আশুরা ও কারবালা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর

আশুরা ও কারবালা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর0%

আশুরা ও কারবালা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর লেখক:
প্রকাশক: বাংলাদেশ ইসলামী সাংস্কৃতিক পরিষদ,ইরান।
বিভাগ: ইমাম হোসাইন (আ.)

আশুরা ও কারবালা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর

লেখক: লেখকবৃন্দ
প্রকাশক: বাংলাদেশ ইসলামী সাংস্কৃতিক পরিষদ,ইরান।
বিভাগ:

ভিজিট: 46820
ডাউনলোড: 4841

আশুরা ও কারবালা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 30 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 46820 / ডাউনলোড: 4841
সাইজ সাইজ সাইজ
আশুরা ও কারবালা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর

আশুরা ও কারবালা বিষয়ক প্রশ্নোত্তর

লেখক:
প্রকাশক: বাংলাদেশ ইসলামী সাংস্কৃতিক পরিষদ,ইরান।
বাংলা

আশুরা ও কারবালা বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর সম্বলিত এ গ্রন্থটিতে হযরত ইমাম হোসাইন (আ.) এর আশুরা বিপ্লব সম্পর্কিত বিভিন্ন  প্রশ্নের উত্তর দেয়া হযেছে

মক্কা থেকে প্রস্থান

4 নং প্রশ্ন : কেন ইমাম হোসাইন (আ.) হজ সম্পন্ন না করেই হজের প্রাক্কালে মক্কা থেকে বের হয়ে গেলেন ?

উত্তর : এ প্রশ্নের ঐতিহাসিক পর্যালোচনার পূর্বে একটি বিষয় উল্লেখ করতে চাই । সেটি হলো-ইমাম হোসাইন (আ.) সম্পর্কে বলা হয় যে ,তিনি হজের কাজ অর্ধেক সম্পন্ন করেই চলে যান । এ কথাটি ফিকাহসম্পন্ন নয় । কারণ ,ইমাম হোসাইন (আ.) 8ই যিলহজ তারবিয়ার দিন মক্কা থেকে বের হন ।33 আর হজের কাজ 9ই যিলহজের রাত থেকে মক্কায় ইহরাম বাঁধা এবং আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দ্বারা শুরু হয় । অতএব ,ইমাম হোসাইন (আ.) কার্যত হজের কাজ শুরুই করেননি যে বলা যাবে ,হজ অসম্পন্ন রেখেই চলে যান ।

এটা সুনিশ্চিত যে ,ইমাম হোসাইন (আ.) মক্কায় প্রবেশের সময় উমরা হজ পালন করেছিলেন । ইমাম হোসাইন (আ.) যে কয়েক মাস মক্কায় ছিলেন ,সম্ভবত এ সময়কালে বেশ কয়েক বার উমরা পালন করেন । কিন্তু উমরা পালন করার অর্থ এটা নয় যে ,তিনি হজের কাজ শুরু করেছিলেন । বেশ কয়েকটি হাদীসে শুধু উমরা পালন করার কথা এসেছে ।34

তারপরও ইতিহাসে এ প্রশ্ন থেকে যায় যে ,যদি মক্কাকে বেছে নেয়ার একটি কারণ এটা হয়ে থাকে যে ,নিজের মতামত ব্যক্ত করার জন্য একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করা ,তাহলে কেন ইমাম হোসাইন (আ.) ঐ পরিস্থিতিতে ,যখন ইসলামী ভূখণ্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ মক্কা ,আরাফা ও মিনায় একত্র হলো এবং তাবলীগের ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো তখন তিনি হঠাৎ করে মক্কা ত্যাগ করলেন ? সংক্ষিপ্ত ভাবে এর কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হলো :

এক. জীবননাশের আশঙ্কা

যেসব লোক ইমাম হোসাইন (আ.)-এর মক্কা থেকে কুফা যাওয়ার বিরোধী ছিল ,তাদের মতামতের জবাবে ইমাম হোসাইন (আ.) যা বলেছিলেন তা থেকে বোঝা যায় ,তিনি বেশিদিন মক্কায় অবস্থান করাটাকে ভালো মনে করেননি । কারণ ,দিন দিন বিপদের আশঙ্কা বাড়ছিল এবং যে কোন মুহূর্তে দুশমনের হামলার সম্ভাবনা ছিল । যেমন ইমাম হোসাইন (আ.) আবদুল্লাহ ইবনে আ 2ব্বাসের প্রশ্নের জবাবে বলেন , মক্কায় নিহত না হয়ে বরং অন্য জায়গায় নিহত হওয়াটাকে আমি বেশি পছন্দ করি । 35

ইমাম হোসাইন (আ.) আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের প্রশ্নের উত্তরে বলেন , আল্লাহর শপথ! মক্কার এক হাত ভিতরে নিহত হওয়ার থেকে মক্কার এক হাত বাইরে নিহত হওয়াটাকে আমি বেশি পছন্দ করি । আল্লাহর শপথ! আমি যদি কোন প্রাণীর বাসস্থানে গিয়েও আশ্রয় নিই তবুও তারা আমাকে সেখান থেকে টেনে বের করবে যাতে আমার থেকে যা চায় তা অর্জন করতে পারে । 36 ইমাম হোসাইন (আ.)স্বীয় ভ্রাতা মুহাম্মাদ হানাফিয়াকে বলেছিলেন যে ,ইয়াযীদের ইচ্ছা হলো মক্কার হারাম শরীফে আমাকে হত্যা করা ।37 এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় সুস্পষ্টভাবে উল্লিখিত হয়েছে যে ,ইয়াযীদ ইমাম হোসাইন (আ.)-কে হত্যা করার জন্য কিছু লোককে অস্ত্র দিয়ে মক্কায় পাঠিয়েছিল ।38

দুই. হারাম শরীফের সম্মান বিনষ্ট হওয়া

উপরিউক্ত আলোচনার সাথে আরেকটি বিষয় যুক্ত হয়েছে ,আর সেটি হলো ইমাম হোসাইন (আ.) চাইতেন না যে ,তাঁর রক্তের দ্বারা কাবা শরীফের সম্মান বিনষ্ট হোক । যদিও এক্ষেত্রে হত্যাকারীরা এবং উমাইয়া বংশের অপরাধীরা অনেক বড় গোনাহের ভার বহন করতো ।

ইমাম হোসাইন (আ.) আবদুল্লাহ বিন জোবায়েরের সাথে সাক্ষাতের সময় আপত্তির সুরে এবং সুস্পষ্টভাবে এ বিষয়টি বলেছিলেন যে ,পরবর্তীকালে আবদুল্লাহ যখন মক্কায় বিদ্রোহ করবে তখন ইয়াযীদের সৈন্যরা তাকে হত্যার মাধ্যমে হারাম শরীফের সম্মান বিনষ্ট করবে । ইমাম আবদুল্লাহ ইবনে জোবায়েরের প্রশ্নের জবাবে বলেন , আমার পিতা আলী (আ.) আমাকে বলেছিলেন যে ,মক্কায় এক বলির পাঁঠা আছে যার মাধ্যমে হারাম শরীফের সম্মান বিনষ্ট হবে । আর আমি সেই বলির পাঁঠা হতে চাই না । 39