আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত0%

আল মুরাজায়াত লেখক:
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ: ইতিহাস

আল মুরাজায়াত

লেখক: আল্লামাহ্ সাইয়্যেদ আবদুল হুসাইন শারাফুদ্দীন আল মুসাভী
: আবুল কাসেম
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বিভাগ:

ভিজিট: 61782
ডাউনলোড: 7997

পাঠকের মতামত:

আল মুরাজায়াত
বইয়ের বিভাগ অনুসন্ধান
  • শুরু
  • পূর্বের
  • 133 /
  • পরের
  • শেষ
  •  
  • ডাউনলোড HTML
  • ডাউনলোড Word
  • ডাউনলোড PDF
  • ভিজিট: 61782 / ডাউনলোড: 7997
সাইজ সাইজ সাইজ
আল মুরাজায়াত

আল মুরাজায়াত

লেখক:
প্রকাশক: এস. এম. আলীম রেজা ৯৩,আরামবাগ,ঢাকা।
বাংলা

ছিয়াত্তরতম পত্র

১৯ সফর ১৩৩০ হিঃ

১।   তিনি প্রায়ই আবেগতাড়িত হতেন।

২।   আকলের ভাল-মন্দ নির্ণয়ের ক্ষমতা রয়েছে।

৩।   উম্মুল মুমিনীনের দাবীর বিপক্ষে বর্ণিত সহীহ হাদীসসমূহ।

৪।   উম্মে সালামাহর হাদীস হযরত আয়েশার হাদীসের ওপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত।

১। আমার আলোচনার জবাবে আপনি বলেছেন প্রসিদ্ধ ইতিহাসবিদদের লেখা হতে উম্মুল মুমিনীন সম্পর্ক যা জানা যায় তা হলো তিনি আবেগতাড়িত হয়ে কিছু করতেন না এবং হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে ব্যক্তিউদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কিছু বলতেন না। আমি আপনাকে আহবান জানাব আপনি নিজে আবেগতাড়িত হয়ে অন্ধ অনুকরণ না করে তাঁর জীবনী সম্পর্কিত ইতিহাস নতুন করে পাঠ করুন এবং যাদের প্রতি তাঁর ভালাবাসা ও যাদের প্রতি তাঁর বিদ্বেষ ছিল তাদের সাথে তাঁর আচরণ ও মন্তব্য গভীরভাবে চিন্তা ও নতুনভাবে মূল্যায়ন করুন। তাহলে দেখতে পাবেন তাঁর জীবনে আবেগ কিভাবে প্রকাশিত হয়েছে! বিশেষত তিনি তাঁর কথা ও কাজের দ্বারা হযরত উসমানের সাথে কিরূপ আচরণ করেছেন তা ভুলে যাবেন না। বাস্তবে হযরত আলী,ফাতিমা,ইমাম হাসান ও হুসাইন (আ.)-এর সাথে তাঁর গোপন ও প্রকাশ্য বিভিন্ন আচরণ,নবী (সা.)-এর অন্যান্য স্ত্রীদের সাথে তাঁর ব্যবহার,এমন কি স্বয়ং রাসূলের সঙ্গে তাঁর আচরণকে আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন সেখানে তাঁর আবেগ ও উদ্দেশ্য কিভাবে প্রতিফলিত হয়েছে! উদাহরণস্বরূপ মিথ্যাবাদীরা হযরত মারিয়া ও তাঁর পুত্র ইবরাহীমের ওপর যে অপবাদ আরোপ করে উম্মুল মুমিনীন তাতে সায় দেন। অবশেষে মহান আল্লাহ্ তাঁকে ও তাঁর পুত্রকে আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.)-এর মাধ্যমে সে অপবাদ থেকে অত্যন্ত স্পষ্ট ও জোরালোভাবে মুক্তি দেন।৪২৭ মহান আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে বলেছেন,‘‘ যারা কাফির হয়ে গিয়েছে আল্লাহ্ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা তাদের নিজ ক্রোধানলে প্রজ্জ্বলিত হচ্ছে এবং কোন কল্যাণই লাভ করতে পারে নি।’’ আপনি এ ঘটনায় তাঁর ব্যক্তিস্বার্থ ও আবেগতাড়িত হবার বিষয়টি সুস্পষ্টরূপে বুঝতে পারবেন। তাঁর আবেগতাড়িত হয়ে কথা বলার দলিল হিসেবে দেখুন তিনি রাসূল (সা.)-কে বলেছেন,‘‘ আমি আপনার থেকে মাগাফিরের গন্ধ পাচ্ছি।’’ ৪২৮ এ কথা বলার মধ্যমে তিনি চেষ্টা করেছেন রাসূল (সা.)-কে উম্মুল মুমিনীন যায়নাব থেকে ফিরিয়ে রাখতে।

যখন মূল্যহীন এক ক্ষুদ্র স্বার্থ তাঁকে রাসূল (সা.)-এর প্রতি অশোভন ও অসত্য মন্তব্য করতে উৎসাহিত করে তখন কিভাবে হযরত আলী সম্পর্কিত ওসিয়তের বিষয় অস্বীকারকারী তাঁর হাদীস আমরা গ্রহণ করবো?

