আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত0%

আল মুরাজায়াত লেখক:
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ: ইতিহাস

আল মুরাজায়াত

লেখক: আল্লামাহ্ সাইয়্যেদ আবদুল হুসাইন শারাফুদ্দীন আল মুসাভী
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ:

ভিজিট: 61826
ডাউনলোড: 8013

পাঠকের মতামত:

আল মুরাজায়াত
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 133 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 61826 / ডাউনলোড: 8013
সাইজ সাইজ সাইজ
আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত

লেখক:
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বাংলা

চুয়াল্লিশতম পত্র

৫ মুহররম ১৩৩০ হিঃ

১।   আয়াতের ধরন ও বর্ণনাভঙ্গী হতে বন্ধু ও সাহায্যকারীর অর্থ প্রমাণিত হয় না।

২।   সুস্পষ্ট হাদীস ও বর্ণনাভঙ্গীর মধ্যে পার্থক্য দেখা দিলে হাদীস অধিকতর গ্রহণযোগ্য।

১। আয়াতটি এর পূর্ববর্তী আয়াতসমূহ যেখানে কাফেরদের বন্ধু (ওয়ালী) হিসেবে গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে তা হতে ভিন্ন। এ আয়াতটি পূর্ববর্তী আয়াতসমূহের ধারাবাহিকতা হতে পৃথক হয়ে হযরত আলীর প্রশংসা ও মর্যাদা বর্ণনায় অবতীর্ণ হয়েছে। কারণ এ আয়াতে হযরত আলী ও তাঁর বংশধরদের ইমামত ও নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত এবং তাঁর বিরোধীদের এ বিষয়ে বিরোধিতা হতে ভয় প্রদর্শন করা হয়েছে। তার প্রমাণ হলো নিম্নোক্ত আয়াত-

 ) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا مَن يَرْ‌تَدَّ مِنكُمْ عَن دِينِهِ فَسَوْفَ يَأْتِي اللَّـهُ بِقَوْمٍ يُحِبُّهُمْ وَيُحِبُّونَهُ أَذِلَّةٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى الْكَافِرِ‌ينَ يُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّـهِ وَلَا يَخَافُونَ لَوْمَةَ لَائِمٍ ذَٰلِكَ فَضْلُ اللَّـهِ يُؤْتِيهِ مَن يَشَاءُ وَاللَّـهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ(

হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্যে যে কেউ স্বীয় দীন হতে ফিরে যাবে অচিরেই আল্লাহ্ এমন এক সম্প্রদায় সৃষ্টি করবেন যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং তারাও তাঁকে ভালবাসবে। তারা মুমিনদের প্রতি বিনয়ী ও নম্র হবে ও কাফিরদের প্রতি কঠোর হবে। তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারে ভীত হবে না।৩০৩

এই আয়াত হযরত আলীর জন্যই প্রযোজ্য এবং অন্যদেরকে তাঁর ও তাঁর অনুসারীদের ক্ষমতা ও শক্তি হতে ভীতি প্রদর্শন করছে। এ বিষয়টি হযরত আলী (আ.) জামালের যুদ্ধে সকলকে স্মরণ করিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। ইমাম সাদিক ও বাকির (আ.)-ও হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। সা লাবী তাঁর তাফসীর গ্রন্থে এটি বর্ণনা করেছেন। আল্লামাহ্ তাবারসী তাঁর মাজমায়ুল বায়ান গ্রন্থে হযরত আম্মার,হুজাইফা ও ইবনে আব্বাস হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। শিয়া আলেমদের মধ্যে এ বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে।

আহলে বাইতের ইমামদের হতে সহীহ ও মুতাওয়াতির সূত্রে এ সম্পর্কিত হাদীসসমূহ বর্ণিত হয়েছে।

সুতরাং বেলায়েতের আয়াতটি ইমামতের অপরিহার্যতা ও হযরত আলীর নেতৃত্বের গুরুত্ব বর্ণনার পর (পূর্ববর্তী আয়াতে) তার ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। তাই কিরূপে আমরা বলতে পারি আয়াতটি কাফিরদের বন্ধুত্ব প্রত্যাখানের আয়াতের ধারাবাহিকতায় অবতীর্ণ হয়েছে?

