সপ্তম অধ্যায়
আশুরা সংক্রান্ত মঞ্চ অনুষ্ঠান
73 নং প্রশ্ন : বিশেষ করে অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলের মসজিদ ও ইমামবাড়িতে মঞ্চ অনুষ্ঠান আয়োজন করে ,এ জন্য যে এটা তাদের প্রাচীন সংস্কৃতি । কখনো এটা মানুষের অন্তরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে । এ ধরনের অনুষ্ঠানের হুকুম কী ?
উত্তর : যদি আশুরা সংক্রান্ত এ ধরনের নাট্য অনুষ্ঠান মিথ্যা ও বাতিল না হয় এবং এ সকল অনুষ্ঠানে সত্য মাযহাবের অবমাননা না হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই । এমন অবস্থায় উত্তম হচ্ছে ঐ সকল অনুষ্ঠানের পরিবর্তে ওয়াজ মাহফিল ,জনগণকে সঠিক পথপ্রদর্শন ,ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মুসিবতের স্মরণ ও মর্সিয়া পাঠের অনুষ্ঠান চালু করা ।
আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানী-‘
যদি তাজিয়া ও আশুরা সংক্রান্ত নাট্য অনুষ্ঠান হারাম কজের শামিল না হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই ।’
পতাকাবাহী শোক পালন
74 নং প্রশ্ন : ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোকের অনুষ্ঠানে পতাকা রাখা এবং তা শোক পালনকারীদের হাতে বহন করার হুকুম কী ?
উত্তর : হযরত আয়াতুল্লাহ খোমেইনী ,আয়াতুল্লাহ তাবরিযি ,আয়াতুল্লাহ ফাজেল লানকারানী ,আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী ,হযরত আয়াতুল্লাহ সিসতানীর মতে কোন সমস্যা নেই ।
হযরত আয়াতুল্লাহ খামেনাঈর মতে ,মৌলিক ভাবে কোন সমস্যা নেই । কিন্তু এ সকল বিষয়কে ধর্মের অংশ হিসেবে গণ্য করা যাবে না ।
আয়াতুল্লাহ নূরী হামেদানীর মতে ,এগুলোকে সমাজে বর্তমানে প্রচলিত পর্যায়ে ব্যবহারে (অর্থাৎ অতিরঞ্জন না হলে) কোন সমস্যা নেই ।
আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানীর মতে ,পতাকা বহন করা ধর্মীয় নিদর্শনসমূহের(
شعائر)
প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার অন্যতম দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য হতে পারে এবং তাতে কোন সমস্যা নেই ।
শোকের অনুষ্ঠানে বাদ্য বাজানো
75 নং প্রশ্ন : শোকের অনুষ্ঠানে আমোদ-প্রমোদের যন্ত্র এবং বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের হুকুম কী ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ বাহজাত ও আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানী ছাড়া সকল ফকীহর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে যে ,যদি ঐ সকল বাদ্যযন্ত্র শুধু আমোদ-প্রমোদ ও হারাম কাজের জন্য নির্দিষ্ট হয়ে থাকে তাহলে কোন অবস্থাতেই ঐগুলো শোকের অনুষ্ঠানে ও অন্য কোন অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা জায়েয নয় । কিন্তু যদি এমন বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয় যেগুলো আমোদ-প্রমোদ ও হারাম কাজে ব্যবহৃত হয় আবার হালাল কাজেও (যেমন যুদ্ধের ময়দানে) ব্যবহৃত হয় তাহলে তা শরীয়তের দৃষ্টিতে শোকের অনুষ্ঠানে অথবা আনন্দের অনুষ্ঠানে ব্যবহারে কোন সমস্যা নেই ।
