গাদীরে খুমের হাদীস
বিশ্বনবী (সা.) বিদায় হজ্জ শেষে মদীনার দিকে ফিরে যাচ্ছিলেন, পথিমধ্যে ‘গাদীরে খুম’ নামক একটি স্থানে পৌঁছানোর পর পবিত্র কুরআনের সুরা মায়েদার ৬৭ নম্বর আয়াতটি অবর্তীণ হলে।
يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ ۖ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ
'হে রাসূল ! তোমার প্রতিপালকের কাছ থেকে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা তুমি সবার কাছে পৌঁছে দাও, যদি তা না কর তাহলে তো তুমি তার বার্তা প্রচার করলে না ।'
মহানবী (সা.) তাঁর যাত্রা থামিয়ে দিলেন। অত:পর তাঁর আগে চলে যাওয়া এবং পেছনে আগত সকল মুসলমানদেরকে তাঁর কাছে সমবেত হবার আহ্বান করেন। সবাই মহানবী (সা.)এর কাছে সমবেত হবার পর তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এক মহামূল্যবান ও ঐতিহাসিক বক্তব্য প্রদান করেন। এটাই সেই ঐতিহাসিক ‘গাদীরে খুমের’ ভাষণ হিসেবে পরিচিত। এই ভাষণের মাধ্যমেই তিনি হযরত ইমাম আলী (আ.)-কে তাঁর পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেন।
হযরত বুরআ’ (রা.) বলেনঃ “বিদায় হজ্জের সময় আমি মহানবীর পবিত্র সান্নিধ্যে উপস্থিত ছিলাম। যখন আমরা ‘গাদীরে খুম’ নামক স্থানে পৌঁছলাম, তখন মহানবী (সা.) আমাদেরকে ঐ স্থানটি পরিস্কার করার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি হযরত ইমাম আলী (আ.)-কে তাঁর ডান দিকে এনে তাঁর হাত দু’টো জনসমক্ষে উপর দিকে উঁচিয়ে ধরলেন। তারপর তিনি বললেনঃ “আমি কি তোমাদের অভিভাবক (কর্তা) নই? সবাই উত্তর দিল, আমরা সবাই আপনারই অধীন। অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি যার অভিভাবক ও কর্তা আলীও তার অভিভাবক ও কর্তা হবে। হে আল্লাহ্! আলীর বন্ধুর সাথে বন্ধুত্ব কর এবং আলীর শত্রুর সাথে শত্রুতা কর।” এরপর দ্বিতীয় খলিফা ওমর বিন খাত্তাব হযরত আলী (আ.) কে সম্মোধন করে বললেনঃ ‘তোমার এই অমূল্য পদমর্যাদা আরও উন্নত হোক! কেননা তুমি আমার এবং সকল মু’মিনদের অভিভাবক হয়েছ।’ -আল্ বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্, ৫ম খণ্ড, ২০৮ নং পৃষ্ঠা, এবং ৭ম খণ্ড, ৩৪৬ নং পৃষ্ঠা। যাখাইরূল উকবা, (তাবারী), ১৩৫৬ হিজরী মিশরীয় সংস্করণ, ৬৭ নং পৃষ্ঠা। ফুসুলুল্ মুহিম্মাহ্, (ইবনে সাব্বাগ), ২য় খণ্ড, ২৩ নং পৃষ্ঠা। খাসাইসুন্-নাসাঈ, ১৩৫৯ হিজরীর নাজাফীয় সংস্করণ, ৩১ নং পৃষ্ঠা।
জনাব আল্লামা বাহ্রানী (রহঃ) তার ‘গায়াতুল মারাম’ নামক গ্রন্থে সুন্নী সূত্রে বর্ণিত ৮৯ টি হাদীস এবং শীয়া সুত্রে বর্ণিত ৪৩টি হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়েছেন।#আল-হাসানাইন