বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর সওয়াব

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর সওয়াব0%

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর সওয়াব লেখক:
: এফ এম বারী
প্রকাশক: -
বিভাগ: হাদীস

  • শুরু
  • পূর্বের
  • 12 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 18603 / ডাউনলোড: 4015
সাইজ সাইজ সাইজ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর সওয়াব

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর সওয়াব

লেখক:
প্রকাশক: -
বাংলা

ভূমিকা

বিসমিল্লাহ আল্লাহর প্রতি ভালবাসা ও নির্ভরতার প্রতীক।

বিসমিল্লাহ শয়তানকে বিতাড়িত করার প্রতীক।

বিসমিল্লাহ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিধানকারী।

বিসমিল্লাহ কর্মসমূহকে সৌন্দর্যমন্ডিত করে।

বিসমিল্লাহ পবিত্র কোরআনের সূরা সমূহের মুকুট।

বিসমিল্লাহ পুলসিরাত অতিক্রম করার লাইসেন্স।

বিসমিল্লাহ নরকের অগ্নিশিখা সমূহকে নির্বাপিত করে।

বিসমিল্লাহ ব্যাথাসমূহের নিরাময়ক।

বিসমিল্লাহ সমস্যাসমূহ সমাধানের চাবিকাঠি।

বিসমিল্লাহ কোরআনের চাবিকাঠি।

বিসমিল্লাহ আল্লাহ তা আলার মহিমান্বিত নাম।

বিসমিল্লাহ প্রার্থনা কবুল হওয়ার শর্ত । রাসূল(সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে- যে দোয়া বিসমিল্লাহ দ্বারা শুরু হয় তা প্রত্যাখ্যিত হয় না।

বিসমিল্লাহ প্রতিটি আসমানী গ্রন্থের সূচনায় রয়েছে।

বিসমিল্লাহ মানুষের অন্তরকে আলোকিত করে।

বিসমিল্লাহ আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ নাম।

বিসমিল্লাহ মানুষের আত্মিক রোগ সমূহের নিরাময়ক।

বিসমিল্লাহ আল্লাহর দাসত্ব এবং তার প্রতি নির্ভরশীলতার প্রতীক।

বিসমিল্লাহ আসমানের তালা সমূহের চাবি।

আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজ কথাবার্তা,খাওয়া দাওয়া,লেখাপড়া,ভ্রমন,ঘুমানো ইত্যদি আল্লাহর নামে শুরু করা এবং তা দ্বারা সুবাসিত করা কতই না উত্তম।

প্রথম অধ্যায়

 


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর গুরুত্ব

১. আল্লাহর নামের আশ্রয়ে মুক্তি :- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা আলা তিনটি জিনিষকে মানুষের  পরিত্রাণ,মুক্তি,বিজয় এবং সফলতার উপাদান হিসেবে গণ্য করেছেন।

 "قد افلح من تزكي و ذكر اسم ربه فصلي "

সফলকাম হয়েছে  সেই ব্যক্তি,যে ব্যক্তি নিজের জীবনকে পরিশুদ্ধ করেছে,আর স্বীয় প্রভূর নাম স্মরণ করে এবং নামাজ আদায় করে।

২. বিসমিল্লাহর বরকত :- আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন :

"فضلت ببسم الله الرحمن الرحيم" 

আমি বিসমিল্লাহ দ্বারা অন্যান্য নবীদের উপর মর্যাদাবান হয়েছি।  

৩. আনুগত্যের দ্বার উন্মোচন : ইমাম সাদেক (আ.) থেকে বর্ণিত-

 "إغلقوا ابواب المعصية بلأستعاذة و افتحوا ابواب الطاعة بالتسمية" 

অন্যায় অনাচারের দরজাসমূহকে ইস্তিয়াজা (আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম) দ্বারা বন্ধ করে দাও আর আনুগত্যের দ্বারসমূহকে তাসমিয়াহ (বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম) দ্বারা উন্মুক্ত করে দাও।

৪. প্রত্যেকটা গ্রন্থের চাবি :  রাসূল (সা.) বলেছেন -

" بسم الله الرحمن الرحيم مفتاح كل كتاب "

 বিসমিল্লাহ প্রতিটি বইয়ের চাবি।

. আল্লাহর মহিমান্বিত নামের নিকটবর্তী :ইমাম হাসান আসকারী ( .) বলেছেন - সত্য

"بسم الله الرحمن الرحيم أقرب الي اسم الله الأعظم من سواد العين الى بياضها "

চোখের কালো অংশের সাথে শুভ্র অংশের নিকটবর্তীতার চেয়েও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম আল্লাহর মহান নামের অধিক নিকটবর্তী।

৬. বিসমিল্লাহর পূর্বে ইস্তিয়াযা :- মহান আল্লাহ তা আলা পবিত্র কোরআনে শয়তানের অনিষ্ঠ থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় নেওয়ার ব্যাপারে বলেছেন যে, 

  " فاذا قرأت فاستعذ بالله من الشيطان الرجيم "  