আয়াতুল্লাহ বাহজাত ও সাফী গুলপাইগানীর মতে ,সার্বিকভাবে বাদ্য বাজানো যে কোন অবস্থায় হারাম । তা শোকের অথবা আনন্দের অনুষ্ঠানের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই ।
76 নং প্রশ্ন : শোকের অনুষ্ঠানে বাঁশি ,শানাই বাজানোর হুকুম কী ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ খোমেইনী ,আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ,আয়াতুল্লাহ ফাজেল লানকারানী : এমনভাবে বাদ্যযন্ত্র বাজানো যা শ্রোতার মধ্যে নাচের প্রবণতা ও আমোদ-প্রমোদের ভাব সৃষ্টি করে এবং গুনাহ ও আনন্দ-ফুর্তির অনুষ্ঠানের উপযোগী তা শোকের অনুষ্ঠানে বাজনো হারাম ।
আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী ,আয়াতুল্লাহ সিসতানি ,আয়াতুল্লাহ জাওয়াদ তাবরিযি ,আয়াতুল্লাহ নূরী হামাদানী ,আয়াতুল্লাহ ওয়াহিদ খোরাসানীর মতে ,গুনাহ ও আনন্দ-ফুর্তির অনুষ্ঠানে যেভাবে বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয় সেভাবে বাজানো হারাম ।
আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানী ও আয়াতুল্লাহ বাহজাতের মতে সকল অবস্থায় সমস্যা আছে ।
ব্যাখ্যা : আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানী এবং আয়াতুল্লাহ বাহজাত ছাড়া সকল মারজার মতে বাদ্য বাজানো-আনন্দের অনুষ্ঠানে এবং শোকের অনুষ্ঠানের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই । যদি আমোদ-প্রমোদের জন্য হয় তাহলে হারাম আর যদি আমোদ-প্রমোদের জন্য না হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই ।
77 নং প্রশ্ন : শোক এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানে তবলা ,করতাল বাজানোর হুকুম কী ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানী ও আয়াতুল্লাহ বাহজাত ছাড়া সকল মারজার মতে ,যদি সাধারণভাবে ও আমোদ-প্রমোদের উদ্দেশ্য ছাড়াই বাজানো হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই ।
কামাযানি (কিরিচ দিয়ে নিজেকে রক্তাক্ত করে মাতম করা)
78 নং প্রশ্ন : কামাযানি (কিরিচ দিয়ে নিজের মাথা ও পিঠ রক্তাক্ত করা) কি জায়েয ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ খোমেইনী ,আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ,আয়াতুল্লাহ ফাজেল লানকারানীর মতে ,বর্তমান সময়ে এর কোন গ্রহণযোগ্যতা এবং যুক্তিসঙ্গত কোন ব্যাখ্যা না থাকায় মাযহাব সমালোচনা ও নিন্দার সম্মুখীন হয় । অবশ্যই এ ধরনের কাজ বর্জনীয় ।
আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজীর মতে ,আহলে বাইতের জন্য শোক পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কাজ এবং শীয়া মাযহাবকে জীবিত রাখার চাবিকাঠি । কিন্তু শোক পালনকারীদের জন্য জরুরি হচ্ছে যে সকল কাজ মাযহাবের জন্য অবমাননাকর এবং নিজের শরীরের জন্য ক্ষতিকর তা বর্জন করা ।
