অদৃষ্টবাদ ও ইসলাম

অদৃষ্টবাদ ও ইসলাম 0%

অদৃষ্টবাদ ও ইসলাম লেখক:
প্রকাশক: -
বিভাগ: আল্লাহর ন্যায়পরায়ণতা

অদৃষ্টবাদ ও ইসলাম

লেখক: নূর হোসেন মজিদী
প্রকাশক: -
বিভাগ:

ভিজিট: 19120
ডাউনলোড: 3537

অদৃষ্টবাদ ও ইসলাম
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 22 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 19120 / ডাউনলোড: 3537
সাইজ সাইজ সাইজ
অদৃষ্টবাদ ও ইসলাম

অদৃষ্টবাদ ও ইসলাম

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

আল্লাহ্ তা‘আলার সৃষ্টিনিচয়ের মধ্যে মানুষের রয়েছে এক অনন্য অবস্থান। আস্তিক-নাস্তিক নির্বিশেষে সকল মানুষের নিকট এটা সুস্পষ্ট ও স্বীকৃত যে, প্রাণী প্রজাতিসমূহের মধ্যে মানুষই সর্বশ্রেষ্ঠ। এই শ্রেষ্ঠত্ব যতোটা তার সৃজনশীলতার কারণে, তার চেয়ে অনেক বেশী তার বিচারবুদ্ধি (‘আক্বল্) ও ইচ্ছাশক্তির কারণে। এ দু’টি বৈশিষ্ট্যের কারণে মানুষ তার সহজাত প্রকৃতিকে পরাভূত করতে সক্ষম। যে সব বিষয় গোটা মানব জাতির কর্ম ও আচরণকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মানুষের ইচ্ছাশক্তি ও স্বাধীন কর্মক্ষমতা থাকা-নাথাকা সংক্রান্ত ধারণা। এ ক্ষেত্রে বেশীর ভাগ মানুষই তাত্ত্বিকভাবে বিশ্বাস করে যে, মানুষের নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি ও স্বাধীন কর্মক্ষমতা বলতে কিছুই নেই, বরং তার জন্ম-মৃত্যু এবং সারা জীবনের কার্যাবলী ও সুখ-দুঃখ পূর্ব থেকেই নির্ধারিত হয়ে আছে বা তার প্রতিটি কাজই আল্লাহ্ তা‘আলা তার দ্বারা করিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু তাদের বেশীর ভাগ কাজকর্ম ও কথাবার্তা থেকে প্রমাণিত হয় যে, তারা নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি ও স্বাধীন কর্মক্ষমতায় বিশ্বাসী। বস্তুতঃ তাদের তাত্ত্বিক বিশ্বাস তাদের কর্ম ও আচরণের ওপর খুব কমই ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে, বরং তা কেবল ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাবই বিস্তার করে থাকে। মানব জাতিকে, বিশেষ করে মুসলমানদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে এ প্রশ্নটির সঠিক সমাধান উদ্ভাবন অপরিহার্য। এ লক্ষ্যেই অত্র গ্রন্থ রচনার প্রয়াস।

 

মূসা ও খিজির ( আঃ ) এর ঘটনা

মানুষ স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি ও কর্মক্ষমতা প্রয়োগ করে যে সব কাজ সম্পাদন করে অথবা সম্পাদন করা থেকে বিরত থাকে তাকে এক বিবেচনায় তিন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। এক ধরনের কাজ হচ্ছে এই যে , বান্দাহ্ কেবল আল্লাহ্ তা আলার ইচ্ছা বাস্তবায়ন করে অর্থাৎ যেহেতু আল্লাহ্ তা আলা চান যে , বান্দাহ্ অমুক কাজটি অবশ্যই সম্পাদন করুক তখন সে সংশ্লিষ্ট কাজটি সম্পাদন করে। এ ক্ষেত্রে আল্লাহ্ তা আলার ইচ্ছা মানে তাঁর সৃষ্টি-ইচ্ছা নয় , বরং তাঁর পসন্দ , তবে সে পসন্দ বান্দাহর জন্য নির্দেশমূলক। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা আলা বান্দাহর দ্বারা একটি কাজ অবশ্যই সম্পাদিত হওয়া পসন্দ করেন , কিন্তু এজন্য তিনি বান্দাহকে বাধ্য করেন না। তবে বান্দাহ্ আল্লাহ্ তা আলার পসন্দকে গুরুত্ব প্রদান করে বলে সে স্বেচ্ছায় ও স্বীয় স্বাধীন এখতিয়ার ব্যবহার করে তা সম্পাদন করে। বান্দাহদের ইবাদত-বন্দেগী এ পর্যায়ের। তাছাড়া নবী-রাসূলগণ (আঃ) ও আল্লাহর ওলীগণের প্রতি আল্লাহ্ তা আলার পক্ষ থেকে কোনো বিশেষ ইচ্ছা (পসন্দ)ও পৌঁছে যেতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে তাঁরা তা সম্পাদন করেন।

আরেক ধরনের কাজ হচ্ছে এই যে , বান্দাহ্ তার স্বাধীন বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করে এমন একটি কাজ সম্পাদনকে যরূরী গণ্য করে , যে কাজটি সম্বন্ধে স্বয়ং আল্লাহ্ তা আলাও চান যে , তা সম্পাদিত হোক। তবে এ ক্ষেত্রে আল্লাহ্ তা আলার ইচ্ছা বা পসন্দ বান্দাহর প্রতি নির্দেশমূলক নয়।

তৃতীয় এক ধরনের কাজ আছে যে সম্পর্কে আল্লাহ্ তা আলার বিশেষ কোনো সাধারণ বা নির্দেশমূলক ইচ্ছা-অনিচ্ছা নেই , যদিও হতে পারে যে কাজটি আল্লাহ্ তা আলার নিকট সাধারণভাবে পসন্দনীয় , অথবা অপসন্দনীয় নয় অথবা অপসন্দনীয় , কিন্তু অপসন্দনীয় হওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহ্ তা আলা তাকে তা করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করেন না। এ ক্ষেত্রে বান্দাহ্ আল্লাহ্ তা আলার কোনো প্রত্যক্ষ ইঙ্গিত ছাড়াই বিচারবুদ্ধির সাহায্যে বা দ্বীনী ও শর ঈ জ্ঞানের আলোকে একটি কাজকে ভালো জেনে সম্পাদন করে অথবা একটি কাজকে খারাপ জেনেও কুপ্রবৃত্তিবশে তা সম্পাদন করে।

কোরআন মজীদের সূরাহ্ আল্-কাহফে উল্লিখিত হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত খিযির (আঃ)-এর ঘটনায় হযরত খিযির (আঃ) কর্তৃক এ তিন ধরনের তিনটি কাজ সম্পাদনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। (অবশ্য তৃতীয় ধরনের কাজের ক্ষেত্রে তিনি একটি ভালো কাজ সম্পাদন করেন ; মন্দ কাজ সম্পাদন করেন নি।)

কোরআন মজীদের সূরাহ্ আল্-কাহফের ৬০ নং থেকে ৮২ নং আয়াতে এ ঘটনাটি বর্ণিত হয়েছে। যদিও এতে হযরত খিযির (আঃ)-এর নাম উল্লিখিত হয় নি , বরং আল্লাহ্ তা আলা তাঁকে স্বীয় বান্দাহদের অন্যতম বলে এবং স্বীয় সন্নিধান থেকে তাঁকে বিশেষ জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। তবে মুফাসসিরগণ একমত যে , তিনি হচ্ছেন হযরত খিযির (আঃ)।

হযরত মূসা (আঃ) দুই সমুদ্রের সংযোগস্থলে হযরত খিযির (আঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁর নিকট থেকে বিশেষ জ্ঞান শিক্ষা করার জন্য তাঁর সাথে থাকার অনুমতি চান। হযরত খিযির (আঃ) হযরত মূসা (আঃ)কে এ শর্তে অনুমতি দেন যে , তিনি হযরত খিযির (আঃ)-এর কোনো কাজ সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন না যতক্ষণ না তিনি নিজেই তাঁর কাজের ব্যাখ্যা দেন। হযরত মূসা (আঃ) এ শর্তে রাযী হন।

অতঃপর তাঁরা চলার পথে একটি নৌকায় আরোহণ করলেন এবং হযরত খিযির (আঃ) নৌকাটিতে ছিদ্র করে দিলেন। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে হযরত মূসা (আঃ) কাজটিকে অন্যায় বলে অভিহিত করলেন। তখন হযরত খিযির (আঃ) হযরত মূসা (আঃ)কে তাঁর প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দিলে মূসা (আঃ) তাঁর ভুল স্বীকার করলেন ও তা উপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ জানালেন । এরপর চলার পথে হযরত খিযির (আঃ) একটি বালককে হত্যা করলেন। এতে হযরত মূসা (আঃ) অসন্তুষ্ট হলেন এবং একটি নিষ্পাপ শিশুকে হত্যার এ কাজকে গুরুতর অন্যায় বলে অভিহিত করলেন। তখন হযরত খিযির (আঃ) পুনরায় হযরত মূসা (আঃ)কে তাঁর অঙ্গীকার স্মরণ করিয়ে দিলে মূসা (আঃ) কথা দিলেন যে , পুনরায় প্রশ্ন করলে হযরত খিযির (আঃ) আর তাঁকে সাথে রাখতে বাধ্য থাকবেন না। অতঃপর তাঁরা এক জনপদে পৌঁছলেন যেখানকার লোকেরা তাঁদের আতিথেয়তা করতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও উক্ত জনপদে একটি পতনোন্মুখ প্রাচীর দেখতে পেয়ে হযরত খিযির (আঃ) তা মেরামত করে দিলেন। তা দেখে হযরত মূসা (আঃ) বললেন যে , তিনি (খিযির) চাইলে এ কাজের জন্য পারিশ্রমিক আদায় করতে পারতেন। তখন হযরত খিযির (আঃ) শর্ত অনুযায়ী হযরত মূসা (আঃ) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। তবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার পূর্বে তিনি তাঁর কাজের যে তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন তা বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য।

হযরত খিযির (আঃ) বলেন যে , নৌকাটি ছিলো কয়েক জন দরিদ্র লোকের ও তাদের জীবিকার একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু অপর পারে এক যালেম শাসক ছিলো যে নৌকাটি ছিনিয়ে নিয়ে নিতো। তিনি বলেন: তাই আমি তাতে ত্রুটি সৃষ্টি করতে চাইলাম (যাতে তা ছিনিয়ে নেয়া না হয়)। আর যে বালকটিকে তিনি হত্যা করেন তার সম্পর্কে তিনি বলেন যে , তার পিতা-মাতা ঈমানদার , কিন্তু (তিনি বলেন:) আমরা (আমি ও আল্লাহ্ তা আলা) আশঙ্কা করলাম যে , সে তার অবাধ্যতা ও কুফর্ দ্বারা তাদের উভয়কে প্রভাবিত করবে এবং আমরা (আমি ও আল্লাহ্ তা আলা) চাইলাম যে , তাদের উভয়ের (বালকটির পিতা-মাতার) রব (আল্লাহ্ তা আলা) তাদেরকে তার (বালকটির) পরিবর্তে তার তুলনায় উত্তম (একটি সন্তান) প্রদান করুন-যে হবে পবিত্র ও অধিকতর দয়ার্দ্রচিত্ত। আর হযরত খিযির (আঃ) যে ভগ্ন প্রাচীরটি মেরামত করে দেন সে সম্পর্কে তিনি বলেন যে , এটির নীচে গুপ্তধন ছিলো এবং এটি ছিলো দু জন পিতৃহীন বালকের যাদের পিতা ছিলো সৎকর্মশীল। তিনি বলেন: সুতরাং (হে মূসা!) আপনার রব (আল্লাহ্ তা আলা) চাইলেন যে , তারা যৌবনে উপনীত হয়ে এ গুপ্তধন উদ্ধার করুক (এবং প্রাচীরের ভগ্নতার কারণে তা অন্য লোকদের হস্তগত না হোক)। আর আমি নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী এ কাজ (দেয়াল মেরামত) করি নি।

হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত খিযির (আঃ)-এর এ ঘটনা থেকে সুস্পষ্ট জানা যাচ্ছে যে , হযরত খিযির (আঃ) একটি কাজ কেবল তাঁর নিজের ইচ্ছায় (আল্লাহ্ তা আলা কর্তৃক বাধ্য না হয়ে , এমনকি শর ঈ নির্দেশ না থাকা বা বিশেষ নির্দেশও না পাওয়া সত্ত্বেও) , একটি কাজ আল্লাহ্ তা আলার ও তাঁর নিজের উভয়ের ইচ্ছায় এবং একটি কাজ কেবল আল্লাহ্ তা আলার বিশেষ ইচ্ছা বা নির্দেশের কারণে সম্পাদন করেছিলেন। আর বলা বাহুল্য যে , এ তিন ধরনের কাজই আল্লাহ্ তা আলার সর্বজনীন ইচ্ছার (বা সর্বজনীন অনুমতি ও অবকাশের) আওতায় বান্দাহ্ কর্তৃক স্বেচ্ছায় সংঘটিত হয়ে থাকে।

হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত খিযির (আঃ)-এর এ ঘটনায় আল্লাহ্ তা আলা ও হযরত খিযির (আঃ)-এর যৌথ ইচ্ছা অনুযায়ী ঈমানদার পিতা-মাতার নাবালেগ শিশুকে হত্যার ঘটনা থেকে মানবকুলের প্রতি আল্লাহ্ তা আলার অনুগ্রহের আরেকটি মূলনীতি পাওয়া যায়। তা হচ্ছে এই যে , যদিও মানুষের বিচারবুদ্ধি ( আক্বল্) ও ইচ্ছাশক্তি এতই প্রবল যে , বয়ঃপ্রাপ্ত (বালেগ্ব্) হওয়ার পর একটি মানুষ সহজাত জ্ঞানের দ্বারা সত্য-মিথ্যা ও ভালো-মন্দ বুঝতে পারে (সূরাহ্ আশ্-শামস্: ৮) এবং স্বেচ্ছায় সত্যের বা মিথ্যার পথ বেছে নিতে পারে , সুতরাং নিঃসন্দেহে বালেগ্ব্ হবার পূর্বে তার ভবিষ্যত ঈমান ও কুফরের বিষয়টি থাকে দুই সম্ভাবনাযুক্ত , তবে বিভিন্ন কারণের প্রভাবে ব্যতিক্রম হিসেবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে , কোনো কোনো মানবসন্তানের বালেগ্ব্ হবার পরে নাফরমান বা কাফের-মোশরেক হবার বিষয়টি তার বালেগ্ব্ হবার পূর্বেই অনিবার্য হয়ে পড়তে পারে এবং সে যদি ঈমানদার পিতা-মাতার সন্তান হয় , তো তার কারণে তার পিতা-মাতার নাফরমানীতে জড়িত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় আল্লাহ্ তা আলার দয়া ও অনুগ্রহের দাবী হচ্ছে এই যে , তিনি ঐ মানবসন্তানটিকে বালেগ্ব্ হবার পূর্বেই মৃত্যু প্রদান করবেন।

বলা বাহুল্য যে , উক্ত ঘটনায় (এবং এ ধরনের অন্য সকল ঘটনায়ই) আল্লাহ্ তা আলার এ ধরনের বিশেষ হস্তক্ষেপ সন্তান ও পিতামাতা উভয়ের জন্যই কল্যাণকর। আর হযরত মূসা (আঃ) ও হযরত খিযির (আঃ)-এর ঘটনায় এটি ঈমানদার পিতা-মাতার সন্তানের ক্ষেত্রে ঘটলেও সম্ভবতঃ খোদায়ী অনুগ্রহের এ নীতিটি কেবল ঈমানদার পিতা-মাতার সন্তানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় , বরং সকল নাবালেগ্ব্ই এর আওতাভুক্ত। অর্থাৎ ঈমান ও কুফর্ এবং ভালো ও মন্দের মধ্যকার পার্থক্য অনুধাবন করতে পারা ও স্বেচ্ছায় একটিকে বেছে নেয়ার জন্য উপযুক্ত হবার তথা বিচারবুদ্ধিগত পরিপক্বতার অধিকারী হবার পূর্বেই কোনো বা বিভিন্ন কারণে যে কোনো মানবসন্তানের জন্যই ভবিষ্যত কুফরী অনিবার্য হয়ে গেলে আল্লাহ্ তা আলার অনুগ্রহের দাবী হচ্ছে তাকে কুফরী ও জাহান্নাম থেকে রক্ষা করা। অবশ্য এ থেকে মনে করা ঠিক হবে না যে , বালেগ্ব্ হবার পূর্বে মৃত্যুবরণকারী সকল মানবসন্তানই বুঝি এ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। বরং এ হচ্ছে ব্যতিক্রম ; অধিকাংশ নাবালেগ্ব্ মানবসন্তানের মৃত্যুই প্রাকৃতিক নিয়মে সংঘটিত হয়ে থাকে যার মধ্যে মানবিক কারণও অন্যতম। তবে কোন্ শিশুর মৃত্যু প্রাকৃতিক নিয়মে সংঘটিত হয়েছে এবং কোন্ শিশুর মৃত্যু আল্লাহ্ তা আলার বিশেষ অনুগ্রহ-ইচ্ছার কারণে হয়েছে তা সাধারণ মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয় , ঠিক যেভাবে হযরত খিযির (আঃ) ও আল্লাহ্ তা আলার যৌথ ইচ্ছানুযায়ী তাঁর (খিযির) দ্বারা নিহত শিশুটির হত্যার ঘটনাটি (মুফাসসিরগণের প্রায় সর্বসম্মত মত অনুযায়ী ,) সাধারণ মানুষের নিকট হত্যা হিসেবে প্রতিভাত হয় নি , বরং প্রকৃতিক কারণে মৃত্যু বলে প্রতিভাত হয়েছিলো।