মহরম (শাহাদাৎ হোসেন)
শাহাদাৎ হোসেন
রুদ্র দুপর চলে আফতাব শিরে ঝলে
ছুটে জ্বালা চৌদিকে ইঙ্গিত মৃত্যুর,
কোনখানে নাহি চিন পানি এক বিন্দুর।
মরু-বালু ঝলকায়
উন্মনা ছুটে চলে বাতাসের হলকায়।
নাই পানি,নাই ছায়া জ্বল-জ্বল মরুকায়া
কারবালা প্রান্তর ঝাঁ-ঝাঁ করে চৌদিক,
শান্তির রেখা নাই ,সান্তনা মৌখিক।
হাহাকার! হাহাকার!!
আজ বুঝি দুনিয়ায় জাগিয়াছে মহামার।
‘‘লাও পানি জান যায়’’ ছাতি চাপি’ পাঞ্জায়
কাতরায় পানি বিনে আজি তারা শাহারায়
‘শরাবন তাহুরা’র সাকী যারা আখেরায়।
মা’র বুকে শুখা তন
মিলে নাকো ফোটা দুধ,কাঁদে শিশু আনমন।
কলেজার টুকরা সে সন্তান এক পাশে
জবে-করা কবুতর ছটফটি’ মরে হায়!
ফাটে শোকে মা’র প্রাণ, ‘দাও পানি ছেলে যায়’
দিল বুকে জনকের
ফিরে এল কোলে শিশু বুকে তীর জহরের।
শত্রুর রণভেরী ফোরাতের সীমা ঘেরি’
বাজে ঘন গৌরবে দামামার দমদম
ঝঙ্কৃত মুহূমুহূ দামামার দমদম।।
আস্ফালি হাকে বীর,
কম্পন অরাতির পরাণী না মানে থির।
রক্তে ‘নহর’ বয় কোথা জয়-পরাজয়
নিষ্ঠুর তাণ্ডবে রুদ্র সে নেচে ঘুরে
খাত-উনে-জান্নাত আসমানে আখি ঝুরে!
আল্লাহর বাধা শের
হুঙ্কার ছাড়ে রোষে,খুন চায় জালেমের।
‘হা হোসেন’ অকসাৎ নিদারুণ শেলাঘাত
মূর্চ্ছিতা মা-ফাতেমা জান্নাৎ-দরজায়
জুলফিকার ধরে ‘শেরে খোদা’ পাঞ্জায়।
আসমানে দুনিয়ায়
ক্রন্দনে বাজে শুধু ‘হা-হোসেন! হায়! হায়!’’
এই সেই মহরম সে-দিনের সেই গম
ভুলেছ কি মুসলীম? ‘দীন’ তব ইসলাম,
সত্যের উপাসক তুমি ‘ন্যায়-পয়গাম’
মুক্তির পন্থায়-
ছুটে চল নাশি’ এই মিথ্যা ও অন্যায় ।