আসমা বিনতে নোমানের বিবাহের ঘটনায় তাঁর আবেগতাড়িত মন্তব্যের কথা আপনি ভুলে যাবেন না যখন তাঁর সাথে রাসূল (সা.)-এর বিবাহের রাত্রে তিনি আসমাকে বলেন রাসূল (সা.) সেই নারীকে পছন্দ করেন যে তাঁকে বলেأعوذ بالله منك অর্থাৎ আমি আপনার নিকট হতে খোদার আশ্রয় চাই।৪২৯ এভাবে তিনি চেয়েছেন রাসূলকে তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট ও বীতশ্রদ্ধ করতে এবং এই মুমিন নারীকে রাসূলের সামনে অপদস্থ করতে। সম্ভবত উম্মুল মুমিনীন রাসূলের প্রতি এরূপ আচরণ করাকে মুবাহ্ এবং নিজ উদ্দেশ্য ও স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এরূপ হারাম কর্ম সম্পাদনকে তুচ্ছ মনে করতেন।

অন্য এক স্থানে আমরা দেখি নবী (সা.) তাঁকে এক বিশেষ নারীর বিষয়ে তথ্য যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করেন যাতে তিনি তার বিষয়ে সঠিকভাবে অবহিত হতে পারেন কিন্তু হযরত আয়েশা নিজ স্বার্থকে অগ্রাধিকার দান করে সত্যকে গোপন করে অসত্য তথ্য প্রদান করেন।৪৩০

অন্য এক ঘটনায় তাঁর আবেগতাড়িত হবার বিষয়টি আমরা লক্ষ্য করি যখন রাসূল (সা.) তাঁর বিষয়ে তাঁর পিতার নিকট অভিযোগ করেন তখন তিনি রাসূলকে বলেন,‘‘ ন্যায়পরায়ণ হোন।’’ ৪৩১ এতে তাঁর পিতা তাঁর মুখে চপোটঘাত করেন ও তাঁর ঠোঁট কেটে রক্ত বের হয়। অন্যত্র রাসূলের সামনে রাগান্বিত হয়ে তিনি বলেন,‘‘ আপনি কি সেই ব্যক্তি যিনি ধারণা করেন যে,তিনি আল্লাহর নবী?’’ ৪৩২

এরূপ অসংখ্য ঘটনা রয়েছে যা বর্ণনার পরিসর এই পত্রে নেই। তাই নির্ধারিত কয়েকটি উল্লেখ করলাম। আশা করি আপনার জন্য যথেষ্ট হবে।