২। দ্বিতীয়ত রাসূল (সা.) আহলে বাইতের ইমামদের কোরআনের সমমর্যাদায় স্থান দিয়েছেন ও ঘোষণা করেছেন এরা একে অপর হতে বিচ্ছিন্ন হবে না। সুতরাং তাঁরা কোরআনের সমওজনের ভারী বস্তু(ثقل) যাঁদের মাধ্যমে সঠিক পথের পরিচয় পাওয়া যাবে। আমরা দেখি,তাঁদের হতে মুতাওয়াতির সূত্রে যে সকল হাদীস বর্ণিত হয়েছে তাতে তাঁরা উক্ত আয়াত হযরত আলীর বেলায়েত ও খেলাফতের প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন এবং ওয়ালী শব্দের আমরা যে অর্থ করেছি সে অর্থই গ্রহণ করেছেন। কোরআনের আয়াতের ধারাবাহিকতা ও পারিপার্শ্বিকতা কেন্দ্রিক অর্থ সুস্পষ্ট হাদীসের বিরোধী হলে তা অগ্রহণযোগ্য যেহেতু সকল মুসলমানই এ বিষয়ে একমত যে,সহীহ হাদীসের পারিপার্শ্বিকতাকেন্দ্রিক অর্থের ওপর প্রাধান্য রয়েছে। তাই এ দু য়ের মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দিলে হাদীসকে গ্রহণ করতে হবে। কারণ এটি নিশ্চিত নয় যে,আয়াতটি ঐ ধারাবাহিকতা ও পারিপার্শ্বিকতাতেই অবতীর্ণ হয়েছে আর এ বিষয়েও সকল মুসলমান একমত যে,কোরআন সংকলন যে ধারাবাহিকতায় হয়েছে তা অবতীর্ণ হবার ধারাবাহিকতায় নয়। কোরআনে এরূপ প্রচুর আয়াত রয়েছে যেখানে নাযিলের ধারাবাহিকতায় সংকলিত হয় নি,যেমন আয়াতে তাতহীর মহানবী (সা.)-এর স্ত্রীদের আলোচনার ধারাবাহিকতায় এসেছে যদিও তা ভিন্ন সময় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট হাদীস রয়েছে,আয়াতে তাতহীর আহলে বাইতের পাঁচ জনের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। তদুপরি আয়াতের ধারাবাহিকতা ও পারিপার্শ্বিকতা কেন্দ্রিক অর্থ গ্রহণ না করলে তা কোরআনের অলঙ্কারশাস্ত্রের মু জিযা হবার ক্ষেত্রে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। তাই যখন অকাট্য দলিল হাতে রয়েছে তখন ধারাবাহিকতা ও পারিপার্শ্বিকতাকে অগ্রাহ্য করায় কোন অপরাধ নেই।

ওয়াসসালাম

পঁয়তাল্লিশতম পত্র

৬ মুহররম ১৩৩০ হিঃ

পূর্ববর্তীদের কার্যাবলীর সিদ্ধতা প্রমাণের জন্য এরূপ অর্থকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করতে আমরা বাধ্য।

যদি খোলাফায়ে রাশেদীনের সকল কর্মকাণ্ড স্বতঃসিদ্ধ বলে বিশ্বাস না করতাম তবে এরূপ আয়াতের ব্যাখ্যায় আপনার যুক্তি ও বিশ্বাসকে গ্রহণ করতাম। কিন্তু যেহেতু তাঁদের খেলাফতের বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই সেহেতু তাঁদের কর্মের যৌক্তিকতা প্রমাণের জন্য ভিন্নভাবে এর ব্যাখ্যা করতে আমরা বাধ্য।

ওয়াসসালাম

ছেচল্লিশতম পত্র

৬ মুহররম ১৩৩০ হিঃ

১।   পূর্ববতীদের কর্মের স্বতঃসিদ্ধতা আয়াতের ভিন্নরূপ ব্যাখ্যার অপরিহার্যতা প্রমাণ করে না।

২।   ভিন্নরূপ ব্যাখ্যা অসম্ভব।

   

আপনি যে খলীফাদের কথা বলছেন খোদ তাঁদের তিনজনের বিষয়ে পৃথক মৌলিক আলোচনা হওয়া উচিত। সুতরাং তাঁদেরকে সুস্পষ্ট হাদীসের মোকাবিলায় আনয়ন অযৌক্তিক। আমরা পরবর্তীতে ঐ বিষয়ের যুক্তিসিদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করবো।

১। সুতরাং তাঁদের কর্মকাণ্ড এবং অন্যরা তাঁদের হাতে বাইয়াত করার বিষয়টি হাদীসকে ভিন্নরূপে ব্যাখ্যার কারণ হতে পারে না। যদি সুযোগ হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার আশা রাখি।

২। আপনার জন্য যে হাদীসটি বর্ণনা করেছি এবং তদ্রুপ অন্যান্য হাদীস,যেমন গাদীরের হাদীস ও ওসিয়তের হাদীসসমূহকে ভিন্নরূপে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। বিশেষত এই সকল হাদীসের সহযোগী হাদীসসমূহও অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য যা সুস্পষ্ট এ সকল হাদীস হতে গুরুত্বের দিক থেকে কম নয়। তাই যে কেউ এ হাদীসগুলোকে ইনসাফের দৃষ্টিতে দেখবে সে এগুলোকেই অকাট্য ও সুস্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে পাবে।

ওয়াসসালাম

সাতচল্লিশতম পত্র

৭ মুহররম ১৩৩০ হিঃ

ভাল হত যদি আপনি এর সমর্থনকারী হাদীসসমূহ সম্পর্কে আমাকে অবহিত করতেন। কেন পূর্বে আলোচনার ঐ স্থানেই তা আনলেন না?

ওয়াসসালাম