আয়াতুল্লাহ নূরী হামাদানীর মতে ,কামাযানিতে শরীয়তের দৃষ্টিতে সমস্যা আছে ।
আয়াতুল্লাহ জাওয়াদ তাবরিযির মতে ,আহলে বাইতের (আ.) জন্য শোক পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কাজ এবং শিয়া মাযহাবকে জীবিত রাখার চাবিকাঠি । কিন্তু শোক পালনকারীদের জন্য জরুরি হচ্ছে যে সকল কাজ মাযহাবের জন্য অবমাননাকর এবং ইসলাম ও আহলে বাইতের শত্রুরা সেটাকে অপব্যবহার করে তা বর্জন করবে ।
আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানীর মতে ,যদি শরীরের জন্য বিশেষ কোন ক্ষতির কারণ না হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই ।
79 নং প্রশ্ন : লুক্কায়িত ভাবে কামাযানি (চাকু মারা) কি জায়েয ? যদি এ ব্যাপারে কেউ নজর (মানত) করে থাকে তাহলে তার দায়িত্ব কী ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর মতে ,সামাজিক দৃষ্টিতে (সভ্য সমাজের) কামাযানি দুঃখণ্ডবেদনা প্রকাশের শামিল হবে না । ইমামদের এবং তার পরবর্তী যুগে এর কোন নজির ছিল না ও এ কাজে তাঁদের কোন সমর্থন নেই । বর্তমান সময়ে তা মাযহাবের জন্য অপমান ও বদনামের কারণ হয়েছে । তাই কোন অবস্থায়ই এটা জায়েয নয় । যদি কেউ এ ধরনের কাজের জন্য মানত করে তবে তা সঠিক বলে গণ্য হবে না এবং তা আঞ্জাম দেওয়ারও প্রয়োজন নেই ।
জিঞ্জির মারা
80 নং প্রশ্ন : কিছু কিছু মুসলমান নিজের শরীরে জিঞ্জির মেরে ইমাম হোসাইন (আ.)-এর জন্য মাতম করে । এর হুকুম কী ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর মতে ,যদি তা সাধারণভাবে প্রচলিত পন্থায় (যাতে ক্ষতিকর কিছু করা হয় না) হয়ে থাকে এবং সামাজিক দৃষ্টিতে শোক প্রকাশের শামিল হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই ।
81 নং প্রশ্ন : যে সকল জিঞ্জিরের মাথায় ব্লেড আছে তা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে হুকুম কী ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ খোমেইনী ,আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী ,আয়াতুল্লাহ জাওয়াদ তাবরিযি ,আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী ,আয়াতুল্লাহ ফাজেল লানকারানীর মতে ,যদি এ ধরনের জিঞ্জির ব্যবহার করার কারণে জনগণের কাছে মাযহাব অপমানের শিকার হয় অথবা শরীরের জন্য বিশেষ ক্ষতির কারণ হয় ,তাহলে তা জায়েয নয় ।
আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানীর মতে ,যদি শরীরের জন্য বিশেষ কোন ক্ষতির কারণ না হয় ,ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোকের অনুষ্ঠানের জন্য তা করায় কোন সমস্যা নেই ।
আয়াতুল্লাহ নূরী হামাদানীর মতে ,শীয়াদের মধ্যে সাধারণভাবে প্রচলিত পন্থায় ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোক পালনে কোন সমস্যা নেই ।
মাতম করা (বুক চাপড়ানো)
82 নং প্রশ্ন : শোক পালনের সময় (কোন নারী উপস্থিত না থাকলে) পুরুষদের শরীরের ঊর্ধ্বাংশের কাপড় খুলে ফেলার হুকুম কী ?