২। আমার আলোচিত বিষয়ের দ্বিতীয় অংশের জবাবে আপনি বলেছেন আহলে সুন্নাহ্ ভাল-মন্দের নির্ণায়ক হিসেবে আকলকে গ্রহণ করে না এবং এ সম্পর্কে কিছু ব্যাখ্যাও প্রদান করেছেন। কিন্তু আপনার নিকট হতে এরূপ কথাকে পছন্দ করতে পারছি না। কারণ আপনার এ কথা সন্দেহবাদীদের কথার অনুরূপ যারা অনুভূত বস্তুকেও অস্বীকার করে। আমরা কিছু কিছু কাজকে ভাল বলে জানি ও প্রশংসা করি (চাই শরীয়ত তা বলুক বা না বলুক) এজন্য যে,সত্তাগতভাবে কাজটি ভাল,যেমন ন্যায়পরায়ণতা,সুবিচার ও কল্যাণ নিজ হতেই ভাল বলে আমরা বিবেকপ্রসূতই এদের ভাল বলে অনুধাবন করি। কোন কোন কাজকে আমরা মন্দ ও অপছন্দনীয় জানি এজন্য যে,সত্তাগতভাবে তা মন্দ ও নিন্দনীয়,যেমন অন্যায় ও অবিচার সত্তাগতভাবেই মন্দ এবং বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের নিকট এর মন্দ হওয়া স্বতঃসিদ্ধ। এক দুইয়ের অর্ধেক যেমন স্বতঃসিদ্ধ এটিও সেরূপ স্বতঃসিদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। সহজাত মানব প্রকৃতি বিচারে যে ব্যক্তি আপনার প্রতি সার্বক্ষণিক কল্যাণ করে এবং যে ব্যক্তি সার্বক্ষণিক অকল্যাণ করে তাদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে,কারণ বিবেক স্বভাবগতভাবেই প্রথম ব্যক্তির কর্মকে প্রশংসনীয় ও পুরস্কারযোগ্য এবং দ্বিতীয় ব্যক্তির কর্মকে নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য বলে বিচার করে। যে ব্যক্তি এ বিষয়ে সন্দেহ করে,সে তার বিবেক ও বুদ্ধিবৃত্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। যদি আমাদের যুক্তি সত্য না হয়ে আপনার মতানুযায়ী শরীয়তকে একমাত্র ভাল-মন্দ নির্ধারক বলে ধরে নিই তবে ধর্ম ও শরীয়ত অস্বীকারকারী নাস্তিক ও যিনদিকদের দৃষ্টিতেও এ বিষয়গুলো এরূপ হত না। তাই আমরা দেখি যদিও নাস্তিকরা ধর্মকে অস্বীকার করে তদুপরি ন্যায়বিচার ও কল্যাণকে ভাল বলে মনে করে এবং এর কর্তাকে প্রশংসনীয় ও পুরস্কারযোগ্য বলে বিশ্বাস করে এবং এর বিপরীতে অন্যায়,অবিচার ও সীমা লঙ্ঘনকে মন্দ বলে এরূপ কর্ম সম্পাদনকারীকে নিন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য ঘোষণা করতে সন্দেহে পতিত হয় না। তাদের এরূপ চিন্তার পক্ষে দলিল হলো আকল (বিবেক),অন্য কিছু নয়। সুতরাং হে সম্মানিত! যেসব ব্যক্তি বিবেকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে ও সকল জ্ঞানী ব্যক্তি যাকে সত্য বলে গ্রহণ করে তা অস্বীকার করেছে তাদের আপনি ত্যাগ করুন। এরূপ ব্যক্তিগণ নিজ সহজাত প্রকৃতির বিরুদ্ধে কাজ করছে। কারণ মহান আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের বাস্তবতার অনেক কিছুই অনুধাবনের ক্ষমতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে যেমন তিনি ইন্দ্রিয় দ্বারা বস্তুকে অনুধাবনের ক্ষমতা দিয়েছেন তেমনি আকল দ্বারা ভাল-মন্দ অনুধাবনেরও শক্তি দান করেছেন। সুতরাং সৃষ্টিগতভাবেই মানুষ সুবিচার ও ন্যায়পরায়ণতার মত বস্তুসমূহের ভাল হওয়া এবং অবিচার ও অন্যায়ের মত বস্তুসমূহের খারাপ হবার বিষয়গুলো আকল দ্বারা বুঝতে পারে যেমন সে তার জিহ্বা দ্বারা মধুর মিষ্টি হওয়া এবং তিক্ত বস্তুর তিক্ত হবার বিষয়টি অনুভব করে,সে তার নাক দিয়ে আতরের সুবাস ও মৃতদেহের দুর্গন্ধ,হাত ও চর্ম দিয়ে বস্তুর মসৃণতা ও অমসৃণতা,চোখ দ্বারা সুন্দর ও অসুন্দর দৃশ্যের পার্থক্য,কর্ণ দ্বারা বাঁশীর মনোমুগ্ধকর শব্দের সঙ্গে গর্দভের কর্কশ শব্দের পার্থক্য বুঝতে পারে। এগুলো সেই ফিতরাত বা সহজাত প্রবণতা যার ওপর আল্লাহ্ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর সৃষ্টিতে কোন পরিবর্তন নেই। তাঁর বিধান এমনই যদিও অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।

