত কর্তব্য।

মাওলানা মোহাম্মদ কুতুবউদ্দীন হোসাইনী চিশতী

হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) হলেন মহানবী (সা.) -এর আহলে বাইতের এমন এব ব্যক্তিত্ব যিনি সরকারে দো-আলম আল্লাহর হাবীবের আদর ও শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হয়েছিলেন যার জন্য বেহেশ্ত হতে খাবার ও পোশোক নাযিল হয়েছিল । যিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের নির্ভীক সৈনিক। যার দুঃখে স্বয়ং মহান আল্লাহ ও তার প্রিয়নবী (সা.) ব্যথিত হন। খাঁটি মুহাম্মাদী ইসলামকে অবিকৃত ও সমুন্নত রাখতে ,আল্লাহকে দেয়া নানা নবীজির প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে পৃথিবীতে মহানবীর এ সুগন্ধি ফুল ,কলিজার টুকরা ,বেহেশ্তের সর্দার ও হাউজে কাউছারের পানি বন্টনকারী ইমাম সংগী-আত্মীয়স্বজনসহ ঐতিহাসিক কারবালার উত্তপ্ত মরু প্রান্তরে তিনদিনের ক্ষুধার্ত পিপাসার্ত অবস্থায় শরীরে অসংখ্য আঘাত নিয়ে নিমর্মভাবে শাহাদাত বরণ করেন। তার এই শাহাদাতের দু টি দিক রয়েছে । একটি জাহিরী ও অন্যটি বাতিনী। জাহিরী দিক হলো-ইমাম হোসাইন (আ.) শহীদ হয়ে সত্য-মিথ্যার (হক ও বাতিলের) পার্থক্য নির্ণয় করে দিয়েছেন। মুহাম্মাদী ইসলাম ভোগের নয় ,ত্যাগের এক বাস্তব প্রমাণ তিনি রেখে গেছেন। ইয়াজিদী নয়-হোসাইনী আদর্শকে সমুন্নত রেখে বাস্তবে রূপ দিতে না পারলে আমাদের মুসলমানিত্ব ইয়াযিদী মুসলমানিত্বে পরিণত হবে । আর তখন আমরা পাক-পাঞ্জাতনের নেকদৃষ্টি থেকে বঞ্চিত হব। তাই মহান আল্লাহর দরবারে এ প্রার্থনা করছি-হোসাইনী আদর্শ তথা মুহাম্মাদী আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আহলে বাইতের মুহাব্বাত বুকে নিয়ে যেন আমাদের মরণ হয়। এজন্য কেউ আমাকে শিয়া বা রাফিযী যা-ই বলুক না কেনো এতে আমার কোনো দুঃখ নেই। ইসলাম জিন্দা হোতা হায় হার কারবালা কি বাদ।

গোলাম নবী হোসাইনী চিশতী

হোসাইনী দরবার শরিফ ,সুলতানশী ,হবিগঞ্জ

মহানবী (সা.) -এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আ.) সারা জীবন অসত্যের মোকাবিলায় সত্যকে প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন । তিনি রাজতন্ত্রের পরিবর্তে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য ইয়াযীদের শাসনের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে ছিলেন । তিনি একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। আমি আশা করি আমরা সবাই ইমাম হোসাইন (আ.) -এর আদর্শ ও শিক্ষাকে অনুসরণ করবো।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইসলাম গনি

সাবেক অধ্যক্ষ ,মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ,ঢাকা

আজকের মুসলিম বিশ্বের এই যে করুণ ও বেহাল অবস্থা ,এর মূলে রয়েছে ইসলামবিহীন মুসলিম নেতৃত্ব ,যার সুচনা হয়েছিল ইয়াযীদের হাতে । এরই বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঝাণ্ডা তুলে ধরেছিলেন হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) । ইসলামী আদর্শের পথে ফিরে যাবার যে সংগ্রামে ইমাম হোসাইন কারবালায় চরম আত্মত্যাগ করেছিলেন ,সে সংগ্রাম পর্যদস্তু হয়ে গেছে বলে যারা আত্মতুষ্টি লাভ করেছিল বিশ্বের সেই ইসলাম বিরোধী শক্তি এবং মুসলিম সমাজে আশীর্বাদপুষ্ট গোষ্ঠি পরবর্তীকালে আতংকের সাথে লক্ষ্য করে যে ,ইমাম হোসাইনের শাহাদাতের মাধ্যমে ইসলামের পতন ঘটার পরিবর্তে ইসলামের নব উত্থানের পথই প্রশস্ত হয়েছে। বর্তমান যুগে বিশ্বব্যাপী ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর যে নবজাগরণ লক্ষ্য করা যাচ্চে ,তাতে প্রমাণিত হয় কারবালায় ইমাম হোসাইনের রক্তদান ব্যর্থ হয়নি।