উত্তর : অধিকাংশ মারজার মতে কোন সমস্যা নেই । যদি না ফ্যাসাদের (গুনাহয় পড়ার) কারণ হয় । আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজীর মতে ,এহতিয়াতে ওয়াজিব হচ্ছে জায়েয নয় ।
83 নং প্রশ্ন : ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোকের অনুষ্ঠানে মহিলাদের সামনে পুরুষদের শরীরের ঊর্ধ্বাংশের কাপড় খোলা কি জায়েয ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ খোমেইনী ,আয়াতুল্লাহ ফাজেল লানকারানীর মতে ,যদি অনাচার ও ফ্যাসাদের (গুনাহয় পড়ার) কারণ না হয় তাহলে সমস্যা নেই । কিন্তু মহিলাদের ওপর ওয়াজিব হচ্ছে ,না-মাহরামের দিকে দৃষ্টি দেওয়া থেকে বিরত থাকা ।
আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজীর মতে ,এহতিয়াতে ওয়াজিব হচ্ছে ,পুরুষদের এ কাজ থেকে বিরত থাকা ।
আয়াতুল্লাহ জাওয়াদ তাবরিযির মতে ,সমস্যা নেই ।
আয়াতুল্লাহ সাফী গুলপাইগানীর মতে ,যদি না-মাহরাম মহিলাদের দৃষ্টিতে না পড়ে তাহলে সমস্যা নেই ।
আয়াতুল্লাহ বাহজাতের মতে ,এহতিয়াতে ওয়াজিব হচ্ছে শরীরকে না-মাহরামের দৃষ্টি থেকে ঢেকে রাখা ।
শোক পালনের সময় লাফিয়ে বুক চাপড়ানো
84 নং প্রশ্ন : শোক পালন অথবা মাতমের সময় লাফিয়ে বুক চাপড়ানোর হুকুম কী ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ীর মতে ,ঈমানদারদের জন্য উত্তম হচ্ছে ,যে সকল কাজ ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোকানুষ্ঠানের সাথে সামঞ্জস্য রাখে না তা বর্জন করা । ওপরে উল্লিখিত কাজ যদি শোক অনুষ্ঠানের প্রতি অবমাননার কারণ না হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই ।
মর্সিয়া পাঠ
85 নং প্রশ্ন : কিছু কিছু ক্ষেত্রে মহিলা মর্সিয়া পাঠকারী তাদের নারীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত মজলিসে এমনভাবে মর্সিয়া পাঠ করে যাতে পুরুষের কানে ঐ শব্দ পৌঁছায় । এ কাজ কি জায়েয ?
উত্তর : আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজী ছাড়া সকল মারজার ঐকমত্য হচ্ছে ,যদি মহিলাদের ঐ শব্দ পুরুষদের মধ্যে উত্তেজনার ভাব সৃষ্টি করে তাহলে জায়েয নয় ।
আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজীর মতে ,যদি পুরুষের কানে ঐ শব্দ পৌঁছায় তাহলে জায়েয নয় ।
শোক পালন ও নামায
86 নং প্রশ্ন : যদি শোকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় কিছু কিছু ওয়াজিব কাজ কাযা হয় (যেমন ফজরের নামায কাযা হয়) তার জন্য কি ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করা উত্তম ,এমনকি যদি ঐ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ না করার কারণে আহলে বাইত থেকে দূরে সরে যায় ?
উত্তর : এটা সুস্পষ্ট যে ,নামায হচ্ছে ওয়াজিব এবং আহলে বাইতের শোকের অনুষ্ঠানের ফজিলতের ওপর তা অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য । ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের অজুহাতে নামায ত্যাগ বা নামায কাযা জায়েয নয় । কিন্তু যদি এমন ভাবে শোকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় যে নামাযের জন্য কোন সমস্যা হবে না ,তবে এটা মুস্তাহাবে মুয়াক্কাদাহ্ (তাকিদপূর্ণ মুস্তাহাব) ।
87 নং প্রশ্ন : নামাযের ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে জামায়াতে নামায পড়া উত্তম নাকি ইমাম হোসাইন (আ.)-এর শোক অনুষ্ঠান অব্যাহত রাখা ?
উত্তর : সকল মারজাই একমত যে ,জামায়াতে নামায পড়ার গুরুত্ব আগে । ঠিক যেমনভাবে ইমাম হোসাইন (আ.) আশুরার দিনে ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে যোহরের নামায পড়েছিলেন । এদিক থেকে আহলে বাইতের অনুসারিগণ যেন সব সময় চেষ্টা করে যতদূর সম্ভব নামাযের সময় শুরু হওয়ার সাথে সাথেই জামায়াতের সাথে নামায পড়ার । কেননা ,আহলে বাইতের সকল ইমাম (আ.) এবং তাঁদের সন্তান ও সাহাবীদের শাহাদাতের লক্ষ্যই ছিল দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা । আর দ্বীনের শীর্ষে রয়েছে আল্লাহর মারেফাত ও নামায ।
88 নং প্রশ্ন : মসজিদ ও ইমামবাড়ির বিল্ডিং থেকে অত্যন্ত উচ্চৈঃস্বরে কোরআন তেলাওয়াত ও শোক অনুষ্ঠান প্রচার হয় । এ কাজে প্রতিবেশীদের শান্তি বিনষ্ট হয় ,কিন্তু কর্তৃপক্ষ ও ইমামবাড়ির বক্তাদের তাগিদ হচ্ছে এটাকে অব্যাহত রাখতে হবে । এর বিধান কী ?