আশা আরীগণ শরীয়তের প্রতি ঈমান ও এর নির্দেশের প্রতি আনুগত্যের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে। তারা আকলের নির্দেশকে অস্বীকার করে বলে শরীয়তের নির্দেশই একমাত্র নির্দেশ । কিন্তু তারা তাদের এ কাজের মাধ্যমে নিজেদের পথকেই রুদ্ধ করেছে। এর ফলে শরীয়তকে গ্রহণের পক্ষে কোন যুক্তি ও দলিল থাকে না এজন্য যে,শরীয়তকে গ্রহণের জন্য যদি বলি যেহেতু শরীয়ত বলেছে সেহেতু শরীয়তের নির্দেশ মানতে হবে তবে বিষয়টি একটি চক্রের রূপ নেবে এবং এটি কোন দলিলই হবে না। যদি আকলের নির্দেশ দানের ক্ষমতা না থাকে তবে নাকল বা শারয়ী দলিল সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। কারণ আকল ব্যতীত কেউই আল্লাহকে চিনতে পারত না। ফলে কোন ইবাদতকারীই তাঁর ইবাদত করত না। এ বিয়য়ে বিস্তারিত আলোচনা আমাদের আলেমদের লেখনীতে প্রচুর রয়েছে।

৩। কিন্তু উম্মুল মুমিনীনের এ দাবী যে,নবী (সা.) তাঁর বুকে মাথা রেখে ইন্তেকাল করেন- হাদীসটির বিপরীতে পবিত্র আহলে বাইত হতে সহীহ ও মুতাওয়াতির সূত্রে হাদীসসমূহ বর্ণিত হয়েছে। আহলে সুন্নাহ্ হতেও এরূপ হাদীস বর্তমান। ইবনে সা৪৩৩ হযরত আলী হতে বর্ণনা করেছেন, নবী (সা.) মৃত্যুর পূর্বে বললেন: আমার ভ্রাতাকে ডাক। আমি তখন তাঁর নিকট গেলে আমাকে বললেন : কাছে আসো। আমি নিকটবর্তী হলে তিনি আমার শরীরে ভর দিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন,তাঁর মুখনিঃসৃত সামান্য পানি আমার ওপর পতিত হলো এমতাবস্থায় তিনি প্রাণত্যাগ করলেন।

আবু নাঈম তাঁর হুলইয়াতুল আউলিয়া গ্রন্থে,আবু আহমাদ ফারযী তাঁর সংকলনে এবং সুনান লেখকদের অনেকেই হযরত আলী (আ.) হতে বর্ণনা করেছেন, নবী (সা.) মৃত্যুর সময় জ্ঞানের এক হাজার দ্বার আমার নিকট উন্মোচন করেন যার প্রতিটি হতে এক হাজার দ্বার উন্মোচিত হয়। ৪৩৪

যখন কেউ হযরত উমর হতে রাসূলের মৃত্যুকালীন ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইতেন তখন তিনি বলতেন, আলীকে প্রশ্ন কর,সে এ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল।

হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ্ আল-আনসারী হতে বর্ণিত হয়েছে- কা ব উল আহবার হযরত উমরকে প্রশ্ন করলেন, নবী (সা.)-এর শেষ কথা কি ছিল? হযরত উমর জবাব দিলেন, আলীকে প্রশ্ন কর। কা ব হযরত আলীকে প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, নবী (সা.) আমার বুকে শরীরের ভর রেখে মাথাটি আমার কাঁধে স্থাপন করলেন এবং বললেন :

(الصلاة الصلاة) নামায,নামায। কা ব বললেন, হ্যাঁ,নবীদের শেষ উপদেশ এটিই। তাঁরা এ কাজের জন্যই দায়িত্বপ্রাপ্ত ও মনোনীত হন। কা ব বললেন, কে তাঁকে গোসল করায়? উমর বললেন, আলীকে প্রশ্ন কর। হযরত আলী (আ.) বললেন,‘‘ আমি তাঁকে গোসল দেই।’’ ৪৩৫

ইবনে আব্বাসকে জিজ্ঞাসা করা হলো : আপনি কি দেখেছেন,ওফাতের সময় রাসূলের মাথা কার ক্রোড়ে ছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ,আলীর বুকে ভর দিয়েছিলেন। তাঁকে বলা হলো : উরওয়া হযরত আয়েশা থেকে বর্ণনা করেছেন যে,নবী (সা.) তাঁর হাত ও বুকের মাঝে মাথা রেখে মৃত্যুবরণ করেন। ইবনে আব্বাস তা অস্বীকার করে বললেন, তোমার বিবেক কি তা বিশ্বাস করে? আল্লাহর কসম,রাসূল আলীর ক্রোড়ে মাথা রেখেই ইন্তেকাল করেছেন এবং তিনিই রাসূলকে গোসল দেন। ৪৩৬

ইবনে সা৪৩৭ ইমাম আলী ইবনুল হুসাইন যয়নুল আবেদীন (আ.) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা.) আলীর দেহে ভর দেয়া অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।’’

