পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইফতারের সময়সূচি
মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নাযিলকৃত পবিত্র ঐশি গ্রন্থ আল কোরআন। এর বিধান মোতাবেক সকল কাজ আনজাম দেয়া সকল মুমিনের জন্যে ফরজ। রোজা এমনি একটি ফরজ কাজ, যা কোরআনের বিধান মোতাবেক পালন না করলে রোজা পালনের শর্তাবলী পূরণ হবে না এবং এতে করে রোজার মত একটি ফরজ কাজ একজন মুমিনের আমল থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ পাক বলেন :
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
“হে ঈমানদারগণ তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর যাতে তোমরা মোত্তাকি হতে পার”। [সূরা বাক্বারা, আয়াত-১৮৩]
উপরের আয়াত থেকে নিশ্চিতভাবে জানা যায়, রোজা তাকওয়া বা মোত্তাকি অর্জনের উপায়। সূরা বাক্বারার ২ নং আয়াতে আমরা দেখতে পাই,
ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِلْمُتَّقِين
“এটা সেই কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নাই, মোত্তাকিদের জন্যে রয়েছে পথনির্দেশ”। অর্থাৎ কোরআন মোত্তাকিদের জন্য হেদায়েতস্বরূপ। যেহেতু রোজা পালনে তাকওয়া অর্জন হয়, তাই রোজার সময়সূচি, নিয়ম-কানুন ও বিধি-বিধান সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে কি বলেছেন তা জানা প্রত্যেকের জন্য ফরজ। নতুবা এর বিপরীত হয়ে গেলে সঠিক ফলাফল নাও পাওয়া যেতে পারে। আল্লাহর দেয়া বিধান মোতাবেক রোজা পালন করা না হলে ফলাফল ইতিবাচক পাওয়া যাবে বলে আমরা করতে পারি না। আর এতে আল্লাহ তাঁর বান্দার উপর সন্তুষ্ট হতে পারেন না। আর আল্লাহ সন্তুষ্ট না থাকলে তো সবই বিফলে গেল। সুতরাং আল্লাহকে সস্তুষ্ট করতে হলে আল্লাহর বিধান মানতে হবে, আর আল্লাহর বিধান একামাত্র ঐশি গ্রন্থ আল কোরআনেই বিশদভাবে, নির্ভূলভাবে, কোন ধরণের বিকৃতি ছাড়া বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন :
ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْل
“অতঃপর তোমরা রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত” [সূরা বাক্কারা, আয়াত-১৮৭]
-এ আয়াতে ইলাল্ লাইল (إِلَى اللَّيْل) শব্দ দ্বারা রোজা পূর্ণ করার সময়কে সুস্পস্টভাবে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এ সময়টি হল “রাত পর্যন্ত”( إِلَى اللَّيْل)। এখন প্রশ্ন হল রাত’ এর সংজ্ঞা কি বা পরিচয় কি? মহান আল্লাহ তায়ালা রাত এর পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন:
وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى
‘‘রাতের শপথ যখন উহা আচ্ছন্ন করে লয়।” (সূরা আল্ লাইল, আয়াত-০১) রাত মানেই রাত, যখন আচ্ছন্ন করে অর্থাৎ স্বাভাবিক চোখে কিছু দেখা যায় না, অন্য কোন কিছুর সাহায্য ছাড়া কোন স্বাভাবিক বস্তু দেখতে পাওয়া যায় না ইত্যাদি। তার ঠিক আগের অবস্থাটি হল ‘সন্ধা’ বা ‘শাফাক্ক’, তার ঠিক আগের অবস্থাটি হল ‘বিকাল’ বা ‘আছর’, তার ঠিক আগের অবস্থাটি হল ‘মধ্যাহ্ন’ বা ‘জোহর’, তার আগের অবস্থাটি হল ‘ফজর’ বা ‘সকাল’, তার আগের অবস্থাটি হল ‘ভোর’ বা ‘সুবেহ’ ইত্যাদি। আমরা স্বাভাবিকভাবে ‘রাত’ বলতে যা বুঝি তা-ই ‘রাত’। পবিত্র কোরানের ১৬২ (একশত বাষট্রিটি) স্থানে রাত বা اللَّيْلِ শব্দটির উল্লেখ আছে এবং রাত এর সংজ্ঞা ও পরিচয় দেয়া রয়েছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ‘সময়’ সম্পর্কে যে সকল শব্দ উল্লেখ করেছেন তম্মধ্যে দিন, রাত, সন্ধা, ভোর, মধ্যাহ্ন, বিকাল ইত্যাদি উল্লেখ করেছেন। দিন মানে আরবিতে নাহার, রাত মানে লাইল, সন্ধা মানে শাফাক্ক, ভোর মানে সুবহ, মধ্যাহ্ন মানে জোহর, বিকাল মানে আছর ইত্যাদি। পবিত্র কোরানের সর্বত্র এ শব্দসমূহের উল্লেখ রয়েছে। এ শব্দগুলোর অর্থ এবং পরিচয়ও মহান আল্লাহ তায়ালাই বর্ণনা করে দিয়েছেন।
বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে যে সময়টিতে রোজা সমাপ্ত করা হয় অর্থাৎ ইফতার করা হয় এ সময়টি হল ‘সন্ধা’ বা ‘শাফাক্ক’। “---রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত---” রাত পর্যন্ত পৌছুতে হলে ‘সন্ধা’ সময়টি পার করতে হবে, তারপরই রাতে পৌছা যাবে, সন্ধা পার না করে তো আর রাত পর্যন্ত পৌছা যাবে না! বর্তমানে ইসলামীক ফাউন্ডেশনের ক্যালেন্ডারে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের ক্যালেন্ডারে ইফতারের যে সময় সূচি দেয়া থাকে তাতে তো কোরানের নির্দেশিত সময় মানা হচ্ছে না বলে দেখা যায়। সকল ক্যালেন্ডারেই যে সময়টি ইফতারের জন্য দেয়া থাকে তা সন্ধার মধ্যে পড়ে; রাত পর্যন্ত পৌছায় না। রাত পর্যন্ত না পৌছার কারনে কি রোজা অপূর্ণ থেকে যায়না? অথবা, উল্টো করে বললে বলতে হয় যে, সময় হওয়ার পূর্বেই যদি কিছু খেয়ে ফেলা হয় অর্থাৎ ইফতার করে ফেলা হয় তাহলে কি রোজা ভেঙ্গে গেল না? আল্লাহ তায়ালার হুকুমকে না মেনে নিজেদের খেয়াল খুশি মত কাজ করলে আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হবেন কেন? আল্লাহ তায়ালার কি কোথায়ও ঠেকে গেছেন নাকি (নাউজুবিল্লাহ) যে, মানুষ আল্লাহর কথাকে মানবেনা, পাত্তা দেবেনা, খোদার উপর খোদগিরি করবে, আবার আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট থাকবেন, মানুষকে বেহেশত দেবেন! আল্লাহ তায়ালা যা বলেছেন, তা মান্য করা এবং যেভাবে করতে বলেছেন, সেভাবে করাই আল্লাহর ইবাদত; এতে ব্যত্যয় করার কোন সুযোগ নেই। তাহলে তা হবে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর ইবাদত করা, যা মুশরীকগণ করে থাকে।
নিম্নের চিত্রে বিষয়টি আরও স্পস্ট করে দেয়া হল :
মহান আল্লাহ তায়ালা দিন, রাত সহ ২৪ ঘন্টার মর্ধবর্তী সময়ের বিভিন্ন ভাগের বা বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন নাম ব্যবহারের মাধ্যমে সে সকল সময়কে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। তাছাড়া বাংলা ভাষাতেও ‘রাত’- এর ‘আরবী’ যে ‘লাইল’ তা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের নিকট বহুল প্রচলিত ও বহুল ব্যবহৃত। এ অঞ্চলের প্রতিটি মুসলমানের নিকট ‘লাইলাতুল বরাত’ মানে যে ‘ভাগ্য রজনী’, ‘লাইলাতুর ক্কদর’ মানে যে ‘মহিমাম্বিত রজনী’ -তা সুপরিচিত। ‘লাইল’ অর্থ কোন ভাবেই ‘সন্ধা’কে বা ‘সূর্যাস্তের’ সময়কে মনে করে না। বাংলা ভাষায়ও এমন ধরনের অর্থ প্রকাশ করে না। বরং ‘সন্ধা’কে পবিত্র কোরানে ‘শাফাক্ক‘, সূর্যের ‘অস্তকালীণ’ সময়কে ‘গুরুবিস্ শামস’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এ সময়গুলো অবশ্যই ‘রাত’ নয়। রাত আসবে সন্ধা পার হওয়ার পর। সুতরাং সন্ধা পার করার পরই রাত আসে এবং রাত আসার পরই রোজা পূর্ণ হয়ে থাকে। সন্ধার সময় কোন খাদ্য খেলে অর্থাৎ রোজা ভঙ্গ হওয়ার মত কোন কাজ করলে অবশ্যই রোজা পূর্ণ হবে না এবং আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার দায়ে দায়ী হতে হবে নিঃসন্দেহে। ‘প্রভাতকাল’ বা ‘ভোর’ সম্পর্কে সূরা মুদাসসিরের ৩৪ নং আয়াতে ‘সুবহ’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। সুর্যাস্তের সময়কে ‘গুরুবিস্ শামস’ বলে সূরা ত্বাহা’র ১৩০ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে (---তুলুইশ শামছি ওয়া ক্কাবলা গুরুবিহা---)। সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে যে রক্তিম আভা বা লালিমার সৃষ্টি হয় এবং যা সাধারণতঃ ঋতু ভেদে ১৮ থেকে ২৬ মিনিট বিদ্যমান থাকে সেই সময়কে সুরা ইনশিক্কাক এর ১৬ নং আয়াতে ‘শাফাক্ক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে যার বাংলা অর্থ হল ‘সন্ধা’ বা ইংরেজিতে evening । শাফাক্কের পূর্ণ সমাপ্তির পরই যে ‘লাইল’ বা ‘রাত’ শুরু হয় তাও সূরা ইনশিক্কাক এর ১৬ ও ১৭ নং আয়াতে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, “আমি শপথ করি সন্ধাকালের লাল আভার ও রাতের”। এখানে মহান আল্লাহ ‘সন্ধা’ ও ‘রাত’কে আলাদাভাবে দেখিয়ে বর্ণনা করেছেন। রাত সম্পর্কে মহান আল্লাহ সূরা বনী ইসরাঈলের ১২ নং আয়াতে বলেন: “আমি রাত ও দিবসকে করিয়া দিয়াছি দু‘টি নিদর্শন, অতঃপর রাত্রির নিদর্শনকে নিস্প্রভ এবং দিবসের নিদর্শনকে উজ্জল করিয়া দিয়াছি; যেন তোমরা তোমাদের রবের দেয়া জীবিকা অম্বেষণ করতে পার”। সূরা ইয়াসীনের ৩৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে: ‘‘আর তাদের জন্য আরেকটি নিদর্শন হল ‘রাত’, আমিই তার থেকে দিনকে অপসারণ করি, তখনই তো তারা অন্ধকারে পতিত হয়”। সূরা আস্ শামস এর ৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে “দিনের শপথ, যখন সে সূর্যকে প্রখরভাবে প্রকাশ করে”, ৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে “রাতের শপথ, যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে।” সূরা লাইল এর ১ নং আয়াতে বলা হয়েছে “রাতের শপথ, যখন সে আচ্ছন্ন করে” এবং ২ নং আয়াতে বলা হয়েছে “শপথ দিনের যখন সে আলোকিত করে”। এমনিভাবে অসংখ্য আয়াতে রাতের ব্যাখ্যা ও পরিচয় দেয়া হয়েছে। লেখার কলেবর বৃদ্ধি না করে শুধুমাত্র কয়োটি সুরার নাম ও আয়াত নং উল্লেখ করা হল। যেমন: সূরা দোহার আয়াত নং ২; সূরা ফোরকানের আয়াত নং ৫, ৪৭, ৬২; সূরা নূরের আয়াত নং ২৪, ৩৬, ৪৪; সূরা নাযিয়াতের আয়াত নং ২৯ এবং সূরা বনী ইসরাইলের আয়াত নং ৭৮। উল্লেখিত সমস্ত আয়াত থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হয় যে, ‘লাইল’ বা ‘রাত’ হল এমন একটি সময় যা পরিপূর্ণভাবে অন্ধকারে আচ্ছাদিত থাকে। এ সময়ে দিনের আলোর অংশ বিশেষও উপস্থিত থাকে না। সন্ধার সময়টিতে কিছু আলো ও কিছু অন্ধকার বিদ্যমান থাকে, তাইতো এ সময়টি দিনও নয় রাতও নয়; বরং ইহা ‘সন্ধা’ বা, ‘শাফাক্ক’ বা ‘বাবহরহম’। ‘শাফাক্ক’ বা ‘আছর’ বা ‘আছিল’ বা ‘গুরুবি শামস’ দ্বারা কোন অবস্থাতেই ‘লাইল’ বা ‘রাত’ বুঝায় না। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন; সন্ধায় বা শাফাক্ক বা গুরুবিশ শামস পর্যন্ত নয়। অতএব বর্তমানে প্রচলিত সময়ে যে ইফতার করা হয় তা কোরানে বর্ণিত মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশের পরিপন্থি।
হাদিস শরীফেও এর সত্যতা পাওয়া যায়। যেমন: পবিত্র হাদিস গ্রন্থ ‘‘মুয়াত্তা ইমাম মালিক’’-এর ১ম খন্ডের ২৩৯ পৃষ্ঠার ৬৯৪ নং হাদিসে বলা হয়েছে, “হুমাইদ ইবনে আবদুর রাহমান (রা.) থেকে বর্ণিত, উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) এবং উসমান ইবনে আফফান (রা.) উভয়ে মাগরিবের নামায পড়তেন-এমন সময় রাত্রির অন্ধকার দেখতে পেতেন, আর ইহা ছিল ইফতার করার পূর্বে। অতঃপর তারা উভয়ে ইফতার করতেন। আর ইহা ছিল রমজান মাসে।’’
আল কোরআনের পর সর্বোত্তম ও সবচেয়ে বেশী নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হাদিসগ্রন্থ আধুনিক প্রকাশনীর প্রকাশিত সহিহ আল বোখারীর দ্বিতীয় খন্ড পৃষ্ঠা ২৫৬-২৫৭, হাদিস নং ১৮১৬- এ উল্লেখ করা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে আওফা থেকে বর্ণিত নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যখন দেখবে যে, পূর্ব দিক থেকে রাতের অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে তখন ইফতার করবে।’’ ১৮১৫ নং হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘সূর্যাস্তের পরে যখন পূর্বদিক থেকে অন্ধকার হয়ে আসবে এবং দিনের আলো পশ্চিম দিক থেকে চলে যাবে তখন রোজাদারদের জন্য ইফতারের সময় হয়।” একই গ্রন্থের ১৮১৮ নং হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘নবী করিম (সা.) বলেছেন, যতদিন লোকেরা সত্ত্বর ইফতার করবে ততদিন পর্যন্ত কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে না।’’ এ কথার অর্থ এ নয় যে, ‘‘সময় হওয়ার আগেই সত্ত্বর ইফতার করে ফেলতে হবে।’’ রাত হওয়ার পরই কেবল সত্ত্বর ইফতার করতে নবী (সা.) বলেছেন। এ হাদিসের দ্বারা আরও একটি বিষয় স্পস্ট হয়ে গেল যে, রাত একটি দীর্ঘ মেয়াদের সময়, রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করতে বলা হয়েছে, তাহলে রাতের কোন সময়টিকে ইফতারের সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে- এ প্রশ্ন এসে যায়। বর্ণিত হাদিস দ্বারা এ প্রশ্নেরও উত্তর এসে যায়; অর্থাৎ রাত হওয়ার পর সত্ত্বর ইফতার করে ফেলতে নবী (সা.) বলেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায় যে, মহান আল্লাহ তায়ালা ও নবী (সা.) বান্দা ও উম্মতকে অনেক ভালবাসেন, সারাদিন কোন কিছু না খেয়ে রোজা রাখার কারনে যে কষ্ট রোজাদারগণ করেছেন, এ কষ্ট যাতে অধিক বৃদ্ধি না পায়, সে জন্য রোজা পূর্ণ হওয়ার পর আর কষ্ট না বাড়িয়ে সত্ত্বর ইফতার করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। রোজার পূর্ণতার জন্য অবশ্যই সন্ধা পার করে রাত পর্যন্ত পৌছে তারপর ইফতার করতে হবে।
পবিত্র কোরআনের সুরা আল বালাদের ১৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “আর যারা আমার আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করেছে, তারাই হল হতভাগা” এবং ২০ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “তারা পরিবেষ্টিত হবে অবরুদ্ধ অগ্নিতে।’’ সূরা আল বাকারার ১৮১ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “অতঃপর ইহা অর্থাৎ কোরআন শোনার পর যদি কেউ তা পরিবর্তন করে, তবে যারা পরিবর্তন করবে অপরাধ তাদেরই।”
“বর্তমানে বাংলাদেশে যে সময়ে ইফতার করা হচ্ছে তাতে রোজা ভেঙ্গে যাচ্ছে, রোজা পূর্ন হচ্ছে না, সন্ধা পার করে অর্থাৎ পশ্চিমাকাশের লাল আভা চলে যাওয়ার পর রাতের আগমন হলে তার পর ইফতার করতে হবে”
অতএব! হে মহাপরাক্রমশালী প্রভু, কোরআনের মালিক ও বিধান দাতা, উপরোক্ত বর্ণনা ও বিশ্লেষণের আলোকে আমল করা ও হক্ক পথে চলার সুযোগ দিন, আমিন!
এম এ সালাম