উত্তর : মারজারা এ বিষয়ে একমত যে ,যদিও বিভিন্ন উপলক্ষে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে উত্তম ও মুস্তাহাব কাজ ,কিন্তু শোকানুষ্ঠান আয়োজনকারীদের জন্য ওয়াজিব হচ্ছে যতদূর সম্ভব প্রতিবেশীদেরকে বিরক্ত করা থেকে বিরত থাকা ।
আশুরার দিনে মানত করা
89 নং প্রশ্ন : কেউ যদি মানত করে যে ,আশুরার দিনে মানুষের মধ্যে হালিম বিতরণ করবে । সে কি পারবে ঐ খাবারের পরিবর্তে অন্য খাবার দিতে ? অথবা মুহররম মাসের অন্য কোন দিনে তা বিতরণ করতে ?
উত্তর : সকল মারজার মতে ,যদি নযর শরীয়তে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী (যে বিশেষ বাক্যে মানত ফরয হয়ে থাকে ,যেমন আল্লাহর নামে আমার জন্য ওয়াজিব করলাম যে ,এ কাজটি মানত হিসেবে করব) হয়ে থাকে ঠিক যেভাবে নজর করেছে সেভাবে পালন করবে ,আর যদি সঠিক পদ্ধতি মতো না হয়ে থাকে তাহলে তার স্বাধীনতা আছে ।
মুহররম মাসে সাজ-গোজ করা
90 নং প্রশ্ন : মুহররম মাসে চেইন পড়া ,চুলে রং করা ,মহিলাদের সাজ-গোজ করায় কি সমস্যা আছে ?
উত্তর : সকল মারজাই একমত যে ,যদি পাপাচার ও ইমাম হোসাইন (আ.)-এর প্রতি অসম্মান প্রদর্শনের শামিল না হয় তাহলে সমস্যা নেই । কিন্তু মুসলমানদের জন্য উত্তম হচ্ছে যে ,এ ধরনের সাজ অন্য মাসে বা আনন্দ উৎসবের দিনে করা । কেননা ,ইমাম সাদিক (আ.) বলেছেন :‘
আল্লাহ আমাদের অনুসারীদের প্রতি অনুগ্রহ করুন । তারা আমাদের আনন্দে আনন্দিত হয় এবং আমাদের দুঃখে দুঃখিত হয় ।’
এটা স্পষ্ট যে ,মুহররম মাসের দিনগুলো আল্লাহর রাসূল (সা.) ও ইমামদের জন্য দুঃখণ্ডবেদনার দিন ।
মুহররম মাসে বিয়ে
91 নং প্রশ্ন : মুহররম মাসে বিয়ে করা ,আংটি পড়ানো ,মেয়ে দেখা ও বিয়ের প্রস্তাবের অনুষ্ঠান করা কি হারাম ?
উত্তর : সকল মারজার মতে ,যদি এরূপ অনুষ্ঠানের আয়োজন ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মর্যাদার হানি না ঘটায় এবং পাপের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন কিছু তাতে না ঘটে তবে সমস্যা নেই । কিন্তু এ মাসে এরূপ অনুষ্ঠানের আয়োজনে কোন বরকত নেই । ধর্মীয় চেতনাসম্পন্ন মুসলমানদের উচিত মুহররম ভিন্ন অন্য কোন মাসে উপযুক্ত সময়ে এরূপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ।