নারীকুল শিরোমণি হযরত ফাতেমা যাহরা
বিশ্বনারীকুল নেত্রী হযরত ফাতেমা যাহরা (সালামুল্লাহ্ ‘আলাইহা) ছিলেন মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর কন্যা। সারা বিশ্বের মুসলমানগণ তাঁকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর প্রথমা স্ত্রী হযরত খাদীজা (সা.আ.)-এর গর্ভজাত সন্তান। তিনি মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াতের ঘোষণার পঞ্চম বছরে ২০শে জমাদিউস সানি শুক্রবার মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন।
মহানবী (সা.)-এর আরও কয়েকজন সন্তান ছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউই দীর্ঘ জীবনের অধিকারী ছিলেন না; সকলেই স্বল্প বয়সে ইন্তেকাল করেন। হযরত ফাতেমা যাহরার মাধ্যমেই মহানবী (সা.)-এর বংশধারা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। হযরত ফাতেমা যাহরার জন্মদিবসকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে থাকে।
শৈশবকাল
তৎকালীন আরব সমাজের রীতি ছিল সদ্যজাত শিশুকে লালন-পালন করার জন্য ‘দুধ-মা’ নিয়োগ করা। কিন্তু হযরত ফাতেমা যাহরা জন্মের পর তৎকালীন আরব সমাজের সেই রীতি অনুযায়ী তাঁকে লালন-পালন করার জন্য ‘দুধ-মা’-এর নিকট হস্তান্তর করার পরিবর্তে তাঁর মা নিজেই এ দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর শৈশব কেটেছে মক্কায় পিতা-মাতার নিবিড় সাহচর্যে। তখন কুরাইশদের অত্যাচারে তাঁর পিতা জীবনের কঠিন সময় অতিক্রম করছিলেন। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায় : একদিন মহানবী (সা.) কা’বা ঘরে নামায আদায় করছিলেন। এ সময় আবু জেহেল ও তার কিছু সাঙ্গপাঙ্গ নবীজীর পিঠের ওপর উটের নাড়িভুঁড়ি চাপিয়ে দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে হযরত ফাতেমা নবীজীর কাছে চলে এলেন এবং নিজ হাতে সেসব নোংরা ময়লা সরিয়ে দেন, আর নবীজীকে কষ্টদানকারীদেরকে তিরস্কার করেন। তাঁর মায়ের ইন্তেকালের পর হযরত ফাতেমাকে এ রকম বহু দুঃখজনক পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছিল। মা খাদীজার মৃত্যুর পর তাঁর পিতা রাসূলে খোদা (সা.)-কে তিনি এমন ভক্তি সহকারে সেবাযত্ন করতেন যে, তাঁকে ‘উম্মে আবিহা’ অর্থাৎ ‘তাঁর পিতার মা’ হিসেবে অভিহিত করা হতো। রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-কে কুরাইশদের ক্ষতি থেকে রক্ষাকারী তাঁর চাচা হযরত আবু তালিবের মৃত্যু এবং একই বছরে হযরত খাদীজার ইন্তেকাল রাসূলে খোদার পরিবারের জন্য কঠিনতম সময় বয়ে নিয়ে আসে।
হযরত খাদীজার ইন্তেকালের পর পরিবারের দেখা-শোনার জন্য মহানবী (সা.) সাওদা নামক একজন বিধবাকে বিয়ে করেন। শিশু ফাতেমা যাহরাকে শিক্ষা দেয়ার জন্য সাওদাকে বলা হলে তিনি জবাব দেন, ‘আমি কিভাবে তাঁকে শিক্ষা দিতে পারি যিনি নিজেই একজন পবিত্রা এবং উচ্চ মর্যাদাশীল ব্যক্তিত্ব? তাঁর কাছ থেকে আমার নিজেরই শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।’
তাঁর শিশুকাল এভাবে অত্যন্ত পবিত্র ও সম্মানজনক পরিবেশে অতিবাহিত হয়। তারপর তিনি লক্ষ্য করলেন, তাঁর পিতা মহানবী (সা.) শত্রুবেষ্টিত পরিবেশে ইসলামের বাণী প্রচার করছেন। হযরত আবু তালিব ও হযরত খাদীজার ইন্তেকালের পর এ শত্রুতা প্রকট আকার ধারণ করে। ইসলামের বাণী প্রচারের কারণে কাফেররা মহানবী (সা.)-এর ওপর এত ক্ষিপ্ত হয়েছিল যে, তারা তাঁর ওপর পাথর নিক্ষেপ করে। এতে তাঁর শরীর ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত হয়ে যায়। হযরত ফাতেমা যাহরা রাসূলে খোদার সে ক্ষত-বিক্ষত দেহের শুশ্রূষা করেন।
রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর জীবন নাশের জন্য শত্রুরা যে পরিকল্পনা করেছিল তা-ও হযরত ফাতেমা জানতে পেরেছিলেন। কিন্তু তা জেনেও তিনি ভীত হতাশাগ্রস্ত হন নি।
উপাধিসমূহ
মুসলিম উম্মাহর নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে হযরত ফাতেমা যাহরাকে আদর্শ হিসেবে শ্রদ্ধা করে ও ভালবাসে। তাঁর নিজের নামের পাশাপাশি মুসলমানরা অনেক উপনামে তাঁকে অভিহিত করে। এ সব উপনাম হল তাঁর চারিত্রিক গুণাবলির সম্ভ্রমপূর্ণ প্রশংসার বহিঃপ্রকাশ। তাঁর উপাধি হল আয্-যাহরা – যার অর্থ হল ‘জ্যোতির্ময় ব্যক্তিত্ব’ অথবা ‘আলোকিত মহিয়সী নারী’। সাধারণত তাঁকে ‘ফাতেমা যাহরা’ নামে অভিহিত করা হয়। তিনি উম্মে আবিহা (তাঁর পিতার মা) নামেও পরিচিত। তাঁকে ‘বাতুল’ (পবিত্র ও অপবিত্রতামুক্ত) নামেও অভিহিত করা হয়। তিনি নামায, কুরআন তেলাওয়াত ও ইবাদাত-বন্দেগীতে তাঁর অধিকাংশ সময় ব্যয় করতেন। তাঁর আরও দু’টি নাম ছিল : শারীফা (মহানুভব) ও সাইয়্যেদা (সম্মানিতা নেত্রী)।
হযরত ফাতেমা যাহরা (সা.আ.) সকল মুসলমানের কাছে ছিলেন শ্রদ্ধার পাত্রী। তিনি ছিলেন পিতার স্নেহধন্য কন্যা, মমতাময়ী মা, দায়িত্বশীল স্ত্রী, একজন একনিষ্ঠ মুসলিম এবং সর্বোপরি নারীদের জন্য একজন পরিপূর্ণ আদর্শ। তাঁর পিতার সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত নিবিড়। হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তিনি অন্য মহিলাদের সাথে তুলনীয় ছিলেন না, তিনি ছিলেন অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র।
হযরত খাদীজার পর হযরত ফাতেমা ঐতিহাসিকভাবে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। হযরত ফাতেমার যোগ্যতা ও পবিত্র ফযীলতের জন্য ইসলামে তাঁর এ মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়। হযরত ফাতেমার এ অবস্থানকে হযরত মারইয়াম (আ.)-এর অবস্থানের সাথে তুলনা করা যায়। হযরত ফাতেমাহ্ ছিলেন প্রথম মা‘সুম ইমাম হযরত আলী (আ.)-এর স্ত্রী, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইমাম হাসান ও হোসাইন (আ.)-এর মাতা এবং নবীবংশের বাকি নয়জন মা‘সুম ইমাম তাঁরই বংশধর।
হিজরত
মহান আল্লাহর নির্দেশে হিজরতের সময় হযরত ফাতেমাও নবী পরিবারের অন্যদের সাথে হিজরত করেন। মহানবী (সা.)-এর মদীনায় হিজরতের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে হযরত সাওদা, ইমাম আলী (আ.)-এর মাতা ও অপর কিছুসংখ্যক লোক তাঁদের সাথে হিজরত করেন। হিজরতের এ কাফেলায় নেতৃত্ব দেন ইমাম আলী (আ.)।
মহানবী (সা.)-এর হিজরতের পর তিনদিন ইমাম আলী (আ.) মক্কায় অবস্থান করেন। তিনি হিজরতের রাতে নিজের জীবন বাজি রেখে নবীজীর বিছানায় ঘুমান। মক্কার লোকদের গচ্ছিত কিছু আমানত ছিল নবীজীর কাছে, হিজরতের কারণে নবীজী ঐ মালগুলো তার প্রকৃত মালিকদের কাছে পৌঁছাতে পারেন নি। ইমাম আলী (আ.)-এর ওপর দায়িত্ব ছিল সেগুলো প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছে দেয়ার। তিনি দায়িত্বশীলতার সাথে সে কাজটি সম্পন্ন করার পরই মহানবীর পরিবারসহ মদীনায় হিজরত করেন।