এ সম্পর্কে আহলে বাইতের অন্যান্য ইমামদের হতে মুতাওয়াতির সূত্রে হাদীসসমূহ বর্ণিত হয়েছে। এমন কি যে সকল ব্যক্তি তাঁদের ইমাম হিসেবে গ্রহণ করেন না তাঁদের অনেকেই এ বিষয়টি স্বীকার করেছেন,যেমন ইবনে সা দ শা বী হতে বর্ণনা করেছেন,নবী (সা.) আলী (আ.)-এর ক্রোড়ে মাথা রেখে ইন্তেকাল করেন এবং তিনিই তাঁকে গোসল দেন।৪৩৮

আমীরুল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) স্বয়ং এ বিষয়টি তাঁর খুতবাতে বর্ণনা করেছেন,যেমন নিম্নোক্ত খুতবায় তিনি বলেছেন,‘‘ হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সাহাবীগণ তাঁর গোপন রহস্যের সংরক্ষক। তারা এ বিয়য়ে ভালভাবেই অবহিত যে,আমি কখনোই আল্লাহর বিধান ও রাসূলের নির্দেশের বিরোধিতা করি নি,বরং নিজের জীবনকে বাজী রেখে যেসব যুদ্ধে তাঁর সহযোগিতা করেছি সেসব যুদ্ধে সাহাবীদেরও পা কাঁপত ও সেখান হতে পলায়ন করত। আমার এ সাহসিকতা আল্লাহর দেয়া বিশেষ দান। আমার বুকে মাথা রাখা অবস্থায় রাসূলের রুহ তাঁর পবিত্র দেহ ত্যাগ করে। আমার হাত তাঁর প্রাণের স্পর্শ লাভ করলে আমি আমার মুখমণ্ডলে তা বুলিয়ে নিই। আমি তাঁর গোসলের দায়িত্বপ্রাপ্ত হই ও ফেরেশতারা আমাকে এ কাজে সহযোগিতা করেন। তখন তাঁর গৃহের দ্বার ও দেয়াল আর্তনাদ ও ক্রন্দন করছিল। একদল ফেরেশতা পৃথিবীতে আগমন করছিলেন,অপর দল আকাশে ফিরে যাচ্ছিলেন। তাঁদের আযানের মৃদু ধ্বনি আমার কানে অবিরত বাজছিল। যতক্ষণ না তাঁকে কবরস্থ করা হল তাঁরা তাঁর ওপর নামায পড়ছিলেন। সুতরাং তাঁর জীবদ্দশায় ও মৃত্যুকালে কোন্ ব্যক্তি আমার চেয়ে তাঁর নিকটবর্তী হবার যোগ্য?’’ ৪৩৯

অন্যত্র নারীকুল শিরোমণি হযরত ফাতিমা (আ.)-এর দাফনের সময় তিনি বলেন, হে রাসূলাল্লাহ্ (সা.)! আমার পক্ষ হতে ও আপনার কন্যা যে খুব তাড়াতাড়িই আপনার সান্নিধ্য লাভ করেছে তার পক্ষ হতে সালাম গ্রহণ করুন। হে নবী! আপনার সম্মানিত ও পবিত্র কন্যার বিরহে আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেছে ও আমার শক্তি নিঃশেষ হয়ে পড়েছে। কিন্তু আপনার মৃত্যু ও বিচ্ছেদ বেদনার পর যে কোন বেদনাই আমার নিকট ক্ষুদ্র। আমি ভুলি নি নিজ হাতে আপনাকে কবরে স্থাপন করেছি এবং মৃত্যুর সময় আপনার পবিত্র মাথা আমার বুকে স্থাপিত ছিল এবং আপনার রুহ এ পৃথিবী ত্যাগ করে। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। ৪৪০

সহীহ হাদীসসূত্রে উম্মে সালামাহ্ বলেছেন, যে আল্লাহর ওপর আমি বিশ্বাস করি তাঁর শপথ,হযরত আলী অন্য সকল ব্যক্তি হতে রাসূলের নিকটবর্তী ছিলেন। একদিন সকলে তাঁর নিকট উপস্থিত হলে তিনি বার বার জিজ্ঞেস করছিলেন,আলী এসেছে কি? আলী এসেছে কি? ফাতিমা বললেন : মনে হয় আপনি তাঁকে কোন দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন? উম্মে সালামাহ্ বলেন, অতঃপর আলী আসলেন। আমরা বুঝতে পারলাম তাঁর সাথে রাসূলের বিশেষ কাজ রয়েছে। তাই ঘর হতে বের হয়ে আসলাম কিন্তু আমি অন্য সকলের হতে দরজার নিকটবর্তী ছিলাম ও লক্ষ্য করলাম তিনি অনবরত আলীর কানে কানে কথা বলছেন। সেদিনই নবী (সা.) ইন্তেকাল করেন। সুতরাং আলী (আ.) নবী (সা.)-এর কর্মের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে তাঁর সবচেয়ে নিকটের ব্যক্তি।৪৪১

আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর হতে বর্ণিত হয়েছে- রাসূল (সা.) তাঁর অন্তিম অসুস্থতায় বলেন,আমার ভাইকে ডাক। হযরত আবু বকর আসলে তিনি তাঁর হতে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরপর হযরত উসমান আসলেন,তিনি তাঁর হতেও মুখ ফিরিয়ে নিলেন। অতঃপর হযরত আলী আসলে তিনি তাঁকে তাঁর চাদরের মধ্যে জড়িয়ে কাছে টেনে নিলেন। কিছুক্ষণ পর আলী তাঁর নিকট হতে চলে এলে তাঁকে প্রশ্ন করা হলো : নবী (সা.) আপনাকে কি বলেছেন? তিনি বললেন :

 علّمني ألف باب كُلّ بابٍ يفْتحُ لهُ ألْفُ بابٍ তিনি আমাকে জ্ঞানের সহস্র দ্বার শিক্ষা দিয়েছেন যার প্রতিটি হতে সহস্র দ্বার উন্মোচিত হয়। ৪৪২

নবীর শান ও মর্যাদার সাথে সামঞ্জস্যশীল বর্ণনা এটি। কিন্তু হযরত আয়েশা যা বর্ণনা করেছেন তা নারী আসক্ত ব্যক্তিদের শানের সাথেই অধিক সামঞ্জস্যশীল। প্রশ্ন হলো যদি কোন রাখাল তার স্ত্রীর বক্ষ ও গলদেশের মাঝে মাথা রেখে মৃত্যুবরণ করে অথচ তার মেষপালের বিষয়ে কোন ওসিয়ত ও নির্দেশনা দিয়ে না যায় তাকে কি অসচেতন ও বিনষ্টকারী বলা হবে না?

আল্লাহ্ উম্মুল মুমিনীনকে ক্ষমা করুন,কারণ তিনি আলী (আ.)-এর এই ফজীলত ও মর্যাদাকে (যা রাসূলের শানের সাথে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ) তাঁর হতে সরিয়ে নিজ পিতার দিকে নিতে ব্যর্থ হয়ে নিজের সাথে সংযুক্ত করেন। যেহেতু তাঁর পিতা সে সময় রাসূলের নির্দেশে প্রেরিত উসামা ইবনে যাইদের সেনাদলে মদীনার বাইরে ছিলেন সেহেতু তাঁর পক্ষে এ ফজীলত অর্জন কখনোই সম্ভব ছিল না।

যা হোক রাসূল (সা.) তাঁর মৃত্যুর সময় হযরত আয়েশার ক্রোড়ে মাথা রেখেছিলেন এ হাদীসটি স্বয়ং হযরত আয়েশা ব্যতীত অন্য কেউ বর্ণনা করেন নি। কিন্তু রাসূলের মৃত্যুর সময় তাঁর মাথা আলীর বুকে ছিল এরূপ হাদীস স্বয়ং আলী ছাড়াও ইবনে আব্বাস,উম্মে সালামাহ্,আবদুল্লাহ্ ইবনে উমর,শা বী,আলী ইবনুল হুসাইন এবং আহলে বাইতের অন্যান্য ইমামগণ হতে বর্ণিত হয়েছে। সুতরাং সনদের দৃষ্টিতে এ হাদীসটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য ও রাসূলের শানের জন্য উপযুক্ত।

৪। যদি হযরত আয়েশার হাদীসের বিপরীতে উম্মে সালামাহর হাদীসটিই শুধু থাকত তদুপরি উপরোল্লিখিত কারণে এবং অন্যান্য যুক্তিতেও হযরত আয়েশার হাদীসের ওপর এর প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত।

ওয়াসসালাম

সাতাত্তরতম পত্র

২০ সফর ১৩৩০ হিঃ

কেন উম্মে সালামাহর হাদীসটি হযরত আয়েশার হাদীসের ওপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত?

আল্লাহ্ আপনাকে সুস্থ রাখুন ও হেফাজত করুন এজন্য যে,হযরত আয়েশার হাদীসের ওপর উম্মে সালামাহর হাদীসের অগ্রাধিকারের বিষয়টি উল্লেখ করেই ক্ষান্ত হন নি,বরং বলেছেন এর বাইরেও এর সপক্ষে যুক্তি রয়েছে। আল্লাহ্ আপনাকে রহম করুন। সেগুলোর উল্লেখ করুন যদিও তা অধিক হয়। কোন কিছুই যেন বাদ না যায়,কারণ আমাদের এ আলোচনা জ্ঞান বিতরণ ও অর্জনের জন্যই।

ওয়াসসালাম

আটাত্তরতম পত্র

২২ সফর ১৩৩০ হিঃ

উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালমাহর হাদীসের সপক্ষে অন্যান্য যুক্তি।

উম্মে সালামাহ্ পবিত্র কোরআনের সুস্পষ্ট আয়াতে বর্ণিত অন্তর বত্রু (সত্য হতে বিচ্যুত) হবার কারণে তওবার নির্দেশপ্রাপ্তাদের৪৪৩ অন্তর্ভুক্ত নন এবং কোরআনে নবী (সা.) ও তাঁর স্থলাভিষিক্ত প্রতিনিধির বিরোধিতার কারণেও তাঁর বিরুদ্ধে আয়াত অবতীর্ণ হয় নি,তিনি এমন কোন কাজও করেন নি যার কারণে তাঁর বিরুদ্ধে আল্লাহ্ তাঁর নবীকে জিবরাঈল,ফেরেশতামণ্ডলী,সৎ কর্মশীল মুমিন এবং নিজ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৪৪৪ বা তাঁকে তালাক ও তাঁর চেয়ে উত্তম স্ত্রী রাসূল (সা.)-কে দানের কথা উল্লেখ করেছেন,৪৪৫ আল্লাহ্ তাঁর জন্য হযরত নূহ (আ.) ও লুত (আ.)-এর স্ত্রীদের উদাহরণও পেশ করেন নি,৪৪৬ তিনি কখনোই রাসূলকে কোন বিষয়ে অবিরত অনুযোগ করে তাঁর জন্য হালাল বস্তু হারাম করতে বাধ্য করেন নি,৪৪৭ রাসূল (সা.) কোনদিন তাঁর ঘরের দিকে ইশারা করে বলেন নি ফিতনা এখান থেকেই৪৪৮ ,এখান থেকেই শয়তানের শিং বের হবে । তিনি আদব ও আখলাকের ক্ষেত্রে কখনোই সীমা লঙ্ঘন করেন নি। রাসূলের সামনে পা প্রসারিত করে নামাযের ব্যাঘাত ঘটান নি যাতে রাসূল (সা.) বাধ্য হন সিজদার স্থান থেকে পা সরিয়ে দিয়ে সিজদা করতে,আবার সিজদা হতে ওঠার পরপরই পা প্রসারিত করে তাঁর বিরক্তিরও সৃষ্টি করেন নি।৪৪৯ হ্যাঁ,এমনটিই ঘটেছিল অন্যের ক্ষেত্রে।

উম্মে সালামাহ্ হযরত উসমানের বিষয়ে অসন্তোষের জন্ম দান করেন নি বা তাঁকে বৃদ্ধ ইহুদী বলে মন্তব্য করে আক্রমণ করেন নি। তিনি কখনোই বলেন নি, এই বৃদ্ধ ইহুদীকে হত্যা কর,কারণ সে কাফির হয়ে গেছে ৪৫০ । যে ঘরে অবস্থানের নির্দেশ আল্লাহ্ তাঁকে দিয়েছিলেন সেই ঘর হতে তিনি বের হন নি।৪৫১ তিনি আসকার নামক উষ্ট্রের৪৫২ পিঠে আরোহণ করে উঁচু-নীচু প্রান্তর অতিক্রম করে হাওয়াবে পৌঁছে সেখানকার কুকুরদের আক্রমণের শিকার হন নি। অথচ নবী (সা.) আয়েশাকে উষ্ট্রে আরোহণ করতে ও হাওয়াব যেতে নিষেধ করেছিলেন।৪৫৩ উম্মে সালামাহ্ হযরত আলীর বিরুদ্ধে শক্তিশালী সেনাবাহিনী প্রস্তুত ও নেতৃত্বের দায়িত্বও নেন নি।