অধ্যাপক আবদুল গফুর

ফিচার সম্পাদক ,দৈনিক ইনকিলাব

মহান আল্লাহ তা আলা তার প্রিয় হাবীবের নাতি ,বেহেশতে যুবকদের সর্দার ইমাম হোসাইন (আ.) -এর তাজা খুনের বিনিময়ে কুরআন-সুন্নাহকে বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা করেছেন । তাই যারা কুরআন-সুন্নাহর ধারক ও হকের পথে অবিচল ইমাম হোসাইন (আ.) ও কারবালার কথা শুনলেই তাদের চোখে পানি আসে। আর যারা মুনাফিক তারাই বিভিন্ন যুক্তি খাড়া করে কারবালার ঘটনাকে গুরুত্বহীন করার অপপ্রয়াস চালায়।

বিশ্বের যেখানেই ইসলামের জাগরণ ও বিপ্লবী আওয়াজ উঠেছে সেখানেই ইমাম হোসাইন (আ.)-এর তাজা খুন কথা বলেছে। আমরা যদি কুরআন-সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠিত করতে চাই তাহলে প্রয়োজন ঘরে ঘরে ইমাম হোসাইন (আ.) ও কারবালার শহীদানের ইতিহাস তুলে ধরা এবং সপরিবারে ও সম্মিলিতভাবে সে পথে অগ্রসর হওয়া।

ড.মাওলানা এ.কে. এম.মাহবুবুর রহমান

অধ্যক্ষ ,ফরিদগঞ্জ মাজিদিয়া কামিল মাদ্রাসা

আশুরা কোনো গোষ্ঠিগত ব্যাপার নয়। আশুরা ইসলামের বিজয় সূচিত করার দুর্বার চেতনার উন্মেষ ঘটায়। নবীর তরিকা পুনর্জীবিত করার বৈপ্লবিক চেতনা সৃষ্টি করে। জড়বাদীরা যাকে ভয় পায়। হুকুমতের মসনদে উপবিষ্ট ইসলামবৈরী শাসকরা মৃত্যুঘন্টা বেজে ওঠার পুর্বাভাস মনে করে ।

মাসুদ মজুমদার

সিনিয়র সাংবাদিক

ইমাম হোসাইনের শাহাদাত পৃথিবীর ইতিহাসে এক অনন্যসাধারণ ঘটনা । তার শাহাদাত এত বেশি তাৎপর্যপূর্ণ যে ,এর মাধ্যমেই পৃথিবীতে প্রথম ইসলামী বিপ্লবের শুভ সূচনা হলো । ইয়াযীদের আমলে মুসলিম জাহানে নেমে এসেছিল আইয়ামে জাহেলীয়াতের অন্ধকার। ইমাম হোসাইন সেই অন্ধকার দূরীভূত করার জন্য আশুরার সেই ঐতিহাসিক দিনে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মাধ্যমে ইসলামী বিপ্লবের ডাক দিয়ে গেছেন ,ইসলামী পুনর্জাগরণের ইশারা করে গেছেন। তিনি ইয়াযিদী ইসলাম আর মুহাম্মাদী ইসলামের পার্থক্য তুলে ধরেছেন ;মুমূর্ষ ইসলামের দেহে রক্ত সঞ্চালিত করে তাকে উঠে দাড়াতে সাহায্য করেছেন । ইমাম হোসাইন ঘুমন্ত মুসলিম জাতিকে প্রচণ্ড এক ঝাকুনি দিয়ে জাগ্রত করেছেন ,মুসলমানদের চেতনার গভীরে জাগিয়ে দিয়েছেন আবারা প্রাণস্পন্দন।

মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ

সিনিয়র সাংবাদিক

ইসলাম তার অনুসারীদের কাছ থেকে এক চিরন্তন সত্যের সহজ স্বীকৃতি এবং কতিপয় নৈতিক কর্তব্যের অনুশীলন দাবি করেছিল । অন্যান্য দিক দিয়ে ইসলাম তাদেরকে দিয়েছিল বিচার বুদ্ধি প্রয়োগের ব্যাপকতম স্বাধীনতা । ঐশী একত্ববাদের নামে এই ধর্ম সকল ধর্মমত ও সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেছিল গণতান্ত্রিক সাম্যের অঙ্গীকার । স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যেক ধর্মের নির্যাতিত বিরুদ্ধবাদীরা নবী করীম (সা.) -এর পতাকাতলে সমবেত হয়েছিলেন ,যিনি পুরোহিততন্ত্রের অক্টোপাস থেকে মানুষের বিচার বুদ্ধির মুক্তি দিয়েছিলেন । আবেস্তা ধর্মশাস্ত্রবিদ ,জারথুস্ত্রবাদী স্বাধীন চিন্তাবিদ ,ম্যানিকিয়াস ,খ্রিষ্টান ,ইয়াহুদী ও মাজী- সকলেই নতুন জীবনব্যবস্থার আবির্ভাবকে খোশ আমদেদ জানিয়েছিলেন ,যা ধর্মীয় ঐকের স্বপ্ন সার্তক করে তুলেছিল ।

কিন্তু দুর্ভাগ্য যে ,সে ধর্মীয় ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব উমাইয়্যা শাসনের গাড়াপত্তনে এবং কারবালায় ইমাম হোসাইন (রা.) -এর সঙ্গী-সাথীসহ নিমর্মভাবে শহীদ হওয়ার মাধ্যমে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। পরিণামে উম্মতে মুহাম্মাদীয়া (সা.) -এর ভাগ্যে জুটেছে অনৈক্য ও পরাধীনতা ।

সৈয়দ আমীর আলী