বিবাহ
হিজরতের এক বছর পর হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর অনেক সাহাবী হযরত ফাতেমাকে বিবাহ করার জন্য রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর কাছে প্রস্তাব দেন। হযরত আবু বকর ও হযরত ওমরের প্রস্তাবও এর মধ্যে ছিল। কিন্তু রাসূলে আকরাম (সা.) কারো প্রস্তাবেই সম্মতি দেন নি। এ ব্যাপারে তিনি মহান আল্লাহর নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন।
রাসূলে আকরাম (সা.)-এর চাচাতো ভাই হযরত আলী বিন আবু তালিব (আ.)ও হযরত ফাতেমা (সা. আ.)-এর ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু তিনি মুখে কিছুই বলেন নি। রাসূলুল্লাহ্ (সা.) ইমাম আলীর এ মনোভাব বুঝতে পারেন। তিনি ফাতেমা (সা.আ.)-কে আলীর সাথে বিয়ে দিতে চান। তিনি উভয়ের কাছে এ কথা উপস্থাপন করলে তাঁরা দু’জনই এ ব্যাপারে মৌন থাকেন। রাসূলে আকরাম (সা.) দু’জনের মৌনতাকে সম্মতি হিসেবে ধরে নেন এবং বিবাহের আয়োজন করেন।
হযরত ফাতেমা ছিলেন নবুওয়াতী ধারায় নারীদের জন্য আদর্শ। অন্যদিকে হযরত আলী (আ.) ছিলেন নবুওয়াতী মিশনের পর প্রথম উলিল আমর বা ইমাম। তাঁরা ছিলেন উত্তম দম্পতির এক অনন্য উদাহরণ।
এ দম্পতির বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা ছিল খুবই সাধারণ। রাসূলে খোদা (সা.) আলী (আ.)-কে ডেকে তাঁর ঢালটি বিক্রি করে বিয়ের জন্য অর্থ যোগাড় করার পরামর্শ দেন। হযরত আলী ঢালটি বিক্রি করে দুশ’ দিরহাম পান যা দিয়ে তিনি হযরত ফাতেমার দেনমোহর পরিশোধ করেন।
রাসূলে আকরাম (সা.) সমপরিমাণ দিরহাম মিলিয়ে নব-দম্পতির ঘরের জন্য কিছু জিনিস ক্রয় করার জন্য তাঁর সাহাবীদের কাছে দেন। বিবাহের যাবতীয় কাজ মহানবী (সা.) স্বীয় তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করেন। বিয়ের পর নব-দম্পতির জন্য আলাদা একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয় মসজিদে নববীর এলাকার ভেতরে নবীজীর ঘরের কাছাকাছি।
তাঁদের বিবাহের তারিখ নিয়ে অস্পষ্টতা আছে। তবে ধরে নেয়া হয় যে, তাঁদের বিবাহের সাল ছিল ৬২৩ খ্রিস্টাব্দ, হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষ। আবার কিছু উৎস থেকে বর্ণিত হয়, সালটা ছিল ৬২২ খ্রিস্টাব্দ। হযরত ফাতেমা (আ.)-এর ওফাত পর্যন্ত তাঁদের দাম্পত্য জীবন ছিল প্রায় দশ বছর।
সন্তানাদি
হযরত ফাতেমা (সা.আ.) ছিলেন দুই পুত্রসন্তান ও দুই কন্যাসন্তান-এর মাতা। হযরত হাসান জন্মগ্রহণ করেন তৃতীয় হিজরিতে ও হযরত হোসাইন জন্মগ্রহণ করেন চতুর্থ হিজরিতে। তাঁর প্রথম কন্যা হযরত যায়নাব ষষ্ঠ হিজরিতে ও দ্বিতীয় কন্যা হযরত উম্মে কুলসুম সপ্তম হিজরিতে জন্মগ্রহণ করেন।
রাসূলে আকরাম (সা.)-এর বংশধর বলতে হযরত ফাতেমা যাহরার বংশধারাকেই বুঝানো হয়।
কুরআন মজীদে ফাতেমা (সা.আ.)-এর ফযিলত