সুতরাং নবী (সা.) আমার চিবুক ও বুকের মাঝে মাথা রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন হযরত আয়েশার এ কথা তাঁর বর্ণিত এ হাদীসটির মত যে, সুদানীরা মদিনার মসজিদে যুদ্ধাস্ত্র,তরবারী,ঢাল ও বর্শা নিয়ে খেলা ও নৃত্যরত ছিল। নবী আমাকে বললেন : তুমি খেলা দেখতে চাও? আমি বললাম : হ্যাঁ। তিনি আমাকে তাঁর কাঁধে তুলে নিলেন। আমি তাঁর কাঁধে চিবুক এমনভাবে রেখেছিলাম যে,তাঁর গণ্ডদেশ আমার গণ্ডদেশের সাথে মিশে ছিল। তিনি তাদেরকে উৎসাহিত করছিলেন যাতে খেলা জমে উঠে ও আমি আনন্দ পাই। অনেকক্ষণ খেলা দেখার পর আমি ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি বললেন : খুশী হয়েছ? আমি বললাম : হ্যাঁ। তিনি বললেন : তাহলে চলে যাও। ৪৫৪ অথবা তাঁর বর্ণিত অন্য একটি হাদীসের অনুরূপ যেখানে তিনি বলেছেন, নবী (সা.) আমার নিকট এসে দেখলেন দুই ক্রীতদাসী গান গাচ্ছে। তিনি ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নিতে লাগলেন। তখন আবু বকর সেখানে উপস্থিত হলে আমাকে এ বিষয়ে নিষেধ করে বললেন : রাসূলুল্লাহর নিকট কেন এই শয়তানের বাঁশী? রাসূল আবু বকরকে বললেন : তাকে তার অবস্থায় থাকতে দাও। ৪৫৫  

হযরত আয়েশার এ হাদীসটির সাথে এ হাদীসটিকেও মিলিয়ে দেখতে পারেন যে, একবার নবী (সা.)-এর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করলে আমি জয়ী হলাম। এরপর কিছুদিন অতিক্রান্ত হলে আমি শীর্ণ হয়ে পড়লে দ্বিতীয়বারের মত আমরা প্রতিযোগিতা করলাম ও তিনি জয়ী হলেন এবং বললেন : এটি ঐ বারের প্রতিশোধ। ৪৫৬ নিম্নোক্ত হাদীসটিও এর সাথে সংযুক্ত করুন। আমি মেয়েদের সাথে খেলতাম। নবী আমার বন্ধু ও খেলার সাথীদের আমার ঘরে নিয়ে আসতেন যাতে আমি তাদের সাথে খেলতে পারি। ৪৫৭ সবশেষে তাঁর এ হাদীসটির মূল্যায়ন করুন যেখানে বলেছেন, আমাকে আল্লাহ্ সাতটি বৈশিষ্ট্য দিয়েছেন যা মারিয়ম ইবনে ইমরান ব্যতীত কেউ লাভ করেন নি। তা হলো ফেরেশতা আমার আকৃতিতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন,নবী (সা.) আমাকে কুমারী অবস্থায় বিয়ে করেন যখন তাঁর সকল স্ত্রীরই পূর্বের স্বামী ছিল,আমি ও রাসূল এক চাদরের নীচে থাকা অবস্থায় তাঁর ওপর ওহী অবতীর্ণ হয়,আমি তাঁর সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী ছিলাম,আমি ব্যতীত নবীর অন্য কোন স্ত্রী জিবরাঈলকে দেখেন নি,আমার ঘরে তাঁর মৃত্যু ঘটে এবং আমি ও ফেরেশতা ব্যতীত কেউ তাঁর সেবায় নিয়োজিত ছিল না। ৪৫৮ , ৪৫৯

এরূপ আরো কিছু বৈশিষ্ট্য তিনি নিজের জন্য বর্ণনা করেছেন। এখন কথা হলো হযরত মারিয়ম (আ.) এ বৈশিষ্ট্যগুলোর কোনটি ধারণ করেছিলেন?

অপর পক্ষে উম্মে সালামাহর একটি বৈশিষ্ট্যই এর বিপরীতে যথেষ্ট। আর তা হলো নবী (সা.)-এর ওয়াসি বা স্থলাভিষিক্ত মনোনীত প্রতিনিধির প্রতি তাঁর ভালবাসা ও আনুগত্য। তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত,উচ্চতর বুদ্ধিবৃত্তি ও দৃঢ় ঈমানের অধিকারী ছিলেন বলেই হুদায়বিয়ার সন্ধিতে তাঁর বুদ্ধিবৃত্তি ও মর্যাদার নিদর্শন রেখেছিলেন। মহান আল্লাহ্ তাঁর রহমত ও বরকতের ধারা তাঁর ওপর অব্যাহত রাখুন।

ওয়াসসালাম