যখনই কোরআন তেলাওয়াত করবে অভিশপ্ত শয়তানের অনিষ্ঠ থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে।   কেননা আমরা আমাদের ইবাদত বন্দেগীতে শয়তানের অনিষ্ঠ থেকে নিরাপদ নই। ঐ অভিশপ্ত আমাদেরকে পথভ্রষ্ঠ এবং আমাদের ইবাদত বন্দেগীকে নষ্ট করে ফেলে। আমাদেরকে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করা থেকে বিরত রাখে। মুকতানিয়াতুদ দার’এর লেখক স্বীয় গ্রন্থে এভাবে বর্ণনা করেছেন,কেন বিসমিল্লাহর পূর্বে এবং তাকবীরের পরে ইস্তিয়াযা করবো ? উত্তরে বলেছেন : বাসমালাহর (আল্লাহর নাম নেয়ার) পূর্বে ইস্তিয়াযাকে (আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা) স্থান দেয়ার কারণ  (تحليه ) সুন্দর বৈশিষ্টে সজ্জিত হওয়ার পূর্বে (تخليه ) গুনাহ থেকে মুক্ত ও পবিত্র হওয়াকে স্থান দেয়ার ন্যায়। মানুষ প্রথমে গোসল করবে এবং নোংরা ও ময়লা থেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হবে তারপর সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করবে এবং নিজেকে সুবাসিত করবে।

অনুরূপভাবে অবশ্যই প্রথমে শয়তানের অনিষ্ঠ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় নিব এবং তার ষড়যন্ত্র ও প্রতারণা থেকে নিরাপদ হব। অত:পর আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদতের ময়দানে পদার্পন করব।

অবশ্য এটা জেনে রাখা জরুরী যে,শয়তান এক নিকৃষ্ট ও দূর্গন্ধময় জিনিষ,খুব অল্প সংখ্যকই তার সাথে সংগ্রাম করে সফলতা লাভ করতে পারে। কেননা অধিকাংশ মানুষই শয়তানের সাথে সংগতিপূর্ণ এবং তার সহচর আর ইবাদত বন্দেগীর ক্ষেত্রে অত্যন্ত দূর্বল এবং অক্ষম।

৭. বিসমিল্লাহ্ লেখার প্রয়োজনীয়তা : ইমাম সাদেক(আ.)বলেছেন -

"لا تدع كتابة بسم الله الرحمن الرحيم فى الكتاب و ان كان بعده شعر "

তোমরা তোমাদের লিখনীসমূহে বিসমিল্লাহ লিখা থেকে বিরত থেকো না। এমনকি একটি কবিতা হলেও।

৮. সর্বোত্তম লিপিতে সন্নিবেশিত করা ( লিপিবদ্ধ করা) : ইমাম সাদেক(আ.)বলেছেন-

اكْتُبْ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ مِنْ أَجْوَدِ كِتَابِكَ وَ لَا تَمُدَّ الْبَاءَ حَتَّى تَرْفَعَ السِّين"" 

অর্থাৎ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”কে সর্বোত্তম লিপিতে লিপিবদ্ধ কর, বা’অক্ষরটিকে সম্প্রসারিত করোনা যেন ছীন’কে সম্প্রসারিত ও লম্বিত করে লিখতে পার।  

৯. সবচেয়ে  মহত্বপূর্ণ আয়াত : এক ব্যক্তি ইমাম রেযা(আ.)কে জিজ্ঞেস করল" 

  "اي آية اعظم في كتاب الله "                   

পবিত্র কোরআনের সবচেয়ে বেশী মর্যাদাবান আয়াত কোনটি ? ইমাম উত্তরে বললেন - বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”।

১০. সমস্ত আসমানী কিতাব সমূহে বিসমিল্লাহর আবির্ভাব : ইমাম সাদেক(আ.)থেকে বর্ণিত  হয়েছে  - 

"مانزل كتاب من السماء الا و اوله بسم الله الرحمن الرحيم"

আসমান থেকে এমন কোন কিতাব অবতীর্ণ হয়নি যার প্রথমে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম নেই।১০

১১. সূরা হামদের অংশবিশেষ : এক ব্যক্তি হযরত আলী(আ.)কে জিজ্ঞেস করল“আস সাবউল মাছানী কি ? তিনি বললেন : সূরা হামদ,তিনি আরও বললেন সূরা হামদের সাতটি আয়াত রয়েছে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম তারই একটি আয়াত।১১

১২. ঈমানদার ব্যক্তির নিদর্শন : ইমাম হাসান আসকারী(আ.)থেকে বর্ণিত,

"عَلَامَاتُ الْمُؤْمِنِ خَمْسٌ صَلَاةُ الْخَمْسِينَ وَ زِيَارَةُ الْأَرْبَعِينَ وَ التَّخَتُّمُ فِي الْيَمِينِ وَ تَعْفِيرُ الْجَبِينِ وَ الْجَهْرُ بِبِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ"

অর্থাৎ মুমিন ব্যক্তির আলামত চারটি। ( ) রাত দিনে ফরজ নফল সহ ৫১ রাকাত নামাজ আদায় করা। ( ) ডান হাতে আংটি পরিধান করা। ( ) নামাজের পর কপাল মাটিতে রেখে সেজদারত অবস্থায় বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম উচ্চস্বরে বলা। ( ) যিয়ারতে আরবাঈন পাঠ করা। ১২

১৩. হযরত ঈসা ( আ.) এর প্রথম শিক্ষা : ইমাম বাকের (আ.) থেকে বর্ণিত,হযরত ঈসা(আ.)জন্মগ্রহন করলেন,তিনি খুব দ্রুত বেড়ে উঠতে লাগলেন এমনকি সাত মাস বয়সে তার মা তার হাত ধরে শিক্ষকের নিকট নিয়ে গেলেন।

শিক্ষার শুরুতেই শিক্ষক বললেন,বল বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”ঈসা (আ.) তা পূনরাবৃত্তি করলেন।১৩