কুরআন মজীদের কিছুসংখ্যক আয়াত ফাতেমা (সা.আ.) ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যগণের উচ্চ মর্যাদার শানে অবতীর্ণ হয়েছে, যদিও আয়াতগুলোতে তাঁদের নাম উল্লেখ করা হয় নি। এর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দু’টি আয়াত হল সূরা আল্-আহযাবের ৩৩ নং আয়াত ও সূরা আলে ইমরানের ৬১ নং আয়াত। সূরা আল্-আহযাবের উক্ত আয়াতের শানে নুযুলে তাঁদেরকে (মহানবী, আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন) বলা হয়েছে ‘নবীর পরিবার’ (আহলে বাইত)। এ আয়াত দ্বারা সাধারণভাবে বোঝা যায়, রাসূলে আকরাম (সা.) ফাতেমা (সা.আ.) ও তাঁর স্বামী আলী (আ.) এবং তাঁদের দুই পুত্রসন্তান একই পরিবারভুক্ত। দ্বিতীয় আয়াতে খ্রিস্টান প্রতিনিধিদলের সামনে চ্যালেঞ্জ (মুবাহালা) প্রসঙ্গে তাঁদের পূতপবিত্র সত্তার প্রতি ইঙ্গিত করে হযরত ফাতেমার মর্যাদার গুপ্ত রহস্যের প্রকাশ ঘটানো হয়েছে।
মুবাহালার আয়াত নাযিলের সেই সঙ্কটজনক সময়ে আল্লাহ তা‘আলা যাঁদেরকে বিশেষ মানুষ হিসেবে প্রদর্শন করেন এবং অন্য সকলের ধ্বংস হওয়ার বিপরীতে তাঁদের নিরাপত্তার জামিনদার হন তাঁদের একজন ছিলেন হযরত ফাতেমা যাহরা।
এক হাদীসের বর্ণনা মতে, কুরআনের সূরা আলে ইমরানের ৪২ নং আয়াতের তাফসীরে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) হযরত ফাতেমা যাহরাকে হযরত ঈসা (আ.)-এর মাতা হযরত মারইয়ামের প্রশংসার সাথে সম্পর্কযুক্ত করেছেন। এ হাদীস মতে, দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ চার নারী হলেন হযরত ঈসা (আ.)-এর মাতা হযরত মারইয়াম, ফিরআউনের স্ত্রী হযরত আছীয়া, মহানবী (সা.)-এর স্ত্রী হযরত খাদীজা ও তাঁর কন্যা হযরত ফাতেমা। তবে বর্ণনাকারীদের মতে এ চারজন মহিলার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ছিলেন হযরত ফাতেমা যাহরা।
ওফাত
বিদায় হজ্বের পর হযরত রাসূলে আকরাম (সা.) হযরত ফাতেমাকে তাঁর ইন্তেকালের আগাম খবর দেন এবং বলেন, ‘আমার আহলে বাইতের সদস্যদের মধ্যে তুমি আমার সাথে শীঘ্রই মিলিত হবে।’ কিছুদিন পর মহানবী (সা.) ইহধাম ত্যাগ করেন। হযরত ফাতেমা খুবই দুঃখভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন এবং এ অবস্থার মধ্য দিয়ে ওফাত পর্যন্ত তিনি তাঁর জীবনের প্রায় নব্বই দিন অতিবাহিত করেন ।
হযরত ফাতেমার দাসী আসমা বিনতে উমাইস তাঁর ওফাতের কাহিনী বর্ণনা করেন। ওফাতের দিন তিনি বাচ্চাদের জন্য খাবার প্রস্তুত করেন এবং আসমাকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে তিনি তাঁর ইবাদাতের কক্ষে চলে যান। তিনি কিছুক্ষণ পর তাঁর কক্ষের মধ্যে জোরে জোরে তাকবীর ধ্বনি দিতে থাকেন। আসমা যখন তাঁর তাকবীর ধ্বনি আর শুনতে পেলেন না তখন মসজিদে গিয়ে আলী (আ.)-কে তাঁর স্ত্রীর ওফাতের খবর দিলেন।
আসমার প্রতি নির্দেশ ছিল ছেলে-মেয়েরা ঘরে ফিরে এলে এ খবর দেয়ার পূর্বেই তাঁদের খাবার খাইয়ে দিতে হবে। আসমা সে কাজটিই করলেন। ইমাম হাসান ও হোসাইন এলে তিনি তাঁদের খাবার দিলেন। তাঁরা তাঁদের মায়ের হাতে ছাড়া খাবেন না বলে বায়না ধরলে আসমা তাঁদের মায়ের ওফাতের খবর দেন। তাঁরা মায়ের ঘরে প্রবেশ করার পর পরই ইমাম আলী (আ.) সেখানে উপস্থিত হন এবং নিজেকে সামলে নিয়ে কাফন-দাফনের প্রস্তুতি নেন।
তাঁকে রাতের অন্ধকারে জান্নাতুল বাকী গোরস্তানে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। রাসূলে আকরাম (সা.)-এর কন্যার জানাজায় কয়েকজন পারিবারিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। কিছুসংখ্যক ঐতিহাসিক মনে করেন, হযরত ফাতেমাকে তাঁর নিজ ঘরে সমাহিত করা হয়, যে অংশটি মসজিদে নববীর অন্তর্ভুক্ত। (সূত্র:কাউছার বিডি)